আবুল হোসেন (কবি): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
বিস্তারিত
+
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{Infobox person
{{Infobox person
|name= আবুল হোসেন
|name= আবুল হোসেন
| image =Replace this image male bn.svg
| image =
| office =
| order =
| term_start =
| term_end =
| succeeding =
| successor =
| birth_date = {{Birth date|১৯২২|০৮|১৫}}
| birth_date = {{Birth date|১৯২২|০৮|১৫}}
| birth_place = বাগেরহাট জেলা
| birth_place = বাগেরহাট জেলা
২৯ নং লাইন: ২৩ নং লাইন:
}}
}}


'''আবুল হোসেন''' বাংলাদেশের একজন কবি। ত্রিশের দশকে অবিভক্ত ভারতে তাঁর লেখালিখির সূত্রপাত। ৪০ দশকের বাংলা ভাষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি ছিলেন। তাঁর কর্মজীবনের অন্যতম স্বীকৃতির [[একুশে পদক]]।
'''আবুল হোসেন''' (আগস্ট ১৫, ১৯২২ - জুন ২৯, ২০১৪) বাংলাদেশের একজন কবি। ত্রিশের দশকে অবিভক্ত ভারতে তাঁর লেখালিখির সূত্রপাত। ৪০ দশকের বাংলা ভাষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি ছিলেন। তাঁর কর্মজীবনের অন্যতম স্বীকৃতির [[একুশে পদক]]।


== জন্ম ও শিক্ষাজীবন ==
== জন্ম ও শিক্ষাজীবন ==
আবুল হোসেন বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার আরুয়াডাঙা গ্রামে ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন।<ref>http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/254884</ref> তার মায়ের নাম মেহেরুন নেসা।<ref>http://www.gunijan.org.bd/GjProfDetails_action.php?GjProfId=213</ref> তাঁর শৈশব কাটে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণ নগরে, এরপর কলকাতায় ও পরবর্তীতে বাংলাদেশে। তিনি ১৯২৯ সালে সাত বছর বয়সে কৃষ্ণনগর কলিজিয়েট স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন।<ref>http://www.gunijan.org.bd/GjProfDetails_action.php?GjProfId=213</ref> ১৯৩৭ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন কুষ্টিয়া হাইস্কুল থেকে। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৪২ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক ও পরে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
আবুল হোসেন বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার আরুয়াডাঙা গ্রামে ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন।<ref name="prothom-alo1">{{cite web|author=নিজস্ব প্রতিবেদক |url=http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/254884 |title=কবি আবুল হোসেন চলে গেলেন |publisher=Prothom-alo.com |date=২৯ জুন ২০১৪ |accessdate=২৯ জুন ২০১৪}}</ref> তার মায়ের নাম মেহেরুন নেসা।<ref name="gunijan1">{{cite web|url=http://www.gunijan.org.bd/GjProfDetails_action.php?GjProfId=213 |title=:: Welcome to GUNIJAN :: The Eminent :: Largest electronic journal of bangladeshi eminents : |publisher=Gunijan.org.bd |date= |accessdate=২৯ জুন ২০১৪}}</ref> তাঁর শৈশব কাটে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণ নগরে, এরপর কলকাতায় ও পরবর্তীতে বাংলাদেশে। তিনি ১৯২৯ সালে সাত বছর বয়সে কৃষ্ণনগর কলিজিয়েট স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন।<ref name="gunijan1"/> ১৯৩৭ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন কুষ্টিয়া হাইস্কুল থেকে। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৪২ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক ও পরে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।


