ভারতে বাল্যবিবাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
SDRC কর্তৃক ভারতে বাল্যবিবাহ

ভারতে বাল্যবিবাহ হল ভারতীয় আইন মোতাবেক ১৮ বছরের নিচে মেয়ে এবং ২১ বছরের নিচে পুরুষের বিয়ে। বেশির ভাগ কমবয়সী মেয়েদের বাল্যবিবাহ দুর্বল আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত।

ভারতে বাল্যবিবাহের বহুল প্রভাব। বাল্যবিবাহের বহর এমন যে, গণনা করার মধ্যে ফারাক পড়ে যায়। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রিসার্চ অন উওমেন--ইউনিসেফ প্রকাশনা অনুযায়ী সামান্য নমুনা সমীক্ষায় ভারতের বাল্যবিবাহ ৪৭ শতাংশের মতো, যেখানে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘের বয়ানে ৩০ শতাংশ বলা হয়। ভারতীয় জনগণনা আয়োগ গণনা ও সংবাদ দেয় যে, ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে মেয়েদের কম বয়সে বিয়ের হার প্রতি দশ জনগণনার বছরে নিম্নমুখি। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের জনগণনানুযায়ী, ভারতে দশ বছরের নিচে বালিকা বিয়ে হয়নি, দশ থেকে চোদ্দো বছরের মেয়েদের ৫ কোটি ৯২ লক্ষের মধ্যে ১৪ লক্ষ বিবাহিত, পনেরো থেকে উনিশ বছরের মেয়েদের ৪ কোটি ৬৩ লক্ষের মধ্যে ১ কোটি ১৩ লক্ষ বিবাহিত। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বাল্যবিবাহের হার পড়তে থাকে আরো ৪৬ শতাংশে, যেটা সাকুল্যে জাতীয়ভাবে গড় ৭ শতাংশে দাঁড়ায় ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে। ঝাড়খণ্ড হল ভারতের সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহের রাজ্য (১৪.১ শতাংশ), অন্যদিকে কেরালা  হল একমাত্র রাজ্য যেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাল্যবিবাহের হার কমেছে। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে গ্রাম্য বাল্যবিবাহের হার শহরের চেয়ে তিন গুণ বেশি ছিল।

১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় আইনে বাল্যবিবাহকে আইনবিরুদ্ধ করা হয়। যাই হোক, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক জমানায়, মেয়েদের আইনগত বিয়ের বয়স ১৫ এবং ছেলেদের ১৮ করা হয়। অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতে মুসলমান সংস্থাসমূহের প্রতিবাদে, ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে একটি ব্যক্তিগত বিধি শরিয়ত আইনসিদ্ধ হয়, যেখানে মেয়ের অভিভাবকের অনুমতিসাপেক্ষে বাল্যবিবাহতে সায় দেওয়া হোত। স্বাধীনতার পরবর্তীকালে এবং ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় সংবিধান গৃহীত হলে বাল্যবিবাহ আইনে নানা সংশোধন হয়। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আইনসিদ্ধ বয়স মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং ছেলেদের ২১ করা হয়। বাল্যবিবাহ বিরোধী আইনগুলি ভারতীয় আদালতসমূহে চ্যালেঞ্জ করা হয়, সঙ্গে কিছু ভারতীয় মুসলমান সংস্থা চাইছে নিম্নতম বয়স না-রেখে সেটা তাদের ব্যক্তিগত আইনে ছেড়ে দেওয়া হোক। বাল্যবিবাহ হল একটি সক্রিয় রাজনৈতিক বিষয় তথা  ভারতের উচ্চতর ন্যায়ালয়সমূহে চলতি মামলাগুলির অধীনে সমীক্ষারত বিষয়ও বটে।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্য দেরি করে বিয়েতে উৎসাহদান চালু করে। উদাহরণস্বরূপ, হরিয়ানা রাজ্য ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে চালু করে তথাকথিত অপনি বেটি, অপনা ধন  প্রকল্প, যেটার বাংলা অনুবাদ হল : 'আমার মেয়ে, আমার সম্পত্তি'। এটা হল দেরিতে যুবতী বিয়েতে উৎসর্গিত একটা শর্ত সাপেক্ষে নগদ হস্তান্তর  প্রকল্প, যাতে সরকার কর্তৃক মেয়ের নামে মাবাবাকে ২৫,০০০ টাকা মূল্যের বন্ড অর্থ প্রদান; মেয়ের অষ্টাদশ জন্মদিনে যদি অবিবাহিত থাকে।

বাল্যবিবাহের সংজ্ঞা[সম্পাদনা]

ভারত[সম্পাদনা]

