ব্যবহারকারী:FaysaLBinDaruL/খেলাঘর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

প্রযোজক মুনতাসির মামুন, ফেরদৌস চিত্রনাট্য ও পরিচালক আতিকুর রহমান খান (আবির খান) ও মোহাম্মদ রাশেদুল হক (রাশেদ শামিম) কাহিনি ফেরদৌস আহমেদ সংলাপ মমর রুবেল ২ ঘন্টা ৮ মিনিট কন্ঠ কুমার বিশ্বজিৎ, সাহিনা, গীতিকার কবির বকুল রশেদ শামিম সুরকার ইমন সাহা সঙ্গীত সারগাম ফাইভ আবহ সঙ্গীত মাকসুদ জামাল মিন্টু সম্পাদক ছলিম উল্লাহ ছলি চিত্রগ্রহণ জেড এইচ মিন্টু নির্বাহী প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর, ইবনে হাসান খান ইমপ্রেস টেলিফিল্মস, নুজহাত ফিল্মস


ফেরদৌস আহমেদ,মৌসুমী, শহিদুল ইসলাম সাচ্চু,অমিত হাসান, দিলারা জামান, আল মনসুর,অনিক রহমান অভি , নিঝুম রুবিনা, শাহজাদ খান, জামিল আক্তার, রাশেদ শামিম, আবির খান, অররনব খান, জুয়েল জহুর, কাশ্মিরি প্রসাদ দিবা, রেদোয়ান রাশেদ প্রফর, সানজিদ খান প্রিন্স , শোভন, আতিকুল্লাহ লিটু, নিলা ইস্রাফিল, আদিত্য আলম, শৌর্য দীপ্ত সূর্য, রাজু সরকার, মোঃ নুরুজ্জামান, স্নিগ্ধা, জুঁই, সোহেল, বাহাদুর আলি টিক্কা, মনোয়ার,আব্দুল্লাহ আল মামুন, আবির, বাবু, আনিস।


১৯৭১ সালের আগস্ট মাস। পাবনার ইশ্বরদীর সরিষাবাড়ি গ্রামে এক বৃষ্টি ভেজা রাতে পাকশী সাব-পোস্টঅফিসের পোস্টমাস্টার আরিফ তার ডাক পিয়ন ফরিদ ও স্ত্রীর বাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে সকালে ডাকঘরে আসেন। ডাকপিয়ন ফরিদের সাথে পাকিস্তানী বাহিনির শহরে তান্ডব চালানো নিয়ে আলাপ চলে, অনেকগুলি চিঠির মাঝে আরিফের নামে তার বন্ধু সালাহউদ্দিনের ২২শে আগস্টে লেখা চিঠি আসে। একইদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনির দুই গাড়ি সৈন্য সরিষাবাড়িতে আসে, পুরনো এক দালানে ক্যাম্প করে। গুলজার মাতবর তাদের সাথে দেখা করতে যায়। পোস্ট মাস্টার আরিফ তার ডাকপিয়ন ফরিদের স্ত্রীর উকিল বাবা। রাতে ফরিদের স্ত্রী আরিফের জন্য পায়েস দিতে গেলে জানা যায় আরিফ বাগমারা গ্রামে রমজান ডাকাতের সাথে দেখে করতে গিয়েছেন। পোস্ট মাস্টার রমজান ডাকাতকে তার বন্ধু মুকবুল মিয়ার চিঠি আসলে পড়ে শোনান। চিঠিতে মকবুল পাকিস্তানী মিলিটারি হতে রমজানকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেয়। একই সাথে নিজের বন্ধু সালাহ উদ্দিন চিঠিতে পোস্ট মাস্টারকে দেশে পাকিস্তানী সেনার বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরুর খবর ও গ্রামের যুব সমাজকে একত্রিত করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে উৎসাহ দেওয়ার আহবান জানায়। পরদিন ডাকঘর থেকে বাড়ি ফেরার পথে গুলজার মাতবরের সাথে আরিফের দেখা হয়। গুলজার আরিফকে দেশের যুদ্ধ-পরিস্থিতি নিয়ে শংকিত হতে না করে, বরং