মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎জন্ম ও শিক্ষাজীবন: তথ্যসূত্র সংশোধন
৩৬ নং লাইন: ৩৬ নং লাইন:
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর [[১৯৪৯]] সালের ৭ মার্চ বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আবদুল মোতালেব হাওলাদার ছিলেন কৃষক এবং মা সাফিয়া বেগম ছিলেন গৃহিণী। মহিউদ্দীনরা তিন বোন তিন ভাই।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.amaderbarisal.com/news/124757.aspx|title=আমাদের 'বীরশ্রেষ্ঠ' মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর|last=|first=|date=14/12/2016|website=Amader Barisal|publisher=|access-date=24/12/2016}}</ref> দাদা আবদুর রহিম হাওলাদার ছিলেন প্রতাপশালী ব্যক্তি। পিতার আর্থিক দৈন্যতার কারণে মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে মামার বাড়ি মুলাদি উপজেলার পাতারচর গ্রামে যান জাহাঙ্গীর। পাতারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে [[১৯৫৩]] সালে তার শিক্ষাজীবনের সূচনা হয়। মুলাদি মাহমুদ জান পাইলট হাইস্কুল থেকে [[১৯৬৪]] সালে বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। [[১৯৬৬]] তে তিনি বরিশাল বি.এম (ব্রজমোহন) কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।<ref name=":0">{{Cite web|url=http://en.banglapedia.org/index.php?title=Jahangir,_Birsrestha_Mahiuddin|title=Jahangir, Birsrestha Mahiuddin - Banglapedia|website=en.banglapedia.org|access-date=2016-11-17}}</ref>
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর [[১৯৪৯]] সালের ৭ মার্চ বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আবদুল মোতালেব হাওলাদার ছিলেন কৃষক এবং মা সাফিয়া বেগম ছিলেন গৃহিণী। মহিউদ্দীনরা তিন বোন তিন ভাই।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.amaderbarisal.com/news/124757.aspx|title=আমাদের 'বীরশ্রেষ্ঠ' মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর|last=|first=|date=14/12/2016|website=Amader Barisal|publisher=|access-date=24/12/2016}}</ref> দাদা আবদুর রহিম হাওলাদার ছিলেন প্রতাপশালী ব্যক্তি। পিতার আর্থিক দৈন্যতার কারণে মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে মামার বাড়ি মুলাদি উপজেলার পাতারচর গ্রামে যান জাহাঙ্গীর। পাতারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে [[১৯৫৩]] সালে তার শিক্ষাজীবনের সূচনা হয়। মুলাদি মাহমুদ জান পাইলট হাইস্কুল থেকে [[১৯৬৪]] সালে বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। [[১৯৬৬]] তে তিনি বরিশাল বি.এম (ব্রজমোহন) কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।<ref name=":0">{{Cite web|url=http://en.banglapedia.org/index.php?title=Jahangir,_Birsrestha_Mahiuddin|title=Jahangir, Birsrestha Mahiuddin - Banglapedia|website=en.banglapedia.org|access-date=2016-11-17}}</ref>


মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ছাত্র হিসেবে ছিলেন বেশ মেধাবী খেলাধুলার পাশাপাশি তিনি ছিলেন রাজনীতি সচেতন৷ কলেজজীবনেই তিনি পাঠ করেন লেনিন, মাও-সেতুং, চে গুয়েভারা মতো ব্যক্তির সংগ্রামী জীবনের গল্প ও রাজনৈতিক দর্শন৷ তিনি মাষ্টার দা সূর্যসেনের জীবনীগ্রন্থ, ক্ষুদীরামের ফাঁসী, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা, চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জীবনীসহ বহু গ্রন্থ নিয়মিত পড়তেন ।
ছাত্র হিসেবে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বেশ মেধাবী ছিলেন৷ খেলাধুলার পাশাপাশি তিনি ছিলেন রাজনীতি সচেতন৷ কলেজ জীবনেই তিনি পাঠ করেন লেনিন, মাও-সেতুং, চে গুয়েভারা মতো ব্যক্তির সংগ্রামী জীবনের গল্প ও রাজনৈতিক দর্শন৷ তিনি মাষ্টার দা সূর্যসেনের জীবনীগ্রন্থ, ক্ষুদীরামের ফাঁসী, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা, চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জীবনীসহ বহু গ্রন্থ নিয়মিত পড়তেন ।


উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বিমান বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন, কিন্তু চোখের অসুবিধা থাকায় ব্যর্থ হন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। [[১৯৬৮]]’র ২ জুন তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে কমিশন লাভ করেন। সেনাবাহিনীতে তার নম্বর ছিল PSS-১০৪৩৯। তিনি মিলিটারি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং, রিসালপুর থেকে অফিসার বেসিক কোর্স-২৯ এবং ইনফেন্ট্রি স্কুল অব ট্যাকটিস থেকে অফিসার উইপন কোর্স সম্পন্ন করেন। সর্বশেষ ১৯৬৯ সালে আগস্ট মাসের শেষের দিকে এক মাসের ছুটিতে দেশে ফেরেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বিমান বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন, কিন্তু চোখের অসুবিধা থাকায় ব্যর্থ হন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। [[১৯৬৮]]’র ২ জুন তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে কমিশন লাভ করেন। সেনাবাহিনীতে তার নম্বর ছিল PSS-১০৪৩৯। তিনি মিলিটারি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং, রিসালপুর থেকে অফিসার বেসিক কোর্স-২৯ এবং ইনফেন্ট্রি স্কুল অব ট্যাকটিস থেকে অফিসার উইপন কোর্স সম্পন্ন করেন। সর্বশেষ ১৯৬৯ সালে আগস্ট মাসের শেষের দিকে এক মাসের ছুটিতে দেশে ফেরেন।

০৯:০৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর
চিত্র:Mohiuddin Jahangir.Birsershtho.jpg
জন্ম৭ মার্চ ১৯৪৯
মৃত্যু১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
পেশাপাকিস্তান সেনাবাহিনী
পরিচিতির কারণবীরশ্রেষ্ঠ
টীকা

বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর (ইংরেজি: Mohiuddin Jahangir) (৭ মার্চ ১৯৪৯ - ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর জন্ম ১৯৪৫ সালের ৬ মার্চ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামে। তিনি মুক্তিবাহিনীর ৭নং সেক্টরের একজন কর্মকর্তা ছিলেন। মহানন্দা নদীর তীরে শত্রুর প্রতিরক্ষা ভাঙ্গার প্রচেষ্টার সময় তিনি শহীদ হন। তাঁর উদ্যোগে মুক্তিবাহিনী ঐ অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। যার ফলাফলস্বরূপ মুক্তিবাহিনী প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করে এবং ওই অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত করে। তার সম্মানে ঢাকা সেনানিবাসের প্রধান ফটকের নাম "শহীদ জাহাঙ্গীর গেট" নামকরণ করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদক বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। [১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ১৯৪৯ সালের ৭ মার্চ বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আবদুল মোতালেব হাওলাদার ছিলেন কৃষক এবং মা সাফিয়া বেগম ছিলেন গৃহিণী। মহিউদ্দীনরা তিন বোন তিন ভাই।[২] দাদা আবদুর রহিম হাওলাদার ছিলেন প্রতাপশালী ব্যক্তি। পিতার আর্থিক দৈন্যতার কারণে মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে মামার বাড়ি মুলাদি উপজেলার পাতারচর গ্রামে যান জাহাঙ্গীর। পাতারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৫৩ সালে তার শিক্ষাজীবনের সূচনা হয়। মুলাদি মাহমুদ জান পাইলট হাইস্কুল থেকে ১৯৬৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৬৬ তে তিনি বরিশাল বি.এম (ব্রজমোহন) কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।[৩]

ছাত্র হিসেবে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বেশ মেধাবী ছিলেন৷ খেলাধুলার পাশাপাশি তিনি ছিলেন রাজনীতি সচেতন৷ কলেজ জীবনেই তিনি পাঠ করেন লেনিন, মাও-সেতুং, চে গুয়েভারা মতো ব্যক্তির সংগ্রামী জীবনের গল্প ও রাজনৈতিক দর্শন৷ তিনি মাষ্টার দা সূর্যসেনের জীবনীগ্রন্থ, ক্ষুদীরামের ফাঁসী, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা, চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জীবনীসহ বহু গ্রন্থ নিয়মিত পড়তেন ।

উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বিমান বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন, কিন্তু চোখের অসুবিধা থাকায় ব্যর্থ হন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৮’র ২ জুন তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে কমিশন লাভ করেন। সেনাবাহিনীতে তার নম্বর ছিল PSS-১০৪৩৯। তিনি মিলিটারি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং, রিসালপুর থেকে অফিসার বেসিক কোর্স-২৯ এবং ইনফেন্ট্রি স্কুল অব ট্যাকটিস থেকে অফিসার উইপন কোর্স সম্পন্ন করেন। সর্বশেষ ১৯৬৯ সালে আগস্ট মাসের শেষের দিকে এক মাসের ছুটিতে দেশে ফেরেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় তিনি পাকিস্তানে ১৭৩ নম্বর ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ানে পাকিস্তান – চীন সংযোগকারী মহাসড়ক নির্মাণে কর্তব্যরত ছিলেন। দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি ছুটে এসেছিলেন পাকিস্তানের দুর্গম এলাকা অতিক্রম করে সঙ্গে মাত্র একটি পিস্তল নিয়ে। ১০ জুন তিনি কয়েকদিনের ছুটি নেন এবং ফিরে পশ্চিম পাকিস্তানের রিসালপুর যান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তান সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের দৃষ্টি এড়িয়ে শিয়ালকোট সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় এলাকায় প্রবেশ করেন। প্রথমেই গেলেন নিকটবর্তী বিএসএফের ব্যাটালিয়ান হেড কোয়ার্টারে৷ সেখান থেকে দিল্লি, এরপর কলকাতা৷ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে চারজন বাঙালি সামরিক অফিসার পালিয়ে এসেছেন শুনে বাঙালি, মুক্তিবাহিনী ও বাঙালি শরণার্থীদের প্রাণে বিপুল উত্সাহ জাগল৷ মুক্তিযুদ্ধের চিফ কমান্ডার কর্নেল ওসমানী যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কলকাতায় এলেন এই পাঁচ বীরকে অভ্যর্থনা দেয়ার জন্য৷ ভারত হতে পরে তিনি বাংলাদেশের সীমান্তে পৌঁছেন। তবে পাকিস্তানে আটকে পড়া আরো তিনজন অফিসারসহ তিনি পালিয়ে যান ও পরে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মেহেদীপুরে মুক্তিবাহিনীর ৭নং সেক্টরে সাব সেক্টর কমান্ডার হিসাবে যোগ দেন ৩ জুলাই। তিনি সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হকের অধীনে যুদ্ধ করেন। তাঁদের আক্রমণ এত প্রবল ও ত্রাস সৃস্টিকারী ছিলো যে, একবার একটি শত্রু লাইনের উপর হামলা চালাবার পূর্ব মূহুর্তে প্রায় সহস্রাধিক শত্রুসেনা প্রাণের ভয়ে প্রতিরক্ষা ব্যুহ ছেড়ে চলে যান। বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখানোর কারণে তাঁকে রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের দায়িত্ব দেয়া হয়। শহরটি দখলের জন্য সেক্টর কমান্ডার এ.এন.এম. নূরুজ্জামান তিনটি দল গঠন করেন। প্রথম দলের নেতৃত্ব দেন মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসকে। দ্বিতীয় দলের দায়িত্ব দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা রশীদকে। তৃতীয় দলের দায়িত্ব পান মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর আনুমানিক ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশ্চিমে বারঘরিয়ায় অবস্থান নেন। ১১ ডিসেম্বর সেখানে ভারতীয় বাহিনীর আর্টিলারীর গোলাবর্ষণ করার কথা ছিলো। কিন্তু সেটি হয়নি। পরবর্তী দুইদিন ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর একাধিকবার ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে ব্যার্থ হন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতা ছাড়াই শত্রুদের অবস্থানে আক্রমণ করবেন। এবং তিনি সেটিই করেন। [৪] স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বিজয় সুনিশ্চিত করেই তিনি শহীদ হয়েছিলেন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ আঙিনায় সমাহিত করা হয়।

