আবু সিমবেল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ রোবট যোগ করছে: cy:Abu Simbel, et:Abū Sunbul পরিবর্তন করছে: az:Əbu Simbel |
অ r2.6.5) (রোবট যোগ করছে: jv:Abu Simbel |
||
১৩৭ নং লাইন: | ১৩৭ নং লাইন: | ||
[[it:Abu Simbel]] |
[[it:Abu Simbel]] |
||
[[ja:アブ・シンベル神殿]] |
[[ja:アブ・シンベル神殿]] |
||
[[jv:Abu Simbel]] |
|||
[[ka:აბუ სიმბალი]] |
[[ka:აბუ სიმბალი]] |
||
[[ko:아부 심벨 신전]] |
[[ko:아부 심벨 신전]] |
১৯:৫৬, ২৪ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান | |
---|---|
মানদণ্ড | Cultural: i, iii, vi |
সূত্র | 88 |
তালিকাভুক্তকরণ | 1979 (3rd সভা) |
আবু সিম্বেল (Arabic أبو سنبل or أبو سمبل) মিশরের দক্ষিণাংশে অবস্থিত একটি পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনা, যা দুইটি বিশাল পাথর-নির্মিত মন্দির নিয়ে গঠিত। এটি আসওয়ান এর ২৯০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে লেক নাসের এর পাড়ে অবস্থিত।
এই স্থাপনাটিকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষণা করেছে। আবু সিম্বেল সহ সম্পূর্ণ এলাকাটি নুবিয়ান মনুমেন্টস নামে খ্যাত।[১]
মন্দিরদুটি শুরুতে তৈরি করা হয়েছিলো পাহাড়ের গা খোদাই করে। খ্রিস্টপূর্ব ১৩শ শতকে ফারাও ২য় রামসেসের আমলে তাঁর ও রাণী নেফারতারির সম্মানে ও কাদেশের যুদ্ধ এর স্মৃতির উদ্দেশ্যে মন্দিরদুটি নির্মিত হয়। আরেকটি উদ্দেশ্য ছিলো প্রতিবেশী নুবিয়দের মিশরের জাঁকজমক দেখানো। বিংশ শতকে ১৯৬০ এর দশকে মন্দির দুটিকে সম্পূর্ণভাবে স্থানান্তর করা হয়, কেননা ঐ সময় নীল নদের উপরে আসওয়ান বাঁধ তৈরীতে সৃষ্ট লেক নাসের মন্দিরদুটির পূর্বের এলাকাকে গ্রাস করে নেয়া শুরু করে।
বর্তমানে স্থাপনাটি আসওয়ান বাঁধ এলাকার অনেক উপরে একটি কৃত্রিম পাহাড়ের উপরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আবু সিম্বেল মিশরের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা।
ইতিহাস
নির্মান
মন্দির স্থাপনার নির্মান শুরু হয় আনুমানিক ১২৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, এবং পরের ২০ বছর ধরে তা অব্যাহত থাকে। ২য় রামসেসের আমলে নুবিয়াতে যে ছয়টি পাথরের মন্দির তৈরি করা হয়, এটি ছিলো তার অন্যতম। এই মন্দির স্থাপনাটির অন্য নাম ছিলো "আমুন এর প্রিয় রামসেসের মন্দির"। মন্দির নির্মানের মূল উদ্দেশ্য ছিলো মিশরের দক্ষিণী প্রতিবেশীদেরকে মিশর ও তার ধর্মের জাঁকজমক দেখিয়ে বিমোহিত করে দেয়া, এবং ঐ অঞ্চলে মিশরীয় ধর্মের প্রভাব বৃদ্ধি করা।
পুনরাবিস্কার
