মীনা (ধারাবাহিক কার্টুন): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্প্রসারণ |
সম্প্রসারণ |
||
১৩ নং লাইন: | ১৩ নং লাইন: | ||
| powers = কল্যাণমূলক |
| powers = কল্যাণমূলক |
||
}} |
}} |
||
'''মীনা''' দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত একটি জনপ্রিয় টিভি [[কার্টুন]] ধারাবাহিক ও [[কমিক বই]]। |
'''মীনা''' দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত একটি জনপ্রিয় টিভি [[কার্টুন]] ধারাবাহিক ও [[কমিক বই]]। ১৯৯৩ সালে প্রথম টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। কার্টুন ধারাবাহিকের মূল চরিত্র বাংলা ভাষায় নির্মিত কার্টুনগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র। মীনা কার্টুন শুধু বাংলা ভাষায় তৈরি হয়নি। হিন্দি, উর্দুসহ ২৯টি ভাষায় মীনা তৈরি হয়েছে। প্রথমে মীনার ১৩টি পর্ব বানানো হয়েছিল। প্রচার করা হয় সার্কভুক্ত সাতটি দেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে। |
||
== গুরুত্ব == |
|||
[[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ এশীয়]] দেশগুলোতে বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি এবং শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক একটি অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে [[ইউনিসেফ|ইউনিসেফের]] সহায়তায় এই কার্টুন ধারাবাহিকটি নির্মিত হয়ে থাকে। যেসকল সচেতনতা মীনা কার্টুনের মাধ্যমে তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে তার মধ্যে আছে, বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ ও ব্যবহারে উৎসাহিত করা, মেয়েদের স্কুলে পাঠানো, কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে থেকে স্কুলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া, যৌতুক বন্ধ করা, ছেলে-মেয়ে সমান পুষ্টি ও সুযোগ-সুবিধার দাবিদার, প্রয়োজনীয় ও সমঅধিকার পেলে মেয়েরাও অনেক কিছু হতে পারে তা বোঝানো, শহরের বাসায় বাসায় কাজে সাহায্য করে এমন মেয়েদের প্রতি সুবিচার ও তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।<ref name=":0">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://bd.toonsmag.com/2019/07/meena.html|শিরোনাম=মীনা: সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তনকারী এক যুগান্তকারী চরিত্র|ওয়েবসাইট=টুনস ম্যাগ|সংগ্রহের-তারিখ=2019-09-14}}</ref><ref>http://www.unicef.org/rosa/media_2479.htm</ref> প্রতিবছর ২৪ সেপ্টেম্বর মীনা দিবস হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও ইস্ট-এশিয়ার দেশসমূহে পালন করা হয়। |
|||
[[চিত্র:মীনা.jpg|250px|thumb|মীনা কার্টুন ধারাবাহিকের মূল চরিত্র ''মীনা'']] |
[[চিত্র:মীনা.jpg|250px|thumb|মীনা কার্টুন ধারাবাহিকের মূল চরিত্র ''মীনা'']] |
||
== নির্মাণ ইতিহাস == |
== নির্মাণ ইতিহাস == |
||
১৯৯১ থেকে ২০০০ সালকে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েশিশুদের দশক ঘোষণা করেছিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘ শিশু তহবিল এটি প্রসারের দায়িত্ব নেয়। সে সময় ডেনমার্ক সরকার দক্ষিণ এশিয়াতে অ্যানিমেশন কার্টুন তৈরির জন্য অর্থসহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ রাজি হয়। মীনা কার্টুন ১৯৯০ সালে ইউনিসেফ বাংলাদেশের যোগাযোগ বিভাগের নিল ম্যাককি ও কোল ডজের নেতৃত্ব যাত্রা শুরু করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.tbsnews.net/feature/panorama/meenas-journey-three-decades-136906|শিরোনাম=Meena’s journey of three decades|তারিখ=2020-09-24|ওয়েবসাইট=The Business Standard|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-08}}</ref> ইউনিসেফের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান কানাডীয় নিল ম্যাককির নির্দেশনায় ইউনিসেফের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ শামসুদ্দিন আহমেদ পরিকল্পনা করেন। এ অঞ্চলের সব দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে মীনা নামটি প্রস্তাব করা হয়। ভারতের