ভারতীয় উপমহাদেশে মানব অভিপ্রায়ণ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভারতীয় উপমহাদেশে মানব অভিপ্রায়ণ (peopling of India) বলতে ভারতীয় উপমহাদেশে মানুষ এবং মানবতর (humanoid) প্রাণীর প্রবেশ ও বসতিস্থাপন বুঝিয়ে থাকে। ভারতীয় উপমহাদেশে আজ থেকে সাম্ভাব্য ১৫ লক্ষ বছর পূর্বে মানবতর গোষ্ঠীর প্রবেশের সাক্ষ্য-প্রমাণও পাওয়া যায়।[১]

দশ হাজারের বেশি পূর্ব থেকে আধুনিক মানুষ ভারতীয় উপমহাদেশে কয়েকটি তরঙ্গের অভিপ্রয়াণে (migration) প্রবেশ করেছে। প্রথম পরিযায়ীগণ ভারতে প্রবেশ করে প্রায় ষাট হাজার বছর পূর্বে দক্ষিণের উপকূলীয় ভগ্নাঞ্চলের (Southern Coastal dispersal) মধ্য দিয়ে। এরপর দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জটিল অভিপ্রয়াণ শুরু হয়। কৃষ্টির সূত্রপাতের সাথে দ্রাবিড় ও ইন্দো-ইউরোপিয়ানদের (আর্য) অভিপ্রয়াণের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে পরিবর্তিত হতে থাকে। এখানে মুণ্ড ও টিবেটো-বার্মিজ লোকদের অভিপ্রয়াণ ভারতীয় উপমহাদেশের জনসংখ্যায় নতুন উপাদান যোগ করে।

আর্য অভিপ্রায়ণ তত্ত্বের (Indo-Aryan migration theory) মত বিতর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকার কারণে ভারতীয় উপমহাদেশে মানব অভিপ্রয়াণ বিষয়টি গবেষণার ক্ষেত্রে একটি বিতর্কিত ক্ষেত্র।[২]

আশিউলিয়ান যুগের প্রাথমিক হোমিনিন[সম্পাদনা]

আজ থেকে ১৫ লক্ষ বছর পূর্বে আশিউলিয়ান যুগে (Acheulean period) ভারতীয় উপমহাদেশে বুদ্ধিমান হোমিনিনদের প্রবেশের সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়।[১]

ভারতীয় উপমহাদেশের জনগণের মধ্যে পূর্বপুরুষ উপাদান[সম্পাদনা]

এনসেস্ট্রাল সাউদ ইন্ডিয়ান এবং এনসেস্ট্রাল নর্থ ইন্ডিয়ান[সম্পাদনা]

রাইখ এট আল. (২০০৯) ভারতের দুটো প্রধান পূর্বপুরুষ উপাদানের ব্যাপারটি উপলব্ধি করেন। [৩][৪][৫]এনসেস্ট্রাল নর্থ ইন্ডিয়ান (ANI) হল তারা যারা নিকট প্রাচ্য, মধ্য এশীয় এবং ইউরোপীয়দের সাথে নিকট সম্পর্কযুক্ত। আর এনসেস্ট্রাল সাউদ ইন্ডিয়ান (ASI) হল তারা যারা এনসেস্ট্রাল নর্থ ইন্ডিয়ানদের থেকে আলাদা [৩] এবং উপমহাদেশের বাইরের কোন দলের সাথে নিকট সম্পর্কযুক্ত নয়। [৬] বসু এট আল. (২০১৬) এর মতে এনসেস্ট্রাল সাউদ ইন্ডিয়ানরা হল ভারতের সর্বপ্রথম এবং আদীম বসবাস স্থাপনকারী গোষ্ঠী। এরা সম্ভবত আফ্রিকা থেকে আগত দক্ষিণ দিকে যাওয়া তরঙ্গ থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করেছিল। [৭]এই দুটো দল ভারতীয় উপমহাদেশে ৪,২০০ থেকে ১,৯০০ বছর পূর্বে মিশ্রিত হয় (খ্রিষ্টপূর্ব ২২০০ অব্দ থেকে ১০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে), যখন উপমহাদেশে এদের মধ্যে অন্তর্বিবাহ শুরু হয়,[৫] যা সম্ভবত "হিন্দু গুপ্ত শাসকদের" জারি করা সামাজিক মূল্যবোধ এবং প্রথার ফলে শুরু হয়েছিল। [৮]

