রেশম চাষ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নিবন্ধ সম্প্রসারণ বানান/ব্যাকরণ সংশোধন
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[চিত্র:Silkworm_&_cocoon.jpg|thumb|200x200px|রেশমপোকা এবং কোকুন]]
[[চিত্র:Silkworm_&_cocoon.jpg|thumb|200x200px|রেশমপোকা এবং কোকুন]]
রেশম সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যে [[রেশম|রেশমপোকা]] প্রতিপালনকে '''রেশম চাষ''' বলে। রেশম চাষের [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]] শব্দ Sericulture - এর আভিধানিক অর্থ Culture of Sericine বা সেরিসিন নামক এক ধরনের [[প্রোটিন]] এর লালন।<ref>{{cite book |title=Chinese Silk: A Cultural History |last=Vainker |first=Shelagh |authorlink= |year=2004 |publisher=[[Rutgers University Press]] |location= |isbn=0813534461 |page=20}}</ref> এই সেরিসিন হলো রেশমের ‍মূল গাঠনিক পদার্থ। অর্থাত যে জীব সেরিসিন নামক প্রোটিন বস্তু প্রস্তুত করে তার লালন-পালন ই হচ্ছে সেরিকালচার বা রেশম চাষ। রেশম কীট ই ব্যবহার যোগ্য রেশম তৈরি করে থাকে।
রেশম সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যে [[রেশম|রেশমপোকা]] প্রতিপালনকে '''রেশম চাষ''' বলে। এটি ফলিত প্রাণিবিজ্ঞান এর অন্যতম একটি শাখা। রেশম চাষের [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]] শব্দ Sericulture - এর আভিধানিক অর্থ Culture of Sericine বা সেরিসিন নামক এক ধরনের [[প্রোটিন]] এর লালন।<ref>{{cite book |title=Chinese Silk: A Cultural History |last=Vainker |first=Shelagh |authorlink= |year=2004 |publisher=[[Rutgers University Press]] |location= |isbn=0813534461 |page=20}}</ref> এই সেরিসিন হলো রেশমের ‍মূল গাঠনিক পদার্থ। অর্থাত যে জীব সেরিসিন নামক প্রোটিন বস্তু প্রস্তুত করে তার লালন-পালন ই হচ্ছে সেরিকালচার বা রেশম চাষ।


== ইতিহাস ==
== ইতিহাস ==

১১:১০, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

চিত্র:Silkworm & cocoon.jpg
রেশমপোকা এবং কোকুন

রেশম সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যে রেশমপোকা প্রতিপালনকে রেশম চাষ বলে। এটি ফলিত প্রাণিবিজ্ঞান এর অন্যতম একটি শাখা। রেশম চাষের ইংরেজি শব্দ Sericulture - এর আভিধানিক অর্থ Culture of Sericine বা সেরিসিন নামক এক ধরনের প্রোটিন এর লালন।[১] এই সেরিসিন হলো রেশমের ‍মূল গাঠনিক পদার্থ। অর্থাত যে জীব সেরিসিন নামক প্রোটিন বস্তু প্রস্তুত করে তার লালন-পালন ই হচ্ছে সেরিকালচার বা রেশম চাষ।

ইতিহাস

খ্রিষ্ট জন্মের প্রায় ২০০০ বছর আগে চীন দেশে সর্বপ্রথম রেশম সুতা আবিস্কৃত হয়। এরপর প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার বছর পর্যন্ত চীনারা একচেটিয়াভাবে অত্যন্ত গোপনীয়নতার সাথে রেশমী সুতা ও রেশমী কাপড় তৈরি করত। খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় সাড়ে পাঁচশত বছর পর দুজন ইউরোপীয় পাদ্রী চুরি করে রেশম উৎপাদনের কৌশল শিখে নেন। এবং ইউরোপে কিছু রেশম পোকার ডিম ও তুঁত গাছের বীজ নিয়ে এসে রেশম চাষ শুরু করেন।[২] বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশ উন্নতমানের রেশম সুতা ও রেশম পোকার চাষ করে।