ভারতীয় আইনে  বাল্যবিবাহ হল একটা জটিল বিষয়। এটা সংজ্ঞায়িত হয়েছিল ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে বাল্যবিবাহ আটকানো আইন  হিসেবে, এবং এতে কমপক্ষে বিয়ের বয়স ছেলেদের ১৮ ও মেয়েদের ১৫ নির্ধারিত হয়েছিল। সেই আইনে মুসলমানদের আপত্তি থাকায়, তখন শুধু তাদের ক্ষেত্রে এটা বাতিল করে  ব্যক্তিগত আইন কার্যকর করার জন্যে ব্রিটিশ ভারতে 'মুসলিম পর্সোনাল ল (শরিয়ত) অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্ট', ১৯৩৭ কার্যকর হয়, যেখানে মুসলমানদের বিয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের বয়সের নিম্নতম সীমা নির্ধারণ ছিলনা এবং মাবাবা অথবা অভিভাবকের সম্মতিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের আইনের ধারা ২ বলছে :

...ব্যক্তিগত আইনের অন্য যেকোনো ব্যবস্থা, বিয়ে, বিয়ে ভেঙে দেওয়া, তালাক সমেত, ইলা, জিহার, লিয়ান, খুলা এবং মুবারাত, ভরণপোষণ, যৌতুক, অভিভাবকত্ব, উপহার, জিম্মা ও জিম্মেদারি সম্পত্তি, এবং ওয়াকফগুলো (সদয়তা, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও বদান্য এবং ধর্মীয় দান থেকে তফাত), যেখানে পক্ষগণ মুসলমান সেখানে সিদ্ধান্তের বিধি হবে মুসলমান ব্যক্তিগত আইন (শরিয়তগুলি)।   --মুসলিম পার্সোনাল ল (শরিয়ত) অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্ট অফ ১৯৩৭                                       

ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তি, বিশেষত ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে যখন বিয়ের বয়স ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩ বছর বাড়ানো হয়, তখন ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের আইন অ-মুসলমানদের জন্যে বার বার পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের সংবিধান গৃহীত হলে, ধারাবাহিকভাবে সুপ্রিম কোর্টের মামলা এবং বিচারকের নির্দেশের সঙ্গে ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের আইন মুসলমানদের মধ্যে বাল্যবিবাহের প্রয়োগযোগ্যতা ও অনুমোদনযোগ্যতা, একটি বিতর্কিত বিষয়ে পরিণত হয়। 

বাল্যবিবাহের সংজ্ঞা ভারত শেষ সাম্প্রতিকীকরণ করেছে যাতে, দ্য প্রোহিবিশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট অফ ২০০৬, যেটা প্রয়োগ হয়েছে শুধু (ক) হিন্দু, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ এবং তারা, যারা ভারতের অ-মুসলমান; এবং (খ) জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বাইরে। ভারতের মুসলমানদের জন্যে, বাল্যবিবাহ সংজ্ঞা এবং বিধিসমূহ শরিয়ানিকাহর ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত আইনের বিষয় হিসেবে দাবি করে। অন্য সকলের জন্যে, দ্য প্রোহিবিশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট অফ ২০০৬ সংজ্ঞায়িত করে 'বাল্যবিবাহ' অর্থে একটা বিয়ে, অথবা একটা বিয়ে প্রায় বিধিসম্মত, যেকোনো একটা পক্ষের একজন শিশু, এবং ব্যক্তির লিঙ্গভিত্তিক বিয়ের ব্যাপারে শিশু—যদি পুরুষ হয়, এটা ২১ বছর বয়স, এবং যদি মহিলা হয়, ১৮ বছর বয়স।

[১]

বিশ্ব[সম্পাদনা]

UNICEF সংজ্ঞায়িত করছে বাল্যবিবাহ হল ১৮ বছর বয়সের আগে প্রথাসিদ্ধ অথবা প্রথাবহির্ভূত একটা বিয়ে। ইউএন উওমেন  প্রস্তাব করেছে যে, বাল্যবিবাহের  সংজ্ঞা দেওয়া উচিত জবরদস্তি বিয়ে, কারণ তারা বিশ্বাস করে ১৮ বছর বয়সের নিচে শিশুরা একটা আইনত বৈধ সম্মতি দিতে অপারগ। [২]

বাল্যবিবাহের উৎস এবং কারণ[সম্পাদনা]

