নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Saifuddin Kutuz (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন।
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Saifuddin Kutuz (আলোচনা | অবদান)
Saifuddin Kutuz শাহসূফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী কে শাহ সূফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন: ভুল সংশোধন।
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
(কোনও পার্থক্য নেই)

১৮:৩৮, ২৬ জুন ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী
জন্মআনুমানিক (১৭৭৫-১৭৮৫) সালের মধ্যবর্তী সময়।
মৃত্যুনভেম্বর ১, ১৮৫৮ ইং, কার্তিক ১৩, ১২৬৬ বঙ্গাব্দ।
জাতীয়তাভারতীয়
যুগঊনবিংশ শতাব্দী
পরিচিতির কারণশিখদের বিরুদ্ধে জিহাদ আন্দোলন
আন্দোলনবালাকোট যুদ্ধ


শাহ সূফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী রহ. বাংলার মুসলমানদের অন্যতম একজন আধ্যাত্মিক রাহবার। তাঁর পূর্বপুরুষগণ ছিলেন গজনীর অধিবাসী। কথিচ আছে নিজামপুরী রহ. গজনীর সুলতান পুত্র যুবরাজ বখতিয়ার কুতুজ এর ৭ম পুরুষের বংশধর।[১] উলামা মাশায়েখের কাছে তিনি ‘নিজামপুরী রহ.’ নামে পরিচিত। স্থানীয় জনসাধারণ তাকে ‘সুইসা’ (সূফী সাহেব> সুইসা) বলে সম্বোধন করেন।

পূর্বপুরুষদের ভারতে আগমন

নিজামপুরী রহ. এর পূর্বপুরুষ বখতিয়ার কুতুজ আলম পরিবারসহ দিল্লিতে আসেন। অবার কেউ কেউ বলেন তারা গজনী থেকে নোয়াখালী হিজরত করেন। নিজামপুরী রহ. এর পিতার নাম মোহাম্মদ ফানাহ্। তিনি নোয়াখালীর অধিবাসী ছিলেন। এখানেই নিজামপুরী রহ. এর জন্ম হয়।[২]

জন্ম, শৈশব ও শিক্ষাজীবন

নিজামপুরী রহ. এর জন্ম সাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে ধারণা করা যায় তিনি ১৭৭৫-১৭৮৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৯০ সালে পিতার নিকট তাঁর শিক্ষাজীবনের সূচনা হয়। [৩]প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তের পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। এই মাদ্রাসা থেকেই তিনি তাফসীর ও হাদীস বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। উচ্চাশিক্ষা সমাপ্ত হওয়ার পর তিনি এখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

ব্যক্তিগত গুণাবলি

নিজামপুরী রহ. ব্যক্তিজীবনে তাকওয়াবান ছিলেন। সর্বদা আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকতেন। অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া ও জনসাধারণের সেবা করা ছিল তাঁর অন্যতম গুণাবলি। যোহর এর সালাতের পর থেকে আসরের সালাত এর পূর্ব পর্যন্ত সময়ে হাদীস ও তাসাউফ শাস্ত্র অধ্যায়ন ছিল তাঁর অন্যতম কাজ। এশার পর অজীফা পাঠ করতেন।

বিপ্লবী জীবন

উপমহাদেশের মুসলমানদের আধ্যত্মিক রাহবার সাইয়েদ আহমদ ব্রেলভী রহ. ছিলেন নিজামপুরী রহ. এর মুর্শিদ। ১৮২২ সালে কলকাতায় তিনি মুর্শিদের নিকট বায়াতবদ্ধ হন। জীবনের দীর্ঘসময় তিনি ব্রেলভী রহ. এর সান্নিধ্যে অবস্থান করেন। ১৮২৬ সালে উপমহাদেশের মুসলিমদের ব্রিটিশদের গোলামি থেকে মুক্ত করার জন্য সাইয়েদ আহমদ ব্রেলভী রহ.  সীমান্তবর্তী অঞ্চল-পেশোয়ার,পাঞ্জাব অভিযান শুরু করেন। নিজামপুরী রহ. এসব অভিযানে বীরদর্পে অংশগ্রহণ করেন।  ১৮৩১ সালে সাইয়েদ আহমদ ব্রেলভী ব্রিটিশ বিরোধী জিহাদের ডাক দেন।[৪] নুর মুহাম্মদ নিজামপুরী রহ. ছিলেন এ জিহাদের অন্যতম সিপাহশালার। তিনি জুমার খুতবায় ভারতীয় মুসলিমদের ইংরেজ বিরোধী জিহাদে উদুদ্ধ করেন। বালাকোট যুদ্ধে তিনি স্বশরীরে অংশগ্রহণ করেন। বালাকোটের বিয়োগান্তক ঘটনার পর তিনি কিছুকাল আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তিনি ‘গাজীয়ে বালাকোট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। নিজামপুরী রহ. এর জীবনের শেষসময় গুলো কাটে উত্তর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর পরাগনার ১০ নং মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে। এই অঞ্চলের দিকে নিচবত করেই নূর মুহাম্মদ রহ. কে নিজামপুরী বলা হয়।

