ব্যবহারকারী আলাপ:মহাজাগতিক মহাযাত্রা

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলা উইকিপিডিয়ায় স্বাগতম[সম্পাদনা]

কলাম্বিয়ার অসমাপ্ত মিশন[সম্পাদনা]

কলাম্বিয়ার অর্ধসমাপ্ত মিশনঃ এক মহাজাগতিক দুর্ঘটনার উপাখ্যান!

নাসা।নাসার স্পেস শাটল কলাম্বিয়া র ২৮তম ফ্লাইট ছিলো সেটি। ১৮ বার সময় পেছানোর পরে ২০০৩ সালের ১৬ই জানুয়ারিতে উড্ডয়ন হয় কলাম্বিয়ার। শাটলটিতে ছিলেন ৭জন নভোচারী। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে ১৬ দিনের এক বৈজ্ঞানিক মিশনে গিয়েছিলেন তারা। আর হ্যাঁ, মহাশূন্য থেকে পৃথিবীকে দেখার এক অনন্য অনুভূতি লাভ করতে। এসটিএস-১০৭ মিশনের স্পেস স্টেশানের পালা শেষ করে পৃথিবীতে ফিরছিলেন তারা।

বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার প্রায় ৫ মিনিট পরে নাসার মিশন কন্ট্রোল প্যানেল শাটলের বাম পাখা থেকে ভুলভাল রিডিং লক্ষ্য করছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে দেরী হয়ে গিয়েছিল। ল্যান্ডিং থেকে মাত্র ১২ মিনিটের ব্যবধানে থাকার সময়ে শাটলটি বিশাল এক বিস্ফোরণের মাধ্যমে তার ইতি ঘটালো। চ্যালেঞ্জার ট্র‍্যাজেডির পর আরেকটি স্পেস শাটল ট্র‍্যাজেডি ঘটে গেল।

কিন্তু কেন ঘটেছিল এই বিস্ফোরণ। এর জন্য পিছিয়ে যেতে হবে সেই ১৬ই জানুয়ারিতে। উড্ডয়নের ৮১.৭ সেকেন্ড পরে ৬১১৭০ মিটার উচ্চতায় মহাশূন্যে যাওয়ার পথে শাটলের এক্সটার্নাল ট্যাংকার থেকে কিছু ফোম বাম পাখনার গিয়ে আঘাত করেনি। প্রায় ১৫ থেকে ২৫ সে.মি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় পাখাটির। আর পাখার হিট শিল্ডও মারাত্মকভাবে ড্যামেজ হয়ে যায়। নাসা আগেও এরকম ঘটনা ৪ বার খেয়াল করেছিল, প্রত্যেকবারই সেটা তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। তবে এবারের ঘটনা যে অতোটা পর্যন্ত যাবে, সেটা তারা আঁচ করতে পারেনি। তাই এ বিষয়টা আমলে নেওয়া হয় নি।

নাসার কাছে সামরিক নিরাপত্তা বাহিনী তাদের গোয়েন্দা স্যাটেলাইট দ্বারা শাটলটিকে পর্যবেক্ষণ করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও নাসা সেটি নাকচ করে। শাটলের ক্রুদেরও ঘটনা জানানো হলে তারা পূর্বে এ ধরণের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিষয়টি তাদের চিন্তার উদ্বেগ করেনি। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় হিট শিল্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গরম বায়ু শাটলের মাঝে ঢুকে পড়ে আর কেবিনেট প্রেশারও কমতে শুরু করে। আর অবশেষে সেই বিশাল বিস্ফোরণ!

ক্রুদের মধ্যে একজন ছিলেন ভারতের মিশন স্পেশালিস্ট কল্পনা চাওলা। তিনি জীবনের প্রকৃত স্বাদ গ্রহণ করতে মহাকাশে গিয়েছিলেন। কিন্তু পৃথিবীতে এসে তিনিসহ কেউই আর সেউ স্বাদ্বের গল্প কাউকে বলতে পারেন নি।

ঘটনার পরে মিশন কন্ট্রোল কড়াভাবে সমালোচিত হয়। বহিষ্কারসহ শাস্তিও দেওয়া হয় তাদের। নাসার সকল স্পেস প্রোগ্রাম ২ বছরেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ থাকে। সেসময় সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পেস স্টেশনে রসদ সরবরাহ করেছিল। তবে ওইদিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এক বার্তায় তাদের মহাকাশযাত্রা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। আর ২০০৫ সালের পর বাকি ৩টি স্পেস শাটল তাদের যাত্রা আরো ৭ বছর ধরে চালিয়ে যায়। কিন্তু সেদিনের ঘটনা ১৯৮৬ সালের পর আরো একবার আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছিল মহাকাশ বীরদের মাহাত্মের কথা।