অর্জুন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করেছে
Bangali ind (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
==যুদ্ধ শিক্ষা==
==যুদ্ধ শিক্ষা==
[[অর্জুন]] যুদ্ধ শিক্ষা লাভ করেন গুরু দ্রৌণাচার্যের কাছে। গুরু দ্রোণ [[অর্জুন]] এবং তার একমাত্র ছেলে [[অশ্বত্থামা|অশ্বত্থামাকে]] বেশ যত্ন এর সাথে ধনু বিদ্যা শিখিয়েছেন। সেই সময় [[অর্জুন]] তাদের মধ্যে সবার শ্রেষ্ঠ ছিলেন। [[অর্জুন]] ছিলেন কৌরব ও পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যের প্রিয়তম শিষ্য। গুরুদক্ষিণা স্বরূপ দ্রোণাচার্য যখন পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের বন্দিত্ব চান,তখন মূলত অর্জুনের বীরত্বতেই তা সম্ভব হয়। পাণ্ডবদের শৌর্যবীর্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে ধৃতরাষ্ট্র ও তাঁর পুত্ররা ওঁদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন জেনে পাণ্ডবরা বেশ কিছুদিন ছদ্মবেশে ছিলেন।<ref>অমর সাহিত্যঃ মহা ভারত</ref>
[[অর্জুন]] যুদ্ধ শিক্ষা লাভ করেন গুরু দ্রৌণাচার্যের কাছে। গুরু দ্রোণ [[অর্জুন]] এবং তার একমাত্র ছেলে [[অশ্বত্থামা|অশ্বত্থামাকে]] বেশ যত্ন এর সাথে ধনু বিদ্যা শিখিয়েছেন। সেই সময় [[অর্জুন]] তাদের মধ্যে সবার শ্রেষ্ঠ ছিলেন। [[অর্জুন]] ছিলেন কৌরব ও পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যের প্রিয়তম শিষ্য। গুরুদক্ষিণা স্বরূপ দ্রোণাচার্য যখন পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের বন্দিত্ব চান,তখন মূলত অর্জুনের বীরত্বতেই তা সম্ভব হয়। পাণ্ডবদের শৌর্যবীর্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে ধৃতরাষ্ট্র ও তাঁর পুত্ররা ওঁদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন জেনে পাণ্ডবরা বেশ কিছুদিন ছদ্মবেশে ছিলেন।<ref>অমর সাহিত্যঃ মহা ভারত</ref>
==বিয়ে==
==বিবাহ==
[[অর্জুন]] ও তার চার ভাই তাদের মাতার সাথে বনবাসে গেলে সেখানে তারা ঘটনাক্রমে দ্রৌপদ রাজার একমাত্র কন্যা [[দ্রৌপদী|দ্রৌপদীর ]] স্বয়ম্বরসভায় ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। আর সেখানে অন্য সব রাজকুমারদের সাথে [[দুর্যোধন]], তার মামা শকুনি এবং [[কর্ণ]] উপস্থিত থাকেন। সেখানে দ্রৌপদ রাজার এক অন্য রকম স্বয়ম্বরসভার আয়োজন করেন। আর সেটা বলেন তার একমাত্র পুত্র ধৃষ্টদ্যুম্ন। আর সেই নিয়ম হল চক্রমধ্য-মৎস্যকে বিদ্ধ করতে হবে। সেখানে যে ধনুক ছিল তার ভার বহন করা এত সম্ভব ছিল না। তাদের মধ্যে [[কর্ণ]] সেই ধনুক উঠাতে পারতেন। কিন্থু [[দ্রৌপদী]] কোন সুত পুত্রকে বিবাহ করবেন না বলে জানান। আর সেই কারনে [[কর্ণ]] এই ধনুক উঠালেন না। তারপরে [[শ্রীকৃষ্ণ]] এর অণুরোধে থাকা সেখানে ব্রাক্ষ্মনদের সেই ধনুক উঠানোর জন্য অণুরোধ করেন ধৃষ্টদ্যুম্ন। আর তখন ছদ্মবেশে থাকে [[অর্জুন]] সেই চক্রমধ্য-মৎস্যকে বিদ্ধ করতে সক্ষম হন এবং পরে [[দ্রৌপদী|দ্রৌপদীকে]] বিয়ে করেন। কিন্তু পরে তারা পাঁচ ভাই একসাথে এলে তাদের মাতা [[কুন্তি]] তখন