চারুলতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
MerlLinkBot (আলোচনা | অবদান)
Bot: repairing dead link sensesofcinema.com
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে, কোনো সমস্যা?
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
| director = [[সত্যজিৎ রায়]]
| director = [[সত্যজিৎ রায়]]
| producer = আরডিবি প্রোডাকশন্‌স
| producer = আরডিবি প্রোডাকশন্‌স
| writer = [[সত্যজিৎ রায়]]<br>[[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর|রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের]] গল্প অবলম্বনে
| writer = [[সত্যজিৎ রায়]]<br />[[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর|রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের]] গল্প অবলম্বনে
| starring = [[সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়]],</br> [[মাধবী মুখোপাধ্যায়]],</br> [[শৈলেন মুখোপাধ্যায়]],</br> শ্যামল ঘোষাল
| starring = [[সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়]],</br> [[মাধবী মুখোপাধ্যায়]],</br> [[শৈলেন মুখোপাধ্যায়]],</br> শ্যামল ঘোষাল
| original_music = [[সত্যজিৎ রায়]]
| original_music = [[সত্যজিৎ রায়]]
১৭ নং লাইন: ১৭ নং লাইন:
| runtime = ১১৭ মিনিট
| runtime = ১১৭ মিনিট
| country = [[ভারত]]
| country = [[ভারত]]
| awards = সিলভার বেয়ার, বার্লিন উৎসব<br>সেরা চলচ্চিত্র, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
| awards = সিলভার বেয়ার, বার্লিন উৎসব<br />সেরা চলচ্চিত্র, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
| language = [[বাংলা]]
| language = [[বাংলা]]
| budget =
| budget =
২৭ নং লাইন: ২৭ নং লাইন:
'''চারুলতা''' [[সত্যজিৎ রায়]] পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র। [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর|রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের]] বড় গল্প [[নষ্টনীড়]] অবলম্বনে এর চিত্রনাট্য রচিত হয়েছে। [[১৯৬৪]] সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রটি ইংরেজিভাষী বিশ্বে ''The Lonely Wife'' নামে পরিচিত। সার্থক চিত্রায়নের খাতিরে এতে গল্পের কাহিনী খানিকটা পরিবর্তন করা হয়েছে।
'''চারুলতা''' [[সত্যজিৎ রায়]] পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র। [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর|রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের]] বড় গল্প [[নষ্টনীড়]] অবলম্বনে এর চিত্রনাট্য রচিত হয়েছে। [[১৯৬৪]] সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রটি ইংরেজিভাষী বিশ্বে ''The Lonely Wife'' নামে পরিচিত। সার্থক চিত্রায়নের খাতিরে এতে গল্পের কাহিনী খানিকটা পরিবর্তন করা হয়েছে।


