অতিবৃষ্টি অরণ্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে, কোনো সমস্যা?
Trinanjon (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[চিত্র:Daintree Rainforest.JPG|thumb|right|[[ডেইনট্রি রেইনফরেস্ট]] [[কুইনল্যান্ড|কুইনল্যান্ডে]], [[অস্ট্রেলিয়া]]।]]
[[চিত্র:Daintree National Park.jpg|thumb|right|[[অস্ট্রেলিয়া|অস্ট্রেলিয়ার]] জাতীয় পার্ক [[ডেইনট্রি রেইনফরেস্ট]] [[কুইনল্যান্ড|কুইনল্যান্ডে]]।]]
'''অতিবৃষ্টি অরণ্য''' হচ্ছে পৃথিবীর সেসমস্ত বনাঞ্চল যেখানে সারা বছর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় । এই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমপক্ষে ১৭৫০ মিলিমিটার হতে ২০০০ মিলিমিটার। সারা বছর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় বলে গাছের পাতা সবসময় সবুজ থাকে ।
'''অতিবৃষ্টি অরণ্য''' হচ্ছে পৃথিবীর সেসমস্ত বনাঞ্চল যেখানে সারা বছর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় । এই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমপক্ষে ১৭৫০ মিলিমিটার হতে ২০০০ মিলিমিটার। সারা বছর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় বলে গাছের পাতা সবসময় সবুজ থাকে ।


