জান্নাতুল বাকি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
DelwarHossain (আলোচনা | অবদান) প্রচলিত নিয়ম অনুচ্ছেদ সংযোজন |
DelwarHossain (আলোচনা | অবদান) →প্রচলিত নিয়ম: রচনাশৈলী |
||
৩৫ নং লাইন: | ৩৫ নং লাইন: | ||
==প্রচলিত নিয়ম== |
==প্রচলিত নিয়ম== |
||
প্রতিবছর হজ্জের সময় মদিনায় অবস্থানরত কোনো হজ্জ পালনকারীর মৃত্যু হলে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়। এছাড়াও মদীনার বাসিন্দারাও মারা গেলে এখানে দাফনের সুযোগ পায়। তবে [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদ (স.)]]-এর সাহাবাদের ইতিহা সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এ কবরস্থানের শুরুর অংশে যাদের সমাহিত করা হয়েছে তাদের স্থানে এখন আর নতুন করে কাউকে কবরস্থ করা হয় না। সৌদি সরকারের তত্ত্ববধানে জান্নাতুল বাকী [[জিয়ারত|জিয়ারতের]] জন্য ফজর ও আসরের নামাজের পর খুলে দেয়া হয়। এসময় মুসলিম পুরুষরা জিয়ারতের জন্য ভেতরে যেতে পারে। ইসলামি শরিয়তে নারীদের কবর জেয়ারত করা বৈধ নয় মর্মে তাদের যেতে দেয়া হয় না।<ref name="Banglanews"/> |
প্রতিবছর হজ্জের সময় মদিনায় অবস্থানরত কোনো হজ্জ পালনকারীর মৃত্যু হলে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়। এছাড়াও মদীনার বাসিন্দারাও মারা গেলে এখানে দাফনের সুযোগ পায়। তবে [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদ (স.)]]-এর সাহাবাদের ইতিহা সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এ কবরস্থানের শুরুর অংশে যাদের সমাহিত করা হয়েছে তাদের স্থানে এখন আর নতুন করে কাউকে কবরস্থ করা হয় না। সৌদি সরকারের তত্ত্ববধানে জান্নাতুল বাকী [[জিয়ারত|জিয়ারতের]] জন্য ফজর ও আসরের নামাজের পর খুলে দেয়া হয়। এসময় মুসলিম পুরুষরা জিয়ারতের জন্য ভেতরে যেতে পারে। ইসলামি শরিয়তে নারীদের কবর জেয়ারত করা বৈধ নয় মর্মে তাদের যেতে দেয়া হয় না।<ref name="Banglanews"/> হাদীস বিশারদগণ জেয়ারতের সময় জান্নাতুল বাকিতে সমাহিতদের প্রতি অনির্দিষ্টভাবে সবাইকে একসঙ্গে সালাম দেওয়া ও তাদের জন্য দোয়া করার পক্ষে মত দিয়েছেন। |
||
ইসলামি স্কলারদের মতে, জান্নাতুল বাকিতে সমাহিতদের প্রতি সালাম দেওয়ার সুন্নত পদ্ধতি হলো- অনির্দিষ্টভাবে সবাইকে একসঙ্গে সালাম দেওয়া ও তাদের জন্য দোয়া করা। |
|||
==ধ্বংস== |
==ধ্বংস== |
০৪:৩১, ২৬ জুন ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
জান্নাতুল বাকি | |
---|---|
বিস্তারিত | |
স্থাপিত | ৬২২ খ্রিষ্টাব্দ |
অবস্থান | মদিনা |
দেশ | সৌদি আরব |
ধরন | মুসলিম |
মালিক | রাষ্ট্র |
জান্নাতুল বাকি (আরবি: مقبرة البقيع, The Baqi Cemetery) আরবীতে বলা হয়- বাকিউল গারকাদ, মাকবারাতুল বাকি। সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত একটি কবরস্থান। এটি মসজিদে নববীর দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থিত। পূর্বে এখানে কবরের উপর স্থাপনা ছিল। ওসমানী খেলাফত ও তার পূর্বে এসব কবরকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের কুসংস্কার প্রথা চালু হওয়ায় সৌদি আরব সরকার কবরগুলোতে ছোট চিহ্ন রেখে স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেয়। ইমাম মালিক (রহ.)-এর কথামতে জান্নাতুল বাকিতে অন্তত দশ হাজার সাহাবার কবর রয়েছে।[১]
