বিষয়বস্তুতে চলুন

বিডলারায়ন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মার্কিন ডলারের বিশ্বব্যাপী ব্যবহার:
  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
  মার্কিন ডলারের বহির্দেশীয় গ্রাহকসমূহ
  মার্কিন ডলারের সাথে আবদ্ধ মুদ্রাসমূহ
  মার্কিন ডলারের সাথে আবদ্ধ মুদ্রাসমূহ (সঙ্কীর্ণ পরিসরসহ)
বিশ্বব্যাপী ইউরো-র ব্যবহার:
  ইউরোর বহির্দেশীয় গ্রাহকসমূহ
  ইউরোর সাথে আবদ্ধ মুদ্রাসমূহ
  ইউরোর সাথে আবদ্ধ মুদ্রাসমূহ (সঙ্কীর্ণ পরিসরসহ)

বিডলারায়ন বলতে বিভিন্ন দেশে মজুদ মুদ্রা, বিনিময়ের মাধ্যম বা হিসাবের একক হিসেবে মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরতা হ্রাস করাকে বোঝায়।[] বিডলারায়নের ধারণাটির সাথে একটি বিকল্প বৈশ্বিক আর্থিক ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা সৃষ্টির ব্যাপারটিও জড়িত, যার উদ্দেশ্য হল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং মূল্য পরিশোধের জন্য সুইফট আর্থিক স্থানান্তর ব্যবস্থার মতো পশ্চিমা বিশ্ব-নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাগুলির উপর নির্ভরতা পরিহার করে অধিকতর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করা, যে ব্যবস্থাগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা বিশ্বের মিত্ররা অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিকভাবে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।[] ১৯৪০-এর দশকের ব্রেটন উডস ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে মার্কিন ডলার ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজকোষ মন্ত্রণালয় সুইফট আর্থিক স্থানান্তর নেটওয়ার্কের উপর যথেষ্ট তদারকি করে।[] এর ফলে বৈশ্বিক আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থার উপর দেশটির বিশাল প্রভাব রয়েছে এবং বিদেশী সংস্থা এবং ব্যক্তিদের উপর তার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা রয়েছে।[] ব্রিক্‌স-এর মতো অনেক সংগঠন আরও ভারসাম্যপূর্ণ বিশ্বের জন্য সুইফটের বিকল্প সৃষ্টিতে কাজ করছে।[]

মার্কিন ডলার ১৯২০-এর দশক থেকে আন্তর্জাতিক মজুদ মুদ্রা হিসেবে পাউন্ড স্টার্লিংকে স্থানচ্যুত করতে শুরু করে। এর কারণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে মার্কিন ডলার তুলনামূলকভাবে অক্ষত অবস্থায় আবির্ভূত হয়। আরেকটি কারণ হল যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণের অন্তর্মুখী প্রবাহগুলির একটি উল্লেখযোগ্য প্রাপক রাষ্ট্র ছিল।[] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও শক্তিশালী পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর ১৯৪৪ সালের ব্রেটন উডস চুক্তি যুদ্ধ-পরবর্তী আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে, যার ফলে মার্কিন ডলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বিশ্বের প্রাথমিক মজুদ মুদ্রায় পরিণত হয়। যুদ্ধ-পরবর্তীকালে মার্কিন ডলার ছিল একমাত্র মুদ্রা, যার দাম প্রতি ট্রয় আউন্সে ৩৫ ডলার হারে স্বর্ণের সাথে বেঁধে দেয়া হয়েছিল।[]

ডলারের অবমূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠিত ব্রেটন উডস ব্যবস্থার অধীনে স্বর্ণের মূল্য প্রতি ট্রয়-আউন্সে ৩৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং এইভাবে মার্কিন ডলারের মূল্য সোনার মূল্যের সাথে বেঁধে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৯৬০-এর দশকে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এই ডলার-স্বর্ণ রূপান্তরযোগ্যতা বজায় রাখার ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। এ সময় ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা ডলারকে সোনায় রূপান্তর করতে শুরু করলে সোনার মজুদ হ্রাস পায় এবং এর পরিণামে ডলারের মূল্য হ্রাস পেতে শুরু করে। একটি উদীয়মান মুদ্রা সংকট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ডলারের বিনিময়ে যে স্বর্ণ কিনতে পারবে না, সেই আসন্ন বিপদের মুখোমুখি হয়ে ১৯৭১ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নিক্সন স্বর্ণের রূপান্তরযোগ্যতা অবশেষে বাতিল করে দেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ব অর্থব্যবস্থায় যে রদবদল ঘটে, তাকে "নিক্সন অভিঘাত" নামে ডাকা হয়।[]

