সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
+ সমাজ সংস্কারে |
+সমাজ সংস্কারে */ |
||
৩০ নং লাইন: | ৩০ নং লাইন: | ||
==সমাজ সংস্কারে== |
==সমাজ সংস্কারে== |
||
[[শিক্ষক]] হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ছাত্রদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত, অনুপ্রাণিত |
[[শিক্ষক]] হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ছাত্রদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত, অনুপ্রাণিত তথা উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতেন। একই সাথে তিনি ভারতীয়দের একতাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে [[বক্তৃতা]] দিতে শুরু করলেন। ঊনবিংশ শতকে [[রাজা রামমোহন রায়|রাজা রামমোহন রায়ের]] নির্দেশিত সমাজ-ধর্ম বিষয়ক পুণর্জাগরণ আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে বিশেষভাবে সচেষ্ট হন। |
||
কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ কর্তৃক অনুসৃত সামাজিক সংস্কারে সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ রাজনৈতিক ডামাডোলের চাপে তেমন একটা সফলতা পায়নি। এছাড়াও তিনি সমাজ পুণর্গঠনের অংশ হিসেবে [[বিধবা বিবাহ]], মেয়েদের অধিক বয়সে [[বিবাহ]] ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়ান। |
|||
==পরবর্তী জীবন== |
==পরবর্তী জীবন== |
১৬:০৪, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | ১০ নভেম্বর, ১৮৪৮ |
মৃত্যু | ৬ আগস্ট, ১৯২৫ |
পেশা | রাজনীতি, শিক্ষা, বিচার ব্যবস্থা |
প্রতিষ্ঠান | ভারতীয় কংগ্রেস |
আন্দোলন | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস |
স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী (জন্ম: ১০ নভেম্বর, ১৮৪৮ এবং মৃত্যু: ৬ আগস্ট, ১৯২৫) ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম যুগের এক বিশিষ্ট নেতা। ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরবর্তীকালে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি রাষ্ট্রগুরু বা রাষ্ট্রের শিক্ষক উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন।
পারিবারিক জীবন
স্যার সুরেন্দ্রনাথ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন ১৮৪৮ খ্রীষ্টাব্দের ৩০শে নভেম্বর তারিখে। তার বাবা দূর্গা চরণ বন্দ্যোপাধ্যায় পেশাগত জীবনে তৎকালীন সময়ে শীর্ষস্থানীয় নামকরা ডাক্তার ছিলেন।
শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ইংল্যান্ডে চলে যান এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষা পাশ করেন। অতঃপর ১৮৭১ সালে তিনি সিভিল সার্ভিসের কর্মজীবনে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রবেশ করেন। তিনি তার নির্ধারিত দায়িত্ব সঠিকভাবে চালাতে পারেননি ও অগ্রসর হতে চান না - এ অজুহাতে তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। জাতীয় নেতৃত্বে জোড়ালোভাবে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে তিনি পুণরায় ইংল্যান্ডে গমন করেন। তিনি ছিলেন একজন স্বভাবজাত লেখক এবং বাগ্মী হিসেবেও তিনি ছিলেন তদ্রুপ।
জুন, ১৮৭৫ সালে মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতা পেশায় মনোনিবেশ ঘটান। ইংরেজীর প্রফেসর হিসেবে প্রথমে মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন এবং পরে ফ্রী চার্চ কলেজে নিয়োজিত ছিলেন। সর্বশেষে রিপন কলেজে যোগ দেন। পরবর্তীকালে এই রিপন কলেজই তার নামে নামকরণ করা হয় সুরেন্দ্রনাথ কলেজ হিসেবে।
রাজনৈতিক জীবন
২৬ জুলাই, ১৮৭৬ সালে সুরেন্দ্রনাথ সর্ব ভারতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারতীয় সংঘ বা দি ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৭৮ সাল হতে তিনি বেঙ্গলী শিরোনামে একটি কাগজ সম্পাদনা করতেন এবং নির্ভিক ও ঔৎসুক চিত্তে জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিশেষ করে সংস্কৃতি, একতা, স্বাধীনতা ও মুক্তির বিষয়ে নিয়মিত লিখতেন।
এছাড়াও, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় বিধানসভার অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৮৭৬-১৮৯৯ সাল পর্যন্ত একাধারে কলকাতা কর্পোরেশনেও সদস্য হিসেবে ছিলেন।
তার সুদক্ষ ও সুচারু নেতৃত্বের ফলে ভারতীয় সংঘ অল্প সময়েই পরিস্ফুটিত হয়। ১৮৮৩ সাল থেকে ভারতের সকল এলাকা থেকে আগত প্রতিনিধিদের নিয়ে নিয়মিতভাবে বার্ষিক সভা পরিচালনা করতেন তিনি। ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা পায় এবং এর লক্ষ্য, উদ্দেশ্যও ভারতীয় সংঘের সাথে মিল ছিল। ফলে, ১৮৮৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ২য় অধিবেশনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতীয় সংঘকে একীভূত করার। তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেসকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দুইবার - ১৮৯৫ ও ১৯০৭ সালে এর সভাপতিত্ব করেন।
১৯০৫ সালে সুরেন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং স্বদেশী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। অধিকন্তু হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে ও জাতীয়তাবাদীদের উত্থান ঘটে। পরবর্তীতে তিনি মতানৈক্যজনিত কারণে ১৯১৮ সালে কংগ্রেস থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন এবং মধ্যপন্থী হিসেবে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে একীকরণে উদ্যোগী হন। ১৯২১ সালে তিনি নাইট উপাধি লাভ করেন এবং বাংলায় তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে ১৯২১ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত দেশের সেবা করেন।
সমাজ সংস্কারে
শিক্ষক হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ছাত্রদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত, অনুপ্রাণিত তথা উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতেন। একই সাথে তিনি ভারতীয়দের একতাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন। ঊনবিংশ শতকে রাজা রামমোহন রায়ের নির্দেশিত সমাজ-ধর্ম বিষয়ক পুণর্জাগরণ আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে বিশেষভাবে সচেষ্ট হন।
কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ কর্তৃক অনুসৃত সামাজিক সংস্কারে সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ রাজনৈতিক ডামাডোলের চাপে তেমন একটা সফলতা পায়নি। এছাড়াও তিনি সমাজ পুণর্গঠনের অংশ হিসেবে বিধবা বিবাহ, মেয়েদের অধিক বয়সে বিবাহ ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়ান।