==নির্মাণ==
== নির্মাণ ==


==কাহিনী==
== কাহিনী ==
{{spoiler}}
{{spoiler}}
[[১৮৭৯]] সালের উচ্চবিত্ত এক বাঙালি পরিবারকে কেন্দ্র করে এর কাহিনী রচিত হয়েছে। পরিবারের কর্তা ভূপতি বিশুদ্ধ রাজনৈতিক চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়ে একটি ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ করেন। তার বাড়িতেই "Sentinnel" নামে পত্রিকাটির কাজ শুরু হয়। পত্রিকার কাজে দিনরাত মগ্ন থাকায় সদ্য যৌবনে পদার্পণকারী স্ত্রীর দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার সময় পাননা। স্ত্রী চারুলতার সময় কাটে একা একা। অবসরে চারু সাহিত্য চর্চা করে সময় কাটায়। স্ত্রীর নিঃসঙ্গতা স্বাভাবিকভাবেই ভূপতির চোখে পড়ে। তাই চারুর ভাই উমাপদকে চিঠি লিখে সস্ত্রীক চলে আসার জন্য বলেন। উমাপদকে নিজের পত্রিকার ম্যানেজার নিযুক্ত করেন। উমাপদর স্ত্রী মন্দাকিনীর সাথে চারুর চরিত্রের আকাশ-পাতাল ফারাক। তাই চারুর নিঃসঙ্গতা খুব কমই প্রশমিত হয়। এমন সময় আগমন ঘটে ভূপতির পিসতুতো ভাই অমলের।
[[১৮৭৯]] সালের উচ্চবিত্ত এক বাঙালি পরিবারকে কেন্দ্র করে এর কাহিনী রচিত হয়েছে। পরিবারের কর্তা ভূপতি বিশুদ্ধ রাজনৈতিক চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়ে একটি ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ করেন। তার বাড়িতেই "Sentinnel" নামে পত্রিকাটির কাজ শুরু হয়। পত্রিকার কাজে দিনরাত মগ্ন থাকায় সদ্য যৌবনে পদার্পণকারী স্ত্রীর দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার সময় পাননা। স্ত্রী চারুলতার সময় কাটে একা একা। অবসরে চারু সাহিত্য চর্চা করে সময় কাটায়। স্ত্রীর নিঃসঙ্গতা স্বাভাবিকভাবেই ভূপতির চোখে পড়ে। তাই চারুর ভাই উমাপদকে চিঠি লিখে সস্ত্রীক চলে আসার জন্য বলেন। উমাপদকে নিজের পত্রিকার ম্যানেজার নিযুক্ত করেন। উমাপদর স্ত্রী মন্দাকিনীর সাথে চারুর চরিত্রের আকাশ-পাতাল ফারাক। তাই চারুর নিঃসঙ্গতা খুব কমই প্রশমিত হয়। এমন সময় আগমন ঘটে ভূপতির পিসতুতো ভাই অমলের।
৩৯ নং লাইন: ৩৯ নং লাইন:
উমাপদ বিশ্বাসঘাতকতা করে। পত্রিকার দেনা ২৭০০ টাকার মধ্যে মাত্র ৩০০ টাকা পরিশোধ করে বাকিটা নিয়ে সরে পড়ে। পত্রিকা অচল হয়ে পড়ে। ভেঙে পড়ে ভূপতি। চারু অমলকে জানায়, কিছুতেই যেন সে বাড়ি ছেড়ে না যায়। কিন্তু অমল সে রাতেই দাদার উদ্দেশ্য একটা ছোট চিঠি রেখে পালিয়ে যায় বাড়ি থেকে। পত্রিকা ছেড়ে স্ত্রীর দিকে মনোযোগী হয় ভূপতি। বেড়াতে যায় সমুদ্রের ধারে। সেখানেই স্ত্রীর সাথে তার অনেক আলাপ হয়, একটি পত্রিকা প্রকাশের জন্য তারা মনস্থির করে যার বাংলা ও ইংরেজি দুই অংশই থাকবে। বাংলা অংশে চারু লেখালেখি করবে। এই উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় ফিরে গিয়ে অমলের চিঠি পায় তারা। সে বর্তমানে মাদ্রাজে এক বন্ধুর বাড়িতে আছে আর বিয়ের বিষয়টা নিয়ে ভালোভাবেই চিন্তা করছে। বিয়ে করে ফেলাটা হয়তো সময়ের ব্যাপার মাত্র। চিঠি না পড়েই কান্নায় ভেঙে পড়ে চারু যা দেখে ফেলে ভুপতি। ভাইয়ের সাথে স্ত্রীর সম্পর্ক তাকে অশান্তিতে ফেলে দেয়। তাদের মিল হওয়াটা তখন অসম্ভবের পর্যায়ে, সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে বিচ্ছেদও অস্বভাবিক। শেষ পর্যন্ত তাদের হাত মিলেনি। তাদের মিলন না বিচ্ছেদ হবে তা মুখ্য নয়। সেই দিনটি বা সে সময়টিতে তাদের নীড় যে ভেঙে গেছে চলচ্চিত্রে তা-ই মুখ্যভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে।
উমাপদ বিশ্বাসঘাতকতা করে। পত্রিকার দেনা ২৭০০ টাকার মধ্যে মাত্র ৩০০ টাকা পরিশোধ করে বাকিটা নিয়ে সরে পড়ে। পত্রিকা অচল হয়ে পড়ে। ভেঙে পড়ে ভূপতি। চারু অমলকে জানায়, কিছুতেই যেন সে বাড়ি ছেড়ে না যায়। কিন্তু অমল সে রাতেই দাদার উদ্দেশ্য একটা ছোট চিঠি রেখে পালিয়ে যায় বাড়ি থেকে। পত্রিকা ছেড়ে স্ত্রীর দিকে মনোযোগী হয় ভূপতি। বেড়াতে যায় সমুদ্রের ধারে। সেখানেই স্ত্রীর সাথে তার অনেক আলাপ হয়, একটি পত্রিকা প্রকাশের জন্য তারা মনস্থির করে যার বাংলা ও ইংরেজি দুই অংশই থাকবে। বাংলা অংশে চারু লেখালেখি করবে। এই উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় ফিরে গিয়ে অমলের চিঠি পায় তারা। সে বর্তমানে মাদ্রাজে এক বন্ধুর বাড়িতে আছে আর বিয়ের বিষয়টা নিয়ে ভালোভাবেই চিন্তা করছে। বিয়ে করে ফেলাটা হয়তো সময়ের ব্যাপার মাত্র। চিঠি না পড়েই কান্নায় ভেঙে পড়ে চারু যা দেখে ফেলে ভুপতি। ভাইয়ের সাথে স্ত্রীর সম্পর্ক তাকে অশান্তিতে ফেলে দেয়। তাদের মিল হওয়াটা তখন অসম্ভবের পর্যায়ে, সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে বিচ্ছেদও অস্বভাবিক। শেষ পর্যন্ত তাদের হাত মিলেনি। তাদের মিলন না বিচ্ছেদ হবে তা মুখ্য নয়। সেই দিনটি বা সে সময়টিতে তাদের নীড় যে ভেঙে গেছে চলচ্চিত্রে তা-ই মুখ্যভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে।


