ভারতের বিচারব্যবস্থা
ভারতের বিচারব্যবস্থা |
---|
![]() |
ভারতের আইন |
ভারতের বিচার বিভাগ ( ISO : Bhārata kī Nāyāpālikā ) হল আদালতগুলির একটি ব্যবস্থা, যা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে আইন ব্যাখ্যা করে এবং প্রয়োগ করে। ভারতের সংবিধান ভারতে একটি একক এবং অবিভক্ত বিচার বিভাগের ধারণা প্রদান করে। ভারত মূলত একটি মিশ্র আইনি ব্যবস্থা ব্যবহার করে, যা মূলত সাধারণ আইনের ওপর ভিত্তি করে গঠিত। এর সঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে দেওয়ানি আইন এবং নির্দিষ্ট ধর্ম-নির্দিষ্ট ব্যক্তিগত আইনও রয়েছে।
![]() মূলমন্ত্র: যতো ধর্মস্ততো জয়ঃ যেখানে ন্যায় আছে, সেখানেই জয়। | |
পরিষেবার সারসংক্ষেপ | |
---|---|
পূর্বের নাম | ফেডারেল বিচারব্যবস্থা |
প্রতিষ্ঠিত | মেয়র কোর্ট, মাদ্রাজ (১৭২৬) |
দেশ | ![]() |
প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান | ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি (ভোপাল)[১] রাজ্য বিচার একাডেমি |
নিয়ন্ত্রক সংস্থা | সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট |
আইনি সত্তা | বিচারব্যবস্থা |
দায়িত্বসমূহ | বিচারকার্য পরিচালনা জনস্বার্থ মামলা সংবিধানের রক্ষক |
ভারতের আদালতসমূহের স্তরক্রম | ১. সুপ্রিম কোর্ট ২. হাইকোর্ট ৩. জেলা আদালত ৪. এক্সিকিউটিভ / রেভিনিউ কোর্ট |
পদবী | বিচারপতি বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট - বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক |
ক্যাডারের জনবল | মোট বিচারক ২৩,৭৯০ জন (সুপ্রিম কোর্টে ৩৪ জন, হাইকোর্টে ১,০৭৯ জন, অধস্তন আদালতে ২২,৬৭৭ জন) |
নিয়োগ প্রক্রিয়া | ভারতের রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারকদের নিয়োগ দেন (কলেজিয়ামের সুপারিশ অনুযায়ী) রাজ্যপাল অধস্তন বিচার বিভাগের নিয়োগ দেন (বিচার বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর) |
বেতন | ₹৭৭,৮৪০ - ₹২,৮০,০০০ |
সংগঠনসমূহ | অল ইন্ডিয়া জাজেস অ্যাসোসিয়েশন[২] |
বিচারব্যবস্থার প্রধান | |
ভারতের প্রধান বিচারপতি | বিচারপতি বি. আর. গাভাই (৫২তম প্রধান বিচারপতি) |
ভারতের বিচার বিভাগ তিনটি স্তরে বিভক্ত, যার সাথে আরও কিছু সহায়ক অংশ রয়েছে:
- সুপ্রিম কোর্ট: এটি ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এবং দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় ধরনের মামলার জন্য এটিই চূড়ান্ত আপিল আদালত।
- হাইকোর্ট: প্রতিটি রাজ্যের শীর্ষ বিচার বিভাগীয় আদালত হলো হাইকোর্ট, যা রাজ্যের প্রধান বিচারপতি দ্বারা পরিচালিত হয়। হাইকোর্টগুলো তাদের নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলা ও দায়রা আদালত দ্বারা পরিচালিত নিম্ন আদালতগুলির একটি ব্যবস্থার তত্ত্বাবধান করে।
- জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং রেভিনিউ আদালত: এই আদালতগুলি সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে পরিচালনা করেন। যদিও কার্যনির্বাহী আদালতগুলি বিচার বিভাগের অংশ নয়, তবে বিভিন্ন বিধান এবং রায় হাইকোর্ট ও দায়রা বিচারকদের তাদের কার্যক্রম পরিদর্শন বা নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে।
ভারতের প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের অন্যান্য বিচারপতিরা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত কলেজিয়াম ব্যবস্থার সুপারিশে ভারতের রাষ্ট্রপতি র্তৃক নিযুক্ত হন। নিম্ন আদালতের বিচারপতিরা সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের সুপারিশে রাজ্যপালদের দ্বারা নিযুক্ত হন।
কেন্দ্রীয় পর্যায়ে, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় আইন প্রণয়ন এবং বিচার বিভাগ সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে সংসদের সাথে কাজ করার জন্য দায়ী। যেকোনো আদালতের বিষয় নিয়ে কাজ করার এবং সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিভিন্ন বিচারপতিদের নিয়োগের বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করার এখতিয়ার এই মন্ত্রকের রয়েছে। রাজ্য স্তরে, রাজ্যগুলির সংশ্লিষ্ট আইন বিভাগগুলি হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালত সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করে।
সংবিধান
[সম্পাদনা]ভারতের সংবিধান বিচার বিভাগকে 'আইনের অভিভাবক' হিসেবে কাজ করার ক্ষমতা দিয়েছে। বিচার বিভাগের ভূমিকা, ক্ষমতা, কার্যকারিতা এবং কর্মকর্তাদের নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বিধান সংবিধানে রয়েছে। প্রধান বিধানগুলি হলো:
- পঞ্চম অধ্যায় - চতুর্থ পরিচ্ছেদ - ইউনিয়ন বিচার বিভাগ অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট - নিয়োগ ও অপসারণ, ভূমিকা ও কার্যকারিতা
- ষষ্ঠ অধ্যায় - পঞ্চম পরিচ্ছেদ - হাইকোর্ট - নিয়োগ ও অপসারণ, ভূমিকা ও কার্যকারিতা