মুম্বাইয়ের রামমোহন প্রতিটি চরিত্রের পোশাক কী হবে, তাদের অবয়ব কী হবে, সেগুলো আঁকেন। মীনা কার্টুনের প্রথম পর্ব ‘মুরগিগুলো গুণে রাখ’ ফিলিপাইনে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যানিমেশন স্টুডিও হানা বারবারায় তৈরি করা হয়। পরে মীনা কার্টুন মুম্বাইয়ের রামমোহন স্টুডিওতে তৈরি হয়। এখন বাংলাদেশেই মীনা কার্টুন তৈরি হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.prothomalo.com/bangladesh/‘এটি-একটি-ভালো-কাজ-হয়েছে’|শিরোনাম='এটি একটি ভালো কাজ হয়েছে'|শেষাংশ=প্রতিবেদক|প্রথমাংশ=নিজস্ব|ওয়েবসাইট=Prothomalo|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-08}}</ref> মীনা কার্টুন তৈরিতে র্যাচেল কার্নেগি ইউনিসেফের মীনা প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। নুজহাত শাহজাদি ও ভারতের মীরা আঘি প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন।কার্টুনের থিম গানের গায়িকা বলিউডের সুষমা শ্রেষ্ঠ। <ref name=":0" /> |
১৯৯১ থেকে ২০০০ সালকে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েশিশুদের দশক ঘোষণা করেছিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘ শিশু তহবিল এটি প্রসারের দায়িত্ব নেয়। সে সময় ডেনমার্ক সরকার দক্ষিণ এশিয়াতে অ্যানিমেশন কার্টুন তৈরির জন্য অর্থসহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ রাজি হয়। মীনা কার্টুন ১৯৯০ সালে ইউনিসেফ বাংলাদেশের যোগাযোগ বিভাগের নিল ম্যাককি ও কোল ডজের নেতৃত্ব যাত্রা শুরু করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.tbsnews.net/feature/panorama/meenas-journey-three-decades-136906|শিরোনাম=Meena’s journey of three decades|তারিখ=2020-09-24|ওয়েবসাইট=The Business Standard|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-08}}</ref> ইউনিসেফের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান কানাডীয় নিল ম্যাককির নির্দেশনায় ইউনিসেফের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ শামসুদ্দিন আহমেদ পরিকল্পনা করেন। এ অঞ্চলের সব দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে মীনা নামটি প্রস্তাব করা হয়। ভারতের মুম্বাইয়ের রামমোহন প্রতিটি চরিত্রের পোশাক কী হবে, তাদের অবয়ব কী হবে, সেগুলো আঁকেন। মীনা কার্টুনের প্রথম পর্ব ‘মুরগিগুলো গুণে রাখ’ ফিলিপাইনে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যানিমেশন স্টুডিও হানা বারবারায় তৈরি করা হয়। পরে মীনা কার্টুন মুম্বাইয়ের রামমোহন স্টুডিওতে তৈরি হয়। এখন বাংলাদেশেই মীনা কার্টুন তৈরি হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.prothomalo.com/bangladesh/‘এটি-একটি-ভালো-কাজ-হয়েছে’|শিরোনাম='এটি একটি ভালো কাজ হয়েছে'|শেষাংশ=প্রতিবেদক|প্রথমাংশ=নিজস্ব|ওয়েবসাইট=Prothomalo|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-08}}</ref> মীনা কার্টুন তৈরিতে র্যাচেল কার্নেগি ইউনিসেফের মীনা প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। নুজহাত শাহজাদি ও ভারতের মীরা আঘি প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন।কার্টুনের থিম গানের গায়িকা বলিউডের সুষমা শ্রেষ্ঠ। <ref name=":0" /> |
||
=== চরিত্র তৈরি === |
|||
শামসুদ্দিন আহমেদ মীনা নামটি প্রস্তাব করেন। রফিকুন নবী প্রথম মীনা, রাজুকে আঁকেন। মুস্তাফা মনোয়ার একটি ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করেন। প্রথম পর্বের দোকানদার ও মুরগি চুরি করে নিয়ে যাওয়া চোর চরিত্র তৈরি করেন শিশির ভট্টাচার্য। দোকানদারের মুখটিও তাঁর করা। |
|||
== চরিত্রসমূহ == |
== চরিত্রসমূহ == |
||
৬৬ নং লাইন: | ৭৩ নং লাইন: | ||
আমারোতো সাধ আছে, আছে অভিলাষা<br/> |
আমারোতো সাধ আছে, আছে অভিলাষা<br/> |
||
ঘরে বেঁধে রেখো না, নিয়ে যাও এগিয়ে। |
ঘরে বেঁধে রেখো না, নিয়ে যাও এগিয়ে। |
||
== অন্যান্য কার্যক্রম == |
|||
