সময় ভ্রমণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Shakilahmed.gb1 (আলোচনা | অবদান)
→‎আপেক্ষিকতা তত্ত্বে সময় ভ্রমণ: ব্যাকরণ ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:

'''সময় ভ্রমণ''' আক্ষরিক অর্থে 'সময় অক্ষ' বরাবর সঞ্চারণ। ন্যূনতম চতুর্মাত্রিক (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা এবং সময়) এই ব্রহ্মাণ্ডে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা বরাবর স্থান পরিবর্তনের অনুরূপ এক ধারণা হল এই সময় অক্ষ বরাবর সঞ্চরণ বা কালমাত্রিক সরণ (temporal displacement)। সময় ভ্রমণের ভাবনা বহুকাল থেকেই পৃথিবীর সাহিত্য, দর্শন এবং বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে চলেছে। ভাবনার প্রথম পর্যায়ে সময় ভ্রমণের ধারণাটি ছিল অনেকাংশে বিজ্ঞানবিবর্জিত এবং কল্পনাময়। পরবর্তী সময়ে কুড়ি শতকের প্রথমার্ধে [[আপেক্ষিকতা তত্ত্ব]] এবং [[কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান |কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের]] আবিষ্কার এ সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ক্রমশ যুক্তিনির্ভর করে তুলেছে।
'''সময় ভ্রমণ''' আক্ষরিক অর্থে 'সময় অক্ষ' বরাবর সঞ্চারণ। ন্যূনতম চতুর্মাত্রিক (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা এবং সময়) এই ব্রহ্মাণ্ডে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা বরাবর স্থান পরিবর্তনের অনুরূপ এক ধারণা হল এই সময় অক্ষ বরাবর সঞ্চরণ বা কালমাত্রিক সরণ (temporal displacement)। সময় ভ্রমণের ভাবনা বহুকাল থেকেই পৃথিবীর সাহিত্য, দর্শন এবং বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে চলেছে। ভাবনার প্রথম পর্যায়ে সময় ভ্রমণের ধারণাটি ছিল অনেকাংশে বিজ্ঞানবিবর্জিত এবং কল্পনাময়। পরবর্তী সময়ে কুড়ি শতকের প্রথমার্ধে [[আপেক্ষিকতা তত্ত্ব]] এবং [[কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান |কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের]] আবিষ্কার এ সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ক্রমশ যুক্তিনির্ভর করে তুলেছে।


৫ নং লাইন: ৪ নং লাইন:


