বারমুডায় ইসলাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বারমুডায় ইসলাম
মোট জনসংখ্যা
১০০০+
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
হ্যামিল্টন, সেন্ট জর্জেস
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
ভাষা
ইংরেজি, আরবি, উর্দু, বাংলা

বারমুডায় ইসলাম একটি সংখ্যালঘু ধর্ম। ২০২১ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের রিপোর্ট অনুসারে, বারমুডায় কমপক্ষে ১০০০ জন মুসলিম বসবাস করেন, যা মোট জনসংখ্যার ১.৩০% গঠন করে।[১][২][৩] বারমুডার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। বারমুডীয় মুসলিমদের প্রায় ৫০% আদিবাসী আফ্রিকীয় বংশোদ্ভূত এবং বাকি ৫০% এশীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম। দেশটির রাজধানী হ্যামিল্টনে অবস্থিত মুহাম্মাদ মসজিদটি বারমুডার সর্বপ্রাচীন মসজিদ[৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৫০০ এর দশকের গোড়ার দিকে স্পেনীয় অভিযাত্রী জুয়ান ডি বারমুডা আবিষ্কার করেন। তখন বারমুডায় কোনো আদিবাসী জনসংখ্যা ছিল না। স্পেনীয়দের পরে পর্তুগিজ নাবিকরা দ্বীপটিকে তাজা মাংস এবং জল গ্রহণের জন্য একটি আদর্শ স্থান হিসাবে ব্যবহার করেছিল। তবে স্পেনীয় বা পর্তুগিজদের কেউই দ্বীপটিতে জনবসতি গড়ে তুলেনি। এরপর ইংরেজরা দ্বীপটি দখলে নিয়ে প্রথম সেখানে বসতি স্থাপন করে। ইংরেজরা তাদের বিভিন্ন আফ্রিকীয় উপনিবেশ থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের কাজের দাস হিসেবে দ্বীপটিতে নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে তারাই সেখানে বসতি স্থাপন করে। সেই আফ্রিকীয়দের মাঝে কয়কজন মুসলমান ছিল। তাদের বংশধরেরাই বারমুডার আদিবাসী মুসলিম। [৫]১৯৩০ এর দশকের মাঝামাঝি থেকে বারমুডায় কিছু অ-অভ্যাসকারী মুসলমান ছিলেন। তখন আমেরিকায় জন্ম নেওয়া এলিজা মুহাম্মাদের ন্যাশন অফ ইসলাম ( NOI) আন্দোলন ক্যারিবীয় অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে। এটি একটি কালো জাতীয়তাবাদ ও প্যান আফ্রিকান আন্দোলন এবং এটি ঐতিহ্যগত ইসলামি চিন্তাধারা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিল। ১৯৭৫ সালে এলিজা মুহাম্মাদ মারা যাওয়ার পর এনওআইয়ে ত্যাগ করে বারমুডীয় মুসলিমরা ইসলামে ফিরে আসে। এরপর ত্রিনিদাদ, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মরক্কো, বসনিয়া এবং অন্যান্য মুসলিম দেশ থেকে অভিবাসন নিয়ে সেখানে বসতি স্থাপন করেছেন।[৬]

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

বারমুডায় বর্তমান প্রায় ১,০০০ মুসলিম বসবাস করেন। তাদের প্রায় ৫০% আদিবাসী আফ্রিকীয় বংশোদ্ভূত ও ইসলামে ধর্মান্তরিত এবং বাকিরা ত্রিনিদাদ, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মরক্কো, বসনিয়া এবং অন্যান্য দেশ থেকে অভিবাসী হয়ে এসেছেন। দেশটির বেশিরভাগ মুসলমান রাজধানী হ্যামিল্টনে বাস করে এবং বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে সেখানেই জমায়েত হয়।হ্যামিল্টনে মসজিদ ও বারমুডার ইসলামি কেন্দ্রগুলি অবস্থিত। [৭]

মসজিদ[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ মসজিদ নামে পরিচিত বারমুডার প্রাচীন মসজিদটি ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মসজিদটি একটি বড় ভবনে অবস্থিত এবং সেখানে একটি প্রধান প্রার্থনা হল, স্কুল, ইমামের অফিস ও একটি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে। ভবনটি চার তলা নিয়ে গঠিত। এখানে মুসলিমদের অধিকাংশ বড় জমায়েত হয়।

২০১৯ সালে তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী কেইনস গভর্নর জন র‍্যাঙ্কিনের সাথে মুহাম্মাদ মসজিদ পরিদর্শনে গিয়লছিলেন। নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর আলোকে ভালবাসা, সংহতি ও সমর্থনের প্রদর্শন হিসাবে মন্ত্রী কেইনস মসজিদটি পরিদর্শন করেন এবং মুহাম্মাদ মসজিদের ইমাম বাসিম মুওয়াক্কিল, ইসলামিক কালচারাল সেন্টার মসজিদের ইমাম সেলিম তালবট এবং মসজিদ কুবার ইমাম আশমেদ আলীর সাথে কথা বলেন। মন্ত্রী কেইনস বলেন, “নিউজিল্যান্ডের ঘটনার ফলে আমি মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম এবং তাদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলাম যে, তারা কী অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারি এবং তাদের প্রধানমন্ত্রী, সরকার এবং বারমুডার মানুষ তাদের সমর্থন রয়েছে। আমাদের চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে নিউজিল্যান্ড এবং বারমুডার মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে রয়েছে"।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Archived copy" (পিডিএফ)। ২০১১-০৫-১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-২৭ 
  2. "Muslim Population in the World, 2010-2030 - knoema.com"Knoema (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৮ 
  3. "Bermuda"The World Factbook (ইংরেজি ভাষায়)। Central Intelligence Agency। ২০২২-১০-২৫। 
  4. "Masjid Muhammad, Hamilton, Bermuda"mus-com-bda (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৮ 
  5. "Bermuda"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-০২। 
  6. "Elijah Muhammad"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-০৭। 
  7. al-Ahari, Muhammed Abdullah (১৯৯৯)। "The Caribbean and Latin America"। Islam Outside the Arab World। Routledge। পৃষ্ঠা 446–447। আইএসবিএন 0-7007-1124-4 
  8. mabrangman (২০১৯-০৩-১৮)। "Minister Caines Visits Bermuda Mosques"www.gov.bm (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৮