বানৌজা বিজয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা বিজয়
নির্মাতা: হল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি
নির্মাণের সময়: ২৫ জুন, ১৯৮০
অভিষেক: ৩ জুন, ১৯৮১
অর্জন: ১৪ মে, ২০১০
কমিশন লাভ: ৫ মার্চ, ২০১১
মাতৃ বন্দর: মোংলা
শনাক্তকরণ:
  • এফ৩৫
  • আইএমও নাম্বার: ৭৯২০০১৫
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: ক্যাসল-শ্রেণীর কর্ভেট
ওজন: ১,৪৩০ টন
দৈর্ঘ্য: ৮১ মিটার (২৬৬ ফু)
প্রস্থ: ১১.৬ মিটার (৩৮ ফু)
গভীরতা: ৩.৬ মিটার (১২ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × রাস্টন ১২আরকেসি ৫,৬৪০ অশ্বশক্তি (৪,২১০ কিওয়াট) ডিজেল;
  • ২ × শ্যাফট
গতিবেগ:
  • ১৯ নট (৩৫ কিমি/ঘ; ২২ মা/ঘ) সর্বোচ্চ;
  • ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ) সাধারণ
লোকবল: ৪৫ জন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • টাইপ ৩৬০ সার্ফেস সার্চ র‍্যাডার ই/এফ ব্যান্ড;
  • টাইপ ৩৪৮ ফায়ার কন্ট্রোল র‍্যাডার (প্রধান গান এর জন্য);
  • কেলভিন হিউগজ শার্প আই সার্ভেলেন্স র‍্যাডার এস ব্যান্ড;
  • কেলভিন হিউগজ শার্প আই নেভিগেশন র‍্যাডার এক্স ব্যান্ড
রণসজ্জা:
  • ১ × এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি নেভাল গান;
  • ৪ × সি-৭০৪ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ২ × এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান
বিমানচালানর সুবিধাসমূহ: হেলিকপ্টার ডেক

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) বিজয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি ক্যাসল-শ্রেণীর ক্ষেপণাস্ত্রবাহী কর্ভেট। জাহাজটি গভীর সমুদ্র এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বানৌজা বিজয় জাহাজটির নির্মাণকাজ ২৫ জুন, ১৯৮০ সালে স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিনের হল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক শুরু হয়। ৩ জুন, ১৯৮১ সালে জাহাজটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়। জাহাজটি রাজকীয় নৌবাহিনীতে ১২ মার্চ, ১৯৮২ সালে এইচএমএস ডাম্বার্টন ক্যাসল হিসাবে কমিশন লাভ করে। জাহাজটি ১৯৮২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাজকীয় নৌবাহিনীতে বহুমুখী দায়িত্ব পালন করে। পরবর্তিতে এপ্রিল, ২০১০ সালে জাহাজটিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট বিক্রয় করা হয়। ১৪ মে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটি অধিগ্রহণ করে। ২১ মে, ২০১০ সালে জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আপগ্রেড ইনস্টল এর মাধ্যমে একটি বড় সংস্কার কাজের মধ্য দিয়ে যায়, যা ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। জাহাজটি একটি দীর্ঘ সফর পারি দিয়ে ২১ জানুয়ারি, ২০১১ সালে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। পরিশেষে ৫ মার্চ, ২০১১ সালে জাহাজটি বানৌজা বিজয় নামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।

বানৌজা বিজয় ২০১১ এবং ২০১৫ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর সাথে যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেনিং (ক্যারাট) এ অংশগ্রহণ করে।

১ ডিসেম্বর, ২০১৭ সালে বানৌজা বিজয় লেবাননে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন বাহিনীর (ইউনিফিল) মেরিটাইম টাস্ক ফোর্সে যোগ দিতে লেবাননের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। জাহাজটি ১ জানুয়ারি, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ বানৌজা আলী হায়দারবানৌজা নির্মুল এর স্থলাভিষিক্ত হয়। যাত্রাপথে জাহাজটি ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর কলম্বো বন্দরে শুভেচ্ছা সফর করে।

৪ আগস্ট, ২০২০ সালের বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের সময় বানৌজা বিজয় বন্দরে অবস্থান করছিলো। বিস্ফোরণে জাহাজটির সামান্য ক্ষতি হয় এবং ২১ জন ক্রু আহত হন। বিজয়ের ক্রুরা ইউনিফিল বহরের ফ্ল্যাগশিপ ব্রাজিলিয়ান ফ্রিগেট ইনডিপেন্ডেন্সিয়া থেকে চিকিৎসা এবং ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়নে সহায়তা পান। মূল্যায়নের পরে বানৌজা বিজয় জাহাজটিকে সামুদ্রিক টাগ টিসিজি ইনেবোলু দ্বারা তুরস্কে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আকসাজ নৌ ঘাঁটির নৌ শিপইয়ার্ডে মেরামত করা হয়। মেরামত কাজ শেষে জাহাজটি ২৫ অক্টোবর, ২০২০ সালের দেশে ফিরে আসে। পর্বরতীতে ইউনিফিল মিশনে বানৌজা বিজয় এর স্থলাভিষিক্ত হয় আরেকটি কর্ভেট, বানৌজা সংগ্রাম

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো[সম্পাদনা]

বানৌজা বিজয় জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৮১ মিটার (২৬৬ ফু), প্রস্থ ১১.৫ মিটার (৩৮ ফু) এবং গভীরতা ৩.৬ মিটার (১২ ফু)। জাহাজটির পূর্ণ অবস্থায় ওজন ১,৪৩০ টন (১,৪১০ লং টন)। জাহাজটিতে রয়েছে ২টি ৫,৬৪০ অশ্বশক্তি (৪,২১০ কিওয়াট) ক্ষমতা সম্পন্ন রাস্টন ১২আরকেসি ডিজেল ইঞ্জিন। যার ফলে জাহাজটি সর্বোচ্চ ১৯ নট (২২ মা/ঘ; ৩৫ কিমি/ঘ) গতিতে চলতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি ১২ নট (১৪ মা/ঘ; ২২ কিমি/ঘ) গতিতে ৭,০০০ নটিক্যাল মাইল (৮,১০০ মা; ১৩,০০০ কিমি) সমুদ্র এলাকা জুড়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। এছাড়াও, জাহাজটিতে হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য ডেক ল্যান্ডিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।

রণসজ্জা[সম্পাদনা]

বানৌজা বিজয় জাহাজটির উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং গভীর সমুদ্রে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ, চোরাচালান রোধ এবং জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ১টি এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি নেভাল গান;
  • ৪টি সি-৭০৪ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ২টি এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বানৌজা ধলেশ্বরী এবং বিজয় - কমিশনিং অনুষ্ঠান" (পিডিএফ)প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১২ 
  2. "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ০৭ (সাত) বছরের অগ্রগতির তথ্য প্রচারের ব্যবস্থাকরণ সম্পর্কিত" (পিডিএফ)। ২০১৬-০৪-০৭। 
  3. "Sailing under a different flag – former Royal Navy vessels serving with other navies | Navy Lookout"www.navylookout.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৭ 
  4. Oryx। "Ship Lore: The Story of Bangladesh's Castle Class Corvettes"Oryx। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৬ 
  5. "The return of Independência, UNIFIL flagship, to Beirut Port" 
  6. "UNIFIL naval peacekeepers from Bangladesh remain committed amid disaster" 
  7. "Bangladesh Navy official visits damaged UNIFIL Maritime Task Force vessel"