ভূপৃষ্ঠের মূলত নিরক্ষীয় হতে ক্রান্তীয় অঞ্চলেই এই বনাঞ্চল দেখা যায় । অতিবৃষ্টি অরণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ হচ্ছে ক্রান্তীয় অঞ্চলের আমাজন বেসিনের আমাজন অতিবৃষ্টি অরণ্য । নিকারাগুয়া, বেলিজ সহ মধ্য আমেরিকায় এই আমাজন অতিবৃষ্টি অরণ্য বিস্তৃত। এছাড়াও ক্যামেরুন হতে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পর্যন্ত বিস্তৃত নিরক্ষীয় আফ্রিকায়, মায়ানমার হতে ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনি পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, অষ্ট্রেলিয়ার পূর্ব কৃইন্সল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে এই বনাঞ্চল দেখা যায় ।
ভূপৃষ্ঠের মূলত নিরক্ষীয় হতে ক্রান্তীয় অঞ্চলেই এই বনাঞ্চল দেখা যায় । অতিবৃষ্টি অরণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ হচ্ছে ক্রান্তীয় অঞ্চলের আমাজন বেসিনের আমাজন অতিবৃষ্টি অরণ্য । নিকারাগুয়া, বেলিজ সহ মধ্য আমেরিকায় এই আমাজন অতিবৃষ্টি অরণ্য বিস্তৃত। এছাড়াও ক্যামেরুন হতে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পর্যন্ত বিস্তৃত নিরক্ষীয় আফ্রিকায়, মায়ানমার হতে ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনি পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, অষ্ট্রেলিয়ার পূর্ব কৃইন্সল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে এই বনাঞ্চল দেখা যায় ।
== অতিবৃষ্টি অরণ্যের বৈশিষ্ট্যসমূহ ==
ক্রান্তীয় অঞ্চলের অতিবৃষ্টি অরণ্য সাধারণত ক্রান্তীয় আর্দ্র অরণ্যের পর্যায়ে পড়ে, যার অনেক রকম বিভাজন আছে। বন গবেষকগণ অতিবৃষ্টি অরণ্যকে অন্যান্য অরণ্য থেকে আলাদা করেন কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে, যেমন: তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, শুকনো মৌসুমের ব্যাপ্তি, এবং উচ্চতা।<ref name="Encarta">{{cite book |author=Elizabeth Losos |editor= |others= |title=Rain Forest (Encarta Encyclopedia 2004) |origdate= |origyear=2004 |origmonth= |url= |format=সিডি |accessdate=৭ |accessyear=২০১০ |accessmonth=জুন |edition=২০০৪ [ডিলাক্স] |series= |date= |year= |month= |publisher=Microsoft Corporation |location=যুক্তরাষ্ট্র |language=ইংরেজি |isbn= |oclc= |doi= |id= |pages= |chapter=Rain Forest }}</ref>
=== তাপমাত্রা ===
অতিবৃষ্টি অরণ্য সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র- বার্ষিক গড় তাপমাত্রা হলো ২৫° [[সেলসিয়াস]] (৭৭° [[ফারেনহাইট (একক)|ফারেনহাইট]])। [[বিষুবরেখা|বিষুবরেখার]] কাছাকাছি তাপমাত্রায় কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, তবে বর্ষাবনে তাপমাত্রা বছরের প্রায় সব সময়ই প্রায় একই রকম থাকে- গড় সর্বনিম্ন মাসিক তাপমাত্রা হলো আরামদায়ক ১৮° সেলসিয়াস (৬৪° ফারেনহাইট)। যেখানকার তাপমাত্রা ০° সেলসিয়াসের (৩২° ফারেনহাইট) কাছাকাছি চলে আসে সেখানে সাধারণত অতিবৃষ্টি অরণ্য গড়ে উঠে না কারণ বর্ষাবনের উদ্ভিদ ও জীবপ্রজাতি এতো কম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। অতিবৃষ্টি অরণ্যের তাপমাত্রা বিষুবরেখা থেকে এর দূরত্বের ভিত্তিতে শুধু নির্ধারিত হয় না, বরং উচ্চতার উপরও নির্ভর করে। যত উচ্চতা বেশি হয়, রাতের তাপমাত্রা আনুপাতিক হারে তত কমতে থাকে। দৈনিক তাপমাত্রার এরকম উঠা-নামা অরণ্যের প্রাকৃতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে। আর তাই সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,২৮০ [[ফুট]] (১,০০০ [[মিটার]]) উচ্চতার উর্ধ্বে অতিবৃষ্টি অরণ্য দেখা যায় না।<ref name="Encarta"/>
=== বৃষ্টিপাত ===
মূলত বৃষ্টিপাতের সাথেই অতিবৃষ্টি অরণ্যের সম্পর্ক। অতিবৃষ্টি অরণ্যে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ১৮০০ [[মিলিমিটার (একক)|মিলিমিটার]] (৬ [[ফুট]]) থেকে ৯০০০ মিলিমিটার (৩০ ফুট) পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি মাসে সাধারণত ১০০ মিলিলিটারেরও (৪ [[ইঞ্চি]]) বেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। বলতে গেলে কোন অতিবৃষ্টি অরণ্যে শুকনো মৌসুম থাকেই না। যদি কখনও শুকনো সময় দেখা যায়, তবে সেটা সাধারণত হয় সংক্ষিপ্ত এবং আগে থেকে জানা যায় না।<ref name="Encarta"/>