সংবাদমাধ্যমে শিশু সংক্রান্ত প্রতিবেদন যাতে আরও ভালো হয় সেলক্ষ্যে সাংবাদিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ২০০৫ সালে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড চালু করে ইউনিসেফ বাংলাদেশ। ২০১২ সালে ইউনিসেফ একটি সরাসরি রেডিও শো শুরু করে যেখানে মীনা, মিঠু ও রাজুকে উপস্থাপক হিসাবে দেখানো হয়। ২০১৬ সালে ইউনিসেফের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ ‘মীনা গেম’ চালু করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.unicef.org/bangladesh/%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%93-%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AB|শিরোনাম=মীনা ও ইউনিসেফ|ওয়েবসাইট=www.unicef.org|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-09}}</ref> |
|||
== বাংলাদেশে মীনা == |
|||
বাংলাদেশ টেলিভিশনে মীনা কার্টুন দেখানোর পাশাপাশি রেডিওতে প্রচারিত হয় মীনার অনুষ্ঠান। ইউনিসেফ ও বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস প্রথম রেডিওর জন্য মীনা সিরিজ তৈরি করে। ৬৮টি ভ্রাম্যমাণ ফিল্ম ইউনিটের মাধ্যমে মীনা পৌঁছে গেছে দেশের আনাচ-কানাচে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন এনজিওর আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রকল্পে মীনা কমিক বইগুলো সহায়ক পাঠ উপকরণ হিসেবে ব্যবহূত হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.prothomalo.com/bangladesh/আমাদের-সবার-প্রিয়-মীনা|শিরোনাম=আমাদের সবার প্রিয় মীনা|শেষাংশ=প্রতিবেদক|প্রথমাংশ=নিজস্ব|ওয়েবসাইট=Prothomalo|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-09}}</ref> ১৯৯৩ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান তাদের ফ্লাইটের অভ্যন্তরীণ বিনোদন কর্মসূচিতে মীনা কার্টুন অন্তর্ভুক্ত করে। প্রতিটি ফ্লাইটে মীনা কার্টুন প্রদর্শিত হতো। |
|||
== তথ্যসূত্র == |
== তথ্যসূত্র == |
০৩:৫০, ৯ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
মীনা (ধারাবাহিক কার্টুন) | |
---|---|
এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অযাচিত < অপারেটর।x450px | |
প্রকাশনার তথ্য | |
প্রকাশক | ইউনিসেফ |
প্রথম আবির্ভাব | বাংলাদেশ কমিকস বাংলাদেশ টেলিভিশন |
নির্মাতা | ইউনিসেফ, হান্না-বারবারা কার্টুনস, টুনবাংলা |
কাহিনীর তথ্য | |
মীনা | |
প্রজাতি | মানব |
দলের অন্তর্ভুক্তি | বাংলাদেশ টেলিভিশন |
উল্লেখযোগ্য ছদ্মনাম | মিনা |
ক্ষমতা | কল্যাণমূলক |
মীনা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত একটি জনপ্রিয় টিভি কার্টুন ধারাবাহিক ও কমিক বই। ১৯৯৩ সালে প্রথম টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। কার্টুন ধারাবাহিকের মূল চরিত্র বাংলা ভাষায় নির্মিত কার্টুনগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র। মীনা কার্টুন শুধু বাংলা ভাষায় তৈরি হয়নি। হিন্দি, উর্দুসহ ২৯টি ভাষায় মীনা তৈরি হয়েছে। প্রথমে মীনার ১৩টি পর্ব বানানো হয়েছিল। প্রচার করা হয় সার্কভুক্ত সাতটি দেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে।
গুরুত্ব
দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি এবং শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক একটি অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ইউনিসেফের সহায়তায় এই কার্টুন ধারাবাহিকটি নির্মিত হয়ে থাকে। যেসকল সচেতনতা মীনা কার্টুনের মাধ্যমে তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে তার মধ্যে আছে, বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ ও ব্যবহারে উৎসাহিত করা, মেয়েদের স্কুলে পাঠানো, কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে থেকে স্কুলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া, যৌতুক বন্ধ করা, ছেলে-মেয়ে সমান পুষ্টি ও সুযোগ-সুবিধার দাবিদার, প্রয়োজনীয় ও সমঅধিকার পেলে মেয়েরাও অনেক কিছু হতে পারে তা বোঝানো, শহরের বাসায় বাসায় কাজে সাহায্য করে এমন মেয়েদের প্রতি সুবিচার ও তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।[১][২] প্রতিবছর ২৪ সেপ্টেম্বর মীনা দিবস হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও ইস্ট-এশিয়ার দেশসমূহে পালন করা হয়।