- ষষ্ঠ অধ্যায় - ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - অধস্তন আদালত - নিয়োগ ও অপসারণ, ভূমিকা ও কার্যকারিতা
- অনুচ্ছেদ ৫০ - বিচার বিভাগের স্বাধীনতা - বিচার বিভাগকে নির্বাহী শাখা থেকে পৃথক করে
- এছাড়াও, আদালতের দায়িত্ব সম্পর্কিত অন্যান্য অংশ এবং অনুচ্ছেদগুলিতেও বিভিন্ন বিধান রয়েছে।
বিচার বিভাগ আইনি বিষয়ে সালিশকারী হিসেবে কাজ করে। এটি সংবিধানের প্রহরী হিসেবে কাজ করে, আইনসভা বা নির্বাহী বিভাগের কোনো কাজ সংবিধান দ্বারা তাদের জন্য নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করছে কিনা তা পরীক্ষা করে।[৩] এটি রাষ্ট্রের কোনো অঙ্গ দ্বারা জনগণের মৌলিক অধিকার, যা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত, লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। এটি কেন্দ্র ও একটি রাজ্য বা রাজ্যগুলির মধ্যে ক্ষমতার প্রয়োগের ভারসাম্যও বজায় রাখে।
বিচার বিভাগকে সরকার, নাগরিক বা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অন্য শাখাগুলির দ্বারা সৃষ্ট চাপ থেকে অপ্রভাবিত থাকার আশা করা হয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের একটি মৌলিক এবং অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য।[৪][৫] এরকম একটি সুরক্ষা হল যে কোনও মন্ত্রী রাষ্ট্রপতির কাছে এমন কোনও নাম সুপারিশ করতে পারবেন না, [৬][৭] যিনি চূড়ান্তভাবে কলেজিয়াম ব্যবস্থা দ্বারা সুপারিশকৃত তালিকা থেকে বিচারক নিয়োগ করেন। সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতিদের একবার নিযুক্ত হওয়ার পর পদ থেকে অপসারণ করা যায় না, যদি না পার্লামেন্টের কোনো কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য অসদাচরণ বা অক্ষমতার ভিত্তিতে অপসারণের প্রস্তাবকে সমর্থন করেন।[৮][৯] একজন ব্যক্তি যিনি কোনো আদালতের বিচারক ছিলেন, তিনি সেই আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে ওকালতি করতে পারবেন না।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন][ তথ্যসূত্র প্রয়োজন ]
বিচারকের সংখ্যা বলতে বোঝায় যে একটি আদালতে সর্বোচ্চ কতজন বিচারক থাকতে পারবেন।[১০]
নিয়োগ
[সম্পাদনা]সংবিধানের পঞ্চম ও ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ অনুসারে, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির সম্মতিক্রমে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ করেন। বাস্তবে, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ 'কলেজিয়াম'-এ উল্লিখিত নীতিগুলি অনুসরণ করে করা হয়। রাষ্ট্রপতি কলেজিয়াম ব্যবস্থা কর্তৃক সুপারিশকৃত একটি তালিকা থেকে নির্বাচন করেন - এই কলেজিয়াম হলো প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত একটি বদ্ধ দল। 'কলেজিয়াম'-এর আগে, রাষ্ট্রপতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সুপারিশক্রমে বিচারপতিদের নিয়োগ করতেন। ১৯৯৩ সালে, দ্বিতীয় বিচারক মামলার ফলস্বরূপ, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ কর্তৃক সুপারিশকৃত একটি নাম প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা পায়। এই ক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলির জন্য নির্বাহী বিভাগ তখন থেকেই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।[১১][১২][১৩]
কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তগুলি আইনি তদন্তের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহেশ চন্দ্র গুপ্ত বনাম ভারত সরকার ও অন্যান্য মামলায় আদালত বলেছিল যে কে বিচারক হতে পারেন তা বিচারের বিষয়, এবং তাই যে কোনও ব্যক্তির প্রার্থীর যোগ্যতা সম্পর্কে আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার রয়েছে। তবে, আদালত আরও লিখেছে যে কে বিচারক হবেন তা মতামতের বিষয় এবং এটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত একজন বিচারকের নিয়োগ কলেজিয়াম দ্বারা একটি বৈধ পরামর্শের বিষয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আদালত এর মতামত গঠনের জন্য ব্যবহৃত বিষয়বস্তু বা উপাদান পরীক্ষা করতে পারবে না।[১৪]
সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের নিয়োগ সংক্রান্ত ঐতিহাসিক নিয়মের বিপরীতে, অধস্তন আদালতের বিচারপতিদের নিয়োগ সংবিধান এবং অন্যান্য আইন ও বিধি অনুসারে পরিচালিত হয়। নিয়োগ সাধারণত একটি নির্দিষ্ট রাজ্যের পাবলিক সার্ভিস কমিশন দ্বারা করা হয়। তবে, কিছু রাজ্যে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট অধস্তন আদালতের বিচারপতিদের নিয়োগ করতে পারে। নিয়োগের উৎস যাই হোক না কেন, বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া একই এবং এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে হয়। জুনিয়র ডিভিশনের দেওয়ানি বিচারকরা প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসে বিচারিক পদে উন্নীত হতে পারেন, যখন কমপক্ষে ৭ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রবেশ স্তরের জেলা বিচারকরা উচ্চতর বিচার বিভাগীয় সেবা (HJS) পরীক্ষা সম্পন্ন করে পদোন্নতি পেতে পারেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন][ তথ্যসূত্র প্রয়োজন ]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ভারতে জুরি ব্যবস্থার ইতিহাস ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক সময়কাল থেকে শুরু হয়। ১৬৬৫ সালে, মাদ্রাজে বারোজন ইংরেজ ও পর্তুগিজ জুরি সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি পেটি জুরি অ্যাসেন্টিয়া ডাউসকে তার ক্রীতদাস ভৃত্যকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়।