বিভিন্ন [[জলবায়ু|জলবায়ুতে]] বৃষ্টিপাতের জন্য জলীয়বাষ্প দূর থেকে এলেও অতিবৃষ্টি অরণ্যে যে বৃষ্টিপাত হয়, তার জলীয়বাষ্পের ৫০ শতাংশই হয় ঐ অতিবৃষ্টি অরণ্যের জলীয়বাষ্প। অতিবৃষ্টি অরণ্যকে ঘিরে থাকা গরম, ভ্যাপসা, আর্দ্রতাপূর্ণ যে বাতাস বিরাজ করে, তা জলীয়বাষ্পের খুব অল্প অংশই বেরিয়ে যেতে দেয়। অতিবৃষ্টি অরণ্যে যতটুকু বৃষ্টিপাত হয় তার অধিকাংশই গাছগুলো তার শাখা প্রশাখায় শুষে নেয়। কিছু পরিমাণ পাতার ফাঁক গলে নিচে পড়ে, যদিও অধিকাংশই নিচে পড়ার আগেই বাষ্প হয়ে যায় এবং আর্দ্র বাতাসে ভেসে থাকে। মৃদু, সদা চলাচলরত বাতাস তখন বাতাসের এই জলীয় অংশকে উর্ধ্বাকাশে তুলে নেয় এবং সেখানে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে মেঘে পরিণত হয়। যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঠান্ডা জলীয় বাষ্প তৈরি হয়, তখন তা বৃষ্টির আকারে ঝরে পড়ে, আবারো বৃষ্টির চক্রকে চালু রাখে।<ref name="Encarta"/>
== তথ্য সূত্র ==
=== মৃত্তিকার রূপ ===
[http://en.wikipedia.org/wiki/Rainforests ইংরেজি উইকিপিডিয়া]
অধিকাংশ অতিবৃষ্টি অরণ্যেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিপুল বৃষ্টিপাত আর প্রচন্ড গরমের কারণে মাটির [[পুষ্টি]] গুণাগুণ হারিয়ে যায়। পুষ্টি চাহিদার এই করুণ অবস্থার কারণে অধিকাংশ ক্রান্তীয় বৃক্ষ যতটুকু পুষ্টি পাওয়া যায়, তা তাদের জীবন্ত কোষে জমা করে রাখে। যখন এসব ক্রান্তীয় গাছগুলো মারা যায় তখন তাদের জমা করে রাখা পুষ্টি গুণাগুণ পচনের মাধ্যমে মাটিতে আবার ফিরে আসে। কিন্তু মাটিতে জমা থাকার চেয়ে অন্যান্য জীব বা উদ্ভিদ সাথে সাথেই সেসকল পুষ্টি গুণাগুণ শুষে নেয়।<ref name="Encarta"/>
== অতিবৃষ্টি অরণ্যের গঠন ==
অতিবৃষ্টি অরণ্যের গঠন অন্যান্য সকল বনের চেয়ে আলাদা হয়ে থাকে এর বিভিন্ন স্তরভিত্তিক উদ্ভিদরাজির সমাবেশের কারণে, যাকে বলা হয় ''স্ট্রাটা'' (''strata''), [[একবচন|একবচনে]] ''স্ট্র্যাটাম'' (''stratum'')।<ref name="Encarta"/>
== উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য ==
অতিবৃষ্টি অরণ্যের উদ্ভিদ এবং জীবজন্তুর যে পরিমাণ, আদতে তা যেকোনো বাসস্থানের চেয়ে সমৃদ্ধ। যদিও বিগত কয়েক লক্ষ কোটি বছরের জলবায়ুগত পরিবর্তনে তাদের পরিমাণ কখনও বেড়েছে কখনও কমেছে, তবুও বর্ষাবন হলো [[পৃথিবী|পৃথিবীর]] অন্যতম প্রাচীন একটি [[বাস্তুসংস্থান]]। এই ধারাবাহিকতার কারণেই অতিবৃষ্টি অরণ্যে বেড়ে উঠেছে লক্ষ কোটি প্রজাতি, যার অনেকগুলো ''এনডেমিক'' (''endemic''), বা একমাত্র।<ref name="Encarta"/>
== তথ্যসূত্র ==
<references/>
== বহিঃসংযোগ ==
{{Commons|Rainforest|অতিবৃষ্টি অরণ্য}}
* [http://www.enchantedlearning.com/subjects/rainforest/Animals.shtml Animals in a rainforest]
* [http://www.ran.org Rainforest Action Network]
* [http://www.sabahbiodiversityexperiment.net The Sabah Biodiversity Experiment on rainforest restoration]
* [http://www.rainforestportal.org/ Rainforest Portal]
* [http://www.rainforestcoalition.org/eng/ The Coalition for Rainforest Nations]
* [http://www.princesrainforestsproject.org The Prince's Rainforests Project]
* [http://www.un.org/esa/forests United Nations Forum on Forests]
* [http://www.peakoil.org.au/dave.kimble/rainforest/catalog.htm Dave Kimble's Rainforest Photo Catalog (Wet Tropics, Australia)]
* [http://wikis.wheatonma.edu/rainforest Rainforest Plants]