সবকিছু ভাল চলছে বলে সান্তনা আশ্বস্ত করে। ভীত আরিফের শংকিত আচরণ দেখে গুলজারের সন্দেহ হয় যে আরিফ হয়তো গেরিলা যুদ্ধ শুরুর বার্তা পেয়েছে। স্বপ্নে নিজ বাড়িতে মিলিটারি নিয়ে গুলজারকে হানা দিতে, আর তাদের গুলিতে নিজেকে মরতে দেখে আরিফ। ঘুম থেকে উঠে সালাহউদ্দিনের সেই যুদ্ধ বার্তা সম্বলিত চিঠি পুড়িয়ে ফেলে। আরিফ পরিকল্পনা করে সকলকে যুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য বেনামে চিঠি লেখা শুরু করে, ফরিদ সেই চিঠিগুলি বিলি করে। গুলজার বেনামি চিঠির ঘটনা ধরে ফেলে, ডাকঘরে গিয়ে সে আরিফকে বেনামি চিঠি বিলির বিষয়ে জানতে চায়। আরিফ কৌশলে তাকে পাকিস্তানের পক্ষে সুমন করে লেখা একটা বেনামি চিঠি দিয়ে নিবৃত করে। গুলজার পোস্ট অফিসে পাকিস্তানের পতাকা টানিয়ে বিদায় নেয়। গ্রামের যুবকরা বুঝতে পারে, একজনকে নয়, সবাইকে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা রাতের আঁধারে ফরিদের সাথে মশাল মিছিল বের করে। মিলিটারিদের ভয়ে আরিফ তাদের মিছিল আটকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বলে। সরকারি চাকুরির কারণে আরিফ যুদ্ধে যেতে পারে না, ফরিদকেও নিয়মের মধ্যে নেপথ্যে থেকে যুদ্ধের জন্য কাজ করতে বলে। গুলজারের অগোচরে সবাইকে সংগঠিত করে। সবাই নিজের পরিবার, প্রেমিকাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়। ফুলঝরি গ্রামের মাস্টারের নেতৃত্বে আরিফ একদল লোককে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পাঠিয়ে দেয়। গ্রামের পুরাতন জমিদার বাড়িতে মিলিটারি ক্যাম্প করে। এরই মাঝে রমজান ডাকাতের নামে পিয়ারি বেগমের চিঠি আসে। পিয়ারি বেগম মকবুলের স্ত্রী। চিঠিতে জানা যায় মকবুলকে মিলিটারিরা তার দোকানের ভিতরে পুড়িয়ে মেরেছে। রমজান জানায় তার বন্ধু খাটি মুসলিম ছিল। তবুও তাকে মরতে হলো। আরিফ তখন রমজানকে বোঝায় এটা শুধু হিন্দু-মুসলিম যুদ্ধ নয়, পাকিস্তানিরা তাদের কাউকে ছাড়বে না। রমজান প্রতিশোধ নিতে চায়। গ্রামের যুবকদের হঠাৎ গ্রাম ছাড়া হতে দেখে গুলজারের সন্দেহ হয়। এলাকার যুবক সবুজের বাড়িতে গিয়ে চিঠি খুঁজে বের করে আরিফকে ধরতে যায়। গুলজার আর মিলিটারিদের তাড়া খেয়ে আরিফ ও ফরিদ যুদ্ধে যোগ দিতে গ্রাম থেকে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে চলে যায়। পথিমধ্যে একজন বৃদ্ধার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। প্রশিক্ষণ নিয়ে আরিফের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নিজ গ্রামের আশেপাশের এলাকায় অভিযান চালানো শুরু করে। সবুজ ধরা পরার পর আরিফের নেতৃত্বে মিলিটারি ক্যাম্প আক্রমণ করে। বন্দি সবুজকে গুলজার গুলি করে হত্যা করে। মিলিটারি ক্যাম্পের যুদ্ধে মিলিটারিদের