==চরিত্রায়ন==
== চরিত্রায়ন ==
* [[মাধবী মুখোপাধ্যায়]] - চারুলতা
* [[মাধবী মুখোপাধ্যায়]] - চারুলতা
* [[সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়]] - অমল
* [[সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়]] - অমল
৪৫ নং লাইন: ৪৫ নং লাইন:
* [[শ্যামল ঘোষাল]] - উমাপদ
* [[শ্যামল ঘোষাল]] - উমাপদ


==সমালোচনা==
== সমালোচনা ==


==পুরস্কার ও সম্মাননা==
== পুরস্কার ও সম্মাননা ==
* [[১৯৬৪]] - সিলভার বেয়ার পুরস্কার, [[বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব]]
* [[১৯৬৪]] - সিলভার বেয়ার পুরস্কার, [[বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব]]
* [[১৯৬৫]] - ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের গোল্ডেন লোটাস পুরস্কার, সেরা চলচ্চিত্র।
* [[১৯৬৫]] - ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের গোল্ডেন লোটাস পুরস্কার, সেরা চলচ্চিত্র।


==প্রাসঙ্গিক অধ্যয়ন==
== প্রাসঙ্গিক অধ্যয়ন ==
* ''চারুলতা প্রসঙ্গে'' - '''বিষয় চলচ্চিত্র''', লেখক - [[সত্যজিৎ রায়]]। এই চলচ্চিত্রের উপর রুদ্রের সমালোচনার জবাবে লিখা।
* ''চারুলতা প্রসঙ্গে'' - '''বিষয় চলচ্চিত্র''', লেখক - [[সত্যজিৎ রায়]]। এই চলচ্চিত্রের উপর রুদ্রের সমালোচনার জবাবে লিখা।
* ''[http://www.ipv.pt/forumedia/5/9.htm Writing on the Screen: Satyajit Ray’s Adaptation of Tagore]'', বিশ্বাস মৈনাক
* ''[http://www.ipv.pt/forumedia/5/9.htm Writing on the Screen: Satyajit Ray’s Adaptation of Tagore]'', বিশ্বাস মৈনাক
৬০ নং লাইন: ৬০ নং লাইন:
* ''[http://www.indiastar.com/KaustuvSen.html Our Culture, Their Culture:Indian-ness in Satyajit Ray and Rabindranath Tagore explored through their works Charulata and Nashtanir]'' - কেন কাউস্তাভ
* ''[http://www.indiastar.com/KaustuvSen.html Our Culture, Their Culture:Indian-ness in Satyajit Ray and Rabindranath Tagore explored through their works Charulata and Nashtanir]'' - কেন কাউস্তাভ


==বহিঃসংযোগ==
== বহিঃসংযোগ ==
*[http://www.induna.com/1000000007-productdetails/ চারুলতা (১৯৬৪)]
* [http://www.induna.com/1000000007-productdetails/ চারুলতা (১৯৬৪)]
*[http://www.satyajitray.org/films/charu.htm সত্যজিৎরায়.অরগ]
* [http://www.satyajitray.org/films/charu.htm সত্যজিৎরায়.অরগ]
*[http://www.slantmagazine.com/film/film_review.asp?ID=1080 চলচ্চিত্রের রিভিউ]
* [http://www.slantmagazine.com/film/film_review.asp?ID=1080 চলচ্চিত্রের রিভিউ]
*[http://www.sensesofcinema.com/2004/cteq/charulata/ চলচ্চিত্রের বিশ্লেষণ]
* [http://www.sensesofcinema.com/2004/cteq/charulata/ চলচ্চিত্রের বিশ্লেষণ]


