বার্নার্ড ট্যানক্রেড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বার্নার্ড ট্যানক্রেড
১৯০৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বার্নার্ড ট্যানক্রেড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামঅগাস্টাস বার্নার্ড ট্যানক্রেড
জন্ম(১৮৬৫-০৮-২০)২০ আগস্ট ১৮৬৫
পোর্ট এলিজাবেথে, কেপ উপনিবেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু২৩ নভেম্বর ১৯১১(1911-11-23) (বয়স ৪৬)
কেপ টাউন, কেপপ্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ডাকনামএবি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কলুইস ট্যানক্রেড (ভ্রাতা); ভিনসেন্ট ট্যানক্রেড (ভ্রাতা); ফ্রেড স্মিথ (কাকাতো ভাই)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১০)
১২ মার্চ ১৮৮৯ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৫ মার্চ ১৮৮৯ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১
রানের সংখ্যা ৮৭ ৭০৮
ব্যাটিং গড় ২৯.০০ ৩৫.৪০
১০০/৫০ ০/০ ১/৫
সর্বোচ্চ রান ২৯ ১০৬
বল করেছে ৪৮৪
উইকেট
বোলিং গড় ২৭.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/২২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/– ৬/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

অগাস্টাস বার্নার্ড ট্যানক্রেড (ইংরেজি: Bernard Tancred; জন্ম: ২০ আগস্ট, ১৮৬৫ - মৃত্যু: ২৩ নভেম্বর, ১৯১১) পূর্ব কেপের পোর্ট এলিজাবেথে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৮৯ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে গটেং দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন ‘এবি’ ডাকনামে পরিচিত বার্নার্ড ট্যানক্রেড

বার্নার্ড ট্যানক্রেডকে ‘দক্ষিণ আফ্রিকার ডব্লিউ. জি. গ্রেস’ নামে ডাকা হতো। উইজডেনের মতে, সন্দেহাতীতভাবে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন।[১]

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

গ্রাহামসটাউনের সেন্ট এইডান্স কলেজে পড়াশুনো করেছেন বার্নার্ড ট্যানক্রেড। সেখানেই তিনি তার ক্রিকেট প্রতিভা সর্বসমক্ষে তুলে ধরতে সচেষ্ট হন। বিদ্যালয় জীবনের সঙ্গী পার্সি ফিৎজপ্যাট্রিক ও চার্লস কোগল্যান তার সমসাময়িক ছিলেন। এরপর কেপ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। তবে, স্নাতক ডিগ্রি সমাপণান্তে কিম্বার্লি, প্রিটোরিয়া ও জোহেন্সবার্গে আইনচর্চা করার কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি।

উইতল্যান্ডার সম্প্রদায়ের খ্যাতনামা সদস্য ছিলেন তিনি। ক্লাব ক্রিকেটে তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। এছাড়াও শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যূহ গড়ে তোলে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃতি পান। পাশাপাশি পয়েন্ট অঞ্চলে অসাধারণ ফিল্ডিং করতেন বার্নার্ড ট্যানক্রেড।

ঘরোয়া ক্রিকেট[সম্পাদনা]

পরের বছর অর্থাৎ ১৮৮৯-৯০ মৌসুমে কিম্বার্লির সদস্যরূপে খেলেন। কারি কাপের উদ্বোধনী আসরে ট্রান্সভালের বিপক্ষে খেলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৬ রান তুলে কারি কাপে প্রথম সেঞ্চুরির সন্ধান পান। তবে ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে ১৮৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। ১৮৯১ সালে ট্রান্সভাল ক্রিকেট ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট পরিমণ্ডলে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। এতে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বোর ও উইতল্যান্ডারদের মধ্যকার উত্তেজনা চলাকালীন প্রিটোরিয়া-জোহেন্সবার্গের প্রধান সড়কপথ প্রহরায় প্রধান দায়িত্বে ছিলেন ট্যানক্রেড ও অন্যান্যরা। পরের বছর খুব সম্ভবতঃ জেমসন রেইডের বিষয়ে তদন্তের জন্যে কমন্স সভায় যোগদানকল্পে ইংল্যান্ড গমন করেছিলেন। ক্রিকেটে সুখ্যাতি লাভ তাকে পরিচিত হতে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখে। মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের সম্মানসূচক সদস্যরূপে মনোনীত হন তিনি। এরফলে, ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেছিলেন। এছাড়াও, সারে ক্লাবের সম্মানসূচক সদস্যের মর্যাদা পান।