নির্মাণ ইতিহাস
১৯৯১ থেকে ২০০০ সালকে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েশিশুদের দশক ঘোষণা করেছিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘ শিশু তহবিল এটি প্রসারের দায়িত্ব নেয়। সে সময় ডেনমার্ক সরকার দক্ষিণ এশিয়াতে অ্যানিমেশন কার্টুন তৈরির জন্য অর্থসহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ রাজি হয়। মীনা কার্টুন ১৯৯০ সালে ইউনিসেফ বাংলাদেশের যোগাযোগ বিভাগের নিল ম্যাককি ও কোল ডজের নেতৃত্ব যাত্রা শুরু করে।[৩] ইউনিসেফের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান কানাডীয় নিল ম্যাককির নির্দেশনায় ইউনিসেফের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ শামসুদ্দিন আহমেদ পরিকল্পনা করেন। এ অঞ্চলের সব দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে মীনা নামটি প্রস্তাব করা হয়। ভারতের মুম্বাইয়ের রামমোহন প্রতিটি চরিত্রের পোশাক কী হবে, তাদের অবয়ব কী হবে, সেগুলো আঁকেন। মীনা কার্টুনের প্রথম পর্ব ‘মুরগিগুলো গুণে রাখ’ ফিলিপাইনে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যানিমেশন স্টুডিও হানা বারবারায় তৈরি করা হয়। পরে মীনা কার্টুন মুম্বাইয়ের রামমোহন স্টুডিওতে তৈরি হয়। এখন বাংলাদেশেই মীনা কার্টুন তৈরি হয়।[৪] মীনা কার্টুন তৈরিতে র্যাচেল কার্নেগি ইউনিসেফের মীনা প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। নুজহাত শাহজাদি ও ভারতের মীরা আঘি প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন।কার্টুনের থিম গানের গায়িকা বলিউডের সুষমা শ্রেষ্ঠ। [১]
চরিত্র তৈরি
শামসুদ্দিন আহমেদ মীনা নামটি প্রস্তাব করেন। রফিকুন নবী প্রথম মীনা, রাজুকে আঁকেন। মুস্তাফা মনোয়ার একটি ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করেন। প্রথম পর্বের দোকানদার ও মুরগি চুরি করে নিয়ে যাওয়া চোর চরিত্র তৈরি করেন শিশির ভট্টাচার্য। দোকানদারের মুখটিও তাঁর করা।
চরিত্রসমূহ
- মীনা : কেন্দ্রীয় চরিত্র। সে বিদ্যালয়ে যেতে ভালবাসে এবং নতুন কোন কিছু সম্পর্কে শিখতে ও জানতে চায়। প্রকৃতি প্রদত্ত ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে ভাল-মন্দ বোঝার সক্ষমতা তার রয়েছে। গ্রামের যে কোন সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে পিছু হটে না। তার এ শক্তিশালী ক্ষমতা দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে। মীনা তার চিন্তাধারাকে বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনীয় কাজ করে যায় ও কথা বলে চলে।[৫]
- রাজু : মীনার পিঠেপিঠি ভাই।
- মিঠু : মীনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ও তার পোষা টিয়া।
- রাণী : মীনা-রাজুর ছোট্ট বোন।
- দাদী : মীনা-রাজুর বৃদ্ধা দাদী।
- বাবা-মা : মীনা-রাজুর বাবা-মা।
- লালী : মীনাদের গরু।
- মুনমুন : মীনাদের ছাগল।
- মোড়ল : গ্রামের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব।
- দোকানদার : সামন্ততান্ত্রিক, অত্যাচারী, শঠ চরিত্রের লোক। বাজারে তার দোকান আছে এবং তার ছেলে শহর থেকে ডাক্তারি পাশ করে এসেছে। কার্টুন ধারাবাহিকগুলোতে তিনিই মূলত খলনায়ক।
- রিতা : মীনার স্কুলের উপরের শ্রেণীতে পাঠরত একজন আপু। পরবর্তীকালে তার সাথে দোকানদারের ছেলের বিয়ে হয়।
- দিপু : মীনার একজন দুষ্টু বন্ধু। বিভিন্ন সময়ে দিপুকে সচেতন করতে সহায়তা করেছে মীনার টিয়া মিঠু।
- স্কুলের বড় আপা বা শিক্ষিকা : ইনি মীনাকে বিভিন্ন সমস্যায় সময় ও বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছেন।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধারাবাহিকে বিভিন্ন চরিত্রের আগমন ঘটেছে।
- ফুফু আম্মা: মীনা-রাজুর বাবার বড় বোন। বদমেজাজি, নিষ্ঠুর প্রকৃতির মহিলা।
কেন্দ্রীয় চরিত্র পরিচিতি
মীনা
মীনা ৯ বছর বয়সী একটি উচ্ছল, প্রাণবন্ত ও সাহসী মেয়ে, যে তার গ্রামের বিভিন্ন সুপরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে।
মীনা ধারাবাহিকে পর্ব
মীনা ধারাবাহিকের বিভিন্ন পর্বগুলোর মধ্যে আছে:[৬]
- সব মুরগী আছে
- বুদ্ধিমতি মীনা
- মীনা কি স্কুল ছেড়ে দেবে?