{{সত্যজিৎ রায়ের ছবি}}
{{সত্যজিৎ রায়ের ছবি}}
{{টেমপ্লেট:বাংলা চলচ্চিত্র}}
{{টেমপ্লেট:বাংলা চলচ্চিত্র}}


[[category:১৯৬৪-এর চলচ্চিত্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৬৪-এর চলচ্চিত্র]]
[[Category:সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্র]]
[[category:বাংলা ভাষার ভারতীয় চলচ্চিত্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার ভারতীয় চলচ্চিত্র]]
[[category:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]]
[[বিষয়শ্রেণী:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র]]



২০:৩২, ২০ মে ২০১১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

চারুলতা
চিত্র:CharulataG.jpg
পরিচালকসত্যজিৎ রায়
প্রযোজকআরডিবি প্রোডাকশন্‌স
রচয়িতাসত্যজিৎ রায়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে
শ্রেষ্ঠাংশেসৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়,
মাধবী মুখোপাধ্যায়,
শৈলেন মুখোপাধ্যায়,
শ্যামল ঘোষাল
পরিবেশকএডওয়ার্ড হ্যারিসন
মুক্তি১৯৬৪
স্থিতিকাল১১৭ মিনিট
দেশভারত
ভাষাবাংলা

চারুলতা সত্যজিৎ রায় পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় গল্প নষ্টনীড় অবলম্বনে এর চিত্রনাট্য রচিত হয়েছে। ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রটি ইংরেজিভাষী বিশ্বে The Lonely Wife নামে পরিচিত। সার্থক চিত্রায়নের খাতিরে এতে গল্পের কাহিনী খানিকটা পরিবর্তন করা হয়েছে।

নির্মাণ

কাহিনী

টেমপ্লেট:Spoiler ১৮৭৯ সালের উচ্চবিত্ত এক বাঙালি পরিবারকে কেন্দ্র করে এর কাহিনী রচিত হয়েছে। পরিবারের কর্তা ভূপতি বিশুদ্ধ রাজনৈতিক চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়ে একটি ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ করেন। তার বাড়িতেই "Sentinnel" নামে পত্রিকাটির কাজ শুরু হয়। পত্রিকার কাজে দিনরাত মগ্ন থাকায় সদ্য যৌবনে পদার্পণকারী স্ত্রীর দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার সময় পাননা। স্ত্রী চারুলতার সময় কাটে একা একা। অবসরে চারু সাহিত্য চর্চা করে সময় কাটায়। স্ত্রীর নিঃসঙ্গতা স্বাভাবিকভাবেই ভূপতির চোখে পড়ে। তাই চারুর ভাই উমাপদকে চিঠি লিখে সস্ত্রীক চলে আসার জন্য বলেন। উমাপদকে নিজের পত্রিকার ম্যানেজার নিযুক্ত করেন। উমাপদর স্ত্রী মন্দাকিনীর সাথে চারুর চরিত্রের আকাশ-পাতাল ফারাক। তাই চারুর নিঃসঙ্গতা খুব কমই প্রশমিত হয়। এমন সময় আগমন ঘটে ভূপতির পিসতুতো ভাই অমলের।

চিত্র:Charulata1.jpg
দুরবিন হাতে চারুলতা বাগানে দোলনায় বসে রয়েছে

অমলের সাথে চারুর সম্পর্ক আগে থেকেই বেশ ঘনিষ্ঠ। তবে প্রথম দিকে তাদের সম্পর্কে বৌঠান-ঠাকুরপোর স্বাভাবিকতা ছাড়া অন্য কিছুর ইঙ্গিত দেয়া হয়নি। ভূপতি অমলকে নিজ স্ত্রীর মধ্যে লুক্কায়িত সাহিত্যিক প্রতিভা বের করে আনার দায়িত্ব দেয়। এর সাথে তার পত্রিকার প্রুফ দেখানোর কাজে লাগানোরও চেষ্টা করে। অবশ্য সাহিত্য চর্চা ছাড়া অন্য কিছুতে অমলের খুব একটা আগ্রহ দেখা যায়নি। এর মধ্যে উমাপদর মানসিক অবস্থা বুঝতে পেরে ভূপতি তাকে পত্রিকার আর্থিক দিকটার সমস্ত দায়িত্ব দিয়ে দেয়। চারুর ভাই বলেই হয়তো উমাপদকে অবিশ্বাস করার প্রশ্ন উঠেনি। চারু অবশ্য তার ভাই সম্বন্ধে এতোটা বিশ্বাসী ছিল বলে মনে হয়না।

