বীর বাহাদুর উশৈ সিং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(বীর বাহাদুর থেকে পুনর্নির্দেশিত)
বীর বাহাদুর উশৈ সিং
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৭ জানুয়ারি ২০১৯ – ১০ জানুয়ারি ২০২৪
রাষ্ট্রপতিআবদুল হামিদ
প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা
পূর্বসূরীনিয়োগ দেয়া হয়নি
উত্তরসূরীকুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা
পার্বত্য বান্দরবান আসনের
সংসদ সদস্য
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
জুন ১৯৯৬ - চলমান
পূর্বসূরীসাচিং প্রু জেরী
কাজের মেয়াদ
১৯৯১ – ফেব্রুয়ারী ১৯৯৬
পূর্বসূরীঅং শৈ প্রু চৌধুরী
উত্তরসূরীসাচিং প্রু জেরী
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
জানুয়ারি ২০১৪ – ডিসেম্বর ২০১৮
রাষ্ট্রপতিআবদুল হামিদ
প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা
পূর্বসূরীদীপংকর তালুকদার
উত্তরসূরীনিয়োগ দেয়া হয়নি
চেয়ারম্যান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড
কাজের মেয়াদ
জানুয়ারি ২০০৯ – জানুয়ারি ২০১৪
উত্তরসূরীনববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1960-01-10) ১০ জানুয়ারি ১৯৬০ (বয়স ৬৪)
বান্দরবান, পূর্ব পাকিস্তান
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীমেহ্লা প্রু[১]
পিতামাতালালমোহন বাহাদুর(পিতা) চ য়ই(মাতা)[১]
প্রাক্তন শিক্ষার্থী
পেশারাজনীতি
জীবিকাব্যবসা
ধর্মবৌদ্ধ

বীর বাহাদুর উশৈ সিং (জন্ম: ১০ জানুয়ারি ১৯৬০) হলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও ৩০০ নং (বান্দরবান) আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য।[২] তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন “সংসদ সদস্য” হিসাবে নির্বাচিত হন।[৩] ২০১৮ সালে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী হন।[৪]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

বীর বাহাদুর উশৈ সিং ১৯৬০ সালের ১০ জানুয়ারী বান্দরবান পার্বত্য জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম লালমোহন বাহাদুর এবং মাতার নাম মা চয়ই। সহধর্মিণী মেহ্লাপ্রু। দুই পুত্র এবং এক কন্যা

শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

১৯৬৫ সালে তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে বান্দরবান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি প্রথমে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে এবং পরে বান্দরবান সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

ছাত্র জীবনেই তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ছাত্র জীবনে তিনি বান্দরবান ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯২ সালে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তি চুক্তির পূর্বে এ সংক্রান্ত সংলাপ কমিটির অন্যতম সদস্য এবং তৎকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটি-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হন। তিনি ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাতীয় সংসদের বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংসদীয় দলের হুইপ নির্বাচিত হন।

তিনি ২০০৮ সাালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চতুর্থবারের মত নির্বাচিত হন। এই সংসদে তিনি সংসদের সংসদ কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি এই সময় প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় দ্বিতীয় বারের মত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটি-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের ২৩ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান।[৫]

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চম বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এই সময় তিনি শেখ হাসিনার গঠিত মন্ত্রিসভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৮সালের ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ষষ্ঠ বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এই সময় তিনি শেখ হাসিনার গঠিত মন্ত্রিসভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।[৪]

ক্রীড়া সংগঠক[সম্পাদনা]

ছাত্রজীবন থেকেই তিনি খেলোয়াড় আসবে ফুটবল এর সাথে জড়িত ছিলেন এবং পরবর্তীতে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ফুটবলের সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৭ সালে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল কোয়ালিফাইড রাউন্ডে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়া সফর করেন এবং বাংলাদেশ ফুটবল দলের টিম লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত অলিম্পিক২০০০ এ বাংলাদেশ দলের চিফ দা মিশনের দায়িত্ব পালন করেন। এক সময় তিনি বাংলাদেশ ফুটবল টুর্নামেন্ট দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন স্কাউট এর সাথে জড়িত ছিলেন এবং বান্দরবান জেলা স্কাউট এর কমিশনার ছিলেন।[৫]

পরিবার[সম্পাদনা]

১৯৯১ সালে বীর বাহাদুর মেহ্লাপ্রুর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের দুই পুত্র এবং এক কন্যা রয়েছে। তাঁর স্ত্রী বান্দরবানের বিশিষ্ট নারী নেত্রী এবং ব্যবসায়ী।[১] তাদের জ্যেষ্ঠ পুত্র রবিন বাহাদুর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক।[৬] বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বীর বাহাদুরের স্ত্রীর বড় ভাই।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "একনজরে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী উশৈসিং"www.jugantor.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৭ 
  2. "১০ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা (বাংলা)"www.parliament.gov.bd। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২০১৯-০১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  3. বাংলাদেশ গেজেট : অতিরিক্ত সংখ্যা (পিডিএফ)ঢাকা: নির্বাচন কমিশন, বাংলাদেশ। ৮ জানুয়ারি ২০১৪। পৃষ্ঠা ২৩৪। ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  4. "মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংকে নাগরিক সংবর্ধনা"Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০১-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৭ 
  5. বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা: বান্দরবান। প্রকাশকালঃ জুন ২০১৪
  6. "ছাত্রলীগের উপ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হলেন রবিন বাহাদুর | PaharBarta.com"। ২০১৯-০৫-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৭