যেভাবে শহীদ হলেন

ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও মেজর নাজমুল হকের সমাধি

১০ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর, লেফটেন্যান্ট কাইয়ুম, লেফটেন্যান্ট আউয়াল ও ৫০ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধা চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশ্চিমে বারঘরিয়া এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করেন। ১৪ ডিসেম্বর ভোরে মাত্র ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বারঘরিয়া এলাকা থেকে ৩/৪ টি দেশী নৌকায় করে রেহাইচর এলাকা থেকে মহানন্দা নদী অতিক্রম করেন। নদী অতিক্রম করার পর উত্তর দিক থেকে একটি একটি করে প্রত্যেকটি শত্রু অবস্থানের দখল নিয়ে দক্ষিণে এগোতে থাকেন। তিনি এমনভাবে আক্রমণ পরিকল্পনা করেছিলেন যেন উত্তর দিক থেকে শত্রু নিপাত করার সময় দক্ষিণ দিক থেকে শত্রু কোনকিছু আঁচ করতে না পারে। এভাবে এগুতে থাকার সময় জয় যখন প্রায় সুনিশ্চিত তখন ঘটে বিপর্যয়। হঠাৎ বাঁধের উপর থেকে ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্সের ৮/১০ জন সৈনিক দৌড়ে চর এলাকায় এসে যোগ দেয়। এরপরই শুরু হয় পাকিস্তান বাহিনীর অবিরাম ধারায় গুলিবর্ষন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর জীবনের পরোয়া না করে সামনে এগিয়ে যান। যখন আর একটি মাত্র শ্ত্রু অবস্থান বাঁকি রইল এমন সময় মুখোমুখি সংঘর্ষে বাংকার চার্জে শত্রুর বুলেটে এসে বিদ্ধ হয় জাহাঙ্গীরের কপালে। শহীদ হন তিনি। [৫]

সমাধি

১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের মৃতদেহ ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ প্রাঙ্গনে আনা হয়। অসংখ্য স্বাধীনতা প্রেমিক জনগণ, ভক্ত মুক্তিযোদ্ধা, অগণিত মা-বোনের নয়ন জলের আর্শীবাদে সিক্ত করে তাকে এখানে সমাহিত করা হয়।।[৬]

পুরস্কার ও সম্মাননা

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদক বীরশ্রেষ্ঠ পদক দেয়া হয় মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরকে। বরিশালের নিজ গ্রামের নাম তাঁর দাদার নামে হওয়ায় পরিবার ও গ্রামবাসীর ইচ্ছে অনুসারে তাঁর ইউনিয়নের নাম 'আগরপুর' পরিবর্তন করে 'মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর' ইউনিয়ন করা হয়েছে৷ সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে বরিশাল জেলা পরিষদ ৪৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বীরশ্রেষ্ঠর পরিবারের দান করা ৪০ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মাণ করছে বীরশ্রষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার৷ স্বরূপনগরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর কলেজ তার নামে অনুসারে রাখা হয়েছে।[৭]

চিত্রাবলী

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ২১-১২-২০১২
  2. "আমাদের 'বীরশ্রেষ্ঠ' মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর"Amader Barisal। 14/12/2016। সংগ্রহের তারিখ 24/12/2016  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. "Jahangir, Birsrestha Mahiuddin - Banglapedia"en.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১৭ 
  4. বীরশ্রেষ্ঠ, জাহানারা ইমাম। গণ প্রকাশনী। ১৩৯১। পৃষ্ঠা ৩১। 
  5. বরিশালনিউজ ডট কম
  6. সালাউদ্দিন, মোহাম্মদ (২৬ মার্চ, ২০১০ইং)। "শাহ নিয়ামতুল্লাহ (রঃ) এর মাজার"। গৌড়বঙ্গ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর প্রাচীন নিদর্শন (2 সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: জাতীয় সাহিত্য পরিষদ। পৃষ্ঠা 101।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. "PM: Reject those involved in destructive politics"Dhaka Tribune। UNB। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৫ 

বহি:সংযোগ