ধ্যানে ছিলেন। আর তখন [[ভীম]] বলেন তারা কি এনেছেন। [[কুন্তি]] কিছু না দেখে বলেন '''যা এনেছো তা তোমরা পাঁচ ভাই মিলে ভাগ করে নাও'''। তার এই কথার সাথে শেষ পর্যন্ত মহামুনি ব্যাসদেব এর কথা অনুসারে তারা পাঁচ ভাই মিলে [[দ্রৌপদী|দ্রৌপদীকে ]] বিয়ে করেন। পরে [[নারদ]] আরো একটা সমাধান করে দেন, আর তা হল [[দ্রৌপদী]] যে সময়ে এক ভ্রাতার সঙ্গে থাকছেন, সেই সময় অন্য কোনও ভ্রাতা তাঁদের শয়ন-গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন না। তারপরেও অবশ্য [[অর্জুন]] আরও তিনজনকে বিবাহ করেছিলেন। এঁরা হলেন - কৌরব্যনাগের কন্যা উলুপী (ইনি পূর্ব-বিবাহিতা ছিলেন), মণিপুররাজ চিত্রবাহনের কন্যা চিত্রাঙ্গদা এবং কৃষ্ণ ভগিনী সুভদ্রা। তার চার পুত্রের নাম হল শ্রুতকীর্তি (কৃষ্ণার গর্ভজাত), ইরাবান্ (উলুপীর গর্ভজাত), বভ্রুবাহন (চিত্রাঙ্গদার গর্ভজাত) ও [[অভিমন্যু]] (সুভদ্রার গর্ভজাত)।<ref>অভিমন্যু</ref>
[[অর্জুন]] ও তার চার ভাই তাদের মাতার সাথে বনবাসে গেলে সেখানে তারা ঘটনাক্রমে দ্রৌপদ রাজার একমাত্র কন্যা [[দ্রৌপদী|দ্রৌপদীর ]] স্বয়ম্বরসভায় ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। আর সেখানে অন্য সব রাজকুমারদের সাথে [[দুর্যোধন]], তার মামা শকুনি এবং [[কর্ণ]] উপস্থিত থাকেন। সেখানে দ্রৌপদ রাজার এক অন্য রকম স্বয়ম্বরসভার আয়োজন করেন। আর সেটা বলেন তার একমাত্র পুত্র ধৃষ্টদ্যুম্ন। আর সেই নিয়ম হল চক্রমধ্য-মৎস্যকে বিদ্ধ করতে হবে। সেখানে যে ধনুক ছিল তার ভার বহন করা এত সম্ভব ছিল না। তাদের মধ্যে [[কর্ণ]] সেই ধনুক উঠাতে পারতেন। কিন্থু [[দ্রৌপদী]] কোন সুত পুত্রকে বিবাহ করবেন না বলে জানান। আর সেই কারনে [[কর্ণ]] এই ধনুক উঠালেন না। তারপরে [[শ্রীকৃষ্ণ]] এর অণুরোধে থাকা সেখানে ব্রাক্ষ্মনদের সেই ধনুক উঠানোর জন্য অণুরোধ করেন ধৃষ্টদ্যুম্ন। আর তখন ছদ্মবেশে থাকে [[অর্জুন]] সেই চক্রমধ্য-মৎস্যকে বিদ্ধ করতে সক্ষম হন এবং পরে [[দ্রৌপদী|দ্রৌপদীকে]] বিয়ে করেন। কিন্তু পরে তারা পাঁচ ভাই একসাথে এলে তাদের মাতা [[কুন্তি]] তখন ধ্যানে ছিলেন। আর তখন [[ভীম]] বলেন তারা কি এনেছেন। [[কুন্তি]] কিছু না দেখে বলেন '''যা এনেছো তা তোমরা পাঁচ ভাই মিলে ভাগ করে নাও'''। তার এই কথার সাথে শেষ পর্যন্ত মহামুনি ব্যাসদেব এর কথা অনুসারে তারা পাঁচ ভাই মিলে [[দ্রৌপদী|দ্রৌপদীকে ]] বিয়ে করেন। পরে [[নারদ]] আরো একটা সমাধান করে দেন, আর তা হল [[দ্রৌপদী]] যে সময়ে এক ভ্রাতার সঙ্গে থাকছেন, সেই সময় অন্য কোনও ভ্রাতা তাঁদের শয়ন-গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন না। তারপরেও অবশ্য [[অর্জুন]] আরও তিনজনকে বিবাহ করেছিলেন। এঁরা হলেন - কৌরব্যনাগের কন্যা উলুপী (ইনি পূর্ব-বিবাহিতা ছিলেন), মণিপুররাজ চিত্রবাহনের কন্যা চিত্রাঙ্গদা এবং কৃষ্ণ ভগিনী সুভদ্রা। তার চার পুত্রের নাম হল শ্রুতকীর্তি (কৃষ্ণার গর্ভজাত), ইরাবান্ (উলুপীর গর্ভজাত), বভ্রুবাহন (চিত্রাঙ্গদার গর্ভজাত) ও [[অভিমন্যু]] (সুভদ্রার গর্ভজাত)।<ref>অভিমন্যু</ref>