মুরজানি এট আল. (২০১৩) এই দুটো দলের একত্রে আসার তিনটি দৃষ্যপট তুলে ধরেছেন:

  • কৃষ্টির উন্নতির পূর্বে ৮,০০০ থেকে ৯,০০০ বছর আগের অভিপ্রয়াণ।
  • কৃষির বিস্তারের সাথে সাথে পশ্চিম এশীয়দের অভিপ্রয়াণ, যা প্রায় ৪,৬০০ বছর পূর্বে হয়।
  • ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ বছর পূর্বে পশ্চিম ইউরেশিয়ানদের অভিপ্রয়াণ।[৯]

মুরজানি এট আল. (২০১৩) এর মতে এনসেস্ট্রাল নর্থ ইন্ডিয়ান এবং এনসেস্ট্রাল সাউদ ইন্ডিয়ান ভারতীয় উপমহাদেশে সম্ভবত খ্রিষ্টপূর্ব ২,২০০ এর পূর্বে "অমিশ্রিত" ছিল। [৫]

বসু এট আল. (২০১৬) এর মতে, ভারতীয় উপমহাদেশে আরও দুটো ভিন্ন পূর্বপুরুষ উপাদান রয়েছে যা ভারতীয় উপমহাদেশের জিন পুলে অবদান রেখেছে।[note ১] এরা হল এনসেস্ট্রাল অস্ট্রো-এশিয়াটিক (AAA) এবং এনসেস্ট্রাল টিবেটো-বার্মান (ATB)। [১০] বসু এট আল. (২০১৬) এর মতে, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের জনগণ একটি পঞ্চম পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে, যা মহাসাগরীয় জনগণের সাথে কোএনসেস্ট্রাল বা সমপূর্বপুরুষীয় (coancestral to Oceanic populations)।[১১] রাইখ এট আল. (২০০৯) এর মতে, "আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীগণ এনসেস্ট্রাল সাউদ ইন্ডিয়ান দলের সাথে সম্পর্কিত, কিন্তু এদের মধ্যে কোন এনসেস্ট্রাল নর্থ ইন্ডিয়ান উপাদান নেই। [১২]

পুরাপ্রস্তরযুগীয় (Paleolithic)[সম্পাদনা]

প্রথম আধুনিক মানব বসবাসকারী[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত মানব উপাদানসমূহ নাকি প্রাক-তোবা উত্তর-তোবা (Pre- or post-Toba)[সম্পাদনা]

আধুনিক মানবের সর্বপ্রথম সফল আউট অব আফ্রিকা মাইগ্রেশন বা আফ্রিকা-বহির্ভূত পরিযান এর ডেটিং এর বিষয়টি বিতর্কিত।[১৩]এটি টোবা ক্যাটাস্ট্রফি এর পূর্বেও হতে পারে বা পরেও হতে পারে, যা বর্তমান তোবা হ্রদে আজ থেকে ৭৪,১০০ থেকে ৭৫,৯০০ বছর পূর্বে ঘটেছিল। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের জ্বলাপুরামে ছাই এর স্তরের নিচে যে পাথরের সরঞ্জাম আবিষ্কৃত হয়েছে তা এগুলোর টোবা-পূর্ববর্তী সময়ের বলে ইঙ্গিত করতে পারে, কিন্তু এই সরঞ্জামগুলোর সঠিক উৎস্য কী বিতর্কিত। [১৩] হ্যাপলো গ্রুপ L3 মানুষের আফ্রিকা থেকে বের হবার পূর্বেই উদ্ভূত হয়, আর এর সময়কাল ছিল আজ থেকে ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ বছর পূর্বে। এটি ইঙ্গিত করে যে এই পাথুরে সরঞ্জামগুলো পোস্ট টোবা বা টোবা পরবর্তী ছিল।[১৩] আর সাথে এখান থেকে এটাও বোঝা যায় যে, মানুষ আফ্রিকা থেকে তোবা বিপর্যয় এর কয়েক হাজার বছর পরে আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়ে বা আফ্রিকা ত্যাগ করে। 

