হিযবুত তাহরীর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Shohure Jagoron (আলোচনা | অবদান)
Ts12rAc (আলাপ)-এর সম্পাদিত 5126254 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে : title is wrong
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
Shohure Jagoron (আলোচনা | অবদান)
Shohure Jagoron হিযবুত তাহরীর কে হিজবুত তহরীর শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন: নামটার বানান ভুল ছিল
(কোনও পার্থক্য নেই)

১৭:৫৪, ১৪ মে ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

হিযবুত তাহরীর
حِزْبُ التَحْرِير
নেতাশায়েখ আতা আবু রাশতা
প্রতিষ্ঠাতাশায়েখ তাকিউদ্দীন আন-নাবহানী
প্রতিষ্ঠা১৯৫৩
সদর দপ্তরজেরুজালেম, ফিলিস্তিন
সদস্যপদ১০ লক্ষ (আনুমানিক)[১]
ভাবাদর্শআশআরী-মাতুরিদি,সর্ব-ইসলামবাদ, ইসলামবাদ
আন্তর্জাতিক অধিভুক্তিবিশ্বব্যাপী
দলীয় পতাকা
ওয়েবসাইট
www.hizb-ut-tahrir.org

হিজবুত তহরীর (আরবি: حِزْبُ التَحْرِير) (বাংলা ভাষায়ঃ মুক্তির দল) একটি ইসলামি মতাদর্শ ভিত্তিক রাজনৈতিক দল যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বাংলাদেশে ২০০১ সাল হতে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দলটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে (২২ শে অক্টোবর) বাংলাদেশের স্বরাষ্ষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক "জননিরাপত্তার স্বার্থে" -এ কারণ দেখিয়ে এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়।[২] দলটি পৃথিবীর অন্য অনেকগুলো দেশেও নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। [৩]

হিজবুত তহরীর দলটি নানা কারণে সমালোচিত হয়েছে। সন্ত্রাসের বিরোধিতা আপাতত করলেও সেই বিরোধিতাটুকুকে সাময়িক কৌশল বলে অভিহিত করা হয়েছে।[৪] আরো অভিযোগ রয়েছে, এই দলটি সন্ত্রাসকে লালন করা ও উৎসাহিত করার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করছে। [৫] হিজবুত তহরীরের সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বিষয়ে প্রচারণা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। [৬] এছাড়া এটি সন্ত্রাসবাদী আত্মঘাতী বোমাবাজদের শহীদ বলে আখ্যায়িত করে এবং "নতুন ক্রুসেডারদের ধ্বংস করতে হবে" এমন প্রচারণা চালিয়ে থাকে এসবের মাধ্যমে হিযবুত তাহরীর মুসলিম তরুণদের সন্ত্রাসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।[৭]

ইতিহাস

মুসলমান উম্মাহর মধ্যে ইসলামি খিলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৫৩ সালে এ দল প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামি খিলাফত হচ্ছে সে ব্যবস্থা যা পৃথিবীতে ইসলামি শরীয়াহ-র বাস্তবায়ন করে থাকে এবং 'দাওয়াত ও যুদ্ধের' মাধ্যমে ইসলাম-কে পৃথিবীর বিভিন্ন সভ্যতার নিকট উপস্থাপন করে থাকে। হিযবুত তাহরীর মনে করে মুসলমান বিশ্বের সকল সমস্যার মূলে রয়েছে উম্মাহর মধ্যে খিলাফত ব্যবস্থার অনুপস্থিতি এবং খিলাফত ব্যবস্থাই হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শক্তির প্রতীক। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ফিলিস্তিনের জেরুজালেমের শরীয়াহ আদালতের বিচারপতি শায়েখ তাকিউদ্দীন আন-নাবহানী কর্তৃক ১৯৫৩ সালে এ দলের প্রতিষ্ঠা হয়। শায়েখ তাকিউদ্দীন আন-নাবহানী মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় হতে শিক্ষিত একজন স্বয়ংসম্পূর্ন ইসলামি গবেষক (মুজতাহিদ মুতলাক) ছিলেন। প্রতিষ্ঠার পর মধ্যপ্রাচ্য হতে এ দল ধীরে ধীরে আফ্রিকা, ইউরোপ, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পরে।