এই কবরস্থানটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মুহাম্মদ (সা) এর অনেক আত্মীয় ও সাহাবিকে দাফন করা হয়েছে। মুহাম্মদ (সা) এই কবরস্থানে বেশ কয়েকবার এসেছেন। জান্নাতুল বাকির পেছনে একসময় একটি ইহুদি কবরস্থান ছিল। পরবর্তীতে উমাইয়া আমলে তা জান্নাতুল বাকির অংশে পরিণত করা হয়।[২]
ইতিহাস
মুহাম্মদ (সা) হিজরত করে মদিনা আসার সময় জান্নাতুল বাকির স্থান সবুজ বৃক্ষ আচ্ছাদিত ছিল। মুহাম্মদ (স.) এর স্ত্রী আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) শেষ রাতে জান্নাতুল বাকির দিকে বেরিয়ে যেতেন এবং বলতেন, ‘হে (কবরের) মুমিন সম্প্রদায়! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের নিকট এসেছে যা তোমাদেরকে ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল, কাল কিয়ামত পর্যন্ত তোমরা অবশিষ্ট থাকবে এবং ইনশাআল্লাহ নিশ্চয়ই আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হবো। হে আল্লাহ! তুমি বাকিউল গারদবাসীদের ক্ষমা করে দাও।’ - সহীহ মুসলিম [১]
মসজিদে নববী নির্মাণের সময় তিনি মসজিদের স্থানটি দুজন এতিম শিশুর কাছ থেকে কিনে নেন। তার এক সাহাবি আসাদ বিন জারারার মৃত্যুর পর মুহাম্মদ (সা) কবরস্থানের জায়গা নির্ধারণ করেন। আসাদ বিন জারার ছিলেন এখানে দাফন হওয়া প্রথম আনসার ব্যক্তি। উসমান বিন মাজুন এখানে দাফন হওয়া প্রথম মুহাজির ব্যক্তি।
তৃতীয় খলিফা উসমান ইবনে আফফানের মৃত্যুর পর তাকে এখানে দাফন করা হয়। তখন তার কবরটি পার্শ্ববর্তী ইহুদি কবরস্থানের মধ্যে পড়ে। খলিফা প্রথম মুয়াবিয়া তার সম্মানে এই স্থানকে জান্নাতুল বাকির অংশ করে নেন। উমাইয়া খিলাফতের সময় তার কবরের উপর প্রথম গম্বুজ নির্মিত হয়। অন্যান্য সময়েও এখানকার বিভিন্ন কবরের উপর গম্বুজ ও স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। পরে তা ভেঙ্গে দেয়া হয়।
প্রচলিত নিয়ম
প্রতিবছর হজ্জের সময় মদিনায় অবস্থানরত কোনো হজ্জ পালনকারীর মৃত্যু হলে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়। এছাড়াও মদীনার বাসিন্দারাও মারা গেলে এখানে দাফনের সুযোগ পায়। তবে মুহাম্মদ (স.)-এর সাহাবাদের ইতিহা সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এ কবরস্থানের শুরুর অংশে যাদের সমাহিত করা হয়েছে তাদের স্থানে এখন আর নতুন করে কাউকে কবরস্থ করা হয় না। সৌদি সরকারের তত্ত্ববধানে জান্নাতুল বাকী জিয়ারতের জন্য ফজর ও আসরের নামাজের পর খুলে দেয়া হয়। এসময় মুসলিম পুরুষরা জিয়ারতের জন্য ভেতরে যেতে পারে। ইসলামি শরিয়তে নারীদের কবর জেয়ারত করা বৈধ নয় মর্মে তাদের যেতে দেয়া হয় না।[১] হাদীস বিশারদগণ জেয়ারতের সময় জান্নাতুল বাকিতে সমাহিতদের প্রতি অনির্দিষ্টভাবে সবাইকে একসঙ্গে সালাম দেওয়া ও তাদের জন্য দোয়া করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
ধ্বংস
১৯২৬ সালে আবদুল আজিজ ইবনে সৌদের শাসনামলে জান্নাতুল বাকির মাজারগুলো ধ্বংস করা হয়। একই বছর মক্কার জান্নাতুল মুয়াল্লা কবরস্থানের মাজারগুলোও ধ্বংস করা হয়। জান্নাতুল মুয়াল্লায় মুহাম্মদ (সা) এর প্রথম স্ত্রী খাদিজাসহ আরো অন্যান্য আত্মীয়ের কবর রয়েছে। এসময় বহির্বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় প্রতিবাদ জানালেও এসব স্থাপনা ধ্বংস করে ফেলা হয়।