[[বিষয়শ্রেণী:ভূগোল]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভূগোল]]
[[বিষয়শ্রেণী:বন]]
[[বিষয়শ্রেণী:বনাঞ্চল]]
[[বিষয়শ্রেণী:বনাঞ্চল]]


[[an:Selva pluvial]]
[[ar:غابة مطيرة]]
[[arz:غابه مطيره]]
[[ay:Muntaña tuqi suyu]]
[[bat-smg:Driegnė̅jė mėškā]]
[[be:Сельва]]
[[be-x-old:Сэльва]]
[[bg:Дъждовна гора]]
[[br:Koadeier gleb]]
[[bs:Kišna šuma]]
[[ca:Selva pluvial]]
[[cy:Fforest law]]
[[da:Regnskov]]
[[de:Regenwald]]
[[el:Δάσος της βροχής]]
[[en:Rainforest]]
[[en:Rainforest]]
[[eo:Pluvarbaro]]
[[es:Selva]]
[[et:Vihmamets]]
[[eu:Oihan]]
[[fa:جنگل بارانی]]
[[fi:Sademetsä]]
[[fo:Regnskógur]]
[[fr:Forêt humide]]
[[gl:Selva]]
[[he:יער גשם]]
[[hi:वर्षावन]]
[[hr:Kišna šuma]]
[[hu:Esőerdő]]
[[hy:Արևադարձային անտառ]]
[[ia:Silva]]
[[id:Hutan hujan]]
[[is:Regnskógur]]
[[it:Foresta pluviale]]
[[ja:多雨林]]
[[kk:Сельва, сельвас]]
[[kn:ಮಳೆಕಾಡು]]
[[ko:우림]]
[[krc:Сельва]]
[[la:Silva pluvialis]]
[[lad:Shara Tropikal]]
[[lt:Drėgnasis miškas]]
[[lv:Lietus mežs]]
[[mk:Дождовна шума]]
[[ml:മഴക്കാട്]]
[[ms:Hutan hujan]]
[[nl:Regenwoud]]
[[nn:Regnskog]]
[[no:Regnskog]]
[[nv:Hodíłchʼil Níłtsánígíí]]
[[oc:Selva pluviala]]
[[pl:Lasy deszczowe]]
[[pnb:بارشی جنگل]]
[[pt:Floresta húmida]]
[[qu:Paray sach'a-sach'a]]
[[ro:Selvă]]
[[roa-tara:Vosche chiovose]]
[[ru:Дождевой лес]]
[[rue:Доджовый лїс]]
[[sah:Ардахтаах тыа]]
[[sh:Kišna šuma]]
[[simple:Rainforest]]
[[sk:Dažďový les]]
[[sl:Deževni gozd]]
[[sr:Кишна шума]]
[[sv:Regnskog]]
[[sw:Msitu wa mvua]]
[[ta:மழைக்காடு]]
[[th:ป่าดิบชื้น]]
[[tk:Ýagyş tokaýy]]
[[tl:Maulang gubat]]
[[tr:Yağmur ormanları]]
[[uk:Дощовий ліс]]
[[ur:برساتی جنگل]]
[[vi:Rừng mưa]]
[[war:Mauran nga kagobaán]]
[[yi:רעגנוואלד]]
[[zh:雨林]]
[[zh-min-nan:Ú-lîm]]
[[zh-yue:雨林]]

১৪:৫০, ২৩ এপ্রিল ২০১২ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ডেইনট্রি রেইনফরেস্ট কুইনল্যান্ডে, অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় পার্ক ডেইনট্রি রেইনফরেস্ট কুইনল্যান্ডে

অতিবৃষ্টি অরণ্য হচ্ছে পৃথিবীর সেসমস্ত বনাঞ্চল যেখানে সারা বছর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় । এই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমপক্ষে ১৭৫০ মিলিমিটার হতে ২০০০ মিলিমিটার। সারা বছর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় বলে গাছের পাতা সবসময় সবুজ থাকে ।

ভূপৃষ্ঠের মূলত নিরক্ষীয় হতে ক্রান্তীয় অঞ্চলেই এই বনাঞ্চল দেখা যায় । অতিবৃষ্টি অরণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ হচ্ছে ক্রান্তীয় অঞ্চলের আমাজন বেসিনের আমাজন অতিবৃষ্টি অরণ্য । নিকারাগুয়া, বেলিজ সহ মধ্য আমেরিকায় এই আমাজন অতিবৃষ্টি অরণ্য বিস্তৃত। এছাড়াও ক্যামেরুন হতে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পর্যন্ত বিস্তৃত নিরক্ষীয় আফ্রিকায়, মায়ানমার হতে ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনি পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, অষ্ট্রেলিয়ার পূর্ব কৃইন্সল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে এই বনাঞ্চল দেখা যায় ।

অতিবৃষ্টি অরণ্যের বৈশিষ্ট্যসমূহ

ক্রান্তীয় অঞ্চলের অতিবৃষ্টি অরণ্য সাধারণত ক্রান্তীয় আর্দ্র অরণ্যের পর্যায়ে পড়ে, যার অনেক রকম বিভাজন আছে। বন গবেষকগণ অতিবৃষ্টি অরণ্যকে অন্যান্য অরণ্য থেকে আলাদা করেন কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে, যেমন: তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, শুকনো মৌসুমের ব্যাপ্তি, এবং উচ্চতা।[১]

তাপমাত্রা

অতিবৃষ্টি অরণ্য সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র- বার্ষিক গড় তাপমাত্রা হলো ২৫° সেলসিয়াস (৭৭° ফারেনহাইট)। বিষুবরেখার কাছাকাছি তাপমাত্রায় কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, তবে বর্ষাবনে তাপমাত্রা বছরের প্রায় সব সময়ই প্রায় একই রকম থাকে- গড় সর্বনিম্ন মাসিক তাপমাত্রা হলো আরামদায়ক ১৮° সেলসিয়াস (৬৪° ফারেনহাইট)। যেখানকার তাপমাত্রা ০° সেলসিয়াসের (৩২° ফারেনহাইট) কাছাকাছি চলে আসে সেখানে সাধারণত অতিবৃষ্টি অরণ্য গড়ে উঠে না কারণ বর্ষাবনের উদ্ভিদ ও জীবপ্রজাতি এতো কম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। অতিবৃষ্টি অরণ্যের তাপমাত্রা বিষুবরেখা থেকে এর দূরত্বের ভিত্তিতে শুধু নির্ধারিত হয় না, বরং উচ্চতার উপরও নির্ভর করে। যত উচ্চতা বেশি হয়, রাতের তাপমাত্রা আনুপাতিক হারে তত কমতে থাকে। দৈনিক তাপমাত্রার এরকম উঠা-নামা অরণ্যের প্রাকৃতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে। আর তাই সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,২৮০ ফুট (১,০০০ মিটার) উচ্চতার উর্ধ্বে অতিবৃষ্টি অরণ্য দেখা যায় না।[১]

বৃষ্টিপাত

মূলত বৃষ্টিপাতের সাথেই অতিবৃষ্টি অরণ্যের সম্পর্ক। অতিবৃষ্টি অরণ্যে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ১৮০০ মিলিমিটার (৬ ফুট) থেকে ৯০০০ মিলিমিটার (৩০ ফুট) পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি মাসে সাধারণত ১০০ মিলিলিটারেরও (৪ ইঞ্চি) বেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। বলতে গেলে কোন অতিবৃষ্টি অরণ্যে শুকনো মৌসুম থাকেই না। যদি কখনও শুকনো সময় দেখা যায়, তবে সেটা সাধারণত হয় সংক্ষিপ্ত এবং আগে থেকে জানা যায় না।[১]

