ব্রহ্মময়ী কালীমন্দির, মূলাজোড়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্রহ্মময়ী কালীমন্দির

ব্রহ্মময়ী কালীমন্দির পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার মূলাজোড় গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালী মন্দির

বিবরণ[সম্পাদনা]

কথিত আছে, কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার গোপীমোহন ঠাকুরের মেয়ে ব্রহ্মময়ী বিবাহের দিন গঙ্গাস্নানের সময় ডুবে গেলে তার স্মৃতিতে গোপীমোহন এই নবরত্ন মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরপ্রাঙ্গণে বারোটি শিবমন্দির অবস্থিত।[১]:৮৯

প্রতি অমাবস্যায়, রটন্তী-চতুর্দশীতে কালীপূজা এবং গোটা পৌষমাস ব্যাপী এখানে উৎসব হয়। মন্দিরটি একটি সুন্দর বাগানের মধ্যে অবস্থিত। কালীবাড়িতে আনন্দশঙ্কর, গোপীশঙ্কর ও হরশঙ্কর নামে তিনটি বৃহৎ শিবলিঙ্গও আছে। মন্দিরের পিছনে পৃথক দেবালয়ে 'গোপীনাথ জীউ' নামে শ্রীকৃষ্ণের একটি বিগ্রহ আছে।[২]

ঐতিহাসিক কাহিনী[সম্পাদনা]

গোপীমোহন এই কালীবাড়িতে সেকালের বিখ্যাত গায়ক কালীমির্জা (কালিদাস চট্টোপাধ্যায়) ও লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাসকে (ল'কে কানা) নিয়ে আসতেন; কালীমির্জা গোপীমোহনকে বিভিন্ন শ্যামাবিষয়ক গান গেয়ে শোনাতেন। শোনা যায়, একদিন মির্জার গান শুনে ভক্তিগদগদ হয়ে মন্দিরপ্রাঙ্গনে বসেই গোপীমোহন একটি শ্যামাসঙ্গীত রচনা করে ফেলেন:

                              শিবে শবাসনা, লোল রসনা,
                              ভীষণা দিগ্বসনা বিকট দশনা।
লজ্জারূপা নাহি লজ্জা মেয়ে হয়ে রণসজ্জা
                                         রুধিরে মগনা।
সভয়া অভয়া বরে সতী নিজ পতি 'পরে,
                                         এ কি বিবেচনা
কহিছে গোপীমোহনে এইরূপ জাগে মনে,
                                         কালী ত্রিনয়না।।

গানটি পরবর্তীতে মন্দিরের দেওয়ালে লিপিবদ্ধ করা হয়।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. তিন তীর্থে, শিবশঙ্কর ভারতী, সাহিত্যম্‌, ১৮বি, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট, কলকাতা-৭৩, প্রথম প্রকাশ- ১৮ই জানুয়ারী, ২০০১
  2. ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ২০১-২০২