একটা নিউ ইয়র্ক টাইমস  সংবাদ ও পণ্ডিতদের কথায় ভারতে এক হাজার বছরেরও আগে মুসলমান আক্রমণ  হলে আসল বাল্যবিবাহ শুরু হয়েছিল। আক্রমণকারীরা অবিবাহিত হিন্দু মেয়েদের ধর্ষণ করত অথবা লুঠের মাল হিসেবে জবর দখল করত; ফলে হিন্দু সমাজে মেয়েদের রক্ষা করার জন্যে প্রায় জন্ম থেকেই বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা ছিল। অন্যদের পরামর্শে উনিশ শতকের আগে বিশ্বের সব জায়গাতেই বাল্যবিবাহ সাধারণ ব্যাপার ছিল। [৩]

দিল্লি সুলতানি  আমলে রাজনৈতিক বাতাবরণ ছিল অশান্ত এবং মুসলমান সুলতানরা অবাধ রাজতন্ত্র  হিসেবে সরকার পরিচালনা করত। এই সময়কালে সুলতানরা বাল্যবিবাহের মতো অভ্যাস তৈরি করত এবং এমনকি পরবর্তীতেও সমাজে মেয়েদের অবস্থান নিম্নমানের করে রেখেছিল।  [৪][৫]

বিশেষত যেসব অঞ্চলে অর্থনৈতিক সুবিধাদি কম, সেখানে বাল্যবিবাহ দিতে প্রায়ই গরিব মাবাবা রাজি হয়, বিয়েটাকে তাদের মেয়ের ভবিষ্যৎ ভালো করার রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে।  [৬]

বরপণ  হল ভারতে একটা প্রথা যেখানে কনের পরিবার থেকে সম্পদ বরকে হস্তান্তর করা হয়; এটা বরের পরিবার থেকে বিয়ের দাবি এবং শর্ত।  বরপণ ভারতের সব ধর্ম বিশ্বাসের মধ্যেই দেখা যায়, এবং বরপণের দাবি করা কনের বয়স অনুযায়ী অর্থ দেওয়া হয়ে থাকে। নেগি ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে পরামর্শ দেন, বরপণ প্রথা দেরিতে বিয়ের ভীতি ও চাপ সৃষ্টি করে, এবং বাল্যবিবাহে মদত দেয়। [৭]

ভারতে দারিদ্র্যকে ছোটোবেলায় বিয়ের কারণ হিসেবে বলা হয়। শিশু সন্ততির বিয়েকে অনড় অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার এবং গরিব পরিবারের খরচ বাঁচাবার পথ হিসেবে দেখা হয়। [৮][৯]

ভারতের কিছু অংশে মুসলমানদের জন্যে ব্যক্তিগত আইনের অস্তিত্ব বাল্যবিবাহের কারণ। উদাহরণস্বরূপ, কেরালার মালাপ্পুরম জেলায় ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সের ৩৪০০ মেয়ের বিয়ে হয়েছিল; এদের মধ্যে ২৮০০ (৮২ শতাংশ) ছিল মুসলমান। আইনের সাহায্যে এই অভ্যাস বন্ধ করার প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ এবং আদালতে মোকাবেলা করেছিল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ ও অন্যান্য মুসলমান সংস্থাগুলি, মুসলমান মেয়েদের বিয়ের বয়স নির্ধারণের সঙ্গে তাদের ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে। 

পরিসংখ্যান[সম্পাদনা]

বাল্যবিবাহের হার নির্ধারণে উৎসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য, যেগুলো স্থানীয় অল্প নমুনা সমীক্ষার ওপর নির্ভর করে রচিত। ভারতে তথ্য সংগ্রহের সঙ্গে কিছু বাল্যবিবাহের হিসেব নিচের সারণিতে উপলব্ধ :

উৎস শতাংশ বিবাহিত মহিলা (<১৮) তথ্য বছর নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি সূত্র
আইসিআরডব্লু ৪৭ ১৯৯৮ ক্ষুদ্র নমুনা সমীক্ষা [১০]
জাতিসংঘ ৩০ ২০০৫  ক্ষুদ্র নমুনা সমীক্ষা [১১]
এনএফএইচএস-৩ ৪৪.৫ ১৯৯৮-

২০০২

ক্ষুদ্র নমুনা সমীক্ষা [১২][১৩]
ভারতের জনপরিসংখ্যান ৪৩.৪ ১৯৮১ জাতীয় পর্যায়ে জনগণনা [১৪]
ভারতের জনপরিসংখ্যান 
৩৫.৩ ১৯৯১ জাতীয় পর্যায়ে জনগণনা [১৪]
ভারতের জনপরিসংখ্যান 
১৪.৪ ২০০১ জাতীয় পর্যায়ে জনগণনা [১৫]
ভারতের জনপরিসংখ্যান 
৩.৭ ২০১১ জাতীয় পর্যায়ে জনগণনা [১৬]