== সময় ভ্রমণের ধারণার ইতিবৃত্ত ==
== সময় ভ্রমণের ধারণার ইতিবৃত্ত ==
সময় ভ্রমণের আদিমতর কল্পনাপ্রসূত বিবরণগুলো আমরা পাই প্রাচীন মহাকাব্য কিংবা গল্প উপকথায়। যেমন খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে রচিত [[মহাভারত | মহাভারতে]] রাজা কাকুদমির কাহিনীতে রাজা এবং তাঁর কন্যা রেবতীর সময়যাত্রার কাল্পনিক বিবরণ পেয়ে থাকি।<ref>{{cite web|last = Krishnaswamy|first= N |url=https://krishnamurti.abundanthope.org/index_htm_files/The-Bhagavata-Purana.pdf|title=THE BHAGAVATA PURANA FOR THE FIRST TIME READER}}</ref> খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীর জাপানের লোককথার এক চরিত্র উরাশিমাকো বা উরাশিমা তারোর সময় ভ্রমণের গল্পও যথেষ্ট জনপ্রিয়।<ref>{{cite book|author1=Florence Sakade|author2=Yoshio Hayashi|title=Urashima Taro and Other Japanese Children's Favorite Stories|publisher=Tuttle Shokai Inc, Japan}}</ref> তুলনামূলক আধুনিকতর অনেক গল্প উপন্যাসেরও কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এই সময় যাত্রার ধারণা।<ref>{{cite web| url=https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_time_travel_works_of_fiction|title= List of time travel works of fiction}}</ref> ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে লেখা আইরিশ লেখক স্যামুয়েল ম্যাদেনের 'মেমরিজ অব টোয়েণ্টিয়েথ সেঞ্চুরি' তে সময় ভ্রমণের হাল্কা আভাস পাওয়া যায়।<ref>{{cite web| url=https://en.wikipedia.org/wiki/Memoirs_of_the_Twentieth_Century| title= Memoirs of the Twentieth Century}}</ref> ফরাসী লেখক ল্যুই সেবাস্তিয়ান মারসিয়ারের [[L'An 2440, rêve s'il en fut jamais]] উপন্যাসে আমরা পাই প্যারিসের এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সময় ভ্রমণের বৃত্তান্ত। ১৭৭০ সালে লেখা এই উপন্যাসটি তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত মার্কিন লেখক ওয়াশিংটন আরভিংয়ের ' রিপ ভান উইঙ্কল ' ছোটগল্পটিও সময় ভ্রমণের একটি সুন্দর কাল্পনিক আখ্যান।<ref>{{cite web| author= [[Washington Irving]] | url=https://www.ibiblio.org/ebooks/Irving/Winkle/Irving_Winkle.pdf|title= RIP VAN WINKLE| publisher= Elegant Ebooks}}</ref> রুশ সাহিত্যিক আলেকজান্ডার ফরমিচ ভেল্টম্যান ১৮৩৬ এ রচনা করেন 'প্রেদকি কালিমেরোসাঃ আলেকজান্ডার ফিলিপোভিচ ম্যাকেডনস্কি '।<ref>Akutin, Yury (1978) [http://az.lib.ru/w/welxtman_a_f/text_0090.shtml Александр Вельтман и его роман "Странник"] (Alexander Veltman and his novel ''Strannik'', in Russian).</ref> গল্পে গল্পকথক পক্ষীরাজের ঘোড়ায় প্রাচীন গ্রীস ভ্রমণ এবং সম্রাট আলেকজান্ডারের সঙ্গে সমুদ্রযাত্রার অনুষঙ্গে রুশ সাহিত্যে সম্ভবত সর্বপ্রথম সময় ভ্রমণের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন। ১৮৬১ সালে লেখা ফরাসী উদ্ভিদবিদ এবং ভূতত্ত্ববিদ পিয়ের বইটার্ডের 'প্যারিস অ্যাভোঁ লেসোম্ব' রচনাটিতে কাহিনীর মূল চরিত্রের প্রাগৈতিহাসিক প্যারিস নগর ভ্রমণের এক সুন্দর বর্ণনা ফুটে উঠেছে। এ ছাড়াও [[চার্লস ডিকেন্স|চার্লস ডিকেন্সের]] 'আ ক্রিসমাস ক্যারল'<ref>{{cite web| author = Charles Dickens |url=http://https://www.ibiblio.org/ebooks/Dickens/Carol/Dickens_Carol.pdf| title=A Christmas Carol| publisher = Elegant Ebooks}}</ref>,'নিউ মান্থলি ম্যাগাজিন' এ প্রকাশিত স্বনামধন্য মার্কিন লেখক এডওয়ার্ড হেলের 'হ্যান্ডস অফ' এবং আরও অসংখ্য গল্প উপন্যাসে আমরা সময় ভ্রমণের উল্লেখ পাই।
সময় ভ্রমণের আদিমতর কল্পনাপ্রসূত বিবরণগুলো আমরা পাই প্রাচীন মহাকাব্য কিংবা গল্প উপকথায়। যেমন খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে রচিত [[মহাভারত | মহাভারতে]] রাজা কাকুদমির কাহিনীতে রাজা এবং তাঁর কন্যা রেবতীর সময়যাত্রার কাল্পনিক বিবরণ পেয়ে থাকি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ = Krishnaswamy|প্রথমাংশ= N |ইউআরএল=https://krishnamurti.abundanthope.org/index_htm_files/The-Bhagavata-Purana.pdf|শিরোনাম=THE BHAGAVATA PURANA FOR THE FIRST TIME READER}}</ref> খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীর জাপানের লোককথার এক চরিত্র উরাশিমাকো বা উরাশিমা তারোর সময় ভ্রমণের গল্পও যথেষ্ট জনপ্রিয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|লেখক১=Florence Sakade|লেখক২=Yoshio Hayashi|শিরোনাম=Urashima Taro and Other Japanese Children's Favorite Stories|প্রকাশক=Tuttle Shokai Inc, Japan}}</ref> তুলনামূলক আধুনিকতর অনেক গল্প উপন্যাসেরও কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এই সময় যাত্রার ধারণা।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| ইউআরএল=https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_time_travel_works_of_fiction|শিরোনাম= List of time travel works of fiction}}</ref> ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে লেখা আইরিশ লেখক স্যামুয়েল ম্যাদেনের 'মেমরিজ অব টোয়েণ্টিয়েথ সেঞ্চুরি' তে সময় ভ্রমণের হাল্কা আভাস পাওয়া যায়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| ইউআরএল=https://en.wikipedia.org/wiki/Memoirs_of_the_Twentieth_Century| শিরোনাম= Memoirs of the Twentieth Century}}</ref> ফরাসী লেখক ল্যুই সেবাস্তিয়ান মারসিয়ারের [[L'An 2440, rêve s'il en fut jamais]] উপন্যাসে আমরা পাই প্যারিসের এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সময় ভ্রমণের বৃত্তান্ত। ১৭৭০ সালে লেখা এই উপন্যাসটি তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত মার্কিন লেখক ওয়াশিংটন আরভিংয়ের ' রিপ ভান উইঙ্কল ' ছোটগল্পটিও সময় ভ্রমণের একটি সুন্দর কাল্পনিক আখ্যান।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| লেখক= [[Washington Irving]] | ইউআরএল=https://www.ibiblio.org/ebooks/Irving/Winkle/Irving_Winkle.pdf|শিরোনাম= RIP VAN WINKLE| প্রকাশক= Elegant Ebooks}}</ref> রুশ সাহিত্যিক আলেকজান্ডার ফরমিচ ভেল্টম্যান ১৮৩৬ এ রচনা করেন 'প্রেদকি কালিমেরোসাঃ আলেকজান্ডার ফিলিপোভিচ ম্যাকেডনস্কি '।<ref>Akutin, Yury (1978) [http://az.lib.ru/w/welxtman_a_f/text_0090.shtml Александр Вельтман и его роман "Странник"] (Alexander Veltman and his novel ''Strannik'', in Russian).</ref> গল্পে গল্পকথক পক্ষীরাজের ঘোড়ায় প্রাচীন গ্রীস ভ্রমণ এবং সম্রাট আলেকজান্ডারের সঙ্গে সমুদ্রযাত্রার অনুষঙ্গে রুশ সাহিত্যে সম্ভবত সর্বপ্রথম সময় ভ্রমণের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন। ১৮৬১ সালে লেখা ফরাসী উদ্ভিদবিদ এবং ভূতত্ত্ববিদ পিয়ের বইটার্ডের 'প্যারিস অ্যাভোঁ লেসোম্ব' রচনাটিতে কাহিনীর মূল চরিত্রের প্রাগৈতিহাসিক প্যারিস নগর ভ্রমণের এক সুন্দর বর্ণনা ফুটে উঠেছে। এ ছাড়াও [[চার্লস ডিকেন্স|চার্লস ডিকেন্সের]] 'আ ক্রিসমাস ক্যারল'<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| লেখক = Charles Dickens |ইউআরএল=http://https://www.ibiblio.org/ebooks/Dickens/Carol/Dickens_Carol.pdf| শিরোনাম=A Christmas Carol| প্রকাশক = Elegant Ebooks}}</ref>,'নিউ মান্থলি ম্যাগাজিন' এ প্রকাশিত স্বনামধন্য মার্কিন লেখক এডওয়ার্ড হেলের 'হ্যান্ডস অফ' এবং আরও অসংখ্য গল্প উপন্যাসে আমরা সময় ভ্রমণের উল্লেখ পাই।


