বাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকা
প্রবাদ প্রবচন প্রতিটি ভাষার অমূল্য সম্পদ। বাঙালীর হাজার বছরের সংস্কৃতি তথা সামগ্রিক জীবনাচরণে প্রবাদ প্রবচন সমৃদ্ধ একটি ধারা হিসেবে বিবেচিত। প্রবাদ প্রবচনের মাধ্যমে বাঙালির জীবন, ধর্ম, সংস্কৃতি, আচার, বিশ্বাস ও রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
অ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
অকণ্টকবিদ্ধ কি জানে কাঁটাফুটা কী? | সুখী মানুষ জীবনযন্ত্রণা কাকে বলে জানে না; অধিক আড়ম্বরে কাজ হয় না; সমতুল্য- কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে? |
অকর্মারা বেশি কথা বলে | অকর্মারা কাজের থেকে কথায় বেশি দড়। |
অকর্মারা সর্বদাই ক্ষুধার্ত | অকর্মারা একটি কাজই জানে শুধু বসে বসে খাওয়া। |
অকস্মাৎ বজ্রাঘাত | অপ্রত্যাশিতভাবে কোন বিপদের সংঘটন। |
অকাজে বউড়ী দড়, লাউ কুটতে খরতর // অকেজো বউ লাউ কুটতে দড় | গৃহকর্মে অপটু বউ সহজ কাজটা আগে বেছে নেয়; কারণ অন্য আনাজ কাটা থেকে লাউ কোটা অনেক সহজ। |
অকারণে কিছু হয় না | বিনাকারণে গাছের একটি পাতাও নড়ে ন; সমতুল্য- ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে;পর্বতো বহ্নিমান ধুমাৎ; সবকার্যের পিছনে কারণ থাকে; বিরুদ্ধ উক্তি- অকারণে হৈ চৈ। |
অকারণে হৈ চৈ | অহেতুক চিন্তা; সমতুল্য-'মাথা নেই তার মাথাব্যাথা'। |
অকাল গেল সুকাল এল, পাকল কাঁটাল কোষ, আজ বন্ধু ছেড়ে যাও, দিয়ে আমার দোষ | অসময়ে উপকৃত হয়ে নানা অজুহাত দেখিয়ে সুসময়ে উপকারীর ঋণ অস্বীকার করে; ভ্রামরী মিত্র। |
অকালমেঘবদ্বিত্তমকম্মাদেতি যাতি চ | সম্পদ অকালোদিত মেঘের মতই হঠাৎ আসে হঠাৎ চলে যায়। |
অকালে/আকালে কি না খায় | অসময় বা দুর্ভিক্ষের সময়ে খাবারের বাচবিচার করা সম্ভব হয় না; সমতুল্য- 'প্রয়োজনীয়তা কোন নিয়ম মানে না'। |
অকালে খেয়েছ কচু, মনে রেখ কিছু কিছু | সুখদুঃখমিশ্রিত জীবনের সুখের দিনগুলিতে দুঃখের দিনগুলি ভুলে যাওয়া ঠিক নয়। |
অকালে বাড়ে সকালে মরতে | দ্রুত বৃদ্ধি দ্রুত মৃত্যু ডেকে আনে। |
অকালের তাল বড়ই মিষ্টি | অকালে দুস্প্রাপ্য জিনিষ পেলে তৃপ্তিবোধ মাত্রাতিরিক্ত হয়। |
অকালে না নোয় বাঁশ, বাঁশ করে ট্যাঁশ ট্যাঁশ | সময়ের কাজ সময়ে না করলে পরে আর পারা যায় না; শিশুকালে নীতিশিক্ষা না দিলে উত্তরকালে উপদেশ বৃথা যায়। |
অকৃতজ্ঞের নরকবাস | অকৃতজ্ঞের কঠোর শাস্তি প্রাপ্য। |
অকেজোর তিন কাজ বড়, ভোজন,ক্রোধ, নিদ্রা দড় | অকর্মণ্যরাও শুধু খায়, হম্বিতম্বি করে, আর ঘুমায়। |
অকেজো নাপিতের থলিভরা ক্ষুর // অকেজো মিস্ত্রির থলিভরা যন্ত্র | অক্ষমতার দুর্বলতা ঢাকতে ভড়ং বেশী দেখায়। |
অকেজো বউ লাউ কুটতে দড় | যে কোন কাজ জানে না সে সহজ কাজটা আগে বেছে নেয়। |
অকেজো মিস্ত্রি যন্ত্রের দোষ ধরে | অকর্মণ্যের অজুহাতের অভাব হয় না; সমতুল্য- নাচতে না জানলে উঠোনের দোষ; নাচ না জানে অঙ্গন টেরা। |
অকেজো মানুষের কথা বেশি কাজ কম | কাজে ফাঁকি দিতে বা অক্ষমতা ঢাকতে বেশি কথা বলার প্রয়োজন হয়। |
অকেজোর তিন কাজ বড়, ভোজন ক্রোধ নিদ্রা দড় | অকম্মারা তিনটি বিষয়ে বড় গুণধর- খায় বেশি, রাগ দেখায় বেশি আর ঘুমায় বেশি। |
অক্রোধস্তপসঃ ক্ষমা বলবতাং ধর্মস্য নিব্যজিতা। সর্বেষামপি সর্বকারণমিদং শীলং পরং ভূষনম্॥ (চাণক্য) | তাপসের ক্রোধহীনতা, বলবানের ক্ষমা, ধর্মের ছলহীনতা- এগুলি স্বভাবের সর্বশ্রেষ্ঠভূষণ। |
অক্ষমের অজুহাত খাড়া | অক্ষমের অজুহাতের অভাব হয় না। |
অখণ্ডিত রত্ন মেলে না | রত্ন একটি সম্পূর্ণ ধারণা। |
অগভীর জলে সফরি ফরফরায় // অল্পজলে সফরি সরফরায়তে | অল্পবিদ্যানেরা সর্বদা বেশি বিদ্যার জাহির করে। |
অগরমগর করনা- হিন্দি প্রবাদ | কিছু করা বা না করার পক্ষে নানা উক্তি দেখানো। |
অগা লোকের কাজ ঝকমারি | অকাজের লোকেরা কাজের ক্ষেত্রে বিভ্রাট সৃষ্টি করে। |
অগাধজলসঞ্চারী বিকারী ন চ রোহিতঃ। গণ্ডূষজলমাত্রেণ সফরী ফর্ফরায়তে॥ (চাণক্য) | অগাধজলের রুইমাছের বিকার নেই, অল্পজলের পুঁটিমাছ গর্বে লাফায়। |
অগুণ মানুষ গুণ না চিনে, মূষা না চিনে বিড়ালী; অপ্রেমী যে প্রেম না চিনে, কাঠ না চিনে কুড়ালী। | মানুষের চেতনার বড় অভাব। |
অগুণস্য হতং রূপম | নির্গুণব্যক্তি রূপবান হলেও সেই রূপ বৃথা। |
অগুরু চন্দন ফেলে চায় শেওড়া কাঠ, কোকিলের ধ্বনি ফেলে বানরের নাট | ভালো ছেড়ে মন্দের প্রতি মানুষের অযৌক্তিক আকর্ষণ থাকে। |
অগ্নি, ব্যাধি ও ঋণ, রেখোনা তিনের চিন (চিহ্ন) | আগুন, ব্যাধি ও ঋণের শেষ রাখতে নেই; থাকলে এগুলি ক্রমশঃ বাড়তে থাকে; আগুন নিবিয়ে ফেলা, রোগ সারিয়ে ফেলা ও ঋণ শোধ করে ফেলা আশু কর্তব্য। |
অগ্নির্দহতি তাপেন সূর্যো দহতি রশ্মিভিঃ। রাজা দহতি দণ্ডেন তপসা ব্রাহ্মণো দহেৎ।। (চাণক্য) | নিজের তাপেই অগ্নি প্রজ্বলিত হয়; সূর্য প্রদীপ্ত হয় রশ্মির মাধ্যমে; রাজা দণ্ডদ্বারা সমুজ্জ্বল হয় এবং ব্রাহ্মণ তপস্যাঢ় দরুণ দীপ্যমান থাকেন। |
অগ্নিরাপস্ত্রিয়ো মুর্খা, সর্পা, রাজকুলানি চ। নিত্যসেব্যোপচারেণ সদ্য প্রাণহরাণি ষট্।। (চাণক্য) | অগ্নি, জল, স্ত্রী, মূর্খ, সর্প ও রাজকুল- এই ছয় বিষয়কে সর্বদা উপচারের সাথে সেবা করা হলেও ক্ষণিকের মধ্যে এগুলি প্রাণ হরণ করতে পারে। |
অগ্রানে পউটি পৌষে ছেউটি, মাঘে নাড়া ফাগুনে ফাঁড়া- খনা | অগ্রানে মাসে ধান কাটলে শোল এনা ধান পাওয়া যায়; পৌষে কাটলে মাত্র ছ'আনা পাওয়া যায়; মাঘে কাটলে মাত্র খড় অবশিষ্ট থাকে; আর ফাগুনে কাটলে কিছুই থাকে না। (ধান চাষের পদ্ধতি) |
অঘটন ঘটায় বিধি | বিধি সব ঘটনার কারিগর। |
অঘটনে স্বজন চেনা যায় | দুর্বিপাকে পড়লে প্রকৃত বন্ধু পাশে এসে দাঁড়ায়; ('আজি রজনীতে হয়েছে সময় এসেছি বাসবদত্তা'-রবীন্দ্রনাথ)। |
অঘটির (আদেখলা) ঘটি হল, জল খেতে খেতে প্রাণটা গেল | কোন জিনিষের প্রথম প্রাপক আনন্দের আতিশয্যে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলে। |
অঙ্কমারুহ্য সুপ্তং হি হত্বা কিং নাম পৌরুষম | কোলে শুয়ে যে নিদ্রিত আছে তাকে হত্যা করায় পৌরুষত্ব নেই। |
অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি | কয়লা হাজার ধুলেও যেমন রঙ বদলায় না তেমনিই কুলোক কখনো কুপ্রবৃত্তি ছাড়ে না; সমতুল্য- 'ইল্লৎ যায় না ধুলে', 'কয়লা ছাড়ে না ময়লা', 'স্বভাব যায় না মলে',স্বভাবো যাদৃশো যঃ ন জহাতি ইত্যাদি। |
অচেনা/অজানা বন্ধু থেকে চেনা/জানা শত্রু ভাল | অজানা বিষয় থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। |
অচেনা পথ আর জঙ্গল সমান, অজানা জল আর জানা শ্মশান | এই চারটি বিষয় জীবনে চলার পথে বিপদের কারণ হতে পারে। |
অচেনা হাতকে কখনো বিশ্বাস করো না; তুমি জানো না, সে কিভাবে তোমার পাশে দাঁড়াবে এবং পিছন থেকে ছুরি মারবে- আরবী প্রবাদ | অজানার আশঙ্কা সবসময় থাকে। |
অজগরের দাতা রাম | অলসের খাবারের অভাব হয় না; যেকোনভাবেই তার তা জুটে যায়; ভগবানই জীবের রক্ষাকর্তা; সমতুল্য- জিভ দিয়েছেন যিনি আহার যোগান তিনি। |
অজাযুদ্ধে, ঋষিশ্রাদ্ধে, প্রভাতে মেঘডম্বরে, দাম্পত্যকলহে চৈব বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া। (চাণক্য) | অজার লড়াই, ঋষির শ্রাদ্ধ, সকালের মেঘগর্জন ও দাম্পত্য কলহে প্রথমে একটু বাড়াবাড়ি হয় তবে শেষে ফল সামান্যই হয়। |
অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার | ছাগল দূর থেকে লাফিয়ে আসে, কিন্তু সামনে এলেই আর মনে থাকে না; ত্রুটিহীন আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে ফললাভের সম্ভাবনা সামান্য হলে প্রবাদটি বলা হয়; সমতুল্য- পর্বতের মূষিক প্রসব। |
অজীর্ণে ভোজনং বিষমং | হজমের আগে পুনরায় ভোজন বিষতুল্য। |
অজীর্ণে ভেষজং বারি; জীর্ণে বারি বলপ্রদম্ | বদহজমের একমাত্র ওষুধ জল; দুর্বলকে জল শক্তি যোগায়। |
অজ্ঞতাই ভক্তি করে, ভক্তি হলো অজ্ঞতার কন্যা | অজ্ঞান ও ভয় থেকে মানুষের মনে ভক্তির সৃষ্টি হয়। |
অজ্ঞাতকুলশীলস্য বাসো দেয়ো ন কস্যচিৎ | কখনো অচেনা লোককে গৃহে স্থান দিতে নেই। |
অজ্ঞানতা শ্রেষ্ট দারিদ্র- আরবী প্রবাদ | অজ্ঞানের সমস্ত জীবনটা বৃথা যায়; অজ্ঞান জীবনের স্বাদ পায় না। |
অজ্ঞানবন্ধু থেকে জ্ঞানীশত্রু অনেক ভালো | বন্ধু হলেও অবোধের কাছ থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। |
অজ্ঞানে আকস্মিক ও দৈব ঘটনার যুক্তি খাড়া করে | কিছুই আকস্মিক নয়; অকারণে কিছু হয় না; ব্যাখ্যায় অক্ষম হলে লোকে দৈবের দোহাই দেয়; সমতুল্য- পরুষ্কারেণ বিনা দৈব ন সিদ্ধতি; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাগ্যং ফলতি সর্বত্র, ন চ বিদ্যা ন পৌরুষম্। |
অজ্ঞানে করে পাপ, জ্ঞান হলে সরে/হরে, সজ্ঞানে করে পাপ, সঙ্গে সঙ্গে ফেরে // অজ্ঞানে করে পাপ, জ্ঞান হলে মনস্তাপ | শিশুবয়সে নানা দোষত্রুটি হয়; বড় হলে সেগুলি শুধরে নেয়, কিন্তু জ্ঞানকৃত পাপ কখনো খণ্ডায় না। |
অজ্ঞানে বাপান্ত করে, জ্ঞানবানে তাই কি ধরে? | অজ্ঞরা কিছু দোষ করেই ফেলতে পারে; জ্ঞানীরা সেই অপরাধ ধরে না। |
অজ্ঞানের কান দুটো ছোট ও জিভটা বড় হয় | অজ্ঞানেরা শোনে খুব কম কিন্তু কথা বলে বড় বেশি। |
অজ্ঞানের কালে জানে না, অমানুষের কালে মানে না | শিশু বুঝতে পারে না বলেই দোষ করে; বয়স্কলোকেরা কিন্তু দোষকে অগ্রাহ্য করে। |
অতলজলদলতলন্যস্তরত্নরাজিবনমহামুল্যপুরুষরত্ন- বঙ্কিমচন্দ্র | সাগরতলস্থিত রত্নরাজির সমান মহামুল্য পুরুষরত্ন (বহুবর্ণ সম্বলিত একটি শব্দের উগাহরণ) |
অতি অস্পষ্ট কালির লেখাও উৎকৃষ্ট স্মরণশক্তি থেকে বেশি উজ্জ্বল- চীনা প্রবাদ | স্মৃতিশক্তি বড়ই দুর্বল; লেখা কিন্তু চিরস্থায়ী। |
অতি আশ সর্বনাশ // অতি আশায় মরে চাষা // অতি আশা প্রবঞ্চনা করে- ইংরাজী প্রবাদ | বেশি লোভ করলে বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; সমতুল্য- 'অতি লোভে তাঁতি নষ্ট', 'খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে/হেলে গরু কিনে', 'ছায়ার পিছনে ছোট আর আসল হারাও' ইত্যাদি। |
অতিকথায় বার্তা নষ্ট | বাকচাতুর্যে মূলবক্তব্য হারিয়ে যায়। |
অতি ক্ষুধা যার হাড় কাটা তার | বেশি খেলে শরীর নষ্ট হয়। |
অতিগর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি | হাঁকডাকওয়ালারা কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা; যে বেশি বকে সে কাজের হয় না; সমতুল্য- অতি মেঘে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি। |
অতিঘরন্তী না পায় ঘর | ভাগ্যদোষে অতি নিপুণা ঘরণীও সংসার পাততে পারে না। |
অতি চতুরের ভাত নেই, অতি সুন্দরীর ভাতার নেই | বেশি চালাকের অন্ন জোটে না, বেশি সুন্দরীর বর জোটে না; ভাল নয় অতিশয়। |
অতি চালাকের গলায় দড়ি | বেশি চালাকি করে অপরকে ঠকালে নিজেকেও বিপদগ্রস্ত হ'তে হয়। |
অতি চালাকের গলায় দড়ি, অতি বোকার পায়ে বেড়ি | বেশি চালাক ও বেশি বোকা, উভয়ই বিপদে পড়ে; অতি ভাল ভাল নয়। |
অতিচেনার কদর নেই | সহজলভ্য জিনিষের মূল্য নাই; সমতুল্য- গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না। |
অতি জ্বালে ব্যঞ্জন নষ্ট | বেশি জ্বাল দিলে দ্রব্যগুণ নষ্ট হয়; কোন কিছুতেই বাড়াবাড়ি ভালো নয়। |
অতি দর্পে হতা লঙ্কা | অহংকার করলে পতন অনিবার্য। |
অতি দর্পে হতা লঙ্কা, অতিমানে চ কৌরবাঃ। অতিদানে বলির্বদ্ধঃ সর্বমত্যন্তম গর্হিতম্॥ (চাণক্য) | অতিরিক্ত অহঙ্কারে লঙ্কা বিনষ্ট হয়; অতিরিক্ত অভিমানে কৌরবেরা বিনষ্ট হয়; অতিরিক্ত দানে বলি বামনের কাছে বন্দী হয়; কোনকিছুতে বাড়াবাড়ি ভালো না। (মাত্রাতিরিক্তের পরিণাম) |
অতি দানে বলির পাতালে হল ঠাঁই | অতিরিক্ত দান করতে গিয়ে বলি বামনের কাছে বন্দী হয়; সৎকাজে নিয়োজিত ব্যাক্তি অন্যের কৌশলে ভোগান্তির শিকার হয়; সুতরাং অতিশয় কিছু ভালো নয়। |
অতি পীরিত যেখানে অতি বিচ্ছেদ সেখান | পীরিত বেশি হলে তাড়াতাড়ি বিচ্ছেদের আশঙ্কা থাকে। |
অতি পীরিত যেখানে নিত্য যাবে না ষেখানে; যদি যাবে নিত্যি ঘটবে একটা কীর্তি | যেখানে ভালোবাসা গভীর শেখানে প্রতিদিন না যাওয়াই ভালো; তা না হলে কলঙ্ক বা বিরোধ ঘটতে পারে। |
অতি প্রেমে অমিত বিচ্ছেদ | যেখানে ভালোবাসার বাড়াবাড়ি সেখানে বিচ্ছেদবেদনাও তীব্র হয়। |
অতি বড় ঘরণী না পায় ঘর; অতি বড় সুন্দরী না পায় বর | বেশি বাছাবাছি করতে গিয়ে প্রায়শঃ ঘরকন্নার কাজে অতিশয় নিপুণা নারীর ঘরকন্নার সুযোগ জোটে না এবং অতি সুন্দরীর বর জোটে না। কোন বিষয়ে অনন্যসাধারণ হলে সবসময় তার জুড়ি পাওয়া যায় না। |
অতি বড় সোদর (সহোদর ও সহোদরা) তিনদিন করবে আদর | যত প্রীতিরই হোক না কেন অতি পাওয়ায় আদর ক্রমশঃ কমতে থাকে। |
অতি বাড় বেড়ো না ঝড়েতে উড়াবে, অতিছোট হয়ো না ছাগলে মুড়োবে | অহঙ্কার বেশি বেড়ে গেলে পতন হবেই; আবার বেশি বিনীত হলেও উপেক্ষিত হবেই; মধ্যপন্থাই শ্রেষ্ঠপন্থা। |
অতি পরিচয়ে দোষ ব্যক্ত | অন্তরঙ্গতায় লুকানো দোষ প্রকাশ হয়ে পড়ে। |
অতি পরিচিতি উপেক্ষার জন্ম দেয় | কোন বিষয় বেশি পেলে তার প্রতি আকর্ষণ, আগ্রহ কমে (ক্রমহ্রাসমান উপযোগ বিধি)। |
অতি বুদ্ধির কোমরে/গলায়/হাতে দড়ি, অতি বোকার পায়ে বেড়ি | অতিচালাকি করতে গিয়ে মানুষ মরে; অতিবোকামির জন্য একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; বেশি বাড় ভালো নয়। |
অতি বুদ্ধির হা-ভাত | চালাকি করতে গিয়ে অস্থিরতার কারণে ভাত যোগাড় করতে ব্যর্থ হয়; ভাল নয় অতিশয়। |
অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ | ভক্তির আতিশয্যে গোপন উদ্দেশ্য প্রচ্ছন্ন থাকে; অসঙ্গতমাত্রায় কিছু করলে স্বাভাবিকভাবেই মনে সন্দেহ জাগে; সমতুল্য- 'কেশব, গোপাল, হরিহরি, হরহর'। |
অতি ভালো, ভালো নয় | সব বাড়াবাড়িই শেষপর্যন্ত বিপদ ডেকে আনে; সমতুল্য- 'অল্প আগুনে গা গরম হয়; বেশি আগুনে ঘর পোড়ে'; 'সর্বম্ অত্যন্তম্ গর্হিতম্' ইত্যাদি। |
অতি মন্থনে বাসুকীর বিষ/বিষ ওঠে | বেশি ঘাটাঘাটি করলে দ্রব্যগুণ নষ্ট; অনেক সময় বারবার শোনা ভালকথাও মন্দ মনে হয়। |
অতি মন্থনে মিঠা তিতা | বেশি কচলালে লেবু তেতো হয়। |
অতি মেঘে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি | বেশি মেঘ হ’লে বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; আড়ম্বর বেশি হলে কাজ ভাল হয় না; সমতুল্য- 'অতি গর্জনে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি'। |
অতি যত্নে মরণফাঁদ | বেশি যত্ন নিলে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। |
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট | বেশি লোভ করলে সর্বস্ব খোয়ানোর আশঙ্কা থাকে; বেশি বাড়াবাড়ি ভাল নয়; সমতুল্য- 'অতি আশ সর্বনাশ', 'অতি আশায় মরে চাষা','খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে' ইত্যাদি। |
অতি লোভো ন কর্তব্যঃ। লব্ধং নৈব পরিত্যজেৎ॥ (চাণক্য) | বেশী লোভ করতে নেই, আবার পাওয়া জিনিসও ত্যাগ করতে নেই। |
অতির কিছুই ভাল নয় | দান, দয়া, প্রেম, মান ইত্যাদি কোন গুণাবলীও মাত্রাতিরিক্ত হলে সেটা ভাল হয় না। |
অতিশয় ভালো নয় বুদ্ধি হলেই পড়তে হয় | বেশি বুদ্ধি হলে পতন অনিবার্য; সমতুল্য- 'অতি চালাকের গলায় দড়ি'। |
অতি সাধ অতি বিষাদ | বেশি আশা পূর্ণ না হলে মনে বিষাদে ভরে যায়। |
অতি সোদর হয় গালে তুলে দেয়, টিকলেতো/গিললেতো হয় | ভাই বলে কেউ যদি তোমার মুখে মিষ্টি তুলে দেয়, সেটা গিলতে না পারলে কোন লাভ নেই; ব্যবহার করতে না জানলে কোন বস্তু নিয়ে লাভ নেই। |
অতিথি সর্বময় গুরুঃ/পূজ্যঃ | অতিথি গুরুর মতই পূজনীয়। |
অতীত থেকে শিক্ষা নাও, ভবিষ্যতে ভুল হবে না | অতীতকে জানলেই ভবিষ্যৎ জানা যায়। |
অতীতকে শুধরানো যায় না | অতীতকালে ফিরে যাওয়া যায় না; সমতুল্য- 'গতস্য শোচনা নাস্তি', 'যা গেছে তা গেছে' ইত্যাদি। |
অতুভুক্তিরতীবোক্তি সদ্যঃ তীব্র প্রাণাপহারিণী | অপরিমিত আহারে স্বাস্থ্যনাশ হয়। |
অতৃণে পতিত বহ্নিঃ স্বয়ামেবোপশাম্যতি | আগুন তৃণশূন্যস্থলে পড়লে আপনাতেই নিভে যায়। |
অত্তাস কুত্তা বত্তাস ভূঁকৈ- হিন্দি প্রবাদ | ভীতু কুকুর বাতাসের শব্দে ভয় পেয়ে ঘেউ ঘেউ করে; ভীতু লোকেরা অনাবশ্যক ভয় পেয়ে চিৎকার জুড়ে দেয়। |
অত্যুচ্ছ্রা্য পতনায় // অত্যুচ্ছ্রায়ো পতনহেতুঃ | বেশি বাড়লে পতন হবেই; অতিবাড় পতনের কারণ। |
অদন্তের দাঁত হ'ল, কামড় খেতে খেতে প্রাণটা গেল | কোন নতুন দ্রব্য পেয়ে অত্যধিক ব্যবহার করলে এই প্রবাদটি ব্যবহাত করা হয়। |
অদন্তের হাসি দেখতে ভালোবাসি | দন্তহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের হাসি দেখে কৌতুকে এই প্রবাদটি বলা হয়। |
অদাতা বংশদোষেণ কর্মদোষাদ্ দরিদ্রতা। উন্মাদো মাতৃদোষেণ পিতৃদোষেণ মূর্খতা॥ (চাণক্য) | বংশদোষে কৃপণ, কর্মদোষে দরিদ্র, মাতৃদোষে পাগল এবং পিতৃদোষে মূর্খ হয়। |
অদৃষ্টে করলা ভাতে, বীচি কচকচ করে তাতে | ভাগ্যে লেখা থাকলে দুর্ভোগ পোহাতে হবেই; দুখীর ভাগ্যে সুখ লেখা নেই। |
অদৃষ্টের কিল ভূতেও কিলোয় // অদৃষ্টের কিল পুতেও (ছেলে) কিলোয় | অদৃষ্ট খারাপ হ'লে নির্বিচারে সবাই ভোগায়। |
অদৃষ্টের লিখন না যায় খণ্ডন | কপালের লিখন কেউ খণ্ডাতে পারে না; বিরুদ্ধ উক্তি- অদৃষ্টের ফের কাপুরুষের উক্তি। |
অধনশ্চ/অধনেন ধনং প্রাপ্য তৃণবন্মন্যতে জগৎ | নির্ধনের ধন হলে সে সকলকে তৃণজ্ঞানে তুচ্ছ করে; অর্থের সামর্থ হ'লে অহঙ্কারে অধমের মাটিতে পা পড়ে না। |
অধমা ধনমিচ্ছতি ধনং, মানং চ মধ্যমা। উত্তমা মানোমিচ্ছন্তি মানং মানো হি মহতাং ধনম॥ (চাণক্য) | অধম ধন চায়, মধ্যম ধন ও মান চায়; উত্তম শুধু মান চায়। |
অধর্মবিষবৃক্ষস্য পচ্যতে স্বাদু কিং ফলম? | অধর্মরূপ বিষবৃক্ষে কী স্বাদু ফল ফলে? |
অধর্মের পথ বড়ই সরল | অধর্মের পথে চলতে কোন অনুশাসন, নিয়মশৃঙ্খলা মানার প্রশ্ন থাকে না; তাই মানুষ মনোরম অধর্মপথেই চলতে পছন্দ করে; সমতুল্য- 'নরকের দ্বার খোলা' |
অধরেস্বমৃতং হি ঘোষিতাং হৃদি হলহলমেব কেবলম | রমণীদের অধরে অমৃত এবং হৃদয়ে বিষ থাকে। |
অধিক খেতে করে আশা, তার নাম বুদ্ধিনাশা | বেশি খাওয়া স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকর; পেটুক না হলে কেউ বেশি খায় না। |
অধিক/অনেক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট | এক কাজে অনেক লোক জুটে গেলে মতভেদের কারণে কাজ পণ্ড হয় সমতুল্য-'অনেক রাঁধুনীতে ব্যঞ্জণ নষ্ট', 'ঘরের মধ্যে ঘর, সবাই মাতব্বর','ঠেলাঠেলির ঘর, খোদায় রক্ষা কর', 'দশ পাগলের ঘর, খোদায় রক্ষা কর','সাত সতীনের ঘর খোদায় রক্ষা কর ইত্যাদি। বিরুদ্ধ উক্তি- 'দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ'। |
অধিক দিন থাকলে গাজন, কে করত শিবের ভজন? | আধিক্যে সোনার মূল্যও হ্রাস পায়। |
অধিকন্তু ন দোষায় | প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে ক্ষতি নেই, তবে যদি সেটা সৎকার্য হয়; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অতি ভাল ভাল নয়', 'সর্বম্ অত্যন্তম্ গর্হিতম্' ইত্যাদি। |
অধ্যয়নং তপঃ | অধ্যয়ন তপস্যার সমান। |
অর্ধেক বললে গাধাও বোঝে, সব বললে কে না বোঝে? | সবাই বুঝনদার; কিছু বোঝে না- এমন কেউ নেই। |
অনটনের দুনো ব্যয় | একসাথে বেশি পরিমাণ কিনলে দামে সস্তা হয়; অর্থের টানাটানিতে একটু একটু করে একাধিকবার কিনলে অর্থ দ্বিগুণ ব্যয় হয়। |
অনন্ত শাস্ত্রং বহুবেদিতব্যম | শাস্ত্রের শেষ নেই; বহু বিষয় জানার আছে। |
অনন্যগামিনী পুংসাং কীর্তিরেকা পতিব্রতা | পুরুষের একমাত্র কীর্তিই পতিব্রতা নারীর মত জীবনে মরণে অনুগমন করে। |
অনবসরে যাচিতমিতি সৎপাত্রমপি কুপ্যতে দাতা | সৎপাত্রও অসময়ে যাচ্ঞা করলে দাতা কুপিত হন। |
অনভ্যস্তা বিষং বিদ্যা বৃদ্ধস্য তরুণী বিষম। আরোগে তু বিষং বৈদ্যা অজীর্ণে ভোজনং বিষম॥ (চাণক্য) | অনভ্যস্ত বিদ্যা বিষের সমান; যুবতীনারী বৃদ্ধের কাছে বিষের সমান; নীরোগব্যক্তির পক্ষে বৈদ্য বিষের সমান;হজমের আগে পুনরায় ভোজন বিষের সমান। |
অনভ্যাসের ফোঁটা কপাল চড়চড় করে | অনভ্যস্ত কাজে হাত দিলে প্রথমে একটু কষ্ট হয় বা একটু অস্বস্তিবোধ হয়। |
অনাথো দৈবরক্ষক // অনাথের দৈব সখা | অনাথের রক্ষক স্বয়ং ভগবান; ভগবানে বিশ্বাস করেই সে বেঁচে থাকে; একমাত্র বিশ্বাসই তার বেঁচে থাকার রসদ; হরি হে দীনবন্ধু; বিরুদ্ধ উক্তি- ' আভাগা যেদিকে চায় সাদর শুকায়ে যায়; 'অভাগার যমও নাই'। |
অনাগত বিধাতা চ প্রত্যুন্মতিসস্তথা। দ্বাধেতি সুখমেষেতে যদ্ভবিষ্যো বিনাশ্যতি॥ (চাণক্য) | যে অনাগত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়ে প্রত্যুৎপন্নন্মতিত্বের পরিচয় দেয় সে সুখী হয়;যে ভাগ্যের দোহাই দিয়ে নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকে সে বিনাশপ্রাপ্ত হয়। |
অনাবৃষ্টে রাজ্য মজে, পাপে মজে ধর্ম; কোটালে গৃহস্থ মজে, আলস্যে মজে কর্ম। | বৃষ্টি না হলে দেশের ক্ষতি; পাপে ধর্ম বিপদগ্রস্ত; নদীর বাড়ে লোকালয় বিপদগ্রস্ত; অলসতায় কর্ম নষ্ট। |
অনায়কা বিনশ্যন্তি, নশ্যন্তি শিশুনায়কা। স্ত্রীনায়কা বিনশ্যন্তি, নশ্যন্তি বহুনায়কা।। (চাণক্য) | শিশু, স্ত্রী, বহুনায়ক ও পরিচালকহীন জন বিনাশপ্রাপ্ত হয়। |
অনাহ্বানের নিমন্ত্রণ, না আঁচালে বিশ্বাস নেই | উপযাচকের ইচ্ছা অনেকসময় পূর্ণ হয় না; যেকোন কাজেই সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অনিশ্চয়তার আশঙ্কা থাকে। |
অনিচ্ছুক ঘোড়াকে জল খাওয়ানো যায় না | অনিচ্ছুক হলে কারো কাছ থেকে কাজ আদায় করা অসম্ভব। |
অনিশ্চিতের আশায় নিশ্চিত ত্যাগ করো না | সম্ভব ছেড়ে অসম্ভবের পিছনে ছূটো না। |
অনিষ্ট হ'তে ইষ্ট লাভ | মন্দঘটনা থেকে ভাল ঘটনার উৎপত্তি; সমতুল্য- 'অহিতে বিপরীত', 'শাপে বর'; বিরুদ্ধ উক্তি- হিতে বিপরীত'। |
অনুরাগ বিনে গৌর আসবে কেনে? | প্রীতি ও প্রেমের পূণ্যবাঁধনে স্বর্গ রচিত হয়। |
অনুরোধে ঢেঁকি গেলা | অনুরুদ্ধ হয়ে নিতান্ত বাধ্য হয়ে কোন কাজ সম্পাদন করা। |
অনুশীলনে পাথর ক্ষয় হয় | পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই; সমতুল্য- পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। |
অনুশীলনে মানুষ নিঁখুত/সম্পূর্ণ হয় | দক্ষতা অর্জনে ধারাবাহিক অনুশীলন একান্ত জরুরি; সমতুল্য- 'পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'কোন মানুষ নিখুঁত/সম্পূর্ণ নয়'। |
অনেক কালের ছিল পাপ ছেলে হল সতীনের বাপ | সবই কর্মফল; পাপ করলে শাস্তি আছেই; পাপ বাপকেও ছাড়ে না; পাপের ফল কোন না কোন সময় পেতেই হয়। |
অনেক খেলে অল্প খাবে; অল্প খেলে অনেক খাবে // অনেক খাবে তো অল্প খাও, অল্প খাবে তো অনেক খাও | সারাজীবনের আহার নির্দিষ্ট; প্রতিদিন বেশিবেশি খেলে অল্পদিনে তা ফুরিয়ে যাবে (সল্পায়ু হবে); অপরপক্ষে অল্পঅল্প খেলে তা বেশিদিন ধরে খাবে (দীর্ঘায়ু হবে); মিতাহারী হওয়ার পক্ষে সওয়াল। |
অনেক গর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি | অকর্মারা বেশি হাঁকাহাঁকি করে; সমতুল্য- অতি মেঘে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি; যত গর্জে তত বর্ষে না; বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া ইত্যাদি। |
অনেক/অগাধ/গভীর জলের মাছ | সহজে ডঃরা দেই নয়া এমন, খুব সুচতুর ব্যক্তি। |
অনেক দক্ষতা কোন দক্ষতা নয়- জাপানী প্রবাদ | বেশি কাজের লোক হলে কাজ হয় না; বেশই জানলে কিছুই জানা হওয় না; সবজান্তারা সম্যক কিছু জানে না; সমতুল্য- 'অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট'। |
অনেক যদি মাছ পায়, বেড়ালে কাঁটা বেছে খায় | প্রয়োজনের বেশি হলে নির্বাচনের প্রশ্ন আসে। |
অনেক রাঁধুনিতে ব্যঞ্জন নষ্ট // অনেক ফকিরে দরগা নষ্ট // অনেক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট // অনেক মাতব্বরে বিচার নষ্ট | এক কাজে অনেক লোক জুটে গেলে মতভেদের কারণে কাজ পণ্ড হয়। |
অনেক সুখ কপালে, ছেঁড়া কাঁথা বগলে | কপাল বলে কিছু নেই; মানুষ কর্মদোষে দুঃখ ভোগ করে। |
অনেক হল পাপ, এবার ছাড়ো বাপ | ভোগবিলাস অনেক হয়েছে, এবার দিনান্তে আসে ওসব ছেড়ে ধর্মেকর্মে মন দাও। |
অন্তঃসারবিহিনানামুপদেশ ন বিদ্যতে | অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তিদের নানা উপদেশ দিলেও কোন ফললাভ হয় না; সমতুল্য- চন্দনগাছের সংসর্গে এলেও বাঁশ চন্দন হয় না; বিরুদ্ধ উক্তি- চন্দনের সংস্পর্শে এলে শেওড়াগাছও চন্দন গন্ধ পায়। |
অন্তরে এত খলতা, মুখে তোর অতি শীলতা | অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ |
অন্ধ জাগো না কিবা রাত্রি কিবা দিন // অন্ধের কিবা রাত্রি কিবা দিন | যার কষ্টের সীমা-পরিসীমা নেই সে সব বিষয়েই নিস্পৃহ। |
অন্ধ হলেই কি প্রলয় বন্ধ থাকে | জগৎ জলে তার নিজের নিয়ম, ব্যক্তি নিমিত্তমাত্র। |
অন্ধকার আছে বলেই আলোর কদর | বদগুণ ভালো নয় বলেই সদগুণের কদর; সমতুল্য- মেঘ আছে বলেই সুর্যের কদর। |
অন্ধকার আলো দূর করে না, আলো অন্ধকার দূর করে | জ্ঞানের আলোতে মনের অন্ধকার দূর হয়। |
অন্ধকার ঘরে কালো বেড়াল খোঁজা // অন্ধকারে উকুন বাছা | নিস্ফল প্রচেষ্টা, যা হবার নয়; সমতুল্য- খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা |
অন্ধকার রাত্রির পরেই ঊষার আগমন | কখনো নিরাশ হ’তে নেই; সুসময়ের অপেক্ষায় থাকতে হয়। |
অন্ধকারকে অভিশাপ দেওয়া থেকে একটি প্রদীপ জ্বালানো ভাল- চীনা প্রবাদ | কোন সমস্যা সম্পর্রকে অভিযোগ না জানিয়ে সমস্যাটির সমাধানে সচেষ্ট হওয়া উচিত। |
অন্ধকারে ঢিল/ঢেলা ছোঁড়া/মারা // অন্ধকারে লাউ কোটা | নিস্ফল বা বৃথা প্রচেষ্টা; সমতুল্য- এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটা পাত্রে. বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে। |
অন্ধকারে সব বিড়ালকে ধূসর দেখায় | অস্পষ্ট বিষয়ে অনুমান করতে ভুল হয়। |
অন্ধজনে দেহ আলো, মৃতজনে দেহ প্রাণ- রবীন্দ্রনাথ | মনের অন্ধকার দূর কর; অজ্ঞানকে জ্ঞানী কর; সমতুল্য- তমোসা মা জ্যোতির্গময়। |
অন্ধস্য দীপো, বধিরস্য গীতং। মুর্খস্য শাস্ত্রং কিমু সানুরাগং।। (চাণক্য) | যার যে ইন্দ্রীয় নেই তার সেই ইন্দ্রীয়গ্রাহ্য বিষয় লাভের চেষ্টা বৃথা। |
অন্ধের কিবা রাত্রি কিবা দিন | অন্ধের কাছে দিনরাত্রি কোন প্রভেদ নেই- দুই সমান; অভাগার বাছবিচার করা বাতুলতা। |
