বিধু ভিনসেন্ট
বিধু ভিনসেন্ট | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | বিধু ভিনসেন্ট |
পেশা |
|
সন্তান | ১ |
বিধু ভিনসেন্ট হলেন কেরালার একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক, লেখক, সাংবাদিক এবং নাট্যকর্মী। তিনি মালয়ালম ছবি ম্যানহোল দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ক্ষেত্রে তাঁর অভিষেক করেন, এই ছবি তাঁকে সেই বছর সেরা পরিচালকের জন্য কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার এনে দিয়েছিল। কেরালার ২১তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, ছবিটি বিধু ভিনসেন্টের জন্য সেরা নবাগত পরিচালকের পুরস্কার সহ দুটি পুরস্কার জিতেছে।[১]
জীবনী
[সম্পাদনা]কোল্লামে জন্মগ্রহণ করে, তিরুবনন্তপুরম সরকারি মহিলা কলেজে পড়াশোনা করার পর, বিধু ভিনসেন্ট এশিয়ানেটের সাথে টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন।[২] চ্যানেলের সাথে কাজ করার সময়, তিনি তথ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং অবশেষে তিরুবনন্তপুরমের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ ইমেজিং টেকনোলজিতে যোগদান করেন। কেরালায় বালি খনির ঘটনা, কাসারগড়ে এণ্ডোসালফানের সংক্রমণ এবং মহিলাদের উপর আক্রমণ সম্পর্কে তাঁর প্রতিবেদন কেরালা বিধানসভা এবং রাজ্যের সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ২০০৩ সালে মুথাঙ্গার ঘটনাটি যখন ঘটে (পুলিশ মুথাঙ্গা গ্রামে আদিবাসীদের (উপজাতি গোষ্ঠী) উপর গুলি চালায়) তখন তিনি এশিয়ানেট নিউজের একজন প্রতিবেদক ছিলেন এবং তিনি তাঁর চাকরি ছেড়ে আন্দোলনে যোগ দেন। পরে মুথাঙ্গা আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ২০১৪ সালে সমাজকর্মে স্নাতকোত্তর এবং শিল্পকলা (দর্শন) বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য তিনি তাঁর কর্মজীবন থেকে বিরতি নেন। এরপরে তিনি দৈনিক সাংবাদিকতায় যোগদান করেন এবং "ভারতের মণিপুরে সমাজ ও বিদ্রোহ" শীর্ষক একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন রচনা করেন।[৩]
২০১০ সালে, বিধু ভিনসেন্ট পেনকুট্টুর প্রথম সভাপতি হন, এই সংস্থাটি অসংগঠিত ক্ষেত্রের মহিলা কর্মীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে।[৪] ২০১৭ সালে, তিনি মালয়ালম চলচ্চিত্র শিল্পে মহিলা শিল্পী এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতিক্রিয়া হিসাবে "উইমেন ইন সিনেমা কালেক্টিভ" গঠনে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করেন।[৫]
বিধু ভিনসেন্ট ২০১৫ সালে মিডিয়াওন টিভির জন্য একটি টেলিফিল্ম তৈরি করেন, যার নাম নাদাকান্থিয়াম। গল্পটি একজন থিয়েটার অভিনেতার জীবন এবং দৈনন্দিন জীবনের খাওয়া-পরা জোগাড় করার জন্য তার সংগ্রামের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি কেরালা স্টেট টেলিভিশন পুরস্কারের অধীনে চারটি প্রধান পুরস্কার জিতেছিল, যার মধ্যে তিনটি হল সেরা পরিচালনা, চিত্রনাট্য এবং ২০১৫ সালের সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।[৬]
বিধু ভিনসেন্ট একটি মালয়ালম সাপ্তাহিক পত্রিকায় নাৎসিবাদের উপর একটি গ্রাফিক সিরিজে তাঁর জার্মানি ভ্রমণের উপর ভিত্তি করে একটি ভ্রমণকাহিনী প্রকাশ করেছিলেন। এটি দাইভাম অলিভিল পোয়া নালুকাল শিরোনামে চিন্ত পাবলিশার্স কর্তৃক বই আকারে প্রকাশিত হয় এবং সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়।[৩] ২০১৪ সালে, তিনি মিডিয়া ওয়ানের জন্য একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেন, যার নাম বৃথিউদে জাথি (২০১৪) ( অনু. জাত এবং পরিচ্ছন্নতা)। এটি কেরালার সেই মেথরদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে, যারা হাতে করে মানুষের মলমূত্র পরিষ্কার করে।[৭] সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, ছবিটি কোল্লামের একটি পাড়ায় বসবাসকারী মেথরদের জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি।[৭] বিধু ভিনসেন্ট তাঁর পুরস্কারপ্রাপ্ত তথ্যচিত্রটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত করেন, এবং ম্যানহোল চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মূল ধারার পরিচালনায় তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। ছবিটি কেরালার ২১তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের "আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা" বিভাগে প্রবেশ করে। উৎসবের ইতিহাসে বিধু ভিনসেন্ট কেরালার প্রথম মহিলা, যাঁর চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছিল। উৎসবে, ছবিটি দুটি পুরস্কার জেতে – সেরা মালয়ালম চলচ্চিত্রের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিকস পুরস্কার এবং তাঁর জন্য "সিলভার ক্রো ফিজ্যান্ট পুরস্কার" (সেরা নবাগত পরিচালক)।[৮] ছবিটি জন আব্রাহাম পুরস্কার (বিশেষ উল্লেখ) পেয়েছে, যেটি ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ অফ ইণ্ডিয়ার কেরালা শাখা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।[৯] ২০১৭ সালে, বিধু ভিনসেন্ট ৪৭তম কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছিলেন এবং এই বিভাগে রাজ্য পুরস্কার জয়ী প্রথম মহিলা হয়েছিলেন।[১০][১১] তিনি তাঁর লেকা ডাইভাম অলিভিল পোয়া নালুকালের ভ্রমণকাহিনীর জন্য ২০২০ কেরালা সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন।[১২]