ক্ষুদ্র নমুনা সমীক্ষাটা ভারতে বাল্যবিবাহ গণনার বিভিন্ন পদ্ধতিতে তৈরি, অনেকে বিভিন্ন বছরভিত্তিক তথ্য ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, ওপরের সারণিতে এনএফএইচএস-৩ ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের জন্যে উদ্ধৃত, একটা সমীক্ষা ব্যবহৃত হয়েছে যেখানে ২০-২৪ বছরের মেয়েদের জিগ্যেস করা হয়েছিল যদি তাদের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হোত। এনএফএইচএস-৩ সংস্থাও ৪৯ বছর পর্যন্ত বয়সের মহিলাদের একই প্রশ্ন জিগ্যেস করার মাধ্যমে সমীক্ষা করেছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ২০-২৪ বয়সের মহিলা, যাদেরকে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল, তাদের চেয়েও ৪০-৪৯ বয়সের মহিলা ১৮ পূর্ণ করার আগেই তাদের বিয়ে হয়েছে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে মেয়েদের ক্ষেত্রে আইনত বিয়ের বয়স ছিল কমপক্ষে ১৫ বছর।

রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের অনুষ্ঠিত হওয়া উচ্চ হারে বিয়ের রাজ্যগুলো হল, ঝাড়খণ্ড (১৪.১ শতাংশ), পশ্চিমবঙ্গ (১৩.৬ শতাংশ), বিহার (৯.৩ শতাংশ), উত্তর প্রদেশ (৮.৯ শতাংশ), এবং অসম (৮.৮ শতাংশ)। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সূক্ষ্ম অবজ্ঞায় বাল্যবিবাহের হার কমে, মূলত ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের মতো ভারতে ৭ শতাংশ মেয়ে ১৮ বছর পার করে বিবাহিত হয়েছিল। ইউনিসেফ ইন্ডিয়া তার ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের কর্মোদ্যোগে ভারতীয় বাল্যবিবাহের প্রভাবশালী হারের তথ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।  

 ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ভারতের জাতীয় স্তরের জনগণনা অনুযায়ী, মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ছিল ২১.২ বছর।[১৭][১৮] ১৫-১৯ বছর বয়সের সব মেয়ের ৬৯.৬ শতাংশের কখনোই বিয়ে হয়নি।  [১৯]

বাল্যবিবাহ বিরোধী আইনসমূহ[সম্পাদনা]

দ্য চাইল্ড ম্যারেজ রেস্ট্রেইন্ট অ্যাক্ট অফ ১৯২৯[সম্পাদনা]

[২০]দ্য চাইল্ড ম্যারেজ রেস্ট্রেইন্ট অ্যাক্টকে সারদা আইনও বলা হয়, বাল্যবিবাহর অভ্যাসকে দমন করার জন্যে এটা একটা আইন ছিল। এই আইন কার্যকর হয় ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১ এপ্রিল, হায়দরাবাদ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের মতো রাজকীয় রাজ্যগুলো বাদে সারা দেশে এবং প্রত্যেক ভারতীয়ের ওপর কার্যকর হয়েছিল। এর লক্ষ্য ছিল বাল্যবিবাহিত জীবনের ঝুঁকি সামলাতে না-পারা বালিকাদের বিপদ আটকানো এবং অকাল মৃত্যু এড়িয়ে চলা। এই আইন নির্দেশ করে একটা ২১ বছরের ছেলে (আসলে ১৮) অথবা নবীনতম, একটা ১৮ বছরের মেয়ে (আসলে ১৪) অথবা নবীনতম, এবং ১৮ বছর বা তার নিচের ছোটো শিশু (আসলে ১৪)। ১৮ থেকে ২১ বছরের একজন ছেলে বাল্যবিবাহ করলে সাজা ১৫ দিন পর্যন্ত কয়েদ, ১০০০ টাকা ফাইন, অথবা দুটোই। ২১ বছরের বেশি বয়সের ছেলের জন্যে সাজা তিন মাস পর্যন্ত কয়েদ এবং সম্ভাব্য ফাইন হতে পারে। যেকোনো ব্যক্তি বাল্যবিবাহের নির্দেশ ও অনুষ্ঠান করলে তার তিন মাস পর্যন্ত কয়েদ এবং সম্ভাব্য ফাইন হতে পারে, যদি না প্রমাণ করতে পারে যে, সেটা বাল্যবিবাহ ছিলনা। শিশুর মাবাবা অথবা অভিভাবক বিয়ে ঘটালে তার তিন মাস পর্যন্ত কয়েদ অথবা সম্ভাব্য ফাইন হতে পারে। [২১] ছেলে এবং মেয়েদের বিয়ের বয়স ক্রমাগত বাড়ানোর জন্যে ১৯৪০ ও ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে এটা সংশোধন করা হয়েছিল। [২২]