১০:০২, ১৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বালির রাজপথে অর্জুনের মূর্তি

অর্জুন (দেবনাগরী: अर्जुन) মহাভারত মহাকাব্যের একটি চরিত্র। তিনি পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম। 'অর্জুন' শব্দের অর্থ 'উজ্জ্বল', 'জাজ্বল্যমান', 'সাদা' অথবা 'রূপালি'।[১] তিনি একজন অব্যর্থ ধনুর্বিদ। তাকে পার্থ এবং ধনঞ্জয় নামেও ডাকা হয়। অর্জুন এর আরো বেশ কিছু নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু নাম হল – অরিমর্দন, কপিকেতন, কপিধ্বজ, কিরীটী, কৃষ্ণসখ, কৃষ্ণসারথি, কৌন্তেয়, গাণ্ডিবধন্বা, গাণ্ডিবী, গুঁড়াকেশ, চিত্রযোধী, জিষ্ণু, তৃতীয় পাণ্ডব, ধনঞ্জয়, পার্থ, ফল্গুন, ফাল্গুনি, বিজয়, বীভৎসু, শব্দবেধী, শব্দভেদী, শুভ্র, শ্বেতবাহ, শ্বেতবাহন, সব্যসাচী।[২] তার মা কুন্তি তাকে মন্ত্রবলে দেবরাজ ইন্দ্রের নিকট হতে লাভ করেন। তিনি দ্রোণাচার্য হতে ধনুবিদ্যা লাভ করেন। পাণ্ডব ভ্রাতৃগণের মধ্যে তাঁর স্থান তৃতীয়। অর্জুন পাণ্ডু ও তাঁর জ্যৈষ্ঠা মহিষী কুন্তীর পুত্র। অর্জুনকে নারায়ণের কনিষ্ঠ ভ্রাতা নর-নারায়ণের অবতার মনে করা হয়।[৩][৪] মহাভারতে তাঁকে 'চতুর্থ কৃষ্ণ' বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।[৫] কৃষ্ণ ছিলেন তাঁর প্রিয় বন্ধু তথা শ্যালক। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সূচনাপর্বে কৃষ্ণ তাঁকে যে উপদেশাবলি প্রদান করেন তাই ভগবদ্গীতা নামে পরিচিত।