মৃত্যু

১৮৫৮ সালের ১ নভেম্বর- ১২৬৬ বঙ্গাব্দের ১৩ কার্তিক এই মহান সাধক ইহজগৎ ত্যাগ করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাং রোডের সুফিয়া রোডে থেকে তিন মাইল পশ্চিমে মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে তার মাজার অবস্তিত । সূফি নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী রহ. এর নামেই প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর চট্টগ্রামের বিখ্যাত দ্বীনি বিদ্যাপীঠ সুফিয়া নূরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন এ অঞ্চলের আরেক দিকপাল ‘মুফতিয়ে আজম’ খ্যাত শাহ সূফী আব্দুল গণি রহ.।


মূল্যায়ন

উপমহাদেশে সাইয়েদ আহমদ শহীদের জিহাদ আন্দোলন নিয়ে প্রায় ২০ বছর গবেষণা করে তিন খন্ডের গ্রন্থ রচনা করেছেন মরহুম মাওলানা গোলাম রসুল মেহের। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে লাহোর থেকে প্রকাশিত তার সে গ্রন্থের তৃতীয় খন্ডে ‘সুফী নূর মুহাম্মদ  বাঙ্গালী’ শিরোনামে তিনি তিন লাইনের একটি মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন। লিখেছেন- অত্যন্ত নিষ্ঠাবান, রিয়ামুক্ত দ্বীনদার ও পরহেযগার বুযুর্গ ছিলেন। বাইআত হওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে যা কিছু ছিল তিনি তাঁর সর্বস্ব সাইয়েদ আহমদ শহীদ রাহ.-এর হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেন। সেখান থেকে খরচের জন্য তাঁকে কিছু ফেরত দেওয়া হলে তিনি গ্রহণ করেন। বাকি সবটুকু কোষাগারে জমা করে দেওয়া হয়।’[৫]

লাখনৌ থেকে প্রকাশিত বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী স্কলার সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ. রচিত ‘কারওয়ানে ঈমান ও আযীমত’ গ্রন্থে বলা হয়েছে- ‘তিনি ছিলেন বাংলা অঞ্চলে সাইয়েদ সাহেবের প্রধান খলিফাদের একজন। জিহাদে সাইয়েদ সাহেবের সঙ্গে তাশরীফ নিয়েছেন। রণাঙ্গনে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এরপর আবারো দেশে ফিরে এসে দ্বীনের প্রচার ও হেদায়াতের কাজ করেছেন।’[৬]

তথ্যসূত্র

  1. "নিজামপুরী (রহঃ) জীবনী"www.sufifatehaliwaisi.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৬ 
  2. সিরাজী, সাইফুল হক, মীরসরাই এর ওলামা ও আকাবির। সুফিয়া ইসলামিক রিসার্চ একাডেমী। 
  3. "নিজামপুরী (রহঃ) জীবনী"www.sufifatehaliwaisi.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৬ 
  4. "সৈয়দ আহমদ বেরলভি - উইকিপিডিয়া"bn.m.wikipedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৬ 
  5. "অমর বালাকোট-সংগ্রামী মিঠানালার সুফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী রাহ. - মাসিক আলকাউসার"www.alkawsar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৬ 
  6. "শরীফ মুহাম্মদ, অমর বালাকোট-সংগ্রামী মিঠানালার সুফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী রাহ."। ৫ম সংখ্যা, মে ২০১৩, মাসিক আল কাউসার