[১৫] ভারতে কোম্পানির শাসনামলে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (EIC) নিয়ন্ত্রণাধীন ভারতীয় অঞ্চলগুলিতে কোম্পানি শাসনের সময় দ্বৈত আদালত ব্যবস্থায় জুরি বিচার কার্যকর করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্সি শহরগুলিতে (যেমন কলকাতা, বোম্বে এবং মাদ্রাজ), ক্রাউন কোর্টগুলি ফৌজদারি মামলায় ইউরোপীয় এবং ভারতীয় আসামিদের বিচার করার জন্য জুরি ব্যবহার করত। প্রেসিডেন্সি শহরগুলির বাইরে, ইআইসি কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত কোম্পানি কোর্টগুলি জুরি ছাড়াই ফৌজদারি এবং দেওয়ানি উভয় মামলার বিচার করত।
১৮৬০ সালে, ব্রিটিশ ক্রাউন যখন ভারতে ইআইসির দখলকৃত অঞ্চলগুলির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে, তখন ভারতীয় দণ্ডবিধি গৃহীত হয়। এক বছর পরে, ফৌজদারি কার্যবিধি গৃহীত হয়।[১৬] এই বিধানগুলি নির্দেশ করে যে ফৌজদারি জুরি শুধুমাত্র প্রেসিডেন্সি শহরগুলির হাইকোর্টগুলিতে বাধ্যতামূলক ছিল; ব্রিটিশ ভারতের অন্যান্য সমস্ত অংশে, এগুলি ঐচ্ছিক এবং বিরল ছিল। যদি আসামিরা ইউরোপীয় বা আমেরিকান হতো, তবে জুরির অন্তত অর্ধেককে ইউরোপীয় বা আমেরিকান পুরুষ হতে হতো। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল যে এই ধরনের মামলায় জুরিদের "আসামির অনুভূতি এবং স্বভাব সম্পর্কে পরিচিত" হতে হবে।
বিংশ শতাব্দীতে, ব্রিটিশ ভারতে জুরি ব্যবস্থা ঔপনিবেশিক কর্মকর্তা এবং স্বাধীনতা কর্মী উভয়ের কাছ থেকে সমালোচনার মুখে পড়েছিল।[১৭] ১৯৫০ সালের ভারতীয় সংবিধানে এই ব্যবস্থার কোনও উল্লেখ ছিল না এবং স্বাধীনতার পরেও অনেক ক্ষেত্রে এটি বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে, ভারতের আইন কমিশন ভারত সরকারের কাছে জমা দেওয়া ১৪তম কমিশনের প্রতিবেদনে এটি বিলুপ্ত করার সুপারিশ করে। ভারতে জুরি বিচার ১৯৬০-এর দশকে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়, যার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ১৯৭৩ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির মাধ্যমে, যা বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
স্বাধীন বিচার বিভাগের বিকাশ
[সম্পাদনা]১৯৪৫ সালে প্রকাশিত সাপ্রু কমিটির রিপোর্টে বিচার বিভাগকে বিস্তারিতভাবে বিবেচনা করে এবং ১৯৩৫ সালের ভারত সরকার আইনে যা বলা হয়েছিল তা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছিল: ভারতের একটি ফেডারেল আদালত সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। বিচারব্যবস্থাকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক রাখার উদ্দেশ্যে সাপ্রু কমিটি কিছু প্রস্তাব দেয়। তারা সুপারিশ করে, বিচারকদের নির্দিষ্ট বেতন ও নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকতে হবে। তাদের কেবলমাত্র গুরুতর অসদাচরণের জন্যই অপসারণ করা যাবে। বিচারপতিদের নিয়োগ করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং নিয়োগের সময় ভারতের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। ১৯৪৬ সালে গণপরিষদের অংশ হিসেবে বিচারিক বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করার জন্য নিযুক্ত কমিটি সাপ্রু রিপোর্ট দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল, যদিও রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ ছিল। তবে, জওহরলাল নেহেরু সাপ্রু কমিটির প্রস্তাবগুলিকে সমর্থন করেছিলেন। ১৯৪৯ সালে, নেহরু বলেছিলেন যে গণপরিষদের বিচারপতিদের "সর্বোচ্চ সততা" সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়া উচিত, যারা "নির্বাহী সরকার এবং তাদের পথে আসা যে কারো বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবেন।" বিআর আম্বেদকর বিজোর দিয়ে বলেন, একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। তিনি বলেন, "এই সভায় এ নিয়ে মতভেদ থাকা উচিত নয় যে আমাদের বিচারব্যবস্থা নির্বাহী বিভাগ থেকে স্বাধীন হতে হবে, এবং একইসঙ্গে সেটি নিজে থেকেই সক্ষম হতে হবে।" পরিশেষে, সংবিধানে বলা হয়েছে যে "ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতিটি বিচারপতি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর ও সিলমোহরযুক্ত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। এই নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতি যাদের পরামর্শ প্রয়োজন বলে মনে করবেন, সেই সর্বোচ্চ আদালত ও রাজ্যের উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করবেন।" তবে যদি প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য কোনও বিচারপতি নিয়োগ করা হয়, তাহলে ভারতের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করা অবশ্যই প্রয়োজন।[১৮]
