ভাগীরথী আম্মা
ভাগীরথী আম্মা (১৯১৪ - ২২শে জুলাই ২০২১) ছিলেন একজন ভারতীয় মহিলা যিনি কেরালার কোল্লাম জেলায় বাস করতেন। ১০৫ বছর বয়সে শিক্ষাজীবনে ফিরে আসার জন্য তিনি জাতীয়ভাবে পরিচিত হন। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ভারত সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার নারী শক্তি পুরস্কারে ভূষিত হন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রশংসা করেন।
জীবন
[সম্পাদনা]ভাগীরথী আম্মা ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কেরালার কোল্লাম জেলার প্রাক্কুলামে বসবাস করতেন।[১][২] তাঁর মা প্রসবের সময় মারা যান এবং ভাগীরথী আম্মা তাঁর ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনার দায়িত্ব নেন। বিয়ের পর, ১৯৩০-এর দশকে তাঁর স্বামী মারা যান এবং তাঁর সন্তানদের লালন-পালনের দায়িত্ব তাঁর একার ওপরেই এসে পড়ে।[৩] তাঁর পাঁচ বা ছয়টি সন্তান, ১৩ বা ১৬ জন নাতি-নাতনি এবং ১২ জন প্রপৌত্র-প্রপৌত্রী ছিল বলে জানা গেছে।[২][৪] তিনি টেলিভিশনে ক্রিকেট এবং সোপ অপেরা দেখতে উপভোগ করতেন।[২]
১০৫ বছর বয়সে, ভাগীরথী আম্মা তাঁর পড়াশোনা আবার নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি গণিত, মালয়ালম ভাষা এবং পরিবেশ বিজ্ঞানে পরীক্ষা দেন। তাঁর বয়সের কারণে, কেরালা লিটারেসি মিশন তাঁকে বাড়িতে থেকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেয়, তিন দিন ধরে পরীক্ষা চলেছিল।[২] ২৭৫ পয়েন্টের মধ্যে তিনি ২০৫ পেয়েছিলেন এবং সমমানের পরীক্ষায় সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।[৫]
পুরস্কার এবং স্বীকৃতি
[সম্পাদনা]ভাগীরথী আম্মাকে ২০১৯ নারী শক্তি পুরস্কারের বিজয়ী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বিশেষ প্রশংসা করে বলেন, "আমরা যদি জীবনে উন্নতি করতে চাই, তাহলে আমাদের নিজেদেরকে বিকশিত করতে হবে, যদি আমরা জীবনে কিছু অর্জন করতে চাই, তার প্রথম শর্ত হল আমাদের ভেতরের ছাত্রকে কখনই মরতে দেওয়া যাবে না"।[৬] আরেকজন বিজয়ী ছিলেন কেরালার ৯৮ বছর বয়সী কার্ত্যায়নী আম্মা।[৭]
অসুস্থতার কারণে ভাগীরথী আম্মা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি, কিন্তু এর পরপরই তিনি প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা অতীত-সম্পর্কীয় পেনশন পেতে শুরু করেন। তিনি পূর্বে আধার কার্ড পাওয়ার জন্য তাঁর বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে অক্ষম ছিলেন কিন্তু একটি জাতীয়করণকৃত ব্যাংক তাঁকে প্রয়োজনীয়তা পূরণে সহায়তা করেছিল।[৬][৮]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]২০২১ সালের ২২শে জুলাই ভাগীরথী আম্মা ১০৭ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মারা যান।[৯][১০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Kerala's oldest student Bhageerathiyamma, 107, passes away"। Mathrubhumi। ২৩ জুলাই ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২২।
- 1 2 3 4 Varma, Vishnu (২০ নভেম্বর ২০১৯)। "Kerala's literacy history gets new ambassador: 105-year-old Bhageerathi Amma"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "105-year-old Bhageerathi Amma Sits for Fourth Standard Exams at Kerala's Kollam"। News18 (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ নভেম্বর ২০১৯। ২১ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ Adhikari, Somak (৫ মার্চ ২০২০)। "Meet Karthiyani & Bhageerathi Amma, They'll Get Nari Shakti Puraskar For Academic Excellence"। India Times (ভারতীয় ইংরেজি ভাষায়)। ১১ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ Staff Reporter (৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "105-year-old student from Kerala clears all Class 4 papers"। The Hindu (ভারতীয় ইংরেজি ভাষায়)। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- 1 2 "After PM's praise, oldest learner Bhageerathi Amma set to get Aadhaar"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। PTI। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ Staff (৭ মার্চ ২০২০)। "98 yrs old from Kerala to be presented Nari Shakti Puraskar, Here's Why?"। The Dispatch। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "Old-age pension for 'grandmother of learning' Bhageerathi Amma"। Mathrubhumi (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ মার্চ ২০২০। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "Bhageerathi Amma passes away"। The Week। ২৩ জুলাই ২০২১। ২৩ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২১।
- ↑ "Kerala's 'oldest learner' Bhageerathi Amma no more - Times of India"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২১।