আজিজ সুপার মার্কেট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
টেমপ্লেটে সংশোধন
৫ নং লাইন: ৫ নং লাইন:
== আজিজ সুপার মার্কেট ==
== আজিজ সুপার মার্কেট ==


'''আজিজ সুপার মার্কেট''' [[শাহবাগ]] এ ,জাতীয় জাদুঘরের পাশে অবস্থিত। এটি একটি চৌদ্দ তলা ভবন।ভবনের প্রথম তিন তলা ও আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট এবং বাকি অংশ আবাসিক ভবন।আজিজ সুপার মার্কেট_ বই, কাগজ ও কালির গণ্ধে যেই পাড়াটা থাকত সবসময় মুখর, এখন সেখানেই পাওয়া যায় কাপড় আর রঙের গণ্ধ। [[ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি]] থেকে এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে [[শাহবাগ]] আসতেই হাতের বাঁ দিকে তাকালে চোখে পড়বে 'আজিজ সুপার মার্কেট'। কোনো ঝকঝকে, তকতকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক কোনো 'প্লাজা' নয়। অতি সাধারণ, সাদামাটা একটি মার্কেট। কখনোই চুনকাম হয়নি। ভালো লিফট নেই, পার্কিং নেই, সিঁড়ির অবস্থা করুণ, ভালো একটা রেস্টুরেন্ট নেই, কারেন্ট চলে গেলে পুরো মার্কেট অন্ধকারে ডুবে ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়। যারা বাসাবাড়ি নিয়ে মার্কেটের ওপরে থাকেন, তাদের তো ভোগান্তির শেষ নেই। আহামরি কিছুই না, তারপরও আজিজ সুপার মার্কেটের কোনো বিকল্প নেই। আজিজ মার্কেটের তুলনা একমাত্র আজিজ মার্কেটের সঙ্গেই চলে।
'''আজিজ সুপার মার্কেট''' [[শাহবাগ]] এ ,জাতীয় জাদুঘরের পাশে অবস্থিত। এটি একটি চৌদ্দ তলা ভবন।ভবনের প্রথম তিন তলা ও আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট এবং বাকি অংশ আবাসিক ভবন।আজিজ সুপার মার্কেট_ বই, কাগজ ও কালির গণ্ধে যেই পাড়াটা থাকত সবসময় মুখর, এখন সেখানেই পাওয়া যায় কাপড় আর রঙের গণ্ধ। [[ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি]] থেকে এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে [[শাহবাগ]] আসতেই হাতের বাঁ দিকে তাকালে চোখে পড়বে 'আজিজ সুপার মার্কেট'। কোনো ঝকঝকে, তকতকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক কোনো 'প্লাজা' নয়। অতি সাধারণ, সাদামাটা একটি মার্কেট। কখনোই চুনকাম হয়নি। ভালো লিফট নেই, পার্কিং নেই, সিঁড়ির অবস্থা করুণ, ভালো একটা রেস্টুরেন্ট নেই, কারেন্ট চলে গেলে পুরো মার্কেট অন্ধকারে ডুবে ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়। যারা বাসাবাড়ি নিয়ে মার্কেটের ওপরে থাকেন, তাদের তো ভোগান্তির শেষ নেই। আহামরি কিছুই না, তারপরও আজিজ সুপার মার্কেটের কোনো বিকল্প নেই।


== ইতিহাস ==
== ইতিহাস ==

০৬:৩১, ১১ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আজিজ সুপার মার্কেট বাংলাদেশের ঢাকা শহরে অবিস্থত একটি মাইলফলক স্থাপনা যা প্রধানত একটি বইয়ের বাজার হিসাবেই প্রসিদ্ধ।[১] ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র শাহবাগ চৌরাস্তা সংলগ্ন এলিফ্যাণ্ট রোডে এর অবস্থান। ১৯৮০-র দশকের মধ্যভাগ থেকেই আজিজ সুপার মার্কেট সাহিত্যপ্রেমী ও তরুণ কবিদের-লেখকদের প্রাত্যহিক তীর্থে পরিণত হয়। এখনো এটি সান্ধ্য আড্ডার জনপ্রিয় কেন্দ্র। দেশী-বিদেশী বইয়ের দোকানগুলোকে কেন্দ্র করেই এই আড্ডার সূত্রপাত। বইয়ের দোকানের পাশাপাশি অনেক রেস্তরাঁ গড়ে ওঠায় আড্ডার আবহ জোরদার হয়।

আজিজ সুপার মার্কেট

আজিজ সুপার মার্কেট শাহবাগ এ ,জাতীয় জাদুঘরের পাশে অবস্থিত। এটি একটি চৌদ্দ তলা ভবন।ভবনের প্রথম তিন তলা ও আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট এবং বাকি অংশ আবাসিক ভবন।আজিজ সুপার মার্কেট_ বই, কাগজ ও কালির গণ্ধে যেই পাড়াটা থাকত সবসময় মুখর, এখন সেখানেই পাওয়া যায় কাপড় আর রঙের গণ্ধ। ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে শাহবাগ আসতেই হাতের বাঁ দিকে তাকালে চোখে পড়বে 'আজিজ সুপার মার্কেট'। কোনো ঝকঝকে, তকতকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক কোনো 'প্লাজা' নয়। অতি সাধারণ, সাদামাটা একটি মার্কেট। কখনোই চুনকাম হয়নি। ভালো লিফট নেই, পার্কিং নেই, সিঁড়ির অবস্থা করুণ, ভালো একটা রেস্টুরেন্ট নেই, কারেন্ট চলে গেলে পুরো মার্কেট অন্ধকারে ডুবে ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়। যারা বাসাবাড়ি নিয়ে মার্কেটের ওপরে থাকেন, তাদের তো ভোগান্তির শেষ নেই। আহামরি কিছুই না, তারপরও আজিজ সুপার মার্কেটের কোনো বিকল্প নেই।