===== পূর্বতন সময় যন্ত্রের ধারণা =====
===== পূর্বতন সময় যন্ত্রের ধারণা =====


খুব সম্ভবত ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে 'নিউইয়র্ক সানে' প্রকাশিত এডওয়ার্ড মিশেলের 'দ্য ক্লক দ্যাট ওয়েণ্ট ব্যাকওয়ার্ড' গল্পে প্রথম সময় যন্ত্রের ধারণা পাওয়া যায়। এরপর এনরিকে রিমবাও, অ্যান্ড্রুু সইয়াার, [[ হারবার্ট জর্জ ওয়েলস |এইচ জি ওয়েলস]] এবং আরও অনেকের লেখাতে বিভিন্ন যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সময় ভ্রমণের ধারণাগুলি বিভিন্ন সময়ে পাঠকমহলে সমাদৃত হয় এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে।
খুব সম্ভবত ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে 'নিউইয়র্ক সানে' প্রকাশিত এডওয়ার্ড মিশেলের 'দ্য ক্লক দ্যাট ওয়েণ্ট ব্যাকওয়ার্ড' গল্পে প্রথম সময় যন্ত্রের ধারণা পাওয়া যায়। এরপর এনরিকে রিমবাও, অ্যান্ড্রুু সইয়াার, [[হারবার্ট জর্জ ওয়েলস|এইচ জি ওয়েলস]] এবং আরও অনেকের লেখাতে বিভিন্ন যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সময় ভ্রমণের ধারণাগুলি বিভিন্ন সময়ে পাঠকমহলে সমাদৃত হয় এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে।


== পদার্থবিদ্যায় সময় ভ্রমণ ==
== পদার্থবিদ্যায় সময় ভ্রমণ ==
১৫ নং লাইন: ১৪ নং লাইন:
===== আপেক্ষিকতা তত্ত্বে সময় ভ্রমণ =====
===== আপেক্ষিকতা তত্ত্বে সময় ভ্রমণ =====


[[আলবার্ট আইন্সটাইন | অ্যালবার্ট আইন্সটাইনের]] [[বিশেষ আপেক্ষিকতা]] এবং [[সাধারণ আপেক্ষিকতা]] তত্ত্বের সাহায্য নিয়ে প্রমাণ করা যায় যে- সময় ভ্রমণ সম্ভব। যেমন অস্ট্রিয়ার প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ কুর্ট গডেল অঙ্ক কষে দেখিয়েছিলেন, সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে বিশেষ কিছু শর্তে এই ব্রহ্মাণ্ডে 'আবদ্ধ সময়সন্নিভ রেখার' ([[Closed timelike curve]]) অস্তিত্ব থাকা সম্ভব যা সময় ভ্রমণের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে। যদিও 'আবদ্ধ সময়সন্নিভ রেখার' বাস্তবিক অস্তিত্ব নিয়ে কখনোই নিঃসংশয় হওয়া যায় না।
[[আলবার্ট আইন্সটাইন|অ্যালবার্ট আইন্সটাইনের]] [[বিশেষ আপেক্ষিকতা]] এবং [[সাধারণ আপেক্ষিকতা]] তত্ত্বের সাহায্য নিয়ে প্রমাণ করা যায় যে- সময় ভ্রমণ সম্ভব। যেমন অস্ট্রিয়ার প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ কুর্ট গডেল অঙ্ক কষে দেখিয়েছিলেন, সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে বিশেষ কিছু শর্তে এই ব্রহ্মাণ্ডে 'আবদ্ধ সময়সন্নিভ রেখার' ([[Closed timelike curve]]) অস্তিত্ব থাকা সম্ভব যা সময় ভ্রমণের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে। যদিও 'আবদ্ধ সময়সন্নিভ রেখার' বাস্তবিক অস্তিত্ব নিয়ে কখনোই নিঃসংশয় হওয়া যায় না।


'সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব' স্বীকৃত কীটগহ্বর ([[Wormhole]]) এর মাধ্যমেও সময় ভ্রমণ সম্ভব। কীটগহ্বর মূলত একটি তাত্ত্বিক ধারণা হলেও[[স্টিভেন হকিং | স্টিফেন হকিং]], [[কিপ থর্ন]] প্রমুখদের মতে বাস্তবেও সুস্থিত কীটগহ্বরের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি কোন কীটগহ্বরের সন্ধান পাওয়া যায় নি।
'সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব' স্বীকৃত কীটগহ্বর ([[Wormhole]]) এর মাধ্যমেও সময় ভ্রমণ সম্ভব। কীটগহ্বর মূলত একটি তাত্ত্বিক ধারণা হলেও[[স্টিভেন হকিং|স্টিফেন হকিং]], [[কিপ থর্ন]] প্রমুখদের মতে বাস্তবেও সুস্থিত কীটগহ্বরের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি কোন কীটগহ্বরের সন্ধান পাওয়া যায় নি।


১৯৭৪ সালে ফ্রাঙ্ক টিপলার তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণ করেন নিজের অক্ষের চারিদিকে দ্রুত ঘূর্ণায়মান এক অসীম দৈর্ঘ্যের চোঙ আদতে একটি সময় যন্ত্র এবং এর সাহায্যে সময় ভ্রমণ সম্ভব। টিপলারের অনুমান ছিল, যথেষ্ট বেগে ঘূর্ণায়মান সসীম দৈর্ঘ্যের চোঙের সাহায্যও সময় ভ্রমণের ধারণাটি বাস্তবায়িত করা যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে হকিং অবশ্য প্রমাণ করেন- কখনোই কোন সসীম দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা বিশিষ্ট সময় যন্ত্র নির্মাণ করা সম্ভব নয়
১৯৭৪ সালে ফ্রাঙ্ক টিপলার তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণ করেন নিজের অক্ষের চারিদিকে দ্রুত ঘূর্ণায়মান এক অসীম দৈর্ঘ্যের চোঙ আদতে একটি সময় যন্ত্র এবং এর সাহায্যে সময় ভ্রমণ সম্ভব। টিপলারের অনুমান ছিল, যথেষ্ট বেগে ঘূর্ণায়মান সসীম দৈর্ঘ্যের চোঙের সাহায্যও সময় ভ্রমণের ধারণাটি বাস্তবায়িত করা যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে হকিং অবশ্য প্রমাণ করেন- কখনোই কোন সসীম দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা বিশিষ্ট সময় যন্ত্র নির্মাণ করা সম্ভব নয়


[[File:Wormhole travel as envisioned by Les Bossinas for NASA.jpg|thumb| চিত্রশিল্পী লেস বসিনাস কল্পিত কীটগহ্বর ভ্রমণের চিত্র ]]
[[File:Wormhole travel as envisioned by Les Bossinas for NASA.jpg|thumb|চিত্রশিল্পী লেস বসিনাস কল্পিত কীটগহ্বর ভ্রমণের চিত্র]]