অন্ধের দেশে কানা রাজা | অজ্ঞানদের মধ্যে একজন স্বল্পজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি বিরাট জ্ঞানী। |
অন্ধের দোকানে কালা খরিদ্দার | দুজনেই সমান অপদার্থ; সমতুল্য- 'গুরু বোবা, শিষ্য কালা', 'দাদা কানা, আমি দেখিনে', 'হব/হবুচন্দ্র রাজা, গব/গবুচন্দ্র মন্ত্রী' ইত্যাদি। |
অন্ধের নড়ি/যষ্ঠি | অন্ধ চোখে দেখে না তাই সে লাঠির ওপর-ই ভরসা করে চলে; লাঠিই তার একমাত্র অবলম্বন। |
অন্ধের নড়ি, কৃপণের কড়ি | কৃপণের কাছে কড়ি যেমন অন্ধের কাছেও লাঠি হল যখের ধনের সমান। |
অন্ধের মত চলো | পা ফেলার যায়গা পরীক্ষা না করে অন্ধ পা ফেলে না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অন্ধের মত চলো না'। |
অন্ধের মত চলো না | চোখ বুজে পথ চলো না; কিছু-না-বুঝে কোন কাজ করো না। |
অন্ধের হস্তীদর্শন | পরিষ্কার ধারণা না নিয়ে শুধু অংশবিশেষ পর্যালোচনা করে কোন বিষয় সম্পর্কে সম্পুর্ণ মতামত ব্যক্ত করা ভুল। |
অন্ন আর অর্থবিনা কোন কাজ সঠিক হয় না | পেটে ভাত আর পকেটে টাকা না থাকলে কোন কাজ ঠিকমত হয় না। |
অন্নচিন্তা চমৎকারা কাতরে কবিতা কুতঃ // অন্নচিন্তা চমৎকারা, কালিদাস বুদ্ধিহারা // অন্নচিন্তা চমৎকারা, ঘরে ভাত নাই জীয়ন্তে মরা // অন্নবিনা ছন্নছাড়া //অন্নের জ্বালা বড় জ্বালা এক দিনে লাগে তালা // অন্নের বড় জ্বালারে ভাই অন্নের বড় জ্বালা, দুই হাঁটু ঠকঠক করে কর্ণে লাগে তালা | খিদের জ্বালায় মাথা ঠিক থাকে না; অন্ন জোটানোর চিন্তা কঠিন ব্যাপার অথচ খুব প্রয়োজন, না খেয়ে থাকা যায় না; যার অন্নের সংস্থান নেই ষে জীবন্মৃত; পেটে ভাত না পড়লে সব গোলমাল হয়ে যায়। |
অন্নজলের বরাত ওঠা | পরমায়ু শেষ। |
অন্নজলের নাড়ী কোটা | শিশুর ভাতজল খাওয়ার তথা অন্নপ্রাসনের বয়স হওয়া। |
অন্নজলের বরাত ওঠা | জীবনান্ত, পরমায়ু শেষ, জীবিকা অর্জনের উপায় শেষ। |
অন্নাদষ্টগুণং পিষ্ট পিষ্টাদষ্টগুণং পয়ঃ। পয়সোহষ্টগুণং মাংসং মাংসাদষ্টগুণং ঘৃতম্।। (চাণক্য) | অন্নের তুলনায় পিষ্টক আটগুণ পুষ্টি দান করে; পিষ্টকের তুলনায় দুগ্ধ আটগুণ পুষ্টি দান করে; দুগ্ধের তুলনায় মাংস আটগুণ পুষ্টি দান করে; এবং মাংসের তুলনায় ঘৃত আটগুণ পুষ্টি দান করে। |
অন্নদাতা ভয়ত্রাতা যস্য কন্যা বিবাহিতা। জনয়িতোপনতা চ পঞ্চৈতে পিতরঃস্মৃতা।। (চাণক্য) | যিনি অন্ন দান করেন, যিনি ভয় থেকে রক্ষা করেন, যিনি কন্যা দান করেন (শ্বশুর), যিনি জন্মদান করেন, যিনি উপনয়ন দান করেন- এই পাঁচজন পিতার স্বীকৃতি পান। (পঞ্চপিতা কারা?) |
অন্ন দেখে দেবে ঘি, পাত্র দেখে দেবে ঝি | ভালো ভাতে ঘি দিলে সুস্বাদু হয়; সুপাত্রে কন্যাদান করলে ষে সুখী হয়; সব বিষয়ে ভেবেচিন্তেই নির্বাচন করা উচিত; মহার্ঘ বিষয়ের অপব্যবহার অনুচিত। |
অন্ন নাই যার ঘরে, তার মানে কি বা করে | হাভাতের কোন মানসম্মান নেই। |
অন্নপূর্ণা যার ঘরে, সে কাঁদে অন্নের তরে | এমনই দুরদৃষ্ট যে চাষীর মুখে অন্ন জোটে না। |
অন্নপ্রাশনের ভাত উগরে ওঠা | বৃদ্ধবয়সে ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করা। |
অন্নবল নেই, অগ্নিবল আছে | অভাগার অন্ন যোগাড় করার অর্থ নেই, কিন্তু ক্ষুধার জ্বালা আছে। |
অন্নবিনা চর্ম গড়ি, তৈলবিনা গায়ে খড়ি | পেটে অন্ন না পড়লে শরীরে চাকচিক্য আসে না। |
অন্নের জ্বালা বড় জ্বালা একদিনে লাগে তালা | পেটে ভাত না পড়লে জীবন ওষ্ঠাগত। |
অন্যলোকে ভুরা (গুড়ের নিকৃষ্ট অংশ) দেয় ভাগ্যে আমি চিনি | সেয়ানা লোক ঠকে না। |
অন্যায় করাটা কিছুই না যদি না তুমি সেটা সর্বক্ষণ মনে রাখো- কনফুসিয়াস | অজ্ঞানে অন্যায় করলে সেটা ভুল; জ্ঞানতঃ অন্যায় করলে সেটা পাপ; পাপীই অন্যায় করার ইচ্ছা মনে পুষে রাখে। |
অন্যে পরে কা কথা | বিধাতার বিড়ম্বনায় রামের বনবাস হয়েছিল; সীতা আগুনে পুড়েছিলেন; কৃষ্ণ অপঘাতে মরেছিলেন; অন্যেরও তাই হবে- এর বেশি কি। |
অন্যে যার গুণ গায় সে নির্গুণ হলেও গুণী; নিজের গুণগানে ইন্দ্রও ছোট হয় | গুণীলোক পরের গুণ গায়; নির্গুণ শুধু নিজের ঢাক পিটিয়ে ছোট হয়। |
অন্যের যা খারাপ মনে কর নিজের মধ্যেও তা খারাপ মনে করতে শেখো | স্বভাবদোষে মানুষ নিজের দোষ দেখে না; এটা করতে পারলে সবার মঙ্গল হত। |
অন্যের মধ্যে কি দোষ আছে অন্বেষণ করো না বরং নিজের মধ্যে কি দোষ অন্বেষণ কর- কনফুসিয়াস | আগে নিজেকে সংশোধন করা উচিত। |
অপচয়ে লক্ষ্মীনাশ/লক্ষ্মী ছাড়ে | অপচয়ে অর্থসঙ্কট দেখা দেয়। |
অপদার্থ যেখান থেকে শুরু করে সেখানেই ফিরে আসে | অপদার্থের কাজের নীটফল শূন্য। |
অপমানের পরাণ, সম্মানকে ডরান | অতি বিনযী ও নম্রপ্রকৃতির মানুষ সম্মানকে অতি তুচ্ছ মনে করেন। |
অপব্যয় করো না, অভাবে পড়ো না | আয় বুঝে ব্যয় করলে কোনদিন অভাব হবে না। |
অপব্যয়ে লক্ষ্মী ছাড়ে | অকারণে ব্যয় করলে কুবেরের সম্পত্তিও একদিন শেষ হয়; সমতুল্য- 'যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশিতে প্রদীপ ভাতি'। |
অপরং বা কিং ভবিষ্যতি | যা যা ঘটার নয় তার সবই ঘটল; না জানি আর কি বা কপালে আছে। |
অপরাধবোধের ফরিয়াদীর প্রয়োজন হয় না | অপরাধী অপরাধ স্বীকার করলে অভিযোগ জানানোর প্রয়োজন হয় না। |
অপরের মন্দ নিজের হিত, না করিও কদাচিৎ | এইপ্রকার চিন্তাভাবনা পাপবোধের জন্ম দেয়। |
অপেক্ষার সময় শেষ হয় না- ইংরাজী প্রবাদ | কিছু পাবার আশায় বসে থাকলে অনন্তকাল বসে থাকতে হবে; অপেক্ষায় কার্যসিদ্ধি হয় না; অপেক্ষা করায় রাবণও স্বর্গের সিঁড়ি বানাতে পারেন নি। |
অপাত্রঃ পাত্রতাং যাতি, যত্র পাত্রো ন বিদ্যতে। নিরস্তপাদপে দেশে এরণ্ডোহপি দ্রুমায়তে।। (চাণক্য) | যে দেশে গুণী নাই, সেই দেশ নির্গুণব্যক্তি গুণী বলে পুজিত হয়; যে দেশে বৃক্ষ নাই সে দেশে এরণ্ডও বৃক্ষ বলে বিবেচিত হয়। |
অপ্রিয় সত্য কথা বলিও না | অপ্রিয় সত্য কথা শুনতে কেউ চায় না। |
অপ্রিয়স্য তু পথ্যস্ত বক্তা শ্রোতা চ দুর্লভঃ | হিতকর বাক্যের বক্তা ও শ্রোতা দুই দুর্লভ; এইরূপ বাক্য কেউ বলতে বা শুনতে চায় না। |
অবলা বোলে দড়, অফলা ফলে দড় | অবলার মুখ ছোটে বেশি; যে গাছে ফল ধরে না ষে গাছে একবার ধরলে প্রচুর পরিমাণে ফলে। |
অবলার মুখই বল | শারিরিক বল কম থাকায় অবলা মুখের বোল বেশি হয়; একবার বকতে শুরু করলে তাকে থামানো মুশকিল। |
অবশ্যমেব ভোক্তব্যং কৃতং কর্ম শুভাশুভম | শুভই হোক আর অশুভই হোক, কৃতকর্মের ফল ভুগতেই হয়। |
অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করা | সামর্থের বাইরে কখনো যেও না; সমতুল্য়- 'আয় বুঝে ব্যয় কর', 'কাপড় বুঝে জামা কাটো', 'যখন যেমন তখন তেমন' ইত্যাদি। |
অবাক করলি রাধা, অম্বলে দিলি আদা! | গৃহকর্মে অনিপুণ বউ কাজ থেকে অকাজ বেশি করে। |
অবাক্ ক‘ল্লে নাকের নথে,কাজ কি আমার কানবালাতে | নাকের নথেই রূপ খুলেছে, কানপাশার আর প্রয়োজন নেই। |
অবাক কলির অবতার, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার | অযোগ্যের হাতে উৎকৃষ্ট দ্রব্য দেখে খেদ। |
অবিদ্যং জীবনং শূন্যং দিক্ শূন্যা চেদবান্ধবা। পুত্রহীনং গৃহং শূন্যং সর্বশূন্যা দরিদ্রতা॥ (চাণক্য) | বিদ্যাহীনের জীবন শূন্য, বন্ধুহীনের সকলদিক শূন্য, পুত্রহীনের গৃহ শূন্য আর দরিদ্রের সকলই শূন্য। |
অবিদ্যঃ পুরুষঃ শোচ্যঃ শোচং মৈথুনমপ্রজম। নিরাহারাঃ প্রজাঃ শোচ্যাঃ শোচ্যং রাজ্যমরাজকম।। (চাণক্য) | বিধ্যাহীন পুরুষ শোচনীয়, সন্তান উৎপাদনে অক্ষম মৈথুন শোচনীয়, অন্নহীন প্রজা শোচনীয়, অরাজক দেশ শোচনীয়। |
অবিবেকঃ পরমাস্পদম | বিবেকশূন্যতাই সব আপদের মূল। |
অবিমিশ্র সুখ হয় না | শুধু ভাল হয় না; ভালমন্দ মিশিয়ে থাকে; সমতুল্য- 'আলার পিছে কালা আছে', 'কলঙ্কবিনা চাঁদ নাই', 'কাঁটাবিনা গোলাপ/পদ্ম হয় না, 'প্রদীপের নীচে অন্ধকার' ইত্যাদি। |
অবিশ্বস্তকে বিশ্বাস করবে না; বিশ্বস্ত বন্ধুকেও অতিরিক্ত বিশ্বাস করবে না | বিচার বিবেচনা না করে বিশ্বাস করা ভাল নয়; বিরুদ্ধ উক্তি- অবিশ্বাস করে ঠকা থেকে বিশ্বাস করে ঠকা ভাল', 'মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো মহাপাপ'। |
অবিশ্বাস করে ঠকা থেকে বিশ্বাস করে ঠকা অনেক ভাল | তাতে লাভ বেশি, ক্ষতি কম; কোনভাবেই অবিশ্বাসকে মনে বাসা বাঁধতে দেওয়া নেই। |
অবুঝে বুঝাব কত,বুঝ নাহি মানে; ঢেঁকিরে বুঝাব কত,নিত্য ধান ভানে | অজ্ঞানে সদু উপদেশ |
অবোধারে বুঝাব কত, বোধ নাহি মানে; ঢেঁকিরে বুঝাব কত, নিত্য ধান ভানে | যে কিছু বোঝে না তাকে অতিরিক্ত কিছু বোঝানো চেষ্টা বৃথা; ঢেঁকি ধানভানা ছাড়া অন্য কাজ জানে না; সমতুল্য- ভৈঁসকে আগে বীণ বাজাওয়ে ভৈঁশ ঠাঢ় পগুরায়। |
অবোধারে মারে বোধায়, বোধারে মারে খোদায় | বোকাকে চালাকলোকে ঠকায়; চালাকলোক ভগবানের কাছে শাস্তি পায়। |
অবোধের খাটনি ভারি | বোকাকে বেশি খাটানো যায়; সমতুল্য-'গাধার পিঠে ভারী বোঝা'। |
অবোধের গোবধে আনন্দ | বোকারা দুস্কর্ম করে বেশি আনন্দ পায়; নির্বোধের পাপপূণ্য বোধ নেই। |
অবোধের সাত খুন মাপ | পাগলের কোন শাস্তি হয় না। |
অবোলা চলে বড়, অফলা ফলে বড় | পথ চলতে চলতে যে কথা বলে না সে অনেকটা পথ যায়; যে গাছে ফল ধরে না সে গাছে একবার ফল ধরলে প্রচুর পরিমাণে হয়। |
অব্রাহ্মণের দীর্ঘ ফোঁটা | অক্ষম বেশি ভান করে; সমতুল্য- 'ভণ্ড ব্রাহ্মণের ভড়ং বেশি'। |
অভদ্রা বর্ষাকাল হরিণী চাটে বাঘের গাল; শোনরে হরিণী তোরে কই সময়গুণে সবই সই | অসময়ে প্রবলব্যক্তি অসহায় হয়ে পড়লে দুর্বলব্যক্তিও তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। |
অভাগা চোর যে বাড়ী যায়, হয় কুকুর ডাকে নয় রাত পোহায় // অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায় | ভাগ্য অভাগাকে সবদিক থেকেই মারে। |
অভাগা যায় বঙ্গে, কপাল যায় সঙ্গে | যেখানেই যাও না কেন অদৃষ্টও তোমার সঙ্গে সঙ্গে যাবে; সমতুল্য- 'পোড়া কপাল জোড়া লাগে না'। |
অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায় | ভাগ্য মন্দ হলে অভাগা কোনোদিক থেকেই সাহায্য পায় না; সৌভাগ্যশালীও তাকে দূরদূর করে তাড়ায়। |
অভাগার গরু মরে, শকুনের ভাগ্য বাড়ে | একজনের ক্ষতি হলে অবশ্যই অন্য একজনের লাভ হয়; সমতুল্য- কারও পৌষমাস কারও সর্বনাশ'। |
অভাগার গরু মরে, ভাগ্যবানের বউ মরে | গরু মরলে মূলধনের ক্ষতি, সেই অর্থে মালিক অভাগা; বউ মরলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করে অর্থলাভ, সেই অর্থে সেই পুরুষ সৌভাগ্যবান। |
অভাগার যমও নেই | এমনই দুর্ভাগ্য যে মরে যে শান্তি পাবে তারও উপায় নেই। |
অভাগার হারাবার কিছু নাই | যার কিছু নাই তার কিছু হারাবার ভয় নাই |
অভাগীর লগনে চাঁদ নাই গগনে | অভাগীর ভাগ্যাকাশে পূর্ণিমার চাঁদ থাকে না থাকে অমাবস্যার অন্ধকার। |
অভাগিনীর দুটি পুত, একটি দানা একটি ভূত | সৌভাগ্যবতীর সুপুত্র হয়; কিন্তু দুটো পুত্রই যদি বদ হয় তবে সে নারী অভাগিনী ছাড়া আর কিছু নয়। |
অভাব যখন দুয়ারে এসে দাঁড়ায় ভালবাসা তখন জানলা দিয়ে পালায়- সেক্সপিয়র | অভাব মনের সব অনুভূতি নষ্ট করে। |
অভাবে স্বভাব নষ্ট | অভাব হলে অবস্থার চাপে ভালো মানুষও অসৎ হয়; সৎ থাকা খুবই কষ্টকর; সমতুল্য- 'স্বভাবে করে না অভাবে করে'। |
অভাবের সময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু | কঠিন সময়ে প্রকৃতবন্ধুর কাছ থেকে সৎ পরামর্শ পাওয়া যায়। |
অভাবে স্বভাব নষ্ট, মুখ নষ্ট বরণে, ঝর্যয় ক্ষেত নষ্ট, স্ত্রী নষ্ট মারণে | অভাব মানুষকে নষ্ট করে; ব্রণ মুখের শ্রী নষ্ট করে; ঝড় চাষ নষ্ট করে এবং মারধোর করলে স্ত্রী নষ্ট হয়। |
অভিজ্ঞতা হল চিরুনীর মত, সব চুল পড়ে গেলে প্রকৃতি যা আমাদের দেয়- চীনা প্রবাদ | জীবন যন্ত্রণায় পোড় খেতে খেতে মানুষ অভিজ্ঞ হয়। |
অভিজ্ঞতায় মানুষ বিজ্ঞ হয় | অভিজ্ঞতায় পোড় খাওয়া লোক সহজে বোকা হয় না। |
অভ্যাস দোষ না ছাড়ে চোরে, শূন্য ভিটায় মাটি খোঁড়ে // অভ্যাস দ্বিতীয় প্রকৃতি | মানুষ অভ্যাসের দাস; অভ্যাস স্বভাবে দাঁড়ায়; কোন মানুষ অভ্যাসের বশবর্তী হয়ে কোন কাজ করলে ব্যাঙ্গ করে এই উক্তি করা হয়; সমতুল্য- 'কুকুরের আড়াই পাক', 'বিড়ালের তিন পা' ইত্যাদি। |
অভ্যাস প্রথমে মাকড়সার জাল শেষে মোটা রশি- চীনা প্রবাদ | অভ্যাস শেষে প্রকৃতিতে পরিণত হয়। |
অভ্যাসহীন বিদ্যা বিষতুল্য | অধিতবিদ্যার চর্চা না হলে তার ফল নেই। |
অভ্যাসে সয় অনভ্যাসে নয় | অনায়াসে কিছু হয় না; অভ্যাসেও আয়াস লাগে। |
অভ্যুথানাং হি পতনায় | বৃদ্ধি হলে পতন হবে; বৃদ্ধি পতনের মূল কারণ। |
'অমানিশার অন্ধকারে অনুপস্থিত অসিত অশ্বডিম্বের অন্বেষণ' (অনুপ্রাস)- সৈয়দ মুজতবা আলী | নিস্ফল প্রচেষ্টা, যা হবার নয়।; সমতুল্য- 'অন্ধকার ঘরে অনুপস্থিত কালো বেড়াল খোঁজা'। |
অমাবস্যায় আর পূর্ণিমায় যেবা ধরে হাল তার দুঃখ থাকে চিরকাল; তার বলদের হয় বাত, ঘরেতে না থাকে ভাত- খনা | অমাবস্যায় আর পূর্ণিমায় হাল ধরতে নেই; যে ধরে তার ঘরে চিরকাল দুঃখ বাঁধা থাকে; বাতে বলদ কাবু হয়; নানা কারণে তার চাষ নিস্ফল হয়; ঘরে অন্নাভাব দেখা দেয়। |
অমাবস্যার প্রদীপ টিপটিপ করে | ঘোর অন্ধকারে প্রদীপের টিমটিমে আলো যেমন যথেষ্ট নয়, তেমনি ঘোর বিপদে মৌখিক সান্ত্বনাও যথেষ্ট নয়। |
অমৃত ও বিষ উভয়েরই আকর জিভ | জিভ থেকেই অমৃত উৎপন্ন হয়; বিষও উৎপন্ন। |
অমৃত যে কি পদার্থ, খেয়ে দেখি না জল | না-ব্যবহার-করা দ্রব্য নিয়ে কতই-না ভ্রান্তধারণা থাকে; ব্যবহারে ধরা পড়ে যে এদের অনেকগুলিই অতি সাধারণ ধরণের। |
অমৃতং বালভাষিতম | শিশুর কথা বড়ই শ্রুতিমধুর; তাদের অসংযত কথাবার্তাও কারও বিরক্তি উৎপাদন করে না। |
অমৃতং সুভাষিতম | সুবচন/সুভাষিত অমৃতসমান। |
অমোঘাঃ পশ্চিমা মেঘাঃ | পশ্চিমদিকে মেঘ হলে বৃষ্টি হবেই। |
অম্বল, কম্বল, ডম্বল তিন শীতের সম্বল | টক, কম্বল ও ব্য়াযাম তিন থাকলে শীত কাবু থাকে। |
অযথা বিপদের মধ্যে যাওয়া যুক্তিযুক্ত নয় | বিপদ এড়িয়ে চলা বুদ্ধিমানের কাজ। |
অয়ং নিজঃ পরো বেতি গণনা লঘু চেতসাম। উদারচরিতানাং ত বসুধৈব কুটুম্বম॥ (চাণক্য) | ইনি নিজের, উনি পরের এই জাতীয় বিচার নীচুপ্রকৃতির; উদারচরিত্রের কাছে সমগ্র বিশ্ব আত্মীয়স্বরূপ। |
অরগুণ নাই বরগুণ আছে (২৪ পরগণা) | কোন ভালগুণ নেই, শুধু মন্দগুণ আছে; দুঃখনাশের গুণ নেই, শুধু দুঃখবৃদ্ধির গুণ আছে; সমতুল্য- আরগুণ নাই ছারগুণ আছে (ঢাকা)। |
অরণ্যে রোদন করা | নিস্ফল প্রার্থনা করা; বৃথা কান্নাকাটি করা |
অরণ্যে শৃগালঃ ধূর্তং, পক্ষী ধূর্তং বায়সাঃ। নরানাং নাপিত ধূর্তং, দেব ধূর্তং নারদা। (চাণক্য) | বনে শিয়াল ধূর্ত; পাখীদের মধ্যে কাক ধূর্ত; মানুষের মধ্যে নাপিত ধূর্ত এবং দেবতাদের মধ্যে নারদ ধূর্ত। |
অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম | রসের কথা শুধু রসিককেই বলা যায়; অরসিককে বলা অর্থহীন; নির্গুণের কাছে গুণের কোন কদর নেই (অরসিকেষু রসস্য নিবেদনং শিরসি মা লিখ, মা লিখ, মা লিখি); সমতুল্য- উলুবনে/বেনাবনে মুক্তা ছড়ানো। |
অরাঁধুনির হাতে পড়ে কই/রুই মাছ কাঁদে; না জানি রাঁধুনি আমার কে্মন করে রাঁধে | রাঁধুনী ভাল না হলে কইমাছের ঝাল বা রুইমাছে কালিয়া বিস্বাদ হয়ে যায়; উত্তম বস্তু পেতে গেলে উপযুক্ত লোককে দায়িত্ব দিতে হবে। |
অরুচির অম্বল, শীতের কম্বল; বর্ষার ছাতি, ভটচায্যির পাঁতি (পুথি) | অরুচিতে অম্বল খুব কার্যকরী; শীতকালে কম্বল খুব প্রিয়; বর্ষাকালে ছাতা অবশ্য প্রয়োজনীয়; ব্রাহ্মণ বা পণ্ডিতের ক্রিয়াকর্মে পুথি অপরিহার্য) |
অর্থং অনর্থং ভাবয় নিত্যং | সবসময় ভাব অর্থই অনর্থের কারণ/মূল। |
অর্থ, অর্থ আনে/টানে | অর্থই সবকিছুর উৎস; সমতুল্য- 'টাকা টাকা বল ভাই টাকার মত জিনিষ নাই, টাকাবিনে সংসারেতে সব যন্ত্রণা'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অর্থই অনর্থের মূল'। |
অর্থ তোমার নয় আমার নয়, অর্থ প্রয়োজনের | কাজে না লাগলে সে অর্থ থাকা মূল্যহীন |
অর্থ থাকলে অভাবের অভাব হয় | অর্থশালীরা জানে না অভাবের জ্বালা কি। |
অর্থ নষ্ট, কিছুই নষ্ট নয়; স্বাস্থা নষ্ট, সামান্য নষ্ট; চরিত্র নষ্ট তো সব নষ্ট | চরিত্র হল মানুষের শ্রেষ্ঠ পরিচয়; চরিত্রের জোরে মানুষ সোজা দাঁড়ায়। |
অর্থ নিজেই শয়তানকে কিনতে পারে | অর্থের অপরিসীম শক্তি। |
অর্থবিনা জীবন যেমন বৃথা, অর্থসহ জীবন তেমনি সুখের নয়- ইহুদী প্রবাদ | অর্থ থাকা বা না-থাকা উভয়ই সমান, উভয়ই দুঃখের কারণ হয়। |
অর্থ যার মামলা/শক্তি তার | অর্থ সব যায়গায় আধিপত্য করে। |
অর্থই অনর্থের মূল | অর্থদ্বারাই যত রকমের হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়; |
অর্থতুরাণাং ন গুরুঃ ন বন্ধুঃ | অর্থলোলুপ ব্যক্তির গুরু বা বন্ধু কেউ নাই। |
অর্থনাশং মনস্তাপং গৃহে দুশ্চরিতানি চ। বঞ্চ নঞ্চাপমানঞ্চ মতিমান্ ন প্রকাশয়েৎ॥ (চাণক্য) | ধনক্ষয়, মনঃকষ্ট, ঘরের দুরাচার, বঞ্চনা ও অপমানের কথা প্রাজ্ঞ অন্যের কাছে ব্যক্ত করে না। |
অর্থস্য পুরুষো দাসঃ, দাসস্ত্বর্থো ন কস্যচিৎ | অর্থ কারো দাস নয় বরং পুরুষই অর্থের দাস। |
অর্থে যে সমস্যার সমাধান হয় সেটা সমস্যা নয়, সেটা পণ্যমুল্য- ইহুদী প্রবাদ | সমস্যার কেনাবেচা হয় না। |
অর্থেন সর্বৈ বশাঃ | অর্থদ্বারা সকলকেই বশ করা যায়। |
অর্থের অপ্রতুলতার জন্য সবাই অভিযোগ করে, বুদ্ধির অপ্রতুলতার জন্য কেউ অভিযোগ করে না- ইহুদী প্রবাদ | সবাই ভাবে সে বেশি বুদ্ধি ধরে, সুতরাং অভিযোগ জানানোর কোন প্রশ্নই নেই। |
অর্ধসত্য মিথ্যা অপেক্ষা ভয়ঙ্কর | আলো-আঁধারে ধাঁধা বেশি হয়। |
অর্ধো ঘটো ঘোষোমুপৈতি নুনম | কলস আধা পূর্ণ হলেই শব্দ করে; অল্পবিদ্যানেরা বেশি বিদ্যার জাহির করে। |
অলকার তিলক সার | অলকা-তিলকা বৃথাই গেল কাজে এলো না। |
অলক্ষ্মীর দ্বিগুণ ক্ষিদে | অলক্ষ্মীর একটাই কাজ- পড়ে পড়ে শুধু খাওয়া। |
অলক্ষ্মীর নিদ্রা বেশি, কাঙালের ক্ষুধা বেশি | অলক্ষ্মীরা শুধু পড়ে পড়ে ঘুমায়; কাঙাল শুধু খাওয়ার চিন্তা করে। |
অলভ্যের বাণিজ্যে কচকচিই সার | যে ব্যবসায়ে লাভ হয় না শেখানে ঝগড়া বিবাদ ছাড়া আর কিছু হয় না। |
অলম অতি বিস্তরেণ // অলমতি বিস্তরেণ | আর বেশি লেখার কিছু নেই; বাহুল্যে প্রয়োজন নেই। |
অলম ইতি বিস্তরেণ //অলমিতি বিস্তরেণ | অধিক কি লিখিব; এখানেই লেখা শেষ করছি। |
অলস ভেড়া ভাবে তার পশম বড় ভারী | অলস একটু ভারও বইতে নারাজ। |
অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা | কিছু করার না থাকলে অকাজ করার চিন্তা সবসময় মাথায় ঘুরঘুর করে, যত উদ্ভট চিন্তা মাথায় পাক খায়; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অলসতা মনে জং ধরায়'। |
অলসতা দারিদ্র ডেকে আনে | কাজ না করায় অন্ন জোটে না। |
অলসতা মনে জং ধরায় | চিন্তাভাবনা করার ইচ্ছা মনে জাগে না। |
অলসস্য কুতো বিদ্যা, অবিদ্যাস্য কুতো ধনম্। অধনস্য কুতো মিত্রম্, অমিত্রস্য কুতো সুখম্॥ (চাণক্য) | অলসের বিদ্যা কোথায়; অবিদ্যার ধন কোথায়; নির্ধনের বান্ধব কোথায় এবং নির্বান্ধবের সুখ কোথায়? |
অলসব্যক্তি বাকপটুতায় নিরলস | অলস ব্যক্তি বকে বেশি। |
অলসের অন্ন জোটে না | অলসের ভাগ্য অলসের মতই শুয়ে থাকে। |
অলসের অলব্ধ-লাভ হয় না | অলসের প্রাপ্তি শূন্য |
অল্প আগুনে গা গরম হয়; বেশি আগুনে ঘর পোড়ে // অল্প আগুনে শীত হরে, বেশি আগুন পুড়িয়ে মারে | সব বিষয়ে মাত্রাজ্ঞান থাকা দরকার। |
অল্পকথাতেই জ্ঞানীরা বোঝে | জ্ঞানীরা সারসংক্ষেপ পছন্দ করে। |
অল্প খেলে বেশি খাবে, বেশি খেলে অল্প খাবে | অল্প খেলে আয়ু বেশি দিন হয় ফলে বেশি দিন ধরে খাওয়া খায়। |
অল্পগর্জনে অতিবৃষ্টি // অল্পগর্জনে ভারীবর্ষণ | কাজের লোকেরা কম কথা বলে। |
অল্পজলে সফরি ফরফরায়তে // অল্পজলের তিতো পুঁটি, তার এত ছটফটি | অল্পবিদ্যার অধিকারীরাই বেশি বিদ্যা জাহির করে। |
অল্পজলে পুঁটিমাছ ফরফর করে; অগাধজলে কাৎলামাছ নিঃশব্দে সরে | অল্পজ্ঞানীদের অহঙ্কার বেশি হয় এবং সেই অহঙ্কারে কথাবার্তায় জাহির করে; জ্ঞানীরা নিঃশব্দে কাজ সারে। |
অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী | সামান্য বিদ্যা খুব ক্ষতিকর কারণ এতে অহংকার জন্মে অথচ প্রকৃত পাণ্ডিত্য লাভ হয় না। |
অল্পজ্ঞানীরা অহংকারী হয় | অল্প লেখাপড়া জানা ব্যক্তিরা অতিদর্প দেখায় |
অল্পবৃষ্টিতে কাদা, বেশিবৃষ্টিতে সাদা | অল্পজ্ঞানীর ভাবনাচিন্তা অসচ্ছ হয়; জ্ঞানীপুরুষের ভাবনাচিন্তা সচ্ছ হয়; অন্য-অর্থে শোকে অল্প কান্নায় শোক বৃদ্ধি পায়, কিন্তু টানা কান্নায় শোকের অনেকটা লাঘব হয়। |
অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর | অল্প শোকে মানুষ হা-হুতাশ করে, কিন্তু বেশি শোকে শোক প্রকাশের পথ না পেয়ে দুঃখী মূক, নিথর বা নিঃসাড় হয়ে যায়। |
অশুভস্য কালহরনম | অশুভ কাজে কালক্ষেপণ কর্তব্য। |
অশোচ্যা নির্ধনঃ প্রাজ্ঞোহশোচ্যঃ পণ্ডিতবান্ধবঃ। অশোচ্যা বিধাব নারী পুত্রপৌত্রপ্রতিষ্ঠাতা॥ (চাণক্য) | জ্ঞানী নির্ধন হলেও শোচনীয় নন, যে ব্যক্তির বন্ধু পণ্ডিত তিনিও শোচনীয় নন, পুত্রপৌত্রের দ্বারা পরিপালিতা বিধবা নারীও শোচনীয় নন। |
অশ্বত্থের ছায়াই ছায়া, মায়ের মায়াই মায়া | অশ্বত্থগাছ বিরাট ও বিশাল; তার ছায়া সুশীতল; আশ্রয় নিতে হলে অশ্বত্থগাছে মত মহতের কাছে নিতে হয়; মায়ের স্নেহ ও মমতারও কোন তুলনা হয় না; আসলের কাছেই আসল জিনিষ পাওয়া যায়। |
অশ্বডিম্ব | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
অশ্বতরী(=কাঁকড়া) গর্ভ ধরে আপন মরণে | ধারণা করা হয় যে গর্ভবতী অশ্বতরী সন্তানপ্রসবের সময় যন্ত্রণায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়; এ যেন ইচ্ছা করে বিপজ্জনক কাজে অগ্রসর হওয়া। |
অশ্বত্থামা হত ইতি গজ | সত্যের আড়ালে মিথ্যা কথন; সব কথা না বলে কিছু কথা গোপন করা; মহাভারতে যুধিষ্ঠিরের একবারমাত্র মিথ্যাভাষণের উল্লেখ আছে। |
অসংভাব্যং ন বক্তব্যং প্রত্যক্ষমপি দৃশ্যতে। ডশলা তরতি পানীয়ং গীতং গায়তি বানরঃ।। (চাণক্য) | পাথর জলে ভাসছে, বানর গান করছে- এইরকম অসম্ভব ঘটনা স্বচক্ষে ঘটতে দেখলেও বলা উচিত নয়। |
অসৎ আনন্দের চেয়ে পবিত্র বেদনা অনেক ভালো | কোন মন্দই ভালো নয়। |
অসৎ কাজের অসৎ পরিণতি হয়- জাপানী প্রবাদ | মন্দ কাজের ফল ভাল হতে পাড়ে না; সমতুল্য- 'যেমন কর্ম তেমন ফল'। |
অসৎ পথের আয় অসৎ পথেই যায় | অসৎ পথের আয়ের সঠিক ভোগ হয় না; সমতুল্য- 'উৎপাতের আয় চিৎপাতে যায়', 'পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়' ইত্যাদি। |
অসৎ সঙ্গ থেকে নিঃসঙ্গতা ভাল | দুর্জনের সংসর্গ কাম্য নয়; সমতুল্য- 'দুষ্ট গরু থেকে শূন্য গোয়াল ভাল'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভালো'। |
অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ | সঙ্গদোষে মানুষ নষ্ট হয়। |
অসতী নারী, ফুটো হাঁড়ি ও ভগ্নপ্রায় বাড়ী পরিত্যজ্য | তিনই বিপদ ডেকে আনতে পারে। |
অসতো মা সদ্গময় তমসো মা জ্যোতির্গময় মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়- উপনিষদ | আমাকে নিয়ে চলো অসত্য থেকে সত্যে, অন্ধকার থেকে আলোকে, মৃত্যু থেকে অমৃতে। |
অসত্য ও ছলনার মাধ্যমে লাভবান হওয়া থেকে সত্য ও সঠিক পথে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভাল- ইহুদী প্রবাদ | অসৎ পথে লাভবান হওয়া ন্যায়ের পথ নয়। |
অসন্তুষ্টা দ্বিজা নষ্টা | দ্বিজ অসন্তুষ্ট হলে বিনষ্ট হয়। |
অসময়ের দিনগুলি দীর্ঘতর হয় | অসময়ের দিনগুলি কাটতেই চায় না। |
অসময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু | দুর্বিপাক বন্ধুত্ব বিচারের কষ্টিপাথর |
অসময়ে সকলি সই, শোনরে দুঃখ তোরে কই | দুর্ভাগ্যের সব ফের গা-সহা হয়ে গেছে। |
অসম্ভব কোন কাজ বলা সহজ করা কঠিন | বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা বলা সহজ, করা কঠিন। |
অসম্ভবের পিছনে ছোটো না | যা হয় না তা পাওয়ার চেষ্ঠা করা বৃথা। |
অসম্মানীয় ব্যক্তি অপরকে অসম্মান করে | যার সম্মানবোধ নেই সে কাউকে সম্মান করতে জানে না |
অসহ্যং জ্ঞাতিদুর্ব্বাক্যং মেঘান্তরিত রৌদ্রবৎ | জ্ঞাতিজনের দুর্বাক্য মেঘবিহীন আকাশের রৌদ্রতাপের মতই অসহ্য। |
অসাধারণ জ্ঞানীরা অবোধ বলে প্রতিভাত হয়- চীনা প্রবাদ | অতিজ্ঞানীদের কাণ্ডজ্ঞান কম হয়। |
অসার সংসারে সার শ্বশুরের ঘর | কৌতুকে- জামাই আদরের কথা বলা হয়েছে |
অসারে খলু সংসারে সারমেতচ্চতুষ্টয়ম। কাশ্যাংবাসঃ সতাং সঙ্গো গঙ্গাম্ভ শিবপূজনম।। | অসার এই সংসারে মাত্র আরটি সার বস্রু আছে- কাশীবাস, সাধুজনের সঙ্গলাভ, গঙ্গাজল ও শিবপূজা। |
অসারের তর্জন গর্জন সার১ | গুণহীন অক্ষম ব্যক্তিরা বৃথা আস্ফালন করে; গুণহীন নয় প্রমাণের বৃথা চেষ্টা |
অসারের তর্জন গর্জন সার২ | ক্ষমতাহীন ব্যক্তি সাধারণতঃ আস্ফালন বেশী করে; আসলে অনেক ক্ষমতা ধরে বোঝানোর ব্যর্থ প্রয়াস; সমতুল্য- 'ফাঁকা কলসি বাজে বেশি','ফোঁপরা ঢেঁকির চোপর বেশি' ইত্যাদি। |
অসি থেকে মসী বড় | পেশীর জোর থেকে বুদ্ধির জোর বেশি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'কথার চেয়ে কাজের গলার জোর বেশি'। |
অস্তি নাস্তি না জানন্তি দেহি দেহি পুনঃপুনঃ | আছে কি নেই ভাবে না, কেবল বলে দাও দাও; প্রবাদটি অতিথি শিশু ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। |
অস্তি পুত্রো বশে যস্য ভৃত্যোভার্যা তথৈব চ। অভাবে সতি সন্তোষঃ স্বর্গস্থোহসৌ মহীতলে॥ (চাণক্য) | যাঁর পুত্র, ভৃত্য, স্ত্রী বশে আছে, অভাবের মধ্যেও যিনি প্রসন্ন থাকেন- তিনি পৃথিবীতে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে স্বর্গে আছেন। (স্বর্গসুখ ভোগের অধিকারী কে?) |
অস্থানে তুলসী, অপাত্রে রূপসী | অপবিত্র জায়গায় তুলসীগাছ মানানসই নয়। তেমনি কোন সুন্দরী নারীর অযোগ্য/অসুন্দর বরের সাথে বিয়ে হলে তা মানানসই নয়; উৎকৃষ্ট বিষয়ের অপব্যবহার; সমতুল্য- বানরের গলায় মুক্তোর মালা |
অস্থির চিত্ত প্রতিষ্ঠা পায় না | মন শান্ত না হলে কোন কাজ হয় না। |
অস্থির পতঙ্গ আগুনে পোড়ে // অস্থির পোকা জালে পড়ে // অস্থির বাঘ জালে পড়ে | অস্থিরচিত্তের প্রতিষ্ঠা নেই; অস্থির মন নানাদিক থেকে বিপদে পড়ে। |
অস্থির মধ্যে যা পুষ্ট তা মাংস ভেদ করে বাইরে আসে না- আরবী প্রবাদ | সযত্নে লালিত বিষয় নষ্ট হয় না। |
অহংকারীরা অল্পজ্ঞানী হয় | অল্পজ্ঞানীরা বিনয় কি বস্তু জানে না। |
অহংকারে গদগদ, মাটিতে পড়ে না পদ | অহংকারীরা সাধারণ মানুষকে মানুষ বলে গ্রাহ্য করে না। |