চলচ্চিত্র তালিকা
[সম্পাদনা]বছর | চলচ্চিত্র | মন্তব্য | |
---|---|---|---|
২০১৪ | বৃথিউদে জাথি | তথ্যচিত্র | [৭] |
২০১৫ | আফটার দ্য এণ্ড অফ ড্রামা | স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সেরা পরিচালক এবং সেরা স্ক্রিপ্ট লেখকের জন্য কেরালা রাজ্য টেলিভিশন এবং সাংবাদিকতা পুরস্কার |
[১৩] |
২০১৬ | ম্যানহোল | সেরা চলচ্চিত্রের জন্য কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার সেরা পরিচালকের জন্য কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার সেরা নবাগত পরিচালক, আইএফএফকে সেরা মালায়ালাম সিনেমার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিকস পুরস্কার, আইএফএফকে |
[১৪] |
২০১৯ | স্ট্যাণ্ড আপ | পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র | [১৫] |
২০২০ | সিঙ্গারস অফ লিবারেশন | স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র | |
দ্য রিবার্থ অফ এ রিভার | তথ্যচিত্র | ||
২০২১ | ভাইরাল সেবি | পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র |
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- মহিলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন পরিচালকদের তালিকা
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Vidhu Vincent – Government College for Women, Thiruvananthapuram" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১৪।
- ↑ "Vidhu Vincent is the first Malayali director to be part of IFFK"। Deshabhimani (মালায়ালাম ভাষায়)। ২১ অক্টোবর ২০১৬। ৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৭।
- ↑ ক খ Binoy, Rasmi (৮ ডিসেম্বর ২০১৬)। "Ground realities"। The Hindu। ৬ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৭।
- ↑ "'Penkoottu' highlights woes of women employees"। The Hindu। ৯ মার্চ ২০১০। ১২ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৭।
- ↑ "Kerala's Women in Cinema Collective registers as society, to fight for geneder parity"।
- ↑ Staff Reporter (৪ জুন ২০১৬)। "Television awards announced"। The Hindu।
- ↑ ক খ গ "Revealing a stinking truth"। Deccan Chronicle। ১০ অক্টোবর ২০১৬। ৪ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৭।
- ↑ "Vidhu Vincent: woman power of Malayalam cinema"। Malayala Manorama। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬। ৪ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৭।
- ↑ "Ottayalpatha, Manhole win FFSI laurels"। The Times of India। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। ৬ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৭।
- ↑ "Vidhu Vincent bags best director award for 'Manhole'"। The Hindu। ৭ মার্চ ২০১৭। ৪ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৭।
- ↑ Ayyappan (৮ মার্চ ২০১৭)। "The politics of Kerala state film awards"। Deccan Chronicle। ৭ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৭।
- ↑ "Kerala Sahitya Akademi awards announced, Sethu and Sreedharan honoured with fellowships"। The New Indian Express। ১৭ আগস্ট ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৮।
- ↑ സംസ്ഥാന ടെലിവിഷന് അവാര്ഡ്। Media One TV (মালায়ালাম ভাষায়)। ৩ জুন ২০১৬। ৬ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৭।
- ↑ Prakash, Asha (৭ মার্চ ২০১৭)। "Vidhu Vincent's Manhole sweeps best film and best director"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৭।
- ↑ "Rajisha and Nimisha in team up for Vidhu Vincent's Stand Up" "Rajisha and Nimisha in team up for Vidhu Vincent's Stand Up"। The Times of India। ৮ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে বিধু ভিনসেন্ট (ইংরেজি)
- উদ্ধৃতি শৈলী মালায়ালাম ভাষার লিপি ব্যবহার করছে (ml)
- নারী টেলিভিশন সাংবাদিক
- ভারতীয় নারী প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা
- কেরলের শিক্ষাবিদ
- কেরলের লেখিকা
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখক
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখিকা
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় সাংবাদিক
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় নারী শিল্পী
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় ব্যক্তি
- ভারতীয় টেলিভিশন সাংবাদিক
- ভারতীয় প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা
- কেরল রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী
- ভারতীয় নারী সাংবাদিক
- জীবিত ব্যক্তি
- ভারতীয় নারী চলচ্চিত্র পরিচালক
- মালয়ালম চলচ্চিত্র পরিচালক