পদার্থবিজ্ঞানীদের অনেকেই বিশ্বাস করেন তত্ত্বগত ভাবে সময় ভ্রমণ সম্ভব হলেও তা বাস্তবসম্মত নয় কারণ এতে 'কার্যকারণ সম্পর্ক' ([[Causality (physics)|Causality]]) বিঘ্নিত হয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী সময় ভ্রমণের সম্ভাবনাশূন্যতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বহু কূটাভাসের (paradox) অবতারণা করেছেন। এ প্রসঙ্গে হকিংয়ের 'উন্মাদ বিজ্ঞানীর কূটাভাস'টি (Mad scientist paradox) বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। ধরা যাক এক উন্মত্ত বিজ্ঞানী কোনভাবে তাঁর নিজস্ব অতীতে ফিরে গিয়ে নিজেকে হত্যা করলেন। এক্ষেত্রে যেহেতু সেই বিজ্ঞানীর অতীত প্রতিভূ নিহত হলেন, সেহেতু সেই হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময় থেকে এই ব্রহ্মাণ্ডে আর তাঁর কোন অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে যে, তাহলে সেই বিজ্ঞানীর হত্যাকারী কে? সময় ভ্রমণের সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে নিলে আমাদের এমন আরও বহু কূটাভাসের সম্মুখীন হতে হয়। যদিও রাশিয়ার পদার্থবিদ নভিকভের মতে, পদার্থবিদ্যায় যদি বহু বিশ্বের ([[Many-worlds interpretation]]) অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া হয়, তাহলে সময় ভ্রমণ সংক্রান্ত এই কূটাভাসগুলির উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে।
পদার্থবিজ্ঞানীদের অনেকেই বিশ্বাস করেন তত্ত্বগত ভাবে সময় ভ্রমণ সম্ভব হলেও তা বাস্তবসম্মত নয় কারণ এতে 'কার্যকারণ সম্পর্ক' ([[Causality (physics)|Causality]]) বিঘ্নিত হয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী সময় ভ্রমণের সম্ভাবনাশূন্যতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বহু কূটাভাসের (paradox) অবতারণা করেছেন। এ প্রসঙ্গে হকিংয়ের 'উন্মাদ বিজ্ঞানীর কূটাভাস'টি (Mad scientist paradox) বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। ধরা যাক এক উন্মত্ত বিজ্ঞানী কোনভাবে তাঁর নিজস্ব অতীতে ফিরে গিয়ে নিজেকে হত্যা করলেন। এক্ষেত্রে যেহেতু সেই বিজ্ঞানীর অতীত প্রতিভূ নিহত হলেন, সেহেতু সেই হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময় থেকে এই ব্রহ্মাণ্ডে আর তাঁর কোন অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে যে, তাহলে সেই বিজ্ঞানীর হত্যাকারী কে? সময় ভ্রমণের সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে নিলে আমাদের এমন আরও বহু কূটাভাসের সম্মুখীন হতে হয়। যদিও রাশিয়ার পদার্থবিদ নভিকভের মতে, পদার্থবিদ্যায় যদি বহু বিশ্বের ([[Many-worlds interpretation]]) অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া হয়, তাহলে সময় ভ্রমণ সংক্রান্ত এই কূটাভাসগুলির উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে।


মহাকর্ষের আংশিক কোয়ান্টাম তত্ত্ব ([[Semiclassical gravity]]) থেকে দেখানো যায় যে সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুযায়ী যে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সময় ভ্রমণ সম্ভব, সেই ক্ষেত্রগুলি পদার্থবিদ্যার কোয়ান্টাম তত্ত্ব দ্বারা স্বীকৃত নয়। এ থেকেই হকিং অনুমান করেছিলেন হয়তো প্রাকৃতিক নিয়মবিধিই আমাদের সময় ভ্রমণের আর্জি মঞ্জুর করে না। যদিও আংশিক কোয়ান্টাম তত্ত্বের এই ধারণা যে [[ কোয়ান্টাম মহাকর্ষ | মহাকর্ষের সামগ্রিক কোয়ান্টাম তত্ত্বের ]] ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য- এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। এবং যেহেতু মহাকর্ষের সামগ্রিক কোয়ান্টাম তত্ত্ব আজো আমাদের অজানা, তাই সময় ভ্রমণের সম্ভাবনাহীনতার ব্যাখ্যা বা অনুমান, কোনটিই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত নয়। তাই বহু বিজ্ঞানীই বিশ্বাস করেন, সময় ভ্রমণ বাস্তবে সম্ভব। এ প্রসঙ্গে পদার্থবিদ রোনাল্ড ম্যালের নাম উল্লেখযোগ্য। তিনি বলয় [[লেজার | লেসারের]] সাহায্যে ঘূর্ণায়মান [[কৃষ্ণ বিবর | কৃষ্ণগহ্বরের]] অনুরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে সময় ভ্রমণকে বাস্তবায়িত করার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মহাকর্ষের আংশিক কোয়ান্টাম তত্ত্ব ([[Semiclassical gravity]]) থেকে দেখানো যায় যে সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুযায়ী যে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সময় ভ্রমণ সম্ভব, সেই ক্ষেত্রগুলি পদার্থবিদ্যার কোয়ান্টাম তত্ত্ব দ্বারা স্বীকৃত নয়। এ থেকেই হকিং অনুমান করেছিলেন হয়তো প্রাকৃতিক নিয়মবিধিই আমাদের সময় ভ্রমণের আর্জি মঞ্জুর করে না। যদিও আংশিক কোয়ান্টাম তত্ত্বের এই ধারণা যে [[কোয়ান্টাম মহাকর্ষ|মহাকর্ষের সামগ্রিক কোয়ান্টাম তত্ত্বের]] ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য- এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। এবং যেহেতু মহাকর্ষের সামগ্রিক কোয়ান্টাম তত্ত্ব আজো আমাদের অজানা, তাই সময় ভ্রমণের সম্ভাবনাহীনতার ব্যাখ্যা বা অনুমান, কোনটিই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত নয়। তাই বহু বিজ্ঞানীই বিশ্বাস করেন, সময় ভ্রমণ বাস্তবে সম্ভব। এ প্রসঙ্গে পদার্থবিদ রোনাল্ড ম্যালের নাম উল্লেখযোগ্য। তিনি বলয় [[লেজার|লেসারের]] সাহায্যে ঘূর্ণায়মান [[কৃষ্ণ বিবর|কৃষ্ণগহ্বরের]] অনুরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে সময় ভ্রমণকে বাস্তবায়িত করার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।