== কর্মজীবন ==
== কর্মজীবন ==
সরকারি চাকরি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। কর্মজীবনে তিনি উচ্চপ্রদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। কর্মজীবনের শুরুতে প্রথম তিনি কলকাতা আয়কর কমিশনারের অফিসে, এক্সামিনার অব অ্যাকাউন্টস পদে যোগ দেন। ভারত ভাগের পর তিনি ময়মনসিংহে সহকারী বিক্রয় কর অফিসার হিসেবে আসেন।এর দুই-আড়াই বছর পর ১৯৫০ সালের মাঝামাঝিতে তিনি ঢাকার রেডিও পাকিস্তানে একটি সমপর্যায়ের চাকরিতে যোগ দেন। এরপর তিনি ব্যাংককে সিটো পাবলিক ইনফরমেশন অফিসে ইন্টারন্যাশনাল স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর তিনি সেখান থেকে বাংলাদেশে ফিরে তিনি জনসংযোগ বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।<ref>http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/254884</ref>
সরকারি চাকরি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। কর্মজীবনে তিনি উচ্চপ্রদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। কর্মজীবনের শুরুতে প্রথম তিনি কলকাতা আয়কর কমিশনারের অফিসে, এক্সামিনার অব অ্যাকাউন্টস পদে যোগ দেন। ভারত ভাগের পর তিনি ময়মনসিংহে সহকারী বিক্রয় কর অফিসার হিসেবে আসেন।এর দুই-আড়াই বছর পর ১৯৫০ সালের মাঝামাঝিতে তিনি ঢাকার রেডিও পাকিস্তানে একটি সমপর্যায়ের চাকরিতে যোগ দেন। এরপর তিনি ব্যাংককে সিটো পাবলিক ইনফরমেশন অফিসে ইন্টারন্যাশনাল স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর তিনি সেখান থেকে বাংলাদেশে ফিরে তিনি জনসংযোগ বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।<ref name="prothom-alo1"/>


১৯৫৮ সালে তিনি প্রখ্যাত লেখক আকবর উদ্দিনের জেষ্ঠ কন্যা সাহানার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৯৫৮ সালে তিনি প্রখ্যাত লেখক আকবর উদ্দিনের জেষ্ঠ কন্যা সাহানার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।


== সাহিত্যকর্ম ==
== সাহিত্যকর্ম ==
তিনি কবিতাচর্চা শুরু করেছিলেন স্কুল জীবন থেকেই। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র পরিষদের সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির কার্যকরী পরিষদ, পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ডের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ ও বাংলা একাডেমীর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। রবীন্দ্র চর্চাকেন্দ্রের সভাপতি ছিলেন। তার গ্রন্থসংখ্যা ২৫টি। তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ নববসন্ত ১৯৪০ সালে প্রকাশিত হয়।<ref>http://mzamin.com/details.php?mzamin=MzAxOTg=&s=Mw==</ref>
তিনি কবিতাচর্চা শুরু করেছিলেন স্কুল জীবন থেকেই। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র পরিষদের সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির কার্যকরী পরিষদ, পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ডের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ ও বাংলা একাডেমীর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। রবীন্দ্র চর্চাকেন্দ্রের সভাপতি ছিলেন। তার গ্রন্থসংখ্যা ২৫টি। তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ নববসন্ত ১৯৪০ সালে প্রকাশিত হয়।<ref>{{cite web|author=Joint Collaboration of Manab Zamin IT Team and ZTech Communication(www.ztechbd.com) |url=http://mzamin.com/details.php?mzamin=MzAxOTg=&s=Mw== |title=Daily Manab Zamin &#124; নববসন্ত’র কবি আবুল হোসেন আর নেই |publisher=Mzamin.com |date=২৯ জুন ২০১৪ |accessdate=২৯ জুন ২০১৪}}</ref>


