ভোল্গা সে গঙ্গা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(ভোলগা থেকে গঙ্গা থেকে পুনর্নির্দেশিত)
ভোলগা থেকে গঙ্গা
লেখকরাহুল সাংকৃত্যায়ন
মূল শিরোনামवोल्गा से गंगा
অনুবাদকঅসিত সেন, সুধির দাস এবং মৃণাল চৌধুরী
প্রচ্ছদ শিল্পীসুবোধ দাশগুপ্ত
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
বিষয়আর্য মানুষের ভোলগা থেকে ভারতে আসার ইতিহাস
ধরনঐতিহাসিক কাহিনী
প্রকাশককিতাব মহল
প্রকাশনার তারিখ
১৯৪৩ [১]
মিডিয়া ধরনছাপা
পৃষ্ঠাসংখ্যা৩৮২
আইএসবিএন৮১-২২৫-০০৮৭-০
ওসিএলসি৮২২১২৩৭৩
এলসি শ্রেণীPK2098 S27 V6 1943
পরবর্তী বইকনৈলা কী কথা 

ভোল্গা সে গঙ্গা রাহুল সাংকৃত্যায়ন এর ২০টি ছোট গল্পের সংকলন। ১৯৪৪ সালে প্রকাশিত হয়। ভাষা হিন্দী। এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয় 'ভোলগা থেকে গঙ্গা' নামে।

ভোল্গা সে গঙ্গা প্রকাশের পর ভারতের হিন্দীভাষী প্রায় সমস্ত অঞ্চল হতে তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছিলেন লেখক। এ কারণে এটিকে বিতর্কিত রচনাও বলা যায়।

কনৈলা কী কথা এ গ্রন্থের পরের পর্ব।

বাংলা অনুবাদ[সম্পাদনা]

১৯৫৪ সালে প্রথম এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয় 'মিত্রালয়' থেকে। গ্রন্থটির শিরোনাম অনুবাদ করা হয়েছিলো আক্ষরিক অর্থে, এবং তা ছিলো- 'ভোলগা থেকে গঙ্গা'। 'ভোল্গা সে গঙ্গা'র শেষ কাহিনীটি বাদ দিয়ে প্রকাশক গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য বইটি প্রকাশ করেন। পরে স্বতন্ত্র ভাবে সব কটি কাহিনী সহকারে একই নামে এর নতুন সংস্করণ বের হয়।

পটভূমি[সম্পাদনা]

'ভোল্গা সে গঙ্গা' গ্রন্থখানি ২০টি ছোটো গল্পের সমাহার। এই ছোটো ছোটো গল্প বা কাহিনীগুলো নিছক কল্পনা প্রসূত নয়, সমাজবিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ের দিকে লক্ষ্য রেখে গল্পগুলো ধারাবাহিক ভাবে রচিত হয়েছে। ইতিহাস আর সমাজবিজ্ঞান এর মূলতত্ত্বকে সর্বত্রই মেনে চলা হয়েছে। প্রায় ৬০০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে ভোলগা নদীর তীরে যে মানবগোষ্ঠী পরিবার স্থাপন করেছিলো, তাদেরই আবাস ও জীবন নিয়ে রচিত হয়েছে প্রথম গল্পটির দৃশ্যপট। ক্রমে সেই মানুষ মধ্য ভলগাতটে অগ্রসর হয়ে মধ্য এশিয়া অতিক্রম করেছিলো। উত্তর কুরু, তাজিকিস্তান পেরিয়ে একসময় সমগ্র গান্ধার এলাকা জুড়ে বসতি স্থাপন করেছিলো এই আর্যরা। ইতিহাসের এই ধারায় বিংশ শতাব্দীতে পৌছে সমাপ্ত হয়েছে গ্রন্থটির আখ্যান। এই ধারাবাহিকতা নিয়েই রচিত হয়েছে প্রতিটি গল্পের দৃশ্যপট।

ছোট গল্প সমূহের তালিকা[সম্পাদনা]

১।নিশাঃ *স্থান- ভোলগা নদীর তীর *কাল-৬০০০ খৃষ্টপূর্ব

২।দিবাঃ *স্থান- মধ্য ভোলগা তট *কাল-৩৫০০ খৃষ্টপূর্ব

৩।অমৃতাশ্বঃ *স্থান- মধ্য এশিয়া, পামীর (উত্তর কুরু) *কাল-৩০০০খৃষ্টপূর্ব

৪।পুরুহুতঃ *স্থান- বক্ষু উপত্যকা (তাজিকিস্তান) *কাল- ২৫০০খৃষ্টপূর্ব

৫। পুরুধানঃ *স্থান- উপরিস্বাত *কাল- ২০০০খৃষ্টপূর্ব

৬। অঙ্গিরাঃ *স্থান- গান্ধার (তক্ষশীলা) *কাল- ১৮০০খৃষ্টপূর্ব

৭। সুদাসঃ *স্থান- কুরু-পাঞ্চাল (উত্তরপ্রদেশের পশ্চিম) *কাল- ১৫০০খৃষ্টপূর্ব

৮। প্রবাহণঃ *স্থান- পাঞ্চাল (উত্তরপ্রদেশ) *কাল- ৭০০খৃষ্টপূর্ব

৯। বন্ধুল মল্লঃ *কাল- ৪৯০ খৃষ্টপূর্ব

১০। নাগদত্তঃ *কাল- ৩৩৫ খৃষ্টপূর্ব

১১। প্রভাঃ *কাল- ৫০ খৃষ্টপূর্ব

১২। সুপর্ণ যৌধেয়ঃ *কাল-৪২০ খৃষ্টাব্দ

১৩। দুর্মুখঃ*কাল-৩৬০ খৃষ্টাব্দ

১৪। চক্রপাণিঃ *কাল- ১২০০ খৃষ্টাব্দ

১৫। বাবা নুরদীনঃ *কাল-১৩০০খৃষ্টাব্দ

১৬। সুরৈয়াঃ *কাল-১৬০০খৃষ্টাব্দ

১৭। রেখা ভগৎঃ *কাল-১৮০০খৃষ্টাব্দ

১৮। মঙ্গল সিংহঃ *কাল-১৮৫৭খৃষ্টাব্দ

১৯। সফদরঃ *কাল-১৯২২খৃষ্টাব্দ

২০। সুমেরঃ *কাল-১৯৪২খৃষ্টাব্দ

ঐতিহাসিক সহায়িকা[সম্পাদনা]

রাহুল সাংকৃত্যায়ন এ গ্রন্থের প্রতিটি কাহিনীই ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে রচনা করেছেন। প্রথম কয়েকটি কাহিনীতে বাস্তব তথ্য প্রমাণের কিছু অপ্রতুলতা রয়েছে, যেহেতু এর কাল প্রাগৈতিহাসিক। নিশা, দিবা, অমৃতাশ্ব, পুরুহুত প্রভৃতি রচনা লইস মর্গানের 'এনসিয়েন্ট সোসাইটি', এঙ্গেলসের 'পরিবার, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি', রবার্ট ব্রিফলের 'দি মাদার্স' প্রভৃতি গ্রন্থে প্রচারিত সমাজবিজ্ঞানের তত্ত্বের উপর নির্ভর করে রচিত।
পুরুধান থেকে প্রবাহণ পর্যন্ত গল্পে বেদ, ব্রাহ্মণ, মহাভারত, পুরাণ ও বৌদ্ধভাষ্য অটঠ কথার সাহায্য নেয়া হয়েছে। সুদাস গল্পটি সম্পূর্ণ ঋগ্বেদ নির্ভর। প্রবাহণ এর পটভূমি ছান্দোগ্য ও বৃদারণ্যক উপনিষদ এবং তার সাথে অটঠ কথা । এরপরের থেকে গুপ্তযুগ এর প্রাক্কাল অবধি কাহিনী গুলো মুলত বৌদ্ধশাস্ত্র, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র, অশ্বঘোষ এর বুদ্ধচরিত, সৌন্দরানন্দ এই কটি গ্রন্থের সহায়তায় রচিত। এ ছাড়াও গ্রিক পর্যটকদের ভ্রমণকথা, জয়সোয়াল এর 'হিন্দু-পলিটি ও অন্যান্য ইতিহাস', রিজ ডেভিজ এর 'বৌদ্ধ ভারত' হতে তথ্য গ্রহণ করেছেন সাংকৃত্যায়ন।
সুপর্ণ যৌধেয় কাহিনী থেকে গুপ্তযুগের যে বিবরণ পাওয়া যায়, তার মূল গুপ্তযুগের বিভিন্ন পুরালেখসমূহ। অবশ্য অধিকাংশ রঘুবংশ, কুমারসম্ভব, অভিজ্ঞান-শকুন্তলম থেকে গৃহীত। তবে চীনা পরিব্রাজক ফা-হিয়েন এর ভ্রমণ বৃত্তান্তও কাজে লাগিয়েছেন রাহুল সংকৃত্যায়ন।
দুর্মুখ নির্ভরশীল হর্ষচরিত, কদম্বরী এবং হি উয়েন সাং ও ইৎসিঙ এর বর্ণনার উপর। চক্রপাণি নৈষধ, খন্দনখন্ড খাদ্য এবং বিক্ষিপ্ত কিছু বই এর উপর নির্ভরশীল। বাবা নূরদীন থেকে সুমের পর্যন্ত গল্পের প্রমাণাদি যথেষ্ট রূপে বিদ্যমান, যেহেতু এই সময়কাল গুলো বেশি আগের নয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Volgāse Gaṅgā (Book, 1943)"WorldCat.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০১-২৩ 
  • ভোলগা থেকে গঙ্গা- প্রস্তাবনা, ভূমিকা।
  • ভোলগা থেকে গঙ্গা