এভাবে মার্কিন ডলারের মূল্য আর স্বর্ণের উপর নির্ভরশীল ছিল না এবং মার্কিন মুদ্রার মূল্য বজায় রাখার দায়িত্ব ফেডারেল রিজার্ভের উপর বর্তায়। তবে, ফেডারেল রিজার্ভ অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখে, যার ফলে ১৯৭০-এর দশকে মুদ্রাস্ফীতি স্থবির হয়ে পড়ে এবং মার্কিন ডলারের মূল্য দ্রুত হ্রাস পায়। এর মূল কারণ ছিল সেই সময়কার প্রচলিত অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি যা অনুযায়ী মুদ্রাস্ফীতি এবং প্রকৃত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি একে অপরের সাথে সংযুক্ত ছিল ( ফিলিপস রেখা ), তাই মুদ্রাস্ফীতি তুলনামূলকভাবে অনুকূল বলে বিবেচিত হত।[] ১৯৬৫ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে মার্কিন ডলার তার মূল্যের দুই-তৃতীয়াংশ হারায়।[]

বিএনএন ব্লুমবার্গ নামক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী মজুদ মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের মর্যাদা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, যা সাধারণভাবে এখনও স্বীকৃত নয়। অনেক বিশ্লেষক পূর্ববর্তী বছরের উল্লেখযোগ্য বিনিময় হারের ওঠানামা উপেক্ষা করছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কয়েকটি দেশ বিকল্প পছন্দ খুঁজতে শুরু করায় মজুদ মুদ্রা হিসেবে বিশ্বব্যাপী মার্কিন ডলারের অংশ গত বিশ বছরে পরিলক্ষিত গড় গতির চেয়ে দশ গুণ বেশি হারে হ্রাস পায়। বিনিময় হার উপযোজন হিসাব করে দেখা যায় যে ২০১৬ সাল থেকে ডলারের বাজার অংশ আনুমানিক ১১% হ্রাস পেয়েছে, যা ২০০৮ সাল থেকে দ্বিগুণ।[] ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতিত্বের সময় অনেক দেশ বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ হিসেবে মার্কিন ডলার থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করে। এটি এমন এক সময়ে ঘটে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বাতন্ত্র্যবাদী বৈদেশিক নীতি এবং অনিয়মিত অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করতে শুরু করে।[১০][১১][১২]

খাতভিত্তিক উন্নয়ন

[সম্পাদনা]

তেল বা অন্যান্য প্রাথমিক পণ্যের বাণিজ্য

[সম্পাদনা]

আর্জেন্টিনা

[সম্পাদনা]

২০২৩ সালের গোড়ার দিক থেকে আর্জেন্টিনা মার্কিন ডলারের পরিবর্তে ইউয়ান ব্যবহার করে চীনা আমদানির জন্য ব্রাজিলের সাথে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। দেশটির লক্ষ্য হলো তার ক্রমহ্রাসমান মার্কিন ডলারের মজুদ রক্ষা করা। তীব্র খরার কারণে আর্জেন্টিনা কৃষি রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যার ফলে ডলারের অন্তর্মুখী প্রবাহ কমে গেছে।[১৩] ২০২৩ সালের এপ্রিলে আর্জেন্টিনা ইউয়ান ব্যবহার করে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের চীনা আমদানি ক্রয় করার পরিকল্পনা করেছে। এরপর দেশটির লক্ষ্য হলো চীনা ইউয়ানে মাসিক প্রায় ৭৯ কোটি ডলার মূল্যের আমদানি পরিশোধ করা।[১৪] এপ্রিল মাসে চীন এবং আর্জেন্টিনা তাদের মুদ্রা বিনিময় বন্দোবস্তটি চালুর ঘোষণা দেওয়ার পর মে মাসে আর্জেন্টিনা চীনা আমদানির জন্য ১০৪ কোটি ইউয়ানের সমপরিমাণ অর্থ ব্যবহার করতে সক্ষম হয়। এরপর জুন মাসে সের্হিও মাসার চীন সফরের সময় পরবর্তী তিন বছরের জন্য বন্দোবস্তটিকে ১৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়।[১৫]