এরপর ১৯৬৯ সালে 'বিরস সংলাপ', ১৯৮২ সালে 'হাওয়া তোমার কি দুঃসাহস', ১৯৮৫ সালে 'দুঃস্বপ্ন থেকে দুঃস্বপ্নে', ১৯৯৭ সালে 'এখনও সময় আছে', ২০০০ সালে 'আর কিসের অপেক্ষা', ২০০৪ সালে 'রাজকাহিনী', ২০০৭ সালে 'আবুল হোসেনর ব্যঙ্গ কবিতা' ও গদ্যের বই 'দুঃস্বপ্নের কাল', ২০০৮ সালে 'প্রেমের কবিতা' ও 'কালের খাতায়', ২০০৯ সালে গদ্য 'স্বপ্ন ভঙ্গের পালা' বইগুলি প্রকাশিত হয়। তাঁর অনুবাদ করা কবিতাগুলি হচ্ছে- 'ইকবালের কবিতা', 'আমার জন্মভূমি', 'অন্য ক্ষেতের ফসল'। ২০০০ সালে তিনি 'আমার এই ছোট ভূবন', ২০০৫ সালে 'আর এক ভুবন' নামে দুটি স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ লিখেন। তাঁর অনুবাদ করা উপন্যাস হচ্ছে 'অরণ্যের ডাক'। 'পার্বত্যের পথে' নামক ভ্রমণ কাহিনীও লিখেছেন তিনি।
এরপর ১৯৬৯ সালে 'বিরস সংলাপ', ১৯৮২ সালে 'হাওয়া তোমার কি দুঃসাহস', ১৯৮৫ সালে 'দুঃস্বপ্ন থেকে দুঃস্বপ্নে', ১৯৯৭ সালে 'এখনও সময় আছে', ২০০০ সালে 'আর কিসের অপেক্ষা', ২০০৪ সালে 'রাজকাহিনী', ২০০৭ সালে 'আবুল হোসেনর ব্যঙ্গ কবিতা' ও গদ্যের বই 'দুঃস্বপ্নের কাল', ২০০৮ সালে 'প্রেমের কবিতা' ও 'কালের খাতায়', ২০০৯ সালে গদ্য 'স্বপ্ন ভঙ্গের পালা' বইগুলি প্রকাশিত হয়।<ref name="gunijan1"/> তাঁর অনুবাদ করা কবিতাগুলি হচ্ছে- 'ইকবালের কবিতা', 'আমার জন্মভূমি', 'অন্য ক্ষেতের ফসল'। ২০০০ সালে তিনি 'আমার এই ছোট ভূবন', ২০০৫ সালে 'আর এক ভুবন' নামে দুটি স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ লিখেন। তাঁর অনুবাদ করা উপন্যাস হচ্ছে 'অরণ্যের ডাক'। 'পার্বত্যের পথে' নামক ভ্রমণ কাহিনীও লিখেছেন তিনি।


এছাড়াও তাঁর আরও অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়াও তাঁর আরও অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে।


== পুরস্কার ও সম্মাননা ==
== পুরস্কার ও সম্মাননা ==
সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার, ১৯৮০ সালে একুশে পদক পান।<ref>http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/254884</ref><ref>http://www.samakal.net/2014/06/30/69511</ref> এছাড়া তিনি জাতীয় কবিতা পুরষ্কার নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক, পদাবলী পুরস্কার, কাজী মাহবুবুল্লাহ পুরস্কার ও স্বর্ণপদক, আবুল হাসানাৎ সাহিত্য পুরস্কার, জনবার্তা স্বর্ণপদক, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, জনকন্ঠ গুণীজন সম্মাননা ও জাতীয় জাদুঘর কর্তৃক সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন পুরষ্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।<ref>http://www.gunijan.org.bd/GjProfDetails_action.php?GjProfId=213</ref>
সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার, ১৯৮০ সালে একুশে পদক পান।<ref name="prothom-alo1"/><ref>{{cite web|url=http://www.samakal.net/2014/06/30/69511 |title=চলে গেলেন কবি আবুল হোসেন &#124; প্রথম পাতা &#124; Samakal Online Version |publisher=Samakal.net |date=২৯ জুন ২০১৪ |accessdate=২৯ জুন ২০১৪}}</ref> এছাড়া তিনি জাতীয় কবিতা পুরষ্কার নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক, পদাবলী পুরস্কার, কাজী মাহবুবুল্লাহ পুরস্কার ও স্বর্ণপদক, আবুল হাসানাৎ সাহিত্য পুরস্কার, জনবার্তা স্বর্ণপদক, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, জনকন্ঠ গুণীজন সম্মাননা ও জাতীয় জাদুঘর কর্তৃক সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন পুরষ্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।<ref name="gunijan1"/>


