মহাকর্ষীয় তরঙ্গ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Sattajit (আলোচনা | অবদান)
বিষয়বস্তু যোগ,সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
প্রায় একশত বছর আগে বিজ্ঞানী [[আলবার্ট আইনস্টাইন]] তার সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বে স্থান-কাল বাঁকিয়ে দেওয়া যে তরঙ্গের কথা বলেছিলেন, সে ‘মহাকর্ষীয় তরঙ্গ’ শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই তরঙ্গের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ায় মহাবিশ্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ‘মহাবিস্ফোরণ’ বা[[ বিগ ব্যাং]] তত্ত্ব আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।
প্রায় একশত বছর আগে বিজ্ঞানী [[আলবার্ট আইনস্টাইন]] তার সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বে স্থান-কাল বাঁকিয়ে দেওয়া যে তরঙ্গের কথা বলেছিলেন, সে ‘মহাকর্ষীয় তরঙ্গ’ শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই তরঙ্গের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ায় মহাবিশ্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ‘মহাবিস্ফোরণ’ বা[[ বিগ ব্যাং]] তত্ত্ব আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।
পৃথিবী থেকে শত কোটি আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ ভারী দু’টি কৃষ্ণ গহ্বরের (ব্ল্যাক হোল) সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ (গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েব) শনাক্ত করা হয়েছে।আলোক বিকিরণের [[কোয়ান্টাম]]কে যেমন [[ফোটন]] বলা হয়, তেমনি মহাকর্ষীয় বিকিরণের কোয়ান্টামকে বলা হয় [[গ্রাভিটন]]।
পৃথিবী থেকে শত কোটি আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ ভারী দু’টি কৃষ্ণ গহ্বরের (ব্ল্যাক হোল) সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ (গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েব) শনাক্ত করা হয়েছে।আলোক বিকিরণের [[কোয়ান্টাম]]কে যেমন [[ফোটন]] বলা হয়, তেমনি মহাকর্ষীয় বিকিরণের কোয়ান্টামকে বলা হয় [[গ্রাভিটন]]।
১৪০০ কোটি বছর আগে মহাবিস্ফোরণ বা ‘বিগ ব্যাং’-এর পর যে উত্তাল ঢেউয়ের জগৎ হয়েছিল, সেটাই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ। পুকুরে ঢিল ফেললে যেমন একটা তরঙ্গ ছড়াতে ছড়াতে তার পাড়ে পৌঁছে যায়, তেমনই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এখনো ওই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ছে। আর চার পাশে অসম্ভব দ্রুত হারে ব্রহ্মাণ্ড প্রসারিত হয়ে চলছে। নিউটন বলেছিলেন, [[মহাকর্ষ]] হলো দুই বস্তুর মধ্যে অদৃশ্য আকর্ষণ বল। আইনস্টাইনের মতে, মহাকর্ষ তা নয়, মহাকর্ষ আসলে অন্য ব্যাপার। মহাকর্ষ আসলে শূন্যস্থান বা ‘স্পেস’-এর জ্যামিতির খেলা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘আইনস্টাইন এবং নিউটনের তত্ত্বের মধ্যে কোনটা ঠিক, তা নির্ধারণ করার পক্ষে মহাকর্ষ-তরঙ্গ অনুসন্ধান একটা বড় পরীক্ষা। আইনস্টাইন ওই তরঙ্গের কথা বলেছিলেন। নিউটন তা বলেননি।’ যেহেতু ঢেউয়ের জগৎ পৃথিবী থেকে হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে, তাই তার প্রভাব যখন পৃথিবীতে পৌঁছায়, তখন তা ক্ষীণ হয়ে যায়।