হাইপোথেসাইজ বা অনুকল্পনা করা হয় যে, টোবা সুপারইরাপশন বা টোবা মহা-অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের সেন্ট্রাল ফরেস্ট বা কেন্দ্রীয় বনাঞ্চলের অনেকটাই ধ্বংস হয়ে যায়। এর উপরে ছাই এর একটি স্তর এসে একে ঢেকে দেয়। আর এর ফলে সম্ভবত সমগ্র পৃথিবীর মানুষই প্রায় বিলুপ্তির পর্যায়ে চলে যায় কারণ এই বিপর্যয়ের ফলে আমাদের পৃথিবীটা হঠাৎ করে আইস-এজ বা বরফ যুগে প্রবেশ করে যে বরফ-যুগ এর মেয়াদ ছিল প্রায় ১,৮০০ বছর।[১৪] কোন প্রাকৃতিক ঘটনার ফলে এভাবে কোন প্রজাতির পরিমাণ কমে গিয়ে প্রায় বিলুপ্তির কাছাকাছি চলে আসাকে বিবর্তনের ভাষায় পপুলেশন বটলনেক বলা হয়। সেসময় টোবা ক্যাটাস্ট্রফির আধুনিক মানব প্রজাতিতে (হোমো সেপিয়েন্স) এরকম পপুলেশন বটলনেক ঘটে। যাই হোক, এটা যদি সত্য হয় তাহলে জেনেটিসিস্টগণরা যে মনে করেন, আজ থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ বছর পূর্বে ঘটা হিউম্যান পপুলেশনের ক্ষেত্রে একটি আপাত বটলনেক ঘটে, এবং এটাও মনে করেন যে, আজকের জীবিত মানুষের মধ্যে জেনেটিক ডাইভার্সিটির অভাব দেখা যায়, এই টোবা ক্যাটাস্ট্রফি তার ব্যাখ্যা খুব ভালভাবেই দেয়।[১৪]

যেহেতু টোবা ঘটনাকে এরকম একটি কঠোর প্রভাব সৃষ্টিকারী ঘটনা বলে বিশ্বাস করা হয়, এবং বিশেষভাবে এটা ধারণা করা হয় যে, এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশ ছাই একটি ঘন আবরণে ছেয়ে গিয়েছিল, তাহলে এটা জানা কঠিন হয়ে যায় যে কীভাবে ভারতের প্রথম কলোনিস্ট বা উপনিবেশকারীগণ এরকম বিশাল বিপর্যয়ে বেঁচে গিয়েছিল।[১৫] তাই এটা বিশ্বাস করা হয় যে, এর পূর্বে ভারতে বাস করা সকল মানুষ টোবা ক্যাটাস্ট্রফির সময় বা পরে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। এবং বর্তমান ইন্ডিয়ানদের ডিএনএ-তে এই প্রাথমিক ইন্ডিয়ান বা প্রথম ইন্ডিয়ানদের কোন ট্রেস বা অংশ নেই। জেনেটিক স্টাডি দ্বারা এই থিওরিটি সমর্থিত হয়।[১৬]

প্রাক-তোবা সরঞ্জাম[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে প্রকাশিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল পেট্রাগ্লিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণা বলে, কিছু মানুষ হয়তো এই অনুকল্পিত বিপর্যয়ের পরেও ভারতের প্রধানভূমিতে টিকে গিয়েছিল। তোবা এর ছাইয়ের স্তরের নিচে "পম্পেই এর মত খনন" চালিয়ে গবেষকদের দলটি কিছু সরঞ্জাম এবং মানব বসতি আবিষ্কার করেন যা একই সাথে টোবা ক্যাটাস্ট্রফির পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী ছিল[১৭]। তবে সেই সময়ের মানব ফসিল পাওয়া যায় নি, এবং ভারতের সেই প্রথম মানুষদের ইথনিসিটি সম্পর্কে কিছুই জানতে পারা যায় নি। ম্যাকাউলি এট. আল. (২০০৫) এবং পোসথ এট. আল. (২০১৬) এর সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো পোস্ট টোবা ডিসপারসাল বা টোবা ক্যাটাস্ট্রফির পরে মানুষের ভারতে আসাকে সমর্থন করে।[১৮][১৯]

উত্তর-তোবা Post-Toba Southern Coastal dispersal[সম্পাদনা]

