ইরানি বিপ্লব: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Khondokar Enamul Haque (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
পরিষ্কারকরণ
৭৩ নং লাইন: ৭৩ নং লাইন:
শাহ নিজেও ছিলেন পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত। তার স্ত্রী, সন্তানরাও [[পশ্চিমা]] ধাঁচে চলতেন। শাহ এবং তার স্ত্রী সকল রাজকীয় অনুষ্ঠান এবং দেশী বিদেশী সরকারী অনুষ্ঠানসমূহে পশ্চিমাদের পোশাক পড়তেন। এসব কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ দিনকে দিন ফুঁসে উঠতে থাকেন। [[রুহুল্লাহ্‌ খামেনেই|আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেইনী]] ছিলেন একজন অপরিচিত ধর্মীয় ইমাম। মুসলমানদের এই মনের কষ্ট তিনি বুঝতে পেরে ইরাকের পবিত্র [[নাজাফ]] শহরে একটি জনসভা আহ্বান করেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ হয় সেখানে। শাহের সরকার প্রথমে এই বিশাল সমাবেশকে মোটেই গুরুত্ব দিলেন না। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকলো দ্রুত। শিয়া-সুন্নি নির্বিশেষে বিক্ষুদ্ধ মুসলমানেরা নেমে এলো তেহরানের রাস্তায়। সংখ্যায় ছিলো তারা অগণিত। সেদিন ছিলো শুক্রবার। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ লোক তেহরানে জমায়েত হয়। তারিখটি ছিলো ১৯৭৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। শাহের বাহিনী বিশাল জনসমাবেশের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে।
শাহ নিজেও ছিলেন পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত। তার স্ত্রী, সন্তানরাও [[পশ্চিমা]] ধাঁচে চলতেন। শাহ এবং তার স্ত্রী সকল রাজকীয় অনুষ্ঠান এবং দেশী বিদেশী সরকারী অনুষ্ঠানসমূহে পশ্চিমাদের পোশাক পড়তেন। এসব কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ দিনকে দিন ফুঁসে উঠতে থাকেন। [[রুহুল্লাহ্‌ খামেনেই|আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেইনী]] ছিলেন একজন অপরিচিত ধর্মীয় ইমাম। মুসলমানদের এই মনের কষ্ট তিনি বুঝতে পেরে ইরাকের পবিত্র [[নাজাফ]] শহরে একটি জনসভা আহ্বান করেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ হয় সেখানে। শাহের সরকার প্রথমে এই বিশাল সমাবেশকে মোটেই গুরুত্ব দিলেন না। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকলো দ্রুত। শিয়া-সুন্নি নির্বিশেষে বিক্ষুদ্ধ মুসলমানেরা নেমে এলো তেহরানের রাস্তায়। সংখ্যায় ছিলো তারা অগণিত। সেদিন ছিলো শুক্রবার। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ লোক তেহরানে জমায়েত হয়। তারিখটি ছিলো ১৯৭৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। শাহের বাহিনী বিশাল জনসমাবেশের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে।


