বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী
জন্মসেপ্টেম্বর, ১৯০৮
মৃত্যু১৭ জুলাই ১৯৮১
(বর্তমান ভারত ভারত)
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৬৪ সাল পর্যন্ত)
 ভারত
পেশারাজনীতিবিদ
পরিচিতির কারণব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিকন্যা
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন
পিতা-মাতা
  • মৃত্যুঞ্জয় মৈত্র (পিতা)
  • মনোমহিনী দেবী (মাতা)

বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী (সেপ্টেম্বর ১৯০৮ — ১৭ জুলাই ১৯৮১) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা।

জন্ম ও পরিবার[সম্পাদনা]

বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী ১৯০৮ সালে রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৃত্যুঞ্জয় মৈত্র ও মাতার নাম মনোমহিনী দেবী। তার জন্মের তিনবছর বয়সের মধ্যেই তার পিতা এবং মাতার মৃত্যু হয়। তখন তিনি তার মেজদির কাছে মানুষ হয়ে ওঠেন। ১১ বছর বয়সে সিরাজগঞ্জের যতীন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচার্যের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। শ্বশুরবাড়ির প্রায় সকলেই স্বদেশীভাবাপন্ন ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর ১১ বছর বয়সে বিয়ে হয় এবং স্বামীর বাড়ি থেকে স্বদেশ সেবার অনুপ্রেরণা পান। ১৪ বছর বয়সে স্বামী মারা যাবার পরে ১৯৩১ সালে কলকাতায় আসেন এবং লাবণ্যপ্রভা দত্তর সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করেন। ১৯৩২ সালে স্বাধীনতা দিবস পালন করার জন্য দলে দলে মেয়েরা পথে নেমেছিল; বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী তখন কংগ্রেস নেত্রী লাবণ্যপ্রভা দত্তের কাছে আসেন রাজনৈতিকভাবে যুক্ততার জন্য। তিনি তখন মেয়েদের বেছে বেছে নিয়ে আইন অমান্য করতে পাঠাবার ব্যবস্থা করছিলেন। বিষ্ণুপ্রিয়াও আন্দোলনে যােগদানের অনুমতি চাইলেন। প্রায় ২৫। ২৬টি সত্যাগ্রহীর সঙ্গে শ্ৰদ্ধানন্দ পার্কে তিনি চলে যান আইন অমান্য করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে। সেখানেই তিনি গ্রেপ্তার হন এবং তাঁর প্রতি ছয়মাস সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ হয়।[১]

জেল জীবন[সম্পাদনা]

প্রেপ্তার হওয়ার পরে হিজল, প্রেসিডেন্সি ও বহরমপুর জেলে তিনি বন্দী ছিলেন। জেলের মধ্যে কল্যাণী দাস, সুলতা কর প্রভৃতির সঙ্গে মিশে তাদের প্রভাবে তিনি বিপ্লবীদলে যােগদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরে বেরিয়ে এসে তিনি শােভারানী দত্তের সঙ্গে যুগান্তর নামক বিপ্লবী দলে কাজ করেন।

পরবর্তী কাজ[সম্পাদনা]

জেল থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী বি.পি.সি.সি.-র সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৪২ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত কলিকাতায় ২২নং ওয়ার্ড কংগ্রেসের সম্পাদিকা ছিলেন। তা ছাড়া শােভারানী দত্ত নিজে তাঁকে বিপ্লবীদলের কাজ করতে শিক্ষা দেন। রিভলবার আদান-প্রদান করা, লুকিয়ে বিপ্লবীদের সাহায্য করা, তাদের আশ্রয় দেওয়া সবই তিনি শােভারানী দত্তের নির্দেশে করতেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

নানা ধরনের সমাজসেবার কাজ করতেন। এজন্য তিনি ম্যাজিক-ল্যান্টার্ন নিয়ে মালদহ, রাজশাহী, বহরমপুর প্রভৃতি নানা স্থানে ভ্রমণ করেন। এইভাবে জীবনের সার্থকতার সাধনায় তিনি জনসেবার কাজেই নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৮১ সালের ১৭ জুলাই তিনি পরলােকগমন করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. কমলা দাশগুপ্ত (জানুয়ারি ২০১৫)। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী, অগ্নিযুগ গ্রন্থমালা ৯কলকাতা: র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন। পৃষ্ঠা ১৯৮-১৯৯। আইএসবিএন 978-81-85459-82-0