উপকূলীয় অভিপ্রয়াণ মডেল (Coastal Migration Model) অনুসারে অভিপ্রয়াণ পথ
মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ হ্যাপলোগ্রুপ M এর ভারতীয় উপমহাদেশ হয়ে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় গমনের পথ
ওয়াই ডিএনএ হ্যাপলোগ্রুপ C-M130 এর ভারতীয় উপমহাদেশ হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাবার পথ
ওয়াই ডিএনএ হ্যাপলোগ্রুপ F এবং এর উত্তরাধিকারী

প্রায় ৭০,০০০ বছর পূর্বে শেষ গ্লেশিয়াল যুগে এবং পুরাপ্রস্তরযুগীয় বিপ্লবের সূচনাকালে, মাইটোকন্ড্রিয়াল হ্যাপলোগ্রুপ L3 বহনকারী দলের একটি অংশ পূর্ব আফ্রিকা থেকে নিকট প্রাচ্যে অভিপ্রয়াণ করে।

হিসাব করা হয়েছে, আফ্রিকার ২,০০০ থেকে ৫,০০০ জন মানুষের একটি সমাজ থেকে,[২০] কেবলই ১৫০ থেকে ১,০০০ জনের একটি দল লোহিত সাগর পাড়ি দেয়।[২১] যে দলটি লোহিত সাগর পাড়ি দেয়, তারা ভারতে পৌঁছার পূর্বে আরব ও পারস্যের সমুদ্রোপকূলের পথ দিয়ে গমন করে, যাকে প্রথম প্রধান সূচনাবিন্দু বলে মনে করা হয়।[২২] জেনেটিসিস্ট স্পেনসার ওয়েলস বলেন, প্রাথমিক ভ্রমণকারীগণ এশিয়ার দক্ষিণের সমুদ্রোপকুলীয় পথ দিয়ে এসেছিল। তারা সমুদ্রের প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় এবং ৫০,০০০ বছর পূর্বে অস্ট্রেলিয়ায় বসতি স্থাপন করে। ওয়েলস বলেন, অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা হল অভিপ্রয়ানের এই প্রথম তরঙ্গের উত্তরাধিকারী।[২৩]

অনুকল্পিত সাবস্ট্রেটসমূহ  (Hypothised substrates)[সম্পাদনা]

"নেগ্রিটো"[সম্পাদনা]

ভারতবর্ষের কিছু বিশেষ শ্রেণীর মানুষকে নেগ্রিটো সাবস্ট্রেটে ফেলা হত। কিন্তু দৈহিক গঠন এবং গায়ের রং এর মিল আছে বলেই ভিন্ন ভিন্ন জাতির এই ব্যক্তিদেরকে নেগ্রিটো বলা হবে ঠিক কিনা এ নিয়ে একটি বিতর্ক থেকেই যায়। [২৪] এই নেগ্রিটো পিপলরা সম্ভবত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অস্ট্রালয়েড-মেলানেশিয়ান অধিবাসীদের বংশধর। বিশ্বনাথন এট. আল. (২০০৪) মন্তব্য করেন, "দখিণ ভারতের আদিবাসী দলগুলোর একটি সাধারণ এনসেস্ট্রি বা পূর্বপুরুষ রয়েছে।[২৫] এদের সকলের মধ্যে যে সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো দেখা যায় তা কনভারজেন্ট ইভোল্যুশন বা অভিসারি বিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশ্বনাথন এট. আল. (২০০৪) মন্তব্য করেন। [২৫] জ্ঞানেশ্বর চবি এবং এন্ডিকটের (২০১৩) বলেন, এদের জেনেটিক স্টাডি থেকে দেখা যায়, যাদেরকে আজ নেগ্রিটো বলা হচ্ছে তাদের কোন একক পূর্বপুরুষ জাতি ছিল, এরকম সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায় না।[২৬]

রাইখ এট. আল. (২০০৯) এর মতে, এএসআই, প্রোটো ইস্ট এশিয়ান এবং আন্দামান আইল্যান্ডাররা (আন্দামান দ্বীপের অধিবাসীরা) প্রায় ১,৭০০ প্রজন্ম পূর্বে আলাদা হয়ে গিয়েছিল।[২৭][note ২] চবে এবং এন্ডিকটের (২০১৩) মতে, সর্বপরি আন্দামানিজরা অন্যান্য বর্তমান দক্ষিণ ভারতীয়দের তুলনায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ানদের সাথে অধিক নিকট সম্পর্কযুক্ত।[২৬][note ৩]