বিচার বিভাগীয় ক্রমপরম্পরা
[সম্পাদনা]আদালতের কাঠামো
[সম্পাদনা]সুপ্রিম কোর্ট
[সম্পাদনা]
সুপ্রিম কোর্ট হল সংবিধান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। সংবিধানে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট একটি কেন্দ্রীয় আদালত, সংবিধানের অভিভাবক এবং চূড়ান্ত আপিলের আদালত। সংবিধানের ১২৪ থেকে ১৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের গঠন ও এখতিয়ার নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধানত এটি একটি আপিল আদালত, যেখানে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। পাশাপাশি, এটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় রিট পিটিশন গ্রহণ করে। অনুচ্ছেদ ৩২-এর অধীনে যে কোনও নাগরিক সংবিধানগত প্রতিকার চেয়ে আবেদন করলে, অথবা যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ মামলার ত্বরিত নিষ্পত্তি প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রেও এই আদালত হস্তক্ষেপ করে।[১৯]
সুপ্রিম কোর্টে একজন প্রধান বিচারপতি ছাড়াও ৩৩ জন বিচারপতি রয়েছেন।
এই আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় ২৬ জানুয়ারি ১৯৫০ তারিখে, যেদিন ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়। এরপর থেকে সুপ্রিম কোর্ট ২৪,০০০-রও বেশি রায় দিয়েছে যেগুলি রিপোর্ট আকারে সংরক্ষিত।[২০]
সুপ্রিম কোর্টে বিচারকার্য শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় পরিচালিত হয়। সংবিধানের ১৪৫ অনুচ্ছেদের আওতায় ১৯৬৬ সালের "সুপ্রিম কোর্ট রুলস" প্রণয়ন করা হয়, যার মাধ্যমে আদালতের কার্যপ্রণালি ও পদ্ধতি নির্ধারিত হয়।[২১][২২] ১৪৫ অনুচ্ছেদটি সংশোধিত হয়েছে এবং বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট বিধিমালা, ২০১৩ দ্বারা পরিচালিত হয়।[২৩][স্পষ্টকরণ প্রয়োজন][ <span title="Do the rules govern the amendment? Or do they reflect the amendment and govern the court? (July 2022)">স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন</span> ]
উচ্চ আদালত
[সম্পাদনা]ভারতের ২৫টি হাইকোর্ট রাজ্য স্তরে কার্যরত।[২৪] সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ও আদেশসমূহ তাদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ এবং বাধ্যতামূলক। এই হাইকোর্টগুলির এখতিয়ার একটি রাজ্য, একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বা একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপর প্রসারিত। সংবিধানের ষষ্ঠ অংশের পঞ্চম অধ্যায়ের অধ্যায়ের ২১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্টসমূহকে সংবিধানিক আদালত হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে।
হাইকোর্টগুলি রাজ্যের প্রধান দেওয়ানি আদালত (অধস্তন জেলা আদালতগুলির পাশাপাশি)। তবে দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা কেবল তখনই প্রযোজ্য হয়, যখন অধস্তন আদালত অর্থমূল্য বা ভূখণ্ডগত সীমার কারণে সেই মামলাগুলি বিচার করতে অক্ষম। হাইকোর্টগুলি নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে মূল এখতিয়ার পেতে পারে, যদি তা কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রীয় আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, কোম্পানি আইন সম্পর্কিত মামলাগুলি কেবলমাত্র হাইকোর্টেই দায়ের করা যায়।
বেশিরভাগ হাইকোর্টের প্রধান কাজ হল অধস্তন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আপিল নিষ্পত্তি করা এবং সংবিধানের ২২৬ অনুচ্ছেদের অধীনে রিট পিটিশনের শুনানি করা। রিট এখতিয়ারও হাইকোর্টের একটি মূল এখতিয়ার। প্রতিটি হাইকোর্টের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডগত এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা অঞ্চলের ভিত্তিতে ভিন্ন হয়।
হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি। এই নিয়োগের আগে তিনি ভারতের প্রধান বিচারপতি, সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজ্যপালের সঙ্গে পরামর্শ করেন। একটি হাইকোর্টে কতজন বিচারপতি নিয়োগ করা হবে, তা নির্ধারিত হয় দুইটি হিসাবের যেকোনও একটির ভিত্তিতে—গত পাঁচ বছরে প্রধান মামলাগুলির গড় দায়েরসংখ্যা জাতীয় গড় দিয়ে ভাগ করে অথবা সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টে প্রতি বিচারপতি প্রতি বছরে যতগুলি প্রধান মামলা নিষ্পত্তি করেছেন তার গড় হার অনুসারে; এদের মধ্যে যেটি বেশি হয় সেটিকে গ্রহণ করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন][ তথ্যসূত্র প্রয়োজন ]
