বাডেন-ভুর্টেমবের্গ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাডেন-ভুর্টেমবের্গ
জার্মানির রাজ্য
বাডেন-ভুর্টেমবের্গের পতাকা
পতাকা
বাডেন-ভুর্টেমবের্গের প্রতীক
প্রতীক
স্থানাঙ্ক: ৪৮°৩২′১৬″ উত্তর ৯°২′২৮″ পূর্ব / ৪৮.৫৩৭৭৮° উত্তর ৯.০৪১১১° পূর্ব / 48.53778; 9.04111
দেশ জার্মানি
রাজধানীস্টুটগার্ট
সরকার
 • Minister-PresidentWinfried Kretschmann (Green)
 • শাসক দলসমূহGreens / SPD
 • বুনডেসরাটে ভোট6 (of 69)
আয়তন
 • মোট৩৫,৭৫১.৬৫ বর্গকিমি (১৩,৮০৩.৭৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (2017-12-31)[১]
 • মোট১,১০,২৩,৪২৪
 • জনঘনত্ব৩১০/বর্গকিমি (৮০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলসিইটি (ইউটিসি+১)
 • গ্রীষ্মকালীন (দিসস)সিইডিটি (ইউটিসি+২)
আইএসও ৩১৬৬ কোডDE-BW
জিডিপি/নামমাত্র€ ৩৭৬.২৮ বিলিয়ন (২০১১) [২]
বাদাম অঞ্চলDE1
ওয়েবসাইটwww.baden-wuerttemberg.de

বাডেন-ভুর্টেনবের্গ[টীকা ১] (জার্মান উচ্চারণ: [ˈbaːdən ˈvʏʁtəmˌbɛʁk]) জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে অন্যতম। বাডেন-ভুর্টেনবের্গ জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকে এটি জার্মানির তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য। এর আয়তন ৩৫,৭৪২ বর্গকিলোমিটার (১৩,৮০০ বর্গ মাইল) এবং জনসংখ্যা ১০.৭ মিলিয়ন।[৩] এই রাজ্যের রাজধানী ও সর্ববৃহৎ শহর স্টুটগার্ট। স্টুটগার্ট জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ শহর।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বাডেন-ভুর্টেমবের্গ আগে বাডেন, প্রিশিয়ার হোহেনজুলার্ন, ভুর্টেমবের্গ ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল।[৪] খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে ভুর্টেমবের্গ রোমানরা জয় করে। তারা সেখানে আত্মরক্ষার্থে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করে। তৃতীয় শতাব্দীতে অ্যালেমানিরা রোমানদের সেখান হতে চলে যেতে বাধ্য করে। কিন্তু ফ্রাঙ্ক জাতি তাদেরকে সরিয়ে ভুর্টেমবের্গ দখল করে। এসময় একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পরবর্তিতে ভুর্টেমবের্গ পুণ্য রোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে মিত্রবাহিনী তিনটি রাজ্য স্থাপন করে: ভুর্টেমবের্গ হোহেনজুলার্ন, বাডেন এবং ভুর্টেমবাআরগ-বাডেন। ১৯৪৯ সালে এই রাজ্যগুলো জার্মান প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়। জার্মান সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ এই তিনটি রাজ্য একত্রীকরণের উল্লেখ করে। ১৯৫১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একটি গণভোটের মাধ্যমে তিনটি রাজ্যই একত্রীকরণের ব্যাপারে সম্মতি জানায়। ১৯৫২ সালের ২৫ এপ্রিল বাডেন-ভুর্টেমবের্গ আনুষ্ঠানিকভাবে জার্মানির একটি রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩]

ভূগোল[সম্পাদনা]