রেশম প্রস্তুতি

তুঁত চাষ পদ্ধতি

তুঁত গাছে রেশম পোকা

রেশম পোকার খাবার হল তুঁত গাছের পাতা। তুঁত গাছকে ইংরেজিতে মালবেরি গাছ বলে। তুঁত গাছ বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে এবং নাম ভিন্ন। বাংলাদেশের রেশম পোকারা যে তুঁত গাছের পাতা খায় তার নাম মোরাস অ্যালভা। বিভিন্ন অঞ্চল উপযোগী উন্নত জাতগুলি হল

  1. গাঙ্গেয় উপত্যকা (দোঁয়াশ) অঞ্চল - এস – ১ (মান্দালয়), এস ১৬৩৫
  2. লাল কাঁকুরে (মোরাম) অঞ্চল - সি ১৭৩০, সি-৭৬৩
  3. পার্বত্য অঞ্চল - বি সি ২৫৯ টি আর ১০, কোসেন এস ১৪৬
  4. সেচ এলাকা (সমতলভূমি) - এস-১, এস ১৬৩৫
  5. সেচবিহীন (সমতল ভূমি) - এস – ১, এস ৩৪, সি ১৭৩০

জমির অবস্থান অনুযায়ী জাত নির্বাচন করে, প্রয়োজনীয় তুঁতকাটিং ৪৫০ কোণে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়। সেচযুক্ত সমতলভূমিতে ২ ইঞ্চি x ২ ইঞ্চি দূরত্বে সারি করে লাগানো হয়। সেচবিহীন এলাকায় ৩ ফুট x ৩ ফুট দূরত্বে সারি করে ১.৫ ফুট x ১.৫ ফুট x ১.৫ ফুট মাপের গর্ত করে তাতে লাগানো হয়। মোরাম সমতলভূমিতেও তুঁত চারা এই ভাবে লাগানো হয়। সেচবিহীন পাহাড়ি এলাকায় উপরের পদ্ধতি অনুযায়ী কাটিং-এর বদলে চারা লাগানো হয়।

কাটিং মাঝারি আর্দ্রতা (স্যাঁতসেঁতে) এবং আচ্ছাদিত অবস্থায় রাখতে হবে। বিশেষ করে পরিবহনের সময় আঁটেসাটো আচ্ছাদন দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। কাটিং ৪৫০ কোণ করে মাটিতে পুঁততে হবে। লাগানোর পর মাঝেমাঝে ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে। প্রয়োজনীয় সেচ, নিড়ানি, মরে যাওয়া কাটিং বদল, রোগ প্রতিষেধক প্রয়োগ ইত্যাদি নানান কৃষি ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তা ছাড়া পাতার অধিক ফলন ও তার গুণগত মান কেবল মাত্র প্রজাতির উপর নির্ভর করে না। এর জন্য তুঁত চাষের সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা খুবই জরুরি।

রেশম মথ

রেশম তন্তু বা সুতা, রেশম মথ নামে এক ধরনের মথের লার্ভার লালাগ্রন্থি বা রেশ গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রসের তৈরি। এরা আর্থোপোডা পর্বের অন্তর্ভুক্ত ইনসেক্টা শ্রেণীর লেপিডটেরা বর্গের পতঙ্গ। রেশম পোকার ইংরেজি নাম সিল্ক ওর্য়াম। ওর্য়াম শব্দের অর্থ কীট। সিল্ক ওর্য়াম এর অর্থ দাঁড়ায় রেশম কীট। কৃমি জাতীয় প্রাণীদের কীট বলা হয়। আসলে এরা দেখতে কৃমির মত নয়। তবে এরা পূর্ণবয়স্ক হলে প্রজাপতির মত দেখায়। তাই কীট না বলে পোকা বলাই বরং ভাল। বিভিন্ন প্রজাতির রেশম মথ বিভিন্ন মানের রেশম সুতা তৈরি করে।

