বাবা মোহন রাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাবা মোহন রাম [১]
ত্রি-লোকি নাথ (তিন লোকের ঈশ্বর)
নীল ঘোড়ায় চড়া বাবাজি
আবাসকালি খোলি
দিবসদ্বিতীয়া বা দুজ
বাহননীল ঘোড়া (ঘোড়া) [২]
উৎসবদুজ মেলা

বাবা মোহন রাম (ইংরেজি: Baba Mohan Rama),[৩] (হিন্দি: बाबा मोहन राम), বাবাজি, কালি খোলি ওয়ালে, মহারাজ জি, কৃষ্ণ জি, নীলে ঘোড়ে ওয়ালে বাবা, হলেন কলি যুগেহিন্দু লোক দেবতা এবং কৃষ্ণের অবতার।[৪]

তিনি তাঁর ভক্তদের কাছে ত্রি-লোকি নাথ (এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা, ধারক এবং ধ্বংসকারী) হিসাবে চিহ্নিত। তাঁর ধর্মপ্রচার থেকে প্রেম, ক্ষমা, অন্যকে সাহায্য করা, দাতব্য, তৃপ্তি, অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং ঈশ্বরের প্রতি ভক্তির নৈতিক শিক্ষা পাওয়া যায়। তিনি সত্য সৎগুরুর কাছে আত্মসমর্পণের গুরুত্বের ওপর জোর দেন, সেই গুরু যিনি ঐশ্বরিক চেতনার পথে হাঁটতে হাঁটতে শিষ্যকে আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে সঠিক নেতৃত্ব দেবেন।

তিনি বিভিন্ন রূপে তাঁর শিষ্যদের সামনে দর্শন দিয়েছেন যেমন বামন রূপ, নৃসিংহ রূপ, বালক রূপ, কৃষ্ণ রূপ। কথিত আছে যে তিনি কালী খোলির গুহায় বামন ব্রাহ্মণ (বামন) রূপে তপস্যা করেছিলেন এবং নন্দু জিকে দর্শন দিয়েছিলেন। নন্দুর বংশধররা গত সাত প্রজন্ম ধরে প্রধান পূজারি বা ভগতের সম্মান পেয়ে আসছেন। বাবা মোহন রামের গুহা ভিওয়াড়ি কালী খোলির পাহাড়ে, যেখানে তাঁর অখন্ড জ্যোতি (অনন্ত অগ্নি) বিদ্যমান। দুজ এবং চেমাই দুজের (ছয় মাসের উৎসব) সময় ভক্তরা প্রচুর সংখ্যায় এখানে আসেন। ভক্তরা তাঁর অখন্ড জ্যোতিতে ঘি নিবেদন করে যাতে তাদের সমস্যা দূর হয় এবং তাঁর চিরস্থায়ী ধুনির কাছে তারা ভোগ এবং উপ্পলা (ঘুঁটে) নিবেদন করে। এটিও তাঁর ভক্তদের সমস্ত সমস্যার নিরাময় করে। কিংবদন্তি অনুসারে, মন্দিরটি অলৌকিক এবং ঐশ্বরিক শক্তিতে বেষ্টিত, মন্দিরের মেঝে ঝাড়ু দেওয়া, দরিদ্র ভোজন, পক্ষী ভোজন এবং পশুদের বিশেষ করে গরুকে খাওয়ানোর মতো যে কোনও সেবা তাদের উপকারে আসে। মন্দিরটি গুলার, নিম, পিপল, জাদি, গুগ্গল, সীতাফল, বটগাছে ঘেরা এবং এটি গরু ও কোকিল, পায়রা, ময়ূর, বুলবুল প্রভৃতি পাখিতে পরিপূর্ণ। কথিত আছে যে তিনি তাঁর ভক্তকে মিলাকপুর গ্রামে তাঁর নামে একটি মন্দির নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেখানে তাঁর প্রথম ভক্ত নন্দু জি বাস করতেন।[৫][৬][৭]