অস্ট্রালয়েড[সম্পাদনা]

অনুকল্পনা করা হয় যে, ভেদ্দাদের ন্যায় জনগোষ্ঠী সম্ভবত সেই অঞ্চলের সর্বপ্রথম অধিবাসী যারা ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ বছর পূর্বে অবস্থান করত, এবং এরপর এরা শ্রীলঙ্কায় প্রবেশ করে।[২৮] শ্রীলঙ্কায় যে ফাহিয়েন-লেনা ৮ নামের গুহা আবিষ্কৃত হয়েছে তা প্রায় ৩৭,০০০ বছর পুরনো। তুননামূলক অঙ্গসংস্থানিক গবেষণার ভিত্তিতে জানা গেছেসেই গুহাটি ভেদ্দা জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কযুক্ত।[২৯] রনবীরা এট. আল. (২০১৩) এর একটি গবেষণায় পাওয়া যায় ভেদ্দারা সম্ভবত শ্রীলঙ্কার সর্বপ্রথম অধিবাসী।[২৯]

বিতর্ক[সম্পাদনা]

ইন্দো-আর্য স্থানান্তরকরণ তত্ত্ব (Indo aryan migration theory) সহ নানাবিধ তথ্য-উপাত্তের কারণে ভারতে মানুষের আগমন নিয়ে এখনো বিভিন্ন বিতর্ক চালু আছে, এই বিষয়ে চলছে গবেষণা।[২] তবে মূলধারার সকল গবেষকদের দ্বারা ইন্দো-আর্য স্থানান্তর তত্ত্ব গৃহিত হয়েছে, এবং আর্য আদিবাসী তত্ত্ব বাতিল বলে গণ্য হয়েছে।[৩০][৩১][৩২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. Basu et al. (2016): "By sampling populations, especially the autochthonous tribal populations, which represent the geographical, ethnic, and linguistic diversity of India, we have inferred that at least four distinct ancestral components—not two, as estimated earlier have contributed to the gene pools of extant populations of mainland India."[১০]
  2. According to Basu et al. (2016): "The Andaman archipelago was peopled by members of a distinct, fifth ancestry,"[১০] yet they also state that "ADMIXTURE analysis with K = 3 shows ASI plus AAA to be a single population."[১০]
  3. Chaubey and Endicott (2013):[২৬]
    * "these estimates suggest that the Andamans were settled less than ~26 ka and that differentiation between the ancestors of the Onge and Great Andamanese commenced in the Terminal Pleistocene." (p.167)
    * "In conclusion, we find no support for the settlement of the Andaman Islands by a population descending from the initial out-of-Africa migration of humans, or their immediate descendants in South Asia. It is clear that, overall, the Onge are more closely related to Southeast Asians than they are to present-day South Asians." (p.167)

