শমসের গাজী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Mozammel feni (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Hasive (আলোচনা | অবদান)
+
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
{{Infobox person
{{Infobox person
| name = শমসের গাজী
| name = শমসের গাজী
| image =
| image = পুরুষ
| imagesize =
| imagesize =
| caption =
| caption =
৮ নং লাইন: ৮ নং লাইন:
| birthname =
| birthname =
| birthdate = [[১৭০০]]সালের প্রথম দিগে (অনুমান)
| birthdate = [[১৭০০]]সালের প্রথম দিগে (অনুমান)
|birth_place= [[ছাগলনাইয়া]], [[ফেনী জেলা]]
|birth_place= [[ছাগলনাইয়া উপজেলা|ছাগলনাইয়া]], [[ফেনী জেলা|ফেনী]]
| deathdate = [[১৭৬০]]
| deathdate = [[১৭৬০]]
| deathplace =
| deathplace =
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
| religion = [[ইসলাম]]
| religion = [[ইসলাম]]
| ethnicity =
| ethnicity =
| citizenship = [[বাংলাদেশী]]
| citizenship =
| period =
| period =
| genre =
| genre =
৩২ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:
| website =
| website =
| portaldisp = }}
| portaldisp = }}
'''বঙ্গবীর শমসের গাজী''', ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী। ১৭৫৭ সালে পলাশীল আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর ব্রিটিশ ঐপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসন প্রতিহত করতে গিয়ে যে স্বাধীনচেতা নৃপতি শাহাদাত বরণ করেন তিনিই [[ভাটির বাঘ]] বলে পরিচিত শমসের গাজী নবাব সিরাজুদ্দৌলার পর তিনিই ঔপনিবেশি শক্তির হাতে প্রথম শাহাদাত বরণকারী। একজন প্রতিবাদী শাসক ছিলেন।
'''বঙ্গবীর শমসের গাজী''', ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী। [[১৭৫৭]] সালে পলাশীল আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর ব্রিটিশ ঐপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসন প্রতিহত করতে গিয়ে যে স্বাধীনচেতা নৃপতি শাহাদাত বরণ করেন তিনিই [[ভাটির বাঘ]] বলে পরিচিত শমসের গাজী নবাব সিরাজুদ্দৌলার পর তিনিই ঔপনিবেশি শক্তির হাতে প্রথম শাহাদাত বরণকারী। একজন প্রতিবাদী শাসক ছিলেন।


== জন্ম ==
== জন্ম ==

১২:০৭, ২৯ নভেম্বর ২০১২ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

শমসের গাজী
জন্ম
জাতীয়তা বাংলাদেশী
পেশাবিপ্লবী,জমিদার
পিতা-মাতাপীর মুহাম্মদ মতান্তরে পেয়ার মুহাম্মদ খান(পিতা )
কৈয়্যারা বিবি (মাতা)

বঙ্গবীর শমসের গাজী, ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী। ১৭৫৭ সালে পলাশীল আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর ব্রিটিশ ঐপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসন প্রতিহত করতে গিয়ে যে স্বাধীনচেতা নৃপতি শাহাদাত বরণ করেন তিনিই ভাটির বাঘ বলে পরিচিত শমসের গাজী নবাব সিরাজুদ্দৌলার পর তিনিই ঔপনিবেশি শক্তির হাতে প্রথম শাহাদাত বরণকারী। একজন প্রতিবাদী শাসক ছিলেন।

জন্ম

বঙ্গবীর শমসের গাজী বর্তমান ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলাতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল পীর মুহাম্মদ মতান্তরে পেয়ার মুহাম্মদ খান এবং মাতার নাম ছিল কৈয়্যারা বিবি। [[১]]

শৈশব

একদা মায়ের বকুনি খেয়ে তিনি বাড়ির দক্ষিণে ফেনী নদীর তীরে বসে কাঁদছিলেন। তখন শুভপুরের তালুকদার শ্রী জগন্নাথ সেন ও তার স্ত্রী সোনা দেবী নিজামপুর থেকে ধনুঘাট হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ক্রন্দনরত বালকটির প্রতি তাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হলে দয়াপরবেশ হয়ে তারা শমসেরকে শুভপুরে নিয়ে যান। শুভপুরের তালুকদারের কোন সন্তান ছিল না। তাই শমসের সেখানে আপত্য স্নেহ-মমতার মধ্য দিয়ে বড় হতে থাকেন। বস্তুত সেখানে তার জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। অল্পদিনের মধ্যে তিনি খেলাধুলা-কুস্তিখেলা, লাঠিখেলা, তীর-ধনুক চালনায় অতি পারদর্শী হয়ে উঠেন। [[২]]

জমিদারি লাভ

তালুকদার জগন্নাথ সেন পরলোক গমন করলে শমসের গাজী শুভপুর কাছারীর খাজনা আদায় ও বার্ষিক পুন্যাহ অনুষ্ঠানের তদারকী করতে থাকেন। পুঁথি সূত্রে প্রকাশ তৎকালে মুহুরী নদীর তীরে পানুয়াঘাটে ছিল একটা শুল্পঘাটি ও কেল্লা। দক্ষিণশিকের চোর ডাকাত ও দস্যুদের উপদ্রবের পটভূমিতে শমসের গাজীকে পানুয়াঘাটের সেনাপতি পদে দেখা যায়। বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ির পতনের ফলে তিনি বহু ধনরত্ন ও অস্ত্রশস্ত্রের মালিক হন; অন্যদিকে বাহুবরে তিনি দক্ষিণশিকের একচ্ছত্র নৃপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। প্রাপ্ত ধন-সম্পদ ও অস্ত্রশস্ত্রের সাহায্যে তিনি নিজের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য বিরাট বাহিনী গড়ে তোলার প্রয়াস পান।

ত্রিপুরা বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম শক্তি পরীক্ষায় বিজয়ী হয়ে শমসের গাজী দক্ষিণশিকের বৈধ জমিদার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। অতঃপর তার বীরত্ব ও প্রতিপত্তির কথা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ৫০ বছর বা কিছু বেশি হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়। রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশে ফেনী নদীর তীরে তিনি প্রধান কেল্লা ও রাজপ্রাসাদ স্থাপন করেছিলেন। শমসের গাজীর পতনের পর এ দেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

পরশুরামের সাতকুচিয়া গ্রাম শমসের প্রকাম ঐ দীঘির পাড়ে তাঁর ভ্রাম্যমাণ দরবার বসত। তাঁর অমাত্যদের নামে বল্লভপুরের আলীয়া গাজীর দীঘি, পূর্ব ছাগলনাইয়ার দেয়ান আব্দুর রাজ্জাকের দীঘি, তাঁর কন্যা তনু বিবির নামে হরিপুরে তনু বিবির দীঘি, জগন্নাথ-সোনাপুরে তাঁর কেল্লা ও আদি বসতির আশে-পাশে বিরাট দীঘি, গড় বা পরিখা শমসের গাজীর কীর্তির নিদর্শন। উল্লেখ্য, তৎকালে বড় বড় দীঘিতে সংরক্ষিত চাষাবাদ করা হত। ইংরেজ আমলের ইতিহাসের পাতায় গাজী স্থান পাননি সত্য কিন্তু তিনি এদেশর মানুষের অন্তরে কিংবদন্তীর নায়ক হিসেবে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। [[৩]]

স্মৃতি ও কীর্তির নিদর্শন

ফেনী, কুমিল্লা, সিলেট ও ত্রিপুরার রাজ্যে প্রচলিত বহু কেচ্ছা-কাহিনী, গ্রামগঞ্জ মসজিদ-মন্দির, দীঘি-নালার নামকরণের সাথে শমসের গাজী ও তার সমকালীন ইতিহাসের বহু তথ্য ছড়িয়ে রয়েছে। পরশুরামের সাতকুচিয়া গ্রাম শমসের প্রকাম ঐ দীঘির পাড়ে তাঁর ভ্রাম্যমাণ দরবার বসত। তাঁর অমাত্যদের নামে বল্লভপুরের আলীয়া গাজীর দীঘি, পূর্ব ছাগলনাইয়ার দেয়ান আব্দুর রাজ্জাকের দীঘি, তাঁর কন্যা তনু বিবির নামে হরিপুরে তনু বিবির দীঘি,কৈয়ারা দিঘি, জগন্নাথ-সোনাপুরে তাঁর কেল্লা ও আদি বসতির আশে-পাশে বিরাট দীঘি, গড় বা পরিখা শমসের গাজীর কীর্তির নিদর্শন। [[৪]]

নির্মমভাবে হত্যা

সে সময় মুর্শিদাবাদ বা বাংলার নবাব ছিলেন মীর কাসিম। ত্রিপুরার অধিপতি ছিলেন কৃষ্ণ মাণিক্য। এই কৃষ্ণ মাণিক্য শমসের গাজীর ক্ষমতা, খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা সহ্য করতে পারছিলেন না। শমসের গাজীর বিরুদ্ধে দুর্ধর্ষ কুকী বাহিনীর সাহায্যে দু’টি অভিযান চালিয়েও কৃষ্ণ মাণিক্য সুবিধা করতে পারেন নি। শমসের গাজীর অসাধারণ জনকল্যাণমুখী চিন্তা, সাহস, সমরকৌশল ও শৌর্যবীর্যের কাছে দুটো অভিযানই ব্যর্থ হয়ে যায়। গাজী সে সময় ত্রিপুরার রাজধানী উদয়পুর দখল করে নেন। কৃষ্ণ মাণিক্য বাধ্য হন উদয়পুর ছেড়ে আগরতলায় পলায়ন করতে। এরপর পালিয়ে বাংলার নবাব মীর কাসিমের শরণাপন্ন হন এবং নওয়াবের সাথে সাক্ষাতের কথা বলে ষড়যন্ত্র করে শমসের গাজীকে অত্যন্ত নির্মমভাবে ১৭৬০ সালে হত্যা করা হয়। সেদিন বিশ্বাসঘাতক কৃষ্ণ মাণিক্যের বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই শমসের গাজীর মতো সাহসী যোদ্ধাকে হারাতে হয়েছিল। কৃষ্ণ মাণিক্য ছিলেন ইংরেজদের আনুকূল্যপ্রাপ্ত রাজা। আর শমসের গাজী ছিলেন স্বাধীনচেতা লড়াকু মানসসম্পন্ন একজন জনদরদি গাজী। [[৫]]

তথ্যসূত্র

[[৬]] [[৭]]