নাম এবং উপাধি[সম্পাদনা]

"বাবা" মানে ভগবান শিব, "মোহন" মানে ভগবান কৃষ্ণ এবং "রাম" মানে ভগবান রাম। এটি তাঁর নামকে ঐশ্বরিক করে তুলেছে, "বাবা মোহন রাম" পবিত্র ত্রিমূর্তি হিসাবে চিত্রিত। তিনি তাঁর ভক্তদের দ্বারা এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা, ধারক এবং ধ্বংসকারী হিসাবে চিত্রিত। বলা হয় তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা আছে, তাঁর তপস্যা মানুষের উন্নতির জন্য এবং কলি যুগে তাদের মুক্তির (মোক্ষ) কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের শিক্ষক (গুরু) হয়ে দিকনির্দেশ প্রদান করেছেন। তিনি এমন একজন যাঁর জন্ম ও মৃত্যু অজানা, ব্রাহ্মণ পূজারিরা বিশ্বাস করে যে তারা তাঁরই বংশধর।[৪]

মূর্তির গড়ন[সম্পাদনা]

তাঁর মূর্তির গড়ন আঞ্চলিকভাবে পরিবর্তিত হয়। কিন্তু কথিত আছে তাঁর মাথায় ময়ূরের পালক লাগানো সোনার বলয় আছে যেটি দিয়ে তাঁর চুলের বেণী আটকানো থাকে। তাঁর মুখ চন্দ্রের আভা সহ কৃষ্ণ মুখের মতো সুন্দর, এবং তিনি মুক্তা এবং রুদ্রাক্ষ দিয়ে তৈরি মালা পরিধান করেন। তিনি নীল ঘোড়ার উপর চড়েন, যাকে প্রভু শেষনাগের অবতার বলে মনে করা হয়। তাঁকে সাধারণত ব্রাহ্মণের পোশাকে এবং কাঠের খড়ম পরিহিত দেখানো হয়। তিনি তাঁর কালী খোলির গুহায় ধ্যান করেন যেখানে তিনি ইন্দ্রাসন থেকে তাঁর সিংহাসন নিয়ে এসেছেন।[৮]

কলিযুগে আবির্ভাব[সম্পাদনা]

বাবা মোহন রামকে তাঁর ভক্তরা ভগবান কৃষ্ণের অবতার বলে মনে করেন। বাবা মোহন রামের গুহা ভিওয়াড়ির কালী খোলির পাহাড়ে, যেখানে তাঁর অখন্ড জ্যোতি (অনন্ত অগ্নি) বিদ্যমান।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৯ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০২২ 
  2. Tyagi, Manu (২০১৮)। Shani Mahima Granth। Delhi: Rama Publication। পৃষ্ঠা 77। আইএসবিএন 978-81-903707-9-0 
  3. Krishna, Bal (১৯৯৯)। Dooj Vrat Baba Mohan Ram। Alwar: Village Milakhpur। পৃষ্ঠা 1to100। 
  4. Tyagi, Manu (২০১৮)। Shani Mahima Granth। Delhi: Rama Publication। পৃষ্ঠা 67। আইএসবিএন 978-81-903707-9-0 
  5. Bhagat Ji, Guru Deshraj (২০১৬)। Baba Mohan Ram Katha। Delhi: Baba Mohan Ram। পৃষ্ঠা 1–100। আইএসবিএন 978-8-5119-3913-2 
  6. "Bisrakh residents keen to reinstall Ravana idol"Times of India। TNN। ১১ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৯ 
  7. "Ram makes it in Bisrakh temple, amid heavy police guard"Times of India। ১২ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৯ 
  8. Bhagat Ji, Guru Deshraj (২০১৬)। Baba Mohan Ram Katha। Delhi: Baba Mohan Ram। পৃষ্ঠা 1–100। আইএসবিএন 978-8-5119-3913-2