জন্ম

অর্জুনের পিতার নাম পান্ডু ও মাতার নাম কুন্তিপান্ডু রাজা কিন্দিম মুণিকে হত্যার কারনে কোনদিন কোন স্ত্রী লোকের সাথে সহবাস করতে পারবেন না অভিশাপ পান। তাই তিনি বনবাসে গেলেন তার দুই স্ত্রীকে নিয়ে। সেখানে একদিন পান্ডু রাজার প্রথম স্ত্রী বলেন তিনি ঋষি দুর্বাসার কাছ থেকে এমন বর পেয়েছিলেন যে কুন্তি একটা মন্রের দ্বারা যেকোন দেবতাকে আহ্বান করতে পারবেন এবং তার কাছে থেকে একটি সন্তান লাভ করতে পারবেন। সেই বর দান সুরূপ পান্ডু রাজা এবং কুন্তি ভগবান ইন্দ্রের কাছ থেকে তার মত বলবান এবং তেজস্বী একটি ছেলে প্রথনা করেন। ইন্দ্র এর বর দান স্বরূপ তারা অর্জুন কে বর দেন।

যুদ্ধ শিক্ষা

অর্জুন যুদ্ধ শিক্ষা লাভ করেন গুরু দ্রৌণাচার্যের কাছে। গুরু দ্রোণ অর্জুন এবং তার একমাত্র ছেলে অশ্বত্থামাকে বেশ যত্ন এর সাথে ধনু বিদ্যা শিখিয়েছেন। সেই সময় অর্জুন তাদের মধ্যে সবার শ্রেষ্ঠ ছিলেন। অর্জুন ছিলেন কৌরব ও পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যের প্রিয়তম শিষ্য। গুরুদক্ষিণা স্বরূপ দ্রোণাচার্য যখন পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের বন্দিত্ব চান,তখন মূলত অর্জুনের বীরত্বতেই তা সম্ভব হয়। পাণ্ডবদের শৌর্যবীর্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে ধৃতরাষ্ট্র ও তাঁর পুত্ররা ওঁদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন জেনে পাণ্ডবরা বেশ কিছুদিন ছদ্মবেশে ছিলেন।[৬]

বিবাহ

অর্জুন ও তার চার ভাই তাদের মাতার সাথে বনবাসে গেলে সেখানে তারা ঘটনাক্রমে দ্রৌপদ রাজার একমাত্র কন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ম্বরসভায় ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। আর সেখানে অন্য সব রাজকুমারদের সাথে দুর্যোধন, তার মামা শকুনি এবং কর্ণ উপস্থিত থাকেন। সেখানে দ্রৌপদ রাজার এক অন্য রকম স্বয়ম্বরসভার আয়োজন করেন। আর সেটা বলেন তার একমাত্র পুত্র ধৃষ্টদ্যুম্ন। আর সেই নিয়ম হল চক্রমধ্য-মৎস্যকে বিদ্ধ করতে হবে। সেখানে যে ধনুক ছিল তার ভার বহন করা এত সম্ভব ছিল না। তাদের মধ্যে কর্ণ সেই ধনুক উঠাতে পারতেন। কিন্থু দ্রৌপদী কোন সুত পুত্রকে বিবাহ করবেন না বলে জানান। আর সেই কারনে কর্ণ এই ধনুক উঠালেন না। তারপরে শ্রীকৃষ্ণ এর অণুরোধে থাকা সেখানে ব্রাক্ষ্মনদের সেই ধনুক উঠানোর জন্য অণুরোধ করেন ধৃষ্টদ্যুম্ন। আর তখন ছদ্মবেশে থাকে অর্জুন সেই চক্রমধ্য-মৎস্যকে বিদ্ধ করতে সক্ষম হন এবং পরে দ্রৌপদীকে বিয়ে করেন। কিন্তু পরে তারা পাঁচ ভাই একসাথে এলে তাদের মাতা কুন্তি তখন ধ্যানে ছিলেন। আর তখন ভীম বলেন তারা কি এনেছেন। কুন্তি কিছু না দেখে বলেন যা এনেছো তা তোমরা পাঁচ ভাই মিলে ভাগ করে নাও। তার এই কথার সাথে শেষ পর্যন্ত মহামুনি ব্যাসদেব এর কথা অনুসারে তারা পাঁচ ভাই মিলে দ্রৌপদীকে বিয়ে করেন। পরে নারদ আরো একটা সমাধান করে দেন, আর তা হল দ্রৌপদী যে সময়ে এক ভ্রাতার সঙ্গে থাকছেন, সেই সময় অন্য কোনও ভ্রাতা তাঁদের শয়ন-গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন না। তারপরেও অবশ্য অর্জুন আরও তিনজনকে বিবাহ করেছিলেন। এঁরা হলেন - কৌরব্যনাগের কন্যা উলুপী (ইনি পূর্ব-বিবাহিতা ছিলেন), মণিপুররাজ চিত্রবাহনের কন্যা চিত্রাঙ্গদা এবং কৃষ্ণ ভগিনী সুভদ্রা। তার চার পুত্রের নাম হল শ্রুতকীর্তি (কৃষ্ণার গর্ভজাত), ইরাবান্ (উলুপীর গর্ভজাত), বভ্রুবাহন (চিত্রাঙ্গদার গর্ভজাত) ও অভিমন্যু (সুভদ্রার গর্ভজাত)।[৭]