অহংকার পতনের মূল // অহঙ্কার পতন ডেকে আনে | অহঙ্কারে পতন অনিবার্য। |
অহংকারে পথ দেখতে পায় না | অহংকারীর বিচারশক্তি থাকে না। |
অহন্যহনি ভূতানি গচ্ছন্তি যমমন্দিরম। শেষা স্থিরত্বমিচ্ছন্তি কিমাশ্চর্যমতঃপরম। (গীতা) | প্রতিদিন মানুষ যমালয়ে যাচ্ছে দেখেও অবশিষ্টরা ভাবে তাদের মৃত্যু হবে না; এর থেকে আশ্চর্যের আর কি হ'তে পারে? |
অহিংসা পরমো ধর্মঃ | দয়াই শ্রেষ্ঠ ধর্ম; কারো হিংসা না করা বা অনিষ্ট না করাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। |
অহিতে বিপরীত | খারাপ হতে গিয়ে ভালো হয়ে গেল; দুর্ভাগ্য অনেক স্থলে সৌভাগ্যের কারণ হয; সমতুল্য- 'শাপে বর'; বিপরীত উক্তি- 'হিতে বিপরীত'। |
আ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
আঁখ কে অন্ধে গাঁট কে পুরে- হিন্দী প্রবাদ | মুর্খ ধনবান, টাকার বেলায় টনটনে জ্ঞান। |
আঁখ কে অন্ধে নাম নয়নসুখ- হিন্দী প্রবাদ | গুণহীনকে গুণবান করা; সমতুল্য- কানাছেলের নাম পদ্মলোচন', 'কালো ছেলের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর' ইত্যাদি। |
আঁচ আছে, আগুন নাই | শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। |
আঁটকুড়ের ব্যাটা | নিঃসন্তানের সন্তান অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না- গালিবিশেষ; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
আঁটকুড়েরা মানুষ নয়-ইহুদী প্রবাদ | নিঃসন্তানের বাৎসল্যবোধ থাকে না। |
আঁটাআঁটি হলেই লাঠালাঠি হয় | মন কষাকষি হলেই ঝগড়াঝাটিতে পরিণত হয়। |
আঁটি চোষা | পদার্থের সার অংশ থেকে বঞ্চিত হওয়া। |
আঁটুনি কসুনি সার | কেবল সরগরম করা; কাজের কিছুই নয়। |
আঁত পাওয়া ভার | মনোভাব বোঝা কঠিন; বড় চাপা স্বভাবের লোক। |
আঁতে ঘা দেওয়া | অন্তরে আঘাত দেওয়া; মর্মপীড়া দেওয়া। |
আঁতে খালি, দাঁতে নূন, পেটের ভরে তিন কোণ; দুই সন্ধে বাহ্যে যায়, তার কড়ি কি বদ্যি খায় | যে পেট পরিস্কার রাখে, নূন দিয়ে দাঁত মাজে, পেটের এক-চতুর্থাংশ খালি রেখে খাবার খায় তাকে বদ্যি ডাকতে হয় না। |
আঁধার ঘরের মাণিক | পরম আদরের সন্তান। |
আঁস্তাকুড়ের পাত কখনো স্বর্গে যায় না | মন্দব্যক্তি ভালসঙ্গ পায় না। |
আইতেও একা, যাইতেও একা, কার সঙ্গে বা কার দেখা | কেউ কারো নয়; কেউ কারো সঙ্গে আসে না, কাউকেও সঙ্গে নিয়েও যায় না। |
আইতে ছাগল, যাইতে পাগল | দেরী সয় না, তড়বড়ে। |
আইতে শাল যাইতে শাল তার নাম বরিশাল | বরিশালের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত শালতি ছাড়া সম্ভব নয়। |
আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো | আইনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে অবৈধ কাজ করে যাওয়া। |
আইবুড়ো নাম ঘোচানো/খণ্ডানো | বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া সত্বেও বিবাহিত/বিবাহিতা হওয়া |
আউশ ধানের চাষ লাগে তিন মাস- খনা | রোপণের তিন মাসের মধ্যে আউশ ধান ঘরে তোলা হয়। |
আওয়াজওয়ালা বিড়াল ইঁদুর ধরে না- জাপানী প্রবাদ | ধীর স্থির না হলে কাজে সাফল্য আসে না; সমতুল্য- 'চিল্লানে কুকুর কামড়ায় না'। |
আওলে (অস্থির) বাঘ জালে পড়ে | চঞ্চল মন নানা সমস্যায় জড়ায়। |
আকন্দে যদি মধু পাই তবে কেন পর্বতে যাই | কেউ কষ্ট স্বীকার করে না। |
আকস্মিক প্রাপ্তি কাকতালীয়, দৈব ঘটনা নয় | বিধি পুরুষাকারের জন্য অপেক্ষা করে। |
আকাটা নায়ের সাজ বেশি | নৌকা তৈরী হওয়ার আগেই সাজসঞ্জাম প্রস্তুত; রামের আগে রামায়ণ; বেশি বাড়াবাড়ি। |
আকামের মাঝু, কদু কুটনের যম। | অকর্মা বউ লাউ কুটতে খুব ওস্তাদ। |
আকালে কিনা খায়, পাগলে কি না বলে | আকালে সবাই সবকিছু খায়; পাগলেও না বুঝে বাচ্য অবাচ্য বলে; অজ্ঞানের কথাবার্তা না ধরাই ভালো। |
আকালে কিনা খায়, বিবাদে কিনা যায় | দুর্ভিক্ষে খাবারের বাছবিচার চলে না; ঝগড়াবিবাদে জড়ালে অর্থ, সুখ, শান্তি সবই নষ্ট হয়। |
আকাঙ্ক্ষার কোন শেষ/সীমা নাই | চাওয়ার কোন শেষ নেই; একটা মিটলে আরেকটা এসে উপস্থিত হয়। |
আকাশকুসুম কল্পনা/চিন্তা | যে চিন্তা কোনদিন বাস্তবায়িত হবে না,অসম্ভব ব্যাপার যা হবার নয়; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
আকাশপাতাল চিন্তা | নানারকমের দুশ্চিন্তা। |
আকাশে থুতু ফেললে নিজের গায়ে পড়ে // আকাশে ধূলো ছোঁড়ে, আপন চোখে এসে পড়ে | আত্মীয়স্বজনের নিন্দা করলে নিজেরই নিন্দা করা হয়; বোকার মত কাজ করলে নিজের ক্ষতি হয়। |
আকাশে ফাঁদ পেতে চাঁদ ধরতে চায় // আকাশে ফাঁদ পেতে বনের পাখি ধরতে চায় | দূরাশায় বসে থাকা; যে হয় না তার বৃথা চেষ্টা; বৃথা চেষ্টা থেকে কোন ফললাভ হয় না। |
আকাশে যত ঝড় ওঠে, গোয়ালে তত গরু ছোটে | পূর্ব বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা থেকে বিপদের আশঙ্কা। |
আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া | দুর্লভ বস্তু হাতে পাওয়া। |
আকাশের নীচে কিছুই অসম্ভব নয় | বাস্তব ঘটনা অনেকসময় কল্পনাকেও হার মানায়। |
আকৃতি থেকে প্রকৃতি/আচরণ ভালো | রূপ থেকে গুণের কদর বেশি; সুন্দর কাজের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। |
আক্কেল গুড়ুম | ভয়ে বা বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে যাওয়া। |
আক্কেল দাঁত না গজানো | বুদ্ধিবিবেচনা/কান্ডজ্ঞান না হওয়া, পরিণত বয়সে অপরিণত বুদ্ধির পরিচয় দেওয়া। |
আক্কেল সেলামি | নির্বুদ্ধিতার দণ্ডদান; ঝকমারির মাসুল। |
আক্কেলে সকল বন্দী, জালে বন্দী মাছ; স্ত্রীর কাছে পুরুষ বন্দী, ছালে বন্দী গাছ | কেউ স্বাধীন নয়; জন্মের পরমুহূর্ত থেকে সবাই কোথাও-না-কোথায় বন্দী অবস্থায় থাকে। |
আক্রমণই প্রতিরোধের প্রকৃষ্ট উপায় | প্রতিপক্ষকে অপ্রস্তুত অবস্থায় পাওয়া যায়। |
আখ আর ষর্ষে না পিষলে রস কিসে? | রস পেতে হলে রসেভরা জিনিষ কচলাতে হয়; রসিকমনের কাছে গেলে রসের খোঁজ পাওয়া যায়। |
আগাছা ছাড়া বাগান হয় না | দোষেগুণে মানুষ; সংসারে ভালোমন্দ মিশিয়ে মানুষ আছে। |
আগাছার বাড় বেশি, ফল কম | জগতে অপ্রয়োজনীয় বস্তুর প্রাচুর্য বেশি হয়; বিনা পরিশ্রমে যেমন প্রয়োজনীয় বস্তু পাওয়া যায় না তেমনি বিনা পরিচর্যায় যোগ্যমানুষ হয় না; সমতুল্য- 'ধান একগুণ ঘাস শতগুণ','ঠগ বাচতে গাঁ উজাড়' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- আগাছা ছাড়া বাগান হয় না; আগাছে ফল বেশী ইত্যাদি। |
আগামীকাল কখনো আসে না | ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত; আজকের জন্য বাঁচো আগামীকাল কখনো আসবে না আগামীকাল করব বললে কোন কাজ ফেলে রাখা উচিত নয়। |
আগামীকাল জন্মায় নি, গতকাল মৃত, আজই সত্য | আজ খাওদাও আনন্দ কর, আগামীকাল আমরা সবাই মরব। |
আগামীকাল নিজের যত্ন নেবে- আরবী প্রবাদ | আগামীকালের জন্য আগাম ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। |
আগামীকাল নিয়ে চিন্তা করা মানেই আজকে অসুখী হওয়া | আগাম দুশ্চিন্তা করে অনর্থক স্বাস্থ্যহানি করার প্রয়োজন নেই। |
আগামীকাল সর্বদাই আছে- আরবী প্রবাদ | আগামীকালের জন্য আগাম ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। |
আগামীকালের একটি হাঁস থেকে আজকের একটি ডিম বেশি দামী | আগামী কাল থেকে আজকের দাম অনেক বেশি; আগামীকাল অনিশ্চয়তায় ভরা; সমতুল্য- 'নগদ যা পাও হাত পেতে নাও বাকীর খাতায় শূন্য থাক, দুরের বাদ্য লাভ কি শুনে মাঝখানেতে বেজায় ফাঁক'- খৈয়াম। |
আগামীকালের জন্য অজ্ঞানে অপেক্ষা করে; জ্ঞানী আজরাত্রের মধ্যেই কাজ শেষ করে | জ্ঞানীরা অনিশ্চিতের মধ্যে থাকে না; বিপরীত উক্তি- জ্ঞানীরা বলে 'সবুরে মেওয়া ফলে'। |
আগুন কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না // আগুন চাপা থাকে না // আগুন ছাইচাপা থাকে না | গুণ বা সত্য গোপন করা যায় না; পাপ কখনো ঢাকা থাকে না। |
আগুন দিয়ে আগুন তাড়ানো যায়/নেভে না | শত্রুতা করে শত্রুনাশ হয় না, প্রেমে হয়। |
আগুন না থাকলে ধোঁয়া হয় না | কার্যের পিছনে কারণ থাকে, অকারণে কিছু হয় না; অকারণে গাছের একটি পাতাও নড়ে না। |
আগুন নিয়ে খেলা | বিপজ্জনক বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া করা। |
আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয় | অবিমিশ্র সুখ হয় না;জীবনের সব ক্ষেত্রেই কিছু অর্জন করতে হলে, কিছু ঝামেলা সহ্য করতে হয়; সমতুল্য- 'কষ্টবিনা কেষ্ট নাই', গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয়', 'ন সুখং দুঃখৈর্বিনা লভ্যতে'। |
আগুনে ঘি ঢালা | উত্তেজনা/রাগ বৃদ্ধি করা। |
আগুনে পুড়ে সোনা/সীতা খাঁটি | জীবনযন্ত্রণায় না পুড়লে মানুষ খাঁটি হয় না। |
আগুনে হাত দিলে ইচ্ছাতেও পোড়ে, অনিচ্ছাতেও পোড়ে | আগুনের কোন বাছবিচার নেই; বিপদকে আহ্বান করলে বিপদ এসে জড়িয়ে ধরে। |
আগুনের কাছে ঘি গাঢ় থাকে না | আগুনের কাছে ঘি থাকলে গলবেই; প্রবলের সাথে দুর্বল পেরে ওঠে না; ঘি নারীসম; আগুন পুরুষসম; পুরুষের সামনে নারী স্থির থাকে না। |
আগুয়ান ঘটনা সামনে তার ছায়া ফেলে- চীনা প্রবাদ | কি ঘটতে চলেছে আগেভাগেই অনুমান করা যায়। |
আগে আপন পরে পর, আপন সামালে পরকে ধর // আগে আপন সামাল কর পরে গিয়ে পরকে ধর১ | পরের দোষ না দেখে আগে নিজের দোষ খোঁজ; পরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হ'তে পারে; বিরুদ্ধ উক্তি- আপন চেয়ে পর ভাল, পর চেয়ে জঙ্গল ভাল। |
আগে আপন পরে পর, আপন সামালে পরকে ধর // আগে আপন সামাল কর পরে গিয়ে পরকে ধর২ | নিজে ভাল না থাকলে পরের ভালো করা যায় না; বৈদ্য আগে নিজেকে সামলায় পরে পরকে সামলায়। |
আগে আমি, পরে বাপ | আগে নিজের স্বার্থ সামলে পরে অপরের স্বার্থ সামলানো; সমতুল্য- 'আপনি বাঁচলে বাপের নাম'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও, তার মত সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও'। |
আগে উপযুক্ত হও, পরে আকাঙ্ক্ষা কর | কিছু চাইলে আগে পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন কর। |
আগে কড়ি পিছে কাজ | মাগনায় কিছু হয় না; নগদ দাম দাও, তবে জিনিষ দেব; সমতুল্য- 'ফেলো কড়ি মাখো তেল, তুমি কি আমার পর'। |
আগে কাজ, পিছে আরাম/বাত // আগে লাথ পিছে বাত- হিন্দি প্রবাদ | কাজের দাবী সর্বাগ্রে, কাজ ফেলে অকাজ করা নেই |
আগে কুঁয়া, পিছে খাই (খাল)- হিন্দি প্রবাদ | উভয়সঙ্কট, দুদিকেই বিপদ; কোন নিস্তার নেই; সমতুল্য-'জলে কুমীর, ডাঙায় বাঘ', 'এগুলে রাবণ, পিছুলে রাম' ইত্যাদি। |
আগে গেলে বাঘে খায়, পাছে গেলে টাকা/সোনা পায় | তাড়াতাড়ি করা নেই, তাতে ভুল হয়; কার্যসিদ্ধির জন্য সময় লাগে; সমতুল্য-'বিলম্বে কার্যসিদ্ধি', 'যে সয় সে রয়', 'সবুরে মেওয়া ফলে','সয়ে গেলে রয়ে যায় ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি-'আগের/ভোরের পাখি পোকা/মাছি ধরে' ইত্যাদি। |
আগে গেলেও দোষ, পাছে গেলেও দোষ | উভয়সঙ্কট; ভাগ্য বিরূপ হলে সব কাজই বিফল হবে। |
আগে গেলেও নির্বংশের ব্যাটা পাছে গেলেও নির্বংশের ব্যাটা // আগে গেলেও ভেড়ের ভেড়ে, পাছে গেলেও ভেড়ের ভেড়ে | এমন এক অবস্থা যেখানে নিন্দাছাড়া সাধুবাদ নাই; দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। |
আগে ঘর পরে পর, ঘর সামলে পরকে ধর | খয়রাত ঘর থেকে শুরু হয়; প্রবাদটিতে স্বার্থে গন্ধ আছে; সমতুল্য- 'আত্ম রেখে ধর্ম তবে পিতৃকর্ম','আপনি বাঁচলে বাপের নাম', 'চাচা আপন প্রাণ বাঁচা' ইত্যাদি। |
আগে জামাই কাঁঠাল খান না, শেষে জামাই ভোঁতাও পান না | আহাম্মকের বাঁকাবুদ্ধি। |
আগে তিতা, শেষে মিঠা | স্বাস্থ্যের কারণে বৈদ্যের বিধান। |
আগে দর্শনদারী পরে গুণ বিচারী | বাহ্যিক সৌন্দর্যই প্রথম আকর্ষণ করে; সমতুল্য- 'যো দেখতা হ্যায় উয়ো বিক্তা হায়', 'ঠাট-ঠমকে বিকোয় ঘোড়া' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশি', 'শুধু দেখনাই ভাল হলেই চলে না গুণ থাকা চাই ইত্যাদি। |
আগে দুখ পরে সুখ | তাতে মানসিক শান্তি বেশি হয়। |
আগে দেখো, পরে লাফাও | বিপদের কথা চিন্তা না করে কোন সিদ্ধান্ত নিও না; বিবেচক এক পা দেখে এক পা রাখে। |
আগে না বুঝিলে বাছা যৌবনের ভরে, পশ্চাতে কাঁদিতে হবে নয়নের ঝোরে | যৌবনের অহঙ্কারে ভালমন্দ বিচার না করে কাজ না করলে বৃদ্ধবয়সে পস্তাতে হবে; সময় থাকতে সাবধান; ভুল করলে শেষে আফশোস করতে হবে এবং কেঁদে কূল পাবে না; সমতুল্য- 'যৌবনে অন্যায় ব্যয়ে বয়সে কাঙালি', 'যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি'। (মিতব্যয়িতার পরটি উপদেশ) |
আগে নিজেকে সংশোধন কর, পরে অপরের সংশোধন করবে- ইহুদী প্রবাদ | নিজে ভালো না হলে পরের ভাল করা যায় না। |
আগে পাজি, পরে কাজী, পরে হাজী, শেষে গাজী | শুরুতে দুস্কৃতি, পরে সুবুদ্ধিসম্পন্ন, পরে ধর্মভীরু, শেষে ধর্মব্যবসায়ী-শুরু যেখানে শেষ সেখানে। |
আগে পিঠে দড় তবে ঘোড়ার পিঠে চড় | শক্তি ও সামর্থ থাকলে তবেই কঠিন কাজে হাত দেওয়া উচিৎ। |
আগে ফাঁসি পরে বিচার | উদ্ভট কার্যকলাপ; উল্টোপুরাণ। |
আগে ভাল ছিল জেলে জালদড়া বুনে, কি কাজ করিল জেলে এঁড়ে গরু কিনে | বেশি লোভ করলে ফল খারাপ হয়; অভ্যস্ত কাজ ছেড়ে অনভ্যস্ত কাজে হাত দিলে ফল ভালো হয় না। |
আগে রামনাম, পরে সবকাম | দুর্বলচিত্তের লোক ভগবানের নাম নিয়ে সবকাজ শুরু করে। |
আগে রাহ বাতায়ে পাছে গোঁতা- হিন্দি প্রবাদ | প্রথমে পথ দেখায় পরে ধাক্কা মারে; সমতুল্য- গাছে তুলে মই কেড়ে নেয়। |
আগে সামলা ধাক্কা, পরে যাবি মক্কা | আগেতো বাঁচো; পরে ভগবানের নাম করা যাবে। |
আগে হলাম আমি, পিছে হল মা; হাসতে হাসতে দাদা হলো, বাবা হলো না | অর্থহীন হেঁয়ালি; অসংলগ্ন কথাবার্তা; কথার কোন মাথামুণ্ড নেই; পাগলের প্রলাপ। |
আগে হাঁটে, পাঁঠা কাটে, প্রদীপ উস্কোয়, দই বাঁটে; ভাণ্ডারী, কাণ্ডারী, রাঁধুনী বামুন, যশ পায় না এই সাতজন | এই কাজের লোকেরা ঠিকঠাক কাজ করলে প্রশংসা পায় না; কিন্তু একটু ভুল হলেই নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। |
আগের চেয়ে দেরী ভালো | ভালো কাজ হলে ভেবেচিন্তে দেরীতে করাই ভালো। |
আগের পাখি পোকা/মাছি ধরে | সামনের লোকের সুযোগ সদব্যবহারের সম্ভাবনা বেশি থাকে; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আগে গেলে বাঘে খায়, পাছে গেলে সোনা পায়', 'বিলম্বে কার্যসিদ্ধি', 'যে সয় সে রয়', 'সবুরে মেওয়া ফলে', 'সয়ে গেলে রয়ে যায় ইত্যাদি। |
আগের লাঙল/হাল যে দিকে যায় পাছের লাঙল/হাল সে দিকে যায় | অন্ধভাবে অন্যের অনুকরণ করা। |
আগ্রার মানুষ তাজমহল দেখে না | সহজলভ্য জিনিসের আকর্ষণ বা মূল্য নেই;সমতুল্য- 'কালিঘাটের মানুষের কালীদর্শন হয় না','গির্জার পাশের মানুষ গির্জায় যায় না','মক্কার মানুষ হজ্জ পায় না','যত মন্দির কাছে তত ঈশ্বর থেকে দূরে' ইত্যাদি। |
আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য-'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়','ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
আঙুর ফল টক | অলভ্য জিনিষ মন্দ; সমতুল্য-'কর্তা পান না তাই খান না'। |
আঙুল ঘুরিয়ে পাঁচিল দেওয়া | বাঁকাপথে কাজ করা। |
আঙুল ফুলে কলাগাছ | অবৈধ পথে দ্রুত উন্নতি লাভ; হঠাৎ বিত্তশালী। |
আচার ভ্রষ্ট, সদা কষ্ট | অনুশাসন না মানলে জীবনে ভোগান্তি আছে। |
আচারে বাড়া, বিচারে এড়া | আচারসর্বস্ব ব্যক্তি, যে যুক্তির ধার ধারে না। |
আচারে লক্ষ্মী, বিচারে পণ্ডিত | সর্ব্যবগুণসম্পন্ন/সম্পন্না। |
আছে কাজ তাই সকালসকাল সাজ | কাজ থাকলে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। |
আছে গরু না পায় হালে, দুঃখ না ছাড়ে কোন কালে- খনা | গরু আছে অথচ চাষ করে না, তার অভাব কখনই যাবে না; পরিশ্রমবিনা সৌভাগ্য আসেনা। |
আছে যথেষ্ট, নেই অদৃষ্ট | ভাগ্য না থাকলে ভোগ হয় না। |
আজ আমীর/বাদশা কাল ফকির // আজ রাজা কাল ভিখারী, ফুটানি করে দিন দুচারি // আজ যে রাজা কাল সে ফকির | সবদিন কারো সমান যায় না; সমতুল্য- 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুখানি চ সুখানি চ', 'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়' ইত্যাদ। |
আজ খায় না রাগে, কাল সবার আগে | ঠাণ্ডা মাথায় বুদ্ধি খোলে। |
আজ বুঝলি না বুঝবি কাল, বুক চাপড়াবি পাড়বি গাল | সময়ের কাজ সময়ে না করলে উল্টো বিপত্তি হতে পারে। |
আজ মরলে কাল দুদিন হবে | দুঃসহ জীবনযন্ত্রণা। |
আজ মুচি কাল শুচি | ভাগ্য পরিবর্তিত হয়। |
আজই সত্য, আগামীকাল কখনো আসে না | আজকের কথা আজ ভাব, কালকের কথা কাল হবে। |
আজগাম যদা লক্ষ্মীর্নারিকেলফলাম্বুবৎ। নির্জগাম যদা লক্ষ্মীর্গজভুক্তকপিত্থবৎ।। | নারিকেলের মধ্যে জল যেমন সঞ্চারিত হয় লক্ষ্মী সেভাবে আসেন; গজকীটভুক্ত হয়ে কয়েৎবেল নিঃসারিত হয়, লক্ষ্মী সেভাবে যান। |
আটে কাটে/পিঠে দড় ত ঘোড়ার পিঠে চড় | দক্ষতা ও নৈপুণ্য থাকলে বা চৌকশ হলে পরেই দুরূহ কাজ করতে যাওয়া উচিত। |
আঠারো মাসে বছর ফুরায় | অতিশয় দীর্ঘসূত্রতা; সমতুল্য- 'বত্রিশ দিনে মাস ফুরায়'। |
আড়া কাজ বাড়া | মাত্রাতিরিক্ত অস্বাচ্ছন্দের কাজ (আড়া কাজ বাড়া করে ফেলেছি তাই কোন কাজই ঠিকঠাক হল না। |
আড়াই আঙ্গুল দড়ি, সৃষ্টি জুড়ে বেড়ি | অল্প আয়োজনে সব প্রয়োজন মেটাবার আপ্রাণ চেষ্টা; সামান্য উপায়ে বিশাল কাজ সম্পাদনের চেষ্টা। |
আড়াই কড়ার কাসুন্দি, হাজার কাকের গোল | অল্প পরিমাণ দ্রব্য পাওয়ার জন্য অনেক দাবীদার; ফলে সকলের মধ্যে কাড়াকাড়ি। |
আড়াই দিনের বাদশাহী | অল্পদিনের ফুটফুটানি। |
আড়ে নাই অসাড়ে (=অসার) | দৈর্ঘ্যে নাই প্রস্থেও নাই; কাজে নেই, অকাজে বেশি। |
আতি চোর,পাতি চোর, হ’তে হ’তে সিঁদেল চোর | ক্রমশঃ দাগী আসামীতে পরিণত; সামান্য অপরাধ করতে করতে শেষে বিরাট অপরাধ করে ফেলে। |
আতুরে নিয়ম নাস্তি | প্রয়োজন নিয়মের অধীন নয় |
আতুরে নিয়ম নাস্তি বালে বৃদ্ধে তথৈবচ। কুলাচাররতে চৈব এষ ধর্ম সনাতনঃ।। (চাণক্য ) | অসুস্থ অবস্থায় নিয়ম পালনের প্রয়োজন নেই; শিশু ও বৃদ্ধরা নিয়মের অধীন নয়; যাঁরা কুলাচারনিষ্ঠ তাঁদেরও নিয়ম না মানলে চলে; এটাই সনাতন ধর্ম। |
আত্ম রেখে ধর্ম, তবে পিতৃকর্ম | আগে নিজে বাঁচো অপরের কথা পরে ভাবা যাবে; স্বার্থপরের উক্তি। |
আত্মচ্ছিদ্রং ন জানাতি পরচ্ছিদ্রানুসারিণঃ // আত্মচ্ছিদ্রং ন জানাতি পরচ্ছিদ্রং পদেপদে | নিজের দোষ দেখে না পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়। |
আত্মতুষ্টি সঙ্কীর্ণ মনের পরিচয় | কূপমণ্ডুক সঙ্কীর্ণমনা হয়। |
আত্মনং বিদ্ধি | নিজেকে জানাই প্রথম কাজ। |
আত্মনং সততং রক্ষেৎ | (যেকোন মূল্যে) নিজেকে সর্বদা রক্ষা করবে। |
আত্মবৎ সর্বভূতেষু য পশ্যতি সে পণ্ডিত- চাণক্য | যিনি সকল প্রাণীকে আত্মসম বিবেচনা করেন তিনি পণ্ডিত। |
আত্মবন্মন্যতে জগৎ | যে যে রকম যে জগতকে সেরকম ভাবে। |
আত্মমাতা, গুরোঃপত্নী, ব্রাহ্মণী, রাজপত্নিকা। ধেনুর্ধাত্রী তথা পৃথ্বী সপ্তৈতে মাতরঃস্মৃতাঃ।। (চাণক্য) | নিজমাতা, গুরুপত্নী, ব্রাহ্মণী, রাজপত্নী, গাভী, ধাতৃমাতা ও পৃথ্বী- এই সাতজন মাতার স্বীকৃতি পান (সপ্তমাতা কারা?) |
আত্মারাম খাঁচাছাড়া | প্রচণ্ড ভয়ে বিবর্ণ/প্রাণপাখি উড়ে গেছে। |
আত্মার্থে পৃথিবীং ত্যজেৎ | আত্ম রক্ষার্থে পার্থিব সবকিছু পরিত্যাগ করবে। |
আদব শেখো বেয়াদবের কাছে | বেয়াদব যা করে তার উল্টোটাই হল আদবকায়দা। |
আদম ছিলেন প্রথম ভাগ্যবান ব্যক্তি যার শাশুড়ি ছিল না- ইহুদি প্রবাদ | দজ্জাল শাশুড়িদের প্রতি বক্রোক্তি। |
আদরে বাঁদর বনে | প্রশ্রয়ে চরিত্রগুণ নষ্ট হয়। |
আদরের ভোজন কি করে ব্যঞ্জন // আদরের ডাল-ভাতও ভাল, বিনা আদরের ঘি-ভাতও ভাল না | প্রীতিভরে খাওয়ালে প্রীতিতেই পেট ভরে যায়, ব্যঞ্জনে নজর থাকে না;সমতুল্য- 'বড়লোকের ভুরিভোজ থেকে গরীবের শাকান্ন ভাল', 'রাজার ভুরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্ন ভাল' ইত্যাদি। |
আদা ওষুধের আধা | আদা অর্ধেক রোগ ভালো করে। |
আদা জল খেয়ে লাগা | উঠেপড়ে লাগা; কার্যসিদ্ধির জন্য একমনে প্রাণপণ চেষ্টা করা। |
আদা ঝালের গাদা | গুণহীন পুরুষের রাগ-ঝাল বেশী। |
আদা শুকালেও ঝাল যায় না | দুষ্ট, সুষ্ট হয় না; দুষ্টলোক দমিত হলেও দুষ্টবুদ্ধি ছাড়ে না; সমতুল্য- 'আদা শুকালেও ঝাল যায়না', 'কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না', 'মূলো খেলে মূলোর ঢেঁকুর ওঠে', 'রসুন ধুলেও গন্ধ যায় না 'স্বভাব যায় না মলে' ইত্যাদি। |
আদাড়গাঁয়ে/বনে শিয়াল রাজা | বুনোগাঁয়ে শিয়ালকেই বাঘ বলে মনে হয়; যেখানে বিদ্বান লোক নেই সেখানে অল্পবিদ্বানেরা পাণ্ডিত্য ফলায়; সমতুল্য- 'দূর্বাবনে খটাশই বাঘ', 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা', 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল', বৃক্ষহীন দেশে এড়েণ্ডাও বৃক্ষ' ইত্যাদি। |
আদায় কাঁচকলায় সম্বন্ধ | আদা ও কাঁচকলা একসাথে সিদ্ধ হয় না; সুতরাং চির বৈরীভাব, স্বভাব-শত্রুতা, জ্ঞাতি-শত্রুতা |
আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর নেয় | তুচ্ছলোকের বড় ব্যাপারে নাক গলায়; অনধিকার চর্চার বিষয়; সমতুল্য- 'ভিক্ষা করতে এসে গাঁয়ের খবর নেয়', 'মশা এসে হাতীর ওজন জানতে চায়' ইত্যাদি |
আদি অন্ত পাওয়া ভার | ভেবে কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না; সমস্যার অন্ত নেই। |
আদি কহিলে মানুষ রুষ্ট | মানুষ অতীত ঘাটতে চায় না; অতীত ঘাটলে অনেক অপ্রীতিকর কথা এসে যায়; তাতে মানুষ রুষ্ট হয়। |
আদুরে গোপাল | অত্যন্ত আদরে পালিত সন্তান; লাই দিয়ে তার ইহকাল পরকাল ঝর্ঝরে। |
আদেখলার ঘটি হল, জল খেতে খেতে পরাণ গেল | আদেখলারা প্রথমে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলে। |
আদ্দিকালের বদ্দিবুড়ো | অতিবৃদ্ধব্যক্তি, থুত্থুড়ে বুড়ো। |
আন্ কাপাস নে তুলো | কাঁচামাল আনো, জিনিষ নিয়ে যাও। |
আন শুনতে কান/ধান শোনে | কালা, উল্টোপাল্টা শোনে। |
আন (অন্য) মাগীর আন (অন্য) চিন্তে, দুয়ো মাগীর পতি চিন্তে | অন্যান্য নারীরা সংসারের নানাচিন্তায় ব্যস্ত থাকে, কিন্তু যে নারীর সতীন আছে, সে স্বামীছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারে না। |
আন (অন্য) সতীনে নাড়ে চাড়ে, বোন সতীনে পুড়িয়ে মারে | নিজের লোকেরাই বেশি আঘাত হানে; রক্তের সম্পর্কের লোকেরা বেশি অনিষ্ট করে; সমতুল্য- 'আপন থেকে পর ভাল', 'ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছকাকাছি ততত রক্তারক্তি' ইত্যাদি। |
আনন্দ ও কাজ সময়কে সংক্ষিপ্ত করে | মনের আনন্দে কাজ করতে করতে কিভাবে যে সময় কেটে যায় খেয়াল থাকে না। |
আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে | পরছিদ্রান্বেষী; সমতুল্য- 'আনারস বলে কাঁঠাল তুই খসখসে', 'চালুনি বলে ছুঁচ তোর পিছন দেখি ছ্যাঁদা', 'ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা', ' নিজের পাছায় ন মণ গু, আমারে বলে তোর খান ধু', 'হাঁড়ি বলে কড়াই তোর পিছনটা বড়া কালা' ইত্যাদি। |
আন্ধা নগরী চৌপট রাজা; টাকা সের ভাজী, টাকা সের খাজা- হিন্দি প্রবাদ | অসারের মেলায় গুণের কদর নেই। |
আন্ধা-এ দোকানদেরে, খরিদ করে কালে- হিন্দি প্রবাদ | দুইই সমান অপদার্থ। |
আপ ভলা তো জগ্/সব্ ভলা- হিন্দি প্রবাদ | ভালোর চোখে সবই ভাল; যে নিজে ভাল সে সবকে ভালো দেখে এবং সবাই তাকে ভালো দেক |
আপরুচি খানা পররুচি পরনা- হিন্দি প্রবাদ | নিজের পছন্দমত খাও; পরের পছন্দমত পরো। |
আপদাং কথিতঃ পন্থা ইন্দ্রিয়াণামসংযমঃ। তজ্জঃ সম্পদাং মার্গো যেনেষ্টং তেন গম্যতাম্॥ (চাণক্য) | ইন্দ্রিয়ের অসংযম সকল অনিষ্টের পথ, ইন্দ্রিয়ের জয় সকল উন্নতির পথ; যে পথে মঙ্গল, সে পথে চল। |
আপদর্থং ধনং রক্ষেদ্ দারান্ রক্ষেদ্ধ নৈরপি। আত্মানং সততং রক্ষেদ্ দারৈরপি ধনৈরপি।। (চাণক্য) | বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য ধন-সম্পত্তি রক্ষা করবে; ধন সম্পত্তির বিনিময়েও স্ত্রীকে রক্ষা করবে; স্ত্রী বা ধন-সম্পত্তির বিনিময়েও নিজেকে সকল সময় রক্ষা করবে। |
আপন কখনো পর হয় না | কাছের মানুষ কখনো দূরের হয় না; সমতুল্য-'বসূধৈব কুটুম্বম'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন থেকে পর ভাল', 'কাছের লোক কাছের নয়', 'বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি'। |
আপন কোটে পাই চিঁড়ে কুটে খাই | নিজের আয়ত্বে কাউকে পেলে তাকে নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায়। |
আপন কোলে ঝোল সবাই টানে | সবাই নিজের স্বার্থ আগে দেখে। |
আপন গাঁয়ে কুকুর/শিয়াল রাজা // আপনা মহল্লামে কুত্তা শের | নিজের ঘরে সবাই রাজা; নিজের এলাকায় সবাই কর্তৃত্ব ফলায় |
আপন গেলে ঘোল পায় না চাকরকে পাঠায় দুধের তরে | বুদ্ধিহীনতার প্রতি ব্যঙ্গ। |
আপন ঘর রাজপ্রাসাদ | নিজের ঘরের মত সুন্দর স্থান জগতে নেই। |
আপন চরকায় তেল দাও | নিজের কাজে মন দেওয়া উচিৎ। |
আপন চেয়ে পর ভালো, পর চেয়ে জঙ্গল ভালো | নিজের লোক নিজের হয় না; সমতুল্য- 'বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন কখনো পর হয় না', 'বসূধৈব কুটুম্বম' ইত্যাদি। |
আপন পাঁজি পরকে দিয়ে দৈবজ্ঞ বেড়ায় পথে পথে | এক জ্যোতিষী নিজের পঞ্জিকা অন্যকে দিয়ে গণনা করতে না পারার জন্য তার রুজি-রোজগার বন্ধ; অন্যের উপকার করতে গিয়ে কেউ নিজের ক্ষতি করে ফেললে তার অবস্থা বর্ণনা করতে এই প্রবাদ বলা হয়। |
আপন পাঁঠা লেজে কাটি | স্ব-ইচ্ছা কাজ করার পক্ষে ওকালতি; নিজের অধিকারে সব কাজ স্বাধীনভাবে করা যায়। |
আপন পানে চায় নয়া বুড়ি পরকে বলে তোবড়াগালি | তোবড়া গালের বুড়ি নিজের রূপ বিচার নয়া করে পড়ের রূপ বিচার করে যা উচিত নয়। |
আপন বুদ্ধিতে ছিল ভাল, পরবুদ্ধিতে পাগল হল // আপন বুদ্ধিতে তর, পরবুদ্ধিতে মর | নিজের বুদ্ধিতে চলা ভালো; পরের বুদ্ধিতে চলা ঠিক নয়; পরের বুদ্ধিতে চলে যদি কোন ক্ষতি হয় তবে আফশোসের সীমা থাকে না। |
আপন বুদ্ধিতে ফকির হই, পর বুদ্ধিতে বাদশা নই/ আপন বুদ্ধিতে ভাত, পরের বুদ্ধিতে হা-ভাত | নিজের বুদ্ধি অনেক ভালো; ভাল হোক মন্দ হোক অনেকে এই গোঁ ধরেই কাজ করে। |
আপন বেলায় আঁটিসাটি, পরের বেলায় দাঁতকপাটি | নিজের স্বার্থের দিকে ষোলআনা নজর; পরের স্বার্থ চুলোক যাক। |