আপাতত লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় কিন্তু দিবসটিকে ইরানের ইতিহাসে কুখ্যাত ''' [[ব্লাক ফ্রাইডে]] ''' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ব্লাক ফ্রাইডের পর তেহরানে মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত সিআইএ এজেন্ট [[ওয়াশিংটন ডিসি]]তে সিআইএ হেড কোয়াটারে রিপোর্ট করেন যে- ৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর শাহের শাসন ক্ষমতা এতটাই সূদৃঢ় হয়েছে যে- আগামি ১০ বছরে বিরোধীপক্ষ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। অথচ এর মাত্র ৩ মাসের কিছু সময় পর অর্থ্যাৎ ১৬ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে মাত্র একদিনের গণঅভ্যূত্থানে শাহের পতন হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে শাহ দেশ থেকে পালিয়ে যান। তার দীর্ঘদিনের মিত্র [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র]] এবং [[ব্রিটেন]] তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। তিনি প্রথমে ইটালি যান। কিন্তু [[ইতালি]] তাকে অসম্মান জনকভাবে বিদেয় করে দেয়। এরপর তার বিমান উড়াল দিলো পানামায়। সেখানকার সরকারও গ্রহণ করলো না। অনেক দেন দরবার এবং অণুনয় বিনয় করার পর [[মিশর]] তাকে সাময়িকভাবে সেই দেশে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলো একটি কারণে, প্রেসিডেন্ট [[আনোয়ার সাদাত]]কে বোঝানো হলো যে- শাহের প্রথম স্ত্রী [[ফৌজিয়া]] ছিলেন মিশরের প্রয়াত এবং ক্ষমতাচ্যুত বাদশা ফারুকের বোন। এই রাজপরিবারের প্রতি তখনো মিশরের জনগণের বেশ সহানুভুতি অবশিষ্ট ছিলো। কাজেই মিশরের রাজকণ্যার স্বামী ভিক্ষুকের মতো দেশে দেশে ঘুরে বেড়াবে সেটা মিশরবাসীর জন্য হয়তো অস্বস্তিকর হয়েছিল।
আপাতত লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় কিন্তু দিবসটিকে ইরানের ইতিহাসে কুখ্যাত [[ব্লাক ফ্রাইডে]] হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ব্লাক ফ্রাইডের পর তেহরানে মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত সিআইএ এজেন্ট [[ওয়াশিংটন ডিসি]]তে সিআইএ হেড কোয়াটারে রিপোর্ট করেন যে- ৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর শাহের শাসন ক্ষমতা এতটাই সূদৃঢ় হয়েছে যে- আগামি ১০ বছরে বিরোধীপক্ষ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। অথচ এর মাত্র ৩ মাসের কিছু সময় পর অর্থ্যাৎ ১৬ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে মাত্র একদিনের গণঅভ্যূত্থানে শাহের পতন হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে শাহ দেশ থেকে পালিয়ে যান। তার দীর্ঘদিনের মিত্র [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র]] এবং [[ব্রিটেন]] তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। তিনি প্রথমে ইটালি যান। কিন্তু [[ইতালি]] তাকে অসম্মান জনকভাবে বিদেয় করে দেয়। এরপর তার বিমান উড়াল দিলো পানামায়। সেখানকার সরকারও গ্রহণ করলো না। অনেক দেন দরবার এবং অণুনয় বিনয় করার পর [[মিশর]] তাকে সাময়িকভাবে সেই দেশে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলো একটি কারণে, প্রেসিডেন্ট [[আনোয়ার সাদাত]]কে বোঝানো হলো যে- শাহের প্রথম স্ত্রী [[ফৌজিয়া]] ছিলেন মিশরের প্রয়াত এবং ক্ষমতাচ্যুত বাদশা ফারুকের বোন। এই রাজপরিবারের প্রতি তখনো মিশরের জনগণের বেশ সহানুভুতি অবশিষ্ট ছিলো। কাজেই মিশরের রাজকণ্যার স্বামী ভিক্ষুকের মতো দেশে দেশে ঘুরে বেড়াবে সেটা মিশরবাসীর জন্য হয়তো অস্বস্তিকর হয়েছিল।


শাহ ফিরে এলেন কায়রোতে। ইতিমধ্যে তার শরীরে ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে। ফলে কায়রোর একটি হোটেলে তিনি মারা যান ১৯৮০ সালের ২৭ জুলাই- যখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৬০ বছর।
শাহ ফিরে এলেন কায়রোতে। ইতিমধ্যে তার শরীরে ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে। ফলে কায়রোর একটি হোটেলে তিনি মারা যান ১৯৮০ সালের ২৭ জুলাই- যখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৬০ বছর।

০৫:১৭, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ইসলামিক বিপ্লব
(ইরানী বিপ্লব,
১৯৭৯-র বিপ্লব)
انقلاب اسلامی
প্রতিবাদকারী জনতা তেহরান, ১৯৭৯
তারিখজানুয়ারি ১৯৭৮ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯
অবস্থান
কারণ
লক্ষ্যসমূহOverthrow of the Pahlavi dynasty
প্রক্রিয়াসমূহ
ফলাফল
নাগরিক সংঘাতের দলসমূহ
নেতৃত্ব দানকারীগণ
ক্ষয়ক্ষতি
3,164-60,000 killed in demonstrations[১][২]

ইরানী বিপ্লব(যা ইসলামি বিপ্লব বা ১৯৭৯ সালের বিপ্লব নামেও পরিচিত)[৩][৪][৫][৬][৭][৮] হচ্ছে ১৯৭৯ সালে ঘটা একটি যুগান্তকারী বিপ্লব যেটা ইরানকে পাশ্চাত্যপন্থি দেশ থেকে ইসলামি প্রজাতন্ত্রে পরিণত করে। এ বিপ্লবকে বলা হয় ফরাসি এবং বলশেভিক বিপ্লবের পর ইতিহাসের তৃতীয় মহান বিপ্লব।