সময়ের সাথে সাথে মন্দিরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এটি বালুর তলায় চাপা পড়ে যায়। ৬ষ্ট খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ মূল মন্দিরটির মূর্তিগুলির হাঁটু পর্যন্ত বালুর তলায় চলে যায়। মন্দিরটির কথা আস্তে আস্তে সবাই ভুলে যায়। ১৮১৩ সালে সুইস প্রাচ্যবিশেষজ্ঞ ইয়োহান লুডভিগ বার্কহার্ড মন্দিরের উপরের অংশ খুঁজে পান। এই আবিস্কারের কথা তিনি ইতালীয় পরিব্রাজক জিওভান্নি বাতিস্তা বেলজোনিকে জানান। বেলজোনি মন্দির এলাকায় যান, কিন্তু মন্দিরে ঢোকার পথটি খুঁজে পাননি। ১৮১৭ সালে বেলজোনি ফিরে আসেন, এবং এই বার মন্দির এলাকায় প্রবেশের পথ বের করেন। তিনি মন্দির এলাকায় মূল্যবান সব ধনসম্পদ লুটে নেন।
মন্দির এলাকার নামকরণ "আবু সিম্বেল" হওয়ার পিছনের কাহিনীটি হলো - আবু সিম্বেল ছিলো ঐ এলাকার এক বালকের নাম, যে উনবিংশ শতকের অভিযাত্রীদের পথ প্রদর্শক হিসাবে কাজ করতো। বালুর নিচে হারিয়ে যাওয়া মন্দিরটির অবস্থান এই বালক সবচেয়ে ভালো করে জানতো। তাই এক সময় অভিযাত্রীরা মন্দির এলাকাটিকে এই বালকের নামানুসারে "আবু সিম্বেল" নামকরণ করে।
স্থানান্তর
১৯৫৯ সালে নুবিয়ার পুরাকীর্তিসমূহকে রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা শুরু হয়। আসওয়ান বাঁধ নির্মানের ফলে সৃষ্ট লেক নাসের এর পানির তলায় এই পুরাকীর্তিগুলো তলিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছিলো। আবু সিম্বেলের মন্দিরগুলো রক্ষার কাজ শুরু হয় ১৯৬৪ সালে। প্রায় ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচে ১৯৬৪ হতে ১৯৬৮ সালের মধ্যে এই মন্দিরগুলোকে উঁচু স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। এজন্য পুরো মন্দির এলাকার সব স্থাপনাকে বড় বড় টুকরা করে কেটে আলাদা করে নীল নদের বর্ধমান তীর হতে ২০০ মিটার দূরে ও প্রায় ৬৫ মিটার উচ্চস্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। সফলভাবে মন্দির স্থাপনাকে স্থানান্তর করার এই প্রকল্পকে পুরাতাত্ত্বিক প্রকৌশলের সেরা সাফল্যগুলোর মধ্যে গণ্য করা হয়। বর্তমানে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক এই মন্দিরগুলো দেখতে আসে। দিনে দুই বার নিকটতম শহর আসওয়ান থেকে বাস ও গাড়িতে করে পর্যটকেরা আসে। এছাড়া বিমান পথেও অনেক পর্যটক এখানে এসে থাকে।
মন্দির স্থাপনাতে দুইটি মন্দির রয়েছে। এদের মধ্যে বড়টি মিশরের তদানিন্তন প্রধান তিন উপাস্য দেবতা রা হারখতি, প্তাহ, এবং আমুন এর উদ্দেশ্যে নিবেদিত। এই মন্দিরটিতে রামসেসের চারটি বড় মূর্তি রয়েছে। ছোট মন্দিরটি দেবী হাথর এর উদ্দেশ্যে নিবেদিত। হাথরের প্রতিমূর্তি হিসাবে রামসেসের প্রিয় স্ত্রী নেফেরতারির মূর্তি এই মন্দিরে শোভা পাচ্ছে।
মন্দিরের গঠন
বৃহত্তর মন্দির
আবু সিম্বেলের বৃহত্তর মন্দিরটি তৈরি করতে সময় লেগেছিলো ২০ বছর। ফারাও মহান রামসেসের রাজত্বের ২৪তম বছরে ১২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এর নির্মান কাজ শেষ হয়। আমুন রা, রা-হোরাখতি, এবং পতাহ দেবতা, এবং রামসেসের উদ্দেশ্যে এই মন্দিরটি উৎসর্গ করা হয়।[১] রামসেসের রাজত্বকালে নির্মিত মন্দিরসমূহের মধ্যে এটিকেই সবচেয়ে সুন্দর ও রাজকীয় বলে গণ্য করা হয়।