আপন বেলায় চাপন-চোপন পরের বেলায় ঝুরঝুরে মাপন | ক্রেতা হ'লে ওজনে ঝুঁকতি চায়; বিক্রেতা হ'লে পাল্লার কাঁটার দিকে নজর রাখে; আপনার দিকে বেশি রাখে পরকে দেয় সামান্য। |
আপন বোন ভাত পায়না শালীর তরে মন্ডা // আপন ভাই ভাত পায় না, শালার তরে মণ্ডা | একপেশে বিচার; ন্যায্য দাবীদারকে উপেক্ষা করে অপর কাউকে সাহায্য করা, বৌয়ের আঁচল ধরা ব্যক্তি। |
আপন ভাল তো জগৎ ভাল | ভালোর চোখে সবই ভাল। |
আপন ভাল পাগলও বোঝে | যার বিন্দুমাত্র বোধজ্ঞান আছে সেও নিজের স্বার্থটা ভালো বোঝে। |
আপন মান আপন ঠাঁই | নিজের মান নিজের আশ্রয়। |
আপনা গলিমে কুত্তা শের // আপনা মহল্লামে কুত্তা শের | নিজের ঘরে সবাই রাজা; নিজের এলাকায় সবাই কর্তৃত্ব ফলায় |
আপনা মাংসে হরিণা বৈরি- হিন্দি প্রবাদ | হরিণের শত্রু তার মাংস; নিজেই নিজের শত্রু। |
আপনা মুঁহ মিয়াঁ মিট্ঠু বনানা- হিন্দি প্রবাদ | আত্মপ্রশংসা করা; সজ্জন লোকের আত্মপ্রশংসা কয়ড়া উচিত নয়। |
আপনা হাত জগন্নাথ | খুব কৃপণস্বভাবের লোক; কাউকে কিছু দিতে হ'লে একেবারে ঠুঁটো (হস্তহীন) জগন্নাথ। |
আপনা হাত জগন্নাথ, পরের হাত এঁটো পাত | নিজের সব জিনিষ ভালো, সমর্পযায়ের পরের সব জিনিষ খারাপ; পড়ের জিনিষকে ঘৃণা করার প্রবণতাকে ব্যাঙ্গ করতে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হওয়। |
আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়- ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত | নিজেকে যে বড় বলে সে তত ছোট হয়; 'মানুষ হল ভগ্নাংশের মত; লব হল সে নিজে এবং হর হল সে নিজেকে যা ভাবে; নিজেকে সে যত বড় ভাবে ততই সে ছোট হতে থাকে'- টলস্টয়। |
আপনার আপনার কিছু নয়, জগৎ কেবল মায়াময় | এই সংসারে আমার তোমার বলে কিছু নেই, সবই অনিত্য। |
আপনার কথা কয় না শালী পরকে বলে টেবোগালী | নিজের ছিদ্র জানে না পরের ছিদ্র খুঁজে বেড়ায়; সমতুল্য- 'চালুনী বলে সুঁই তোর মার্গে কেন ছেঁদা', 'চালুনী বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো' ইত্যাদি। |
আপনার গায়ে/গুয়ে গন্ধ নেই পরের গায়ে/গুয়ে গন্ধ // আপনার ঘামে/বগলে গন্ধ নেই পরের ঘামে/বগলে গন্ধ | নিজের সব ভালো, পরের সব খারাপ। |
আপনার ঘোল কেউ টক বলে না | নিজের দোষ কেউ দেখে না। |
আপনার চড়কায় তেল দাও | নিজের কাজ কর পরের কাজে নাক গলিয়ো না। |
আপনার চেয়ে পর ভাল; পরের চেয়ে জঙ্গল ভাল | আমার নিজের এই ধারণাটাই সম্পূর্ণ মিথ্যা। |
আপনার ছিদ্র জানে না পরের ছিদ্র খোঁজে | নিজের দোষ দেখে না পরের দোষ খোঁজে; সমতুল্য- চালুনি করে ছুঁচের বিচার', 'কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে', 'ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা', 'নিজের পাছায় ন মন গু, আমারে বলে তোর খান ধু' ইত্যাদি। |
আপনার ছেলেটি খায় এতটি, চলে/বেড়ায় যেন ঠাকুরটি; পরের ছেলেটা খায় এতটা, চলে/বেড়ায় যেন বানরটা | মন্দ হলেও নিজের বস্তু ভালো; ভালো হলেও পরের বস্তু মন্দ; পরের ছেলের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য। |
আপনার ঢোল আপনি পেটায়/বাজায় | আত্মপ্রশংসায় পঞ্চমুখ। |
আপনার ধন পরকে দিয়ে দেবকী মরে মাথা খুঁড়ে // আপনার ধন পরকে দিয়ে মর এখন পাত কুড়িয়ে | আগে অধিকার ছেড়ে পরে হাহুতাশ করা; সম্পদ বিলিয়ে দিলে পরের অনুগ্রহে বাঁচতে হয়। |
আপনার নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা | নিজের ক্ষতি স্বীকার করে পরের ক্ষতি করা। |
আপনার পাঁজি পরকে দিয়ে দৈবজ্ঞ বেড়ায় মাথায় হাত দিয়ে | অন্যের উপকার করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করা; প্রয়োজনীয় জিনিষ পরের হাতে থাকলে দরকারের সময় অনেক অসুবিধা হয়। |
আপনার পাঁঠা লেজে কাটে | আপনার বিষয়ে যা খুসি করা যায়; তাতে কারো কিছু বলার থাকে না; নিজের ভাল সবাই বোঝে। |
আপনার পায়ে কুড়ুল মারে | জেনেশুনে নির্বুদ্ধিতায় নিজের ক্ষতি করে। |
আপনার বেলায় আঁটিসাটি পরের বেলায় দাঁতকপাটি | নিজের বেলায় কড়াকড়ি; পরের বেলায় কিছু না। |
আপনার বিড়াল পথ্যি পায় না | যার নিজের অন্নের সংস্থান নেই তার পক্ষে অন্যকে সাহায্য করা অসম্ভব। |
আপনার ভাল পাগলেও বোঝে | আপনার ভাল সবাই বোঝে; যার সামান্য বুদ্ধি আছে সেও স্বার্থটা ভালো বোঝে। |
আপনার মত জগৎ দেখা | নিজের আয়নায় পরকে দেখা; গুণী কোন নির্গুণ খুঁজে পায় না, নির্গুণ আবার কোন গুণী খুঁজে পায় না। |
আপনার মাথা আপনি খায় | নিজের ক্ষতি নিজেই করে। |
আপনার মন দিয়ে পরের মন জানা | নিজেকে দিয়ে পরের বিচার করা; নিজের আয়নায় পরকে দেখা। |
আপনার মান আপনি রাখি, কাটা কান চুলদে ঢাকি | আত্মসম্মান নিজের হাতে; নিজের মান নিজেকেই বাঁচাতে হয়; ঘরের কথা বাইরে যে বলে সে আহাম্মক। |
আপনারটা ঢাকা থাক পরেরটা বিকিয়ে যাক | পরেরটা নষ্ট হয় হোক, নিজেরটা ভালো থাকলেই হল। |
আপনারটা ষোলআনা, পরেরটা কিছু না | নিজের বেলায় সবটাই নেবো, পরের বেলায় কিছু দেবো না। |
আপনারে বড় বলে বড় সেই নয়; লোকে যারে বলে বড় সেই হয় | আত্মপ্রশংসা মান্যতা পায় না। |
আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও | যে আচরণ অপরকে শেখাও তা নিজে আগে কর। |
আপনি খেতে ভাত পায় না শঙ্করাকে ডাকে // আপনি শুতে ঠাঁই পায় না শঙ্করাকে ডাকে | অন্যের দয়ায় বেঁচে থেকে অন্যকে সাহায্য করার চেষ্টা; নিজের আয় দিয়া নিজে চলিতে পারে না; অথচ অন্যের জন্য খরচ করে; আহাম্মকের রকম-ফের। |
আপনি গেলে ঘোল পায় না চাকরকে পাঠায় দুধের তরে | যেখানে নিজের অনুরোধ রক্ষা হয় না সেখানে অপরকে দিয়ে কোন কাজ করার চেষ্টা; আগে থেকেই অনুমান করা যায় যে কণ এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। আগে থেকেই অনুমান করা যায় যে ব্যর্থ হবে, তখন তার প্রচেষ্টাকে ব্যাঙ্গ করে এই প্রবাদ বলা হয়। |
আপনি তুষ্টে জগৎ তুষ্ট | নিজে সন্তুষ্ট থাকলে জগৎ সন্তুষ্ট থাকে। |
আপনি পাগল, ভাতার পাগল, পাগল তার চেলা, এক পাগলে রক্ষা নেই তিন পাগলের মেলা- লালন | বাউলের ভাববাদী দর্শন; এই সংসার পাগলের মেলা। |
আপনি পায় না পরকে বিলায় | অবিবেচনাপ্রসূত কাজ। |
আপনি বড় ভালো, তাই লোককে বলেন কালো | নিজে মন্দ হয়েও অপরকে মন্দ বলে- এমন নীচব্যক্তির প্রতি বক্রোক্তি। |
আপনি বাঁচলে বাপের নাম | নিজের স্বার্থ দেখা; সমতুল্য- 'আগে ঘর পরে পর, ঘর সামলে পরকে ধর', 'আত্ম রেখে ধর্ম তবে পিতৃকর্ম','চাচা আপন প্রাণ বাঁচা' ইত্যাদি। |
আপনি ভালো তো জগৎ ভালো | নিজে ভালো হ'লে অন্যরাও ভালো হয়। |
আপনি ভালো তো জগৎ ভালো তারই মান থাকে, আপনি মন্দ তো জগৎ মন্দ কে তার মান রাখে? | ভালো লোকেরা সমাজে সম্মানির হয়; মন্দলোকেদের কেউ পোছেও না। |
আপনি যেমন জগৎ তেমন | আপনার আশিতে পরকে দেখা; আপনি ভালো তো জগৎ ভালো। |
আপনি যেমন ঢেমন জগৎ দেখি তেমন | যে নিজে দুশ্চরিত্র, ষে অপরকে দুশ্চরিত্র ভাবে। |
আপনে গলিমে/মহল্লামে কুত্তা শের- হিন্দি প্রবাদ | নিজের এলাকায় সবাই কর্তৃত্ব ফলায়; সুযোগ পেলে ভৃত্যও প্রভুত্ব করে। |
আপনে রামকো ভজৈ, রিজ ভজে বা খিজ- হিন্দি প্রবাদ | ইষ্টদেবতাকে যেভাবেই ভজনা কর-না-কেন তিনি ঠিক বুঝতে পারেন। |
আবিল দৃষ্টি সব হলদে দেখে | মন্দের চোখে সবই মন্দ; সমতুল্য- 'কামলার চোখে সব শ্যামলা মনে হয়'। |
আবৃত্তিঃ সর্বশাত্রাণাং বোধাদপি গরিয়সী। | সব শাস্ত্রবোধ থেকে আবৃত্তির গৌরব অনেক বেশি। |
আম না থাকলে আমড়া চোষে // আম না পেয়ে আটিঁ চোষে | সার না পেলে অসারই সই; একটা কিছু হলেই হ’ল; অভাগার এর বেশি কিছু জোটে না। |
আম না হতে আমসত্ব | কাজ না হতেই ফলের আশা; আগাম সুখকল্পনা। |
আম পাকলে মিঠা, মানুষ পাকলে তিতা | পরিণত-বুদ্ধি হলে মানুষ স্বার্থান্বেষী হয়, নিজের ভালো ও পরের মন্দ খোঁজে। |
আম শুকালে আমসী | বয়স বাড়লে রস শুকায়। |
আমও গেল ছালাও গেল | লাভ করতে গিয়ে সর্বস্ব হারানো। |
আমড়াগাছে আম ফলে না | কুবংশে সুসন্তান জন্মায় না; মন্দলোকের কাছে ভালো ব্যবহার প্রত্যাশা করা যায় না। |
আমড়াতলায় আম পেলে, আমতলায় কেবা যায় | সহজে কিছু পেলে কেউ কষ্ট স্বীকার করে না। |
আমরা বাঁচার সাথে সাথে একটু একটু করে মরি | আয়ু দিনেদিনে ক্ষয় হয়। |
আমরা যতই জানি ততই নিজের অজ্ঞানতা আবিস্কার করি | জ্ঞানী জানে যে সে কিছুই জানে না। |
আমাদের প্রধান বিশ্বাসগুলি হল অন্ধবিশ্বাস | রিপু নামক অন্ধকারের তাড়নায় কেউ আলোর (সত্য) খোঁজ পায় না। |
আমার আমার যত করি, চিনির বলদ হয়ে মরি | আমরা সংসারীরা আসলে ভারবাহী জন্তুছাড়া আর কিছু নয়। |
আমার নাম নিতাই, এক খাই আর এক থিতাই | অতি সতর্কলোক, যে বর্তমানের সাথে সাথে ভবিষ্যতেরও সংস্থান করে। |
আমার পরে পৃথিবী ধ্বংস/মহাপ্লাবন | আমি নেই তো আমার ভাবনাও নেই। |
আমার বুদ্ধি শোনো, ঘরদোর ভেঙে ফেলে নটে শাক বোনো | মানুষ ভাবে সে বড় বুদ্ধিমান; স্বভাবদোষে সবাইকে পরামর্শ দেয়; এমনকি যে নিজের ভালমন্দ বোঝে না সেই নির্বোধও অপরকে পরামর্শ দিয়ে যায়; আহাম্মক আহাম্মকের মতই পরামর্শ দেয়। |
আমার হাতদুটি ধর, তাহ'লেই তোমার হাতদুটি আমার ধরা হবে | মানুষ মানুষের জন্য; একতাই বল; আমরা পরস্পর পরস্পরের সহযোগিতায় বাঁচি। |
‘আমি আমি’ করেই মানুষ মল | অহংকারেই মানুষ মরে। |
আমি কি নাচতে জানিনে, মাজার ব্যাথায় পারিনে | মিথ্যা ওজরে নিজের অক্ষমতা ঢাকার চেষ্টা। |
আমি কি নেড়ি ভেড়ি, আমার পাঁচখানা শাড়ী ধোপার বাড়ী | কিছু নেই তবু তার বড়াই করাতে কার্পণ্য নেই। |
আমি জানি না-বলতে শেখাটাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা-হিব্রু প্রবাদ | কারো পক্ষে সব জানা সম্ভব নয়; জানতে জানতে জানা যায় জানার কোন শেষ নাই। |
আমি ছাড়লে কি হবে কম্বল তো আমায় ছাড়ে না- হিন্দি প্রবাদ | বিপদ এড়াতে চাইলে কি হবে, বিপদ আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে থাকে। |
আমি জীবনপাত্রের তলানিটুকু নিঃশেষে পান করব | জীবন চুটিয়ে ভোগ করার লিপ্সা; চার্বাকী দর্শন- হেসে খেলে নাও দুদিন বইতো নয়...। |
'আমি বহু বাসনায় প্রাণপনে চাই বঞ্চিত করে বাঁচালে মোরে'- রবীন্দ্রনাথ | মানুষের চাওয়ার কোন শেষ নেই; হাত পাতলেই যে পাওয়া তা পাওয়া নয়। |
আমি যাই বঙ্গে কপাল যায় সঙ্গে | হতভাগ্যের ভাগ্য কখনো ফেরে না; সমতুল্য- 'অভাগা যে দিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়', 'পোড়া কপাল জোড়া লাগে না।। |
‘আমি’ যাবে মলে | অহমহমিকা নিয়ে মানুষ মরে। |
আমি যার করি আশ সেই করে সর্বনাশ | যার কাছ থেকে সাহায্য আশা প্রত্যাশা করা হয় সেই উলল্টে সর্বনাশ করে |
আমিও ফকির হলাম দেশে অকাল এলো | বাঁচার জন্য ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করেছিল; অকাল আসাতে সেটাও গেল; কোন কাজ অস্বাভাবিকভাবে বাধাপ্রাপ্ত। |
আমে দুধে এক হয়, আঁটি যায় গড়াগড়ি // আমে দুধে এক হয়,আদাড়ের আঁটি আদাড়ে যায় | উপরতলায় গলাগলি, নীচের তলায় হেলাফেলা। |
আমে ধান তেঁতুলে বান- খনা | আমের ফলন বেশি হলে ধান বেশি উৎপন্ন হয়; তেঁতুলের ফলন বেশি হলে বন্যা হয়। |
আয় বুঝে ব্যয় | অপব্যয় করো না, মিতব্যয়ী হও; সমতুল্য- ওজন বুঝে চল; কাপড় বুঝে জামা কাটো ইত্যাদি |
আয়না যে মুখ দেখে সেই মুখ দেখায় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; ধাক্কা দিলে পাল্টা ধাক্কা খেতে হয়; সমতুল্য-'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়','ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
আয়ুর্ম্মর্ম্মাণি রক্ষতি | সকল সঙ্কট থেকে আয়ু প্রাণকে রক্ষা করে; আয়ু থাকলে কেউ মরে না। |
আয়ুর্যাতি দিনে দিনে | আয়ু দিনে দিনে ক্ষয় হয়; বয়বৃদ্ধির সাথেসাথে আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলি। |
আয়ুর্বেদকৃতাভ্যাসঃ সর্বেষাং প্রিয়দর্শনঃ। আর্যশীল গুণোপেত এষ বৈদ্যো বিধীয়তে॥ (চাণক্য) | যে ব্যক্তি চিকিৎসাশাস্ত্রে অভিজ্ঞ, যিনি সবলের চোখেই সৌম্যদর্শন, যিনি সৎস্বভাবিশিষ্ট- তিনিই চিকিৎসক হওয়ার যোগ্য। |
আর গাব খাব না, গাবতলা দিয়ে যাব না; গাব খাব না ত খাব কি, গাবের মত আছে কি | বিপদে পড়লে প্রতিজ্ঞা করা; বিপদ থেকে মুক্ত হলেই আগের মূর্তি; লোভ-রিপুকে সম্বরণ করা বড়ই কঠিন ব্যাপার। |
আর কি নেড়া বেলতলায় যায়? | যে একবার ঠকেছে সে সতর্ক থাকে যাতে দু'বার ঠকতে না হয়। |
আরগুণ নাই ছারগুণ আছে (ঢাকা) | অরগুণ নাই বরগুণ আছে (২৪ পরগণা)। |
আরম্ভ করলে শেষ হতে আর কতক্ষণ? | আরম্ভ করতেই অর্ধেক সময় ব্যয় হয়। |
আরম্ভ করলে শেষ দেখে ছাড়তে হয় | আধা-খেঁচড়া কাজ করা উচিত নয়। |
আরম্ভসদৃশোদয়ঃ | যেভাবে আরম্ভ হয় শেষ বা সমাপ্তিও সেইভাবে হয়। |
আরশোলা হল পাখি, রইল কী আর দেখতে বাকি // আরশোলাও পাখি, মুন্সেফও হাকিম | দুই অসম বিষয়ের তুলনা হয় না; কিসে আরে কিসে সোনা আর সিসে। |
আরাম অলসের ধন | অলস খুব আরামপ্রিয়। |
আরাম হারাম হায় | স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকর; পরিশ্রমই শেষ কথা। |
আল ভেঙে জল যাচ্ছে, ভালুকে তালি মারছে | একজনের ক্ষতিতে অন্যজনের আনন্দ প্রকাশ। |
আলস্যং হি মনুষ্যানাং শরীরস্থো মহান রিপু। নাস্ত্যুদয়মসমো বন্ধুঃ কৃত্বা যন্নাবসীদতি॥ (চাণক্য) | শরীরের আলস্য মানুষের প্রধান শত্রু; পরিশ্রমের মত দ্বিতীয় কোন বন্ধু হয় না; পরিশ্রমী কখনো দুঃখী হয় না। |
আলগা জিহ্বা দুষ্ট দুটি হাত থেকেও খারাপ- ইহুদী প্রবাদ | অসংযত কথাবার্তা বলে মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। |
আলগা পেলে সন্ন্যাসীও মাতে | কঠোর অনুশাসন কারও মনঃপুত নয়; মনোরম ঢিলেঢালা জীবন পরম আদরণীয়। |
আলস্য হেন ধন থাকতে দুঃখের অভাব কি? | অলসের প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
আলার নীচেই কালা রয়েছে | প্রদীপের নীচেই অন্ধকার থাকে; ঈশ্বরের পিছনেই শয়তানের বাস; শয়তান পিছু ছাড়ে না। |
আলালের ঘরের দুলাল | ধনী ঘরের অতি আদরের ও আবদারে ছেলে। |
আলো এলে অন্ধকার পালায় | জ্ঞানের আলোতে মনের অন্ধকার ঘুচে যায়। |
আলোচাল দেখলে ভেড়ার মুখ চুলকায় | লোভের জিনিষ দেখলে সবারই সেটা পেতে ইচ্ছা করে। |
আলো বাতাস বেঁধো না, রোগ ঘরে ডেকো না- খনা | শরীরমন সুস্থ রাখার জন্য ঘরে আলোবাতাস প্রয়োজন। |
আলোর পর আঁধার আসে | সুখ ও দুঃখ ঘুরে ফিরে আসে; চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ। |
আল্লা যারে দেয় ছাদ ফুঁইড়া দেয় | ভগবান যারে দেয় ঢেলেই দেয়; ভাগ্যবানের বোঝা ভগবানে বয়; সৌভাগ্যবান বিধির বরপুত্র। |
আশা আর ফুঁ আছে, দুধ আর বাটি নেই | অভাগার হাহুতাশ। |
আশা আর বাসা ছোট করতে নেই | ছোট ছোট বিষয় মনকে সঙ্কীর্ণ করে, হতাশাগ্রস্ত করে। |
আশা করে ঘর বাঁধে, কেউ হাসে কেউ কাঁদে | সবার ঘর০সংসার সুখের হয় না। |
আশা গরীবের খাদ্য | আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। |
আশা বৈতরণী নদী | পাপীরা যার শেষ পায় না (পাপীরা স্বর্গে যেতে পারে না), সেই বৈতরণী নদীর মত আশারও কোন শেষ নাই। |
আশাবধিং কো গতঃ | আশা অনন্ত ও অসীম; তার শেষসীমায় কেউ পৌঁছাতে পারে না। |
আশা হি পরমং দুঃখং, নৈরাশ্যং পরমং সুখং | আশা আশা পরম দুখ, নিরাশাই পরম সুখ; আশার সীমা নেই; সুতরাং আশা ত্যাগ করতে পারলেই প্রকৃত সুখলাভ হয়। |
আশায় আমার পড়ল ছাই, এখন বল কোথায় যাই | আশাভঙ্গে হতাশা। |
আশায় খেলিছে পাশা | মানুষ আশা নিয়ে বাঁচে, আশা নিয়ে মরে। |
আশায় বাঁচে চাষা | দুর্বলশ্রেণির মানুষেরা এই আশা নিয়েই বাঁচে যে একদিন-না-একদিন তাঁদের সুদিন ফিরবে। |
আশায় মরে চাষা | আষাঢ়মাসে বৃষ্টি হওয়ার আশায় এবং না হওয়ার আশঙ্কায় থাকে চাষা। |
আশার অর্ধেক ফল | সবসময় আশানুরূপ ফল হয় না; অর্ধেক হলেই যথেষ্ট পাওয়া হয়; যথা লাভ। |
আশার চেয়ে নিরাশা ভাল, হয়ে গেল তো হয়ে গেল | আশায় না থাকলে নিরাশা হলে দুঃখ পেতে হয় না। |
আশ্রয়, ফল ও ছায়া বড়গাছের তলায় নিতে হয় | ফল না পেলেও আশ্রয় ও ছায়াতো পাওয়া যাবে; ক্ষমতাসম্পন্ন লোকের আশ্রয় নিতে হয়। |
আশার শেষ নেই | আশা কুহকিনী; দরিদ্র চায় লাখোপতি হতে; লাখোপতি চায় ক্রোড়পতি হতে; ক্রোড়পতি চায় কুবেরের সম্পত্তি; এর কোন শেষ নাই |
আষাঢ়মাস চাষার আশ | চাষা আশা করে আষাঢ় মাসে সময় মত বৃষ্ট আসবে। |
আষাঢ়ে গল্প | কল্পনামূলক, আজব বা অবাস্তব গল্প; উৎস-আষাঢ় মাসের অঝোরে বৃষ্টি পড়ার কালে অলস মুহূর্তের গল্পের আসর থেকেই ‘আষাঢ়ে গল্প’ প্রবাদটির সৃষ্টি হয়েছে। |
আসতেও একা, যেতেও একা, কার সঙ্গে বা কার দেখা | কেউ কারো নয়, জগত মায়াময়। |
আসন্নকালে বিপরীতা বুদ্ধিঃ | বিপদকালে মানুষের বুদ্ধি বিকৃত হয়; সঠিক কাজ করতে গিয়ে ভুল করে ফেলে। |
আসরঘরে মশাল নেই, হেঁশেলঘরে চাঁদোয়া // আসলে মুষল নেই ঢেঁকি ঘরে চাঁদোয়া | নিজের ঘর না সামলে পরের ঘর সামলানো; প্রয়োজনে দৃষ্টি নেই অপ্রয়োজনে বাড়াবাড়ি; সংগতিহীন হয়েও বড়মানুষি ভাব; সমতুল্য- ভিতরে ছুঁচোঁর কেত্তন, বাইতে কোঁচার পত্তন। |
আসল ছেড়ে ছায়ার পিছনে ছূটো না | অনিশ্চিতের আশায় নিশ্চিত ত্যাগ করো না। |
আসলের খোঁজ নেই, তার সুদের খবর | যে আসল ফিরে পাবার সম্ভাবনা নেই, তার সুদের জন্যে ব্যস্ততা; ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য বৃহৎ স্বার্থ ত্যাগ। |
আসলের চেয়ে সুদ মিষ্টি // আসলের চেয়ে সুদের কদর বেশি | মহাজনের যেমন আসল ফেরত পাওয়া থেকে সুদ পেতে বেশি পছন্দ করে তেমনই দাদার কাছে ছেলে থেকে নাতির আদর বেশি হয়। |
আসেন লক্ষ্মী যান বালাই | সৌভাগ্য এলে দুর্ভাগ্য কাটে। |
আস্কে খায় তার ফোঁড় গোণে না | আসকে চালের গুঁড়ো গিয়ে তৈরী একপ্রকার ফোঁড়যুক্ত পিঠে; খাবার সময় কেউ নজর করে না তাতে কয়টা ফোঁড় আছে; যারা খায় দায় ঘুরে বেড়ায় কিন্তু খবর রাখেনা কোথা থাকে খাবারদাবার আসছে তাদের লক্ষ্য করে এই প্রবাদ বলাত হয়; গকুলের ষাঁড়। |
আহাম্মক তিন যায়গায় বিষ্ঠা মাখে | ভুলবশতঃ প্রথমে পায়ে; সন্দেহ হওয়াতে পা থেকে আঙুলে; নিঃসন্দেহ হ'তে আঙুল থেকে নাকে। |
আহাম্মক যে হয়, পিছনে সে কথা কয় | পিছনে কথা বলা যুক্তিযুক্ত নয়। |
আহাম্মক এক যে পরের মালে করে টেঁক; | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক দুই যে পরের চালে তোলে পুঁই | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক তিন যে ঋণ করে দেয় ঋণ | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক চার যে মধ্যস্থ হয়ে খায় মার | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক পাঁচ যে পরের পুকুরে ছাড়ে মাছ | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক ছয় যে একের কথা আরে কয় | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক সাত যে শ্বশুর বাড়ী খায় ভাত | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক আট যে মাগকে পাঠায় হাট | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক নয় যে ঘর থাকতে পরের ঘরে রয় | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক দশ যে মাগের কথায় বশ | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মকের সাথে তর্ক করো না, মানুষ ভুল করে তোমাকে আহাম্মক ভাবতে পারে- আরবী প্রবাদ | বুদ্ধিমান আহাম্মকের সাথে তর্ক করে না; আহাম্মকের সাথে তর্ক করার অর্থ পাথরে মাথা ঠোকা। |
আহার করবে ধীরে, কোনদিকে না চাবে ফিরে | স্বস্থ্যের কারণে বৈদ্যের বিধান। |
আহার, নিদ্রা ভয়, যতই করবে ততই হয় | আহার, নিদ্রা ভয় ইত্যাদি যতই বাড়িয়ে যাওয়া যায় ততই বাড়তে থাকে। |
আহারো দ্বিগুণঃ স্ত্রীণাং বুদ্ধিস্তাসাং চতুর্গুণা। ষড্গুণো ব্যবসায়শ্চ কামশ্চাষ্টগুণঃ স্মৃতঃ॥ (চাণক্য) | স্ত্রীলোকের আহার পুরুষের দ্বিগুণ, তাদের বুদ্ধি পুরুষের চতুর্গুণ, ব্যবসা-বাণিজ্যের বুদ্ধি পুরুষের ছয়গুণ আর ভোগলিপ্সা পুরুষের আটগুণ। |
আহুঃ সপ্তপদী মৈত্রী | যার সাথে সাত পা হাঁটা যায় তার সাথে বন্ধুত্ব হয়। |
আহ্লাদে আটখানা, ল্যাজা মুড়ো দশখানা | বেজায় খুশি; আনন্দের আর সীমা-পরিসীমা নেই; যে সামান্য বিষয় উপলক্ষে অযথা আননদ প্রকাশ করে তার ক্ষেত্রে এই প্রবাদ বলা হয়। |
আহ্লাদে আটখানা মূল্য পাঁচ-আনা | আহাম্মকের আহ্লাদের প্রতি তির্যকোক্তি। |
ই/ঈ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ইঁট মারলেই পাটকেল পড়ে | হিংসা হিংসা টানে; হিংসা প্রতিহিংসার জন্ম দেয়। |
ইঁদুর ডুবন্ত জাহাজ ছেড়ে পালায় | মানুষ বিপদে পড়লে উপকৃতরা আগে তাকে ছাড়ে। |
ইঁদুর গর্ত খুঁড়ে মরে, সাপ এসে দখল করে | দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার। |
ইঁচোড়ে পাকা | ইঁচোড়ে পাকা কাঁঠালের স্বাদ-গন্ধ কিছু থাকে না; সেইরকম অকালপক্ক ছেলের বিজ্ঞের মত কথাবার্তা বিস্বাদ বিসদৃশ লাগে। |
ইক্ষু পিষ্ট হলেও মিষ্টত্ব ত্যাগ করে না | গুণী কখনো তার গুণ হারায় না। |
ইঙ্গিতে বুঝলে মন কাজ হতে কতক্ষণ | মন পড়তে পারলে কাজ হতে বেশি দেরী হয় না। |
ইঙ্গিতাকারতত্ত্বজ্ঞো বলবান্ প্রিয়দর্শনঃ। অপ্রমাদী সদা দক্ষঃ প্রতীহারঃ স উচ্যতে।। (চাণক্য) | যিনি লোকের মনোগত অভিপ্রায় অনুধাবন করতে সক্ষম, শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ করে তার কারণ অনুমানে সক্ষম, যিনি সুন্দর আকৃতিবিশিষ্ট, যিনি সর্বদা সাবধানে থাকেন যিনি সকল কাজে নিপুণ- তিনিই দ্বাররক্ষকের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হন। |
ইচ্ছা আছে যার পথ আছে তার // ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয় // উপায় থাকলেই কার্যসিদ্ধি হয় | ইচ্ছা থাকলে কাজের উপায় বেরুবেই; যতই দুরুহ হোক উপায়জ্ঞের কাছে সব কাজই সহজসাধ্য মনে হয়; ইচ্ছুকের কাছে কিছুই অসম্ভব নয়। |
ইচ্ছা ঘোড়া হলে সব অভাবীরা তার ওপর চাপ'ত | ইচ্ছা থাকলেই পেট ভরে না; সৌভাগ্যবানের ইচ্ছার সাথে পরিশ্রমের আগ্রহ থাকে। |
ইচ্ছাক্ররুতভাবে যে তোমার দিকে একটা আঙুল বাড়ায় সে তোমার দিকে তার সমগ্র হাতও বাড়াবে- জিপসি প্রবাদ | যে সাহায্য করতে চায় সে মনেপ্রাণেই সাহায্য করতে চায়। |
ইচ্ছার ভার বোঝা মনে হয় না | যার কাজ করার ইচ্ছা আছে সে আনন্দের সাথে কাজ করে; তার কাছে কাজ করাতে কষ্টবোধ হয় না। |
ইজ্জত দৌলতে বজায় থাকে | অর্থই ইজ্জতের মাপকাঠি। |
ইজ্জত যায়না ধুলে স্বভাব যায় না মলে | মানীর মান নষ্ট হওয়া যেমন কঠিন, বদলোকের স্বভাব পরিবর্তন হওয়াও তেমন কঠিন। দুটি চিরসত্য এক প্রবাদে বলা হয়েছে। |
ইজ্জতের দাম লাখ টাকা | ইজ্জত হেলাফেলার বিষয় নয়। |
ইট পড়লে পাটকেলও পড়ে // ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; কারো সাথে দুর্ব্যবহার করলে বিনিময়ে দুর্ব্যবহার পেতে হয়; সমতুল্য- 'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে/থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়', 'ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
ইটে নাই ভিটে নাই বাইরে মর্দানী | ঘরে অন্ন নেই, বাইরে বাবুয়ানা; ফতেবাবুর ফুটানি। |
ইতর সন্তোষ প্রকাশ করে ব্যবহার মত | ইতরের বিচারের মাত্রা হল তার প্রাপ্তির পরিমাণ। |
ইতি করা | শেষ করা। |
ইতিহাস হল বিজয়ীর লেখা বিজিতে সম্পর্কে একরাশ মিথ্যা ও কুৎসা | পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ইতিহাস লেখা হয়। |
ইতো ভ্রষ্টস্ততো নষ্টঃ | একুল গেল, ওকুলও গেল; সব পণ্ড হল। |
ইন্দ্রোহপি লঘুতাং যাতি স্বয়ং প্রখ্যাপিতৈর্গুণৈঃ (চাণক্য) | স্বয়ং ইন্দ্রও যদি নিজের প্রশংসা করেন তবে তিনি লঘুত্বপ্রাপ্ত হন; নিজেকে যে বড় বলে ষে বড় নয়। |
ইল্লত যায় ধুলে. স্বভাব যায় মলে | জল দিয়ে ধুলে যেমন নোংরাস্থান পরিস্কার হয় তেমনি মৃত্যুর পর মানুষ কলঙ্কমুক্ত হয় |
ইল্লত যায় না ধুলে. স্বভাব যায় না মলে | জল দিয়ে ধুলে যেমন সব নোংরা যায় না তেমনি স্বভাবও আমৃত্যু বদলায় না; সমতুল্য- 'অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি','কয়লা ছাড়ে না ময়লা', 'দুধ খাওয়ালেও সাপের বিষ কমে না', 'দুধ ঢাললেও নিম নিষ্টি হয় না; 'যার যা রীত ছাড়ে কদাচিৎ', 'স্বভাব যায় না ম’লে' ইত্যাদি। |
ইসারায় দিশাহারা | প্রলোভনে বিভ্রান্তি। |
ইস্তক জুতো সেলাই, নাগাদ/লাগাত চণ্ডীপাঠ | মুচির জুতা সেলাই থেক ব্রাহ্মণের চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত সব কাজ; সংসারের ভালমন্দ সবরকমের কাজের কাজি। |
ঈদকা চাঁদ // ঈদের চাঁদ | দুর্লভ দর্শন; যার দেখা পাওয়া যায় না; ডুমুরের ফুল। |
ঈশা বাস্যমিদং সর্বং যৎ কিঞ্চ জগৎ্যাং জগৎ। তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্য স্বিদ্ধনম্॥ (উপনিষদ) | ব্রহ্মাণ্ডে যা কিছু অনিত্য বস্তু, সবই পরমেশ্বরের দান। ত্যাগের মধ্য দিয়ে ভোগ কর। কারও ধনে লোভ করো না। |
ঈশান কোণের মেঘে ঝড় ওঠে বেগে | উত্তর-পূর্ব কোণে মেঘ জমলে ঝড় অবশ্যাম্ভাবী। |
ঈশ্বর ঈশ্বর করে যেই, তার ঘরে ভাত নেই | শুধু ভজনায় কার্যসিদ্ধি হয় না। |
ঈশ্বর করেন কাম, মানুষের বদনাম | তিনিচালান আমরা চলি; দোষ হলে তাঁরই দোষ। |
ঈশ্বর যদি করেন, কর্তা (স্বামী) যদি মরে্ তবে ঘরে বসে কীর্তন শুনবো | পরের বাড়ীতে দিয়ে কীর্তন শুনতে না পেরে এল আহাম্মক স্ত্রীলোকের খেদোক্তি; অল্পলাভের জন্য বেশি ক্ষতিস্বীকারের বাসনা। |
ঈশ্বর যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন | ঈশ্বরের ইচ্ছা অনিচ্ছা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে এই বিশ্বাস মনে রাখলে মন বিক্ষিপ্ত হয় না। |
ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি | ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজ করেন। |
উ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
উঁচান বাড়ি বড় ভয়, পড়লে বাড়ি সয়ে যায় | উঁচানো লাঠি দেখলে ভয় হয় কতনা লাগবে; লাঠি পড়লে সয়ে যায়; তেমনি কাজ শুরুর আগে ভয় হয়; অথচ কাজ একবার শুরু হলে অতিকঠিন কাজও সহজে সম্পন্ন হয়। |
উঁচুগাছেই ঝড় বেশী লাগে | বড়কেই সংসারের সব ঝক্কি সামলাতে হয়। |
উঁচুগাছেই মই বাঁধো | ফললাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে। |
উঁচুমনের মানুষ যা খোঁজে নিজের মধ্যে খোঁজে, নীচমনের মানুষ যা খোঁজে পরের মধ্যে খোঁজে- কনফুসিয়াস | মহানব্যক্তি নিজের দোষ খোঁজে; হীনব্যক্তি অপরের দোষ খুঁজ বেড়ায়। |