মাদ্রাজ হাইকোর্ট হল ভারতের প্রাচীনতম হাইকোর্ট, এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২৬ জুন ১৮৬২ সালে। অপরদিকে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট হল দেশের বৃহত্তম হাইকোর্ট, যেখানে ১৬০ জন বিচারপতি কর্মরত আছেন।
যেসব হাইকোর্টে মামলার সংখ্যা অত্যধিক, সেখানে তাদের স্থায়ী বেঞ্চ (অথবা আদালতের একটি শাখা) থাকে। দূরবর্তী অঞ্চলের মামলাকারীদের সুবিধার জন্য ‘সার্কিট বেঞ্চ’ ব্যবস্থা চালু আছে, যেখানে বিচারপতিরা নির্দিষ্ট দিনে সেই অঞ্চলে গিয়ে শুনানি করেন।[২৫]
জেলা / অধস্তন আদালতসমূহ
[সম্পাদনা]ভারতের জেলা আদালতসমূহ প্রতিটি জেলা বা একাধিক জেলার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার দ্বারা স্থাপিত হয়। এটি সংশ্লিষ্ট এলাকার মামলার পরিমাণ ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। এই আদালতসমূহ সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাইকোর্টের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। জেলা আদালতের রায় হাইকোর্টে আপিলযোগ্য।[২৬]
জেলা আদালতের প্রধান একজন জেলা জজ, যিনি হাইকোর্টের পরামর্শে রাজ্যপাল কর্তৃক নিযুক্ত হন। কাজের চাপ অনুসারে অতিরিক্ত জেলা জজ এবং সহকারী জেলা জজও নিযুক্ত হতে পারেন। অতিরিক্ত জেলা জজের জেলা জজের সমতুল্য এখতিয়ার রয়েছে। [২৭] যখন একজন জেলা জজ রাজ্য সরকার কর্তৃক "মহানগর এলাকা" মনোনীত একটি শহরে একটি জেলা আদালতের সভাপতিত্ব করেন, তখন তাকে "মহানগর দায়রা জজ" বলা হয়[২৮]
জেলা আদালতের অধস্তন আদালতগুলির সমস্ত বিষয়ে আপিলের এখতিয়ার রয়েছে। দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে অধস্তন আদালতগুলি (ক্রমবর্ধমান ক্রমে) হলো জুনিয়র সিভিল জজ কোর্ট, প্রিন্সিপাল জুনিয়র সিভিল জজ কোর্ট, সিনিয়র সিভিল জজ কোর্ট (সাব-কোর্টও বলা হয়)। ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে অধস্তন আদালতগুলি (ক্রমবর্ধমান ক্রমে) হলো, দ্বিতীয় শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। পারিবারিক আদালতগুলি বৈবাহিক বিরোধ নিয়ে কাজ করে।
পারিবারিক আদালত এবং মহিলা আদালতের বিষয়গুলি প্রিন্সিপাল জজ দ্বারা পরিচালিত হয়। এই পদে নিযুক্ত বিচারপতিরা জেলা জজদের পুল থেকে আসেন। মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ এবং কিছু অন্যান্য রাজ্যে, বিচারপতিদের অবসরপ্রাপ্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পুল থেকে সরাসরি বা পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়।
দেওয়ানি আদালতের কাঠামো
[সম্পাদনা]- ভারতের সুপ্রিম কোর্ট (সর্বোচ্চ আপিল আদালত)
- উচ্চ আদালত (রাজ্যের সর্বোচ্চ আপিল আদালত)
মহানগর এলাকা:
- জেলা আদালত
- অতিরিক্ত জেলা আদালত
- সিনিয়র সিভিল জজ আদালত
- জুনিয়র সিভিল জজ আদালত
জেলা স্তর:জেলা পর্যায়ের দেওয়ানি আদালতগুলি নীচে দেওয়া হল (ঊর্ধ্বক্রম):
- জেলা আদালত
- অতিরিক্ত জেলা আদালত
- উপ-আদালত (অধস্তন বিচারকদের আদালত)
- অতিরিক্ত উপ-আদালত (অতিরিক্ত অধস্তন বিচারকদের আদালত)
- মুন্সিফ আদালত/জুনিয়র সিভিল জজ আদালত
ফৌজদারি বিচার বিভাগের কাঠামো
[সম্পাদনা]- ভারতের সুপ্রিম কোর্ট (সর্বোচ্চ আপিল আদালত)
- উচ্চ আদালত (রাজ্যগুলিতে সর্বোচ্চ আপিল আদালত)
মহানগর এলাকা
- প্রধান মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম)
- মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (এমএম)
জেলা স্তরজেলা পর্যায়ের ফৌজদারি আদালতগুলি নীচে দেওয়া হল (ঊর্ধ্বক্রম):
- জেলা ও দায়রা আদালত
- অতিরিক্ত দায়রা আদালত
- সহকারী দায়রা আদালত
- চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিজেএম কোর্ট)
- অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত
- প্রথম শ্রেণীর বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (জেএফসিএম আদালত)
- দ্বিতীয় শ্রেণীর বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত
নির্বাহী আদালত
[সম্পাদনা]বিচার বিভাগের স্তরের নিচে থাকে কার্যনির্বাহী স্তর। ভারতের সংবিধানের ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার বিভাগ এবং কার্যনির্বাহী বিভাগকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা আছে।[২৯] ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, কার্যনির্বাহী আদালতকে ছোটখাটো অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে এই ক্ষমতা থাকার মানে এই নয় যে, তারা বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিচারবিভাগীয় ও কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট—দুজনের কাজ আলাদা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। সিআরপিসি-র ২০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, প্রতিটি মহানগর এবং প্রতিটি জেলায় রাজ্য সরকার কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে পারে। রাজ্য সরকার চাইলে একজন কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে জেলা শাসক হিসেবে নিয়োগ করতে পারে। এছাড়া, অন্য কোনো কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অতিরিক্ত জেলা শাসক হিসেবেও নিয়োগ করা যায়। এই নিয়োগপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট জেলা শাসকের মতোই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।
