বানৌজা প্রত্যয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা প্রত্যয়
নির্মাণাদেশ: অক্টোবর, ২০১২
নির্মাতা: উচ্যাং শিপইয়ার্ড
নির্মাণের সময়: ০৮ জানুয়ারী, ২০১৩
অভিষেক: ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪
অর্জন: ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫
কমিশন লাভ: ১৯ মার্চ, ২০১৬
শনাক্তকরণ: এফ১১২
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: টাইপ ০৫৬ কর্ভেট
ওজন: ১,৪০০ টন
দৈর্ঘ্য: ৯০.২ মিটার (২৯৬ ফু)
প্রস্থ: ১১.১৪ মিটার (৩৬.৫ ফু)
ড্রাফট: ৩.২৬ মিটার (১০.৭ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ x এসইএমটি পিয়েলসটিক ১২পিএ৬ ডিজেল ইঞ্জিন
  • ২ x শ্যাফট
গতিবেগ: ২৫ নট (৪৬ কিমি/ঘ; ২৯ মা/ঘ)
সীমা: ৩,৫০০ নটিক্যাল মাইল (৪,০০০ মা; ৬,৫০০ কিমি)
সহনশীলতা: ১৫ দিন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • ১ × টাইপ ৩৬০ এয়ার/সারফেস সার্চ র‍্যাডার, ই/এফ ব্যান্ড;
  • ১ × হাল মাউনন্টেড মাল্টি-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১ × হাল মাউনন্টেড সিঙ্গেল-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১ × ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১ × সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
  • ১ × মাল্টিরোল ডিসপ্লে সহ কেলভিন হিউগস র্শাপআই ই/এফ-ব্যান্ড (এস-ব্যান্ড) নেভিগেশনাল র‍্যাডার;
  • ১ × কেলভিন হিউজেস শার্পআই আই-ব্যান্ড (এক্স-ব্যান্ড) র‍্যাডার;
  • ১ × টাইপ-৩৪৮ ফায়ার কন্ট্রোল র‍্যাডার (মেইন গানের জন্য)
  • ১ × চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
  • ১ × জিপিএস রিসিভার (ফুরুনো);
  • ১ × ইকো সাউন্ডার (কোডেন);
  • ১ × রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
  • ১ × ভিএইচএফ সেট (আইকম);
  • ২০ × ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)
রণসজ্জা:
  • ১ × এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি কামান;
  • ২ × এইচ/পিজে-১৭ ৩০ মিমি কামান;
  • ২ × ২ সি-৮০২এ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ১ × ৮ এফএল-৩০০০এন আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ২ × ৬-টিউব টাইপ ৮৭ ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী রকেট লঞ্চার;
  • ৪ × এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান
  • ৬ × কিউডব্লিউ-২ ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণ যোগ্য বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র
বিমান বহন: ১টি অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড এডব্লিউ১০৯ হেলিকপ্টার
বিমানচালানর সুবিধাসমূহ: হেলিকপ্টার ডেক

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) প্রত্যয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি স্বাধীনতা-শ্রেণীর কর্ভেট। যা উচ্যাং শিপইয়ার্ড কর্তৃক নির্মিত হয়। এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হওয়া এই শ্রেণীর দ্বিতীয় জাহাজ যা বহুমাত্রিক যুদ্ধ ক্ষমতা সম্পন্ন। জাহাজটি গভীর সমুদ্রে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান, সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনাসহ মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[১][২][৩][৪][৫][৬]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় ও বৈদেশিক উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এছাড়াও যুদ্ধকালীন সময়ে সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, যুদ্ধকালীন অপারেশন পরিচালনা করা, শান্তিকালীন সময়ে সার্বক্ষণিক উপস্থিতির মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে সতর্ক করা, বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপত্তা এবং পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ, সমুদ্রে টহল প্রদান, মৎস্য সম্পদ রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, জলদস্যুতা প্রতিরোধ / দমন এবং তেল ও গ্যাস সম্পদের নিরাপত্তা প্রদান, আইন শৃংখলা রক্ষা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান ইত্যাদি পরিচালনা করতে এসব যুদ্ধজাহাজের প্রয়োজন ছিলো। এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক জোটের সঙ্গে অপারেশন পরিচালনা, বহুজাতিক প্রশিক্ষণ, মহড়া ও ওয়ারগেম ইত্যাদি পরিচালনার কাজেও এসব জাহাজের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ০৮ জানুয়ারী, ২০১৩ সালে উচ্যাং শিপইয়ার্ডে বানৌজা প্রত্যয় জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ সালে জাহাজটিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। অবশেষে ১৯ মার্চ, ২০১৬ সালে বানৌজা প্রত্যয় জাহাজটি নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো[সম্পাদনা]

জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার (৩০০ ফু), প্রস্থ ১১.১৪ মিটার (৩৬.৫ ফু) এবং ওজন ১,৪০০ টন। জাহাজটিতে দুইটি জার্মানির তৈরি এসইএমটি পিয়েলসটিক ১২পিএ৬ ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে যার সাহায্যে সে সর্ব্বোচ্চ ২৫ নট (৪৬ কিমি/ঘ; ২৯ মা/ঘ) গতিবেগে চলতে সক্ষম। জাহাজটিতে সামনে ও পিছনে দুইটি আলাদা শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে এবং একটি অকার্যকর হয়ে পড়লেও অন্যটির সাহায্যে জাহাজটি কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। চিরাচরিত গোলাকার সম্মুখভাগের পরিবর্তে জাহাজটিকে ভি-আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে যাতে উত্তাল সমূদ্রেও দ্রুতগতিতে চলতে পারে। কিন্তু জাহাজটিতে কোন সোনার না থাকায় এটি খুব সীমিত মাত্রায় ডুবোজাহাজ-বিধ্বংসী কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। বানৌজা প্রত্যয়ে একটি হেলিকপ্টার ডেক রয়েছে যেখানে একটি মধ্যম আকৃতির হেলিকপ্টার ওঠানাম করতে পারে তবে এতে কোনো হ্যাঙ্গার নেই।

ইলেক্ট্রনিক্স[সম্পাদনা]

জাহাজটি সমুদ্রপৃষ্ঠ ও আকাশে অনুসন্ধানের জন্য চীনের তৈরি টাইপ ৩৬০ সার্ফেস সার্চ র‍্যাডার ই/এফ ব্যান্ড র‍্যাডার ব্যবহার করে। ১টি টাইপ ৩৪৮ ফায়ার কন্ট্রোল র‍্যাডার (প্রধান গান এর জন্য)। এছাড়াও কেলভিন হিউজেস এর তৈরি শার্পআই আই-ব্যান্ড (এক্স-ব্যান্ড) এবং শার্পআই ই/এফ-ব্যান্ড (এস-ব্যান্ড) র‍্যাডার এবং মাল্টি-ডিজিটাল কৌশলগত প্রদর্শন সফটওয়্যার ব্যবহার করে। এই র‍্যাডারগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠে অনুসন্ধান এবং নৌচালনার কাজে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি হেলিকপ্টার উড্ডয়ন ও অবতরন নিয়ন্ত্রণের জন্যও এই র‍্যাডার ব্যবহার করা যায়।

রণসজ্জা[সম্পাদনা]

বানৌজা প্রত্যয় জাহাজটি আধুনিক বিশ্বে ব্যবহৃত সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ। শত্রু জাহাজ মোকাবেলা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ১টি এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি কামান;
  • ২টি এইচ/পিজে-১৭ ৩০ মিমি কামান;
  • ৪টি সি-৮০২এ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ১টি ৮ সেল বিশিষ্ট এফএল-৩০০০এন আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ১টি ৬-টিউব টাইপ ৮৭ ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী রকেট লঞ্চার;
  • ৪টি এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
  • ৬টি কিউডব্লিউ-২ বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "নৌবাহিনীর বহরে নতুন দুই যুদ্ধজাহাজ"দৈনিক সমকাল। ১১ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৮ 
  2. "navy নৌবাহিনীর Prottasha BNS Prottoy is a Type 056 stealth surface warfare guided missile corvette" 
  3. "সমুদ্র রক্ষায় বানৌজা প্রত্যয়-এর অপারেশনাল কর্মকাণ্ড | BNS Prottoy | Bijoyturjo | Bangladesh Navy" 
  4. "বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন নিয়ে ইত্যাদির তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন" 
  5. "প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার" (পিডিএফ)প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৮ 
  6. "Multiple Wins in Asia"। kelvinhughes.com। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