দ্য প্রোহিবিশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট, ২০০৬

ভারত সরকার সুপ্রিম কোর্টে তথ্য জানতে চাওয়া গোষ্ঠীর পক্ষে [রিট পিটিশন (C) ২১২/২০০৩] মামলাটিতে সাড়া দিয়ে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে দ্য প্রোহিবিশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট (পিসিএমএ) এনেছিল, এবং দ্য চাইল্ড ম্যারেজ রেস্ট্রেইন্ট অ্যাক্টের [২৩] অসুবিধেগুলো দূর করে এটা কার্যকর হয় ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর। আদতে শুধু নিয়ন্ত্রণ নয়, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও নিষিদ্ধকরণ ছিল নাম বদলের উদ্দশ্য। [২৪] আগেকার আইনটা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের কা্যকলাপে সময়সাপেক্ষ এবং কর্তৃপক্ষের কাছে সম্ভাব্য তথ্যাদির ঠিকমতো প্রকাশিত না-হওয়ায় অসুবিধে দেখা দিত।[২৩] এই আইন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে ও মেয়ের বয়স সমান রেখেছিল কিন্তু পরবর্তীকালে শিশুদের রক্ষার ব্যাপারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বদল এনেছিল। জবরদস্তি বাল্যবিবাহে অপ্রাপ্তবয়স্ক চাইলে প্রাপ্তবয়স প্রাপ্তির দু-বছর পর পর্যন্ত তারা বিয়ে না-করতে পারে, এবং কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে, তারা পূর্ণবয়স্ক হওয়ার আগে বাল্যবিবাহ বাতিল হয়ে যাবে। বিয়ে বাতিল হলে যাবতীয় দামি জিনিস, অর্থ, উপহার অবশ্যই ফেরত দিতে হবে, এবং কন্যাকে একটা বাসস্থানে পোষণ করতে হবে যতদিন পর্যন্ত সে বিয়ে না-করে অথবা প্রাপ্তবয়স্ক না-হয়। বাল্যবিবাহপ্রসূত সন্তানগণ বৈধ হিসেবে গণ্য, এবং আদালতগুলো শিশুদের সর্বোৎকৃষ্ট স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় মাথার রেখে মাবাবার জিম্মায় দেবে। যেকোনো ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক পুরুষ যে একটা শিশুর সঙ্গে বিয়েতে প্রবেশ করে অথবা যেকোনো একজন যে বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠানে নির্দেশ দেয় অথবা ঘটায়, তার দু-বছর পর্যন্ত কয়েদ অথবা একটা জরিমানা হতে পারে।[২৫]

প্রয়োগযোগ্যতা

ভারতের মুসলমান সংগঠনগুলোর দীর্ঘ যুক্তি [২৬] ছিল, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের বাল্যবিবাহ আইনের মতো যে ভারভীয় আইনগুলো এদেশের আইনসভায় পাস হয়েছিল, মুসলমানদের ওপর প্রয়োগ করবেননা, কারণ বিয়ে হল একটা ব্যক্তিগত আইনের বিষয়।(6)(8) দিল্লি উচ্চ আদালত, তথা অন্যান্য রাজ্যের উচ্চ আদালতগুলো অসম্মত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, দিল্লি আদালত নির্দেশ দেয় যে, দ্য প্রোহিবিশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট, ২০০৬ সকল ব্যক্তিগত আইন বাতিল করে এবং প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিককে শাসন করে।[২৭] নির্দেশটা অনুযায়ী একটা নিচু বয়সের বিয়ে, যখানে ছেলে অথবা মেয়েটা ১৬ বছরের বেশি বয়সী, বাতিল বিয়ে হবেনা কিন্তু বাতিলযোগ্য হবে, যেটা বৈধতা পাবে যদি না এরকম কোনো আদালত উপায়(গুলোর)ওপর অন্যথায় ব্যবস্থা না-নেওয়ার আদেশ দেয়। যেকোনো এক পক্ষের বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে, সেক্ষেত্রে বিয়ে বাতিল হয়, ভারতে সম্মতি দেওয়ার বয়স ১৮ বছর, ভারভীয় দণ্ডবিধির [২৭] ৩৭৬ ধারা মোতাবেক ১৮ বছরের কম বয়সীর সঙ্গে যৌনমিলন করা বিধিসম্মত অপরাধ। − ভারতের অন্যান্য বিভিন্ন উচ্চ আদালতগুলো - গুজরাত উচ্চ আদালতসহ,[২৮] কর্ণাটক উচ্চ আদালত [২৯] এবং মাদ্রাস উচ্চ আদালত - নির্দেশ দেয় আইনটা অন্য ব্যক্তিগত আইনের ওপর প্রভাব ফেলছে (মুসলমান ব্যক্তিগত আইনসহ)।