কর্মপদ্ধতি

খিলাফৎ প্রতিষ্ঠার ইসলামি ফরজ জিম্মা পালনের লক্ষ্যে হিজবুত তহরীর সমগ্র বিশ্বে কাজ করে থাকে। এবং এক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -এর পবিত্র জীবন থেকে হিজবুত তহরীর তাদের কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করেছে। হিজবুক তহরীর খিলাফৎ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কোনো ধরনের সশস্ত্র পন্থায় বিশ্বাস করে না। বরং তারা একমাত্র বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক পদ্ধতিতেই কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিশ্বাসী। হিজবুত তহরীর মনে করে যে যেভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার মক্কী জীবনে বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক সংগ্রামের মাধ্যমে মদিনায় একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ঠিক সে কর্মপদ্ধতিতেই আবার খিলাফৎ ব্যবস্থা ফিরে আসবে এবং এটাই এ কাজের ক্ষেত্রে একমাত্র সঠিক কর্মপদ্ধতি। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] রাসূলাল্লাহ (সাঃ) খিলাফৎ প্রতিষ্ঠায় ৩টি স্তর অতিক্রম করেন। যথাঃ ১. গোপন দাওয়াত পর্যায় (০-৩ বছর), ২. প্রকাশ্য দাওয়াত পর্যায় (৩-১০ বছর) এবং ৩. নুসরাহ (সামরিক সমর্থন) খোঁজা পর্যায় (১০-১৩ বছর)। হিজবুত তহরীর এই ৩ টি পর্যায়-এ কাজ করে। বর্তমানে এরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নুসরাহ (Military Support) খুজছে। তারা বিশ্বাস করে, পৃথিবীর কোনও-না-কোনও মুসলিম দেশের সেনা-বাহিনী তাদের নিরশর্ত সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে। তাদের নুসরাহ সংগ্রহের তালিকায় বাংলাদেশ সেনা-বাহিনী-ও রয়েছে, যেটা প্রমাণিত হয় ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের সেনা অভুত্থান প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে।

বিভিন্ন দেশে হিযবুত তাহরীর

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে হিজবুত তহরীরের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। [২] বেশ কিছু আরব দেশে এটি নিষিদ্ধ। এছাড়া রাশিয়া ও তুরস্কেও এটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মিশরে ১৯৭৪ সালে সরকার উৎখাতের চেষ্টার দায়ে এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়।[৩]

সন্ত্রাস বিষয়ে হিজবুত তহরীরের অবস্থান

২০০৭ এর ১২ই সেপ্টেম্বর তারিখে নিউ ইয়র্ক টাইমসে উল্লেখ করা হয়েছে, হিজবুত তহরীর স্পষ্টভাবে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে থাকে। [৮] কিন্তু বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ানে ডেনমার্কের হিযবুত তাহরীরের সদস্য ফাদি আবদেল লতিফের কর্মকান্ডের উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, হিজবুত তহরীর সদস্যরা ফিলিস্তিনিদের আত্মঘাতী বোমা হামলাকে ন্যায্য কাজ বলে মনে করে। [৯][১০]

ডেইলি টেলিগ্রাফে টম হার্পার হিজবুত তহরীরকে লিফলেটের উদাহরণ দিয়েছেন, এসব লিফলেটে বলা হয়েছে,

"Your forefathers destroyed the first crusader campaigns. Should you not proceed like them and destroy the new crusaders? ... "Let the armies move to help the Muslims in Iraq, for they seek your help."[৭]

বিবিসি টিভির প্যানোরামা টিভি সিরিজে দেখানো হয়েছে, আগস্ট ২০০৬ এ হিযবুত তাহরীরের আন্তর্জাতিক নেতা শায়েখ আতা আবু রাশতা কাষ্মীরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী, চেচনিয়ার রুশ, এবং ইসরাইলের ইহুদিদের হত্যা ও ধ্বংস করার জন্য হিজবুত তহরীর সদস্যদের আহবান জানাচ্ছেন। [৭]

অন্যান্য সমালোচকদের মতে হিজবুত তহরীরের মুখে সন্ত্রাসের বিরোধিতা করলেও গোপনে সন্ত্রাসের উপযুক্ত সময় আসার জন্য অপেক্ষা করছে, এবং এই দলটির প্রচারণার কারণে সশস্ত্র সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। লেখক অলিভিয়ের রয় এর মতে, "the Hizb ut-Tahrir position against the launching of jihad is purely tactical. The organization believes that the time has not yet come for jihad, but that it is a compulsory duty for any Muslim."[১১] গ্লোবালসিকিউরিটি ডট অর্গ নামের বিশ্লেষক সংস্থার মতে, হিজবুত তহরীর হলো একটি মৌলবাদী গুপ্ত সংস্থা যা সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক। আপাতত সন্ত্রাসের বিরোধী হলেও এরা জিহাদ বা ধর্মযুদ্ধের প্রচারণা চালাচ্ছে। [১২]

তথ্যসূত্র

  1. Malik, Shiv. For Allah and the caliphate ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে, New Statesman, 13 September 2004
  2. [১]
  3. Muslim girl's brother linked to Islam radicals ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ এপ্রিল ২০০৫ তারিখে British Helsinki Human Rights Group
  4. Hizb ut-Tahrir al-Islami on Global Security.org
  5. 27 BBC News, August, 2003, Hizb ut-Tahrir
  6. Ziauddin Sardar "Ziauddin Sardar explains the long history of violence behind Hizb ut-Tahrir" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ মে ২০০৮ তারিখে New Statesman, 14 November 2005
  7. "Islamists 'urge young Muslims to use violence,'" By Tom Harper, 19 April 2008
  8. New York Times
  9. "Hizb ut-Tahrir", BBC News, August 27, 2003.
  10. PM shelves Islamic group ban
  11. Globalized Islam: the Search for a New Ummah, by Olivier Roy, Columbia University Press, 2004 p.256
  12. Hizb ut-Tahrir al-Islami