বাডেন-ভুর্টেনবের্গ ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ডের সাথে জার্মানির সীমানা নির্দেশ করেছে। জার্মানির মধ্যে বাডেন-ভুর্টেমবের্গের সাথে রিনেল্যান্ড প্যালাটিনাটা, হেসে এবং বাভারিয়ার সীমানা রয়েছে।[৩] বাডেন-ভুর্টেমবের্গের অধিকাংশ বড় শহর নেকার নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। রাইন নদী পশ্চিম ও দক্ষিণে সীমারেখা নির্দেশ করেছে। ব্ল্যাক ফরেস্ট এবং বাডেন-ভুর্টেমবের্গের পার্বত্য অঞ্চল রাইন নদীর পূর্ব উপত্যকা থেকে শুরু হয়েছে। এছাড়া আল্পস পর্বতমালার কিছু অংশও এই রাজ্যে রয়েছে। দানিয়ুব নদীর উৎস এই রাজ্যের ডোনাউশিঙ্গেন শহরের কাছে অবস্থিত।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

বাডেন-ভুর্টেনবের্গে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ কম। তা সত্ত্বেও এটি জার্মানি এবং ইউরোপের অন্যতম ধনী রাজ্য। এই রাজ্যে বেকারত্বের হার কম। বেশ কয়েকটি বিখ্যাত কোম্পানির সদর দপ্তর এখানে অবস্থিত। যেমন- ডাইমলার এজি, পোর্শা, রবার্ট বোশ, কার্ল জাইস, স্যাপ এজি। তবে বাডেন-ভুর্টেনবের্গের অর্থনীতি ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নির্ভর। এই রাজ্যে প্রচুর শিল্প-কারখানা রয়েছে। ২০০৩ সালে প্রায় ৮৮০০ উৎপাদন কারখানা ছিল। মাঝারি আকারের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বাডেন-ভুর্টেনবের্গের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ২০০৩ সালে উৎপাদন খাতের বার্ষিক আয় ছিল ২৪০,০০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর ৪৩% এসেছিল রপ্তানি থেকে। বিশ্ব অর্থনীতির প্রভাব বাডেন-ভুর্টেনবের্গকেও প্রভাবান্বিত করে। উৎপাদন খাতের অর্ধেক চাকুরিজীবী যন্ত্র কৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল এবং গাড়ি নির্মাণ ক্ষেত্রে কাজ করে। এসব খাতেই অধিকাংশ বড় ব্যবসায়িক কোম্পানিগুলো রয়েছে। বাডেন-ভুর্টেনবের্গে উৎপাদিত শিল্প পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে তড়িৎ যন্ত্র, ঘড়ি, খেলনা, ধাতব বস্ত এবং বিভিন্ন যন্ত্র। একসময় তৈরি পোশাক শিল্প এই রাজ্যের অন্যতম বড় শিল্প-খাত ছিল, তবে সময়ের পরিক্রমায় এই শিল্প এখন আর নেই। গবেষণা ও উন্নয়ন বাডেন-ভুর্টেনবের্গের অন্যতম বড় কর্মক্ষেত্র, এগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি অর্থায়ন করে। ২০০১ সালে জার্মানির গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে নিয়োজিত ১০০,০০০ মানুষের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশই বাডেন-ভুর্টেনবের্গে (বিশেষ করে স্টুটগার্টে) অবস্থিত।[৫]

২০০৭ সালের এক গবেষণা এবং ব্যবসায়িক পত্রিকা ভির্টশাফসভুখা বাডেন-ভুর্টেনবের্গকে জার্মানির অন্যতম অর্থনৈতিকভাবে সফল এবং গতিশীল রাজ্য হিসেবে অভিহিত করে।

টীকা[সম্পাদনা]

  1. এই জার্মান ব্যক্তি বা স্থাননামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জার্মান শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ শীর্ষক রচনাশৈলী নিদের্শিকাতে ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Statistisches Landesamt Baden-Württemberg – Bevölkerung nach Nationalität und Geschlecht am 31. Dezember 2017 (CSV-Datei) (Hilfe dazu).
  2. "GDP of state"Portal of the Baden-Württemberg Statistics Office। ২৪ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২ 
  3. "Our State"। Baden-Württemberg। ৩ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১১ 
  4. Andrea Schulte-Peevers (২০০৭)। GermanyLonely Planetআইএসবিএন 978-1-74059-988-7। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  5. "BADEN – WÜRTTEMBERG – Economy"Eurostat। জুন ২০০৪। ২৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]