১৮৯৮-৯৯ মৌসুমের ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ সালে বার্নার্ড ট্যানক্রেড তার সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ট্রান্সভালের সদস্যরূপে সফররত লর্ড হকের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে খেলেন। তবে, ব্যবসায়িক ব্যস্ততায় আবারও টেস্ট সিরিজে অংশগ্রহণ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী টেস্টে বার্নার্ড ট্যানক্রেড (দাঁড়ানো অবস্থায় বামদিক থেকে দ্বিতীয়)

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯শ শতাব্দীতে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃতি ছিল তার। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অবশ্যম্ভাবী পছন্দের তালিকায় ছিলেন। ১৮৮৮-৮৯ মৌসুমে দুই টেস্টের সিরিজ খেলার জন্যে ইংরেজ দল প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে আসে। উভয় টেস্টে পরাজয়বরণ করে সিরিজ খোঁয়ায় স্বাগতিক দল। তাসত্ত্বেও ঐ সিরিজে ৮৭ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষসারির ব্যাটসম্যানের মর্যাদা লাভ করেন বার্নার্ড ট্যানক্রেড।

প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে কোন টেস্টের এক ইনিংসে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত থাকেন তিনি। নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে দলীয় ৪৭ রানের মধ্যে তার অবদান ছিল অপরাজিত ২৬* রান। অদ্যাবধি কোন ব্যাটসম্যানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকার ক্ষেত্রে তার এ রানটি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রান হিসেবে স্বীকৃত।[২]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় বোর যুদ্ধ চলাকালীন বার্নার্ড ট্যানক্রেড ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করতেন। এরপর, ব্লুমফন্তেইনে সামরিক গভর্নর সরকারের আইনি পরামর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এরফলে, ১৯০১ সালে ইংল্যান্ড সফরে দলের সাথে যেতে পারেননি তিনি। ঐ সফরে হয়তোবা তিনি দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থাকতেন। যুদ্ধ শেষ হবার পর সলসবারিতে চলে যান। সেখানে সেন্ট এইডান্সের প্রাক্তন সহপাঠী ও দক্ষিণ রোডেশিয়ার ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী স্যার চার্লস কোগল্যানের সাথে আইনি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন।

১৯১১ সালে সলসবারিতে অবস্থানকালে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ও কেপটাউনে স্থানান্তরিত হন। ইংল্যান্ডে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবার প্রস্তুতিপর্ব চলাকালে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে জরুরীভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করতে হয় তার। যেদিন তার জাহাজে চড়ার কথা ছিল, ঐদিনই অর্থাৎ, ২৩ নভেম্বর, ১৯১১ তারিখে বার্নার্ড ট্যানক্রেড মৃত্যুমুখে পতিত হন।

১৮৯৩ সালে অ্যাডলাইন ওয়েইনরাইটের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির তিন কন্যা ছিল। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও তিন কন্যাকে রেখে যান। শিশুকালেই একমাত্র পুত্রের জীবনাবসান ঘটেছিল। ভিনসেন্ট ট্যানক্রেডলুইস ট্যানক্রেড নামীয় তার অপর দুই ভ্রাতা দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও, কাকাতো ভাই ফ্রেড স্মিথ দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে খেলেছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wisden Cricketers' Almanack 1912 Obituaries
  2. Lynch, Steven। "What's the lowest score by a batsman carrying his bat?"Ask Steven - Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১২ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • Hall, BT & Schulze, H (2000) "The Cricketing Brothers Tancred, Part 1", The Cricket Statistician, No. 111, Association of Cricket Statisticians and Historians, Orpington, Kent. See also No. 112 and 129.
  • Murray, B & Vahed, G (2009) Empire and Cricket: The South African Experience 1884–1914, chapter 6.
  • Schulze, H (1999) South Africa's Cricketing Lawyers, chapter 2.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]