কামাল চৌধুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সাম্প্রতিক ফটো দিয়ে পূর্বেকার ফটো পরিবর্তন
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{Infobox person
{{Infobox person
| name = কামাল চৌধুরী
| name = কামাল চৌধুরী
| image = Kamal Chowdhury 2016.jpg
| image = [[File:Kamal Chowdhury 2016.jpg|thumb|Photo of poet Kamal Chowdhury of Bangladesh 2016]]
| alt =
| alt =
| caption =
| caption =

১৫:১৩, ৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

কামাল চৌধুরী
Photo of poet Kamal Chowdhury of Bangladesh 2016
জন্ম২৮ জানুয়ারি, ১৯৫৭
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পেশাকবি
পরিচিতির কারণবাঙ্গালী কবি
পুরস্কারবাংলা একাডেমী পুরস্কার

কামাল চৌধুরী (জন্ম: ২৮ জানুয়ারি, ১৯৫৭) (ইংরেজীঃ Kamal Chowdhury) একজন বাঙ্গালী কবি যিনি সত্তর দশকের সঙ্গে চিহ্নিত। চাকুরী সূত্রে তিনি একজন সরকার কর্মকর্তা এবং ২০১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব হিসেবে কর্মরত। তিনি একজন আধুনিক কবি। তাঁর কবিতার প্রধান বিষয়বস্তু প্রেম ও দ্রোহ। সমাজচেতনা তাঁর কাব্যপ্রেরণার অন্যতম সূত্র। তাঁর কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য গীতিময়তা। তাঁর অন্যতম কাব্যগ্রন্থ টানাপোড়েনের দিন যাতে তিনি মুক্ত ছন্দে নতুন এক কাব্যভাষার সূত্রপাত করেছেন। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে বাংলা কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রদান করা হয়। [১]

জন্ম, শিক্ষা

কামাল চৌধুরীর পুরো নাম 'কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী১৯৫৭ সালের ২৮ জানুয়ারি কামাল চৌধুরীর জন্ম হয়েছিল কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিজয় করা গ্রামে। বাবা আহমদ হোসেন চৌধুরী ও মা বেগম তাহেরা হোসেনের ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে নারায়ণগঞ্জের গোদনইল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মাতাল জীবন।[২] এখানেই কাব্যলক্ষ্মীর কাছে চিরসমর্পণ। এখানেই রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তসলিমা নাসরিন সহ সমসাময়িক কবিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। এখানেই কবিতার সঙ্গেচিঁরকালের গাঁটছড়া। এখানেই নিজেকে কবিতা পথিক হিসেবে চিহ্নিত করা। কবিতা লিখতে লিখতেই এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন সমাজবিজ্ঞানে। কিন্তু সেখানেই লেখাপড়ার গণ্ডী শেষ হয়ে যায় নি। ২০০০ খ্রিস্টাব্দে যদিও সরকারি চাকুরী করছেন পেয়ে যান একটু অবসর;- সেই ফাঁকে নৃবিজ্ঞানে পিএইচ, ডি। পি এইচ, ডি গবেষণা করেছেন 'গারো জনগোষ্ঠীর মাতৃসূত্রীয় আবাস প্রথা' নিয়ে। তার থিসিস খানা কে যেন একজন লিখছিল ।

২০১০ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মার্চ ২০১৪ থেকে জনপ্রশাসন সচিব হিসাবে কর্মরত। একই সময়ে তিনি সরকারের সিনিয়র সচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯৮১’র বাংলা একাডেমী বই মেলাকে উপলক্ষ ক'রে একদল তরুণ কবি জীবনের প্রথম কাব্যগ্রন্ত প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কামাল চৌধুরী তাদেরই একজন। এ উদ্দেশ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দ্রাবিড় প্রকাশনী। একুশের বইমেলাতেই বেরিয়েছিল কামাল চৌধুরীর প্রথম কাব্যগ্রন্থ মিছিলের সমান বয়সী। কবিতার সংখ্যা ৪৮। কবিতাগুলো ভাষা ও শৈলী বলে দেয় শামসুর রাহমান তাঁকে প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।

প্রকাশনা

কামাল চৌধুরীর প্রথম কাব্যগ্রন্থ মিছিলের সমান বয়সী প্রকাশিত হয় ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে। এরপর চাকুরী জীবনের ব্যস্ততা তাঁকে কবিতা থেকে কিছুটা দূরে ঠেলে দিয়েছিল। ’৮১ থেকে ’৯০ – টানা নয় বছর কোনো কবিতার বই প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনি। এই বন্ধ্যাত্ব কেটে যায় ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে। এ বছর প্রকাশিত হয় কামাল চৌধুরীর দ্বিতীয় কবিতা-সংকলন টানাপোড়েনের দিন । অতঃপর একে একে আরো আটটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। যথা:- এই পথ এই কোলাহল (১৯৯৩), এসেছি নিজের ভোরে (১৯৯৫), এই মেঘ বিদ্যুতে ভরা (১৯৯৭), ধূলি ও সাগর দৃশ্য (২০০০), রোদ বৃষ্টি অন্ত্যমিল (২০০৩), হে মাটি পৃথিবীপুত্র (২০০৬),[২]প্রেমের কবিতা (২০০৮) এবং পান্থশালার ঘোড়া (২০১০)। ১৯৯৫-এ তিনি প্রকাশ করেছেন একটি বাছাই সংকলন নির্বাচিত কবিতা । এরই ধারাই ২০১১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করেছেন কবিতাসংকলন । এগারোটি গ্রন্থ থেকে তিন শত নয়টি কবিতা এই গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এছাড়াও কামাল চৌধুরী ২০০৭-এ প্রকাশ করেন কিশোর কবিতা সংকলন আপন মনের পাঠশালাতে। ১৯৯৫-এ আলী রীয়াজ-এর সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন সত্তর দশকের কবিদের কবিতা