উচ্চ ও নিম্ন মিশরের দ্বৈত মুকুট খচিত ফারাও রামসেসের ২০ মিটার উঁচু চারটি মূর্তি মন্দির এলাকায় অবস্থিত। মন্দির এলাকাটি ৩৫ মিটার প্রশস্ত। সবার উপরে সূর্যের উপাসক ২২টি বেবুনের মূর্তি প্রবেশপথকে ঘিরে রেখেছে। [২] ফারাওয়ের এই বিশালাকার মূর্তিগুলো যে পাহাড় কেটে মন্দির তৈরি হয়েছিলো, সেই পাহাড়ের পাথর কেটেই নির্মান করা হয়েছে। সবগুলো মূর্তি সিংহাসনে বসে থাকা রামসেসের প্রতিনিধিত্ব করছে। প্রবেশপথের বাম দিকের মূর্তিটি একটি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বর্তমানে কেবল মূর্তিটির নীচের অংশ অক্ষত রয়েছে। এর সামনেই ভেঙে পড়া মূর্তির মাথা ও দেহ পড়ে রয়েছে।
ফারাওয়ের বড় মূর্তিগুলোর পাশেই রয়েছে ছোট ছোত কিছু মুর্তি, যাদের উচ্চতা ফারাওয়ের হাঁটুর চেয়ে কম।[১] এগুলো রামসেসের প্রধান স্ত্রী নেফারতারি, এবং রাজমাতা রাণী মুত-তুই, রামসেসের প্রথম দুই পুত্র আমুন-হের-খেপেশেফ ও রামসেস বি, এবং ফারাওয়ের প্রথম ছয় কন্যা বিন্তানাথ, বেকেতমুত, নেফেরতারি, মেরিতামেন, নেবেত্তাউই, এবং ইসেত্নোফ্রেত এর মুর্তি।
প্রবেশদ্বারটিতে রয়েছে বাজপাখির মতো মাথাবিশিষ্ট দেবতা রা হারাখতিকে উপাসনারত ফারাও রামসেসের ছবি [১] ।
মন্দিরের ভিতরে প্রাচীন মিশরের অন্যান্য মন্দিরের মতোই ত্রিকোণাকার কাঠামো ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে কক্ষগুলোর আকার প্রবেশ পথ থেকে মূল শবকক্ষ পর্যন্ত আস্তে আস্তে কমতে থাকে। মন্দির অঙ্গনের গঠন বেশ জটিল ও বহু পার্শ্বকক্ষবিশিষ্ট। প্রোনাস বা হাইপোস্টাইল হল হলো ১৮ মিটার দীর্ঘ ও ১৬.৭ মিটার প্রশস্ত, এবং আটটি প্রকাণ্ড মুর্তিসদৃশ স্তম্ভ বিশিষ্ট। এই স্তম্ভগুলোতে পরজগতের দেবতা অসিরিস এর চেহারা খোদাই করা, যা ফারাও এর অমরত্বের প্রতীক। বাম দিকের দেয়ালের কাছের বড় মুর্তিগুলো উর্ধ্ব মিশরের সাদা মুকুটখচিত, আর ডান দিকের মুর্তিগুলো নিম্ন মিশরের দ্বৈত মুকুট পরে আছে। [১]
প্রোনাস হলের দেয়ালচিত্রগুলো ফারাওয়ের বিভিন্ন সামরিক অভিযানের উপরে অংকিত। অধিকাংশ ছবিতেই প্রকাশ পেয়েছে কাদেশের যুদ্ধের কথা, সিরিয়ার ওরন্তেস নদীর পারে যেখানে মিশরের ফারাও হিট্টীয় বাহিনীড় সাথে যুদ্ধ করেছিলেন[২]। সবচেয়ে বিখ্যাত চিত্রটিতে দেখানো হয়েছে, ফারাও তাঁর রথে বসে পলায়নোদ্যত শত্রুদের দিকে তীর নিক্ষেপ করছেন[২]। অন্য ছবিতে লিবিয়া ও নুবিয়ার সাথে যুদ্ধে মিশরের বিজয় দেখানো হয়েছে[১]।
ক্ষুদ্রতর মন্দির
আবু সিম্বেল মন্দির এলাকায় অবস্থিত হাথর ও নেফারতারির মন্দিরটি (যা ক্ষুদ্রতর মন্দির নামে পরিচিত) মূল রামসেসের বৃহত্তর মন্দির হতে প্রায় ১০০ মিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। এটি দেবী হাথর, এবং ২য় রামসেসের প্রধান স্ত্রী নেফারতারির উদ্দেশ্যে নিবেদিত। রাণীর উদ্দেশ্যে মন্দির উৎসর্গ করার এই ঘটনাটি মিশরের ইতিহাসে দ্বিতীয় - এর আগে আখনাতেন তাঁর স্ত্রী নেফারতিতির উদ্দেশ্যে মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।[১]
