স্পার্টা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

স্থানাঙ্ক: ৩৭°৪′৫৫″ উত্তর ২২°২৫′২৫″ পূর্ব / ৩৭.০৮১৯৪° উত্তর ২২.৪২৩৬১° পূর্ব / 37.08194; 22.42361
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Ashiq Shawon (আলোচনা | অবদান)
119.30.39.156-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে AftabBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
৩৭ নং লাইন: ৩৭ নং লাইন:


== ইতিহাস ==
== ইতিহাস ==

স্পার্টা! নামের সাথেই যুদ্ধের গন্ধ লেগে আছে। ইতিহাসের অন্যতম যুদ্ধবাজ এই জাতি প্রতিপক্ষের জন্য ছিল আতঙ্কের অপর নাম। স্পার্টানরা নিজেদের যোদ্ধাদের শক্তির উপর এতটাই ভরসা করে চলতো যে, তাদের নগর রক্ষার জন্য আলাদা করে দেয়াল তোলারই প্রয়োজন মনে করেনি! স্পার্টাই একমাত্র নগর, যেটি দেখে স্বয়ং আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেট আর সেখানে পা রাখার মতো সাহস করেননি।
স্পার্টানদের শরীরের সাথেই যে শুধু যুদ্ধের গন্ধটা লেগে ছিল তা নয়, বরং স্পার্টান বালকদেরকে এমনভাবে গড়ে তোলা হতো, যেন তারা ঘুমের মধ্যেও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারতো। স্পার্টানদেরকে বড় করতো তাদের রাষ্ট্র, তাদের মা নয়! আর তাদের এমন সব শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো, যা ইতিহাসে বিরল।

জন্ম:

স্পার্টান শিশুরা পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হবার সাথে সাথেই তাদের পরীক্ষা শুরু হয়ে যেত। তারা যদি দুর্বল, অসুস্থ কিংবা বিকলাঙ্গ অবস্থায় জন্ম নিত, তাহলে তার জীবনের সেখানেই ইতি।
যখন স্পার্টান সমাজে কোনো শিশু জন্ম নিত, তার বাবা শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে শিশুটিকে নিয়ে যেত। তারা শিশুর পুরো শরীর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখত তার শরীরে কোনো ধরনের খুঁত আছে কিনা। যদি তাদের কাছে শিশুটিকে দুর্বল বা অসুস্থ বলে মনে হয় কিংবা কোনো ধরনের খুঁত খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে তার বাবাকে আদেশ দেওয়া হতো যেন শিশুটিকে ‘অ্যাপোসথেটা’ নামক জায়গায় রেখে আসা হয়। সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় শিশুটি না খেতে পেয়েই মারা যেত।
তবে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই যে শিশুটি পার পেয়ে যাবে, তা ভাবাটা ভুল। এরপর তার মৃগীরোগ আছে কিনা তা দেখার জন্য শিশুটিকে ওয়াইন দিয়ে গোসল করানো হতো। যদি ওয়াইনের ছোঁয়ায় শিশুটি কেঁপে উঠত তবে তারও একই পরিণতি হতো! যদি বাচ্চাটি এরপরেও বেঁচে থাকত, তবেই সে পেত স্পার্টায় বেঁচে থাকার সম্পূর্ণ অধিকার।
এতসব ঝক্কি-ঝামেলার পর স্পার্টার মাত্র অর্ধেক শিশু বেঁচে থাকত, তবে যারা থাকত তারা সবাই ছিল সুস্থ-সবল; একেবারে যুদ্ধের জন্য উপযোগী!

ব্যারাকে পদার্পণ:

কোনো মা-ই তার শিশুকে বেশিদিন ধরে রাখার সুযোগ পেতেন না স্পার্টায়। সাত বছর হলেই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হতো ‘ অ্যাগোজ’ নামক শিক্ষা গ্রহণের জন্য; আর তার দায়িত্বে থাকত ‘ওয়ার্ডেন’ পদবিধারী একজন শিক্ষক।
অ্যাগোজ গ্রহণ করা খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। ব্যারাকে থাকাকালীন অবস্থায় ছেলেদেরকে একে অপরের সাথে মারামারি করতে উৎসাহিত করা হতো। স্পার্টানদের বিদ্যালয় এমন কোনো সাধারণ বিদ্যালয় ছিল না যেখানে শিক্ষকরা কেবল শৃঙ্খলা টিকিয়ে রাখত। যদি কোনো ঝামেলা বাঁধত, তাহলে ছেলেদেরকেই তার হাত-কব্জির মাধ্যমে এর সমাধান করতে হতো। শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করতে যাওয়া মানেই শিক্ষকের কাছেই উল্টো দুই হাত খাওয়া!
ওয়ার্ডেনরা নিজেদের কাছে সবসময় চাবুক রাখত। যদি কোনো ছেলে কখনো খারাপ ব্যবহার করতো, তবে ওয়ার্ডেন তাকে নির্দয়ভাবে পেটাতে দ্বিধাবোধ করতো না। যদি কোনো বাবা জানতে পারত তার ছেলে শিক্ষকের কাছে মার খেয়েছে, তাহলে তার বাবা ছেলেটার উপর দ্বিতীয়বার চড়াও হতো। যদি না হয়, তাহলে বুঝে নিতে হতো ছেলেটিকে ত্যাজ্য করা হয়েছে!