উঁচী দুকান্ ফীকি পকান্- হিন্দি প্রবাদ | জাঁকজমকপূর্ণ দোকানের মিষ্টি মিষ্টতাশূন্য; উপরে চিকণ চাকণ ভিতর খড়; দেখনদারী; বাইরের আড়ম্বরমাত্র। |
উঁচু যদি হতে চাও নীচু হও তবে // উঁচু হবে, তবে নীচু হয় | বিনম্রস্বভাবের লোককে সবাই শ্রদ্ধা করে; নম্রতাই মহত্বের লক্ষণ। |
উঁচু হলে ঝড়ে উড়াবে, নীচু হলে ছাগলে মুড়াবে | উভয় অবস্থারই ভয় আছে মধ্যমপন্থা শ্রেষ্ঠপন্থা। |
উঁট কে মুঁহমে জীরা- হিন্দি প্রবাদ | প্রয়োজনকালে ন্যূনতম বিধান; প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম প্রাপ্তি। |
উই, ইঁদু্র, কুজন ভালো ভাঙে তিনজন, সুঁই, সোহাগা, সুজন- ভালো করে তিনজন | উই, ইঁদু্র, কুজন- এই তিনজন ভালো জিনিষ নষ্ট করে এবং সুঁই, সোহাগা, সুজন- এই তিনজন ভালো জিনিষ গড়ে তোলে। |
উকিল আর গাড়ীর চাকা, তেল চর্বি দিয়ে রাখা | তেল না দিলে উভয়েই নড়ে না; খাবার পেলে সবাই দাস। |
উকিল নিজের ওকালতি করে না | তাহ'লে নিজের পক্ষে মিথ্যাকথা বল'তে হয়। |
উক্তস্য পুনঃ কথনং | উক্ত বিষয়ের পুনরুক্তি। |
উচট খেয়ে প্রণাম | হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে প্রণাম স্বীকার; দায়ে পড়ে কোন ভালো কাজ করে ফেলা। |
উচিৎ কথায় আহাম্মক রুষ্ট | উচিৎ কথা কইতে মানা; হক কথা শুনে নির্বোধও রাগ করে। |
উচিৎ কথায় দেবতা তুষ্ট, উচিৎ কথায় মানুষ রুষ্ট | দেবতা, দেবতুল্যলোক উচিৎ কথা শুনে সন্তুষ্ট হন,কিন্তু সাধারণ মানুষেরা উচিৎ কথা শুনে ক্ষেপে যায়। |
উচিত কথায় বন্ধু/মামা বেজার | সত্যকথা কেউ শুনতে নারাজ; সত্যকথা বললে আপনজনও অপছন্দ করে; সুতরাং মা ব্রুয়াৎ সত্যমপ্রিয়ম। |
উচিৎ কথার ভাত নাই | উচিৎ কথা দাম পায় না। |
উচ্চপ্রাণের লোকেরা তত্ত্ব নিয়ে চর্চা করে; মধ্যম প্রাণেরা লোকেরা ঘটনা নিয়ে চর্চা করে; ক্ষুদ্রপ্রাণের লোকেরা পরনিন্দা করে | জ্ঞানীরা তত্ত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকে; সাধারণলোকেরা সাংসারিক বিষয়ে ব্যস্ত থাকে; হীনলোকেরা শুধু পরচর্চা করে। |
উচ্ছে খাবে কচি, পটল খাবে বীচি | দুইই উপাদেয় এবং স্বাস্থের পক্ষে মঙ্গল। |
উচ্ছের কচি, পটলের বীচি, ছাগলের ছা, মাছের মা- এগুলি বেছে খা | কচি উচ্চে, পালা পটল, পচি পাঁঠার মাংস ও পাকা মাছ- এগুলি হল উপাদেয় খাদ্য। |
উছল নদীর কলকলানি বেশি | উদ্দাম যৌবনের ঝলকানি বেশি; অজ্ঞানেরা বেশী লম্ফঝম্ফ করে। |
উজাড় (শূন্য) বনে শিয়াল রাজা | যেখানে বাধা দেবার কেউ নেই সেখানে সাধারণলোকও কর্তৃত্ব করে। |
উঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে, বাড়া ভাত খেয়ে | কোন কথাবার্তা নেই, কোন সম্ভাবনা নেই, হঠাৎ কাজ এসে উপস্থিত এবং এখনই করতে হবে এমন অবস্থা। |
উঠন্ত বৃক্ষ পত্রেই চেনা যায় | চারাগাছের পাতা দেখেই বোঝা যায় গাছ কেমন হবে; তেমনি কাজের আরম্ভ দেখেই বুঝা যায়। কাজের শেষটা কিরকম হবে। |
উঠন্তিমূলো পত্তনিতেই চেনা যায় | কাজের আরম্ভ দেখেই পরিণাম আন্দাজ করা যায়। |
উঠল বাই তো কটক যাই | চটজলদি সিদ্ধান্ত, বিচার বিবেচনার নাম করে না। |
উঠান ভরা লাউ শশা, ঘরে তার লক্ষ্মীর দশা- খনা | যে চাষীর উঠান লাউ শশায় ভরে থাকে তার কোন অভাব থাকে না। |
উঠোন পেরুলেই অর্ধেক সফর | কাজ শুরু হলেই অর্ধেক কাজ শেষ হয়ে যায়। |
উড়তে পারে না পোষ মানে | অক্ষমের পরনির্ভরশীলতা; নিরুপায় হয়ে কোন কাজ করতে বাধ্য হওয়া। |
উড়তে পারে না ফুরফুর করে | অক্ষমের বাড়াবাড়ি; কাজ করার শক্তি নেই, তবুও কাজ করার ইচ্ছা যাগে। |
উড়কিধানের মুড়কি আর সরুধানের চিঁড়ে | দুইই খেতে সুস্বাদু। |
উড়ে এসে জুড়ে বসা | অযাচিতভাবে (বিনা অধিকারে) হঠাৎ এসে সর্বেসর্বা হয়ে বসা। |
উড়ো খই গোবিন্দায় নমঃ | অলভ্য দ্রব্য সৎকাজে দানের ভান; প্রতিকূল অবস্থায় পড়ে বাধ্য হয়ে কোন সৎকাজ করা। |
উৎপাতের কড়ি চিৎপাতে যায় | অসদুপায়ে অর্জিত অর্থ বাজেভাবে খরচ হয়। |
উৎসবে ব্যসনে চৈব দুর্ভিক্ষে শত্রুনিগ্রহে। রাজদ্বারে শ্মশানে চ যস্তিষ্ঠতি স বান্ধবঃ॥ (চাণক্য) | যে ব্যক্তি উৎসব, বিপদকাল, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ, বিচারালয় এবং শ্মশানে পাশে উপস্থিত থাকে, সেই প্রকৃত বন্ধু- প্রকৃত বন্ধুর পরিচিতি। |
উত্তমপুরুষ যা খোঁজে নিজের মধ্যে খোঁজে, অধমপুরুষ যা খোঁজে পরের মধ্যে খোঁজে- কনফুসিয়াস | জ্ঞানীলোকেরা আত্মানুসন্ধান করে, সামান্যলোকেরা পরছিদ্রান্বেষী হয়। |
উত্তম মধ্যম দেওয়া | প্রহার করা। |
উত্থায় হৃদি লীয়ন্তে দরিদ্রনাং মনোরথাঃ | দরিদ্রের বাসনা উদয় হয়েই লুপ্ত হয়; অর্থের টানাটানিতে কার্যে পরিণত করা যায় না। |
উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান নিবোধত (উপনিষদ) | ওঠো, জাগো। বরনীয় জ্ঞানীদের কাছে গিয়ে জ্ঞানপ্রাপ্ত হও। |
উদ (জল) খেতে ক্ষুদ নেই নেউলে বাজায় শিঙে | একমুঠো খুদ মুখে দিয়ে জল খাবে এমন সামর্থ নেই অথচ বাঁশি বাজিয়ে বেড়ায়; ঘরে অন্নের সংস্থান নেই বাইরে আস্ফালন। |
উদবিড়ালে শিকার করে, খটাশ করে তিনভাগ | উদবিড়ালে কষ্ট করে মাছ ধরে; খটাশ এসে তাতে ভাগ বসায়; একের পরিশ্রমের ফল অন্যে এসে ভোগ করে। |
উদর চিরলে ক বেরোয় না | ক অক্ষর গো-মাংস, মহামূর্খ। |
উদারচরিতানাং তু বসুধৈব কুটুম্বকম | উদারচরিত্রের ব্যক্তির কাছে জগতবাসী সকলেই আত্মীয়। |
উদিতে তু সহস্রাংশৌ ন খদ্যোতো ন চন্দ্রমাঃ | সূর্য উঠলে চন্দ্র জোনাকি ইত্যাদি ম্লান হয়ে যায়, |
উদুখলে (শস্য রাখার পাত্র) ক্ষুদ নাই চাঁটগায়ে বরাত | ঘরে অন্নের সংস্থান নেই, অথচ অন্যলোককে অন্যস্থানে টাকা নেবার দায়িত্ব দেয়; নিতান্ত বাড়াবাড়ি। |
উদ্যোগিনং পুরুষ্পসিংহমুপতি লক্ষ্মী। দৈবেন দেয়মিতি কাপুরুষা বদন্তি॥ (চাণক্য) | উদ্যোগীপুরুষ লক্ষ্মী লাভ করে; কাপুরুষেরা বলে- ভাগ্য থাকলে পাব। |
উদো/উধোর (মূর্খ) পিণ্ডি বুধোর (পণ্ডিত) ঘাড়ে | নির্দোষব্যক্তির ওপর দোষীব্যক্তির অপরাধ পতিত হওয়া; একের দোষ অন্যের ঘাড়ে; চরম বিশৃঙ্খলা। |
উদ্যমেন হি সিদ্ধান্তি কার্যাণি ন মনোরথৈ। নহি সুপ্তস্য সিংহস্য মুখে প্রবিশন্তি মৃগা॥ চাণক্য | উদ্যোগেই কার্যসিদ্ধি হয়, শুধু মনের ইচ্ছাতে হয় না; ঘুমন্ত সিংহের মুখে হরিণ স্বেচ্ছায় প্রবেশ করে না। |
উদ্যোগীর অসাধ্য কিছুই নেই | উদ্যোগী কখনো অসফল হয় না। |
উদ্যোগীর কাছে কোন পথই দূর নয় | উদ্যোগীর কাছে কোন পথই অনতিক্রম্য নয়। |
উনবর্ষা দু্নো শীত- খনা | বৃষ্টি কম হলে শীত বেশি পড়ে। |
উনা কলসির দুনা শব্দ | কলসি একটু ভর্তি হলেই জোরে শব্দ করতে শুরু করে; অল্প শিক্ষিতরা বেশি বিদ্যার জাহির করে। |
উনোভাতে দুনো বল, অতিভাতে রসাতল | কম খেলে শরীর সুস্থ থাকে, বেশি খেলে শরীর ভারী হয়। |
উপকারগৃহীতেন শত্রুণা শত্রুমুদ্ধরেৎ। পাদলগ্নং করস্থেন কণ্টকেনেব কণ্টকম্॥ (চাণক্য) | হাতের কাঁটা দিয়ে যেমন পায়ে কাঁটা তোলা হয়, তেমনি উপকারগ্রহণকারী শত্রু দিয়ে শত্রুনাশ করতে হয়- শত্রু নিধনের উপায়। |
উপকারী গাছের ছাল থাকে না | উপকারী গাছের সবই উপকারী, কিছুই ফেলা যায় না; ওষধি গুণযুক্ত গাছের বাকল সবাই নিয়ে যায় খাওয়ার জন্য; সাধারণত অসুন্দর বস্তু বেশী কাজের হয়; সুতরাং কোন কিছুর বাহ্যিক রূপ দেখে তার গুণ বিচার করা হলে ভুল হতে পারে। |
উপকারীকে বাঘে খায় | উপকৃত উপকারীর বেশি ক্ষতি করে। |
উপকারো জগত্তাতো, বিশ্বস্য জননী দয়া | উপকার জগতের পিতাস্বরূপ; দয়া বিশ্বের জননীস্বরূপা। |
উপদেশ অপেক্ষা উদাহরণ ভাল | নিজে করে অপরকে অনুপ্রাণিত করতে হয়। |
উপদেশো হি মূর্খানাং প্রকোপায় না শান্তয়ে | উপদেশ মুর্খকে শান্ত করে না, ক্রুদ্ধ করে। |
উপবাসী প্রাণ করে আনচান | খিদের ছটফটানি। |
উপবাসে যাবে দিন ধার করলে হবে ঋণ | অন্নের সংস্থান না থাকলে একদিন কেটে যাবে তবু ধার করা নাই; একবার ঋণের ফাঁদে জড়ালে তার থেকে মুক্তি নেই। |
উপরতলায় গলাগলি, নীচের তলায় হেলাফেলা | স্বার্থের মিলন। |
উপর থেকে পড়ে গেল জন পাঁচ সাত; যার যেখানে ব্যথা, তার সেখানে হাত | যার যেখানে স্বার্থ তার সেখানে নজর। |
উপরটায় চিকন চাকন ভিতরটায় খেড় // উপরে বাবুয়ানা ভিতরে খড়ের বেনা (পোষাক) | ফোঁপরা লোকের দেখনদারি; বাহ্যিক আড়ম্বরপূর্ণ লোকের ভিতরটা শূন্যগর্ভ। |
উপরে মধু অন্তরে বিষ, ত্যজো তারে অহর্ণিশ | মন্দলোকের সঙ্গ সবসময় পতিত্যজ্য। |
উপরোধে ঢেঁকি গেলা | অনুরোধ ঠেলতে না পেরে অনিচ্ছা সত্বেও কাজ করা। |
উপস্থিত অন্ন ত্যাগ করতে নেই | অন্যত্র খাওয়ার আশায় প্রস্তুত খাদ্য ত্যাগ করলে সেদিন অদৃষ্টে খাদ্য নাও জুটতে পারে; হাতের পাখি ছাড়তে নেই। |
উপায়ং চিন্তয়েৎ প্রাজ্ঞঃ অপায়মপি চিন্তয়েৎ | প্রাজ্ঞব্যক্তি উপায় চিন্তা করেন; বাধাবিঘ্ন নিয়েও চিন্তা করেন। |
উপায়জ্ঞের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য মনে হয়- (চাণক্য) | উপায়জ্ঞ সমাধানের সহজ পথ খুঁজে পায়। |
উপোস করলেই ধর্ম হয় না | আচারসর্বস্বতার অসারতার প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
উপোসে কেউ নয়, পারণের গোঁসাই | আনাহারে বেঁচে থাকতে কেউ দেখে না শ্রাদ্ধে এসে হাজির। |
উলুখাগড়ার প্রাণ যায় | সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত |
উলুবনে মুক্তা ছড়ানো | অযোগ্য পাত্রে মূল্যবান বস্তু দান করা। |
উলুবনে মুক্তা ছড়ানো | উলুঘাসে মুক্তা ছড়ালে কেউ তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে না; তেমনি অযোগ্যের হাতে মুল্যবান দ্রব্য দেওয়া বৃথা; সমতুল্য- 'অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম', 'বানরের গলায় মুক্তাহার'; |
উলুবনে সাঁতার দেওয়া | আহাম্মকের কাজ; এক আহাম্মক জ্যোৎস্না রাতে উলুবনকে পুকুর ভেবে সাঁতার দিতে গিয়েছিল। |
উলোর মেয়ের কুলুজী, অগ্রদ্বীপের খোঁপা; শান্তিপুরের হাত নাড়া, গুপ্তিপাড়ার চোপা | উপরের চারটি বিষয়ের জন্য চার অঞ্চলের স্ত্রীলোকের প্রসিদ্ধি ছিল। |
উলটা বুঝলি রাম | ভালকথার বা সদুপদেশের মন্দ ব্যাখ্যা করা। |
উল্টে চোরা কোতয়ালকে ডাঁটে- হিন্দি প্রবাদ | দোষ করেও চোর কোতয়ালকে চোখ রাঙায়; সমতুল্য- 'চোরের মায়র বড় গলা'। |
উল্টে চোরা মশান গায় | নির্দোষ বলে গলা ফাটায়। |
ঊ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঊনো পাঁজুরে বরাখুরে | হতভাগ্য, অলুক্ষণে বলে গালি। |
ঊনো বর্ষা দুনো শীত- খনা | বৃষ্টি কমে হলে শীত বেশি পড়ে। |
ঊনো ভাতে দুনো বল, অতি ভাতে রসাতল | পরিমিত আহারে স্বাস্থ্য রক্ষা হয়, অপরিমিত আহারে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়। |
ঊরুৎ বেয়ে রক্ত পড়ে, চোখ গেলোরে বাবা | একের সাথে অন্যের কোন সম্পর্ক নেই; অর্থহীন প্রলাপ। |
ঋ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঋণকর্তা পিতা শত্রুর্মাতা চ ব্যভিচারিণী। ভার্যা রূপবতী শত্রুঃ পুত্র শত্রুরপণ্ডিতঃ॥ (চাণক্য) | ঋণগ্রহীতা পিতা, দুশ্চরিত্রা মাতা, অতিরূপবতী স্ত্রী এবং মূর্খ পুত্র শত্রু রূপে বিবেচিত হয়ে থাকে। |
ঋণশেষোহগ্নিশেষশ্চ ব্যাধিশেষস্তথৈব চ। পুনশ্চ বর্দ্ধতে যস্মাৎ তস্মাচ্ছেষং ন কারয়েৎ॥(চাণক্য) | ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই; এগুলি শেষ না হলে বৃদ্ধি পায়। |
ঋণং কৃত্বা ধৃতং পিবেৎ (চার্বাক) | ক্ষণস্থায়ী জীবন দুদিন বইত নয়; সুতরাং যত পারো সুখ ভোগ করে নাও। |
ঋদ্ধিশ্চিত্তবিকারিণী | সম্পদ চিত্তে বিকার আনয়ন করে। |
এ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
এঁচোড়ে পাকা অচিরেই গোল্লায় যায় | ছেলেবেলায় উচ্ছন্নে গেলে তার উন্নতি আর হয় না। |
এঁটে ধরলে চিঁচিঁ করে, ছেড়ে দিলে লম্ফ মারে | ভীরুলোক কড়া হ'লে জব্দ থাকে, ঢিলে দিলে লম্ফঝম্ফ করে। |
এঁটো খায় মিঠার লোভে, যদি এঁটো মিঠা লাগে | লাভের গন্ধ থাকলে মানুষ নীচু কাজ করতেও পিছুপা হয় না, |
এঁটোপাত না যায় স্বর্গে | নীচু কখনো উঁচুপদ পায় না; পরমুখাপেক্ষীর সমৃদ্ধি সম্ভব হয় না। |
এঁড়ে গরু না টেনে দো | যা সম্ভব নয় তাই করতে যাওয়া। |
এঁড়ে গরুর দুধ | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি। |
এঁদো (পানাপচা) পুকুরে ডুবে মরা | বিরাট কাজ করে সামান্য ভুল করা। |
এ কূল ও কূল দুকূল গেল, অকূল পারে গোকুল | দু'দিক বজায় রাখতে গিয়ে বেসামাল। |
এ গিরগিটি নয়, সাক্ষাৎ মা মনসা | তীব্রশক্তির ক্ষেত্রে প্রযুক্তল ভয়াঙ্ক ক্ষতি হতে পারে। |
'এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটা পাত্রে. বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে'- রবীন্দ্রনাথ১ | মানুষের বাসনাকামনার শেষ নেই; একটার পরিতৃপ্তি অন্য বাসনা ডেকে আনে। |
'এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটা পাত্রে. বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে'- রবীন্দ্রনাথ২ | নিস্ফল বা বৃথা প্রচেষ্টা; সমতুল্য- অন্ধকারে ঢিল/ঢেলা ছোঁড়া/মারা // অন্ধকারে লাউ কোটা। |
এ তো সবে কলির সন্ধ্যে | অধঃপতনের সবে শুরু; ভয়াবহ সঙ্কটের সূচনামাত্র। |
এ যদি গোরাচাঁদ হয়, তবে কালাচাঁদ কেমন? | বলার সাথে কাজের কোন মিল নেই। |
এ যে ঘোর কলি | প্রচণ্ড অন্যায়ল সহ্যের বাইরে। |
এই ডুমুরের গরব কর; পাকলে ডুমুর পড়ে মর | সুন্দর ডুমুর পাকলে ঝরে পড়ে; সুতরাং সৌন্দর্যের জন্য গর্ব করা বৃথা। |
এই দৃঢ় বিশ্বাস মনে রেখো, জীবিত বা মৃত, ভাললোকের কোন ক্ষতি হয় না (উপনিষদ) | সৎপথে থাকলে ক্ষতির কোন সম্ভাবনা নেই। |
এই বিড়াল বনে গেলে বনবিড়াল হয় | অবস্থান্তর ঘটলে স্বভাবেও পরিবর্তন আসে; যে যায় লঙ্কায় ষে হয় রাবণ। |
এই মানুষ বনে গেলে বনমানুষ হয় | দুষ্টচক্রে পড়লে সৎমানুষও অসৎমানুষে পরিণত হয় |
এক অগ্রানে ধান তিন শ্রাবণে পান- খনা | এক অগ্রানেই ধান পাওয়া যায়, কিন্তু তিন শ্রাবণের কম পান চাষ ঠিক হওয় নয়া (ধান ও পান চাষ পদ্ধতি) |
এক অনার/আনার সৌ বীমার- হিন্দি প্রবাদ | বস্তু একটি, কিন্তু পাওয়ার জন্য দাবীদার অনেক; একটা বিষয়য় নিয়ে সকলের মধ্যে কাড়াকাড়ি। |
এক আঁচড়ে চেনা যায় | সামান্য পরীক্ষা করে মানুষ চেনা যায়; সামান্য চিহ্নের ব্যক্তি ও বস্তুর গুণাগুণ বোঝা যায়। |
এক আকাশে দুই সূর্য | দুই প্রবলশক্তির পাশাপাশি থাকা, যা সম্ভব নয়; সমতুল্য- 'এক খাপে দুই তরোয়াল', 'একবনে দুই বাঘ' ইত্যাদি। |
এক আঙটা বিকল তো সমস্ত শিকল বিকল | মানুষের দুর্বলতম স্থানের প্রতি ইঙ্গিত। |
এক আঙুলে তুড়ি লাগে না | দ্বন্দ্বে দু’পক্ষ অবশ্যই থাকা প্রয়োজন |
এক ওয়াকিফহাল সাত নবিসিন্দা- হিন্দি প্রবাদ | একজন পারদর্শী সাতজন শিক্ষানবিশীর সমান। |
এক ঔর এক গ্যারহ হতে হৈঁ- হিন্দি প্রবাদ | সংগঠনে শক্তি বাড়ে; সকলে মিলে কাজ করলে কাজ সহজ হয়; সমতুল্য- 'একতাই বল'। |
এক কড়া বুদ্ধি নেই চার কড়ার মেজাজ | অবোধের হম্বিতম্বি বেশি। |
এক কড়ার মুরোদ নেই কিল/ভাত মারার গোঁসাই | দুর্বলতা লুকোতে অক্ষমের দুর্ব্যবহার। |
এক কলসী দুধে এক ফোঁটা চোনা | একদোষে সবগুণ নষ্ট; এমন উৎকট মন্দ জিনিষ যার অত্যল্প পরিমাণ প্রচুর ভালো জিনিষ নষ্ট করে সর্বাংশে ভাল কাজ করে ছোট্ট একটা দোষে বদনাম কেনা বা সব সুনাম নষ্ট; শেষরক্ষা না হওয়া। |
এক কাটে ভারে, আরেক কাটে ধারে | কোন কিছু কাটতে অস্ত্রের ধার ও ধার দুই লাগে; তেমনি শক্তি ও বুদ্ধির সমন্বয়ে কার্যসিদ্ধি হয়। |
এক কাঠি বাজে না | নিজের সাথে দ্বন্দ্ব হয় না; দ্বন্দ্বে দুইপক্ষ লাগে। |
এক কান কাটা বাজার/রাস্তা/সহরের ধার দিয়ে যায়, দুকান কাটা বাজার/রাস্তা/সহরের মাঝদিয়ে যায় | অল্প-বেহায়ার কিছু লজ্জাবোধ থাকে; নির্লজ্জ-বেহায়া নিজেকে বেশি জাহির করে আনন্দ পায়। |
এক কানা আরেক কানাকে পথ দেখালে দুজনেই খানায় পড়ে | দুজনেই বিচারে অক্ষম; সবক্ষেত্রে এক এক মিলে দুই হয় না। |
এক কানে শোনে অন্য কানে বেড়োয় | কাজে একান্ত অমনোযোগী। |
এক কাল ঠেকেছে তিন কাল গিয়ে | অতিবৃদ্ধ লোক। |
এক কিলো জিনিসে পাঁচ কিলো ঠকায় | মাত্রাহীন/লাগামছাড়া চুরি। |
এক কূল ভাঙে তো এক কূল গড়ে | সংসারে শুধু ভাঙা গড়ার খেলা চলে। |
এক কেঁড়ে দুধে এক ছিঁটে চোনা | একটু দোষে সব কাজ পণ্ড। |
এক কোপে বটগাছকে ফেলা যায় না | বৃহৎকে সহজে কাবু করা যায় না। |
এক ক্ষুরে মাথা কামানো | একরকম অপরাধে অপরাধী; একগোত্রের লোক; সকলের এক দশা। |
এক খাপে দুই তরোয়াল // একস্থানে দুই তরোয়াল- হিন্দি প্রবাদ | দুই প্রবলশক্তি পাশাপাশি থাকে না; সমতুল্য- 'এক আকাশে দুই সূর্য', 'এক বনে দুই বাঘ' ইত্যাদি। |
এক খায়, এক থিতায় | একটা খায়,সঙ্গে পরেরটা কি খাবে ভাবে; বর্তমানে খায় সঙ্গে ভবিষৎ খাবারের সংস্থান করে; অভিষ্টবস্তু পাওয়ার সঙ্গে পুনরায় সেটি পাওয়ার জন্য সচেষ্ট হয়। |
এক খাল কেটে অন্য খাল ভরায় | চূড়ান্ত ধান্ধাবাজী। |
এক গাঁয়ে ঢেঁকি পড়ে, অন্য গাঁয়ে মাথা ধরে | যার সাথে কোন সম্পর্ক নেই, তার জন্য মাথাব্যথা; অনধিকার চর্চা করা। |
একগাঁয়ের কুকুর অন্যগাঁয়ে ঠাকুর | স্থানান্তরে নিজ পরিচয় লুকিয়ে সাধু সাজা যায়; সমতুল্য- অতিচেনার কদর নেই |
এক গাছের ছাল অন্য গাছে জোড়া লাগে না | সমধর্মী না হলে মিল হয় না; পর কখনো আপন হয় না। |
এক গালে চূণ অন্য গালে কালি মাখানো/লাগানো | চরম অপমান করা। |
এক গুলতিতে দুই পাখি মারা // এক গোলি দো চিড়িয়া- হিন্দি প্রবাদ | এক চেষ্টায় দুই কাজ সম্পন্ন করা; সমতুল্য- 'রথ দেখা কলা বেচা'। |
এক গোয়ালে বিয়াইছে গাই সেই রিস্তায় চাচাতো ভাই | গোঁজামিল দিয়ে সম্পর্ক দেখানোর অপচেষ্টা। |
এক চন্দ্রই যে অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না | হাজার নির্গুণে সমাবেশে এক গুণীর সৃষ্টি হয় না। |
এক চন্দ্রে জগৎ আলো | একাই একশ। |
এক চাকাতে রথ চলে না | নিজের সাথে বিবাদ হয় না; বিবাদে দুপক্ষ থাকে। |
এক চুল ক্ষতি করতে না পারা | কোন ক্ষতি করতে না পারা। |
এক চোখে কাঁদা এক চোখে হাসা | অবিমিশ্র সুখ হয় না; একই সঙ্গে সুসংবাদ ও দুঃসংবাদ এলে এমন মনের অবস্থা হয়; কপটচারী লোক-দেখানো দুঃখপ্রকাশ করে এবং মনে মনে আনন্দ করে। |
এক ছাতার তলে বাস | এক স্বভাবের লোক; সমদোষে দুষ্ট; সবাই মন্দলোক; সবারই একই দশা। |
এক ছেলে তার ফুলের শয্যে, পাঁচ ছেলে তার কাঁটার শয্যে | একছেলে সবসময় আদর যত্ন পায়; পাঁচছেলে হলে কারো ভাগ্যে আদরযত্ন জোটে না। |
এক ছেলে যার হাজার মানত তার | মা-বাবা অজানা আশঙ্কায় সবসময় ভীত থাকে। |
এক জঙ্গলে দুই বাঘ থাকে না | দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী পাশাপাশি থাকে না। |
একজন মা বুঝতে পারে একজন শিশু যে কথা বলে না- ইহুদী প্রবাদ | মাতৃহৃদয়ের তুলনা হয় না; একমাত্র মাই বোঝে শিশুমনের কথা। |
এক জায়গায় থাকলে হাঁড়িতে হাঁড়িতে ঠোকাঠুকি হয় | যত কষাকষি তত লাঠালাঠি; অন্তরঙ্গতায় মন কষাকষির সম্ভাবনা থেকে যায়। |
এক ঝিকরে/টানেতে মাছ গাঁথে না এ কেমন বঁড়শি, এক ডাকেতে সাড়া দেয় না সে কেমন পড়শি? | বঁড়শি ও পড়শির উপকারে আসা উচিৎ ছিল; গুণের না হ'লে কোন কাজের হয় না। |
এক টাকা সঞ্চয়ের অর্থ এক টাকা আয় // এক পয়সা জমানো মানে এক পয়সা রোজগার করা | অর্থের অপচয় সমর্থনযোগ্য নয়। |
এক ডালে দুই পাখি, গা্য়েগায়ে মাখামাখি | মনের মিল থাকলে পাশাপাশি বাস করা যায়। |
এক ঢিলে দুই পাখি মারা | এক গুলতিতে দুই পাখি মারার অনুরূপ। |
এক তালুকে দুই ভালুক থাকে না | তুলনীয়- এক জঙ্গলে দুই বাঘ থাকে না। |
এক দিকে ছুঁচ গলে না, অন্য দিকে হাতি গলে | ছোটখাটো বিষয়ের দিকে আমরা বেশি নজর দিই। |
এক দুয়ার বন্ধ তো হাজারদুয়ার খোলা | ভিক্ষুকের প্রতি বক্রোক্তি। |
এক দেখে শেখা আরেক ঠেকে শেখা | নানাভাবে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়। |
এক দোষে সব গুণ ক্ষয় হয় | ছোট্ট একটা বদনাম সব সুনাম নষ্ট করে দেয়। |
এক পন্থ দো কাজ- হিন্দি প্রবাদ | এক উপায়ে দুই কাজ করা; এক ঢিলে দুই পাখি মারা; দ্বিগুণ লাভ; সমতুল্য- 'রথ দেখা কলা বেচা'। |
এক পয়সা জমানো মানে এক পয়সা রোজগার | স্বল্পসঞ্চয় থেকে একদিন বিরাট অর্থে পরিণত হয় |
এক পয়সা নেই থলিতে, লাফিয়ে বেড়ায় গলিতে | ভিতরে টানাটানি বাইরে ফুটানি। |
এক পাঁঠা/মুরগি তিনবার কাটা | ধান্ধাবাজী করে এবং ধান্ধাবাজী ধরা পড়ে; একটা জমি তিনবার তিনজনকে বিক্রি করারা ধান্ধা। |
এক পা জলে এক পা স্থলে | কোনদিকে নয়; বেড়ার ওপর বসে; দু নৌকায় পা; দ্বিধা-দ্বন্দ্বে মনস্থির করতে অপারগ; কিংকর্তব্যবিমূঢ় ইত্যাদি। |
এক পাগলে রক্ষা নেই সাত-পাগলের মেলা | চরম বিশৃঙ্খলা; একটা সমস্যাতেই জর্জরিত, সেখানে একাধিক সমস্যা এসে উপস্থিত। |
এক পায়ে খাড়া | উদগ্রীব, এখনি রাজী। |
এক পালকের পাখি এক যায়গায় ভিড় করে | সংঘবদ্ধ হওয়া প্রকৃতির স্বাভাবিক ধর্ম। |
এক পুতের আশ/আশা, নদীর তীরে বাস/বাসা | এক ছেলের বাবামা সবসময় অপুত্রক হওয়ার আশঙ্কায় ভোগে। |
এক ফুলে মালা হয় না | বিরাট কাজে যৌথ উদ্যোগ চাই। |
এক ফোঁটা শিশিরেও বন্যা হতে পারে, যদি গর্তটা পিঁপড়ের হয় (ফারসী প্রবাদ) | সব কিছুই আপেক্ষিক। |
একবার দংশন দুইবার কুণ্ঠা | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শিক্ষা দেয়; সমতুল্য- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়', 'গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায় ইত্যাদি। |
এক বনে দুই বাঘ থাকে না | দুই প্রবলশক্তি পাশাপাশি থাকে না; সমতুল্য- 'এক আকাশে দুই সূর্য থাকেনা', 'এক খাপে দুই তরোয়াল থাকে না' ইত্যাদি। |
এক বাক্সে সব ডিম রাখা ঠিক নয় | গেলে সব একসাথে যাবে। |
এক ব্যঞ্জন ভাত, তাও আবার নুনে পোড়া | কষ্টের ওপর কষ্ট; একমাত্র দুশ্চরিত্র ছেলের জন্য মা-বাবার মনোকষ্ট। |
এক ভস্ম আরেক ছার(ক্ষার=ছাই), দোষগুণ কব কার | কে কারে দোষে, দুইই সমান অপদার্থ, দুই সমান অপরাধী। |
এক মন হলে সমুদ্র শুকায় | সবাই একসাথে কাজ করলে অসাধ্যসাধন করা যায়। |
এক মাঘে শীত যায় না | বিপদাপদ শুধু একবারই আসে- এমন ধারণা ভুল। |
এক মাণিক (বড় রত্ন) সাত রাজার ধন | পরমপ্রিয় পুত্র। |
এক মায়ের পুত, খায় দায় যেন যমের দূত | অত্যধিক আদর পেয়ে দুর্দমনীয় ছেলে। |
এক মিথ্যা হাজার মিথ্যার জন্ম দেয় | এক মিথ্যা চাপতে হাজার মিথ্যা কথা বলতে হয়। |
এক মুখ সোনা দিয়ে ভরা যায়, তিন মুখ ছাই দিয়েও ভরে না | একজনকে সন্তুষ্ট করা যার সবাইকে পারা যায় না। |
এক মুখে দুই কথা/ তিন কথা শুনে মনে/প্রাণে লাগে ব্যথা | নীতিহীনতা পীড়াদায়ক; যে কথা দেয় কিন্তু কথা রাখে না বা অস্বীকার করে তাকে কেউ পছন্দ করে না; কথার হেরফের সত্যিই বেদনাদায়ক। |
এক মুরগি কবার জবাই? | একটা জমি বিক্রি করারা নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে আগাম নেওয়ার মত ধান্ধাবাজী ধরা পড়ে; |
এক মুরগি সাতবার জবাই | চুড়ান্ত ধান্ধাবাজী। |
এক যাত্রায় পৃথক ফল | অভিন্ন কাজের একজন পুরস্কৃত তো অন্যজন তিরস্কৃত। |
এক রত্তি দড়ি সকল ঘর বেড়ি | সামান্য ক্ষমতায়/সম্পদে সব সমস্যা মেটানোর চেষ্টা। |
এক লাউয়ের বিচি কেউ করছে কচরকচর, কেউবা আছে কচি | এক পিতামাতার পাঁচটা ছেলে পাঁচরকম। |
এক লাঠিতে সাত সাপ মারি | এক কৌশলে বহুকাজ হাসিল করার চেষ্টা। |
এক লাফেই তালগাছে ওঠা যায় না | সব কিছুতেই আয়াস লাগে, সময় লাগে। |
এক সুপুত্রে বংশ ধন্য | সু-এর তুলনা হয় না। |
এক হাজার পদক্ষেপ নিয়ে এক মাইলের যাত্রা শুরু- চীনা প্রবাদ | প্রতিটি বিশাল কাজের একটি ছোট্ট শুরু থাকে। |
এক হাটে কিনে অন্যহাটে বেচা | বুদ্ধিমান, লাভের উদ্যোগ। |
এক হাত নড়ে না দুই হাত নড়ে | দুপক্ষ না হলে বিবাদ হয় না। |
এক হাত পায় এক হাত মাথায় | কখনো সম্মান করে কখনো অপমান করে। |
এক হাতে তালি বাজে না | এক পক্ষের দোষে বিবাদ হয় না। |
একই সাথে মনোহর ও হিতকারী বাক্য দুর্লভ | সত্যকথা সর্বদা অপ্রিয় হয়; হিতং মনোহারি চ দুর্লভং বচঃ। |
এককে আর দেখবে বেগার | বেগার ধরে কাজ করালে কাজ প্রায় ঠিক হয় না; এককে আর হয়ে যায়। |
একচোখে কাঁদা, অন্য চোখে হাসা // একচোখে কান্না,এক চোখে হাসি | সুখ-দুঃখ মিলিয়ে সংসার; অন্য অর্থে কপটচারিতা- পরের দুঃখে লোক দেখানোর জন্য কাঁদে কিন্তু মনে মনে হাসে। |
একচোখো মাসি কারে ভালোবাসি | মা ও মাসি সমান হতে পারে না। |
একজন ঘুমন্ত মানুষ আরেকজন ঘুমন্ত মানুষকে জাগাতে পারে না | নির্গুণের ছোঁয়ায় কেউ গুণী হয় না। |
একজন বন্ধুর চেয়ে একজন শত্রু থাকা ভালো | সেক্ষেত্রে নিজের দোষ জানতে পারা যায়। |
একজন বন্ধুলাভ দশজন বন্ধুহারানোর সমানই | কোন প্রাপ্তিযোগই হারাতে নেই। |
একজন মানুষ যা করতে পারে তার বেশি সে পারে না | সাধ্যের বেশি কেউ করতে পারে না, করার চেষ্টা করাও উচিত নয়। |
একজন শত্রুর স্মিতহাসি থেকে একজন বন্ধুর ভ্রুকুটি ভাল | সেক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে। |
একজনকে বন্ধু করার আগে তার সাথে এক যোজন পথ হাঁটো | হাত বাড়ালেই প্রকৃত বন্ধু মেলে না; বন্ধু চিনতে সময় লাগে। |
একজনের কাছে অমৃত অন্যজনের কাছে বিষ | সব জিনিষ সবার কাছে সমান বা উপযোগী নয়। |
একটি আজকাল দুটি আগামীকালের সমান | আজ নিশ্চিত কাল অনিশ্চিত; অনিশিচতের পিছনে ছুটতে নেই; সমতুল্য- 'হাতের একটা পাখি বনের দুটি পাখির সমান' । |
একটা/টি কড়িকাঠ যত বড়ই হোক-না-কেন সমগ্র বাড়ীর ভার বইতে পারে না- চীনা প্রবাদ | একার শক্তি কোন শক্তি নয়; এক পায়ে খাড়া থাকা যায় না। |
একটা/টি ছোট্ট ছিদ্রও বিরাট জাহাজকে ডোবাতে পারে | একটি ছোট ভুল বিরাট ক্ষতি করতে পারে। |
একটা/টি ছোট্ট তিন-ইঞ্চির জিভ সাত-ফুটের একজন দশাসই ব্যক্তিকেও ধরাশায়ী করতে পারে (চীনা প্রবাদ) | রসনা সংযত রাখার পক্ষে চেতাবনি। |
একটা/টি দিয়াশলাই কাঠি খাণ্ডবানল সৃষ্টি করতে পারে | কোন তুচ্চ বিষয় তুচ্চ নাও হতে পারে। |
একটা/টি দোষ বহু গুণকে গ্রাস করে | দোষের প্রতিক্রিয়াশক্তি বহুগুণ বেশি। |
একটা/টি পতন তোমাকে জ্ঞনীমানুষ করে তোলে- চীনা প্রবাদ | পতন থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়। |
একটা/টি পদক্ষেপে হাজার মাইলের যাত্রা শুরু হয়- চীনা প্রবাদ | সব বিশালের শুরু সামান্য দিয়েই শুরু হয়। |
একটা/টি পয়সা সঞ্চয় হলে একটি পয়সা অর্জিত হয় | সঞ্চয় অর্থোপার্জনের মতই সমান গুরুত্বপূর্ণ। |