মন্দিরটির সম্মুখভাগের দেয়াল পাথর খোদাই করে নির্মিত। দুই পাশে রয়েছে দুই গুচ্ছ মুর্তি, আর তাদের মাঝে রয়েছে বৃহৎ প্রবেশদ্বার। মুর্তিগুলো প্রায় ১০ মিটার উচু। এগুলো ফারাও ও রাণীর মুর্তি।
প্রবেশ দ্বারের অন্য পাশে রয়েছে ফারাওয়ের দুইটি মুর্তি। রাণী ও রাজার আরো কয়েকটি মুর্তি দিয়ে পরিবেষ্টিত এই দুইটি মূর্তিতে ফারাওয়ের মাথায় উর্ধ্ব মিশরের সাদা মুকুট, এবং নিম্ন মিশরের দ্বিমুকুট রয়েছে। এই মন্দিরেই মিশরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজা ও রাণীর মুর্তি সমান আকারে নির্মিত হয়েছে।[১] অন্যান্য মন্দিরে রাণীর মুর্তি থাকলেও সেগুলো কখনোই ফারাওয়ের হাঁটুর চেয়ে উচু আকারে নির্মিত হয়নি। ব্যতিক্রমধর্মী এই মুর্তিগুলো রাণী নেফারতারির প্রতি ফারাও রামসেসের বিশেষ সম্মান ও গুরুত্ব প্রদানের পরিচায়ক। শাসনকালের ২৪ তম বছরে ফারাও রামসেস রাণী নেফারতারিকে নিয়ে আবু সিম্বেলের মন্দিরে গিয়েছিলেন।
ফারাও ও রাণীর মুর্তিগুলোর পাশেই রয়েছে রাজপুত্র ও রাজকণ্যাদের ক্ষুদ্রতর মুর্তি। দক্ষিণ পাশে রয়েছে (বাম থেকে ডানে) রাজপুত্র মেরিয়াতুম, ও মেরাইরি, রাজকণ্যা মেরিতামেন ও হেনুত্তাউই, এবং রাজপুত্র হাহিরুয়েনেমেফ ও আমুন-হার-খেপেশেফের মুর্তি। উত্তর পাশে একই মুর্তিগুলো রয়েছে বিপরীতক্রমে রয়েছে। ক্ষুদ্রতর মন্দিরটির স্থাপত্য কাঠামো বৃহত্তর মন্দিরটিরই ছোট সংস্করণ।
ছবির গ্যালারি
-
Far Left Sitting Ramesses II Colossus.
-
Ramesses II Temple at Abu Simbel.
-
Nefertari's Temple at Abu Simbel.
-
Ramesses offering to seated god Ptah in smaller temple
-
Nefertari offering sistrums to seated goddess Hathor in smaller temple
-
Nefertari's temple of Hathor in Abu Simbel
-
Temple of Ramesses II, Abu Simbel
-
Temple of Ramesses II, Abu Simbel
-
Temple of Ramesses II, Abu Simbel
-
Temple of Ramesses II, Abu Simbel
-
Temple of Ramesses II, Abu Simbel
-
Temple of Ramesses II, Abu Simbel
-
Temple of Ramesses II, Abu Simbel
-
Temple of Nefertari, Abu Simbel
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ Alberto Siliotti, Egypt: temples, people, gods,1994
- ↑ ক খ গ Ania Skliar, Grosse kulturen der welt-Ägypten, 2005
বহিঃসংযোগ
- গুগল ম্যাপ্সে আবু সিম্বেলের পুরাতাত্তিক স্থাপনা\
- মিশরের জাতীয় তথ্য সংস্থার সাইটে আবু সিম্বেলের বর্ণনা
- Archaeowiki.org সাইটে আবু সিম্বেল
- আবু সিম্বেলের মন্দিরের গঠন
- Abu Simbel Travel Photo Pictures of Abu Simbel published under Creative Commons License
- Geocoded photographs of Abu Simbel and surrounding area on photrax.com