== মৃত্যু ==
== মৃত্যু ==
২০১৪ সালের ২৯ জুন, তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।<ref>http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/254884</ref><ref>http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/303483.html</ref><ref>http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article813223.bdnews</ref>
২০১৪ সালের ২৯ জুন, তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।<ref name="prothom-alo1"/><ref>{{cite web|url=http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/303483.html |title=কবি আবুল হোসেন আর নেই |publisher=Banglanews24.com |date= |accessdate=২৯ জুন ২০১৪}}</ref><ref>{{cite web|author=নিজস্ব প্রতিবেদক&nbsp; বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম |url=http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article813223.bdnews |title=চলে গেলেন কবি আবুল হোসেন - bdnews24.com |publisher=Bangla.bdnews24.com |date=২৯ জুন ২০১৪ |accessdate=২৯ জুন ২০১৪}}</ref>


== তথ্যসূত্র ==
== তথ্যসূত্র ==
৬০ নং লাইন: ৫৪ নং লাইন:
{{DEFAULTSORT:হোসেন, আবুল}}
{{DEFAULTSORT:হোসেন, আবুল}}


[[বিষয়শ্রেণী:১৯২২-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:২০১৪-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:একুশে পদক বিজয়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:একুশে পদক বিজয়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা একাডেমী পুরুস্কার বিজয়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা একাডেমী পুরস্কার বিজয়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী কবি]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী কবি]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙ্গালী কবি]]

২৩:৫৯, ২৯ জুন ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আবুল হোসেন
জন্ম(১৯২২-০৮-১৫)১৫ আগস্ট ১৯২২
বাগেরহাট জেলা
মৃত্যু২৯ জুন ২০১৪(2014-06-29) (বয়স ৯১)
ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
পরিচিতির কারণকবি
পুরস্কারএকুশে পদক

আবুল হোসেন (আগস্ট ১৫, ১৯২২ - জুন ২৯, ২০১৪) বাংলাদেশের একজন কবি। ত্রিশের দশকে অবিভক্ত ভারতে তাঁর লেখালিখির সূত্রপাত। ৪০ দশকের বাংলা ভাষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি ছিলেন। তাঁর কর্মজীবনের অন্যতম স্বীকৃতির একুশে পদক

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আবুল হোসেন বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার আরুয়াডাঙা গ্রামে ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন।[১] তার মায়ের নাম মেহেরুন নেসা।[২] তাঁর শৈশব কাটে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণ নগরে, এরপর কলকাতায় ও পরবর্তীতে বাংলাদেশে। তিনি ১৯২৯ সালে সাত বছর বয়সে কৃষ্ণনগর কলিজিয়েট স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন।[২] ১৯৩৭ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন কুষ্টিয়া হাইস্কুল থেকে। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৪২ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক ও পরে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন

সরকারি চাকরি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। কর্মজীবনে তিনি উচ্চপ্রদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। কর্মজীবনের শুরুতে প্রথম তিনি কলকাতা আয়কর কমিশনারের অফিসে, এক্সামিনার অব অ্যাকাউন্টস পদে যোগ দেন। ভারত ভাগের পর তিনি ময়মনসিংহে সহকারী বিক্রয় কর অফিসার হিসেবে আসেন।এর দুই-আড়াই বছর পর ১৯৫০ সালের মাঝামাঝিতে তিনি ঢাকার রেডিও পাকিস্তানে একটি সমপর্যায়ের চাকরিতে যোগ দেন। এরপর তিনি ব্যাংককে সিটো পাবলিক ইনফরমেশন অফিসে ইন্টারন্যাশনাল স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর তিনি সেখান থেকে বাংলাদেশে ফিরে তিনি জনসংযোগ বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।[১]