সমাহিত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ
মুহাম্মদ (সা) এর আত্মীয় ও সাহাবি
- খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ ছাড়া মুহাম্মদ (সা) এর অন্যান্য স্ত্রীগণ
- মুহাম্মদ (সা) এর শিশুপুত্র ইবরাহিম
- রুকাইয়াহ বিনতে মুহাম্মদ, মুহাম্মদ (সা) এর কন্যা
- ফাতিমা বিনতে আসাদ, মুহাম্মদ (সা) এর চাচি ও আলি ইবনে আবি তালিবের মা। সমশ্রেণীর অন্যান্য আত্মীয়ের মধ্যে রয়েছেন সাফিয়া ও আতিকা
- ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ, মুহাম্মদ (সা) এর কন্যা। তার দাফনের স্থানটি সুনির্দিষ্ট নয়
- উসমান ইবনে আফফান, মুহাম্মদ (সা) এর সাহাবি, ও তৃতীয় খলিফা। এছাড়া তিনি রাসূলের জামাতাও ছিলেন
- উসমান বিন মজুন, মুহাম্মদ (সা) এর সাহাবি
- আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব, মুহাম্মদ (সা) এর চাচা
- ফাতিমা বিনতে হিজাম, উম্মুল বানিন বলে পরিচিত। ফাতিমার মৃত্যুর পর আলি ইবনে আবি তালিব তাকে বিয়ে করেন
- হাসান ইবনে আলি, মুহাম্মদ (সা) এর নাতি এবং আলি ইবনে আবি তালিব ও ফাতিমার পুত্র
- আলি ইবনে হুসাইন জয়নুল আবেদিন, হুসাইন ইবনে আলির পুত্র। কারবালার যুদ্ধে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মধ্য একমাত্র তিনি বেঁচে ছিলেন। শিয়াদের নিকট তিনি চতুর্থ ইমাম হিসেবে সম্মানিত
- মুহাম্মদ আল বাকির, জয়নুল আবেদিনের পুত্র, শিয়াদের নিকট তিনি পঞ্চম ইমাম হিসেবে সম্মানিত
- জাফর আল-সাদিক, মুহাম্মদ আল বাকিরের পুত্র, শিয়াদের নিকট তিনি ষষ্ঠ ইমাম হিসেবে সম্মানিত
- আবদুল্লাহ ইবনে জাফর, তিনি আলি ইবনে আবি তালিবের কন্যা জয়নাবের স্বামী ও ভাতিজা ছিলেন
- আকিল ইবনে আবি তালিব, আলি ইবনে আবি তালিবের বড় ভাই
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ
- মালিক ইবনে আনাস, ইসলামি আইন বিশারদ
- মুহাম্মদ হায়া আল সিন্ধি, ইসলামি পন্ডিত
- ইমাম শামিল, ইসলামি পন্ডিত এবং ককেশাসের স্বাধীনতা সংগ্রামী
- মুহাম্মদ সাইয়িদ তানতাওয়ি, মিশরের গ্র্যান্ড মুফতি
- প্রথম ইদ্রিস, লিবিয়ার রাজা
- হাসান আস সেনুসি, লিবিয়ার যুবরাজ
- মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি, ইসলামি পন্ডিত, ফাজায়েলে আমল গ্রন্থের লেখক
- শওকত আলি হায়াত ইসলামি পন্ডিত
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ "জান্নাতুল বাকিতে ১০ হাজার সাহাবির কবর"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৯।
- ↑ Textual Sources for the Study of Islam By Knappert, Jan, Andrew Rippin
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে জান্নাতুল বাকি সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
- Visitation of Baqi
- The oldest photos of Jannat al-Baqi (ফার্সি)
- Jannat al-Baqi website
- Map of Jannat al-Baqi
- History of the Cemetery of Jannat al-Baqi
- The Baqi Collection Photos
- Map of Jannat al-Baqi according to Sunni Muslim sources
গ্যালারি
-
জান্নাতুল বাকি ও তার পেছনে মসজিদে নববী।
-
জান্নাতুল বাকি ও তার পেছনে মসজিদে নববী।
-
জান্নাতুল বাকির একটি প্যানারোমা দৃশ্য।
-
ফাতিমার কবরের স্থান (* চিহ্নিত) এবং অন্যন্য কবরসমূহ।
-
ফাতিমা, হাসান, জয়নুল আবেদিন, বাকির, জাফর এবং আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের কবর।
-
ইবরাহিমের কবর।