পরাস্ত করা হয়, যুদ্ধে রমজান ডাকাত মারা যায়। ক্যাম্পে ফরিদের সন্তান্সম্ভবা স্ত্রীকে অনেকের সাথে মৃতবস্থায় পাওয়া যায়। যুদ্ধ শেষে মুক্তিযোদ্ধরা ফুলঝরি গ্রামের মাস্টারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়, সেই রাতে বৃষ্টির মাঝে ডুমুরিয়া থানার ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টের অস্ত্রভান্ডার লুট করতে আরিফের দল নৌকায় করে এলাকা ত্যাগ করে। নয়ন ও সালাম তাদের স্বাগত জানায়। সুরেশ বাহিনির সাথে থানা আক্রমণের পরিকলপনা করা হয়। থানা উড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র লুট করে। সেই রাতে মিলিটারিরা আরিফদের পালটা আক্রমণ করে। আরিফকে বাঁচাতে গিয়ে ফরিদ নিজের প্রাণ উতসর্গ করে। ফরিদকে কবর দেওয়ার পরপর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলিটারিরা গুলিবর্ষণ শুরু করে। গ্রেনেডের আঘাতে আরিফ আহত হয়। নয়ন ও সালাম এসে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অজ্ঞান আরিফকে উদ্ধার করে, নয়নের বাড়িতে নিজঘরে লুকিয়ে রাখে। নয়ন মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তার বড়ভাই শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকার। নয়ন তার ভাবি গোলাপজানের কাছ থেকে অসুস্থ আরিফের জন্য কাঁথা চায়। নয়নের ভাবি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে। প্রচন্ড জ্বরে কাতর আরিফের গায়ে কাঁথা দিতে গিয়ে গোলাপজান আবিস্কার করে, অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা আর কেউ নন, তার প্রাক্তন প্রেমিক আরিফ। গোলাপজানের সাথে পালিয়ে প্রেম করতে গিয়ে আরিফ তার ভাইয়ের হাতে ধরা পরার বহুদিন বাদে তাদের আবার দেখা হলো। নিজের রাজাকার স্বামীর নজর থেকে গোলাপজান আর নয়ন আরিফকে লুকিয়ে রাখে গোলাপজানের সেবাযত্নে আরিফ সুস্থ হয়। সুস্থ আরিফ আবার যুদ্ধে যাওয়ার দিন গোলাপজান ভাল খাবারের আয়োজন করতে চায়। স্বামীকে বলে ভাল আয়োজনের বাজার করাতে বলে। বাজার করে আনা কর্মচারী গোলাপজানের কাছে বাজার রেখে নয়নের ঘরে মুক্তিযোদ্ধাদের আলাপ শুনে ফেলে। সে গিয়ে নয়নের রাজার ভাইকে ডেকে আনে। বাড়িতে এসে গোল্পাজানের রাজাকার স্বামী আরিফ নয়ন সহ মুক্তিযোদ্ধাদের নয়নের ঘরে তালাবদ্ধ করে মিলিটারিদের খবর দেয়। গোলাপজান তাদের ছেড়ে দেওয়ার আকুতি করলেও তার স্বামী ভ্রুক্ষেপ করে না। দেশের স্বাধীনতার স্বার্থে রাজাকার স্বামঈকে কুপিয়ে হত্যা করে নয়নের ঘর থেকে আরিফ সহ সবাইকে মুক্ত করে গোলাপ। মিলিটারি আসার আগে সবাই একসাথে মুক্তিযুদ্ধে যেতে চায়। শেষ দৃশ্যে আরিফ ও গোলাপজানকে একসাথে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ব্যবহৃত পতাকা পতাকা হাতে হাসিমুখে দৌড়ায়।