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Early Pleistocene Presence of Acheulian Hominins in South India
  2. Edwin Bryant & Laurie L. Patton (২০০৫), The Indo-Aryan Controversy, Routledge, আইএসবিএন 0-7007-1462-6, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-২৫, ... we now exist in an era where one's use of evidence is inevitably suspect of being linked to nationalist, colonialist, or cultural agendas ... No issue is more illustrative of this impasse than the debate about Aryan origins ... 
  3. Reich et al. 2009
  4. Metspalu et al. 2011
  5. Moorjani et al. 2013
  6. Moorjani 2013
  7. Basu 2016
  8. Basu et al. 2016, পৃ. 1598।
  9. Moorjani et al. 2013, পৃ. 422-423।
  10. Basu 2016, পৃ. 1598।
  11. Basu 2016, পৃ. 1594।
  12. Reich 2009, পৃ. 489।
  13. Appenzeller 2015
  14. "Supervolcano Eruption - In Sumatra - Deforested India 73,000 Years Ago", ScienceDaily, নভে ২৪, ২০০৯, সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১, ২০১১, ... new study provides "incontrovertible evidence" that the volcanic super-eruption of Toba on the island of Sumatra about 73,000 years ago deforested much of central India, some 3,000 miles from the epicenter ... initiating an "Instant Ice Age" that - according to evidence in ice cores taken in Greenland - lasted about 1,800 years ... 
  15. Stephen Oppenheimer (২০০৪), Out of Eden: the peopling of the world, Robinson, 2004, আইএসবিএন 978-1-84119-894-1, ... The Toba event specifically blanketed the Indian subcontinent in a deep layer of ash. It is difficult to see how India's first colonists could have survived this greatest of all disasters. So, we could predict a broad human extinction ... 
  16. Michael D. Petraglia; Bridget Allchin (২০০৭-০৫-২২), The evolution and history of human populations in South Asia: Inter-disciplinary Studies in Archaeology, Biological Anthropology, Linguistics and Genetics, Springer, 2007, আইএসবিএন 978-1-4020-5561-4, ... had H. sapiens colonized India before the eruption? The majority of genetic evidence seems to suggest that the initial colonization of India took place soon after the Toba event. It should be noted, however, that on the basis of this evidence, the hypothesis that modern human populations inhabited India before ~74ka and underwent extinction as a result of Toba cannot be ruled out. If population extinction occurred, there would be no trace of their DNA in present-day humans ... 
  17. New evidence shows populations survived the Toba super-eruption 74,000 years ago, University of Oxford, ফেব্রু ২২, ২০০৯, ৩০ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১, ২০১১, ... Newly discovered archaeological sites in southern and northern India have revealed how people lived before and after the colossal Toba volcanic eruption 74,000 years ago. The international, multidisciplinary research team, led by Oxford University in collaboration with Indian institutions, has uncovered what it calls ‘Pompeii-like excavations’ beneath the Toba ash ... suggests that human populations were present in India prior to 74,000 years ago, or about 15,000 years earlier than expected based on some genetic clocks,’ said project director Dr Michael Petraglia ... 
  18. Bradshaw Foundation, Human Migration
  19. Macauly 2005
  20. Zhivotovsky; Rosenberg, NA; Feldman, MW; ও অন্যান্য (২০০৩)। "Features of Evolution and Expansion of Modern Humans, Inferred from Genomewide Microsatellite Markers"American Journal of Human Genetics72 (5): 1171–86। ডিওআই:10.1086/375120পিএমআইডি 12690579পিএমসি 1180270অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  21. Stix, Gary (২০০৮)। "The Migration History of Humans: DNA Study Traces Human Origins Across the Continents"। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-১৪ 
  22. Metspalu M, Kivisild T, Metspalu E, Parik J, Hudjashov G, Kaldma K, Serk P, Karmin M, Behar DM, Gilbert MT, Endicott P, Mastana S, Papiha SS, Skorecki K, Torroni A, Villems R (আগস্ট ২০০৪)। "Most of the extant mtDNA boundaries in south and southwest Asia were likely shaped during the initial settlement of Eurasia by anatomically modern humans"BMC Genet.5: 26। ডিওআই:10.1186/1471-2156-5-26পিএমআইডি 15339343পিএমসি 516768অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  23. Rincon, Paul (এপ্রিল ২৪, ২০০৮)। "Human line 'nearly split in two'"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১২-৩১ 
  24. Manickham 2009
  25. Vishwanathan 2004
  26. Chaubey and Endicott (2013), The Andaman Islanders in a Regional Genetic Context: Reexamining the Evidence for an Early Peopling of the Archipelago from South Asia, Human Biology 85 (1-3)
  27. Reich 2009a, পৃ. 40।
  28. "Indian academy of sciences Vikrant Kumar and Mohan Reddy (2003): Status of Austro-Asiatic groups in the peopling of India: An exploratory study based on the available prehistoric, linguistic and biological evidences.
  29. Mitochondrial DNA history of Sri Lankan ethnic people: their relations within the island and with the Indian subcontinental populations.
  30. "Indigenous Aryanism"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৪-১২। 
  31. "Indo-Aryan migrations"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৪-২০। 
  32. Daniyal, Shoaib। "Two new genetic studies upheld Indo-Aryan migration. So why did Indian media report the opposite?"Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-২০ 

উৎস্য[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Ness, Immanuel (২০১৪), The Global Prehistory of Human Migration, The Global Prehistory of Human Migration