ব্রাজিল

[সম্পাদনা]

বলিভিয়া

[সম্পাদনা]

ইউরোপ

[সম্পাদনা]

মালয়েশিয়া

[সম্পাদনা]

রাশিয়া

[সম্পাদনা]

সৌদি আরব

[সম্পাদনা]

তুরস্ক

[সম্পাদনা]

ভেনেজুয়েলা

[সম্পাদনা]

বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ

[সম্পাদনা]

মিয়ানমার

[সম্পাদনা]

কাজাখস্তান

[সম্পাদনা]

রাশিয়া

[সম্পাদনা]

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি

[সম্পাদনা]

ভারত-রাশিয়া

[সম্পাদনা]

পাকিস্তান

[সম্পাদনা]

ভারত-সংযুক্ত আরব আমিরাত

[সম্পাদনা]

অস্ট্রেলিয়া/রাশিয়া/জাপান/ব্রাজিল/ইরান

[সম্পাদনা]

ব্রাজিল-চীন

[সম্পাদনা]

অস্ট্রেলিয়া-চীন

[সম্পাদনা]

ফ্রান্স-চীন

[সম্পাদনা]

ইনস্টেক্স

[সম্পাদনা]

ইরান-ইউরোপীয় ইউনিয়ন

[সম্পাদনা]

রাশিয়া-ইরান

[সম্পাদনা]

দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়

[সম্পাদনা]

অন্যান্য

[সম্পাদনা]

ডলার-মূল্যায়িত সম্পদ

[সম্পাদনা]

রাশিয়া

[সম্পাদনা]

জিম্বাবুয়ে

[সম্পাদনা]

অন্যান্য দেশ

[সম্পাদনা]

প্রতিক্রিয়া

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Explained: What Is Dedollarisation & Why Are Countries Dumping The US Dollar?"IndiaTimes। ১৭ এপ্রিল ২০২৩।
  2. 1 2 "पुतिन के जिस प्‍लान से चीन था गदगद, उस पर फिर गया पानी, रूस ने कर दी मोदी के मन की बात"www.msn.com (হিন্দি ভাষায়)। ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
  3. "Swift oversight"Swift
  4. "Sanctions Programs and Country Information | U.S. Department of the Treasury"
  5. Eichengreen, Barry; Flandreau, Marc (২০০৯)। "The rise and fall of the dollar (or when did the dollar replace sterling as the leading reserve currency?)" (ইংরেজি ভাষায়): ৩৭৭–৪১১। ডিওআই:10.1017/S1361491609990153আইএসএসএন 1474-0044 {{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি journal এর জন্য |journal= প্রয়োজন (সাহায্য)
  6. "How a 1944 Agreement Created a New International Monetary System"The Balance
  7. 1 2 "Controlling Inflation: A Historical Perspective" (পিডিএফ)। ৭ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১০ উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "inflation-historical-perspective" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  8. "Measuring Worth – Purchasing Power of Money in the United States from 1774 to 2010"। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১০
  9. Burgess, Matthew (১৮ এপ্রিল ২০২৩)। "De-Dollarization Is Happening at a 'Stunning' Pace, Jen Says - BNN Bloomberg"BNN Bloomberg। ১৮ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত।
  10. Jamal Mecklai। "De-dollarisation was natural, but Trump will accelerate it"hindustantimes.com
  11. Stefania Spezzati। "De-dollarisation could speed up with US isolationist policies, analysts say"Reuters
  12. Ma, Jason। "The world is asking what an American promise is worth now. The answer could determine the dollar's future"Fortune
  13. "Argentina will pay for Chinese imports in yuan instead of dollars to preserve its shrinking greenback reserves"MSN (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০২৩
  14. "Argentina to pay Chinese imports in yuan as South America becomes battleground"South China Morning Post (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০২৩
  15. Alcoba, Natalie (২০২৩)। "Argentina's yuan lifeline sign of brinksmanship between China, US"। Aljazeera।