১৪০০ কোটি বছর আগে মহাবিস্ফোরণ বা ‘বিগ ব্যাং’-এর পর যে উত্তাল ঢেউয়ের জগৎ হয়েছিল, সেটাই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ। পুকুরে ঢিল ফেললে যেমন একটা তরঙ্গ ছড়াতে ছড়াতে তার পাড়ে পৌঁছে যায়, তেমনই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এখনো ওই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ছে। আর চার পাশে অসম্ভব দ্রুত হারে ব্রহ্মাণ্ড প্রসারিত হয়ে চলছে।
মহাকার্ষীয় তরঙ্গের বিষয়টা বুঝতে হলে প্রথমে স্থানকালের ব্যাপারে একটু ধারনা থাকা দরকার।আমরা জানি মহাবিশ্বের একটি বস্তু অপর বস্তুকে সর্বদা আকর্ষন করে (নিউটনের সূত্র)।কেন করে এটা কিন্তু কারো জানা ছিলনা।এর উত্তর দেয়ার জন্যে আইনস্টাইন বলেন,আমাদের সমগ্র মহাবিশ্ব আসলে একটা বিশাল চাদরের উপর অবস্থান করছে।সেই চাদরটা হল স্থানকাল এর।এখন আমরা স্বাভাবিকভাবেই রোজকার জীবনে দেখি যে কোন ভারি বস্তু যখন চাদরের উপর পরে,চাদরটি একটু নিচে দেবে যায়।একই ঘটনা ঘটে মহাজাগতিক কোন বস্তু আর স্থানকালের চাদরের সাথেও।এখন চাদরের যে জায়গাটা দেবে যাবে,তারপাশ দিয়ে কোন বস্তু জোরে ঘুরিয়ে ছেরে দেই তাহলে কি ঘটবে?মার্বেলটা ঐ ভারি বস্তুটার চারপাশ দিয়ে ঘুরতে থাকবে,আর দেখা যাবে যে ভারি বস্তুটা মার্বেলটাকে আকর্ষণ করছে।সূর্য আর পৃথিবীর ক্ষেত্রেও কিন্তু একই ঘটনা ঘটছে!আর আমরা সেজন্যেই ভাবি সূর্য পৃথিবীটাকে টেনে যাচ্ছে।
বলছেন, ‘আইনস্টাইন এবং নিউটনের তত্ত্বের মধ্যে কোনটা ঠিক, তা নির্ধারণ করার পক্ষে মহাকর্ষ-তরঙ্গ অনুসন্ধান একটা বড় পরীক্ষা। আইনস্টাইন ওই তরঙ্গের কথা বলেছিলেন। নিউটন তা বলেননি।’ যেহেতু ঢেউয়ের জগৎ পৃথিবী থেকে হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে, তাই তার প্রভাব যখন পৃথিবীতে পৌঁছায়, তখন তা ক্ষীণ হয়ে যায়।
এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্তের জন্য বিজ্ঞানীরা লেজার রশ্মি ভ্রমণ করতে পারে এমন চার কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল তৈরি করেন। লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অভজারভেটরি (এলআইজিও-লাইগো) নামে পরিচিত এই সিস্টেম একটি [[পরমাণু]]র ব্যাসের ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য পরিমাপ করতে পারে।
এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্তের জন্য বিজ্ঞানীরা লেজার রশ্মি ভ্রমণ করতে পারে এমন চার কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল তৈরি করেন। লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অভজারভেটরি (এলআইজিও-লাইগো) নামে পরিচিত এই সিস্টেম একটি [[পরমাণু]]র ব্যাসের ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য পরিমাপ করতে পারে।
মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রভাবে এই লেজার রশ্মিই অতি সামান্যতম বিচ্যুতিও পরিমাপের ব্যবস্থা করা হয় ওই টানেলে।”লুইজিয়ানার লিগোর ৭ দশমিক ১ মিলিসেকেন্ড পরই ওয়াশিংটনের লিগোয় তরঙ্গটি ধরা পড়ে। ইংরেজি 'এল' অক্ষর আকৃতির অত্যাধুনিক ও জটিল এ যন্ত্রটি।এটি টেলিস্কোপের মতো বস্তুর আলোর ওপর নির্ভরশীল নয়। বরং এটি মহাশূন্যে সৃষ্ট কম্পন শনাক্ত করে। [[কৃষ্ণগহ্বর]] যেহেতু কোনো আলো প্রতিফলন করে না, তাই এটি টেলিস্কোপে ধরাও পড়ে না। ঠিক এ জায়গাতেই সাফল্য পেয়েছে কম্পন শনাক্তকারী লিগো।ভূমিকম্প হলে সিসমোগ্রাফে আমরা যেমন কম্পন নির্ণয় করতে পারি, তেমনি লাইগোর সাহায্যে মহাজাগতিক স্থান-কালে কোনো আলোড়ন বা তরঙ্গ হলে সেটি আমরা সহজে শনাক্ত করতে পারব।
মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রভাবে এই লেজার রশ্মিই অতি সামান্যতম বিচ্যুতিও পরিমাপের ব্যবস্থা করা হয় ওই টানেলে।”লুইজিয়ানার লিগোর ৭ দশমিক ১ মিলিসেকেন্ড পরই ওয়াশিংটনের লিগোয় তরঙ্গটি ধরা পড়ে। ইংরেজি 'এল' অক্ষর আকৃতির অত্যাধুনিক ও জটিল এ যন্ত্রটি।এটি টেলিস্কোপের মতো বস্তুর আলোর ওপর নির্ভরশীল নয়। বরং এটি মহাশূন্যে সৃষ্ট কম্পন শনাক্ত করে। [[কৃষ্ণগহ্বর]] যেহেতু কোনো আলো প্রতিফলন করে না, তাই এটি টেলিস্কোপে ধরাও পড়ে না। ঠিক এ জায়গাতেই সাফল্য পেয়েছে কম্পন শনাক্তকারী লিগো।ভূমিকম্প হলে সিসমোগ্রাফে আমরা যেমন কম্পন নির্ণয় করতে পারি, তেমনি লাইগোর সাহায্যে মহাজাগতিক স্থান-কালে কোনো আলোড়ন বা তরঙ্গ হলে সেটি আমরা সহজে শনাক্ত করতে পারব।

১৬:৫২, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

মহাকর্ষীয় তরঙ্গ হলো তাড়িৎ-চৌম্বক ক্ষেত্রে আলোক তরঙ্গ সদৃশ মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে আন্দোলনজনিত কারণে উদ্ভূত আলোর সমান বেগে(২৯৯ ৭৯২ কিলোমিটার প্রতিসেকেন্ড) ধাবমান, অতি ক্ষীণ তরঙ্গ। এ তরঙ্গের প্রকৃতি জানা যায় আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতত্ত্ব থেকে। যেকোন ত্বরিত, স্পন্দিত এবং প্রবলভাবে আন্দোলিত ভর মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সৃষ্টি করতে সক্ষম। আলোক বিকিরণের কোয়ান্টামকে যেমন ফোটন বলা হয়, তেমনি মহাকর্ষীয় বিকিরণের কোয়ান্টামকে বলা হয় গ্রাভিটন

প্রায় একশত বছর আগে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তার সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বে স্থান-কাল বাঁকিয়ে দেওয়া যে তরঙ্গের কথা বলেছিলেন, সে ‘মহাকর্ষীয় তরঙ্গ’ শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই তরঙ্গের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ায় মহাবিশ্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ‘মহাবিস্ফোরণ’ বাবিগ ব্যাং তত্ত্ব আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো। পৃথিবী থেকে শত কোটি আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ ভারী দু’টি কৃষ্ণ গহ্বরের (ব্ল্যাক হোল) সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ (গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েব) শনাক্ত করা হয়েছে।আলোক বিকিরণের কোয়ান্টামকে যেমন ফোটন বলা হয়, তেমনি মহাকর্ষীয় বিকিরণের কোয়ান্টামকে বলা হয় গ্রাভিটন। ১৪০০ কোটি বছর আগে মহাবিস্ফোরণ বা ‘বিগ ব্যাং’-এর পর যে উত্তাল ঢেউয়ের জগৎ হয়েছিল, সেটাই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ। পুকুরে ঢিল ফেললে যেমন একটা তরঙ্গ ছড়াতে ছড়াতে তার পাড়ে পৌঁছে যায়, তেমনই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এখনো ওই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ছে। আর চার পাশে অসম্ভব দ্রুত হারে ব্রহ্মাণ্ড প্রসারিত হয়ে চলছে। মহাকার্ষীয় তরঙ্গের বিষয়টা বুঝতে হলে প্রথমে স্থানকালের ব্যাপারে একটু ধারনা থাকা দরকার।আমরা জানি মহাবিশ্বের একটি বস্তু অপর বস্তুকে সর্বদা আকর্ষন করে (নিউটনের সূত্র)।কেন করে এটা কিন্তু কারো জানা ছিলনা।এর উত্তর দেয়ার জন্যে আইনস্টাইন বলেন,আমাদের সমগ্র মহাবিশ্ব আসলে একটা বিশাল চাদরের উপর অবস্থান করছে।সেই চাদরটা হল স্থানকাল এর।এখন আমরা স্বাভাবিকভাবেই রোজকার জীবনে দেখি যে কোন ভারি বস্তু যখন চাদরের উপর পরে,চাদরটি একটু নিচে দেবে যায়।একই ঘটনা ঘটে মহাজাগতিক কোন বস্তু আর স্থানকালের চাদরের সাথেও।এখন চাদরের যে জায়গাটা দেবে যাবে,তারপাশ দিয়ে কোন বস্তু জোরে ঘুরিয়ে ছেরে দেই তাহলে কি ঘটবে?