ঐতিহাসিক বিচার - ইন্ডিপেন্ডেন্ট থট ভার্সাস ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া

২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১১ অক্টোবর, আন্তর্জতিক শিশু কন্যা দিবসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট থট ভার্সাস ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া (ডব্লুপি সিভিল ৩৮২ অফ ২০১৩) ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৫ ধারার ২ ব্যতিক্রমকে বাদ দিয়েছে, যেটা বৈবাহিক বাল্যবিবাহের অন্তর্গত ধর্ষণকে মেনেছিল। উচ্চতম আদালত নির্দেশ দেয়, "ধর্ষণ আইনের ব্যতিক্রমটা ছিল পক্ষপাতমূলক, খামখেয়ালি এবং বিধিবহির্ভূত ... এটা শিশু কন্যার শারীরিক সংহতিকে লঙ্ঘন করে। যদি একজন পুরুষ ১৮ বছরর কমবয়সী একজন স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসঙ্গম করে, এটা একটা ধর্ষণের অপরাধ হবে। অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী এক বছরের মধ্যে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে।"

ভারতে বাল্যবিবাহের মধ্যে বৈবাহিক ধর্ষণ ছিল একটা দীর্ঘ আইনি টালবাহানা। ভারতে সহজাতভাবে বৈবাহিক ধর্ষণ একট অপরাধ ছিলনা; কিন্তু শিশুদের ব্যাপারে অবস্থাটা বিভ্রান্তিকর ছিল। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে শিশু অধিকার আইন নিয়ে কর্মরত এক সংস্থা ইন্ডিপেন্ডেন্ট থট - www.ithought.in - একটা জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) দায়ের করে। জনস্বার্থ মামলাটা ফৌজদারি আইনের ব্যতিক্রমকে (ধারা ৩৭৫, ভারতীয় দণ্ডবিধি, ১৮৬০) মোকাবেলা করে, যেটা প্রাপ্তবয়স্ককে ব্যতিক্রমী রেখে এবং ১৫-১৮ বছরের শিশু কন্যাকে তার স্বামী কর্তৃক বৈবাহিক ধর্ষণকে মান্যতা দেয়; শিশুদের প্রগতিশীল আইনি রক্ষকবচ দাবি করে যৌন অপরাধ আইন, ২০১২ এরকম যৌন সম্পর্ক অমান্য করে এবং এই ধরনের বৈবাহিক অপরাধকে উত্ত্যক্ত করা অপরাধের তকমা দেয়।

সিইডিএডব্লু

দ্য কনভেনশন অন দ্য এলিমিনেশন অফ অল ফর্মস অফ ডিস্ক্রিমিনেশন এগেইন্সট্ ওমেন, সাধারণভাবে বলা হয় সিইডিএডব্লু (মহিলাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের পক্ষপাতমূলক আচরণ আটকানোর সভা), মহিলাদের বিরুদ্ধাচরণ খতম করার এটা একটা আন্তর্জাতিক প্রস্তাব। অধ্যায় ১৬, বিয়ে এবং পারিবারিক জীবন, বিবৃত করে সকল মহিলা তথা পুরুষ, তাদের নিজস্ব সঙ্গী বাছাইয়ের অধিকার আছে, সমান দায়িত্ব আছে, এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে তাদের মধ্যে সম্পর্কের ব্যাপারে ও ক-টা বাচ্চা থাকবে। এই সভা বলে বাল্যবিবাহের আইনি সম্পর্ক অবশ্যই থাকবেনা, সকল কার্যকরতায় অবশ্যই একটা নিম্নতম বয়সের বাধ্যবধকতা থাকবে, এবং সমস্ত বিয়ে একটা সরকারি নথিভুক্তিকরণের[৩০] অন্তর্ভুক্ত হবে। ভারত ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই এই সভায় স্বাক্ষর করে কিন্তু একটা ঘোষণা করে, কারণ জাতির বৃহদাকার ও জনগণ, বিয়ের নথিভুক্তিকরণ বাস্তবে সম্ভব নয়।[৩১]

বাল্যবিবাহের পরিণতিসমূহ প্রসূতিদের আগে মৃত্যু

সন্তান উৎপাদনের জ্ঞান অল্প বা না-থাকার জন্যে যে সমস্ত মেয়ে কম বয়সে বিয়ে করত, তাদের অন্তঃস্বত্বা-সম্বন্ধীয় মৃত্যুকে জানা যায় ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সের বিবাহিত মেয়েদের মরণশীলতার বড়ো কারণ।[৩২] এধরনের মেয়েরা ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সর মেয়েদের চেয়ে দ্বিগুণভাবে শিশু জন্মকালে মারা যেত।[৩৩] ১৫ বছরের কমবয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য আরো পাঁচগুণ শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যু হোত।[৩৪]