ইতিহাস

জনৈক আজিজুল ইসলাম বায়নাসূত্রে মালিকানা নিয়ে নিজ নামে শপিং কমপ্লেক্স কাম অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করেন ১৯৮১ সালে। পাঁচ বিঘা জমির ওপর এই সুপার মার্কেটের যাত্রা শুরু হয় নব্বইয়ের দশকের শুরুতে। ১৯৮৭ তে পাঠক সমাবেশ নামে একটি ক্ষুদ্রাকৃতি বইয়ের দোকানের মধ্য দিয়ে বই মার্কেট হিসেবে শুরু হয়েছিল এর যাত্রা। উদ্যোক্তা ছিলেন শহিদুল ইসলাম বিজু।, নব্বুই দশকের মাঝামাঝি নাগাদ এ মার্কেটের নিচ তলার প্রায় পুরোটা জুড়েই বইয়ের ছোট ছোট দোকান স্থাপিত হয়। দেশী-বিদেশী বইয়ের গণ্ধে এ মার্কেট ছিল মাতাল করা। অল্পদিনেই তরুণ লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। দোতলায় বেশ কিছু লেখালিখি ও প্রকাশনা সংক্রান্ত সংগঠন স্থাপিত হয় যার মধ্যে অন্যতম আহমদ ছফা স্কুল। লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক জগৎের অনেকের আড্ডাস্থল আজিজ সুপার মার্কেট। এ মার্কেটের সামনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পাবলিক লাইব্রেরি। ফলে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ছুটে আসতেন এখানে যখন-তখন। আজিজ সুপার মার্কেটকে এক কথায় পাঠাগারও বলা হতো প্রথম দিকে। তবে শুরু থেকেই এই বই মেলায় বাংলাদেশী বইয়ের পরিবর্তে ভারতীয় বইয়ের সমাবেশ ছিল বেশী। মার্কেটটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। তৃতীয় সহস্রাব্দের কয়েক বছর গড়িয়ে গেলে বইয়ের দোকানগুলো অস্তিত্বের সংকটে পড়ে। অনেক বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে যায়, ফাঁকা স্থান দখল করে নেয় পোশাক ও চা-নাশতার দোকান। তবে সাহিত্যিকদের একটি চুম্বক কেন্দ্র হিসেবে আজিজ সুপারমার্কেট তার আদি চারিত্র্য এখনো (২০১৪ খ্রি.) বজায় রেখেছে।

বর্তমান অবস্থা

এখন এটি বাণিজ্যিক মার্কেটে পরিণত হয়েছে। সেখানে এখন স্বদেশী পোশাকের কাপড় ও রঙের গণ্ধই নাকে এসে বেশি লাগে। কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের আনাগোনা এখনও রয়েছে, তবে আড্ডাটা জমে না আর সেভাবে। বরং সেখানে বেড়ে গেছে ফ্যাশনসচেতন তারুণ্যের পদচারণা। পেশাদারিত্ব নিয়ে যারা বইয়ের ব্যবসা শুরু করেছেন তারা এখনও টিকে আছেন, আর যারা তা করতে পারেননি তারা দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে এখান থেকে এভাবেই হারিয়ে গেছে অনেক বইয়ের দোকান। মুক্তচিন্তার মানুষের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠা আজিজ মার্কেট এখন দখল করে নিয়েছে অধিক মুনাফা অর্জনকারী নানা পণ্যের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান।

১৯৮৭ সালে 'পাঠক সমাবেশ' নিয়ে আজিজ মার্কেটের যাত্রা শুরু। এরপর বুক পয়েন্ট, প্রাকৃতজন, মনন, প্যাপিরাস, গ্রন্থ গ্যালারি, প্রাচ্য বিদ্যা, সুখ, এপিক ইত্যাদি নামে কয়েক বছরের মধ্যেই ৬০টির অর্ধিক বইয়ের দোকান গড়ে ওঠে। এখন মার্কেটটিতে বইয়ের দোকান আছে মাত্র ত্রিশটির কাছাঁকাছি। যাত্রা শুরুর সময়ের বুক পয়েন্ট, দেশ প্রকাশন, প্রাকৃতজনের মতো অনেক দোকান এখন কেবলই স্মৃতি। সেখানে দোকানগুলোর অস্তিত্ব পর্যন্ত নেই। আজিজ মার্কেটের সামনের খালি জায়গাজুড়ে এক সময় বৈশাখী, বর্ষা, স্বাধীনতা কিংবা অন্য শিরোনামে বইমেলার আয়োজন হতো। ফ্যাশন হাউসের পত্তনে সেসব মেলা আর হয় না। তবে এ মার্কেটের কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থার উদ্যোগে ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরির সামনের খালি জায়গায় মেলার আয়োজন এখনও হয়। এখন মার্কেটটির নিচতলায় কেবল বইয়ের দোকান। নিচতলাসহ দোতলা থেকে শুরু হয়েছে টি-শার্টের দোকান, কিংবা ফ্যাশন হাউস। অথচ দোতলাতেই রয়েছে লিটল ম্যাগ প্রাঙ্গণ, যা দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিনের অন্যতম ঠিকানা। এ প্রাঙ্গণে পাওয়া যায় তিন শতাধিক লিটল ম্যাগাজিন। আজিজ মার্কেটের এই বিবর্তনকে অনেকে দেখেন আধুনিকায়ন হিসেবে! অবশ্যই দেশীয় পোশাক নিয়ে আজিজ মার্কেটে যে আয়োজন রয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। তবে নতুন বইয়ের ঘ্রাণের সঙ্গে কি আর কিছুর তুলনা হয়?

তথ্যসূত্র