===== কোয়ান্টাম তত্ত্বে সময় ভ্রমণ =====
===== কোয়ান্টাম তত্ত্বে সময় ভ্রমণ =====
৩৫ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
===== পরীক্ষালব্ধ ফলাফল =====
===== পরীক্ষালব্ধ ফলাফল =====


বিভিন্ন সময়ে বহু বিজ্ঞানী দাবী করেছেন যে তাঁরা আলোর চেয়ে বেশী গতিবেগে সংকেত প্রেরণের মাধ্যমে সময় ভ্রমণের ধারণাটি বাস্তবায়িত করেছেন। এঁদের মধ্যে লিজুং ওয়াং, গুন্টার নিমস, অ্যালফন্স স্তালহফেন প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এই পরীক্ষাগুলির কোনটিরই ফলাফল এবং ব্যাখ্যা এখনো সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত নয়।
বিভিন্ন সময়ে বহু বিজ্ঞানী দাবী করেছেন যে তাঁরা আলোর চেয়ে বেশী গতিবেগে সংকেত প্রেরণের মাধ্যমে সময় ভ্রমণের ধারণাটি বাস্তবায়িত করেছেন। এঁদের মধ্যে লিজুং ওয়াং, গুন্টার নিমস, অ্যালফন্স স্তালহফেন প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এই পরীক্ষাগুলির কোনটিরই ফলাফল এবং ব্যাখ্যা এখনো সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত নয়।


== ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীরা ==
== ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীরা ==


[[File:Time traveller.jpg|thumb| upright=0.5| চিত্রশিল্পী স্ভেন স্পিগেলবার্গ অঙ্কিত 'The time traveller' ]]
[[File:Time traveller.jpg|thumb|upright=0.5| চিত্রশিল্পী স্ভেন স্পিগেলবার্গ অঙ্কিত 'The time traveller']]
অনেকেই মনে করেন যদি সময় পরিভ্রমণ আদৌ সম্ভব হত, তাহলে পৃথিবীতে নিশ্চয়ই ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের দেখা মিলত। কিন্তু এই মত যুক্তিসঙ্গত নয়। হতে পারে- সময় ভ্রমণ হয়তো সম্ভব, কিন্তু তার প্রযুক্তি নিয়ে ভবিষ্যতের নাগরিকেরা যথেষ্ট আগ্রহী নন। কার্ল সেগান একবার বলেছিলেন,"কে বলতে পারে! হয়তো ভবিষ্যতের সময়ভ্রমণপিয়াসীরা ছদ্মবেশে আমাদের আশেপাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন।" অনেক সময়ই অনেকে দাবি করেছেন যে তাঁরা ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের দাবির সমর্থনে তাঁরা সকলের সামনে কিছু প্রমাণও পেশ করেছেন। এর মধ্যে চার্লি চ্যাপলিনের 'দ্য সার্কাস'চলচ্চিত্রের একটি ছোট্ট অংশ (এটি Chaplin's Time Traveller নামে আন্তর্জাল দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল) এবং ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অন্তর্গত গোল্ডব্রিজে একটি সেতুর পুনরুদ্বোধন অনুষ্ঠানে গৃহীত একটি আলোকচিত্র উল্লেখযোগ্য। সময় ভ্রমণ নিয়ে অসংখ্য কাহিনীও শোনা গেছে বিভিন্ন সময়। প্রচলিত এই সব কাহিনীর মুখ্যচরিত্র, যেমন জন টাইটার, বব হোয়াইট, অ্যান্ড্রুুু কার্লসিন এবং এরকম আরও অনেককে বাস্তব চরিত্র বলে দাবি করেছেন অনেকেই। তবে এসমস্ত প্রমাণ বা গল্প- কোনটিই কখনো সর্বজনীন স্বীকৃতি লাভ করে নি।
অনেকেই মনে করেন যদি সময় পরিভ্রমণ আদৌ সম্ভব হত, তাহলে পৃথিবীতে নিশ্চয়ই ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের দেখা মিলত। কিন্তু এই মত যুক্তিসঙ্গত নয়। হতে পারে- সময় ভ্রমণ হয়তো সম্ভব, কিন্তু তার প্রযুক্তি নিয়ে ভবিষ্যতের নাগরিকেরা যথেষ্ট আগ্রহী নন। কার্ল সেগান একবার বলেছিলেন,"কে বলতে পারে! হয়তো ভবিষ্যতের সময়ভ্রমণপিয়াসীরা ছদ্মবেশে আমাদের আশেপাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন।" অনেক সময়ই অনেকে দাবি করেছেন যে তাঁরা ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের দাবির সমর্থনে তাঁরা সকলের সামনে কিছু প্রমাণও পেশ করেছেন। এর মধ্যে চার্লি চ্যাপলিনের 'দ্য সার্কাস'চলচ্চিত্রের একটি ছোট্ট অংশ (এটি Chaplin's Time Traveller নামে আন্তর্জাল দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল) এবং ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অন্তর্গত গোল্ডব্রিজে একটি সেতুর পুনরুদ্বোধন অনুষ্ঠানে গৃহীত একটি আলোকচিত্র উল্লেখযোগ্য। সময় ভ্রমণ নিয়ে অসংখ্য কাহিনীও শোনা গেছে বিভিন্ন সময়। প্রচলিত এই সব কাহিনীর মুখ্যচরিত্র, যেমন জন টাইটার, বব হোয়াইট, অ্যান্ড্রুুু কার্লসিন এবং এরকম আরও অনেককে বাস্তব চরিত্র বলে দাবি করেছেন অনেকেই। তবে এসমস্ত প্রমাণ বা গল্প- কোনটিই কখনো সর্বজনীন স্বীকৃতি লাভ করে নি।


বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের অভ্যর্থনার জন্য প্রকাশ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এরমধ্যে ১৯৮২ সালে মার্কিন মুলুকের বাল্টিমোরে ক্রোনোনটসের (Krononauts) উদ্যোগ এবং ২০০৫ সালে ম্যাসাচুসেটস ইন্সিটিউট অফ টেকনোলজির উৎসাহে অনুষ্ঠিত 'পার্থ'স ডেসটিনেশন ডে'র কথা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। যদিও এই সমস্ত অনুষ্ঠানে ভবিষ্যতের কোনো সময়ভ্রমণপিয়াসীর সাথে আমাদের দেখা হয় নি। কিংবা কে বলতে পারে, ভবিষ্যতের নাগরিকদের সাথে আমাদের দেখা হয়েছে ওই দিনই,ওই অনুষ্ঠানে - হয়তো অন্য কোন বিশ্বে!!
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের অভ্যর্থনার জন্য প্রকাশ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এরমধ্যে ১৯৮২ সালে মার্কিন মুলুকের বাল্টিমোরে ক্রোনোনটসের (Krononauts) উদ্যোগ এবং ২০০৫ সালে ম্যাসাচুসেটস ইন্সিটিউট অফ টেকনোলজির উৎসাহে অনুষ্ঠিত 'পার্থ'স ডেসটিনেশন ডে'র কথা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। যদিও এই সমস্ত অনুষ্ঠানে ভবিষ্যতের কোনো সময়ভ্রমণপিয়াসীর সাথে আমাদের দেখা হয় নি। কিংবা কে বলতে পারে, ভবিষ্যতের নাগরিকদের সাথে আমাদের দেখা হয়েছে ওই দিনই,ওই অনুষ্ঠানে - হয়তো অন্য কোন বিশ্বে!!


== তথ্যসূত্র ==
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist|30em}}
{{সূত্র তালিকা|30em}}











[[বিষয়শ্রেণী:সময়]]
[[বিষয়শ্রেণী:সময়]]

২১:৫৪, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

সময় ভ্রমণ আক্ষরিক অর্থে 'সময় অক্ষ' বরাবর সঞ্চারণ। ন্যূনতম চতুর্মাত্রিক (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা এবং সময়) এই ব্রহ্মাণ্ডে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা বরাবর স্থান পরিবর্তনের অনুরূপ এক ধারণা হল এই সময় অক্ষ বরাবর সঞ্চরণ বা কালমাত্রিক সরণ (temporal displacement)। সময় ভ্রমণের ভাবনা বহুকাল থেকেই পৃথিবীর সাহিত্য, দর্শন এবং বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে চলেছে। ভাবনার প্রথম পর্যায়ে সময় ভ্রমণের ধারণাটি ছিল অনেকাংশে বিজ্ঞানবিবর্জিত এবং কল্পনাময়। পরবর্তী সময়ে কুড়ি শতকের প্রথমার্ধে আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের আবিষ্কার এ সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ক্রমশ যুক্তিনির্ভর করে তুলেছে।

মার্কিন মুলুকের আরভিংটনে নির্মিত রিপ ভান উইঙ্কলের পূর্ণাবয়ব মূর্তি

সময় ভ্রমণের ধারণার ইতিবৃত্ত

সময় ভ্রমণের আদিমতর কল্পনাপ্রসূত বিবরণগুলো আমরা পাই প্রাচীন মহাকাব্য কিংবা গল্প উপকথায়। যেমন খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে রচিত মহাভারতে রাজা কাকুদমির কাহিনীতে রাজা এবং তাঁর কন্যা রেবতীর সময়যাত্রার কাল্পনিক বিবরণ পেয়ে থাকি।[১] খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীর জাপানের লোককথার এক চরিত্র উরাশিমাকো বা উরাশিমা তারোর সময় ভ্রমণের গল্পও যথেষ্ট জনপ্রিয়।[২] তুলনামূলক আধুনিকতর অনেক গল্প উপন্যাসেরও কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এই সময় যাত্রার ধারণা।[৩] ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে লেখা আইরিশ লেখক স্যামুয়েল ম্যাদেনের 'মেমরিজ অব টোয়েণ্টিয়েথ সেঞ্চুরি' তে সময় ভ্রমণের হাল্কা আভাস পাওয়া যায়।[৪] ফরাসী লেখক ল্যুই সেবাস্তিয়ান মারসিয়ারের L'An 2440, rêve s'il en fut jamais উপন্যাসে আমরা পাই প্যারিসের এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সময় ভ্রমণের বৃত্তান্ত। ১৭৭০ সালে লেখা এই উপন্যাসটি তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত মার্কিন লেখক ওয়াশিংটন আরভিংয়ের ' রিপ ভান উইঙ্কল ' ছোটগল্পটিও সময় ভ্রমণের একটি সুন্দর কাল্পনিক আখ্যান।[৫] রুশ সাহিত্যিক আলেকজান্ডার ফরমিচ ভেল্টম্যান ১৮৩৬ এ রচনা করেন 'প্রেদকি কালিমেরোসাঃ আলেকজান্ডার ফিলিপোভিচ ম্যাকেডনস্কি '।[৬] গল্পে গল্পকথক পক্ষীরাজের ঘোড়ায় প্রাচীন গ্রীস ভ্রমণ এবং সম্রাট আলেকজান্ডারের সঙ্গে সমুদ্রযাত্রার অনুষঙ্গে রুশ সাহিত্যে সম্ভবত সর্বপ্রথম সময় ভ্রমণের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন। ১৮৬১ সালে লেখা ফরাসী উদ্ভিদবিদ এবং ভূতত্ত্ববিদ পিয়ের বইটার্ডের 'প্যারিস অ্যাভোঁ লেসোম্ব' রচনাটিতে কাহিনীর মূল চরিত্রের প্রাগৈতিহাসিক প্যারিস নগর ভ্রমণের এক সুন্দর বর্ণনা ফুটে উঠেছে। এ ছাড়াও চার্লস ডিকেন্সের 'আ ক্রিসমাস ক্যারল'[৭],'নিউ মান্থলি ম্যাগাজিন' এ প্রকাশিত স্বনামধন্য মার্কিন লেখক এডওয়ার্ড হেলের 'হ্যান্ডস অফ' এবং আরও অসংখ্য গল্প উপন্যাসে আমরা সময় ভ্রমণের উল্লেখ পাই।