মৌলিক অধিকার:

অ্যাগোজে থাকাকালীন অবস্থায় সর্বনিম্ন সুবিধাটুকু ভোগ করতে পারত স্পার্টান ছেলেরা। জুতোকে মনে করা হতো বিলাসবহুল দ্রব্য; এ কারণে খালি পায়েই তাদেরকে ট্রেনিং করতে হতো। জামা-কাপড়কে ধরা হতো যুদ্ধের সময় নড়াচড়ার প্রধান শত্রু, তাই কোমরে এক প্রস্থ কাপড় জড়িয়েই তাদেরকে লজ্জা নিবারণ করতে হতো। খাবারের জন্য ছেলেরা মোটা হয়ে যাবে, তাই তাদেরকে যতটুকু না খেলেই নয়, ঠিক ততটুকুই সরবরাহ করা হতো! এর মানে এই না যে, তারা আর খাবার পাবে না, তাদেরকে খাবার চুরি করার জন্য উৎসাহিত করা হতো । যদি কেউ চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়, তাহলে উল্টো তার খাবার আটকে রাখা হতো। আর যদি সফলভাবে চুরি করে, তাহলে তার জন্য বরাদ্দ থাকত দ্বিগুণ খাবার!
খাবারের ব্যাপারেও স্পার্টানদের বিধি-নিষেধ ছিল অত্যধিক। ইতালির এক অভিযাত্রী স্পার্টানদের এক ভোজসভায় যাওয়ার পর মন্তব্য করেছিলেন, “আমি এখন বুঝতে পারলাম, কেন স্পার্টানরা মৃত্যুকে ভয় পায় না!”
স্পার্টানদের এই ভোজসভার সবচেয়ে আকর্ষণীয় খাবারটি ছিল ‘ব্ল্যাক ব্রথ’; রক্ত, সিরকা আর লবণের মিশ্রণ দিয়ে রান্না করা মাংস ! স্পার্টানরা সবাই মিলে একসাথে খেত, একই ছাদের নিচে বসে এবং একই খাবারের টুকরো ভাগাভাগি করে। ব্ল্যাক ব্রথই ছিলো মাংস দিয়ে তৈরি একমাত্র খাবার এবং সবাই কিছু না কিছু টুকরো পেত। অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার জন্য স্পার্টানদেরকে দ্বারস্থ হতে হতো বনের জন্তু-জানোয়ারের উপর। একমাত্র শিকারি দু’বার খেতে পারবে- প্রথমবার সবার সাথে ভাগাভাগি করে ব্ল্যাক ব্রথের মতো; বাকি অংশ নিজের বাসায়। শুধুমাত্র নিজের শিকার করা মাংসই বাসায় বসে খেতে পারত স্পার্টানরা; এর অন্যথা ছিল কড়াভাবে নিষিদ্ধ।

শিক্ষা:

রাতের খাবার শেষ হওয়ার পর একজন সহকারী ওয়ার্ডেন সকল ছাত্রকে নিয়ে বসতেন মৌখিক পরীক্ষার জন্য। প্রশ্নগুলোর ধরন ছিল অনেকটা বর্তমান রচনামূলক প্রশ্নের মতো। যেমন: ‘বর্তমানে স্পার্টার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি কে?’ প্রতিটি ছাত্রকেই তার উত্তর সঠিক কেন, তা ব্যাখ্যা করতে হতো। উত্তরগুলো হতে হবে চটপটে এবং যুক্তিযুক্ত; অন্যথায় তার জন্য থাকত এক অদ্ভুত শাস্তির ব্যবস্থা। প্লুটার্খের মতানুযায়ী, যে ছাত্র দুর্বল উত্তর দিত, তার বুড়ো আঙ্গুল কামড়িয়ে রক্ত বের করে ফেলা হতো!
সহকারী ওয়ার্ডেনের জন্যও জীবন খুব সহজ ছিল না। মৌখিক পরীক্ষার পর তিনি ছাত্রদের উত্তরের একটা সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা তুলে ধরতেন প্রধান ওয়ার্ডেনদের কাছে। তাদের কাছে যদি মনে হতো, সহকারী ওয়ার্ডেন বেশি কঠোর কিংবা বেশি দয়ালু হয়ে গিয়েছে, তবে তার জন্যেও ছিল শাস্তির ব্যবস্থা!
আপনি যদি একজন স্পার্টান হন, তাহলে আপনি কোনো ব্যাংকার, উকিল, গণিতবিদ বা অন্য কিছু নন- আপনি স্রেফ একজন সৈন্য, একজন স্পার্টান সৈন্য। শিক্ষাব্যবস্থাও এমনভাবে প্রণয়ন করা ছিল সেখানে, যেন স্পার্টানরা সেরা যোদ্ধা ছাড়া অন্যকিছু হবার কথা চিন্তাও না করতে পারে। স্পার্টানদের যুদ্ধের কলাকৌশল ছাড়া আর একটা জিনিসই শেখানো হতো, তা হলো লেখা পড়তে পারা। এছাড়া আর সবকিছুই ছিল নিষিদ্ধ। স্পার্টান বালকদের জন্য অবসর সময়ে যোগ-বিয়োগ কিংবা দর্শনশাস্ত্রের চর্চা করা ছিল একেবারেই নিষিদ্ধ। স্পার্টানদেরকে যদি দেখা যেত, তারা সৈন্য ছাড়া অন্য কিছু হওয়ার চেষ্টা করছে, তাহলে তারা যেন অন্য কিছু হতে না পারে, সেজন্য তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হতো।