একটা/টি বই যেন একটি আস্ত ফুলের বাগান- চীনা প্রবাদ | বই পড়ে রূপ রস গন্ধ- সব আহরণ করা যায়। |
একটি বদরোগ ভাল করা যায়, একটি বদনাম ঘুচানো যায় না | বদরোগের কোন দোষ/কলঙ্ক নেই, বদনামে দোষ/কলঙ্ক মিশে থাকে। |
একটি বনাঞ্চল গড়তে দশবছর সময় লাগে, একটি মানুষ গড়তে একশবছর সময় লাগে | মানুষের অনুশীলন অনেক সময়সাপেক্ষ। |
একটি ভাত টিপলে, হাঁড়িসুদ্ধ ভাতের খবর মেলে | সবাই এক গুণসম্পন্ন হয়। |
একটি ভাল বই একজন ভাল বন্ধু | ভাল বই বন্ধুর মত ভাল পরামর্শদাতা হয়। |
একটি মিথ্যা ঢাকতে দশটা মিথ্যা কথা বলতে হয় | মিথ্যাকে সত্য প্রতিপন্ন করতে অনেক কথা বলতে হয়। |
একটি মূলার জন্য একটা গর্ত (চীনা প্রবাদ) | যে যার নিজের কাজ কর; অন্য অর্থে- কেউ অপরিহার্য নয়। |
একটি শিকল তার দুর্বল আংটাটার সমান শক্তিশালী // এক আংটা বিকল তো সমস্ত শিকলটাই বিকল- ইংরাজী প্রবাদ | অংশ বাদ দিয়ে সমগ্র হয় না; দলের সাফল্য তার প্রতি সদস্যের সাফল্যের উপর নির্ভর করে; সমতুল্য- 'একটি সুতা তার সবচেয়ে পাতলা জায়গাতে ছিঁড়ে'। |
একটি সুন্দর শুরু কাজের অর্ধেক সাফল্য এনে দেয় | পরিকল্পনা সঠিক হলে কাজের অর্ধেক শুরুতেই শেষ। |
একটা সুতা তার সবচেয়ে পাতলা জায়গাতে ছিঁড়ে- ইংরাজী প্রবাদ | অকর্মণ্য কর্মচারীদের জন্য প্রতিষ্টান ধ্বংস হয়; সমতুল্য- 'একটি শিকল তার দুর্বল আংটাটার মতই সমান শক্তিশালী'। |
একটু জানা/শেখা বিপজ্জনক ব্যাপার | অর্ধ-জ্ঞানী বিশেষজ্ঞ সেজে ভুল তথ্য জানায়। |
একটু হাসি দশবছর আয়ু বাড়িয়ে দিতে পারে // একটু হাসি দশবছর বয়স কমিয়ে দিতে পারে- চীনা প্রবাদ | বাঁচতে হ'লে হাসতে শেখো; হাসির মত ওষুধ হয় না। |
একটু হাসি লক্ষ দুশ্চিন্তা মুছে দিতে পারে। | হাসি নির্মল আনন্দের উৎস। |
একতাই বল | সমষ্টির শক্তিই আসল শক্তি। |
একতায় উত্থান, বিভেদে পতন | সংঘবদ্ধতার শক্তি অসীম। |
একদিন শয়তান তো চিরদিন শয়তান | চোর কখনো সাধু হয় না। |
একবরের মাগ চিংড়ীমাছে খোসা, দোজবরের মাগ নিত্য করে গোঁসা // একবরের স্ত্রী হেলফেলা, দোজবরের স্ত্রী গলায় মালা | দ্বিতীয়পক্ষের স্ত্রী তুলনায় স্বামীর বেশি আদরণীয়া হয়। |
একবার করার আগে দু'বার ভাবো | বুদ্ধিমান এক পা চলার পর একটু থামে। |
একবার না পারিলে দেখ শতবার | কার্যসিদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত থামতে নেই। |
একবার রোগী তো একবার রোজা (বৈদ্য) | অভিজ্ঞতা থাকলে প্রতিকার করা যায়; ভূক্তভোগী পরেরবারের জন্য সতর্ক; অন্য অর্থে- আজ সে সাহায্যপ্রার্থী হলেও কাল সে সাহায্যকর্তা হ'তে পারে। |
একবৃক্ষে যদা রাত্রৌ নানা পক্ষীসমাগম। প্রভাবতে তু দিশো যান্তি কা কস্য পরিবেদনা।। (চাণক্য) | রাত্রিকালে বাসের জন্য নানা পক্ষী এসে সমবেত হয়; প্রভাতসমাগমে তারা নানাদিকে চলে যায়; সুতরাং কার জন্য কি বেদনা? |
একমাত্র বিজ্ঞতম এবং মহামূর্খরাই পরিবর্তিত হয় না- কনফুসিয়াস | উভয়ই নিজের ধারণা সম্পর্কে গোঁড়া হয়। |
একমাত্র মৃত্যুই সকলকে সমান করে | মড়ার কোন জাতবিচার হয় না। |
একমেবাদ্বিতীয়ম | ঈশ্বর এক, দ্বিতীয় ঈশ্বর নেই। |
একরত্তি সোনা, স্যাঁকরা হাজার জনা | অল্পবিষয়ের বহু প্রার্থী |
একলা ঘরের গিন্নী চাবীকাটি ঝুলিয়ে নাইতে যাব | প্রতিটি নারীর সুপ্তবাসনা থাকে- ঘরের প্রভুত্ব করবো। |
একলা চলা চলা নয় | সবাই মিলে না চললে মানসিক অবসাদ আসতে পারে। |
একলা মানুষ, মানুষ নয় | মানুষ সামাজিক জীব, একলা থাকতে পারে না বা ভালবাসে না। |
একা কাঁদি, একা হাসি; গরম রেঁধে খাই বাসি | সুখেদুঃখে ভরা জীবন; একাকীত্বের জ্বালা। |
একা ঘরের একা ভাই খাইতে বড় সুখ, মারতে গেলে ধরতে নাই তাইতো বড় দুখ | একান্নবর্তী পরিবারের কোন তুলনা হয় না। |
একা রামে রক্ষা নেই সুগ্রীব/লক্ষণ তার দোসর | কষ্টের ওপর কষ্ট; একের বিক্রমই যার যথেষ্ঠ তার আবার সঙ্গীর কি প্রয়োজন; একের বিক্রমেই প্রাণ ওষ্ঠাগত দুইয়ের বিক্রমে মরলাম। |
একাই একশ | সব গুণের অধিকারী |
একাগ্রচিত্তে কাজ করলে পাহাড় টলানো/ডিঙানো যায়- চীনা প্রবাদ | চেষ্টায় কি না হয়; চেষ্টা করলে পঙ্গুও পাহাড় ডিঙাতে পারে। |
একা ঘরের বউ, খেতে বড় সুখ, মারতে এলে ধরতে নাই, তাতে বড় দুখ | অনেক মেয়েই যৌথপরিবারে থাকতে চায়না, নিজের সংসারে তারা সুখ পায়, কিন্তু দাম্পত্যকলহ বাঁধলে মিটমাট করিয়ে দেয়ার লোক থাকে না। একক পরিবারের কুফল সম্পর্কে চেতাবনী। |
একাদশে বৃহস্পতি | চরম সৌভাগ্য। |
একান্নও পাপ, বাহান্নও পাপ | পরিমাণ গুণে পরিবর্তন আনে না; গল্পে আছে এক দস্যু নদীর ধারে এক নারীর সতীত্ব রক্ষা করতে গিয়ে অত্যাচারীকে হত্যা করতে গিয়ে এই উক্তি করেছিল। |
একি ছেলের হাতে মোয়া? | সবদ্রব্য সহজলভ্য নয়; ভুলিয়েভালিয়ে ছেলের হাত থেকে মোয়াটা নেওয়া যায়, পাকা লোককে বোকা বানানো যায় না। |
একি বিধির খেলা কাকের/বকের/বিড়ালের গলায় তুলসীমালা | ভেকধারী ধার্মিকের প্রতি বক্রোক্তি। |
একুশ কোড়া গুণে খান, ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যান | অতি সুখী শরীর বা অভিমানী মন; গল্পে আছে এক রাজকন্যা উপপতির সব অত্যাচার সহ্য করত, কিন্তু ফুল ছূঁড়ে মারলে মূর্ছা যেত |
একুল ওকুল দুকল গেল অকূল পারে গোকুল | এদিকও গেল ওদিকও গেল, কোন দিক আর রইল না; ইতো নষ্টঃ ততো ভ্রষ্টঃ। |
একে গুণ গুণ, দুইয়ে পাঠ; তিনে গোলমাল চারে হাট | অভিজ্ঞতায় বলে দুইজন শিক্ষার্থী একসাথে পড়শুনা করলে পরস্পরের সাহায্যে লেখাপড়া সব থেকে ভাল হয়। |
একে চায় আরে পায় | কাঙ্ক্ষিত বস্তু ছাড়াও অন্য মনোমত বস্তু পেলে আনন্দে নেচে ওঠে। |
একে ছেঁড়াকাঁথা তায় শততালি | কষ্টের ওপর কষ্ট। |
একে মা মনসা তায় আবার ধূনার গন্ধ | ইন্ধন যোগানো; কোপনস্বভাবের ব্যক্তিকে উস্কে দিলে সে আরও ক্রোধান্বিত হয়। |
একে নাচনি বুড়ি তাতে পড়েছে ঢোলের বাড়ি // একেই নাচনি বুড়ি তায় নাতনীর বিয়ে // একে তো নাচুনি কালী, তাতে মৃদঙ্গের তালি // একে বউ নাচনি তায় খেমটার বাজনি | ইন্ধন যোগানো; উস্কে দিলে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। |
একে মা রাঁধেনা তার ওপর তপ্ত আর পান্তা | সামান্য বিষয় জোটে না, অসামান্যের দাবী; অনায্য দাবী। |
একেতো উমা তায় তুষার ধুমা | কষ্টের ওপর কষ্ট। |
একেতো ছাই- তার উপর বাতাস | কষ্টের ওপর কষ্ট। |
একেতো মধুপর্কের বাটি তায় আবার কাত | নানাদোষে দুষ্ট। |
একেতো হনুমান তায় আবার রামের বাণ | যন্ত্রণার উপর যন্ত্রণা। |
একেন পাপ শতেন কিংবা | একটা পাপ করলেও যা পাঁচটা করলেও তা; পাপ করতে যাওয়ার আগে পাপীর মনোভাব; যাহা বাহান্ন তাহাই তিপ্পান্ন। |
একেনাপি কুবৃক্ষেণ কোটরস্থেন বহ্নিনা। দহ্যতে তদ্বনং সর্বং কুপুত্রেণ কুলং যথা।। (চাণক্য) | যেমন একটিমাত্র কুবৃক্ষের কোটরের আগুনের দ্বারা সেই সমগ্র বন দগ্ধ হয়, তেমনি একটিমাত্র কুপুত্রের দ্বারা সমগ্র কুল কলঙ্কিত হয়। |
একেনাপি সুবৃক্ষেণ পুষ্পিতেন সুগন্ধিনা। বাসিতং স্যাদ্ বনং সর্বং সুপুত্রেণ কুলং যথা।। (চাণক্য) | যেমন সুগন্ধ ফুলে ভরা একটিমাত্র গাছের দ্বারাই সমগ্র বনভূমি (সুগন্ধে) আমোদিত হয়, তেমনি একটিমাত্র সুপুত্রের দ্বারা সমগ্র বংশ গৌরবান্বিত হয়। |
একেবারে না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়া ভালো | কিছু না হওয়া অকাজের সামিল। |
একেবারে কিছু না করলে কুকাজ করা হয় | অলস না থেকে কিছু-না-কিছু করা উচিৎ। |
একেবারে না হওয়া থেকে দেরিতে হওয়া ভালো | তাতেও কিছু হয়। |
একের বোঝা, দশের আঁটি/লাঠি | ভাগাভাগি করলে সমস্যা অর্ধেক হয়ে যায়। |
এখন শুনলে না বঁধু যৌবনভব্রে, পশ্চাতে কাঁদিতে হবে অঝরঝরে | যৌবনের অহংকারে সব কিছু ফুৎকারে ওড়ালে বৃদ্ধবয়সে কপালে দুঃখ আছে। |
এখনই সন্দেশ খেয়েচি, চায়ে চিনি দিওনা, সুগার আছে | নিজেকে জাহির করার মানসিকতা; দেখনদারী। |
এগুনে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী | গুণ অদ্শ্য; রূপ দৃশ্য; তাই রূপই প্রথম আকর্ষণ করে। |
এগুলে রাম, পেছুলে রাবণ // এগুলে সর্বনাশ, পেছুলে নির্বংশ // এগুলে নির্বংশের ব্যাটা, পেছুলে নির্বংশের ব্যাটা | উভয়সঙ্কট; প্রাণপণ খেটেও কারও সন্তোষবিধান করা যায় না। |
এড়া কাজে বেড়া | জটিল বাঁকাধরণের কাজে বিপত্তি বেশি হয়। |
এড়ে (ছেড়ে) দিয়ে তেড়ে ধরে | পাওয়া সুযোগ হেলায় ছেড়ে দিয়ে ফিরে পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা। |
এত বড় হাবা জন্ম দেয়নি কারো বাবা | মহামূর্খ। |
এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু রঙ্গভরা- ঈশ্বর গুপ্ত | নানা সমস্যায় বাংলা বারবার বিদীর্ণ হচ্ছে তবুও তার ভাবজগৎ নানা ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ। |
এত সুখ যদি তোর কপালে তবে কেন কাঁথা বগলে? | বাহ্য লক্ষণ দেখে মনে হয় মেকি সুখী, সুখের ভান; কারো আত্মগৌরব প্রচারে অবিশ্বাস। |
এতে কিছু যায় আসে না কত আস্তে তুমি হাঁটছো, যতক্ষণ না তুমি থামছো- কনফুসিয়াস | চলাটাই হল আসল কথা; জীবন কখনো স্থির নয়; বেদের উপদেশ- চরৈবেতি চরৈবেতি। |
এতো মূলোবাড়ী নয় এতো বেগুনবাড়ী | যেস্থানে একসময়ে সাহায্য পাওয়া যায় সেটি হল মূলোবাড়ী; যেস্থানে অল্প হলেও সবসময় সাহায্য পাওয়া যায় সেটি হল বেগুনবাড়ী। |
এদিক নেই ওদিক আছে | বাড়াবাড়ির প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
এনে দাও কাছে মারি, বাপের পূণ্যে নড়তে নারি | অলসের উক্তি। |
এমন মানবজীবন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা | ঠিক সময়ে ঠিক কাজ করলে জীবনরূপ জমি ফুলে-ফলে ভরে তোলা যায় |
এমনকি একজন বোকারও একটি প্রতিভা আছে- জাপানী প্রবাদ | কেউই একেবারে বোধশূন্য হয় না; কাউকেও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে নেই। |
এমনকি একটা/টি খরগোশও কামড়াতে পাড়ে যদি সে কোণঠাসা হয়- চীনা প্রবাদ | প্রাণীমাত্রই মরণ পণ করে আত্মরক্ষা করত চায়। |
এমনকি বানরেরাও গাছ থেকে পড়ে- জাপানী প্রবাদ | দক্ষ মানুষেরও কাজে ভুল হ'তে পারে। |
এমনি কেউ কারও বন্ধু নয় বা শত্রু নয় | অকারণে কিছু হয় না। |
এমনি যায় না মাস, তায় আবার দুদিন বেশি | প্রচণ্ড টানাটানি; কষ্টের ওপর কষ্ট। |
এরণ্ডোহপি দ্রুমায়তে | বৃক্ষহীন দেশে ভেরেণ্ডাও বৃক্ষ বলে বিবেচিত হয়। |
এর মুণডু ওর ঘাড়ে | একজনের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানো। |
এলো শ্রাদ্ধের গুঁতো দক্ষিণা | যে কাজে শৃঙ্খলা নেই শেখানে লাভ না হয়ে লোকসানই হয়। |
এসেছি একা, যাবোও একা, কার সঙ্গে কার বা দেখা। | কেউ কারো নয়। |
এ্যাং যায়, ব্যাং যায়, খলসে বলে আমিও যাই- অমৃতলাল বসু১ | সবাই সমান/সঙ্গী হতে চায়; যে কাজে সে অসমর্থ সেই কাজ করতে গিয়ে হাস্যাস্পদ হয়। |
এ্যাং যায়, ব্যাং যায়, খলসে বলে আমিও যাই- অমৃতলাল বসু২ | 'বামুন কায়েতরা জাত নিয়ে মারামারি করে, তাঁতিরা বলে আমরা চুপ করে থাকি কেন?'-টেকচাঁদ ঠাকুর |
এ্যায়সা দিন নেহি যায়েগা, জোয়ারমে ভাটা গিরেগা, খেয়াল ঠিক রাখনা। | চিরদিন কারো সমান যায় না; চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ। |
ঐ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঐ দিন আর নাইরে নাথু খাবলা খাবলা খাবা ছাতু | সুযোগ নেবার দিন শেষ। |
ঐ ধান ঐ চাউল গিন্নিগুণে আউল-ছাউল | সব এলোমেলো। |
ঐশ্বর্য অর্জন করা সহজ, রক্ষা করা কঠিন। | ধনসম্পদ যত সহজে পাওয়া যায় তত সহজে রাখা যায় না। |
ঐশ্বর্য চিত্তের বিকার ঘটায় | ঐশ্বর্য ভোগলিপ্সা বাড়ায়, চিত্তের স্থিরতা নষ্ট করে। |
ঐশ্বর্যের দেমাক থেকে অন্তরের টান অনেক বেশি আদরণীয়; | সমতুল্য- 'আদরের ভোজন কি করে ব্যঞ্জন', 'আদরের ডাল-ভাতও ভাল, বিনা আদরের ঘি-ভাতও ভাল না', 'রাজার ভুরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্ন ভাল' ইত্যাদি। |
ঐশ্বর্যস্য বিভূষণং সুজনাতা, শৌর্যস্য বাকসংযমো, জ্ঞানস্যোপশমঃ কুলস্য বিনয়ো, বিত্তস্য পাত্রে ব্যয়। অক্রেবিস্তপমঃ ক্ষমা, বলবতাং ধর্মস্য নির্ব্যাজতা, সর্বেষামপি সর্বকারণমিদং শীলং পরং ভূষণম্॥ (চাণক্য) | ঐশ্বর্যের অলংকার সৌজন্য, শৌর্যের অলংকার বাক্সংযম, জ্ঞানের অলংকার প্রশান্তি, বংশের অলংকার বিনয়, ধনের অলংকার যথাযথ পাত্রে ব্যয়, তপস্যার অলংকার ক্রোধহীনতা, বলবানের অলংকার ক্ষমা, ধর্মের অলংকার সরলতা, আর সবের মধ্যে সচ্চরিত্রতাই সর্বশ্রেষ্ঠ অলংকারস্ব |
ঐশ্বর্যের সময় দারিদ্রের কথা ভেবো, দারিদ্রের সময় ঐশ্বর্য্যের কথা ভেবো না- চীনা প্রবাদ | তাতে চিত্তের বিকার ঘটবে। |
ও[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ওজন বুঝে চলা১ | আত্মসম্মান বজায় রেখে চলা। |
ওজন বুঝে চলা১ | অপব্যয় না করা, মিতব্যয়ী হওয়া; সমতুল্য- আয় বুঝে ব্যয় করা; কাপড় বুঝে জামা কাটা ইত্যাদি |
ওঝার ঘাড়ে ভূতের বোঝা | রক্ষাকর্তার উপর অতিরিক্ত চাপ; যে ব্যক্তি বিপদ থেকে রক্ষা করে সেই বিপদে পড়েছে। |
ওঝার বেটা বনগরু | পণ্ডিতের ছেলে মহামূর্খ। |
ওঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে | অপ্রস্তুত অবস্থায় কাউকে কিছু করতে বলা; প্রস্তুতি ছাড়াই হঠাৎ কিছু করতে আহ্বান করা। |
ওপরে চিকণ চাকণ ভেতরে খ্যাড়(=খড়) | বাইরে বাবু ভিতরে ফকির। |
ওম জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্। ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্।। | প্রভাতী সূর্যপ্রণামমন্ত্র। |
ওরে পাগল খাবিনে, না, হাত ধোব কোথা? | সেয়ানা পাগল। |
ওল কচু মান তিনই সমান | সবগুলি তুল্যমূল্য, উনিশ-বিশ। |
ওল খেয়ে গোল | সমস্যার সম্মুখীন। |
ওল বলে, মানকচু তুই নাকি লাগ | নিজের ত্রুটির প্রতি নজর নেই পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়। |
ওলো রঙ্গী তোর ঘর পড়েছে, 'পুড়ুক গিয়ে ঘর; আমার ত রঙ পুড়বে না কো, কিবা তা'তে ডর' | রূপসী রূপের গর্ব নেচে বেড়ায় অন্য কোনদিকে নঞ্জর করে না; সেদিক থেকে সুপরামর্শের প্রবাদ- 'জাতের নারী কালাও ভালা','বিয়ে কর কালো
তাই গৃহস্থের ভালো'। |
ওষুধ ধরেছে | কাজের কাজ হয়েছে; প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। |
ওষধার্থে সুরাপান | মদ খাওয়ার পক্ষে বাহানা। |
ওষুধের চেয়ে পথ্যি ভালো | সুসমখাদ্য ডাক্তারের চেয়ে ভাল ডাক্তার। |
ওস্তাদের মার শেষ রাতে | দক্ষ ব্যক্তি শেষমূহুর্তে তার দক্ষতা দেখায়। |
ঔ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঔষুধ ধরেছে | ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে; ফল ফলতে শুরু করেছে। |
ঔষুধার্থে সুরাপান, পান না বাড়ালেই থাকে মান | পরিমিত সুরাপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। |
ক[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ক অক্ষর গোমাংস // ক লিখতে কলম ভাঙে // ক লিখতে হ লিখে | অক্ষরজ্ঞানহীন মহামূর্খ ব্যক্তি। |
কঃ পরঃ প্রিয়বাদিনাম | মিষ্টভাষীদের শত্রু হয় না। |
কঃ প্রাজ্ঞো বাঞ্ছতি স্নেহং বেশ্যাসু সিকিতাসু চ | বিজ্ঞব্যক্তি গণিকা ও বালুকা থেকে স্নেহরস পেতে চায় না (গণিকা ও বালুকায় স্নেহরস নেই) |
কই হইল আগরতলা, আর কই চৌকিরতলা | দুই অসম বিষয়ের মধ্যে তুলনা হয় না। |
কই মাছের প্রাণ অল্পেতেই না যান // কইমাছের প্রাণ শক্ত বড় | কষ্টসহিষ্ণু লোক অল্পেতে কাবু হয় না। |
কইয়ের তেলে কই ভাজা | যার কাজ তাকে দিয়েই কাজ হাসিল করা; বিনা পরিশ্রমে কার্যোদ্ধার। |
কইতে কইতে মুখ বাড়ে, খাইতে খাইতে পেট বাড়ে | সব কিছুতেই পরিমিতিবোধ থাকার প্রতি ইঙ্গিত। |
কইতে জানলে ঠকি না,বসতে জানলে উঠি না | জ্ঞানীগুণীরা কখনো অপ্রতিভ বা অপ্রস্তুত হয় না। |
কইতে পারি সইতে পারি না | কথা শোনাতে পারে কিন্তু কথা শুনতে নারাজ। |
কইলাম কথা সবার মাঝে/মধ্যে; যার কথা তার গায়ে বাজে/বিন্দে | পরোক্ষে কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা। |
কইলে যায় মনের দুঃখ খাইলে যায় পেটের ভুখ | চুপচাপ বসে থাকা যায় না; না খেলেও বাঁচা যায় না। |
কংস রাজার বদ (বধ) ফরমাশ | অন্যায় ও অসম্ভব আদেশ। |
কখনো অপ্রিয় সত্য কথা বলিও না | কেউই অপ্রিয় সত্য কথা শুনতে চায় না। |
কখনো খেওনা ওলে আর ঘোলে; কখনো ভুলো না ঢেমনার (লম্পট) বোলে | বিরুদ্ধ বস্তুর মিশ্রণ খেতে নেই; প্রবঞ্চকের কথায় বিশ্বাস করতে নেই; করলে প্রাণ ওষ্টাগত হবে। |
কখনো না হওয়া থেকে দেরীতে হওয়া ভালো | তবুতো কিছু হবে। |
কখনো প্রমাণ করতে যেওনা যা কেউ সন্দেহ করে না- চীনা প্রঃ | যেখানে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই সেখানে প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। |
কঙালী মেঁ আটা গীলা- হিন্দি প্রবাদ | কষ্টের ওপর কষ্ট; দুঃখীকে আরো দুঃখী হওয়। |
কচলা (ধোয়া) কাপড় ছাড়তে নাই | ভাগ্য সুপ্রসন্ন হ'লে কোন কাজ ছাড়তে নেই। |
কচি উচ্চে পাকা পটল, কচি পাঁঠা, পাকা কাতল (কাৎলা মাছ) | এইসব খাদ্য বড়ই সুস্বাদু। |
কচি পাঁঠা, পাকা মেষ, দইয়ের আগা ঘোলের শেষ, এইগুলি খেতে বেশ | এইসব খাদ্য খেয়ে বড়ই তৃপ্তি পাওয়া যায়। |
কচি খুকি কুলোয় শুয়ে তুলোয় দুধ খান | নির্বুদ্ধি বয়স্কামহিলা সম্পর্কে প্রযোজ্য। |
কচু কাটতে কাটতেই ডাকাত | লেগে থাকলে একদিন সিদ্ধি হবেই। |
কচুপোড়া খাও | ব্যর্থ মনোরথ হয়ে পড়ে থাকো; 'অণ্ডকোষ পুড়িয়ে খাও' অর্থে গ্রাম্য কুতসিৎ গালিবিশেষ। |
কচুবনের কালাচাঁদ | লম্পট, দুশ্চরিত্র ব্যক্তি; গল্পে আছে রমণীদের ভোলাবার জন্য রাতের অন্ধকারে কচুবনে লুকিয়ে থাকে। |
কচুর বেটা ঘেঁচু, তার আবার মান // কচুর বেটা ঘেচু,বড় বাড়েন তো মান। | অপদার্থের কোন মানসম্মান হয় না; নীচু নীচুই থাকে। |
কঞ্চিতে বংশলোচন জন্মানো | নীচের উচ্চপদ পাওয়া (কঞ্চিতে বংশলোচন জন্মালে কঞ্চি বাঁশের উচ্চপদ ল্পাভ হয়) |
কটি ছেলে? না, পুড়িয়ে খাব | বদ্ধকালার অসংলগ্ন কথাবার্তা। |
কড়িকাঠ গুণে যাও | ব্যর্থমনোরথ হয়ে পড়ে থাকো; অলসে সময় কাটাও। |
কড়ি থাকলে বাঘের দুধ মেলে | অর্থের অসীম শক্তি। |
কড়ি থাকলে বেয়াইয়ের বাপের শ্রাদ্ধ হয় | টাকার অপচয় করা যায়। |
কড়ি দিয়ে কানা গরু কেনা | অজ্ঞতাবশতঃ টাকা খরচ করে ঠকে গেলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
কড়ি দিয়ে কিনবো দই, গোয়ালিনী মোর কিসের সই | পয়সা খরচ করে জিনিষপত্র কিনতে হ'লে সে আত্মীয় হতে পারে না। |
কড়ি দিয়ে খাই দই, কি করবে মোর গয়লা সই | যে কোন বিষয়ে কারো কাছে বাধ্য নয়, সে এই প্রবাদ ব্যবহার করে। |
কড়ি নেবে গুণে, পথ চলবে শুনে | বিবেচনার সাথে কাজ সম্পাদন করা উচিৎ। |
কড়ি পেলে কাঠের ঘোড়া (ধর্মরাজ) হাঁ করে | ঘুষের দাপট। |
কড়ি ফটকা চিঁড়ে দই, কড়ির মত বন্ধু কই | টাকার জোরে সব মেলে; টাকার মত বন্ধু হয় না। |
কড়ি বই বন্ধু নেই | টাকা থাকলে ভাবনা থাকে না। |
কড়িতে কড়া/চতুর, কাহনে কানা | অল্প খরচে কিপ্টেমি, বেশি খরচে দরাজহস্ত। |
কড়িতে বাঘের দুধ মেলে- ভারতচন্দ্র | পয়সা খরচ করলে যেকোন দুস্প্রাপ্য বস্তু পাওয়া যায়। |
কড়ির জিনিষ পরিস না | মূল্যবান সামগ্রী কম ব্যবহার করবে। |
কড়ির মাথায় বুড়োর বিয়ে | কড়ি থাকলে বুড়ো বয়সেও বিয়ে করা যায়। |
কড়ির যত্ন নাও, কাহন (সঞ্চিত অর্থ) তোমার যত্ন নেবে | প্রয়োজনে অর্থের অভাব হবে না। |
কণশঃ ক্ষণশ্চৈব বিদ্যামর্থং চ সাধয়েৎ | একটু একটু করে এবং বহু সময় ধরে বিদ্যা ও অর্থ উপার্জন করবে। |
কণ্টকবিনা কমল নাই, কলঙ্কশূন্য চন্দ্র নাই | জগতে নির্দোষ বলে কিছু নাই। |
কণ্টকে কণ্টকোদ্ধার করা // কণ্টকেনৈব কণ্টকম | কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা; শত্রু দিয়ে শত্রু নাশ। |
কত জলে কত চাল/চিঁড়ে ভেজে দেখো | যা জানতে না তা এখন জেনে নাও। |
কত ঢং দেখালি গুয়ে, তুলসীতলায় শুয়ে শুয়ে | কপট আচারের প্রতি বক্রোক্তি। |
কত ধানে কত চাল জান না, কোন হিসাব রাখ না | কোনো বিষয়ের প্রকৃত অবস্থার খবর/হিসাব করে চলার প্রতি ইঙ্গিত। |
কত রঙ্গ দেখালে মাসি | আদিখ্যেতার প্রতি বক্রোক্তি। |
কত রবি জ্বলেরে, কেবা আঁখি মেলেরে! | অতি-অলসের উক্তি। |
কত শত গেল রথি, শেওড়াতলার চক্রবর্তী // কত হাতী গেল তল ভেড়া/মশা বলে কত জল | অক্ষমের আস্ফালন; বুদ্ধিহীনের বড়াই। |
কতই বা দেখবো আর ছুঁচোর/বানরের গলায় চন্দ্রহার | অযোগ্যের হাতে মহার্ঘবস্তু দেখে আক্ষেপ; যে অবস্থার অতিরিক্ত বেশভূষা করে হাস্যাস্পদ হয় তার প্রতি প্রযোজ্য। |
কতই সাধ ছিলরে চিতে মলের আগে চুটকি দিতে // কতই সাধ হয়রে চিতে, ফোকলাদাঁতে মিশি দিতে // কত সাধ হয়রে চিতে বেগুন গাছে আঁকশি দিতে | অক্ষমের বাসনা; নৈরাশ্যব্যঞ্জক উক্তি; যা হবার নয় তাই হবার ষে সম্পর্কে আক্ষেপোক্তি। |
কতক্ষণ রহে শিলা শূন্যেতে মারিলে? | পতন অনিবার্য। |
কথা কম কাজ বেশী | কথা থেকে কাজের দাম বেশী। |
কথা টলার চেয়ে পা টলা (আছাড় খাওয়া) ভালো | কথা দিলে কথা রাখতে হয়; অঙ্গীকার পালন করা প্রধান কর্তব্য। |
কথা দিয়ো ধীরে; কাজ করো তীরে (দ্রুত) | চিন্তাভাবনা করে কথা বলা উচিৎ; গদাইলস্করি চালে কাজ করা উচিৎ নয়। |
কথা বলা থেকে কথা শোনার দাম বেশী | জ্ঞানীরা শোনে বেশি বলে কম। |
কথা বলার আগে যথেষ্ঠ সময় নিতে হয় যাতে কথা ফলের মত পরিপক্ক (সার্থক) হয়- আরবী প্রবাদ | চিন্তাভাবনা করে কথা বলতে হয় যাতে কার্যসিদ্ধি হয়। |
কথা বেচে খাওয়া | কথার বিনিময়ে অর্থোপার্জন; লোক ঠকিয়ে জীবিকানির্বাহ। |
কথাবার্তায় ক্রোধের পরিমাণ খাবারের লবণের মত | পরিমিত হ'লে রুচিকর, বেশি হ'লে ক্ষতিকর। |
কথা শোনো দ্রুত; কথা বল ধীরে | কেউ কিছু বললে তৎক্ষণাৎ শোনও এবং ধীর ও স্পষ্টভাষায় উত্তর দাও। |
কথা শুনে পেটের ভাত চাল হয়ে যায় | বিপদের কথা শুনে আশঙ্কায়/ভয়ে প্রাণ শুকিয়ে যায়। |
কথা শুনে হরিভক্তি উড়ে গেল | নিতান্ত অশ্রদ্ধার কথা শুনে সব শ্রদ্ধা নষ্ট হল। |
কথায় কথা বাড়ে, ভোজনে পেট বাড়ে | বাকবিতণ্ডায় অনাবশ্যক কথার অবতারণা হয়; বেশি খেলে স্থূলোদর হয়। |
কথায় কলসী/পেট ভরে না // কথায় চিঁড়ে ভেজে না // কথায় ভাত রাঁধে না- চীনা প্রবাদ | শুধু কথায় কাজ হয় না; ফাঁকা আওয়াজে কাজ হয় না; ফাঁকি দিয়ে কাজ হাসিল হয় না। |
কথায় বড় হতে হবে না, কাজে বড় হও- ইহুদী প্রবাদ | আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে? |
কথায় বলে কথায় থাকো | প্রবাদে বলে সবার সাথে সম্পর্ক রাখো। |
কথায় মন ভিজে চিঁড়ে ভেজে না | শুধু কথায় কারো মন জয় করা যায় কিন্তু কোন কাজ হয় না। |
কথার কথা কাজের নহে | বাজে কথার মূল্য নেই। |
কথার গুণে বার্তা নষ্ট | বাকচাতুর্যে আসল কথা হারিয়ে যায়; বাক্যদোষে ঈপ্সিত ফললাভ হয় না। |
কথার চেয়ে কাজের গলা দরাজ | মানুষ কাজ চায়, কথা চায় না। |
কথার বেলায় ঢুসঢাস কাজের বেলায় হাওয়া // কথার বেলায় সরগম কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা | কথাবার্তায় পটু, কাজে কিছু না। |
কদম গাছের কানাই | লম্পট চরিত্রের লোক। |
কন্ওয়া বৈল্ বয়ারে সন্কৈ- হিন্দি প্রবাদ | কানা গরু বাতাস বইলেই ভয় পায়; ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়। |
কনের ঘরের মাসি, বরের ঘরের পিসি | দু'পক্ষেই আছে। |
কনের বাপ বসে বসে চোখের জলে ভাসে, বরের বাপ বসে আছে পাঁচশ টাকার আশে | বিয়ের অন্যায্য উপঢৌকনের প্রতি ইঙ্গিত। |
কনের মা কাঁদে আর টাকার পুটুলি বাঁধে | কন্যা বিক্রয়ে মায়ের মনোভাব ব্যক্ত; একদিকে কন্যার জন্য শোক; অন্যদিকে অর্থলালসা; এক চোখে কাঁদা আরেক চোখে হাসা। |
কন্যা বরয়তে রূপং, মাতা বিত্তং, পিতা শ্রুতম্। বান্ধবাঃ বরয়তে কুলমিচ্ছন্তি, মিষ্টান্নমিতরে জনাঃ। (চাণক্য) | কন্যা বরের রূপ; মাতা বরের অর্থ; পিতা বরের গুণ, আত্মীয়রা বরের কুল আর অতিথিরা ভোজন প্রত্যাশা করে। |
কপট বন্ধুত্ব থেকে প্রকাশ্য শত্রুতা ভাল | ভণ্ডামী কোন অর্থেই সমর্থনযোগ্য নয়। |
কপট বন্ধুর/প্রেমের লুকোচুরি, মুখে প্রেম অন্তরে/হৃদে ছুরি | কপটতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে চেতাবনি; কপটাচারী মুখে মিষ্টতার ভান দেখায়, অথচ মনে মনে অনিষ্ট করার চিন্তা করে। |
কপালগুণে গোপাল ঠাকুর | ভাগ্য ভালো থাকলে অযোগ্য ব্যক্তিও বড়ো হয়। |
কপাল ছাড়া গতি নাই | ভাগ্য ভিন্ন গতি নাই। |
কপাল ভাঙ্গলে জোড়া লাগে না | মন্দভাগ্য পালটায় না; একবার ভাগ্য অপ্রসন্ন হলে সহজে উন্নতি হয় না। |
কপাল ভালো তো সব ভালো | সৌভাগ্য থাকলে যাতে হাত দেবে তাই সফল হবে। |
কপালমূলং খলু সর্বদুঃখম | কপালই সব দুঃখের মূলকারণ। |
কপাল সঙ্গে সঙ্গে যায়/ কপাল সাথে সাথে ফেরে | যা হবার তা হবে; অভাগার কোথাও সুখ লেখা নেই |
কপালে তোর নেইকো ঘি ঠকঠকালে হবে কি? | ভাগ্যে না থাকলে প্রত্যাশা করে কোন লাভ নেই; যার কপালে সুখ লেখা নেই ষে শত চেষ্টাতেও কপাল ফেরাতে পারে না। |
কপালের লিখন যায় না খণ্ডন | ভাগ্যে যা আছে তা ঘটবেই; ভাগ্যে ভোগান্তি থাকলে ভুগতেই হয়। |
কবে রাম রাজা হবে, তবে সীতা উদ্ধার পাবে | দীর্ঘ প্রতীক্ষার কারণে হতাশা প্রকাশ। |
কম পানির মাছ বেশ পানিতে উঠলে ও মাছে বেশ লাফালাফি করে | প্রাণীমাত্রই নিজের পছন্দের পরিবেশ পছন্দ করে। |
কম্বল ও কমণ্ডুল না নিলে সাধু হওয়া যায় না | ভেকধারীদের প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
কম্বল(ভল্লুক) আমি ছেড়ে দিয়েছি কম্বল আমায় ছাড়ে না | নাচ্ছোড়বান্দার পাল্লায় পড়ে নাজেহাল। |
কম্বলের লোম বাছলে থাকে কি? | যেখানে সবাই মন্দ সেখানে মন্দলোক বাচতে যাওয়া বৃথা; ঠগ বাছতে গা উজাড়। |
কয়লা খেয়েছো আঙরা হাগো | যেমন কর্ম তেমন ফল। |
কয়লা ছাড়েনা ময়লা/কয়লা ধুলে ময়লা যায়না | কয়লা হাজার ধুলেও যেমন রঙ বদলায় না তেমনিই কুলোক কখনো কুপ্রবৃত্তি ছাড়ে না;সমতুল্য- 'অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি','ইল্লৎ যায় না ধুলে', 'স্বভাব যায় না মলে' ইত্যাদি। |
কয়লা ধুলে ময়লা যায় না // কয়লা না ছাড়ে ময়লা | খারাপলোক সহজে তার মন্দস্বভাব পরিবর্তন করতে পারে না; দুষ্ট, সুষ্ট হয় না; সমতুল্য- 'আদা শুকালেও ঝাল যায়না', 'মূলো খেলে মূলোর ঢেঁকুর ওঠে', 'রসুন ধুলেও গন্ধ যায় না', 'স্বভাব যায় না মলে' ইত্যাদি। |
কয়লা পুড়লে ময়লা যায় | আগুনে শুদ্ধ হলে কয়লার ময়লা যায়; জ্ঞানাগ্নিতে শুদ্ধ হলে মানুষের মনের অজ্ঞতা দূর হয়। |