মার্বেলটা ঐ ভারি বস্তুটার চারপাশ দিয়ে ঘুরতে থাকবে,আর দেখা যাবে যে ভারি বস্তুটা মার্বেলটাকে আকর্ষণ করছে।সূর্য আর পৃথিবীর ক্ষেত্রেও কিন্তু একই ঘটনা ঘটছে!আর আমরা সেজন্যেই ভাবি সূর্য পৃথিবীটাকে টেনে যাচ্ছে। বলছেন, ‘আইনস্টাইন এবং নিউটনের তত্ত্বের মধ্যে কোনটা ঠিক, তা নির্ধারণ করার পক্ষে মহাকর্ষ-তরঙ্গ অনুসন্ধান একটা বড় পরীক্ষা। আইনস্টাইন ওই তরঙ্গের কথা বলেছিলেন। নিউটন তা বলেননি।’ যেহেতু ঢেউয়ের জগৎ পৃথিবী থেকে হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে, তাই তার প্রভাব যখন পৃথিবীতে পৌঁছায়, তখন তা ক্ষীণ হয়ে যায়। এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্তের জন্য বিজ্ঞানীরা লেজার রশ্মি ভ্রমণ করতে পারে এমন চার কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল তৈরি করেন। লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অভজারভেটরি (এলআইজিও-লাইগো) নামে পরিচিত এই সিস্টেম একটি পরমাণুর ব্যাসের ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য পরিমাপ করতে পারে। মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রভাবে এই লেজার রশ্মিই অতি সামান্যতম বিচ্যুতিও পরিমাপের ব্যবস্থা করা হয় ওই টানেলে।”লুইজিয়ানার লিগোর ৭ দশমিক ১ মিলিসেকেন্ড পরই ওয়াশিংটনের লিগোয় তরঙ্গটি ধরা পড়ে। ইংরেজি 'এল' অক্ষর আকৃতির অত্যাধুনিক ও জটিল এ যন্ত্রটি।এটি টেলিস্কোপের মতো বস্তুর আলোর ওপর নির্ভরশীল নয়। বরং এটি মহাশূন্যে সৃষ্ট কম্পন শনাক্ত করে। কৃষ্ণগহ্বর যেহেতু কোনো আলো প্রতিফলন করে না, তাই এটি টেলিস্কোপে ধরাও পড়ে না। ঠিক এ জায়গাতেই সাফল্য পেয়েছে কম্পন শনাক্তকারী লিগো।ভূমিকম্প হলে সিসমোগ্রাফে আমরা যেমন কম্পন নির্ণয় করতে পারি, তেমনি লাইগোর সাহায্যে মহাজাগতিক স্থান-কালে কোনো আলোড়ন বা তরঙ্গ হলে সেটি আমরা সহজে শনাক্ত করতে পারব। হিগস-বোসন কণা শনাক্তের পর মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্তের ঘটনা বিজ্ঞানের জগতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মন্তব্য করেছেন জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব গ্র্যাভিটেশনাল ফিজিক্সের অধ্যাপক কারস্টেন ডানসমান। অধ্যাপক ডানসমান বিবিসিকে বলেন, “এটা প্রথমবারের মতো মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত; এটা প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক হোলের সরাসরি শনাক্ত করার ঘটনা এবং এটা সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের নিশ্চয়তা। কারণ এই ব্ল্যাক হোলগুলোর বৈশিষ্ট্য শত বছর আগে আইনস্টাইন যেমনটা ধারণা করেছিলেন তার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।” মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করার এই ক্ষমতা জ্যোতির্বিদ্যাকে সর্বাত্মতভাবে পরিবর্তন করতে পারে মন্তব্য করে হকিং বলেন, “এই আবিষ্কার বাইনারি সিস্টেম ব্ল্যাক হোলের প্রথম শনাক্ত করার ঘটনা এবং একাধিক ব্ল্যাক হোলের মিশে যাওয়ার প্রথম পর্যবেক্ষন। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন লিগোর নির্বাহী পরিচালক ডেভিড রেইতজে। তিনি বলেন, আমরা মহাকর্ষীয় মৃদু তরঙ্গ শনাক্ত করেছি। এই আবিষ্কার জ্যাতির্বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা করলো। মূলত এই আবিষ্কারের ফলে বহু দশকের অনুসন্ধান-প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো। এর মাধ্যমে বিগ ব্যাং তত্ত্বের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।



[১]

তথ্যসুত্র