গুটি বা কোকুন

ডিম পাড়া

রেশম পোকার জীবনে চারটি পর্যায়। তা হল ডিম, শূককীট, মূককীট ও পূণাঙ্গ পোকা। পূর্ণাঙ্গ পোকার নাম মথ। পোকারা নিশাচর অর্থাৎ রাতের বেলায় চলাফেরা করে। পোকার রঙ উজ্জ্বল নয়। স্ত্রী মথ পাতা বা কাগজের উপর চরে বেড়ায়। মথ কাগজ বা পাতায় ৪০০- ৫০০ শ ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ ফ্যাকাশে হলুদ।

বৃদ্ধিদশা

প্রায় ১০ দিন পর ডিম ফুটে শূককীট বের হয়। শূককীট দুষ্টু ছেলের মত চঞ্চল। সে বেজায় ছুটোছুটি করে আর গ্রোগাসে গিলতে থাকে। তুঁত গাছের পাতা কুচি কুচি করে কেটে এদের খেতে দিতে হয়। শূককীট কয়দিন পর পর চারবার খোলস বদলায়। খোলস বদলালনোকে মোল্টিং বলে। মোল্টিং অর্থ ত্বক পরিবর্তন। শূককীট বড় হলে বাদামী লাল রঙের দেখায়।

পিউপা

শূককীট চতুর্থবার খোলস বদলানোর পর মূককীটে পরিণত হতে শুরু করে। এ সময় এদের খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। শূককীট, মূককীটকে যে বাঁশের ডালায় গালা হয় তার নাম চন্দ্রকী। চন্দ্রকীতে অনেক গুলি কুঠুরি থাকে। শূককীট দেহের ভিতরে একটি লম্বা রেশম গ্রন্থি থাকে। গ্রন্থিতে থাকে এক প্রকার রস। নালী দিয়ে এ রস মুখের বাইরে আসে। নালীর নাম স্পিনারেট। বাতাসের সংস্পর্শে রস শক্ত হয়ে যায়। মূককীট মিনিটে ৬৫ বার মুখ ঘুরিয়ে রস দিয়ে দেহের চারপাশে আবরণ তৈরি করে। এই রসকে সাধারণ কথায় মুখের লালা বলে।

কোকুন

সিল্ক বা রেশম সুতা

আবরণসহ মূককীটকে গুটি বলে। গুটির ইংরেজি নাম কোকুন। গুটির মধ্যে মুককীটের অদ্ভুত রূপান্তর ঘটে। এই পরিবর্তনকে মেটামরফসিস বলে। মূককীট পরিবর্তিত হয়ে সুন্দর মথের রূপ ধারণ করে। মথই রেশম পোকার পূর্ণাঙ্গ অবস্থা।[৩]

সুতা সংগ্রহ

মথ হবার আগেই গুটিকে বাষ্প বা গরম জলে রাখতে হয় । না হলে মথ গুটি কেটে বেরিয়ে যায়। গুটি কেটে গেলে সুতা নষ্ট হয়ে যায়। গুটি গরম পানিতে পড়লে এর সুতোর জট খুলে যায়। একটি গুটিতে ৪০০ – ৫০০ গজ সুতা থাকে। প্রায় ২৫০০০ গুটি থেকে ১ পাউন্ড সুতা পাওয়া যায়।

বহিঃসংযোগ

তথ্যসূত্র

  1. Vainker, Shelagh (২০০৪)। Chinese Silk: A Cultural HistoryRutgers University Press। পৃষ্ঠা 20। আইএসবিএন 0813534461 
  2. Barber, E. J. W. (১৯৯২)। Prehistoric textiles: the development of cloth in the Neolithic and Bronze Ages with special reference to the Aegean (reprint, illustrated সংস্করণ)। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 31। আইএসবিএন 978-0-691-00224-8। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১০ 
  3. Bezzina, Neville। "Silk Production Process"। Sense of Nature Research। 

  ব্যবহার করুন।