যদি কোনো জেলায় জেলা শাসকের পদ খালি থাকে, তাহলে যিনি অস্থায়ীভাবে জেলার প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তিনিও জেলা শাসকের মতোই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।রাজ্য সরকার চাইলে কোনো উপ-বিভাগের দায়িত্বও একজন কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দিতে পারে। এই দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয় উপ-বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। র্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মূল কাজ হলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ থেকে ১১০, ১৩৩, ১৪৪, ১৪৫ এবং ১৪৭ ধারাগুলির অধীনে তারা এই কাজ করে থাকেন। তাদের কাজের মধ্যে লাইসেন্স বাতিল বা অনুমোদন দেওয়া, জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, অথবা রাজ্য সরকারের নির্দেশে অন্য যেকোনো প্রশাসনিক কাজ করা অন্তর্ভুক্ত।
সিআরপিসি-র ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, রাজ্য সরকার বিশেষ কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে পারে।
সিআরপিসি-র ২০(৫) নম্বর ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো জেলা সরকার কর্তৃক "কমিশনারেট" হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তাহলে পুলিশ কমিশনার পদে থাকা ব্যক্তিকে কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যায়। যদিও, পুলিশের মহাপরিচালক পদের মর্যাদা কমিশনারের সমান, তবুও তিনি কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের (বিশেষ) ক্ষমতা তখনই প্রয়োগ করতে পারেন, যখন তার পদবী আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনার হিসেবে পরিবর্তিত হয়। কার্যনির্বাহী আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যায় জেলার দায়রা বিচারক বা অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের আদালতে, অথবা উচ্চ আদালতে।

রাজস্ব আদালত
[সম্পাদনা]ভূমি রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিষ্পত্তি করার জন্য প্রতিটি রাজ্যে রাজস্ব আদালত স্থাপন করা হয়েছে। এই আদালতগুলি মূলত নিম্নলিখিত বিষয়গুলির বিচার করে—
- ভূমি রাজস্ব
- লিজ (মালিকানার মতো ব্যাপার, কিন্তু সম্পূর্ণ মালিকানা নয়)
- সম্পত্তির সীমানা
- উত্তরাধিকার
- জমি হস্তান্তর
- জমি ভাগ-বাটোয়ারা
- অবৈধ দখল সরানো, দখলদার উচ্ছেদ, এবং কিছু রাজ্যে ঘোষণামূলক মামলা
রাজস্ব আদালত একটি আধা-বিচারিক প্রতিষ্ঠান।এই আদালতের ক্ষমতা সীমিত এবং নির্দিষ্ট কিছু দেওয়ানি বিষয়ে কাজ করতে পারে।দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা অনুযায়ী, রাজস্ব আদালত সেইসব মামলার বিচার করতে পারে যেগুলি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত জমির ভাড়া, রাজস্ব বা লাভের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে, এই আদালতের আওতায় সাধারণ দেওয়ানি আদালতের বিষয়বস্তু পড়ে না। এই কারণে, দেওয়ানি আদালতের কিছু বিচারিক ক্ষমতা রাজস্ব আদালতের বিষয়ে প্রযোজ্য নয়। এগুলো দেওয়ানি কার্যবিধির আওতায় নির্দিষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অতিরিক্ত কমিশনারের আদালত এবং তার উপরের স্তরের আদালতগুলো আপিল আদালত হিসেবে কাজ করে। তবে রাজস্ব আদালত একটি রাজ্য-নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান। সাধারণভাবে, জেলা কালেক্টর এবং তার উপরের পদে কর্মরত কর্মকর্তারা ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবা (আইএএস) থেকে আসেন।
এর নিচের স্তরের পদে আইএএস বা রাজ্য প্রশাসনিক পরিষেবা উভয় থেকেই নিয়োগ হতে পারে। আরো নিচের স্তরের কর্মচারীরা রাজ্যের নিজস্ব প্রশাসনিক পরিষেবা থেকে আসেন।[৩০]

অর্ডার | রাজস্ব আদালত | ক্যাডার |
---|---|---|
1 | রাজস্ব বোর্ড | আইএএস + উচ্চতর বিচার বিভাগীয় পরিষেবা (এইচজেএস) [৩১] |
2 | প্রধান রাজস্ব কমিশনার | ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবা |
3 | (বিভাগীয়/রাজস্ব কমিশনার) | |
4 | অতিরিক্ত কমিশনার | আইএএস/এসএএস (সুপার সিনিয়র) |
5 | কমিশনার ল্যান্ড রেকর্ড | |
6 | অতিরিক্ত কমিশনার ভূমি রেকর্ড | |
7 | কালেক্টর | |
8 | অ্যাডল্ট। কালেক্টর | |
9 | মুখ্য রাজস্ব কর্মকর্তা | |
10 | মহকুমা আধিকারিক | |