পূর্বতন সময় যন্ত্রের ধারণা

খুব সম্ভবত ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে 'নিউইয়র্ক সানে' প্রকাশিত এডওয়ার্ড মিশেলের 'দ্য ক্লক দ্যাট ওয়েণ্ট ব্যাকওয়ার্ড' গল্পে প্রথম সময় যন্ত্রের ধারণা পাওয়া যায়। এরপর এনরিকে রিমবাও, অ্যান্ড্রুু সইয়াার, এইচ জি ওয়েলস এবং আরও অনেকের লেখাতে বিভিন্ন যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সময় ভ্রমণের ধারণাগুলি বিভিন্ন সময়ে পাঠকমহলে সমাদৃত হয় এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে।

পদার্থবিদ্যায় সময় ভ্রমণ

আপেক্ষিকতা তত্ত্বে সময় ভ্রমণ

অ্যালবার্ট আইন্সটাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের সাহায্য নিয়ে প্রমাণ করা যায় যে- সময় ভ্রমণ সম্ভব। যেমন অস্ট্রিয়ার প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ কুর্ট গডেল অঙ্ক কষে দেখিয়েছিলেন, সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে বিশেষ কিছু শর্তে এই ব্রহ্মাণ্ডে 'আবদ্ধ সময়সন্নিভ রেখার' (Closed timelike curve) অস্তিত্ব থাকা সম্ভব যা সময় ভ্রমণের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে। যদিও 'আবদ্ধ সময়সন্নিভ রেখার' বাস্তবিক অস্তিত্ব নিয়ে কখনোই নিঃসংশয় হওয়া যায় না।

'সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব' স্বীকৃত কীটগহ্বর (Wormhole) এর মাধ্যমেও সময় ভ্রমণ সম্ভব। কীটগহ্বর মূলত একটি তাত্ত্বিক ধারণা হলেওস্টিফেন হকিং, কিপ থর্ন প্রমুখদের মতে বাস্তবেও সুস্থিত কীটগহ্বরের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি কোন কীটগহ্বরের সন্ধান পাওয়া যায় নি।

১৯৭৪ সালে ফ্রাঙ্ক টিপলার তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণ করেন নিজের অক্ষের চারিদিকে দ্রুত ঘূর্ণায়মান এক অসীম দৈর্ঘ্যের চোঙ আদতে একটি সময় যন্ত্র এবং এর সাহায্যে সময় ভ্রমণ সম্ভব। টিপলারের অনুমান ছিল, যথেষ্ট বেগে ঘূর্ণায়মান সসীম দৈর্ঘ্যের চোঙের সাহায্যও সময় ভ্রমণের ধারণাটি বাস্তবায়িত করা যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে হকিং অবশ্য প্রমাণ করেন- কখনোই কোন সসীম দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা বিশিষ্ট সময় যন্ত্র নির্মাণ করা সম্ভব নয়

চিত্রশিল্পী লেস বসিনাস কল্পিত কীটগহ্বর ভ্রমণের চিত্র

পদার্থবিজ্ঞানীদের অনেকেই বিশ্বাস করেন তত্ত্বগত ভাবে সময় ভ্রমণ সম্ভব হলেও তা বাস্তবসম্মত নয় কারণ এতে 'কার্যকারণ সম্পর্ক' (Causality) বিঘ্নিত হয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী সময় ভ্রমণের সম্ভাবনাশূন্যতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বহু কূটাভাসের (paradox) অবতারণা করেছেন। এ প্রসঙ্গে হকিংয়ের 'উন্মাদ বিজ্ঞানীর কূটাভাস'টি (Mad scientist paradox) বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। ধরা যাক এক উন্মত্ত বিজ্ঞানী কোনভাবে তাঁর নিজস্ব অতীতে ফিরে গিয়ে নিজেকে হত্যা করলেন। এক্ষেত্রে যেহেতু সেই বিজ্ঞানীর অতীত প্রতিভূ নিহত হলেন, সেহেতু সেই হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময় থেকে এই ব্রহ্মাণ্ডে আর তাঁর কোন অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে যে, তাহলে সেই বিজ্ঞানীর হত্যাকারী কে? সময় ভ্রমণের সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে নিলে আমাদের এমন আরও বহু কূটাভাসের সম্মুখীন হতে হয়। যদিও রাশিয়ার পদার্থবিদ নভিকভের মতে, পদার্থবিদ্যায় যদি বহু বিশ্বের (Many-worlds interpretation) অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া হয়, তাহলে সময় ভ্রমণ সংক্রান্ত এই কূটাভাসগুলির উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে।

মহাকর্ষের আংশিক কোয়ান্টাম তত্ত্ব (Semiclassical gravity) থেকে দেখানো যায় যে সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুযায়ী যে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সময় ভ্রমণ সম্ভব, সেই ক্ষেত্রগুলি পদার্থবিদ্যার কোয়ান্টাম তত্ত্ব দ্বারা স্বীকৃত নয়। এ থেকেই হকিং অনুমান করেছিলেন হয়তো প্রাকৃতিক নিয়মবিধিই আমাদের সময় ভ্রমণের আর্জি মঞ্জুর করে না। যদিও আংশিক কোয়ান্টাম তত্ত্বের এই ধারণা যে মহাকর্ষের সামগ্রিক কোয়ান্টাম তত্ত্বের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য- এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। এবং যেহেতু মহাকর্ষের সামগ্রিক কোয়ান্টাম তত্ত্ব আজো আমাদের অজানা, তাই সময় ভ্রমণের সম্ভাবনাহীনতার ব্যাখ্যা বা অনুমান, কোনটিই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত নয়। তাই বহু বিজ্ঞানীই বিশ্বাস করেন, সময় ভ্রমণ বাস্তবে সম্ভব। এ প্রসঙ্গে পদার্থবিদ রোনাল্ড ম্যালের নাম উল্লেখযোগ্য। তিনি বলয় লেসারের সাহায্যে ঘূর্ণায়মান কৃষ্ণগহ্বরের অনুরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে সময় ভ্রমণকে বাস্তবায়িত করার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কোয়ান্টাম তত্ত্বে সময় ভ্রমণ