শিশু স্বাস্থ্য

১৯ বছরের বেশি বয়সী মায়েদের চেয়ে ১৮ বছরের কমবয়সী মায়ের কোলে জন্ম নেওয়া শিশুদের ৬০ শতাংশের তাদের জন্মের প্রথম বছরে মারা যেত। যদি সেই শিশুরা বেঁচে যেত, তাদের আরো সম্ভাব্যভাবে জন্মের সময় কম ওজন, অপুষ্টি, এবং দেরিতে শারীরিক ও মানসিক উন্নয়ন হোত।[৩৫]

গর্ভাধানের পরিণতিসমূহ

দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেস এবং ম্যাক্রো ইন্টারন্যাশনাল ২০০৫ এবং ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে পরিচালিত তাদের একটা সমীক্ষায় বাল্যবিবাহতে বেশি গর্ভাধান, কম গর্ভাধান এবং দুর্বল গর্ভাধানের পরিণতির তথ্যাদি দেখিয়েছে। ৯০.৮ শতাংশ যুবতী বিবাহিত মেয়েরা তাদের প্রথম সন্তান ধারণের আগে কোনো গর্ভনিরোধক ব্যবহার করেনা। ২৩.৯ শতাংশ বিয়ের প্রথম বছরেই একটা সন্তান ধারণ করে। ১৭.৩ শতাংশ তাদের বিয়ের পরবর্তী সময়কালে তিন অথবা তার বেশি সন্তান ধরে। ২৩ শতাংশ দ্রুত অনবরত শিশুর জন্ম দেয়, এবং ১৫.২ শতাংশের অপ্রত্যাশিত গর্ভাধান হয়ে যায়। ১৫.৩ শতাংশের গর্ভ ছাঁটাই হয় (মৃতজাত, গর্ভস্রাব অথবা গর্ভপাতের কারণে)।[৩৬] শহরাঞ্চলের চেয়ে ঘিঞ্জি বস্তিতে গর্ভাধানের হার প্রবল।[৩৭]

হিংস্রতা

বাল্যবিবাহতে নবীন মেয়েদের বয়স্ক মহিলাদের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে ঘরোয়া হিংস্রতার অভিজ্ঞতা ছিল। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রিসার্চ অন ওমেন ভারতে এক সমীক্ষায় দেখিয়েছে যে, ১৮ বছরের কম বয়সী বিবাহিত মেয়েদের স্বামীরা দ্বিগুণভাবে তাদের পেটাত, চড়চাপড় মারত, অথবা হুমকি দিত[৩৮] এবং তিনগুণভাবে তারা যৌন হিংস্রতার ভুক্তভোগী হোত।[৩৯] নববধূরা প্রায়শই যৌন অপব্যবহার এবং আঘাত-পরবর্তী চাপের লক্ষণ দেখাত।[৩৮]

ভারতে প্রতিরোধ প্রকল্প

অপনি বেটি, অপনা ধন (এবিডি), বাংলা করলে দাঁড়ায় 'আমার কন্যা, আমার সম্পদ' হল ভারতে প্রথম শর্তাধীনে নগদ হস্তান্তর প্রকল্পসমূহ যেটা পুরো জাতির দেরিতে বিয়েগুলোতে উৎসর্গিত। ১৯৯৪ খ্রস্টাব্দে ভারত সরকার হরিয়ানা রাজ্যে এই প্রকল্প চালু করেছিল। একটা মায়ের প্রথম, দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শিশুর জন্মের ১৫ দিনের মধ্যে প্রসব-পরবর্তী খরচ নির্বাহের জন্যে তাদের প্রাপ্তি ৫০০ টাকা (US$ 11)। এর সঙ্গে সরকার মেয়ের নামে ২৫০০ টাকার (US$ 55) একটা দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয় বন্ডে বিনিয়োগ করে দেয়, যেটার মূল্য দাঁড়ায় ২৫০০০ টাকা (US$ 550), ১৮ বছরের জন্মদিনের পর যদি বিয়ে না-করে তবেই পাবে।বাল্যবিবাহ এবং বয়ঃসন্ধির মেয়ে সম্বন্ধে বিশারদ অঞ্জু মালহোত্রা এই প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, "অন্য কোনো শর্তাধীন নগদ হস্তান্তর প্রকল্পের এই দেরিতে বিয়ে দেওয়ার প্রকল্পের মতো কার্যকরতা ছিলনা ... এটা মাবাবাকে তাদের শিশুকন্যার মূল্যবোধে উৎসাহদানকারী এক পদক্ষেপ।"