মৃত্যু:

যদি কোনো স্পার্টান বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যেত, তবে তার জন্য কেউ সম্মান দেখাত না; এমনকি তার জন্য কোনো কবরফলকও বরাদ্দ ছিল না!
মৃত্যুর পর কবরে ফলক পাওয়ার একমাত্র উপায় ছিলো যুদ্ধে শত্রুর হাতে মৃত্যু! যারা যুদ্ধে মারা যেত, তাদের কবরফলকে বড় করে লিখে দেওয়া হতো ‘যোদ্ধা’। নারীরাও কবরফলক পাওয়ার সুযোগ পেত যুদ্ধ না করেই, তবে সেটা মাত্র একটি পদ্ধতিতেই- যদি সে বাচ্চা জন্ম দিয়ে মারা যেত। তাকে একজন যোদ্ধা হিসেবেই গণ্য করা হতো, যে নিজের সাথেই যুদ্ধ করে মারা গিয়েছে, যে স্পার্টাকে যোদ্ধা উপহার দিতে মারা গিয়েছে।
তো, এই ছিলো স্পার্টাদের যোদ্ধা হওয়ার ঘটনা। আর ঘটনাগুলো শুনে অবাক হওয়ার কিছু কারণ নেই।


== আরও দেখুন ==
== আরও দেখুন ==

১৭:৩১, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

Σπάρτη

স্পার্টা
স্পার্টার অবস্থান
রাজধানীস্পার্টা
সরকারওলিগারকি
• 
খ্রীষ্টপূর্বাব্দ ১১তম শতাব্দী
জনসংখ্যা
• ২০০১ আনুমানিক
১৮,১৮৪
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
ইউটিসি+২ (CEST)
কলিং কোড৩০

স্পার্টা (গ্রিক ভাষায় Σπάρτη, Sparte; ডোরিক ভাষায় Σπάρτα, Spártā) দক্ষিণ গ্রীসের একটি প্রাচীন শহরের নাম। সুপ্রাচীন কালে এটি একটি বিখ্যাত ডোরীয় গ্রিক সামরিক সাম্রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। তখন এটি মূলত ল্যাকোনিয়ার অন্তর্গত ছিল। গ্রিসের কেন্দ্রীয় ল্যাকোনীয় সমতলের দক্ষিণে একেবারে শেষভাগে ইউরোটাস নদীর ডান তীরে স্পার্টা নগরী অবস্থিত।

একটি পৃথক শহর-স্টেট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত স্পার্টার সৈন্যদের কঠোর অনুশীলন করানো হত। এজন্যই স্পার্টার সেনাদল তৎকালীন গ্রিসের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ সেনাদল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। এথেনীয় এবং পারস্য সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় লাভের পর স্পার্টা নিজেকে গ্রিসের স্বাভাবিক রক্ষক হিসেবে ঘোষণা করে।[১] ইউরোটাস নদীর তীরে অবস্থানের কারণে প্রাচীন কাল থেকেই স্পার্টা নগরীর একটি প্রাকৃতিক প্রতিরোধ বিদ্যমান ঠিল। কারণ এর তিনদিক পর্বতশ্রেণী দ্বারা ঘেরা। একদিকে ছিল টেইগেটাস পাহাড়ের উপর দিয়ে লেগদা গিরিপথ হয়ে আগ্রাসী বাহিনী আক্রমণ করতে পারত। এক্ষেত্রে তাদেরকে ল্যাকোনিয়া এবং পেলোপনেসাস অতিক্রম করতে হত। কিন্তু এই পথে স্পার্টান সৈন্যদের কর্তৃত্ব বজায় ছিল সবসময়। উপরন্তু এই শহর থেকে নিকটতম সমুদ্র বন্দর তথা জিথিয়াম বন্দরের দূরত্ব ছিল ২৭ কিলোমিটার। এ কারণে এই শহরটিকে অবরোধ করা ছিল দুঃসাধ্য কাজ।

ইতিহাস

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. মাচেদোনীয়ান সাম্রাজ্য: ফিলিপ II এবং আলেকজান্ডারের অধীনে যুদ্ধের যুগ, ৩৫৯-৩২৩ বি.সি.- জেমস আর.।

বহিঃসংযোগ