পুরস্কার

  • রুদ্র পদক (২০০০)
  • সৌহার্দ্য সম্মাননা(পশ্চিমবঙ্গ) (২০০৩)
  • কবিতালাপ সাহিত্য পুরস্কার (২০০৪)[২]
  • জীবনানন্দ পুরস্কার (২০০৮)
  • সিটি- আনান্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার (২০১০)
  • দরিয়ানগর কবিতা সম্মাননা (২০১০)
  • বাংলা একাডেমী পুরস্কার (২০১২)

কবিতাস্বরূপ

তিনি ১৯৮০' দশকের প্রারম্ভে কবি হিসেবে আত্ম প্রকাশ করেন। তাঁর কবিতায় সমসাময়িক প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। তাঁর প্রথম গ্রন্থের নাম মিছিলের সমান বয়সী যার মধ্যে চিহ্নিত হয়েছে তাঁর কবিসত্তার প্রধান প্রবণতা। তথাপি তিনি মূলতঃ গীতিকবিতায় সাবলিল। সমসাময়িক অন্যান্য কবিদের মতোই তাঁর কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দের যৌথ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। তাঁর "হাড়ের গল্প" নামক কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের প্রভাব পড়েছে ছন্দে, শব্দচয়নে এবং বিষয়বিস্তারে এই ভাবেঃ

এই তো হাড়ের গল্প। আজ রাতে বিচ্ছিন্ন বধির

পরশ্রীকাতর মাংস এতদিন আঁঠাল স্বভাবে বেঁধে রেখে

আজ ফিরিয়ে নিয়েছে তার অন্ধমুখ।

অন্যদিকে ছন্দ এবং অন্তমিলে যে স্বাভাবিক দক্ষতা তাঁর রয়েছে তা কখনো কখনো পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে।

বিকেলের কথা মনে আছে ভাঁটফুল

বৃষ্টিতে ভিজে বেড়াতে যে এল কারা
পিছল রাস্তা কাদামাখা আঁকাবাঁকা

বেড়াবার সুখ দুর্ভোগে দিশেহারা।


মোহাম্মদ রফিক মন্তব্য করেছেন, "স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে জনমানুষের বেদনামথিত উত্থান-পতনের ইতিহাস জানতে হলে আরো কারো কারো সঙ্গে অবশ্য পাঠ্য কামাল চৌধুরীর কবিতা। যেকোনো কবির পক্ষে এই এক বিরাট অর্জন।" তিনি আরো বলেছেন, "কামাল চৌধুরী রোমান্টিক ধারণার শেষতম প্রতিনিধিদের একজন। তবে তিনি ব্যতিক্রমী প্রতিনিধি। ব্যতিক্রমী এই কারণে যে, অনুভূতিকে নিজের ভেতরের আত্মস্থ করে নিয়ে ধারণ করে রক্তে-মাংসে-মজ্জায় তাকে দিতে পেরেছেন বস্তুর সংহতি। শব্দ উপমা ও চিত্রকল্পের যথাযথ সংযোজন মূর্ত হয়ে উঠেছে এক সংবেদনশীলতায়- যা একই সঙ্গে কবির নিজের এবং পাঠকেরও বটে। তখন তিনি পাঠক আর প্রতারকবন্ধু নয়, সে কবিরই কাব্যবিশ্বের একান্ত বাসিন্দা। এই সংযোগ বা সংহতি ধ্রুপদী কবিতার অন্যতম লক্ষণ।"[৩] সরকার মাসুদ লিকেছেন, "কামাল চৌধুরীর কবিতা মিশ্র অনুভূতির জন্ম দেয়। তিনি প্রধানত রোমান্টিক আবার আধুনিকও। মূলত প্রথানুগ এই কবি কখনও কখনও প্রতাগত কাব্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছেন, কিছু কিছু ৰেত্রে তা পেরেওছেন। ছন্দ তাঁর কবিতার এক উলেস্নখযোগ্য দিক। তবে বিশুদ্ধ গদ্যকেও তিনি অনেকবার ব্যবহার করেছেন। সেই গদ্য যখন সৃজনী মাত্রা অর্জন করেছে কেবল তখনই তা হয়ে উঠেছে ফলপ্রসূ।"[৪]

তথ্যসূত্র

  1. বাংলা একাডেমী পুরস্কার ঘোষণা
  2. লেখক অভিধান, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ২০০৯।পৃষ্ঠা-১১৯।
  3. ধানসিঁড়ি (সাহিত্যের ছোটকাগজ), প্রকাশকাল ২০০৯।
  4. সরকার মাসুদ, "কামাল চৌধুরী, তাঁর কবিতা", মুন্সিগঞ্জ.কম 09/07/2010

বহিঃসংযোগ