১৯৫৮ সালে তিনি প্রখ্যাত লেখক আকবর উদ্দিনের জেষ্ঠ কন্যা সাহানার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

সাহিত্যকর্ম

তিনি কবিতাচর্চা শুরু করেছিলেন স্কুল জীবন থেকেই। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র পরিষদের সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির কার্যকরী পরিষদ, পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ডের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ ও বাংলা একাডেমীর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। রবীন্দ্র চর্চাকেন্দ্রের সভাপতি ছিলেন। তার গ্রন্থসংখ্যা ২৫টি। তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ নববসন্ত ১৯৪০ সালে প্রকাশিত হয়।[৩]

এরপর ১৯৬৯ সালে 'বিরস সংলাপ', ১৯৮২ সালে 'হাওয়া তোমার কি দুঃসাহস', ১৯৮৫ সালে 'দুঃস্বপ্ন থেকে দুঃস্বপ্নে', ১৯৯৭ সালে 'এখনও সময় আছে', ২০০০ সালে 'আর কিসের অপেক্ষা', ২০০৪ সালে 'রাজকাহিনী', ২০০৭ সালে 'আবুল হোসেনর ব্যঙ্গ কবিতা' ও গদ্যের বই 'দুঃস্বপ্নের কাল', ২০০৮ সালে 'প্রেমের কবিতা' ও 'কালের খাতায়', ২০০৯ সালে গদ্য 'স্বপ্ন ভঙ্গের পালা' বইগুলি প্রকাশিত হয়।[২] তাঁর অনুবাদ করা কবিতাগুলি হচ্ছে- 'ইকবালের কবিতা', 'আমার জন্মভূমি', 'অন্য ক্ষেতের ফসল'। ২০০০ সালে তিনি 'আমার এই ছোট ভূবন', ২০০৫ সালে 'আর এক ভুবন' নামে দুটি স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ লিখেন। তাঁর অনুবাদ করা উপন্যাস হচ্ছে 'অরণ্যের ডাক'। 'পার্বত্যের পথে' নামক ভ্রমণ কাহিনীও লিখেছেন তিনি।

এছাড়াও তাঁর আরও অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে।

পুরস্কার ও সম্মাননা

সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার, ১৯৮০ সালে একুশে পদক পান।[১][৪] এছাড়া তিনি জাতীয় কবিতা পুরষ্কার নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক, পদাবলী পুরস্কার, কাজী মাহবুবুল্লাহ পুরস্কার ও স্বর্ণপদক, আবুল হাসানাৎ সাহিত্য পুরস্কার, জনবার্তা স্বর্ণপদক, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, জনকন্ঠ গুণীজন সম্মাননা ও জাতীয় জাদুঘর কর্তৃক সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন পুরষ্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।[২]

মৃত্যু

২০১৪ সালের ২৯ জুন, তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।[১][৫][৬]

তথ্যসূত্র

  1. নিজস্ব প্রতিবেদক (২৯ জুন ২০১৪)। "কবি আবুল হোসেন চলে গেলেন"। Prothom-alo.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪ 
  2. ":: Welcome to GUNIJAN :: The Eminent :: Largest electronic journal of bangladeshi eminents :"। Gunijan.org.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪ 
  3. Joint Collaboration of Manab Zamin IT Team and ZTech Communication(www.ztechbd.com) (২৯ জুন ২০১৪)। "Daily Manab Zamin | নববসন্ত'র কবি আবুল হোসেন আর নেই"। Mzamin.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪ 
  4. "চলে গেলেন কবি আবুল হোসেন | প্রথম পাতা | Samakal Online Version"। Samakal.net। ২৯ জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪ 
  5. "কবি আবুল হোসেন আর নেই"। Banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪ 
  6. নিজস্ব প্রতিবেদক  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (২৯ জুন ২০১৪)। "চলে গেলেন কবি আবুল হোসেন - bdnews24.com"। Bangla.bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