দ্য ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রিসার্চ অন ওমেন ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের 'অপনি বেটি অপনা ধন' প্রকল্পের মূল্যায়ন করবে। যখন প্রকল্পের গোড়ায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ১৮ হবে, এটা দেখা যে, এই প্রকল্প বিশেষ করে নগদ হস্তান্তর মাবাবাদের তাদের মেয়েদের দেরিতে বিয়ে দেওয়ার উৎসাহ পেয়েছে। 'অপনি বেটি অপনা ধন' প্রকল্পের পরিচালক প্রণিতা অচ্যুত বলেন, "আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, নগদ হস্তান্তর প্রকল্পগুলো মেয়েদের বিদ্যালয়মুখি এবং অনাক্রম্য করছে, কিন্তু আমরা এখনো এমন কোনো প্রমাণ পাইনি যে, এই কৌশল বিয়ে প্রতিরোধ করেছে।" যদি হরিয়ানা রাজ্যের উদ্যোগ মূল্যবান প্রমাণিত হয়, তাহলে শুধু ভারতেই নয়, সব ক্ষেত্রেই অনেক মেয়ের জীবনে সম্ভাবনাময় পরিবর্তন আনতে পারে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. The Prohibition of Child Marriage Act of 2006 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে The Gazette of India, Ministry of Law and Justice, Government of India (January 11, 2007)
  2. "Definition of forced and child marriage"UN Women। ২০১২। 
  3. Abgeliki Laiou (1993), Coercion to sex and marriage in ancient and medieval societies, Washington, DC, pages 85-190
  4. History of Medieval India: From 1000 A.D. to 1707 A.D, page 131, Radhey Shyam Chaurasia, Atlantic Publishers
  5. Women and the Law, Anjani Kant, APH Publishing, page 8
  6. Sanyukta, M.; M. Greene and A. Malhotra (2003), Too Young to Wed: The Lives, Rights, and Health of Young Married Girls, ICRW, Washington D.C.
  7. B Nagi, Child Marriage in India: A Study of Its Differential Patterns in Rajasthan, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১৭০৯৯৪৬০২978-8170994602
  8. Child Marriage and Poverty ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে ICRW
  9. Targeting Girls in the Name of Tradition: Child Marriage Melanne Verveer, Ambassador-at-Large for Global Women's Issues, US Department of State, (July 15, 2010)
  10. "Child Marriage Facts and Figures"। ২৮ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  11. "United Nations Statistics Division - Demographic and Social Statistics" 
  12. A Handbook of Statistical Indicators of Indian Women ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে Ministry of Women and Child Welfare, Govt of India (2007)
  13. Raj, A.; Saggurti, N.; Balaiah, D.; Silverman, J. G. (২০০৯)। "Prevalence of child marriage and its effect on fertility and fertility-control outcomes of young women in India: a cross-sectional, observational study"The Lancet373 (9678): 1883–1889। ডিওআই:10.1016/s0140-6736(09)60246-4পিএমআইডি 19278721পিএমসি 2759702অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  14. Jasodhara Bagchi et al., The Changing Status of Women in West Bengal, 1970-2000: The Challenge Ahead, SAGE Publications, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৬১৯৩২৪২০978-0761932420, Table 1.10, page 29, rows for India totals
  15. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; censusindia.gov.in নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  16. Percentage of Female by age at effective marriage and by residence India and bigger States, 2011 Chapter 2, Population Composition, Table Statement 12, India totals for < 18, 2011 Census of India, Government of India (2013), page 26
  17. Mean age at effective marriage of Female by residence India and bigger States, 2011 Chapter 2, Population Composition, Table Statement 13, India totals for All ages, 2011 Census of India, Government of India (2013), page 27
  18. Women and men in India 2012 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখেWayback Machine. CSO/Census India 2011, Government of India, See page xxi, Highlights item 5
  19. National Family Health Survey - India, International Institute for Population Sciences and Government of India (2009), see Table 6.1
  20. Goswami, Ruchira (২০১০)। "Child Marriage in India: Mapping the Trajectory of Legal Reforms" 
  21. (34)
  22. (35)
  23. (37)
  24. (35)(37)
  25. (38)
  26. (9)(39)
  27. (40)
  28. (41)
  29. (42)
  30. (44)
  31. (45)
  32. (47)
  33. (48)
  34. (49)(50)
  35. (13)(50)
  36. (51)
  37. (52)
  38. (49)
  39. (53)