ব্যবহারকারী:Owais Al Qarni/খেলাঘর ৭

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

by রশীদ জামীল

[সম্পাদনা]

১৩ দফা
চিত্র:হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৩ দফা.jpg
পোস্টার
Data defined alone
All three defined (header, label, data, all with same number)
Label and data defined (label)Label and data defined (data)
Below text

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৩ দফা দাবি বাংলাদেশে ইসলাম ও রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০০৯, নারী নীতি ২০১১, সংবিধান থেকে ‘আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ তুলে দেয়া, শাহবাগে ইসলাম বিরোধী কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এই ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করে। এর পূর্বে সরকার ও দেশবাসীর প্রতি শাহবাগে ইসলাম বিদ্বেষের প্রতিবাদে গর্জে উঠুন শীর্ষক খোলা চিঠি প্রদান করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ আহমদ শফী। তার ধারাবাহিকতায় ৯ মার্চ ১৩ দফা দাবি প্রণয়ন করা হয়। ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের মাধ্যমে এই দাবি উত্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন করা হয়। এতে ধর্ম শিক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মাদ্রাসা ও স্কুলে ধর্ম না পড়িয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা প্রভৃতি উপাসনালয়ের মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রদানের কথা বলা হয়। এর মাধ্যমে ধর্ম শিক্ষাকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করার কৌশল অবলম্বন করা হয়। ২০১১ সালে জাতীয় নারী নীতি প্রণয়ন করা হয়, যেখানে ইসলাম বিরোধী বিভিন্ন নীতির অভিযোগ রয়েছে।[২] ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ‘মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’-এর নীতিটি বাতিল করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় শাহবাগ আন্দোলন। এতে লাগাতার ইসলাম অবমাননা, ইসলামের প্রতীকসমূহ নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করার অভিযোগ উঠে। ১৫ ফেব্রুয়ারি নিহত হয় নাস্তিক ব্লগার রাজিব ওরফে থাবা বাবা। তার মৃত্যুর পর শাহবাগ সংশ্লিষ্টদের ইসলামকে আক্রমণ করা আরও বেড়ে যায়। দৈনিক আমার দেশ ও দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় থাবা বাবার লেখাগুলো প্রকাশের ফলে প্রতিবাদও শুরু হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি সরকার ও জাতির উদ্দেশ্যে শাহবাগে ইসলাম বিদ্বেষের প্রতিবাদে গর্জে উঠুন শীর্ষক খোলা চিঠি প্রদান করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ আহমদ শফী। ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে হেফাজতে ইসলাম এবং সমমনা ১২টি ইসলামী দলের পক্ষে প্রথম বিক্ষোভ মিছিলটি পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে যায়।[১]

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৯ মার্চ দারুল উলুম হাটহাজারীতে আলেমদের নিয়ে একটি ওলামা সম্মেলনের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এই সম্মেলন থেকে সরকারকে ১৩ দফা দাবি জানানো হয়।[১]

দাবি সমূহ[সম্পাদনা]

দাবিগুলো হলো:[৩]

১. সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা।

২. আল্লাহ্, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস।

৩. কথিত শাহবাগি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর শানে জঘন্য কুৎসা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।

৪. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।

৫. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।

৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।

৭. মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা।

৮. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা।

৯. রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।

১০. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।

১১. রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।

১২. সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।

১৩. অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

দাবির ব্যাখ্যা[সম্পাদনা]

প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]

পরবর্তী[সম্পাদনা]

  1. মোঃ কামরুল, হাসান (২০২১)। বিশ্ব মুসলিম ঐক্য : সমস্যা ও করণীয় (২০০০-২০১৫) (পিএইচডি)। বাংলাদেশ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ২২৬।  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে ":0" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  2. "প্রসঙ্গ : জাতীয় নারী-উন্নয়ননীতি ২০১১"মাসিক আল কাউসার। এপ্রিল ২০১১। 
  3. "হেফাজতের ১৩ দাবি"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৭ এপ্রিল ২০১৩।