বনবাস

পাণ্ডবগণ তাদের নতুন রাজ্যে অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করলে সেখান থেকে মামা শকুনির পরামশে তক্ষক নাগ পাণ্ডবদের সকল অশ্ব নিয়ে পালিয়ে যায়। সেই অশ্ব রক্ষা করার জন্য অর্জুন অস্ত্র আনতে যুধিষ্ঠিরদ্রৌপদী এর শয়ন-গৃহে ঢুকতে বাধ্য হলেন। যুধিষ্ঠির এতে নিয়ম ভঙ্গ হয় নি বললেও, অর্জুন বনবাসে চলে যান। সেই বনবাসে বা ব্রহ্মচর্য - কোনওটাই পরিপূর্ণভাবে তিনি পালন করেন নি। সেই সময়ে অর্জুন একে একে উলুপী, চিত্রাঙ্গদা সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এবং চিত্রঙ্গদা বিয়ে করেন। উলুপীর আমন্ত্রণে তার সঙ্গে সহবাস করলেও পূর্ব-বিবাহিতা বলে অর্জুন প্রথমে তাকে বিয়ে করেন নি। পরে অর্জুন উলুপীকেও ভার্যার সম্মান দেন। পরে অর্জুন তার মিত্র কৃষ্ণ এর সাহায্যে কৃষ্ণবলরাম এর একমাত্র বোন সুভদ্রাকে বিয়ে করেন। অগ্নিদেবের হিতার্থে খাণ্ডব অরণ্য যাতে কৃষ্ণঅর্জুন দহনে করতে পারেন,তারজন্য বরুণদেব অর্জুনকে একটি রথ আর সেই সঙ্গে বিখ্যাত গাণ্ডীবধনু দিয়েছিলেন। এই অস্ত্র পেয়ে অর্জুন বিশেষভাবে বলশালী হন।[৮]

দ্যূতক্রীড়া

দ্যূতক্রীড়ায় পরাজিত হয়ে পাণ্ডবরা যখন বনবাসে গিয়েছিলেন, তখন যুধিষ্ঠিরের আদেশে দিব্যাস্ত্রলাভের জন্য অর্জুন ইন্দ্রলোকে যান। ইন্দ্র তাঁকে মহাদেবের আরাধনা করতে বলেন। আর তাই অর্জুন মহাদেবের কাছ থেকে তার পাশুপত অস্ত্র লাভ করেন। এরপর ইন্দ্র নিজেও অর্জুনকে নানাবিধ দিব্যাস্ত্রে শিক্ষা দেন। ইন্দ্রের নির্দেশে ইন্দ্রসখা চিত্রসেন অর্জুনকে গীত ও নৃত্যে পারদর্শী করেন। সেইখানে নৃত্যরতা অপ্সরাদের মধ্যে উর্বশীর দিকে অর্জুন বারংবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করছেন দেখে, ইন্দ্র উর্বশীকে অর্জুনের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। অর্জুন কামনা বসে তার দিকে তাকান নি, উর্বশীকে পুরু বংশের জননী হিসেবে দেখছিলেন। কিন্তু অর্জুন তাকে প্রত্যাখ্যান করায় উর্বশী অপমানিত হয়ে অর্জুনকে অভিশাপ দিলেন যে, অর্জুনকে নর্তকরূপে স্ত্রীলোকদের মধ্যে নপুংশক হয়ে থাকবেন। উর্বশীর এই অভিশাপ পাণ্ডবরা যখন বিরাটরাজের সভায় অজ্ঞাতবাস করছিলেন,তখন খুব কাজে লেগেছিল। সেখানে অর্জুন বৃহন্নলা সেজে বিরাটরাজের কন্যাকে নৃত্য, গীত ইত্যাদি শিক্ষা দিয়েছেন। [৯]