পদার্থবিদ্যার সনাতন তত্ত্ব অনুযায়ী যে কোনো সংকেত সর্বাধিক আলোর বেগে বিস্তারলাভ করতে সক্ষম। কিন্তু কোয়ান্টাম তত্ত্বে সংকেত বিস্তারের গতিবেগ আলোর গতিবেগের চেয়েও বেশী হতে পারে। কোনো সংকেত আলোর সমান বা তার চেয়ে কম গতিবেগে বিস্তার লাভ করলে সমস্ত পর্যবেক্ষক এ বিষয়ে সহমত হবেন যে, সংকেত প্রেরণের ঘটনাটি সংকেতপ্রাপ্তির আগে ঘটেছে। কিন্তু সংকেত আলোর চেয়ে অধিকতর বেগে বিস্তার লাভ করলে সমস্ত পর্যবেক্ষক এর ঠিক বিপরীত ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করবেন। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে সংকেতপ্রাপ্তির ঘটনাটি সংকেত প্রেরণের আগে ঘটবে। পক্ষান্তরে বলা যেতে পারে যে প্রেরিত সংকেত সময়ের বিপরীত অভিমুখে সঞ্চারিত হয়েছে। এটি কোয়ান্টাম তত্ত্বে 'ট্যাকিওনের বিপ্রতীপ দূরভাষ' (Tachyonic antitelephone) নামে জনপ্রিয়।

কোয়ান্টাম তত্ত্বের বহু বিশ্বের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা অনুসারে কোনরকম সমস্যা ছাড়াই সময় পরিভ্রমণ সম্ভব। তবে এই তত্ত্ব অনুযায়ী একজন সময় ভ্রমণকারী সময় অক্ষ বরাবর সঞ্চারণের সময় কেবলমাত্র নিজস্ব বিশ্বের অনুরূপ সেই সমস্ত বিশ্বেই উপনীত হতে সক্ষম যাতে এই প্রক্রিয়ায় কার্যকারণ সম্পর্কটি বিঘ্নিত না হয়। এই ধারণাটি কল্পবিজ্ঞানে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করে।

পরীক্ষালব্ধ ফলাফল

বিভিন্ন সময়ে বহু বিজ্ঞানী দাবী করেছেন যে তাঁরা আলোর চেয়ে বেশী গতিবেগে সংকেত প্রেরণের মাধ্যমে সময় ভ্রমণের ধারণাটি বাস্তবায়িত করেছেন। এঁদের মধ্যে লিজুং ওয়াং, গুন্টার নিমস, অ্যালফন্স স্তালহফেন প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এই পরীক্ষাগুলির কোনটিরই ফলাফল এবং ব্যাখ্যা এখনো সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত নয়।

ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীরা

চিত্রশিল্পী স্ভেন স্পিগেলবার্গ অঙ্কিত 'The time traveller'

অনেকেই মনে করেন যদি সময় পরিভ্রমণ আদৌ সম্ভব হত, তাহলে পৃথিবীতে নিশ্চয়ই ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের দেখা মিলত। কিন্তু এই মত যুক্তিসঙ্গত নয়। হতে পারে- সময় ভ্রমণ হয়তো সম্ভব, কিন্তু তার প্রযুক্তি নিয়ে ভবিষ্যতের নাগরিকেরা যথেষ্ট আগ্রহী নন। কার্ল সেগান একবার বলেছিলেন,"কে বলতে পারে! হয়তো ভবিষ্যতের সময়ভ্রমণপিয়াসীরা ছদ্মবেশে আমাদের আশেপাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন।" অনেক সময়ই অনেকে দাবি করেছেন যে তাঁরা ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের দাবির সমর্থনে তাঁরা সকলের সামনে কিছু প্রমাণও পেশ করেছেন। এর মধ্যে চার্লি চ্যাপলিনের 'দ্য সার্কাস'চলচ্চিত্রের একটি ছোট্ট অংশ (এটি Chaplin's Time Traveller নামে আন্তর্জাল দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল) এবং ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অন্তর্গত গোল্ডব্রিজে একটি সেতুর পুনরুদ্বোধন অনুষ্ঠানে গৃহীত একটি আলোকচিত্র উল্লেখযোগ্য। সময় ভ্রমণ নিয়ে অসংখ্য কাহিনীও শোনা গেছে বিভিন্ন সময়। প্রচলিত এই সব কাহিনীর মুখ্যচরিত্র, যেমন জন টাইটার, বব হোয়াইট, অ্যান্ড্রুুু কার্লসিন এবং এরকম আরও অনেককে বাস্তব চরিত্র বলে দাবি করেছেন অনেকেই। তবে এসমস্ত প্রমাণ বা গল্প- কোনটিই কখনো সর্বজনীন স্বীকৃতি লাভ করে নি।

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা ভবিষ্যতের সময়সঞ্চারীদের অভ্যর্থনার জন্য প্রকাশ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এরমধ্যে ১৯৮২ সালে মার্কিন মুলুকের বাল্টিমোরে ক্রোনোনটসের (Krononauts) উদ্যোগ এবং ২০০৫ সালে ম্যাসাচুসেটস ইন্সিটিউট অফ টেকনোলজির উৎসাহে অনুষ্ঠিত 'পার্থ'স ডেসটিনেশন ডে'র কথা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। যদিও এই সমস্ত অনুষ্ঠানে ভবিষ্যতের কোনো সময়ভ্রমণপিয়াসীর সাথে আমাদের দেখা হয় নি। কিংবা কে বলতে পারে, ভবিষ্যতের নাগরিকদের সাথে আমাদের দেখা হয়েছে ওই দিনই,ওই অনুষ্ঠানে - হয়তো অন্য কোন বিশ্বে!!

তথ্যসূত্র

  1. Krishnaswamy, N। "THE BHAGAVATA PURANA FOR THE FIRST TIME READER" (পিডিএফ) 
  2. Florence Sakade; Yoshio Hayashi। Urashima Taro and Other Japanese Children's Favorite Stories। Tuttle Shokai Inc, Japan। 
  3. "List of time travel works of fiction" 
  4. "Memoirs of the Twentieth Century" 
  5. Washington Irving"RIP VAN WINKLE" (পিডিএফ)। Elegant Ebooks। 
  6. Akutin, Yury (1978) Александр Вельтман и его роман "Странник" (Alexander Veltman and his novel Strannik, in Russian).
  7. Charles Dickens। "A Christmas Carol" (পিডিএফ)। Elegant Ebooks।