- মীনা ও দুষ্টু ছেলে
- জীবন বাঁচানো
- মীনার তিনটি ইচ্ছা
- যৌতুক বন্ধ কর
- বিয়ের বয়স হয় নাই
- মেয়েদের যত্ন নাও
- আমি স্কুল ভালবাসি
- ছেলেই হতে হবে
- মীনা এখন শহরে
সূচনা সঙ্গীত
আমি বাবা-মায়ের শত আদরের মেয়ে
আমি বড় হই সকলের ভালোবাসা নিয়ে
আমার দু চোখে অনেক স্বপ্ন থাকে
আমি পড়ালেখা শিখতে চাই
যদি চার দেয়ালের মাঝে কাটে সারা জীবন
তাহলে থাকবো শুধু বোঝা হয়ে
শিক্ষা আমায় মুক্তি দেবে, মুক্তি দেবে
আমিই তো কালকের খুশি আর আশা
আমারোতো সাধ আছে, আছে অভিলাষা
ঘরে বেঁধে রেখো না, নিয়ে যাও এগিয়ে।
অন্যান্য কার্যক্রম
সংবাদমাধ্যমে শিশু সংক্রান্ত প্রতিবেদন যাতে আরও ভালো হয় সেলক্ষ্যে সাংবাদিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ২০০৫ সালে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড চালু করে ইউনিসেফ বাংলাদেশ। ২০১২ সালে ইউনিসেফ একটি সরাসরি রেডিও শো শুরু করে যেখানে মীনা, মিঠু ও রাজুকে উপস্থাপক হিসাবে দেখানো হয়। ২০১৬ সালে ইউনিসেফের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ ‘মীনা গেম’ চালু করে।[৭]
বাংলাদেশে মীনা
বাংলাদেশ টেলিভিশনে মীনা কার্টুন দেখানোর পাশাপাশি রেডিওতে প্রচারিত হয় মীনার অনুষ্ঠান। ইউনিসেফ ও বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস প্রথম রেডিওর জন্য মীনা সিরিজ তৈরি করে। ৬৮টি ভ্রাম্যমাণ ফিল্ম ইউনিটের মাধ্যমে মীনা পৌঁছে গেছে দেশের আনাচ-কানাচে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন এনজিওর আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রকল্পে মীনা কমিক বইগুলো সহায়ক পাঠ উপকরণ হিসেবে ব্যবহূত হয়।[৮] ১৯৯৩ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান তাদের ফ্লাইটের অভ্যন্তরীণ বিনোদন কর্মসূচিতে মীনা কার্টুন অন্তর্ভুক্ত করে। প্রতিটি ফ্লাইটে মীনা কার্টুন প্রদর্শিত হতো।
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ "মীনা: সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তনকারী এক যুগান্তকারী চরিত্র"। টুনস ম্যাগ। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৪।
- ↑ http://www.unicef.org/rosa/media_2479.htm
- ↑ "Meena's journey of three decades"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৯-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "'এটি একটি ভালো কাজ হয়েছে'"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮।
- ↑ Meena’s family and friends, collect: 20 September, 2012
- ↑ http://www.unicef.org/rosa/media_2511.htm
- ↑ "মীনা ও ইউনিসেফ"। www.unicef.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "আমাদের সবার প্রিয় মীনা"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯।