বালিশ (মিষ্টি): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
নকীব বট (আলোচনা | অবদান)
২৫ নং লাইন: ২৫ নং লাইন:
{{বাংলার মিষ্টি}}
{{বাংলার মিষ্টি}}


[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের মিষ্টি]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের মিষ্টান্ন]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের খাদ্য]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের খাদ্য]]

০৯:৪৬, ৩ মার্চ ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বালিশ মিষ্টি বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার একটি প্রসিদ্ধ মিষ্টি। এটি আকারে বালিশের মত বড় না হলেও দেখতে অনেকটা বালিশের মত, এবং এর উপরে ক্ষীরের প্রলেপ থাকাতে একটি আবরণীসমেত বালিশের মত দেখায়। এই মিষ্টি গয়ানাথের বালিশ নামেও পরিচিত।[১]

ইতিহাস

বালিশ মিষ্টির জনক গয়ানাথ ঘোষাল। হিন্দুদের মধ্যে ঘোষ পরিবার মিষ্টি তৈরিতে বিখ্যাত। নেত্রকোনা শহরের বারহাট্টা রোডের 'গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার'-এর স্বত্বাধিকারী গয়ানাথ ঘোষ শত বছরেরও বেশি সময় আগে বালিশ মিষ্টি উদ্ভাবন করেন। গয়ানাথের স্বপ্ন ছিল নতুন কোন ধরনের মিষ্টি আবিষ্কার করে অমর হয়ে থাকা। একদিন তিনি বিশাল সাইজের একটি মিষ্টি তৈরি করলেন এবং ক্রেতাদের খেতে দিলেন এবং ক্রেতারা খুব প্রশংসা করলো। এর আকার অনেকটা কোল বালিশের মতো (টাঙ্গাইলের চমচমের মতো)। তাই ক্রেতাদের পরামর্শে মিষ্টিটির নাম রাখেন বালিশ। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় অল্পদিনেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বালিশের নাম। এর উদ্ভাবক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান গয়ানাথ ঘোষও। তাই এক সময় তাঁর নামটিও জড়িয়ে যায় বালিশের সঙ্গে। লোকমুখে বালিশের নাম হয়ে ওঠে 'গয়ানাথের বালিশ'। সে সময়ে শুধু তার দোকানেই এই মিষ্টি বিক্রি হতো। কিন্তু এখন তার দোকান ছাড়াও অন্যান্য দোকানেও বিক্রি হয় বালিশ মিষ্টি।[২]

উপকরণ

বালিশ তৈরি হয় দুধ-ছানা, চিনি ও ময়দা দিয়ে। প্রথমে দুধের ছানার সঙ্গে সামান্য ময়দা মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। মণ্ড দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন সাইজের বালিশ। পরে তা ভাজা হয় চিনির গরম রসে। এর পর ঠাণ্ডা করেও চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয় অনেকক্ষণ। এক সময় তা রসে টইটম্বুর হয়ে যায়। বিক্রির সময় বালিশের ওপর দেয়া হয় ক্ষীরের প্রলেপ বা দুধের মালাই। এ ছাড়াও বালিশ বানানোর প্রক্রিয়ায় কিছুটা গোপনীয়তা আছে যা ব্যবসার স্বার্থে প্রকাশ করতে চান না কারিগররা।[৩]

বর্তমান অবস্থা

১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় ঘোষ পরিবারের অনেকেই ভারতে চলে যায়। কিন্তু গয়ানাথ ঘোষ যাননি। এই মিষ্টির গোপন রহস্য তিনি কাউকে শিখিয়ে যাননি। কিন্তু পরিবারের টানে ১৯৬৯ সালে যখন ভারতে চলে যান তখন তাঁর দোকানের কর্মচারী নিখিল মোদককে বালিশ মিষ্টির গোপন রহস্য শিখিয়ে যান। এ সময় দোকানটি কিনে রাখেন তার কর্মচারী নিখিল মোদক। নিখিল মোদকের মৃত্যুর পর থেকে দোকানটি পরিচালনা করছেন তার তিন ছেলে বাবুল মোদক, দিলীপ মোদক ও খোকন মোদক।[৪]

আকার ও দাম

বালিশ বিক্রি হয় পিস হিসেবে। এর সাধারণ সাইজ তিনটি। যার দাম ৫, ১০ ও ২০ টাকা। ২০০ টাকা মূল্যের বালিশ আকারে ১৩ থেকে ১৪ ইঞ্চি হয়। ওই মিষ্টির ওজন ৮০০ থেকে ১০০০ গ্রাম হয়ে থাকে। ৫০-১০০ টাকা দামের বালিশও বানিয়ে দেন বিক্রেতারা। এর চেয়ে বেশি ওজনের বালিশও বানানো হয়। তবে তা অর্ডার দিলে তৈরি করা হয়। নেত্রকোনায় বিয়েশাদি বা জন্মদিনের মতো অনুষ্ঠান বা অন্যান্য সামাজিক বা অফিস-আদালতের অনুষ্ঠানেও খাবার তালিকায় প্রাধান্য পায় বালিশ। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে অনেকে সঙ্গে করে নিয়ে যান বালিশ।[৩]

লোকজ ছড়া

এ অঞ্চলে বালিশ মিষ্টির ঐতিহ্য নিয়ে প্রচলিত বহু ছড়া যুগ যুগ ধরে চলছে আমজনতার মুখে মুখে। বালিশ নিয়ে এমন একটি লোকজ ছড়া হল- ‘‘জাম, রসগোল্লা পেয়ে শ্বশুর করলেন চটে নালিশ আশা ছিল আনবে জামাই গয়ানাথের বালিশ”।[১][৩]

তথ্যসূত্র

  1. নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি,আলপনা বেগম, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৬-০৫-২০১০ খ্রিস্টাব্দ।
  2. নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী “বালিশ” মিষ্টি[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], প্রাইম রিপোর্ট। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ৩১ জানুয়ারী , ২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
  3. নেত্রকোনার গয়ানাথের ‘বালিশ’ মিষ্টি[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], মাহবুব আলম, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম । ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: জানুয়ারি, ২৫, ২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
  4. কথা ছিল আনবে জামাই নেত্রকোনার 'বালিশ'... শত বছরের ঐতিহ্য,সঞ্জয় সরকার, দৈনিক জনকণ্ঠ। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ২৪ জুন ২০১০ খ্রিস্টাব্দ।