প্রাথমিক অবস্থা

ইরানের শেষ সম্রাট মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভী। দুনিয়ার সবচেয়ে পুরোনো, ঐতিহ্যবাহী আর প্রভাবশালী শাহী রক্তের ধারক ছিলেন তিনি। তার বংশ গত আড়াই হাজার বছর ধরে সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলো। শুরুটা করেছিলেন তারই পূর্বপুরুষ মহান কুরুশ আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে। সেই বংশের শেষ সম্রাট ১৯৭৯ সালের ১৬ জানুয়ারি বিপ্লবী দেশবাসীর কাছে পরাজিত হয়ে মিশর পলায়ন করে। কিছু দশক আগে রেজা শাহ পাহলভী ছিলেন নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান। সর্বময় ক্ষমতা ছিলো পার্লামেন্টের হাতে এবং নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সেই ক্ষমতা ভোগ করতেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরই ইরানে ব্যাপক আকারে তেল ক্ষেত্র আবিস্কৃত হয় যার মালিক ছিলো ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো। ঠিক এই সময়টিতে মোসাদ্দেক নামক জনপ্রিয় এক রাজনৈতিক নেতা দেশের সব তেল সম্পদ জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। ব্রিটেনে তখন উইনস্টন চার্চিল ক্ষমতায় আর যুক্তরাষ্ট্রে হেনরি ট্রুম্যান। মোসাদ্দেকের জয়লাভের ফলে দুই ক্ষমতাশালীর মাথায় বাজ পড়লো। শুরু হলো মুসাদ্দেককে ক্ষমতাচ্যুত করার নীল নকশা। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ‘সিআইএ’ এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা ‘এসআইএস’- লন্ডনে বসে যৌথ পরিকল্পনা করলো। প্রেসিডেন্ট থিউডর রুজভেল্টের নাতি কার্মিট রুজভেল্ট তখন সিআইএ প্রধান। তিনি উড়ে এলেন লন্ডনে। প্রণীত হলো অপারেশন ‘এ্যাজাক্স’ এর নীল নকশা। পরিকল্পনা মতে ইরানী সেনাবাহিনীতে ঘটানো হলো অভ্যুত্থান।

প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ মুসাদ্দেক পদচ্যুত হলেন। তার স্থানে আজ্ঞাবহ জেনারেল ফজলুল্লাহ জাহেদীকে নিয়োগ দেয়া হলো। কিন্তু মূল ক্ষমতা রাখা হলো ইঙ্গো মার্কিন সাম্রাজ্যের অণুগত শাহ মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভীর নিকট। এই ঘটনার একদিনের মাথায় সেনাবাহিনীতে একটি কাউন্টার অভ্যুত্থান হলো। অভ্যুত্থানকারীরা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর প্রধানমন্ত্রী মোসাদ্দেককে উদ্ধার করলেন। অন্যদিকে শাহ পালিয়ে গেল বাগদাদে এবং তারপর ইতালিতে। কিন্তু এর দুই দিন পর আরো একটি রক্তাক্ত পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটানো হয় সেনাবাহিনীতে। ফলে মার্কিন-বৃটেনের নীল নকশা অপারেশন এ্যাজাক্স সফল হয় শতভাগ।

পরবর্তী

শাহ ইরানে ফিরে আসে চটজলদি। এসব ঘটনা ঘটেছিল ১৯৫৩ সালে। পতনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের ১৬ ই জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের নিরষ্কুশ সর্বময় ক্ষমতা ছিলো শাহের হাতে। তার ইঙ্গো-মার্কিন মদদ দাতারা অনবরত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিলেন তাকে। ফলে তার পুলিশ ও সেনাবাহিনী প্রতিদিন রাজপথে শত শত মানুষকে গুলি করে মারছিলো। অথচ ১৯৫৩ সালের পর থেকে ইরানে যে অকল্পনীয় উন্নতি হয়েছিলো তাতে জনগণের খুশি বা সন্তুষ্ট থাকার কথা ছিলো এবং তারা তা ছিলোনা। শাহের কতিপয় ব্যক্তিগত আচরণ, অভ্যাস আর পশ্চিমা সংস্কৃতির অবাধ প্রচলন দেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধীরে ধীরে বিক্ষুদ্ধ করে তোলে। এই বিক্ষোভই অগ্নিগর্ভে রূপ নেয় ১৯৭৭ সালের শেষ দিকে। তেহরান শহরে কোন পাবলিক বাসে কোন ধর্মীয় লেবাযধারী মানুষ উঠলেই কনট্রাকটর টিটকারী করে বলতো- আমরা আলেম আর বেশ্যাদের বাসে চড়াই না।

