বিশাপুর

স্থানাঙ্ক: ২৯°৪৬′৪০″ উত্তর ৫১°৩৪′১৫″ পূর্ব / ২৯.৭৭৭৭৮° উত্তর ৫১.৫৭০৮৩° পূর্ব / 29.77778; 51.57083
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিশাপুর
ফার্সি: بیشاپور
বিশাপুরের ধ্বংসাবশেষ
বিশাপুর ইরান-এ অবস্থিত
বিশাপুর
ইরানে অবস্থান
বিকল্প নামBishâpûr
অবস্থানKazerun, ফর্স প্রদেশ, ইরান
স্থানাঙ্ক২৯°৪৬′৪০″ উত্তর ৫১°৩৪′১৫″ পূর্ব / ২৯.৭৭৭৭৮° উত্তর ৫১.৫৭০৮৩° পূর্ব / 29.77778; 51.57083
ধরনবসতি
ইতিহাস
নির্মাতাপ্রথম শাপুর
প্রতিষ্ঠিত২২৬ খ্রিস্টাব্দ
সংস্কৃতিফার্সি (সাসানীয় সাম্রাজ্য)

বিশাপুর (মধ্য ফার্সি: Bay-Šāpūr; ফার্সি: بیشاپور, Bishâpûr) ছিল সাসানিয় পারস্যের (বর্তমান ইরানের) একটি প্রাচীন শহর যা পারসিস এবং এলমের মধ্যবর্তী প্রাচীন সড়কে অবস্থিত। রাস্তাটি সাসানীয়দের রাজধানী ইস্তাখর (পার্সেপোলিসের নিকটস্থ) এবং তিসফুন শহরকে সংযুক্ত করেছে। এটি ইরানের ফর্স প্রদেশের কাজারুন কাউন্টির আধুনিক ফালিয়ানের দক্ষিণে অবস্থিত। বিশাপুর শহরটি শাপুর নদীর কাছে গড়ে উঠেছিল। একই স্থানে একটি দুর্গও রয়েছে যেখানে পাথর কাটা জলাধার এবং নদী উপত্যকা রয়েছে। এ স্থানে ছয়টি সাসানিয় শিলা রিলিফ পাওয়া যায়।

এই শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পারস্য ও রোমান শিল্প-স্থাপত্যের অনবদ্য সমন্বয় যা বিশাপুর নির্মাণের আগে দেখা যায়নি। বিশাপুর নির্মিত হওয়ার আগে, পারস্য/ইরানের প্রায় সব প্রধান শহরই ফিরুজাবাদ বা দারবের পুরানো শহরের মতো বৃত্তাকার আকৃতির ছিল। বিশাপুর হল প্রথম পারস্য শহর যেখানে উল্লম্ব এবং অনুভূমিক রাস্তা রয়েছে। এছাড়াও এই শহরে, বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ নকশায়, রোমান শিল্প থেকে অভিযোজিত টাইলের কাজ দেখা যায়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বিশাপুরে শাপুর প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ

বিশাপুর নামটি বে-সাপুর থেকে এসেছে, যার অর্থ প্রভু শাপুর[১]

একটি শিলালিপি অনুসারে, শহরটি ২৬৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম শাপুর (শা. ২৪০–২৭০ খ্রিস্টাব্দ) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শাপুর ছিলেন দ্বিতীয় সাসানিয় রাজা এবং তিনি তিনবার রোমানদের পরাজিত করেছিলেন, তৃতীয় গর্ডিয়ানকে হত্যা করেছিলেন, ভ্যালেরিয়ানকে বন্দী করেছিলেন এবং আরবের ফিলিপকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিলেন। শাপুরের আদি প্রদেশ ফর্স, তিনি একটি নতুন রাজধানী তৈরি করেছিলেন যা তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার পরিমাপ করবে: বিশাপুর, শাপুরের শহর। শহরের বাইরে, বিশাপুর নদীর ঘাটের পাশগুলোকে শাপুর বিশাল ঐতিহাসিক রিলিফ দিয়ে সাজিয়েছিলেন রোমের উপর তার তিনবার জয়ের স্মৃতিচারণের উদ্দেশ্যে। এই রিলিফগুলির মধ্যে একটি ছিল রোমের ট্রাজান স্তম্ভের বর্ণনামূলক দৃশ্যের ইচ্ছাকৃত অনুকরণ, যেখানে অর্ধবৃত্তাকার আকারে, সৈন্য ও ঘোড়ার ফাইল সহ রেজিস্টারের সারি রয়েছে।

বিশাপুরে রাজা তার উত্তরসূরিদের দ্বারা অনুলিপির সুভিধার্থে রাজার অভিষেক বিষয়ে সাসানিয়দের চিত্রেরও উদ্বোধন করেছিলেন, যেখানে রাজা এবং দেবতা মুখোমুখি ঘোড়ার পিঠে অবস্থান করছেন, এবং দেবতা - সাধারণত আহুরা মাজদা - সার্বভৌমত্বের মুকুট ধরে আছেন।

শহরটি সম্পূর্ণ নতুন বসতি ছিল না: যেখানে প্রত্নতাত্ত্বিকরা পার্থিয়ান এবং এলামাইট যুগের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন।

পারস্যে আরব বিজয় এবং ৭ম শতাব্দীর দ্বিতীয় চতুর্থাংশে ইসলামের উত্থান পর্যন্ত শহরটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। দশম শতাব্দীতেও এখানে লোকের বসবাস ছিল।

শহরের একটি আয়তক্ষেত্রাকার পরিকল্পনা রয়েছে যার একটি গ্রিড প্যাটার্ন রোমান শহরের নকশার মতো নিয়মিত আন্তঃশহুরে রাস্তার সাথে যুক্ত। ইরানের স্থাপত্যে এই নকশার আর পুনরাবৃত্তি দেখা যায় নি।[২]

খনন এবং গবেষণা[সম্পাদনা]

১৮৪০ সালে বিশাপুর; পারস্যে ভ্রমণ (ভয়েজ এন পার্স) বই থেকে ইউজিন ফ্ল্যান্ডিনের চিত্রাঙ্কন।

১৯৩০-এর দশকে রুশ-ফরাসি প্রত্নতাত্ত্বিক রোমান ঘিরশম্যান স্থানটি পরিষ্কার করেছিলেন। ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক জর্জিনা হারম্যান বিশাপুরের সাসানিয় শিলা রিলিফ সম্পর্কে একটি বই লিখেছেন, যা ১৯৮০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "BĪŠĀPŪR"এনসাইক্লোপিডিয়া ইরানিকা (ইংরেজি ভাষায়)। (অনলাইন সংস্করণ)। এনসাইক্লোপিডিয়া ইরানিকা ফাউন্ডেশন। ১৫ ডিসেম্বর ১৯৮৯। পৃষ্ঠা ২৮৭–২৮৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০২২ 
  2. Salma, K. Jayyusi; Holod, Renata; Petruccioli, Attilio; André, Raymond (২০০৮)। The City in the Islamic World। Leiden: Brill। পৃষ্ঠা ১৭৪। আইএসবিএন 9789004162402 
  3. হারম্যান, জর্জিনা (১৯৮০)। Sasanian rock reliefs at Bishapur. part 1, Bishapur III Triumph attributed to Shapur I (ইংরেজি ভাষায়)। বার্লিন: ডেইট্রিচ রেইমার ভার্লাগ। আইএসবিএন 9783496001317ওসিএলসি 59815517 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:ফর্স প্রদেশ