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন তার রথের সারথি নিয়োগ করেন তার মিত্র কৃষ্ণ কে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন কৌরবদের অনেক সেনাকে হত্যা করেন। তার হাতে কৌরবদের সেনাপতি ভীষ্ম কে শরশয্যায় নিপাতিত করেছেন। অবশ্য তার জন্য তাকে শিখণ্ডীর সাহায্য নিতে হয়েছিল। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পাণ্ডবদের জয়ের অন্যতম কারণ হল অর্জুনের রণনৈপুণ্য। তাছাড়া অর্জুন ভগদত্ত, জয়দ্রথ, কর্ণকে তিনি বধ করেছেন। কিন্তু ভীষ্মকে শরশয্যায় নিপাতিত করতে তাঁকে শিখণ্ডীকে সামনে রাখতে হয়েছে। এই অন্যায় যুদ্ধের জন্য বসু দেবতাগণ অর্জুনকে নরকবাসের অভিশাপ দিয়েছিলেন।

শেষ জীবন ও মৃত্যু

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শেষে যুধিষ্ঠিরের অশ্বমেধ যজ্ঞ করেন। অশ্বমেধ যজ্ঞের সময় যজ্ঞিয় অশ্বকে নিয়ে বহুদেশ জয় করে যখন মণিপুরে পোঁছলেন,তখন নিজপুত্র বভ্রুবাহনের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে অর্জুন এই শাপমুক্ত হন। কৃষ্ণের মৃত্যুর পর অর্জুন তাঁর শক্তি হারাতে শুরু করলেন। একদল গোপালক দস্যুরা যখন যাদববিধবাদের হরণ করে নিয়ে যাচ্ছে, তখন তাঁদের রক্ষা করার জন্য বহু চেষ্টা করেও দিব্যাস্ত্রের প্রয়োগ পদ্ধতি অর্জুন স্মরণ করতে পারলেন না। দস্যুরা সফলকাম হল। অর্জুন যখন ব্যাসদেবকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন, তখন অর্জুনকে তিনি বললেন দুঃখ না পেতে। অর্জুনদের কাজ শেষ হয়েছে, এখন মহাপ্রস্থানের সময় আসছে। মহাপ্রস্থানের পথে কৃষ্ণা,সহদেব ও নকুলের পরে অর্জুনের মৃত্যু হয়।

পাদটীকা

  1. Maharishi Mahesh Yogi on the Bhagavad-Gita, a New Translation and Commentary, Chapter 1-6. Penguin Books, 1969, p 31 (v 4)
  2. [[অর্জুনের নাম]]
  3. Mahābhārata, Adi Parva, Section I
  4. Devi Bhagawatam, fourth book, chapter XXII
  5. Hiltebeitel, Alf (১৯৯০)। The ritual of battle: Krishna in the Mahābhārata। Albany, N.Y: State University of New York Press। আইএসবিএন 0-7914-0249-5  p61
  6. অমর সাহিত্যঃ মহা ভারত
  7. অভিমন্যু
  8. কৃষ্ণচরিত্র - প্রথম খণ্ড
  9. দ্যূতক্রীড়া

বহিঃসংযোগ