11 | সহকারী কালেক্টর | |
12 | বন্দোবস্ত কর্মকর্তা | রাজ্য প্রশাসনিক পরিষেবা
(এসএএসএএস) |
13 | সহকারী বন্দোবস্ত কর্মকর্তা | |
14 | রেকর্ড অফিসার | |
15 | অ্যাস। রেকর্ড অফিসার | |
16 | তহশিলদাররা | |
17 | অতিরিক্ত তহশিলদার | |
18 | নায়েব তহশিলদার |
গ্রামীণ আদালত / পঞ্চায়েত / গ্রামীণ ন্যায়ালয়
[সম্পাদনা]গ্রামের আদালত, লোক আদালত (জনগণের আদালত), বা ন্যায় পঞ্চায়েত (গ্রামের বিচারব্যবস্থা) হলো বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির একটি ব্যবস্থা।[৩২] এই ব্যবস্থাগুলো মূলত বিচারব্যবস্থার বাইরে জনগণের নিজস্ব স্তরে ছোটখাটো বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে গঠিত। ১৮৮৮ সালের মাদ্রাজ গ্রাম আদালত আইনের এর মাধ্যমে এই ব্যবস্থাগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর ১৯৩৫ সালের পর বিভিন্ন প্রদেশে, এবং ভারতের স্বাধীনতার পর বিভিন্ন রাজ্যে এদের আরও উন্নয়ন হয়।[৩৩]
গুজরাট রাজ্যের মডেল (একজন বিচারক এবং দুজন মূল্যায়নকারী সহ) ১৯৭০ এর দশক থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। [৩৩] ১৯৮৪ সালে আইন কমিশন গ্রামীণ এলাকায় পঞ্চায়েত গঠনের পরামর্শ দেয়। এই পঞ্চায়েতের সদস্যদের মধ্যে সাধারণ মানুষও থাকতে পারেন, যাদের শিক্ষা থাকলেও তারা পেশাদার আইনজীবী নন।[৩৩]২০০৮ সালের "গ্রাম ন্যায়ালয় আইন" অনুযায়ী, গোটা দেশে ৫,০০০টি মোবাইল আদালত (চলমান আদালত) গঠনের পরিকল্পনা ছিল। এই আদালতগুলো ছোটখাটো দেওয়ানি মামলা (যেমন সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ) এবং অপরাধমূলক মামলা (যেমন সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত সাজাযোগ্য অপরাধ) নিষ্পত্তি করার জন্য গঠিত হওয়ার কথা ছিল।[৩৩] তবে এই আইন কার্যকর হয়নি। ২০১২ সালের মে মাস পর্যন্ত দেশে মাত্র ১৫১টি গ্রাম ন্যায়ালয় কার্যকর অবস্থায় ছিল, যেখানে লক্ষ্য ছিল ৫,০০০টি আদালত চালু করা।[৩৪] এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি প্রধান কারণ ছিল। এর মধ্যে ছিল অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, আইনজীবীদের অনীহা, পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা।[৩৪]
বিভিন্ন আদালতের মধ্যে মূল পার্থক্য
[সম্পাদনা]আদালত | উপ-আদালত | আঞ্চলিক এলাকা | কেসের ধরন | সদস্যরা | বিচারের ধরন |
---|---|---|---|---|---|
সুপ্রিম কোর্ট | - | জাতীয় | উভয়েরই | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার |
উচ্চ আদালত | - | জাতীয় | উভয়েরই | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার |
জেলা ও দায়রা আদালত | - | জেলা | উভয়েরই | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার |
দেওয়ানি আদালত | মহকুমা/তহসিল | সিভিল | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার | |
বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালত | মহকুমা/তহসিল | অপরাধী। | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার | |
মেট্রোপলিটন আদালত | - | মহানগর এলাকা | উভয়েরই | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার |
সাব-কোর্ট | মহানগর এলাকা | সিভিল | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার | |
ম্যাজিস্ট্রেট আদালত | মহানগর এলাকা | অপরাধী। | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার | |
গ্রামীণ আদালত | - | গ্রামীণ | সিভিল এবং ক্ষুদ্র অপরাধী | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার |
বিশেষ উদ্দেশ্যের আদালত | - | জেলা/রাজ্য | উভয়েরই | শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় | অর্ডার |
ট্রাইব্যুনাল | - | জেলা/রাজ্য/জাতীয় | সিভিল | অ-বিচার বিভাগীয় অন্তর্ভুক্ত | অর্ডার |
ভোক্তা আদালত | - | জেলা/রাজ্য/জাতীয় | সিভিল | অ-বিচার বিভাগীয় অন্তর্ভুক্ত | অর্ডার |
লোক আদালত | - | জেলা/রাজ্য/জাতীয় | সিভিল এবং ক্ষুদ্র অপরাধী | অ-বিচার বিভাগীয় অন্তর্ভুক্ত | সালিশ |
রাজস্ব আদালত | - | তহসিল/জেলা/রাজ্য | উভয়েরই | বিচার-বহির্ভূত | অর্ডার |
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- ভারতের আইন
- ভারতের সংবিধান
- তিন বিচারকের মামলা
- ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
- আইন ও বিচার মন্ত্রী
- ভারতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা
- ভারতে আদালতে মামলার ঝুলন্ত অবস্থা
- জাতীয় বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "National Judicial Academy"। ২৪ মার্চ ২০২০। ৫ ডিসেম্বর ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
- ↑ "All India Judges"। allindiajudges.org।