কর গোবিন্দের বাপের শ্রাদ্ধ, আরও বামুন আছে | নগণ্য কাজের জন্য লোকের অভাব হয় না। |
কর যদি তাড়াতাড়ি ভুলের হবে বাড়াবাড়ি | তাড়াতাড়ি করলে নজর এড়িয়ে অনেক ভুল থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
করছে কীসের জাঁক, ময়না টিয়ে উড়িয়ে দিয়ে খাঁচায় পোষে কাক | অবিমৃষ্যকারিতার প্রতি ইঙ্গিত। |
করা থেকে বলা সহজ | কিছু করতে গেলে পরিশ্রম লাগে। |
করার আগে ভাবো, ভাবার আগে কোরো না | তাতে হটকারিতা কখনো হ'বে না। |
করুণার পাত্র হওয়া থেকে শত্রু হওয়া ভাল | অনুকম্পার পাত্রকে সকলে ঘৃণা করে। |
কর্কশ কথা আগুনের জ্বালার চেয়েও ভয়ঙ্কর- চাণক্য | অনেকের অনুভূতিই সেইরকম। কাউকে কটাক্ষ করা নেই। |
কর্জ করে যেই কষ্ট পায়/ভোগে সেই | ঋণী বড় দুখী; অঋণী খুবই সুখী। |
কর্তব্যো নাতি সঞ্চয়ঃ | বেশি সঞ্চয় করা উচিত নয়, তাতে কার্পণ্য, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি বাড়ে। |
কর্তা মুগের ডাল খান না; কেন খান না; পান না, তাই খান না | অলভ্য জিনিষ মন্দ; দুস্প্রাপ্য জিনিষে বৈরাগ্য; সমতুল্য- 'আঙুরফল টক'। |
কর্তা যে ঘি খান না, তা এক আচঁড়েই মালুম | আঁচড় টানলে হায়ে খড়ি পড়ে; পরীক্ষাতেই বিদ্যা প্রকাশ। |
কর্তার ইচ্ছায় কর্ম; উলুবনে কেত্তন। | সবলের অনুচিত ইচ্ছাপূরণ। |
কর্ত্তোব্য নাতি সঞ্চয় | বেশি সঞ্চয় করা উচিৎ নয়; তাতে নানা দোষ আসতে পারে, যেমন- কার্পণ্য, দুশ্চিন্তা, বিলাসিতা দম্ভ ইত্যাদি। |
কর্মণা বাধ্যতে বুদ্ধিঃ ন বুদ্ধ্যা বাধ্যতে কর্ম | কর্ম (অদৃষ্ট) বুদ্ধিকে বশীভুত করে; বুদ্ধি কর্মকে বশীভূত করে না। |
কর্মণা হি প্রধানেন বুদ্ধিনাং কি প্রয়োজনম্। পাষাণস্য কত বুদ্ধিস্ততো দেবো ভবিষতি।। (চাণক্য) | কর্মই প্রধান; বুদ্ধিদ্বারা কোন প্রয়োজন সিদ্ধ হয় না; পাষাণের বুদ্ধি কোথায়? তবুতো দেবতাদের অধিষ্ঠান এই পাষাণেই হয়। |
কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন (গীতা) | বিহিতকর্মেই তোমার অধিকার; কর্মফলে কখনো নয়। |
কর্মণ্যাপি প্রাধানানি সতি কক্ষে শুভে গৃহ। বশিষ্ঠদত্তলগ্নেহপি জানকী দুঃখভাগিনী।। (চাণক্য) | গ্রহদেবতারা প্রসন্ন হলেও কর্মের প্রাধান্যকে মেনে নিতে হবে; কারণ জানকীর বিবাহের সময় ঋষি বশিষ্ঠ লগ্ন স্থির করেছিলেন তবু কর্মদোষেই জানকী দুঃখভাগিনী হয়েছিলেন। |
কর্মদোষেণ দরিদ্রতা | কর্মদোষেই মানুষ অভাগা। |
কলঙ্ক গঙ্গাজলে ধুলেও যায় না | বদনাম কখনো ঘুচে না। |
কলঙ্ক বিনা চাঁদ নাই | অবিমিশ্র সুখ হয় না; দোষেগুণে মানুষ। |
কলসির জল গড়তে গড়তেই শেষ | সীমিত সম্পদ দ্রুত শেষ হয়; আয় না থাকলে সঞ্চিত অর্থে বেশি দিন চলে না। |
কলাপোড়া খাও | ব্যর্থ হয়ে পড়ে থাকো। |
কলার ভেলায় সাগর পার | সামান্য উপায়ে বিরাট কাজ করার বৃথা চেষ্টা। |
কলুর বলদ | নিজের ভালমন্দ না বুঝে শুধু মুখবুজে পরের নির্দেশমত খেটে মরে। |
কল্পনার ডানা পাখা মেলে | কল্পনার রঙে না রাঙালে সবকিছু শুস্কং কাষ্ঠং থেকে যায়, নিরস তরুবর হয় না; সমতুল্য- 'গল্পের গরু গাছে চড়ে'। |
কল্পান্তস্থায়িনো গুণাঃ | সৎকর্ম কীর্তি ইত্যাদি অবিনাশী |
কল্লার (দুষ্ট) ঘাড় বোল্লায় (বোলতা) ভাঙে | দুষ্টের শাস্তি হবেই। |
কল্লে যত্ন মেলে রত্ন | সাধনায় সিদ্ধি হবেই। |
কষতে কষতে বাঁধন ছেঁড়ে | বেশি টানাটানিতে সূতা ছিঁড়ে যায়; বাড়াবাড়ি ভাল নয়; ভাল নয় অতিশয়। |
কষ্ট না করলে কেষ্ট মিলে না // কষ্ট বই ইষ্ট নাই // কষ্টবিনা কেষ্ট নাই | পরিশ্রম না-করলে সফলতা পাওয়া যায় না; বিনা পরিশ্রমে কিছুই মেলে না;কিছু পেতে গেলে কিছু ঝামেলা সইতে হয়; সমতুল্য- 'আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয়,'গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয়', 'ন সুখং দুঃখৈর্বিনা লভ্যতে', সাধনা না করলে সিদ্ধি নাই' |
কষ্টা বৃত্তিঃ পরাধীনা কষ্টো বাসো নিরাশ্রয়ঃ। নির্দ্ধনো ব্যবসায়শ্চ সর্বকষ্টা দরিদ্রতা॥ (চাণক্য) | চাকরের জীবিকা কষ্টকর; নিরাশ্রয় ব্যক্তির পরগৃহে বসবাস কষ্টকর; ধনহীনের পক্ষে ব্যবসা-বাণিজ্য করা কষ্টকর; দারিদ্র্য সকল কষ্টের কারণ। |
কসুরও নাই কামাইও নাই | কোন ছাড়ছোড় নেই অবিচ্ছিন্নভাবে চলছে। |
কস্য মাতা, কস্য পিতা, কস্য ভ্রাতা সহোদরঃ। কায়ঃপ্রাণৈর্ন সম্বন্ধঃ কা কস্য পরিব্রদনা।। (চাণক্য) | কার মা, কার বাবা, কার ভাই- এসব ভেবে কাজ নেই; কেউ কারো নয়; অতএব কার জন্য কি বেদনা? |
কহাঁ রাজা ভোজ কহাঁ গঙ্গু তেলী- হিন্দী প্রবাদ | দুজন মানুষ মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকে; সমতুল্য- কিসে আরে কিসে সোনা আর সীসে', 'কোথায় রাণী ভবানী, কোথায় ফুলি জেলেনি' ইত্যাদি। |
কাঁচপোকায় আরশোলা খায়/ধরে | এমন অবস্থা যার থেকে নিস্কৃতি নেই। |
কাঁচা খাই, ডাসা খাই, আর খাই পাকা | সর্বভুক। |
কাঁচা গাঁথুনির দুনো খাটুনি // কাঁচা গাঁথুনির নেই আঁটুনি | পরিশ্রম করে গড়ে; ভেঙে গেলে দ্বিতীয়বার পরিশ্রম করে সেগুলি সরায়; কাঁচা কাজ করা নেই। |
কাঁচা গুয়ে ঢিল মারা | অপ্রীতিকর কাজ করে নিজের অনিষ্ট করা। |
কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরা | অল্পবয়সেই দুশ্চরিত্র হওয়া। |
কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরে না | সতেজ তরুণমনে পাপবোধ জন্মে না। |
কাঁচা মাটিতে পা দেওয় | ভুল যায়গায় আগ বাড়া। |
কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ পাকলে করে ট্যাঁশ ট্যাঁশ | সময়ে শিক্ষা না দিলে সন্তান মানুষ হয় না; বদঅভ্যাসের লাগাম টেনে না ধরলে পরে বিপত্তি ঘটে; কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রাথমিক অবস্থাতেই তা করা উচিত তা বোঝাতে এই প্রবাদ বলা হয়। |
কাঁচে কাঞ্চনে সমান | কোনটা অল্পমূল্যের, কোনটা বেশি মূল্যের তা বোঝার সামর্থ নেই; অন্য অর্থে সংসারবৈরাগি কাছে দুইই সমভাবে উপেক্ষনীয়। |
কাঁটাচামচের আগে আঙ্গুলের জন্ম | হাতে খাওয়ার পক্ষে ওকালতি। |
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা | একদুষ্টের বিরুদ্ধে অন্যদুষ্ট লেলিয়ে দিয়ে উভয়ের বিনাশ সাধন করা।; শত্রু দিয়ে শত্রুনাশ। |
কাঁটা বিনা কমল/গোলাপ নাই | অবিমিশ্র সুখ হয় না; সুখদুঃখ জড়িয়ে জীবন। |
কাঁঠালের আমসস্ত্ব | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
কাঁড়ানো চালে তিন ঘা পাড় (ঢেঁকির) | সম্পন্ন কাজে পুনরায় পরিশ্রম নিস্প্রয়োজন। |
কাঁধে কুড়ুল রেখে বনময় খোঁজে | কাছে থাকা জিনিষ নানাস্থানে খুঁজে বেড়ানো; ভোলেভালা লোক। |
কাউকে বুকে করা কাউকে পিঠে করা | কাউকে আদর করা, কাউকে অনাদর করা। |
কাউয়ার ওপর কামানের গুলি/কাকের উপর কামান দাগা | অল্পদোষে বেশি শাস্তি। |
কাক কাঁকুড়ের জ্ঞান নেই | দুই বস্তুর তত্ত্বগত পার্থক্য বুঝতে না পারা। |
কাক-কোকিলে ভেদজ্ঞান নেই | ভাল-মন্দের তফাৎ বুঝতে না পারা। |
কাক কোকিলের একই বর্ণ, কিন্তু স্বরে ভিন্ন ভিন্ন | আকৃতিতে সাধু-অসাধু চেনা যায় না, প্রকৃতিতে তাদের চেনা যায়। |
কাক কোকিলের সমান দর | ভালমন্দ বিচার নেই। |
কাক কাকের মাংস খায় না | স্বজাতির ক্ষতি কেউ করে না বা চায় না। |
কাক খায় কাঁঠাল, বকের মুখে আঠা | একের সৌভাগ্য দেখে অপরের ঈর্ষা; একজনের অপরাধে অন্যজনের শাস্তি। |
কাক খেলো ধান, ব্যাঙের পায়ে দড়ি | চরম বিশৃঙ্খলা; উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে; একজনের অপরাধে অন্যজনের শাস্তি। |
কাক চুরিদ্রব্য লুকিয়ে মনে করে কেউ সেটা দেখে নি | বোকা অনেক সময় অভিজ্ঞকে ফাকি দিতে পেরেছে মনে করে মিথ্যা আত্মতৃপ্তি লাভ করে। |
কাকপক্ষীও টের পাবে না | কেউ টের পাবে না; অতিসতর্ক কাকের কিছুই নজর এড়ায় না। |
কাক ভেজে জলে, ব্যাঙের লাগে সর্দি | আজগুবি কথা, যা কখনো হয় না। |
কাক ভাবে আমি বড় সেয়ানা | আহাম্মকের আত্মগরিমা। |
কাক মরল ঝড়ে, প্যাঁচা ভাবে আমার শাপ লাগল হাড়েহাড়ে | অক্ষমের সান্ত্বনা; শত্রুনিপাত হলে বিপক্ষ ভাবে তার অভিশাপেই এমন ঘটেছে। |
কাক সকলের মাংস খায়, কাকের মাংস কেই খায় না | ঠগ সবাইকে ঠকায়, কিন্তু কেউ ঠগকে ঠকাতে পারে না। |
কাকস্য চঞ্চুয্যদি স্বর্ণযুক্ত মাণিক্যযুক্তৌ চরণৌ চ তস্য। একৈকপক্ষে গজরাজমুক্তা তথাপি কাকো চ ন রাজহংসঃ | সোনাদানার গহণা পড়লেও কাক কখনো রাজহাঁস হয় না; ভালো জামাকাপড় পরলেও চোর কখনো সাধু হয় না। |
কা কস্য পরিবেদনা | কে কার কথা ভাবে; বৃথা হাহুতাশ। |
কাকিলা বধু ছেলে ধরতে জানে না | কোকিলা সন্তান প্রতিপালন করতে জানে না; ন্যাকামী করা বউয়ের প্রতি বক্রোক্তি। |
কাকে নিয়ে গেল কান, কাকের পিছনে ছোট | নিজে বিবেচনা করে না, পরের কথায় ছুটে মরে। |
কাকের উপর কামান দাগা/কাউয়ার ওপর কামানের গুলি | অল্পদোষে বেশি শাস্তি। |
কাকের ডানায় মুক্তা বসালেও কাক রাজহাঁস হয় না // কাকের লেজে ময়ূরপালক লাগালেও কাক ময়ূর হয় না | অসারবস্তু কখনো সারবস্তু হয় না; নকল কখনো আসল হয় না। |
কাকের ডিম সাদা হয়, বিদ্বানের ছেলে গাধা হয়। | অস্বাবাভাবিক কিছু নয়। |
কাকের পিছনে ফিঙে লাগা | কাউকে অনবরত উত্যক্ত করা। |
কাকের বাসায় কোকিলের ছা, জাতস্বভাবে করে রা | জাতস্বভাব কখনো বদলায় না। |
কাকের লুকানো (খাদ্য) | বোকার মরণ; জিনিষ এমনভবে লুকায় যে পরে আর খুঁজে পায় না। |
কাকের মাংস কাকে খায় না | সমধর্মী লোকেরা পরস্পরের ক্ষতি করে না। |
কাকতালীয়বৎ প্রাপ্তং দৃষ্টাপি নিধিমগ্রতঃ। ন স্বয়ং দৈবমাদত্তে পুরুষার্থমপেক্ষতে॥ (চাণক্য) | কুড়িয়ে নিতে গেলেও চেষ্টা করা চাই; পুরুষের চেষ্টা বিনা সিদ্ধি নাই। |
কাঙলা আপনা সমালা | আগে সবাই নিজেকে সামলাক; পরের উপকার পরে করা যাবে। |
কাঙালকে শাকের ক্ষেত দেখাতে নেই | অভাবীকে লোভ দেখাতে নেই; যাতে লোকের লোভ বাড়ে এমন কাজ করতে নেই; সমতুল্য- 'ছাগলকে ভাঙা বেড়া দেখাতে নেই'। |
কাঙালী মেরে কাছারি গরম | গরীব মেরে আসর গরম করা। |
কাঙালের অশ্রুতে যে রক্ত ঝরে ভগবান দেখেও কিন্তু দেখে না | ভগবান বড়লোকের ঘরে বাঁধা। |
কাঙালের কথা বাসি হলে খাটে/ফলে | নগণ্যের সঠিক কথা প্রথমে উপেক্ষিত হলেও পরবর্তীকালে সঠিক প্রতিপন্ন হয়। |
কাঙালের কাছে রাংতাই সোনা // কাঙালের কাছে মুড়কিই সন্দেশ | অভাবীর কাছে এককড়ারও দাম আছে; তার পক্ষে যা পাওয়া সম্ভব তাতেই সে সন্তুষ্ট থাকে। |
কাঙালের ক্ষিদে বেশি | কাঙাল শুধু খাই খাই করে। |
কাঙালের ঘোড়ারোগ | যা পাওয়ার অধিকারী নয় তাই পাওয়ার ইচ্ছা। |
কাঙালের ঠাকুরব্যাধি | অবস্থার অরিতিক্ত ব্যয়ের বাসনা। |
কাঙালের মরণ বিটকেল | কাঙাল সুখে মরতেও পারে না। |
কাচঃ কাচঃ মণির্ম্মণি | যে যা, তাই থাকে; কাঁচ কাঁচই থাকে; মণি মণিই থাকে। |
কাছা দিতে কোঁচা আঁটে না, কোঁচা দিতে কাছা আঁটে না | সবসময় টানাটানি। |
কাছের লোক কাছের নয় | কাছের লোক বিপদের সময় সরে থাকে; ঘরের লোক বেশি শত্রুতা করে; সমতুল্য- 'আপন থেকে পর ভাল', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন কখনো পর হয় না', 'বসুধৈব কুটুম্বম' ইত্যাদি। |
কাছের লোক গাড়ী ফসকায় | কাছের লোকের গয়ং গচ্ছভাবের প্রতি তির্যোক্তি। |
কাজ আটকালে বুদ্ধি যোগায় | সমস্যায় পড়লে সমস্যা সমাধানের উপায় আপনি মাথায় আসে। |
কাজ নেই কাজ করে, ধানে চালে এক করে | কাজ নেই তো অকাজ, কুকাজ করে। |
কাজও নেই, কামাইও নেই | অনির্দিষ্ট কাজের কোন নিয়ম থাকে না; যখন-তখন উপস্থিত হতে হয় বলে অনির্দিষ্ট কাজে বিরাম পাওয়া যায় না। |
কাজ নেই তো ভাজো খই | অকাজে সময় নষ্ট করা। |
কাজ শুরু হলেই অর্ধেক কাজ শেষ | কাজের প্রস্তুতিতেই অর্ধেক সময় ব্যয় হয়। |
কাজ সরিয়ে রাখলে কাজ বরবাদ | কালে পেলে কজ কোনদিন শেষ হয় না। |
কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই | সরকারী কাজে হিসাবের গোলমাল। |
কাজে এড়া অকাজে দেড়া | কাজ করে না অকর্ম করে। |
কাজে এড়া, আচারে দেড়া | আচারসর্বস্ব। |
কাজে এড়া ভোজনে দেড়া // কাজে কম খেতে যম // কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা,খাবার বেলায় বেশি বেশি | খাটে কম খায় বেশি। |
কাজে কুঁড়ে ভোজনে দেড়ে বচনে মারে পুড়িয়ে ঝুড়িয়ে | অলস, ভোজনপটু ও কর্কশভাষী বচনসর্বস্ব নির্গুণ ব্যক্তি সম্পর্কে প্রবচন |
কাজের কথা মনেই থাকুক, মুখে প্রকাশ করো না | মূল্যবান কথা পাঁচকান কর'তে নেই। |
কাজের বেলা পায় না খুঁজে, খাবার বেলা সবার আগে // কাজের বেলায় ভাগে খাবার বেলায় আগে | পরিশ্রমে বিমুখ কিন্তু খাবার বেলায় প্রথম পাতে। |
কাজের বেলায় কাজি কাজ ফুরালে পাজি | কাজ করবার জন্য সনির্বন্ধ অনুরোধ করে কিন্তু কাজ শেষ হলে খোঁজখবর না নেওয়া; কার্যোদ্ধার হতেই উপকারীকে অগ্রাহ্য; প্রয়োজনের সময় কাউকে তোষামোদ, প্রয়োজন শেষ হলে তার পাছায় লাথি। |
কাজের মধ্যে চাষ, রোগের মধ্যে কাশ | দুইই সমানভাবে কষ্টদায়ক। |
কাজের মধ্যে দুই খাই আর শুই | নিকম্মার ঢেঁকি; অলসের চূড়ামণি। |
কাজের হাত, পা, মাথা ও মুণ্ডু- কিছুই নেই | বিশৃঙ্খল কাজ। |
কাটলে রক্ত নেই, কুটলে মাংস নেই | অসার শুকনা কাঠের মত শরীর। |
কাটা কাটা কথা আগুনের জ্বালার চেয়েও জ্বালাময় | অন্তরে তীব্র জ্বালা ধরায়। |
কাটা ঘায়ে নূনের ছিটে | ব্যথার উপরে আরও ব্যথা দেওয়া; যন্ত্রণার ওপর যন্ত্রণা। |
কাটা কান চুলদে ঢাকি | কানকাটা ঘরের কলঙ্ক পাঁচকান করে না, লুকিয়ে রাখে। |
কাটো তো খুন নহীঁ- হিন্দী প্রবাদ | কাটো তবে রক্ত যেন না পড়ে; প্রচণ্ড ভয়ে ভীত; ভয়ে আধমরা অবস্থা। |
কাঠ খায় আঙরা হাগে | উনুন; মন্দ কাজ করে মন্দ ফলভোগ করে। |
কাঠবিড়ালীর সাগর বাঁধা | অসাধ্য কাজ সম্পাদনের প্রচেষ্টা; মহৎকাজে নগণ্যের সাহায্য উপেক্ষণীয় নয়। |
কাঠে কাঠে কাঠাকাঠি | সমানে সমানে লড়াই; সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি; যেমন কুকুর তেমন মুগুর। |
কাঠের বিড়াল হোক, ইঁদুর ধরতে পারলেই হ'ল | যন্ত্র যাই হোক কাজ হলেই হ'ল। |
কাঠের ভিতর পিঁপড়ে বলে চিনি ছাড়া খাবনি, চিন্তামণি চিন্তা করে যোগায় তারে অমনি | জীবের রক্ষাকর্তা ভগবান; যে খায় চিনি, তারে যোগান চিন্তামণি। |
কাণ্ডজ্ঞানবিশিষ্ট লোক থেকে সতর্ক থেকো যদি সে ক্রুদ্ধ হয়- আরবী প্রবাদ | স্থিরমস্তিস্কের লোকেরা কুপিত বিষম ব্যাপার ঘটে যায়। |
কা তব কান্তা কস্তে পুত্রঃ। সংসারোহমতীব অতি বিচিত্রঃ।। (চাণক্য) | কে তোমার স্ত্রী, কে তোমার পুত্র; এই সংসারে ব্যাপারস্যাপার খুবই বিচিত্র। |
কাদায়/গর্তে পড়লে হাতি, চামচিকেতে মারে লাথি | অসহায় অবস্থায় পেলে সকলেই দুর্ব্যবহার করে। |
কাদায় গুণ ফেলা | ধৈর্য ধরে থাকা; সবুরে মেওয়া ফলে |
কানচাটা (কানে ক্ষতরোগ) গাফাটা গায়ে দাদ যার সদাই বিরস মন সুখ নেই তার | শরীরে নানারোগ থাকলে মনে সুখশান্তি থাকে না। |
কান চায় সোনারে, সোনা চায় কানেরে | পরস্পরে অনুরক্ত লোকে পরস্পরের সান্নিধ্য খোঁজে। |
কান টানলে মাথা আসে | উপলক্ষ্য ধরে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়; একটা বিষয়ের খোঁজ নিতে চাপ দিলে সম্পর্কিত অন্য বিষয়ের খোঁজও পাওয়া যায়। |
কান নিয়ে গেল কাকে কাকের পিছনে পিছনে ছোটা | বিচার বিবেচনা না করে উদ্ভ্রান্তের মত কাজ করা। |
কান মন্ত্রে মন নাশ | কান ভাঙানিতে মনে মালিন্য জন্মে। |
কানপুর দিয়ে নাগপুর যাওয়া | ঘুরিয়ে/বাঁকাপথে কাজ করা; অযথা সময় নষ্ট করা। |
কানা কয়বার নড়ি (লাঠি) হারায় | একবারও না; যার যেটা একমাত্র অবলম্বন সেই বিষয়ে সে খুব সতর্ক থাকে। |
কানা, কুঁজো, খোঁড়া, তিন অসৎ-এর গোড়া // কানা খোঁড়া কুঁজা তিন নোয় সুজা (সহজ) | লোকে মনে করে এই তিনপ্রকারের লোক দুষ্টপ্রকৃতির হয়; সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। |
কানা খোঁড়ার এক গুণ বাড়া | নির্গুণের অহংকার/বড়াই বেশি হয়; লোকের ধারণা এরা একটি স্বতন্ত্রপ্রকৃতির হয়; কিংবা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি বেশি অনুভবী হয়। |
কানা গরু বাতাস বইলেই ভয় পায় | দুর্বলের একটুতেই ভয় হয়। |
কানা গরু বামুনকে দান | অবজ্ঞা/অশ্রদ্ধার দান; অপ্রয়োজনীয় বস্তু দান করে পূণ্যলাভের আকাঙ্ক্ষা। |
কানা গরুর ভিন্ন গোঠ/পথ | অজ্ঞান বা কাণ্ডজ্ঞানহীন লোক কানাগরুর মত গোয়ালের দিকে না গিয়ে অর্থাৎ নিরাপদ পথ ত্যাগ করে বিপধে যায়; বুদ্ধিহীন লোক যুক্তির পথে হাঁটে না; স্বতন্ত্রপ্রকৃতির লোকেদের সবকিছুই অন্যের অননুরূপ হয়। |
কানা গলিতে ঘুরে মরা | দিশাহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো; নিস্কৃতির পথ হন্নে হয়ে খুঁজে মরা। |
কানা ঘোড়ার সিধা দৌড় | আহাম্মকের বিপথে চলা। |
কানা চোখে দিয়ে কাজল, আপন রূপে আপনি পাগল | আপনার চেয়ে কেউ বেশি সুন্দর নয়। |
কানাছেলের নানারোগ | অক্ষমের নানাদিক থেকে ঘাটতি থাকে। |
কানাছেলের নাম পদ্মলোচন | কুৎসিতকে সুন্দর করার হাস্যকর প্রয়াস; যে গুণ নেই সেই গুণ আরোপ; অযোগ্যকে অতিরিক্ত সম্মানদান; সমতুল্য- 'আঁখোকে অন্ধ নাম নয়নসুখ', 'কালো ছেলের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর' ইত্যাদি। |
কানা মেঘের বৃষ্টি সর্বত্র নয় দৃষ্টি | অবিবেচকের একদেশদর্শী বিচার; খামখেয়ালী বড়লোকের দান সাধারণের মধ্যে সমানভাবে বণ্টিত হয় না। |
কানাইয়ের মা | পরের ছেলের মা। |
কানায়ে ভাগনে | লম্পটচরিত্রের লোক। |
কানু ছাড়া কীর্তন/গীত নাই | একমাত্র গতি, অনন্যোপায়; সকল প্রসঙ্গে একই বিষয়ের উথাপনা। |
কানে কলম গুঁজে দুনিয়াভর খোঁজে | তুলনীয়-কাঁধে কুড়ুল রেখে বনময় খোঁজে |
কানে কানে কথা থাকে না গোপনে | কথা পাঁচকান হলে সে কথা গোপন থাকে না। |
কানে দিয়েছি তুলো, পিঠে বেঁধেছি কুলো | কিছুতেই কিছু না করা; সবকিছু অগ্রাহ্য করা। |
কানে হাত না দিয়েই বলে কান নিয়ে দেল চিলে | অবিবেচকের মত কাজ; অবোধা পরের কথায় নেচে মরে। |
কানের জল, জল দিলেই বেরোয় | বিষে বিষে বিষক্ষয় হয়। |
কানের পিছনে উকুনের বাসা | পিছনে শত্রু দাঁড়িয়ে আছে সাবধান- সতর্কবাণী |
কাপড় বুঝে জামা কাটো- ইংরাজী প্রবাদ | ক্ষমতা বুঝে কাজ কর; সমতুল্য- আয় বুঝে ব্যয় কর; 'যতদূর মাদুর ততদূর পা ছড়াও', 'যতদূর চাদর দিয়ে পা ঢাকতে পারো ততদূর পা ছড়াও'ইত্যাদি। |
কাপড় হলে পচা, আঙ্গুল হয় খোঁচা | একটা কোন অজুহাত দেখানো; অদৃষ্টে ক্ষতি লেখা থাকলে সামান্য বিষয় থেকেই ক্ষতি হতে পারে। |
কাপড়ে আগুন ঢাকা যায় না। | সত্যকে মিথ্যার আবরণে ঢাকা যায় না; কলঙ্ককে কোন অজুহাতে চাপা যায় না। |
কাপড়ের দাগ যায় ধুলে, মনের দাগ যায় মলে। | মনের দাগ জীবনে যায় না। |
কাম নাই কুত্তার আইলে আইলে দৌড় | যার কাজ নেই সে ফালতু কাজ বেশী করে। |
কামড়াতে না পারো তো দাঁত দেখিয়েও না | মিছিমিছি ভয় দেখিয়ো না। |
কামড়িয়ো না ফোঁস কর | ক্ষতি করো না; ভয় দেখাও। |
কামলা (ন্যাবা রোগী) আপনি সামলা | যে যার নিজেরটা দেখুক। |
কামলা সব শ্যামলা দেখে | মন্দচোখে সবই মন্দ দেখে; সমতুল্য- 'আবিল দৃষ্টি সব হলদে দেখে' |
কামাতে না পারে নাপিতের ধামাভরা ক্ষুর // কামাতে পারে না নাপিত ধামাভরা ক্ষুর, কামাতে কামাতে যায় রঘুনাথপুর | অক্ষমের ভড়ং বেশি; কাজ কিছু পারে না, শুধু কিছু কথা শিখে রেখেছে। |
কামানো মাথায় ক্ষুর বোলায় | অপ্রয়োজনীয়/বাহুল্য কাজ। |
কামার বুড়ো হ’লে লোহা শক্ত হয় | বৃদ্ধ কামার অশক্ত হলে লোহাকে জব্দ করতে পারে না; তাই কৌতুকে বলা হয় লোহা শক্ত হয়েছে। |
কামারের কাছে লোহা চুরি | উপরচালাকি; চতুরের সাথে চাতুরী; যে যে বিষয়ে অভিজ্ঞ তাকে সেই বিষয়ে উলটা বোঝানোর চেষ্টা। |
কামারের কাছে লোহা জব্দ। | বলবানকে বলবানই দমন করতে পারে; শক্ত পাল্লায় পড়লে সবাই বাগে থাকে। |
কামারের কাজ কুমোরের সাজে না // কামারের কুমোর বৃত্তি | অনধিকারে হাত বাড়ানো ঠিক নয়; যে কাজে পটু নয় সেই কাজ করতে গেলে বিপত্তি হয়। |
কার কপালে কেবা খায় | কেউ কারো সুখ-দুঃখের জন্য দায়ী নয়; সকলেই নিজ নিজ অদৃষ্ট অনুসারে সুখ দুঃখ ভোগ করে। |
কার শ্রাদ্ধ কে বা করে, খোলা কেটে বামুন মরে/কার শ্রাদ্ধ, বামুন হদ্দ | যার কাজ তার মনযোগ নেই অন্যে তার জন্য খেটে মরে; একজনের সমস্যার জন্য অন্যের চিন্তা করা বৃথা। |
কার সাধ্য মারে তারে, খোদা হেসে রাখে যারে | ঈশ্বর যাকে রাখে তার ক্ষতি হয় না। |
কারণ বই কার্য নাই // কারণবিনা কেউ বন্ধু নয়, কেউ শত্রু নয় | অকারণে কিছু হয় না; ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে; বিনা কারণে গাছের পাতা নড়ে না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অকারণে হৈ চৈ', 'নেই মাথা তার মাথা ব্যাথা' ইত্যাদি। |
কারে পড়ে আল্লার নাম | বিপদে না পড়লে কেউ ঈশ্বরকে ডাকে না; সমতুল্য- 'ঠেলায় পড়ে ঢেলায় প্রণাম', 'বিপদে পড়লে শ্রীমধুসূদন' ইত্যাদি। |
কারে ভজে কার দাস | খণ্ড ঈশ্বরধারণার জন্য খেদোক্তি। |
কারো আগেও নয় কারো পাছেও নয় | কোনপ্রকার তোষামোদি নয়; কোনপ্রকার উঁচুনীচু নয়; |
কারো উপকার করলে কখনো উল্লেখ করো না আর কেউ উপকার করলে তাকে কখনো ভুলো না। | আত্মপ্রচার করো না এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না। |
কারো ঘর পোড়ে, কেউ আগুন পোহায় // কারো ঘর পোড়ে, কেউ ধোঁয়া খায় | একের বিপদে অন্যের সুখভোগ; কারো দুঃখ, কারো বা সুখ; সমতুল্য- কারো পৌষমাস, কারো সর্বনাশ। |
কারো চাকর নই, কারো প্রভুও নই | সমানে সমানে ব্যবহার চাই; সাম্যের অধিকার |
কারো দুধে চিনি কারো শাকে বালি // কারো কারো শাকে বালি, দুধে চিনি | কারো সুখের ওপর সুখ, কারো দুঃখের ওপর দুঃখ; কারো ঘরে ঝাড়বাতি জ্বলে; কারো ঘরে প্রদীপ জ্বলে না; দুখীর আরও দুখ, সুখীর আরও সুখ। |
কারো ধার ধারি না | চাটুকারীতা করতে অনিচ্ছুক, মোটেই পছন্দ নয়। |
কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ | কারো বিরাট লাভের পাশাপাশি অন্য কারো বিরাট ক্ষতি হওয়া; সমতুল্য- কারো ঘর পোড়ে, কেউ ধোঁয়া খায়; কেউ সৌভাগ্যবান কেউ হতভাগ্য। |
কারো প্রতি অটুট শ্রদ্ধা রাখার একমাত্র উপায় হল তার সাথে কখনো দেখা না করা | বেশি ঘনিষ্টতায় দোষগুণ ধরা পড়ে। |
কারো সাথে ভাগাভাগি করলে সমস্যা অর্ধেক হয়ে যায় | কাজ ভাগ করে নিলে কাজ হালকা হয়; দশের লাঠি, একের বোঝা। |
কার্তিকের জল উনো, ধান জন্মে দুনো- খনা | কার্তিকমাসে জত জল কম হবে ধানগাছে তত বেশী ধান ফলবে। |
কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যা ন তদ্ধনম্ | প্রয়োজনের সময় কাজে লাগে না, এমন বিদ্যা নয়, এমন ধন ধন নয়। |
কার্য থাকলে কারণ আছে | কারণ বিনা কোন কাজ হয় না; সমতুল্য- 'অকারণে কিছু হয় না', 'ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে', 'পর্বতো বহ্নিমান ধুমাৎ' ইত্যাদি; বিরুদ্ধউক্তি- 'অকারণে হৈচৈ', 'মাথা নেই তার মাথাব্যথা' ইত্যাদি। |
কালনেমির লঙ্কাভাগ | অতি আগাম পরিকল্পনা; সমতুল্য- 'আম না হতে আমসি/আমস্বত্ব', 'গাছ না উঠতে এককাঁদি','গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল,'পাত্রপাত্রীর দেখা নাই, শুক্রবারে বিয়ে', 'রাবণের ছাদনাতলা','রাম না হতে রামায়ণ ইত্যাদি। |
কাল যায় না জল যায় | জলেস্রোতের মত সময় বয়ে যায়। |
কাল রাম রাজা হবে আজ তার বনবাস | আকস্মিক বিপদ এসে উপস্থিত; সুখের আগে দুঃখভোগ; আনন্দের মাঝে দুঃসংবাদ। |
কালস্য কুটিলা গতিঃ | কালচক্রের গতি বোঝা ভার; কখন কি হবে কেউ জানে না। |
কালা জগতের আলা | শ্রীকৃষ্ণ বিনা সব অন্ধকার। |
কালা অক্ষর ভৈঁসা বরাবর- হিন্দি প্রবাদ | অশিক্ষিত, একদম লিখতে পড়তে জানে না। |
কালা কাজলের মাটি, তা'র লাগি ছ'মাস হাঁটি; সুন্দর ধুতুরার ফুল, তা'র নাই কড়ার মূল | গুণবতী কালো হলেও ভালো; গুণহীনা রূপবতী হলেও গন্ধহীন ধুতুরা ফুলের মতই মূল্যহীন; সমতুল্য- 'জাতের নারী কালাও ভালা, নদীর পানি ঘোলাও ভালা','রূপে মারি লাথি, গুণে ধরি ছাতি'। |
কালা (কানে খাটো) পুরুত, তোতলা যজমান | এমন মনিকাঞ্চন যোগে শ্রাদ্ধের কাজ এগোয় না; কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটে। |
কালা বলে গায় ভালো, কানা বলে নাচে ভালো | অবোধের অবুঝ দাবী; অজ্ঞরা জ্ঞানীর ভান করে; ফাঁকিবাজী। |
কালা বামুন, কটা শুদ্র, বেঁটে মুসলমান, ঘরজামাই, পোষ্যপুত্র- পাঁচজনাই সমান | কথিত আছে এই পাঁচজনের স্বভাব ভালো হয় না। |
কালি কলম পাত, তবে লেখার হাত // কালি কলম পাত, যেমন তেমন হাত // কালি কলম মন, লেখে তিন জন | কিছু লিখতে হলে কালি, কলম ও হাত চাই; লেখার উপকরণ ভাল হলে এবং মনোসংযোগ থাকলে লেখাও সুন্দর হয়। |
কালির অক্ষর নাইকো পেটে, চণ্ডী পড়ে কালীঘাটে | মুর্খ বামুনে চণ্ডীপাঠ করে; আগে কালিঘাটের এই দুর্নাম ছিল। |
কালিঘাটের লোকের কালীদর্শন হয় না | গয়ংগচ্ছভাবের জন্য কাছের লোকের দেরী হয়; সমতুল্য-'আগ্রার মানুষ তাজমহল দেখে না', 'গির্জার পাশের মানুষ গির্জায় যায় না','মক্কার মানুষ হজ্জ পায় না ইত্যাদি। |
কালের আবার কালাকাল | মৃত্যু কখন এসে উপস্থিত হবে কেউ বলতে পারে না। |
কালো আর কালোয় মিলে ধলো হয় না | সমজাতীয়/ধর্মীয় মিলনে ভিন্ন জাত/ধর্ম উৎপন্ন হয় না; সবসময় বিষে বিষে বিষক্ষয় হয় না। |
কালো আর ধলো বাইরে কেবল, ভিতরে সবাই সমান রাঙা | সবারই রক্তের রঙ লাল। |
কালো ছেলের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর | কুৎসিতকে সুন্দর করার ব্যাপার; যা নয় তাই হওয়ার চেষ্টা। |
কাশীধাম ঘুরে কাঞ্চীপুরপম/কামাখ্যা যাত্রা | ঘুরপথে/বাঁকাপথে কাজ করা। |
কাশীধামে কাক মরেছে কালিঘাটে/কুমিল্লাতে হাহাকার | অকারণ হৈচৈ; অনধিকার চর্চা; মাথা নেই মাথাব্যথা |
কাশীধামে ভুমিকম্প | কোন অসম্ভব ঘটনার সংগঠন; মানুষের বিশ্বাস শিবের ত্রিশুল কাশীতে ভূমিকম্প হতে দেয় না। |
কি অপূর্ব সৃষ্টি মা তিতা, ছা মিঠা | পলতা তিতা পটল মিষ্টি; কু থেকে সু সৃষ্টি হতে পারে; পাঁকে পঙ্কজ জন্মে। |
কিং করিষ্যন্তি বক্তারঃ শ্রোতা যত্র ন বিদ্যতে।নগ্নক্ষপণকে দেশে রজকঃ কিং করিষ্যতি॥ (চাণক্য) | যে সভায় যোগ্য শ্রোতা নেই সেখানে বক্তা কী করবেন? যেদেশে সকলেই উলঙ্গ সে দেশে ধোপার কী কাজ? |
কিং কুলেন বিশালেন গুণহীনস্তু যো নরঃ। অকুলীনোহপি শাস্ত্রজ্ঞো দৈবতৈরপি পূজ্যতে॥ (চাণক্য) | কুলীনবংশে জন্মগ্রহণ করলেও গুণহীন ব্যক্তি সার্থকতা কোথায়? অপরপক্ষে কুলীনবংশে জন্মগ্রহণ না করলেও শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তিকে দেবতারা সমাদর করেন। |