বিভিন্ন জলবায়ুতে বৃষ্টিপাতের জন্য জলীয়বাষ্প দূর থেকে এলেও অতিবৃষ্টি অরণ্যে যে বৃষ্টিপাত হয়, তার জলীয়বাষ্পের ৫০ শতাংশই হয় ঐ অতিবৃষ্টি অরণ্যের জলীয়বাষ্প। অতিবৃষ্টি অরণ্যকে ঘিরে থাকা গরম, ভ্যাপসা, আর্দ্রতাপূর্ণ যে বাতাস বিরাজ করে, তা জলীয়বাষ্পের খুব অল্প অংশই বেরিয়ে যেতে দেয়। অতিবৃষ্টি অরণ্যে যতটুকু বৃষ্টিপাত হয় তার অধিকাংশই গাছগুলো তার শাখা প্রশাখায় শুষে নেয়। কিছু পরিমাণ পাতার ফাঁক গলে নিচে পড়ে, যদিও অধিকাংশই নিচে পড়ার আগেই বাষ্প হয়ে যায় এবং আর্দ্র বাতাসে ভেসে থাকে। মৃদু, সদা চলাচলরত বাতাস তখন বাতাসের এই জলীয় অংশকে উর্ধ্বাকাশে তুলে নেয় এবং সেখানে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে মেঘে পরিণত হয়। যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঠান্ডা জলীয় বাষ্প তৈরি হয়, তখন তা বৃষ্টির আকারে ঝরে পড়ে, আবারো বৃষ্টির চক্রকে চালু রাখে।[১]

মৃত্তিকার রূপ

অধিকাংশ অতিবৃষ্টি অরণ্যেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিপুল বৃষ্টিপাত আর প্রচন্ড গরমের কারণে মাটির পুষ্টি গুণাগুণ হারিয়ে যায়। পুষ্টি চাহিদার এই করুণ অবস্থার কারণে অধিকাংশ ক্রান্তীয় বৃক্ষ যতটুকু পুষ্টি পাওয়া যায়, তা তাদের জীবন্ত কোষে জমা করে রাখে। যখন এসব ক্রান্তীয় গাছগুলো মারা যায় তখন তাদের জমা করে রাখা পুষ্টি গুণাগুণ পচনের মাধ্যমে মাটিতে আবার ফিরে আসে। কিন্তু মাটিতে জমা থাকার চেয়ে অন্যান্য জীব বা উদ্ভিদ সাথে সাথেই সেসকল পুষ্টি গুণাগুণ শুষে নেয়।[১]

অতিবৃষ্টি অরণ্যের গঠন

অতিবৃষ্টি অরণ্যের গঠন অন্যান্য সকল বনের চেয়ে আলাদা হয়ে থাকে এর বিভিন্ন স্তরভিত্তিক উদ্ভিদরাজির সমাবেশের কারণে, যাকে বলা হয় স্ট্রাটা (strata), একবচনে স্ট্র্যাটাম (stratum)।[১]

উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য

অতিবৃষ্টি অরণ্যের উদ্ভিদ এবং জীবজন্তুর যে পরিমাণ, আদতে তা যেকোনো বাসস্থানের চেয়ে সমৃদ্ধ। যদিও বিগত কয়েক লক্ষ কোটি বছরের জলবায়ুগত পরিবর্তনে তাদের পরিমাণ কখনও বেড়েছে কখনও কমেছে, তবুও বর্ষাবন হলো পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন একটি বাস্তুসংস্থান। এই ধারাবাহিকতার কারণেই অতিবৃষ্টি অরণ্যে বেড়ে উঠেছে লক্ষ কোটি প্রজাতি, যার অনেকগুলো এনডেমিক (endemic), বা একমাত্র।[১]

তথ্যসূত্র

  1. Elizabeth Losos। "Rain Forest"। Rain Forest (Encarta Encyclopedia 2004) (সিডি) (ইংরেজি ভাষায়) (২০০৪ [ডিলাক্স] সংস্করণ)। যুক্তরাষ্ট্র: Microsoft Corporation।  অজানা প্যারামিটার |accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |accessmonth= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);

বহিঃসংযোগ