বোগালটেক গেব্রে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বোগালটেক গেব্রে
জন্ম১৯৫০
মৃত্যু৬ নভেম্বর ২০১৯
জাতীয়তাইথিয়পিয়
পেশাবিজ্ঞানী, সমাজকর্মী
আন্দোলননারী-খৎনা প্রতিরোধ

বোগালটেক "বোগে" (উচ্চারণ বো-গে) গেব্রে (১৯৫০ – ৬ নভেম্বর ২০১৯)[১] একজন ইথিওপিয় বিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মী। ২০২০ সালে দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট;; তাকে "যে নারী ইথিওপিয় নারীদের বিদ্রোহ করতে শিখিয়েছেন হিসেবে অভিহিত করে।[২] তার বোন ফিকির্তে গেব্রের সাথে মিলিতভাবে গেব্রে কেএমজি ইথিওপিয়া প্রতিষ্ঠিত করেন। পূর্বে এর নাম ছিল কেম্বাত্তি মেনত্তি গেজিমা-তোপে (কেমবাত্তা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে নারী)।[৩] এই প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের জন্য কাজ করে। উল্লেখযোগ্য দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে নারী খৎনা এবং বধূ নির্যাতন, যে রীতির মাধ্যমে তরুণ নারীদের অপহরণ এবং ধর্ষণের মাধ্যমে বিয়ে করানো হয়।[৪] ইথিওপিয়ার ঐতিহ্যবাহী রীতি বিষয়ক জাতীয় কমিটি (ন্যাশনাল কমিটি অব ট্রাডিশনাল প্র্যাকটিসেস অব ইথিওপিয়া) অনুযায়ী ২০০৩ সাল পর্যন্ত এমন ধরনের রীতির মাধ্যমে প্রায় ৬৯% বিয়ে সংঘটিত হত।[২]

দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী গেব্রের প্রতিষ্ঠিত সংস্থা কেমবাত্তায় বধূ নির্যাতনের হার প্রায় ৯০% কমাতে সক্ষম হয়েছে। দ্য ইকোনোমিস্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী নারী খৎনার হার ১০০% থেকে ৩%-এ কমানো গেছে এই সংস্থার কারণে।[২][৫] ২০০৫ সালে গেব্রে নর্থ-সাউথ পুরস্কার ২০০৫ এবং ২০০৭ সালে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও মানবাধিকারে অবদান রাখায় জোনাথন ম্যান পুরস্কার লাভ করেন।[৬] আফ্রিকার উন্নয়নে তার অবদানের জন্য ২০১৩ সালের মে মাসে তিনি কিং বাউডুইন ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রাইজ লাভ করেন।[৩][৫][৭]

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

১২ বছর বয়সে গেব্রে নিজেই নারী খৎনার শিকার হন। গেব্রেকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে বাধা দেন তার পিতা। কিন্তু তিনি একটি মিশনারী স্কুলে পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যান।[৩][৮] শেষমেশ তিনি জেরুজালেমে অণুজীববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। এর পরবর্তীতে ফুলব্রাইট বৃত্তি লাভ করে তিনি ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টে পড়তে যান।[২] যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনারত অবস্থাতেই তিনি তার প্রথম দাতব্য সংস্থা "ডেভেলপমেন্ট থ্রু এডুকেশন" প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে ইথিওপিয়ার উচ্চবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় $২৬০০০ মার্কিন ডলারের প্রযুক্তিগত বই লাভ করে।[৯]

মহামারীবিদ্যায় পিএইচডি লাভ করে গেব্রে ইথিওপিয়ায় ফিরে ১৯৯০-এর দশক থেকে শুরু করে নারী অধিকার রক্ষা। এইচআইভি/এইডসের মত ট্যাবু বিষয়ে বক্তৃতা দিয়ে তিনি বুঝতে পারেন যে পরিবর্তন আনার পূর্বে তার গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি আঞ্চলিক শিক্ষার্থীরা যেন নিকটস্থ বিদ্যালয়ে যেতে পারে এবং ব্যবসায়ীরা যেন নিকটস্থ বাজারে যেতে পারে, তার জন্য সেতুনির্মাণ শুরু করেন। সেতু নির্মাণের পর তিনি ও তার বোন কেজিএম ইথিওপিয়া প্রতিষ্ঠা করে, যা নারীদের অধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে সম্প্রদায়ের মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা করতো।

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Ethiopian Women Rights Advocate Passes Away"www.ezega.com। সংগ্রহের তারিখ নভে ১২, ২০১৯ 
  2. Hari, Johann (মার্চ ১৬, ২০১০)। "Kidnapped, Raped, Married: The Extraordinary Rebellion of Ethiopia's Abducted Wives"The Independent। ১৯ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪ 
  3. Rosenberg, Tina (জুলাই ১৭, ২০১৩)। "Talking Female Circumcision Out of Existence"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪ 
  4. "KMG Ethiopia"। KMG Ethiopia। ২০১৩-০৪-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪ 
  5. "Standing up for women"The Economist। মে ২৩, ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪ 
  6. "Fulbright Alumna Awarded King Baudouin Prize in Belgium"Bureau of Educational and Cultural Affairs। United States Department of State। আগস্ট ১৯, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৭, ২০১৪ 
  7. "Bogalatech Gebre (Ethiopia)" (পিডিএফ)। eeas.europa.eu। ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪ 
  8. "Abducted. Raped. Married. Can Ethiopia's wives ever break free?"Abbay Media। মার্চ ১৭, ২০১০। ২০১৪-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪ 
  9. Shetty, Priya (জুন ২৩, ২০০৭)। "Bogaletch Gebre: ending female genital mutilation in Ethiopia"The Lancet