হারুন আহমেদ চৌধুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{তথ্যছক ব্যক্তি
{{তথ্যছক ব্যক্তি
|name= হারুন আহমেদ চৌধুরী
|name= হারুন আহমেদ চৌধুরী
| image = Harun Ahmed Chowdhury.Bir Uttom.jpg
| image = [[Harun Ahmed Chowdhury.Bir Uttom.jpg]]
| office =
| office =
| order =
| order =

২০:৪৬, ৩০ জুন ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

হারুন আহমেদ চৌধুরী
Harun Ahmed Chowdhury.Bir Uttom.jpg
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর উত্তম

হারুন আহমেদ চৌধুরী (জন্ম: ৬ নভেম্বর ১৯৪৫) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন উচ্চতম পর্যায়ের কর্মকর্তা যিনি ১৯৯০ সালে অবসরগ্রহণ করেন। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্স থ্যাগ করে ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্দে অংশ গ্রহণ করেন এবং গুলিবিদ্ধ হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে।[১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

হারুন আহমেদ চৌধুরীর জন্ম সিলেট জেলায়। তার বাবার নাম আবদুস সোবহান চৌধুরী এবং মায়ের নাম জাহানারা বেগম চৌধুরী। তার স্ত্রীর নাম নিঘাত হারুন। তাদের দুই মেয়ে।

কর্মজীবন

জেনারেল হারুন আহমেদ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমী থেকে সফলভাবে প্রশিক্ষণের পর ১৯৬৬তে সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। এর পর তিনি বিভিন্ন কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করেন। অদঃপর কাপ্টেন পদে তাঁর পদোন্নতি হয়। ১৯৭১ সালের শুরুর দিকে ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায় ইপিআর-এর ৬ নম্বর সেক্টরের কাপ্তাইস্থ ১৭ নম্বর উইংয়ে তাঁকে সহকারী অধিনায়ক হিসাবে প্রেষণে নিয়োগ করা হয়। তিনি ১৯৭১ এর ২৫শে মার্চ রাতে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন এবং এপ্রিল মাসেই সম্মুখ যুদ্ধে মারাত্মভাবে আহত হয়ে বারমায় নীত হন। সেখান তেকে সুস্থ হয়ে ফিরে নভেম্বরে মুক্তিযুদ্দের ১ নম্বর সেক্টরে যোগ দান করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং নিয়মিত কর্মকর্তা হিসেবে ক্রমান্বয়ে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি বিধি মোতাবেক ১৯৯০ তে সেনাবাহিনীর চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

হারুন আহমেদ চৌধুরী ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমী হতে সফলভাবে প্রশিণ সমাপ্তির পর সেনাবাহিনীতে কমিশন প্রাপ্ত হন। বিভিন্ন কর্মস্থলে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭১ সালে ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায় ইপিআর-এর ৬ নম্বর সেক্টরের কাপ্তাইস্থ ১৭ নম্বও উইংয়ের সহকারী অধিনায়ক হিসাবে তিনি দায়িত্বরত ছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে টেলিফোনে মেজর রফিকের পাঠানো ‘ব্রিং সাম উড ফর মি’ কোড ওয়ার্ডটি জানার পর সব অবাঙালী অফিসার ও জওয়ানকে বন্দি কওে উইংয়ের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মেজর রফিকের সাথে যোগ দেয়ার জন্য চট্টগ্রামের দিকে রওনা হন। ২৬ মার্চ কালুরঘাট এসে মেজর জিয়ার সাথে দেখা হয় এবং জিয়ার নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর সাথে যোগ দিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেন।

এক কোম্পানি সৈন্যসহ তিনি চট্টগ্রাম কলেজ এলাকায় অবস্থান নেন। ৩০ মার্চ চকবাজার এলাকায় ২০ বেলুচ রেজিমেন্ট এবং একই স্থানে ৬ এপ্রিল আগুয়ান পাক বাহিনীর ওপর আক্রমন চালিয়ে তিনি শত্র“র ব্যাপক তি সাধন করতে সম হন মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জেলা সড়কে কর্ণফুলী নদীর তীরে কালুরঘাট। সেখানে উত্তর দিক থেকে হালদা এবং দক্ষিণ দিক থেকে সাঙ্গু নদী এসে মিলিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় এখানে ছিল অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট,ইপিআর ও ছাত্র-যুবক সমন্বয়ে গড়া মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রতিরক্ষা অবস্থান। মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন কয়েকটি দলে বিভক্ত। নদীর পশ্চিম পূর্ব তীরের একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন হারুন আহমেদ চৌধুরী।চট্টগ্রাম শহর দখলের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি বড় দল অগ্রসর হয় কালুরঘাট অভিমুখে। ১১ এপ্রিল সকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আর্টিলারি, মর্টার ও নৌবাহিনীর গান ফায়ারের সাপোর্ট নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর তুমুল আক্রমণ শুরু করে। কালুরঘাটের পশ্চিমে চট্টগ্রামের দিকে রাস্তা এবং আশপাশে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ দল পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে থাকে। কিন্তু পাকিস্তানি আক্রমণ ছিল অত্যন্ত পরিকল্পিত, ব্যাপক ও সুবিন্যস্ত। সম্মুখভাগে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা প্রবল আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। আক্রমণের তীব্রতায় তাঁরা পেছনে কালুরঘাট সেতুতে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো খবর দিতে পারেননি। এরপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্রুত অগ্রসর হয় সেতুর দিকে। হারুন আহমেদ চৌধুরী তাঁর দল নিয়ে ছিলেন সেতু এলাকায়। তাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আকস্মিক আক্রমণের শিকার হন। একদম কাছাকাছি দূরত্বে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। হারুন আহমেদ চৌধুরী কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেতুর পশ্চিম প্রান্তে ডান দিকে ছিলেন। এ সময় তিনি প্রতিরক্ষা অবস্থান ছেড়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন। তখন হঠাৎ করে তাঁর একেবারে সামনে শত্রু পাকিস্তানি সেনারা দৃশ্যমান হয়। ভয়াবহ এক পরিস্থিতি। মুক্তিযোদ্ধা সেখানে মাত্র ৩৫ জন। অন্যদিকে পাকিস্তানি সেনা কমপক্ষে ১০০ জন। হারুন আহমেদ চৌধুরী বিচলিত হলেন না। সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে থাকলেন। কিন্তু বেশিক্ষণ পারলেন না। পাকিস্তানি সেনাদের ছোড়া একটি গুলি এসে লাগল তাঁর পেটে। সেতুর ওপর তিনি লুটিয়ে পড়েন। হারুন আহমেদ চৌধুরী সৌভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে যান। [২]

সম্মাননা

মুক্তিযুদ্ধে ১ নম্বর সেক্টরে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে। জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এটিই সব্বোর্চ্চ খেতাব। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ৬৮ জনকে এ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ১২-০৬-২০১২
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ৬৬। আইএসবিএন 9789849025375 

বহি:সংযোগ