ভূমিধর বর্মন
ভূমিধর বর্মন | |
---|---|
অসমের মুখ্যমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২২ এপ্রিল, ১৯৯৬ – ১৪ মার্চ, ১৯৯৬ | |
পূর্বসূরী | হিতেশ্বর শইকীয়া[১] |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | বেলশর গাঁও, নলবাড়ি, অসম | ১০ ডিসেম্বর ১৯৩১
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস |
ধর্ম | হিন্দু ধর্ম |
পিতৃ | ভকতরাম বর্মন |
মাতৃ | মঠোপ্রিয়া বর্মন |
ভূমিধর বর্মন (অসমীয়া: ভূমিধৰ বৰ্মন) আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন উল্লেখযোগ্য রাজনীতিক ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সনের ২২ এপ্রিল তারিখ থেকে ১৯৯৬ সনের ১৪ মে তারিখ পর্যন্ত আসামের মুখ্যমন্ত্রী পদে নিয়োজিত ছিলেন।[২] অসম বিধান সভায় ৭ বার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সনে প্রথমবার তিনি বিধান সভায় সদস্য রুপে নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৩][৪][৫]
জন্ম ও বংশ পরিচয়
[সম্পাদনা]১৯৩১ সনের ২২ অক্টোবর তারিখে নলবাড়ি জেলার বেলশর গাঁও নামক স্থানে ভূমিধর বর্মন জন্মগ্রহণ করেন।[৬] তার পিতার নাম ভকতরাম বর্মন ও মাতার নাম মঠোপ্রিয়া বর্মন। তার পিতা ভকতরাম একজন প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী ছিলেন। তার মাতা-পিতার পাঁচটি সন্তান ছিল: তিনজন পুত্র ও দুইজন কন্যা। মাতা-পিতার কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন ভূমিধর বর্মন।
শিক্ষা
[সম্পাদনা]ভূমিধর বর্মন বেলশর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৫১ সনে তিনি টিহু হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৩ সনে তিনি গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে আই.এ.এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি ডিব্রুগড়ের অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে নামভর্তি করেন। ১৯৫৮ সনে তিনি এম.বি.বি.এস ডিগ্রী লাভ করেন।[৬]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]এম.বি.বি.এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি নিজ জন্মস্থান বেলশরে একটি ব্যক্তিগত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপন করেন। ১৯৬৩ সনে তিনি শোলমারা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক রুপে যোগদান করেন। তিনি বরপেটারোড স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রথম শ্রেণীর সহকারী সার্জনরুপে নিযুক্তি লাভ করেছিলেন।[৬]
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]ডঃ ভূমিধর বর্মন একজন উত্তম চিকিৎসক রুপে সমগ্র অঞ্চলে তার খ্যাতি ছিল। সেইজন্য রাজনৈতিক নেতারা তাকে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করেন। অসমের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিধায়ক প্রফুল্ল গোস্বামী ও অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মহেন্দ্র মোহন চৌধুরীর সহযোগীতায় তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন। ১৯৬৬ সনে তিনি চাকুরি ছেড়ে দেন।
- ১৯৯৭ সনে তিনি পশ্চিম নলবাড়ি (বর্তমান ধর্মপুর) সমষ্টির থেকে বিধান সভার সদস্য রুপে নির্বাচিত হন।
- ১৯৭২ সনে তিনি পুনরায় বিধান সভায় নির্বাচিত হন। সেই সময়ের মুখ্যমন্ত্রী শরৎ চন্দ্র সিংহ তার মন্ত্রীসভায় ডঃ ভূমিধর বর্মনকে রাজ্যিক রাজহ ও শিক্ষামন্ত্রী রুপে নিযুক্তি প্রদান করেন।[৬]
- ১৯৭৮ সনের নির্বচনে তিনি জনতা দলের প্রার্থীর হাতে পরাস্ত হন।
- ১৯৮৩ সনে তিনি পুনরায় ধর্মপুর বিধান সভা সমষ্টি থেকে নির্বাচিত হন এবং মন্ত্রীসভায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার ও পঞ্চায়ত বিভাগের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন।
- ১৯৮৫ সনের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দিতা করেন যদিও অসম গণ পরিষদের প্রার্থীর হাতে পরাজিত হন।