শাহ নিজেও ছিলেন পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত। তার স্ত্রী, সন্তানরাও পশ্চিমা ধাঁচে চলতেন। শাহ এবং তার স্ত্রী সকল রাজকীয় অনুষ্ঠান এবং দেশী বিদেশী সরকারী অনুষ্ঠানসমূহে পশ্চিমাদের পোশাক পড়তেন। এসব কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ দিনকে দিন ফুঁসে উঠতে থাকেন। আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেইনী ছিলেন একজন অপরিচিত ধর্মীয় ইমাম। মুসলমানদের এই মনের কষ্ট তিনি বুঝতে পেরে ইরাকের পবিত্র নাজাফ শহরে একটি জনসভা আহ্বান করেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ হয় সেখানে। শাহের সরকার প্রথমে এই বিশাল সমাবেশকে মোটেই গুরুত্ব দিলেন না। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকলো দ্রুত। শিয়া-সুন্নি নির্বিশেষে বিক্ষুদ্ধ মুসলমানেরা নেমে এলো তেহরানের রাস্তায়। সংখ্যায় ছিলো তারা অগণিত। সেদিন ছিলো শুক্রবার। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ লোক তেহরানে জমায়েত হয়। তারিখটি ছিলো ১৯৭৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। শাহের বাহিনী বিশাল জনসমাবেশের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে।

আপাতত লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় কিন্তু দিবসটিকে ইরানের ইতিহাসে কুখ্যাত ব্লাক ফ্রাইডে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ব্লাক ফ্রাইডের পর তেহরানে মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত সিআইএ এজেন্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে সিআইএ হেড কোয়াটারে রিপোর্ট করেন যে- ৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর শাহের শাসন ক্ষমতা এতটাই সূদৃঢ় হয়েছে যে- আগামি ১০ বছরে বিরোধীপক্ষ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। অথচ এর মাত্র ৩ মাসের কিছু সময় পর অর্থ্যাৎ ১৬ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে মাত্র একদিনের গণঅভ্যূত্থানে শাহের পতন হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে শাহ দেশ থেকে পালিয়ে যান। তার দীর্ঘদিনের মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। তিনি প্রথমে ইটালি যান। কিন্তু ইতালি তাকে অসম্মান জনকভাবে বিদেয় করে দেয়। এরপর তার বিমান উড়াল দিলো পানামায়। সেখানকার সরকারও গ্রহণ করলো না। অনেক দেন দরবার এবং অণুনয় বিনয় করার পর মিশর তাকে সাময়িকভাবে সেই দেশে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলো একটি কারণে, প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে বোঝানো হলো যে- শাহের প্রথম স্ত্রী ফৌজিয়া ছিলেন মিশরের প্রয়াত এবং ক্ষমতাচ্যুত বাদশা ফারুকের বোন। এই রাজপরিবারের প্রতি তখনো মিশরের জনগণের বেশ সহানুভুতি অবশিষ্ট ছিলো। কাজেই মিশরের রাজকণ্যার স্বামী ভিক্ষুকের মতো দেশে দেশে ঘুরে বেড়াবে সেটা মিশরবাসীর জন্য হয়তো অস্বস্তিকর হয়েছিল।

শাহ ফিরে এলেন কায়রোতে। ইতিমধ্যে তার শরীরে ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে। ফলে কায়রোর একটি হোটেলে তিনি মারা যান ১৯৮০ সালের ২৭ জুলাই- যখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৬০ বছর।

ফলাফল

ইমাম খোমেইনীর (রহ.) নেতৃত্বে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এ বিপ্লবের পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে ইসলামী বিপ্লবের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন মুসলিম দেশে যুবকরা ইসলামী বিপ্লবের চেতনায় উজ্জ্বীবিত হতে থাকে।

চিত্রমালা

পদটীকা

  1. A Question of Numbers Web: IranianVoice.org August 08, 2003 Rouzegar-Now Cyrus Kadivar
  2. E. Baqi, `Figures for the Dead in the Revolution`, Emruz, July 30, 2003
  3. Islamic Revolution, Iran Chamber.
  4. Islamic Revolution of Iran, MS Encarta. Archived October 31, 2009.
  5. The Independence and Liberty Revolution, Internews.
  6. "iranian.com: Revolution" 
  7. Iran Profile, PDF.
  8. The Shah and the Ayatollah: Iranian Mythology and Islamic Revolution (Hardcover), আইএসবিএন ০-২৭৫-৯৭৮৫৮-৩, by Fereydoun Hoveyda, brother of Amir Abbas Hoveyda.