- ↑ Bhattacharyya, Bishwajit। "Supreme Court Shows Govt Its LoC"। the day after। ৫ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Chakrabarty, Bidyut (২০০৮)। Indian Politics and Society Since Independence: Events, Processes and Ideology (First সংস্করণ)। Routledge। পৃষ্ঠা 103। আইএসবিএন 978-0-415-40867-7। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Sorabjee, Soli J. (১ নভেম্বর ২০১৫)। "A step in the Wrong Direction"। The Week। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Venu, M.K. (৫ জুলাই ২০১৩)। "Government may drop gag clause, wants judges to show restraint"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Hegde, Sanjay (১৯ অক্টোবর ২০১৫)। "Judging the Judge-Maker"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ Bhushan, Prashant। "A historic non-impeachment" (পিডিএফ)। Frontline (4 June 1993)। ৯ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Motion for removal of Mr. Justice Soumitra Sen, Judge, Calcutta High Court" (পিডিএফ)। Rajya Sabha Secretariat, New Delhi, October 2011। পৃষ্ঠা 414–419। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Raising the SC's Strength"। Supreme Court Observer (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৮।
- ↑ Venkatesan, V.। "Interview with Justice J.S. Verma, former Chief Justice of India (The Judiciary: 'Honesty Matters')"। Frontline। 25। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Krishna Iyer, V. R. (৭ আগস্ট ২০০১)। "Higher judicial appointments – II"। The Hindu। ৬ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Thomas, K. T. (১৩ আগস্ট ২০১৪)। "In defence of the collegium"। The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Mahesh Chandra Gupta v. Union of India & Ors., Transferred Case(C) No. 6 of 2009"। ৬ জুলাই ২০০৯: 18/59। ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Jean-Louis Halpérin (২৫ মার্চ ২০১১)। "Lay Justice in India" (পিডিএফ)। École Normale Supérieure। ৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৪।
- ↑ Jean-Louis Halpérin (২৫ মার্চ ২০১১)। "Lay Justice in India" (পিডিএফ)। École Normale Supérieure। ৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৪।Jean-Louis Halpérin [in French] (25 March 2011).
- ↑ Jean-Louis Halpérin (২৫ মার্চ ২০১১)। "Lay Justice in India" (পিডিএফ)। École Normale Supérieure। ৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৪।Jean-Louis Halpérin [in French] (25 March 2011).
- ↑ Dev, Atul। "What the Indian judiciary has done to itself"। The Caravan (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৬।
- ↑ Introduction to the Constitution of I Ahmed
- ↑ History ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ অক্টোবর ২০১১ তারিখে.
- ↑ "The Supreme Court Rules, 1966" (পিডিএফ)। The Supreme Court of India। ২০১০।
- ↑ "Article 145 in The Constitution of India 1949"। indiankanoon.org।
- ↑ "Supreme Court Rules 2013"। supremecourtofindia.nic.in। Supreme Court of India। ২৭ মে ২০১৪।
- ↑ "High Courts | Official Website of e-Committee, Supreme Court of India | India" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৯।
- ↑ Mizoram – Dimensions and Perspectives: Society, Economy & Polity। Concept Publishing Co.। ২০০৮। পৃষ্ঠা 444। আইএসবিএন 9788180695148। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Check Court Judgements (JUDIS) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে Government of India website.
- ↑ "District Courts of India – official website"। ২২ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১২।
- ↑ "CrPc Section 8 – Metropolitan areas"। Indian Kanoon। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১২।
- ↑ Madhavi, R (১৯ নভে ২০২৪)। "Hierarchy of Courts" (পিডিএফ)। MCRHRD Institute of Telangana।
- ↑ "UP Revenue Code" (পিডিএফ)। ৬ জুন ২০২৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২৫।
- ↑ "MP Land Revenue Code"।
- ↑ Jean-Louis Halpérin (২৫ মার্চ ২০১১)। "Lay Justice in India" (পিডিএফ)। École Normale Supérieure। ৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৪।
- ↑ ক খ গ ঘ Jean-Louis Halpérin (২৫ মার্চ ২০১১)। "Lay Justice in India" (পিডিএফ)। École Normale Supérieure। ৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৪।Jean-Louis Halpérin [in French] (25 March 2011).
- ↑ ক খ Mohapatra, Dhananjoy (২২ মে ২০১২)। "Funds crunch, lukewarm response mar Gram Nyayalayas"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৩।