- ১৯৯১ সনে ডঃ ভূমিধর বর্মন বরক্ষেত্রী সমষ্টি থেকে অসম বিধান সভায় চতুর্থ বারের জন্য নির্বাচিত হন । সেই সময়ে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হন । হিতেশ্বর শইকীয়ার মন্ত্রীসভায় তিনি জৈষ্ঠ মন্ত্রীর স্থান লাভ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চুক্তি রুপায়ণ দপ্তরের কার্যভার গ্রহণ করেন।
- ১৯৯৬ সনে তিনি বরক্ষেত্রী বিধান সভার সমষ্টি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে পরাজিত হন ।
- ২০০১ সনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে তিনি বরক্ষেত্রী সমষ্টি থেকে বিধায়ক রুপে নির্বাচিত হন । সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী রুপে তরুণ গগৈ শপথ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তরুণ গগৈ-এর মন্ত্রীসভায় স্বাস্থ্য, পঞ্চায়ত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রীরুপে নিযুক্তি লাভ করেন।
- বর্তমান সময়ে তিনি তরুণ গগৈ-এর মন্ত্রীসভায় রাজহ মন্ত্রীরুপে কার্যনির্বাহ করে আছেন।[৬]
পেশাজীবন
[সম্পাদনা]- ডঃ ভূমিধর বর্মন বর্মন ১৯৮৯ সন থেকে ১৯৯১ সন পর্যন্ত নলবাড়ি জেলা কংগ্রেস (ই) কমিটীর সভাপতি ছিলেন।
- ১৯৮৫-৮৬ সনে তিনি অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটীর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
- ১৯৯৭-৯৮ সনে তিনি অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটীর উপ-সভাপতি ছিলেন।
- অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুপে কার্যনির্বাহ
- ১৯৭৮ সনে টিহুতে অনুষ্ঠিত অসম সাহিত্য সভার অভ্যর্থনা সমিতির তিনি সভাপতি ছিলেন।
- ২০০৬ সনে অনুষ্ঠিত অসম সাহিত্য সভার বিশেষ বার্ষিক বেলশর অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন।[৬]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]১৯৬১ সনে ডঃ ভূমিধর বর্মন কামরূপ জেলার পলাশবাড়ির মালতী দাসকে বিবাহ করেন। তাদের চারজন সন্তান: একটি পুত্র ও তিনটি সন্তান। পুত্রের নাম দিগন্ত বর্মন। কন্যাদের নাম যথাক্রমে: দিপালী বর্মন, রীতা বর্মন, রীণা বর্মন। [৬]
উগ্রপন্থীর আক্রমণ
[সম্পাদনা]ডঃ ভূমিধর বর্মনকে হত্যা করার জন্য তিনিবার উগ্রপন্থী আক্রমণ করেছিল। প্রথম আক্রমণ ১৯৮৬ সনে বেলশর থানার সন্মুখে, দ্বিতীয় আক্রমণ ১৯৯০ সনের ২০ জানুয়ারি তারিখে নিজ বাসগৃহে পতাকা উত্তোলনের সময় ও তৃতীয় আক্রমণ সংঘটিত হয় ১৯৯৫ সনের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে বরক্ষেত্রী সমষ্টির লাউপারা গাঁও নামক স্থানে। উক্ত তিনটি আক্রমণে কোন ক্ষয়-ক্ষতি না হয়ে তার প্রাণ রক্ষা হয়।[৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "অসমর মুখ্যমন্ত্রীসকলর তালিকা"। Assam Legislative Assembly, Dispur। 2012। সংগ্রহের তারিখ October 04, 2012। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Assam Legislative Assembly - Chief Minister of Assam since 1937
- ↑ NUMBER OF TERMS ELECTED Assam Legislative Assembly Website
- ↑ "Bhumidhar Barman turns 80...the oldest minister in the cabinet."। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ "Pranab Gogoi elected speaker of Assam"। ১১ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ সমীন কলিতা (ছেপ্তেম্বর, ২০০৭)। অসমর মুখ্যমন্ত্রীসকল, পঞ্চম প্রকাশ। রাজেন্দ্র মোহন শর্মা, চন্দ্র প্রকাশ। পৃষ্ঠা ৯৯র পরা ১০৭ পৃষ্ঠালৈ। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)
- ১৯৩১-এ জন্ম
- ২০২১-এ মৃত্যু
- আসামের মুখ্যমন্ত্রী
- আসামের রাজ্য মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রী
- আসামের ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিবিদ
- ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী
- গুয়াহাটির রাজনীতিবিদ
- আসাম বিধানসভার সদস্য ১৯৬৭-১৯৭২
- আসাম বিধানসভার সদস্য ১৯৭২-১৯৭৮
- আসাম বিধানসভার সদস্য ১৯৮৩-১৯৮৫
- আসাম বিধানসভার সদস্য ১৯৯১-১৯৯৬
- আসাম বিধানসভার সদস্য ২০০১-২০০৬
- আসাম বিধানসভার সদস্য ২০০৬-২০১১
- আসাম বিধানসভার সদস্য ২০১১-২০১৬
- নলবাড়ীর ব্যক্তি