বিনয় মুখোপাধ্যায়
বিনয় মুখোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | ১০ জানুয়ারি, ১৯০৮ ফেগুনামার, ঢাকা বৃটিশ ভারত |
মৃত্যু | ২২ অক্টোবর, ২০০২ দিল্লি ভারত |
পেশা | সাংবাদিক ও সাহিত্যিক |
বাসস্থান | দিল্লি |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ভারত |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | নরসিংহ দাস পুরস্কার বিদ্যাসাগর পুরস্কার |
বিনয় মুখোপাধ্যায় ( ইংরেজি: Binoy Mazumdar) ( ১০ জানুয়ারি, ১৯০৮ - ২২ অক্টোবর, ২০০২) একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক , সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক। কর্মজীবনে 'যাযাবর' ছদ্মনামে তার লেখা 'দৃষ্টিপাত' গ্রন্থটি পঞ্চাশের দশকে বাঙালি পাঠক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। [১]
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]
বিনয় মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১০ ই জানুয়ারি বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার ফেগুনামার গ্রামে। পিতার নাম ফণীভূষণ মুখোপাধ্যায় ও মায়ের নাম মনোরমা দেবী। বিনয় কুমার চাঁদপুরের জুবিলি হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, সেন্ট পলস কলেজ থেকে আই.এ ও কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি বেশ কয়েকটি গান রচনা করেছিলেন এবং সেগুলি সুরসাধক হিমাংশু দত্তের সুরারোপে রেকর্ড হিসাবে প্রকাশিত হয়। এরূপ গানের রেকর্ডের তালিকা ছয়টি। উল্লেখযোগ্য গানগুলি হল - শচীন দেববর্মণের কণ্ঠে " নতুন ফাগুনের দিনে" এবং উমা বসুর কণ্ঠে "ঝরানো পাতার পথে"। তবে সুরকার হিমাংশু দত্তের অকাল প্রয়াণে তার বিনয়ের গীতিকার জীবনের ছেদ পড়ে।
কর্মজীবন ও সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]
দৈনিক "যুগান্তর" পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজ নিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে "শ্রীপথচারী" ছদ্মনামে রাজনৈতিক কলমে লিখতেন। এর পর ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের উচ্চ পদস্থ কর্মচারী হয়ে দিল্লি যান এবং দীর্ঘদিন কাজ করার পর প্রেস কাউন্সিলের সচিব পদে উন্নীত হয়ে অবসর নেন। কর্মজীবনে তদানীন্তন নেতৃস্থানীয় বহু ব্যক্তির সান্নিধ্যে এসেছেন সাথে সাহিত্যরচনা করেছেন "যাযাবর" ছদ্মনামে। কর্মজীবনে তার উপরে দায়িত্ব আসে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গান্ধীজির বাণী সংগ্রহ করার। সোদপুরে গান্ধী জির কাছে গেলে তিনি বলেন বাণী দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় - তার মন ভেঙ্গে গেছে। গান্ধীজির কাজ থেকে এমন কথা শুনে তার মনে হয়েছিল তিনি যেন এক ঐতিহাসিক ট্রাজেডি প্রত্যক্ষ করছেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে কর্মজীবনেই "দৃষ্টিপাত" রম্যরচনা লিখে যাযাবর নামে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় লেখক হয়ে ওঠেন। ছোটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ সংকলন মিলিয়ে তার গ্রন্থের সংখ্যা ছয় এবং প্রত্যেকটি গ্রন্থই সুরচিত ও সুখপাঠ্য।[২]
- 'দৃষ্টিপাত' (১৯৪৭)
- 'জনান্তিকে' (১৯৫২)
- 'ঝিলম নদীর তীরে' (১৯৫৪)
- 'লঘুকরণ' (১৯৬৪)
- 'হ্রস্ব ও দীর্ঘ'
- 'যখন বৃষ্টি নাম' (১৯৮৩)
এছাড়া ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাংলা ভাষায় তার স্বনামে লেখা গ্রন্থ দুটি হল -
- 'খেলার রাজা ক্রিকেট'
- 'মজার খেলা ক্রিকেট'
কর্মসূত্রে ও অবসর গ্রহণ করার পর তিনি সস্ত্রীক ইউরোপ ও আমেরিকায় গিয়েছিলেন। তার স্ত্রী দুর্গাদেবী ছাত্রজীবনে প্যারিসে ছিলেন। তিনি যামিনী রায়ের শৈলীতে অনেক ছবি এঁকেছেন। তার লেখা 'পুষ্পপট' বাংলাভাষায় ফুল সাজানো নিয়ে প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ।
সম্মাননা[সম্পাদনা]
'দৃষ্টিপাত' সমকালীন বাংলা সাহিত্যে সর্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক হিসাবে বিবেচিত হওয়ায়বিনয় মুখোপাধ্যায় সাহিত্যকর্মের জন্য ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহ দাস পুরস্কার এবং ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'বিদ্যাসাগর পুরস্কার' লাভ করেন।
জীবনাবসান[সম্পাদনা]
খ্যাতনামা সাহিত্যিক বিনয় মুখোপাধ্যায় ২০০২ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে অক্টোবর দিল্লিতে প্রয়াত হন।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯, পৃষ্ঠা ২৫৬, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
- ↑ শিশিরকুমার দাশ সংকলিত ও সম্পাদিত, সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৯, পৃষ্ঠা ১৪৫ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-০০৭-৯ আইএসবিএন বৈধ নয়