অমল চারুর সাথে সাহিত্য চর্চা শুরু করে তার মধ্যের লুক্কায়িত প্রতিভার স্ফূরণ ঘটানোর জন্য। এর সাথে শুরু হয় অমল, চারুলতা ও মন্দাকিনীর পারষ্পরিক সম্পর্কের টানাপোড়েন। একান্ত আলোচনা আর মেলামেশা থেকে সহজেই বোঝা যায় চারুর সাথে অমলের সম্পর্ক কেবল বৌঠান-ঠাকুরপোর নয়, এর মধ্যে অন্য কিছুও রয়েছে। ওদিকে মন্দাকিনীও কিছুটা দুর্বল থাকে অমলের প্রতি। তাই অমলের সাথে মন্দার কথাবার্ত বা মেলামেশা সহ্য করতে পারেনি চারু। সে অমলকে দেখাতে চেয়েছে মন্দার চেয়ে সে কতোটা গুণবতী। অমলের লেখা পত্রিকায় ছাপা হবার পর সেও সেই পত্রিকায় লেখা পাঠায়। চারুর লেখাও ছাপা হয় এবং দেখা যায় সাহিত্যিক প্রতিভা অমলের চেয়ে চারুরই বেশী। ইতিমধ্যে অমলের বিয়ের প্রস্তাব আসে বর্ধমান থেকে। বিয়ের পর শ্বশুর জামাইকে বিলেত পাঠাবেন। এক মাস সময় চেয়ে নেয় অমল। সাথে সাথে রাজি না হওয়ায় চারু সাময়িকভাবে স্বস্তি বোধ করে। চারুর আচরণ দেখে অমল অচিরেই বুঝতে পারে দাদার বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে তাকে সরে পড়তে হবে।

উমাপদ বিশ্বাসঘাতকতা করে। পত্রিকার দেনা ২৭০০ টাকার মধ্যে মাত্র ৩০০ টাকা পরিশোধ করে বাকিটা নিয়ে সরে পড়ে। পত্রিকা অচল হয়ে পড়ে। ভেঙে পড়ে ভূপতি। চারু অমলকে জানায়, কিছুতেই যেন সে বাড়ি ছেড়ে না যায়। কিন্তু অমল সে রাতেই দাদার উদ্দেশ্য একটা ছোট চিঠি রেখে পালিয়ে যায় বাড়ি থেকে। পত্রিকা ছেড়ে স্ত্রীর দিকে মনোযোগী হয় ভূপতি। বেড়াতে যায় সমুদ্রের ধারে। সেখানেই স্ত্রীর সাথে তার অনেক আলাপ হয়, একটি পত্রিকা প্রকাশের জন্য তারা মনস্থির করে যার বাংলা ও ইংরেজি দুই অংশই থাকবে। বাংলা অংশে চারু লেখালেখি করবে। এই উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় ফিরে গিয়ে অমলের চিঠি পায় তারা। সে বর্তমানে মাদ্রাজে এক বন্ধুর বাড়িতে আছে আর বিয়ের বিষয়টা নিয়ে ভালোভাবেই চিন্তা করছে। বিয়ে করে ফেলাটা হয়তো সময়ের ব্যাপার মাত্র। চিঠি না পড়েই কান্নায় ভেঙে পড়ে চারু যা দেখে ফেলে ভুপতি। ভাইয়ের সাথে স্ত্রীর সম্পর্ক তাকে অশান্তিতে ফেলে দেয়। তাদের মিল হওয়াটা তখন অসম্ভবের পর্যায়ে, সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে বিচ্ছেদও অস্বভাবিক। শেষ পর্যন্ত তাদের হাত মিলেনি। তাদের মিলন না বিচ্ছেদ হবে তা মুখ্য নয়। সেই দিনটি বা সে সময়টিতে তাদের নীড় যে ভেঙে গেছে চলচ্চিত্রে তা-ই মুখ্যভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে।

চরিত্রায়ন

সমালোচনা

পুরস্কার ও সম্মাননা

প্রাসঙ্গিক অধ্যয়ন

বহিঃসংযোগ