কিছু করার আগে তিনবার ভাববে- চীনা প্রবাদ | ভালভাবে ভেবেচিন্তে কাজ কয়ড়া উচিত। |
কিছু করার ক্ষেত্রে যারা আগে উপস্থিত হয় তাদের শাস্তি দাও এবং যারা পরে উপস্থিত হয় তাদের বাধা দাও- চীনা প্রবাদ | কোন কিছুতেই ব্যগ্রতা সমর্থনযোগ নয় আবার দীর্ঘসূত্রিতাও সমর্থনযোগ্য নয়; সময়ানুবর্তিতাই আদর্শ হওয়া উচিত। |
‘কিছু না’ করলে কিছু হয় না | কাজ না করলে কার্যসিদ্ধি প্রশ্ন নেই। |
‘কিছু না’ করা কুকাজ করার সামিল | না এগুনোর অর্থ পিছিয়ে যাওয়া। |
'কিছু না’ শিখলে অকাজ করা শেখা হয়। | অলসে সময় কাটানো অকাজের সামিল। |
কিছু পেতে গেলে কিছু দিতে হয় | দক্ষিণাবিনা কার্যসিদ্ধি হয় না। |
‘কিছুই শিখি নি’ বলতে পারাটাই সব থেকে বড় শিক্ষা | ক্ষুদ্রজীবনে অসীম জ্ঞানভান্ডার থেকে অনু পরিমাণ আহরণ করা যায়। |
কিনতে পাগল, বেচতে ছাগল/ কিনতে ছাগল, বেচতে পাগল | অবিবেচক, হটবুদ্ধিসম্পন্ন; হড়বড়িয়ে কাজ করা লোক। |
কিমাশ্চর্য্যমতঃপরম্ | কি অদ্ভুত ব্যাপার; এর পর/বেশি আশ্চর্য হওয়ার কি আছে? |
কিমাদ্রবণিজো বহিত্রচিন্তয়া | আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবরের কাজ কী? |
কিবা জ্যেষ্ঠ কি কনিষ্ঠ, যেই বুঝে সেই শ্রেষ্ঠ | বয়স যাই-হোক-না-কেন জ্ঞানীর স্থান সর্বাগ্রে। |
কিভাবে কথা বলতে হয় না জানলে অন্তত কিভাবে চুপ থাকতে হয় তা শিখে নাও | অক্ষমতা লুকাতে চেষ্টা করো; এটাও একধরণের শিক্ষা। |
'কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে (বিষধর সাপ) দংশেনি যারে'-কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার | সুখী মানুষ জীবনযন্ত্রণা কাকে বলে জানে না; ভুক্তভোগীই একমাত্র বোঝে যন্ত্রণার জ্বালা কি; ব্যথিত হৃদয়ের বেদনা একমাত্র সমব্যথীই বুঝতে পারে; সমতুল্য- অকণ্টকবিদ্ধ কি জানে কাঁটাফুটা কি? |
‘কি হতে পারি’ কথা নয়, কথা হল ‘কি করতে পারি' | নিজের চেষ্টায় করার আনন্দই আলাদা। |
কিল খেয়ে কিল চুরি/হজম | অপমানিত হয়েও ঘটনা গোপন করা; মার খেয়েও পালটা মার না দেওয়া। |
কিল মারার গোঁসাই | সুখ দিতে পারে না দুঃখ দিতে সবসময় মুখিয়ে আছে। |
কিলিয়ে কাঁঠাল পাকানো | সময়ের আগেই কার্যসিদ্ধির চেষ্টা। |
কিল্লা/কেল্লা ফতে- আরবী প্রবাদ | সফল কার্যোদ্ধার, সিদ্ধিলাভ |
কিসে আর কিসে সোনা আর সীসে | দুটো অসম বিষয়ের তুলনা হয় না। |
কিসের মধ্যে কি, পান্তা ভাতে ঘি | অবিবেচনাপ্রসূত কাজ; রীতিবিরুদ্ধ মিশ্রণ। |
কিসের মধ্যে কি, বেগুন পোড়ায় ঘি | বড়লোকীপনা; অযথা অর্থের অপচয়। |
কিসের মাসী কিসের পিসী, কিসের বৃন্দাবন; মরা গাছে ফুল ফুটেছে মা বড় ধন | মায়ের সাথে কারো তুলনা হয় না; মায়ের জন্য পৃথিবীর সবকিছু ত্যাগ করা যায়। |
কীর্তিযস্য স জীবতি | যার কীর্তি আছে তিনিই আমর; কীর্তিমান ব্যক্তিরা মানুষের মনে চিরজীবী হয়ে থাকেন। |
কীর্তিমান জনকের পুত্র হওয়া বৃথা | সূর্যের আলোয় তারা ঢাকা পড়ে। |
কুঁজী, না ও খুঁজি | যে যা ভালোবাসে ষে তা ষে খুঁজে বেড়ায়। |
কুঁজী, না ঐ পুঁজি | তবুতো কিছু আছে; কুঁজ ভাঁঙিয়ে অন্ন জোগাড় হয়। |
কুঁজীর মন্ত্রণা | দুষ্টলোকের কুমন্ত্রণা। |
কুঁজোর ইচ্ছা চিৎ হয়ে শোয় | অক্ষমের দুরাশা; সামর্থহীনতায় ইচ্ছা পূর্ণ না হওয়ায় নৈরাশ্য। |
কুঁড়ে কৃষাণ অমাবস্যা খোঁজে | কাজ না করার অজুহাত (উৎস- অমাবস্যায় কিষান লাঙল ছোঁয় না)। |
কুঁড়ে গরুর এঁটুলি সার | অলসের ভাগ্যে অসার বস্তু বই কিছু জোটে না। |
কুঁড়ে ঘরে বসে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা // কুঁড়ে ঘরে বাস, খাট-পালঙ্কের আশ। | অক্ষমের বড়লোক হওয়ার সাধ; স্বপ্ন দেখতে পরিশ্রম করতে হয় না; স্বপ্ন দেখতে পয়সা লাগে না। |
কুঁড়ের অন্ন জোটে না | পরিশ্রম না করলে সিদ্ধিলাভ হয় না |
কুঁড়ের বাথান বৈদ্যনাথ | অলসব্যক্তি তীর্থ করতে গিয়েও ভিক্ষাবৃত্তি করে অন্ন জোগাড় করে। |
কুঁদের মুখে বাঁক থাকে না, কুঁদিলে বাঁকা কাঠও সোজা হয় | শক্তলোকের পাল্লায় পড়লে বাঁকালোকও সোজা হয়; যোগ্য শাসনে দুষ্টলোক শিষ্ট হয় (উৎস-কুঁদযন্ত্র বাঁকাকাঠকে সোজা কাটে) |
কুকুর রাজা হলেও জুতা খায় | জাতস্বভাব কেউ ছাড়তে পারে না। |
কুকুরকে লাই দিলে মাথা ওঠে। | নীচকে প্রশ্রয় দিতে নেই; নীচকে প্রশ্রয় দিলে প্রশ্রয়দাতার ক্ষতি হয়। |
কুকুরের আড়াই পাক | কুকুরে স্বভাব; অভ্যাস দ্বিতীয় প্রকৃতি। |
কুকুরের কাজ কুকুরে করেছে কামড় দিয়েছে পায়, তা বলে কি কুকুরের কামড় মানুষের শোভা পায় | অবোধার কাজ বোধার সাজে না। |
কুকুরের কামড় হাঁটুর নীচে | নগন্য বিরাট ক্ষতি করতে অক্ষম। |
কুকুরের দৌড় ছাড়া হাঁটা নেই। | অস্থিরচিত্ত সবসময় ছটফট করে। |
কুকুরের লেজ কাজে লাগে না | বাহুল্যের কোন মূল্য নেই। |
কুকুরের পেটে ঘি সয় হয় না | অনভ্যস্ত লোককে ভালো জিনিষ দিলেও সেটা তারপক্ষে প্রীতিকর হয় না; মন্দলোকে ভাল উপদেশ নেয় না; |
কুকুরের লেজে ঘি মাখলেও সোজা হয় না | বেয়াড়া লোককে সংশোধন করা যায় না। |
কুকুরের স্থান পায়ের নীচে | নীচের জিনিষ নীচেই থাকে, উপরে ওঠে না। |
কুজন-পিরিত কাঁচ, ভাঙিলে ফুরায়; সুজন-পিরিত সোনা, ভেঙে গড়া যায় | মন্দজিনিষ বাতিল করতে হয়; ভালজিনিষ ব্যবহার করতে হয়। |
কুজনের নেই লাজ নেই অপমান; সুজনের এককথা মরণ সমান | মন্দলোকের লাজঘেন্না বলে কিছু নেই কিন্তু একটু কটু কথা শুনে ভদ্রলোক মৃতপ্রায় হয়। |
কুটুম্বের মধ্যে শালা, গয়নার মধ্যে বালা | দুইই সমান আদরণীয়। |
কুঠে মুরগির ঠোঁটে বল | দুর্বলেরা বাকসর্বস্ব হয়। |
কুৎসিত ছেলের নাম দিব্যসুন্দর | বিসদৃশ নামকরণ; যা নয় তাই হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা। |
কুদেশঞ্চ কুবৃত্তিঞ্চ কুভার্যাং কুনদীম্ তথা। কুদ্রব্যঞ্চ কুভোজ্যঞ্চ বর্জয়েচ্চ বিচক্ষণঃ।।(চাণক্য) | খারাপ দেশ, নিন্দনীয় জীবিকা, দুশ্চরিত্রা/রুগ্না স্ত্রী, খারাপ নদী, খারাপ দ্রব্য এবং খারাপ আহার্য বিচক্ষণ ব্যক্তি বর্জন করবেন। |
কুদেশমাসাদ্য কুতোহর্থসঞ্চয়ঃ কুপুত্রমাসাদ্য কুতো জলাঞ্জলিঃ। কুগোহিনীং প্রাপ্য কুতো গৃহে সুখং কুশিষ্যমধ্যাপয়তঃ কুতো যশঃ।। (চাণক্য) | কুদেশে গিয়ে অর্থসঞ্চয়ের আশা কোথায়? কুপুত্রের জন্ম দিয়ে পারলৌকিক জলাঞ্জলি পাওয়ার আশা কোথায়? দুর্বিনীতা স্ত্রী লাভ হলে ঘরে সুখের আশা কোথায়? দুর্বিনীত ছাত্রকে শিক্ষাদান করে যশের আশা কোথায়? |
কূপোদকং বটচ্ছায়া শ্যামা স্ত্রী ইষ্টকালয়ম্। শীতকালে ভবেদুফ’ গ্রীষ্মকালে চ শীতলম্।। (চাণক্য) | কূপের জল, বটগাছের ছায়া, মধ্যযৌবনে উপনীত এমন স্ত্রী এবং ইটের তৈরি বাড়ি- এগুলি শীতকালে উষ্ণ থাকে আর গ্রীষ্মে থাকে শীতল (অর্থাৎ এগুলি সকল ঋতুতে সুখদায়ক হয়)। |
কুপুত্র যদ্যপি হয়, কুমাতা কখনো নয় // কুপুত্র হয় যথাতথা কুমাতা নয় কখনতো // 'কুপুত্র অনেক হয় মা কুমাতা নয় কখন ত'-রামপ্রসাদ | মায়েরা কখনো বিরূপ বা স্নেহ-শূন্যা হয় না। |
কুবার্তা/সংবাদ বাতাসের আগে ছোটে/ধায় | দুঃসংবাদ তড়িৎ গতিতে ছড়ায়;পরের কুৎসা গাইতে মানুষ মুখিয়ে থাকে;পরের কুৎসা মুখরোচক খাদ্য। |
কুমির যখন জলে থাকে ডাঙায় ডিমে নজর রাখে | মাতৃহৃদয়ের তুলনা নেই; মা জগতের শ্রেষ্ঠরূপা নারী। |
কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করে জলে/পানিতে বাস | যার যেখানে প্রভুত্ব সেখানে তার সাথে বিবাদ করে বাস করা যায় না। |
কুম্ভকর্ণের নিদ্রা | দীর্ঘকাল ধরে একটি কাজ অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। |
কুম্ভকর্ণের নিদ্রাভঙ্গ | দীর্ঘকাল ধরে অবহেলিত কোন কাজে সহসা হাত পড়েছে। |
কুয়ো হয়, আমের ভয়, তাল তেঁতুলের কিছুই নয়–খনা | কুয়াশা আমের বৌল নষ্ট করে; তাল তেঁতুলের করে না। |
কুল রাখি না শ্যাম রাখি | উভয়সঙ্কটে পড়া; ভালমন্দ বিচারে দ্বিধা। |
কুলশীলগুণোপেতঃ সর্বধর্মপরায়ণঃ। প্রবীণঃ প্রেষণাধ্যক্ষো ধর্মাধ্যক্ষো বিধীয়তে।। (চাণক্য) | যিনি সদ্বংশে জন্মগ্রহণ করেছেন, যাঁর চরিত্র নির্দোষ, যিনি বিভিন্ন গুণে ভূষিত, যিনি সবল ধর্মে নিষ্ণাত বা অভিজ্ঞ, যিনি প্রাজ্ঞ এবং ভৃত্য প্রভৃতি লোকনিয়োগে বিচক্ষণ- তিনিই বিচারক হওয়ার যোগ্য। |
কুলীনৈঃ সহ সম্পর্কং পণ্ডিতৈঃ সহ মিত্রতাম্। জ্ঞাতিভিশ্চ সমং মেলং কুর্বাণো ন বিনশ্যতি॥ (চাণক্য) | কুলীনবংশীয় পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কস্থাপন করেছেন, পণ্ডিতব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্বস্থাপন করেছেন এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিলেমিশে থাকেন এমন ব্যক্তি কখনো বিপদে পড়ে না |
কুলোয় শুয়ে তুলোয় করে দুধ খায় | শিশুর মত অতি সরল, যেন কিছু জানে না- এমন কপটব্যক্তির প্রতি বিদ্রুপোক্তি। |
কুশিক্ষিত হওয়া থেকে অশিক্ষিত থাকা ভাল | বদনাম দোষণী য়, অজ্ঞানতা কোন দোষের নয়। |
কুসঙ্গে থাকার চেয়ে একা/সঙ্গীহীন থাকা ভাল | বদনাম কুড়াবার ভয় থাকে না; সমতুল্য- 'দুষ্ট গরু থেকে শূন্য গোয়াল ভাল'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভাল'। |
কূপোদকং বটচ্ছায়া শ্যামা স্ত্রী ইষ্টকালয়ম্। শীতকালে ভবেদুফ’ গ্রীষ্মকালে চ শীতলম্।। (চাণক্য) | কূপের জল, বটগাছের ছায়া, মধ্যযৌবনে উপনীত স্ত্রী এবং ইটের তৈরি বাড়ি- এগুলি শীতকালে উষ্ণ থাকে আর গ্রীষ্মে থাকে শীতল। |
কৃতং কর্ম শুভাশুভম | শুভ ও অশুভ, সব কৃতকর্মের ফলভোগ করতে হবেই। |
কৃতঘ্ন বিশ্বাসঘাতকের ইহকালও নেই পরকালও নেই | বিশ্বাসঘাতকের কোনদিন ভাল হয় না; সমতুল্য- 'অকৃতজ্ঞের নরকবাস'। |
কৃতজ্ঞ কুকুর অকৃতজ্ঞ মানুষ অপেক্ষা শ্রেয় | কুকুরের কৃতজ্ঞতাবোধ মানুষ থেকে অনেক বেশি; সমতুল্য- যতই মানুষকে দেখছি ততই কুকুরকে ভালো লাগছে। |
কৃতস্য করণং নাস্তি, মৃতস্য মরণং যথা। গতস্য শোচনা নাস্তি ইতি বেদবিদ্যাং মতম॥ (চাণক্য) | বেদজ্ঞ বলেন, যেমন- মৃত ব্যক্তি পুনরায় মরণ নেই, তেমনিই কৃত কর্মের আর করণ নেই; অর্থাৎ যা বার হয়ে গিয়েছে তার জন্য শোক করে লাভ নেই। |
কৃপণের মত দাতা নেই | নিজে ভোগ না করে পরের ভোগের জন্য সন অর্থ রেখে যায়। |
কৃপণের ধন চোরে/বাটপাড়ে খায় | কৃপণ সৎকাজে অর্থ ব্যয় করে না; অথচ প্রবঞ্চকের পাল্লায় পড়ে সব অর্থ হারায়। |
কৃপণের সন্তান অমিতব্যয়ী হয | কেনারামের ছেলে ভোগীরাম হয়; ভোগের অর্থ হাতে থাকলে অপব্যয়ে খামতি হয় না। |
কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরুল | তুচ্ছ বিষয় থেকে বিপজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব হল; সামান্য বিষয়ের অনুসন্ধান থেকে গুরুতর বিষয় প্রকাশিত |
কেঁচো দিয়ে কাতলা ধরা | সামান্য উপকরণ দিয়ে বিরাট কাজ সম্পন্ন করা। |
কে একবার আমার হাত মুচড়েছিল মনে রাখি; কে দশবার আমার হাত ধরেছিল ভুল যাই | অকৃতজ্ঞতার প্রতি ইঙ্গিত। |
কেউ কারো মিত্র নয় কেউ কারো শত্রু নয়, ব্যবহারে শত্রুমিত্র হয় | হাত বাড়ালেই বন্ধু, হাত ছাড়ালেই শত্রু। |
কেউ মরে, কেউ হরি হরি বলে | একের দুঃখে অন্য আনন্দ করে। |
কেউ মরে বিল ছেঁচে, কেউ খায় কৈ | একের পরিশ্রমে অন্যের বিলাসিতা। |
কেউই জ্ঞানী হয়ে জন্মায় না। | শিক্ষায় জ্ঞান অর্জিত হয়। |
কেন্দু (হলুদ রঙের ফল) গাছে কেন্নোটা (পোকা) | উজ্জ্বল বর্ণের পোষাক পরে থাকা কালো কুৎসিত ব্যক্তির প্রতি কটাক্ষ। |
কেবল মন দিয়েই মন জয় করা যায় | গায়ের জোরে মন জয় করা যায় না। |
কেলেমাণিকের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর | বিসদৃশ নামকরণ; যা নয় তাই হবার ইচ্ছা। |
কেল্লা/কিল্লা ফতে- আরবী প্রবাদ | সফল কার্যোদ্ধার, সিদ্ধিলাভ |
কেশব, গোপাল, হরিহরি, হরহর | দেবতাদের নাম নিয়ে সোনারির সোনাচুরির ধান্ধাবাজি/ফন্দি। |
কোকিলানাং স্বরো রূপম্ নারীরূপং পতিব্রতম্। বিদ্যা রূপং কুরূপাণাং ক্ষমা রূপং তপস্বিনাম্॥ (চাণক্য) | কোকিলের কণ্ঠস্বরই তার রূপ, পাতিব্রত্যই স্ত্রীর রূপ, কুৎসিত পুরুষের বিদ্যাই রূপ এবং তপস্বীদের ক্ষমাই রূপ। |
কোণঠাসা ইঁদুর বিড়ালকে কামড়ায়- জাপানী প্রবাদ | বিপদে পড়লে দুর্বলও দুঃসাহসী হয়ে ওঠে। |
কোথা রাম রাজা হবে, না কোথা রাম বনে যাবে | সুদিনের পরিবর্তে দু্র্দিন; সুখের কল্পনা ভেঙে চুরমার। |
কোথাকার জল কোথায় গড়ায়/মরে // কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় | অনিশ্চিত পরিণতি; শুরু দেখে কাজের পরিণতি বোঝা যায় না। |
কোথায় আগরতলা আর কোথায় চৌকিরতলা // কোথায় অযোধ্যার রঘু আর কোথায় বাঁশবনের ঘুঘু // কোথায় রাজা ভোজ, আর কোথায় গঙ্গু তেলী // কোথায় রাণী ভবানী আর কোথায় ফুলী জেলেনী | দুই অসমবস্তুর মধ্যে তুলনা হয় না। |
কোথায় রাম রাজা হবেন, না তার বনবাস | তুলনীয়- কোথা রাম রাজা হবে, না কোথা রাম বনে যাবে |
কোথায় স্বর্গ, কোথায নরক কে বলে তাহা বহুদূর;মানুষেরই মাঝে স্বর্গ-নরক মানুষেতে সুরাসুর (রেজাউল করিম) | স্বর্গ নরক ইহজগতে মানুষ রচনা ্করে। |
কোদাল পাড়লেই/মারলেই চাষ হয় না | দক্ষতাবিনা কার্যসিদ্ধি/ফললাভ হয় না। |
কোদালকে কোদাল বল | সোজা কথা সোজা ভাষায় বল। |
কোদালে কুড়ুলে মেঘ দেখিলে চাষিকে বলে বাগাগে হাল- খনা | পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে কাজকর্মে সহায়তা আসে। |
কোদালের শিয়র কুড়ুলের পাশ, যে যাবে তার সর্বনাশ | দুর্জনের সঙ্গ পরিত্যজ্য। |
কোন্ বে-আক্কেলে কয় সংসার আমার নয়? | সংসার গড়তেই তো জগতে আসা। |
কোন কাজ অর্ধসমাপ্ত রাখা নেই | অর্ধসমাপ্ত কাজ না-কাজের সামিল। |
কোন কাজেই তাড়াহুড়ো করা নেই | তাড়াতাড়িতে কাজে ভুলভ্রান্তি হয় এবং তাতে কাজ সম্পন্ন করতে দেরী হয়। |
কোন কাজের শুরুটা বাজে হলে শেষটাও বাজে হয় | সুন্দরভাবে শুরু করলে সুষ্টভাবে সম্পন্ন হয়। |
কোন কাজের শেষ ফেলে রাখতে নেই | কালে পেলে কোনকালে কাজ শেষ হবে না। |
কোনকালে নেই ষষ্ঠীপূজা একেবারে দশভুজা | বিসদৃশ ব্যাপার; কৃপণের বৃহৎ ক্রিয়াকর্ম |
কোন ঘুমন্ত লোকের পাশে বসে থাকা (বা না ঘুমানো) ভদ্রতা- আরবী প্রবাদ | সৌজন্যবোধের একটি উপায়। |
কোনকালে নাই ষষ্ঠীপূজা, একেবারে দশভূজা | নগণ্যের বিরাট আয়োজন করার প্রয়াস। |
কোন মানুষই পুর্ণাঙ্গ নয় | কোন মানুষই সর্বাঙ্গসুন্দর হতে পারে না। |
কোমল ব্যবহার সংঘর্ষ এড়ায় | মিষ্টি ব্যবহারে মানুষের মন জয় করা যায়। |
কোম্পানীকা মাল দরিয়ামে ঢাল- হিন্দি প্রবাদ | পরের জিনিষের অপচয়, হেলেফেলায় ব্যবহার; পরের ঘি পেলে প্রদীপে দেয় ঢেলে। |
কোয়লাকা ময়লা ছুটে যব্ আগ্ করে পর্বেশ- হিন্দি প্রবাদ | আগুনে শুদ্ধ হলে কয়লার ময়লা যায়; জ্ঞানাগ্নিতে শুদ্ধ হলে মানুষের মনের অজ্ঞতা দূর হয়; কয়লা পুড়লে ময়লা যায়। |
কোয়লা ধোয়ে না উজ্রৈ লাশুন তজৈ না বোয়। কুর কুরাই না তজৈ কি বৈঠে ঘর্ খোয়।।- হিন্দি প্রবাদ | কয়লা ধুলে ময়লা যায় না; রসুন ধুলে গন্ধ যায় না; ক্রুর ব্যক্তি নিঃসম্বল হলেও ক্রুরতা ছাড়ে না। |
কোলপাতলা ডাগর গুছি লক্ষ্মী বলেন ঐখানে আছি- খনা | ধানের চারা কিছুটা দূরে দূরে বসালে ফসল বেশ ভাল হয়। |
কোহতিভারঃ সমর্থানাং কিং দূরং ব্যবসায়িনাম্। কো বিদেশঃ সবিদ্যানাং কঃ পরঃ প্রিয়বাদিনাম্॥ (চাণক্য) | সক্ষমব্যক্তির কাছে কোন কাজই কঠিন নয়; ব্যবসায়ীর কাছে কোনপথই দূর নয়; বিদ্বানের কাছে কোনদেশই বিদেশ নয়;ও মিষ্টভাষীর কাছে কেউই পর নয়। |
ক্রশ/ক্রুশের পিছনেই শয়তানের আস্তানা | প্রদীপের নীচেই অন্ধকার; ভালো ও মন্দের সহাবস্থান; অবিমিশ্র কিছু হয় না। |
ক্রিয়া শব্দের চেয়ে বেশি জোরে কথা বলে | কিছু বললে এবং কিছু করলে লোকের করার কথাই মনে রাখবে, বলা-কথা মনে রাখবে না। |
ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে/থাকে | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য-'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়','চড় মারলে চড় খেতে হয়','ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
ক্রোধ এবং ঘৃণা সুপরামর্শের পক্ষে বাধাস্বরূপ | রিপু মানুষকে অন্ধ করে; জ্ঞানর্জনে বাধা সৃষ্টি করে। |
ক্রোধের প্রকাশ দৃষ্টিতে; গুণের প্রকাশ শিষ্ট আচরণে | আচরণে মানুষ চেনা যায়। |
ক্ষমা পরমোধর্মঃ | ক্ষমার মত ধর্ম নেই। |
'ক্ষমাই যদি করতে না পার, তবে তাকে ভালোবাস কেন?'- রবীন্দ্রনাথ | ভালবাসার লোককে সহজে ক্ষমা কয়ড়া যায় |
ক্ষমার বড় গুণ নাই, দানের বড় পূণ্য নাই | ক্ষমাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং দানই শ্রেষ্ট কর্ম। |
ক্ষিদে থাকলে নূন দিয়েও ভাত খাওয়া যায় | আগে পেট পরে রসনা; ক্ষিদের কোন পছন্দ-অপছন্দ নেই। |
ক্ষিদের কোন জাত নেই | ক্ষিদের বাছবিচার নেই। |
ক্ষিপ্রতা শয়তানের পছন্দ , করুণাময় ঈশ্বরের পছন্দ ধৈর্য- আসিরীয় প্রবাদ | শয়তান সবসময় আগ বাড়িয়ে থাকে, করুণাময় ঈশ্বর সবসময় সহিষ্ণু। |
ক্ষুদ খেয়ে পুঁজি করে দুপুরুষে খরচ করে | কার্পণ্যের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালিকণা বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল | সব বিশাল সৃষ্টি অসংখ্য ক্ষুদ্রের সমষ্টিতে গড়ে উঠে। |
ক্ষুদ্র শরীরে একটি বিরাট আত্মা বাস করে | আত্মার সীমা পরিমাপ করা যায় না। |
ক্ষুধার্ত পাকস্থলীর জিভ থাকে না | ক্ষিদের পছন্দ-অপছন্দ নেই; ক্ষিদের পেট বাছবিচার করে না। |
ক্ষুধার্ত পেটের কান নেই- আরবী প্রবাদ | ক্ষুধার্ত পেট বাধা নিষেধ শোনে না। |
ক্ষুরের ধার ছুঁতে কাটে | তীক্ষ্ণাধার বস্তু নিয়ে নাড়াচাড়া করতে নেই। |
ক্ষেত্রে কর্ম বিধিয়তে | ক্ষেত্র বিচার করে কাজের বিধান হয়। |
ক্ষেপই হারে, জনম হারে না | মানুষ একবারই ঠকে; সারাজীবন ধরে ঠকে না। |
খ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
খঞ্জনের নাচ দেখে চড়ুইয়ের নাচ | অক্ষমের উচ্চাশা, অনুকরণপ্রিয়তা; উৎকৃষ্টকে অনুকরণ করে নিকৃষ্টের হাস্যাস্পদ হওয়া। |
খড় কেটে বন উজাড় | বসতি স্থাপন করতে গিয়ে প্রাকৃতিক সঙ্কট সৃষ্ট। |
খড়ম পায়ে দিয়ে গঙ্গা পার | অসাধ্যসাধন করার ব্যর্থপ্রয়াস। |
খড়ের আগুন যেমনি জ্বলে তেমনি নেভে | বদরাগীর রাগ চড়তে দেরী হয় না পড়তেও দেরী হয় না; কাজে তাড়াতাড়ি উৎসাহ আসে, আবার তাড়াতাড়ি উৎসাহ উবেও যায়। |
খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা | অসাধ্য কাজে নিয়োজিত হওয়া, অসম্ভব কাজ যা হবার নয়; সমতুল্য- অন্ধকারে উকুন বাছা, অন্ধকারে কালো বিড়াল খোঁজা ইত্যাদি |
খনা ডেকে বলে যান, রোদে ধান ছায়ায় পান | আলোতে ধান এবং ছায়াতে পানের চাষ করতে হয়। (শস্যগণনা, চাষ করার সময়নির্ণয়) |
খনা বলে এরেও ঠেলি, যদি না দেখি সম্মুখে তেলি | যাত্রাকালে সমস্ত বাধাই হয়তো ঠেলা যায়, কিন্তু সামনে তেলীজাতের লোককে দেখলে কদাচ যাত্রা করিতে নাই। (যাত্রাকালীন অশুভ লক্ষণ) |
খয়রাত ঘর থেকে শুরু হয় | আগে ঘর সামলাতে হয়, পরে অপরকে দেখার প্রশ্ন আসে। |
খর নদীতে চর পড়ে না | সতেজ মনে কলুশ জমে না। |
খরচের আঁকে আনতে জমার আঁকে কুলায় না | অর্থের টানাটানি; সমতুল্য- 'ডাইনে আনতে বাঁয়ে কুলায় না, 'নুন আনতে পান্তা ফুরায়' ইত্যাদি। |
খল যায় রসাতল | খলের পরিণতি ভাল হয় না। |
খলঃ করোতি দুর্বৃত্তং, নূনং ফলতি সাধুষু | দুষ্টের দুস্কৃতির ফল সঙ্গদোষে সাধুকে ভোগ করতে হয়। |
খলঃ কেন নিবার্যতে | দুর্জনকে কে নিবৃত্ত করবে; দুর্জনের সাথে পারা যায় না। |
খলের ছলের অভাব হয় না | ছলচাতুরীতে খল ভারী ওস্তাদ। |
খাঁচায় পুরে খোঁচা মারে | আয়ত্তে এনে অত্যাচার করা; দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার। |
খাঁচার পাখি গান গায় না | অধীনের মনে আনন্দ থাকে না। |
খাঁদা নাকে নথ, গোদা পায়ে মল // খাঁদা নাকে তিলক কাটা | বিসদৃশ সাজ; নিতান্ত বাড়াবাড়ি। |
খাই দাই কাসি/বাঁশি বাজাই, কারো খবর রাখি না | খেদেদেয়ে সুখেই আছি, দুশ্চিন্তায় মাথা খারাপ করি না। |
খাই দাই তবলা বাজাই, দুদিন বইতো নয় | ক্ষণস্থায়ী জীবনে সুখ করে নাও। |
খাই দাই ভুলি না তত্বকথা ছাড়ি না | সংসারে থেকেও ধর্ম চর্চা করা যায়; কিংবা আমাকে যতই খাওয়াও বা পড়াও না কেন ঈপ্সিত লক্ষ্য থেকে সরি না। |
খাই না খাই আছি ভালো, ভাঙাঘরে চাঁদের আলো | নিজেকে নিয়ে নিরন্নের রসিকতা; পেটে ভাত নেই, তবু ভাঙা ঘরে চাঁদের আলোয় তার দিলখুশ। |
খাওয়ার সাথে খিদে আসে | ক্ষিদে না হলে খাওয়া নেই- বৈদ্যের বিধান। |
খাওয়াবে হাতির ভোগে, দেখবে বাঘের চোখে | ছেলে মানুষ করার স্বীকৃত পদ্ধতি; শ্রেষ্ঠ শিক্ষা গৃহে শুরু হয়। |
খাচ্ছিল জেলে জাল বুনে, কাল হল তার হালের গরু কিনে // খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে | বেশি আশা করলে বেশি নিরাশা হ'তে হয়; অভ্যস্ত কাজ ছেড়ে অনভ্যস্ত কাজে হাত দিলে ফল ভালো হয় না; সমতুল্য- 'অতি আশ সর্বনাশ', 'অতিলোভে তাঁতী নষ্ট', অতি আশায় মরে চাষা' ইত্যাদি। |
খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি | মূলকাজের চেয়ে অনাবশ্যক কাজে আড়ম্বর বেশি। |
খাট ভাঙ্গলে ভূমিশয্যা | শেষসম্বল নষ্ট হওয়ার আগে সতর্কবার্তা; যখন যেরকম অবস্থা সেইভাবেই মানিয়ে চলা। |
খাটে খাটায় লাভের গাঁতি, তার অর্ধেক মাথার ছাতি-খনা | যে কাজের লোকের সাথে খাটে সে পূর্ণফল পায়; যে কাজের লোকের ওপর নজর রাখে সে অর্ধেক ফল পায়; যে কাজ করে না, কাজে নজরও দেয় না তার ফললাভ শূন্য। |
খাড়া-বড়ি-থোর, থোর-বড়ি-খাড়া | অবস্থা যখন আগে-পরে একই রকম এবং বৈচিত্র্যহীন |
খানায় পড়লে হাতি, চামচিকেতে মারে লাথি | অসহায় অবস্থায় পেলে সকলেই তার সুযোগ নেয়। |
খানে কে দাঁত অঔর, দিখানে কা দাঁত অঔর- হিন্দি প্রবাদ | কিছু করার জন্য দেখানোর জন্য নয় এবং কিছু দেখানোর জন্য করার জন্য নয়, যেমন হাতীর দাঁত। |
খাবার আগে/সময় শোবার চিন্তা | আগাম ভাবনায় সতর্কতা; দুশ্চিন্তায় কাতর ব্যক্তির প্রতি বক্রোক্তি। |
খাবার আছে চা'বার নেই, দেবার আছে নেবার নেই | চুড়ান্ত ভারসাম্যহীনতা; চারিদিকে বিশৃঙ্খলা। |
খাবার বেলায় আগে, কাজের বেলায় ভাগে // খাবার বেলা নেবার মা, উলু দেবার বেলা মুখে ঘা // খাবার বেলায় বেশি বেশি, কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা | খাবার পেতে যত ঔৎসুক্য, কাজের বেলায় তত অনীহা। |
খায় না খায়, সকালে নায়, হয় না হয় দুবার যায়, তার কড়ি বদ্যি না খায় | সকালে স্নান, দিনে দুবার মলত্যাগ করলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে ফলে বদ্যি ডাকতে হয় না। |
খায় মালকোঁচা মেরে, ওঠে হাঁটু ধরে | অপরিমিত আহার; মহাপেটুক। |
খাল কেটে কুমির আনা // খাল কেটে বেনো জল ঢোকানো | বাইরের বিপদ ঘরে ডেকে আনা; সমতুল্য- সাধ করে শাল নেওয়া |
খাল পার হলে কুমিরকে কলা // খাল পার হলে পাটনী শালা | বিপদ কেটে গেলে সবাই বীরপুরুষ; কার্যসিদ্ধি হয়ে গেলে লোকে উপকারীকে ভুলে যায়। |
খালি কলসি বাজে বেশি | হালকাচরিত্রের লোক বেশি বকে; অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তি বাহ্যিকভাবে তর্জন-গর্জন করে। |
খালি কলসি বাজে বেশি ভরা কলসি বাজে না, রূপ নাই কইন্যার সাজন বেশি রূপের কইন্যা সাজে না | সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য- যার রূপ নেই তার অলঙ্কারের প্রয়োজন হয়; যার রুপ আছে তার অলঙ্কারের প্রয়োজন হয় না। |
খালি দুয়া (দোয়া) করলে পুয়া (ছেলে) অয় (হয়) না | বিনা পরিশ্রমে শুধু প্রার্থনাতে কার্যোদ্ধার হয় না। |
খালি পেটে জল, ভরা পেটে ফল | খালি পেটে জল খাওয়া নেই এবং ভরা পেটে ফল খাওয়া নেই- বৈদ্যের বিধান। |
খালি বস্তা খাড়া থাকে না | গুণহীন লোকের প্রতিষ্ঠা নেই। |
খালি হাত চিলকে প্রলুব্ধ করে না | আকর্ষণীয় বস্তু না থাকলে কেউ আকৃষ্ট হয় না; যার কিছু নেই তার হারাবার কিছু নেই। |
খিচুড়ি পাকানো | কোন কাজ বিশৃঙ্খলভাবে উপস্থাপন করা। |
খিড়কি দিয়ে হাতি গলে, সদরে বাঁধে ছুঁচ | পিছনের খবর কেউ রাখে না; সামনের দিকেই যত নজর। |
খিদে পেলে বাঘ ধানও খায | খিদের জাতবিচার নেই; প্রয়োজন নিয়ম মানে না। |
খিদে পেলে দুহাতে খায় | জঠরজ্বালা মানুষকে পাগল করে, জ্ঞানশূন্য করে |
খিদেয় বাঘ লোকালয়ে | খিদেয় মানুষ পাগল হয়। |
খিদের চোটে পাটকেলে কামড় | খিদের সময় কেউ ভক্ষ্য, অভক্ষ্য দেখে না। |
খুঁট-আঁখুরে দেশের বালাই | অল্প শিক্ষিতরা সমাজের বোঝা। |
খুঁটি না থাকলে ঘর আপনি পড়ে | পরের শক্তিতে লড়া যায় না; সাহায্যকারী না থাকলে সংসারে দাঁড়ানো কষ্টকর। |
'খুঁটির গোড়ায় নেইকো মাটি, কিসে ঘর রবে খাঁটি'- লালন | ভাল মুরুব্বির থাকলে উন্নতি সহজ হয়। |
খুঁটির জোরে ভেড়া নাচে/লড়ে | শক্তিশালী ব্যক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় অযোগ্য ব্যক্তিরও উন্নতি সম্ভব; সহায়তা পেলে গুরুতর কাজে এগুনো যায়; |
খুদের জাউ পায় না, ক্ষীরের জন্য কাঁদে | যোগ্যতার বাইরে প্রত্যাশা করা। |
খুব কাছে ভালো নয়; খুব দূরে নিস্ফলা | মধ্যপন্থা শ্রেষ্ট পন্থা; ভাল নয় অতিশয়। |
খুশ খবরের ঝুটাও ভাল | মন খুশি থাকে। |
খেঁকি কুকুরের ঘেউ ঘেউ সার | নগণ্যের কোন গুরুত্ব নেই। |
খেয়ে দেয়ে একাদশী | আচার বিচারে আস্থা নেই। |
খেতে দিলে/পেলে শুতে চায় | সুযোগ পেলে আরও সুযোগ খোঁজে; আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। |
খেতে ভাল ভাজা-চাল,দেখতে ভাল মুড়ি; রসকে ভাল এক ছেলের মা, দেখতে ভাল ছুঁড়ি | ভাজা-চাল দেখতে ভাল নয়, কিন্তু খেতে ভাল; মুড়ি দেখতে ভাল কিন্তু খেতে তেমন নয়; একইভাবে এক সন্তানের মা রসিকতায় ভাল, কিন্তু দেখতে অল্প বয়স্কা নারীই ভাল। |
খেলতে জানলে কানা কড়ি দিয়েও খেলা যায় | উপায়জ্ঞের কাছে উপায় কোন সমস্যা নয়; যে উপাদান পায় তাই দিয়েই সে সমস্যার সমাধান করে। |
খোদার মার দুনিয়ার বার | আল্লাহর বিধান অপ্রতিরোধ্য। |
খেতে দেবার মুরোদ নেই, কিল মারার দোঁসাই | ভালো করতে পারে না মন্দ করতে মুখিয়ে আছে। |
খেতে পারি, দিতে পারিনা | আত্মসর্বস্ব/সঙ্কীর্ণমনা ব্যক্তি, যে নিতে পারেম দিতে পারে না। |
খেদাই না, তোর উঠান চষি | কড়াকথা ঘুরিয়ে বলা। |
খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয় | হজম হওয়া সুস্থতার লক্ষণ। |
খেয়ার কড়ি গুণে দিয়ে সাঁতরে নদী পার | সুযোগ নষ্ট করা হল; অর্থও ব্যয় হল, আবার পরিশ্রমও হল। |
খেল খতম পয়সা হজম | যা হবার হয়ে গেছে। |
খেলোয়াড়দের চেয়ে দর্শকেরা বেশি খেলা দেখে- চীনা প্রবাদ | বাইরে থেকে সমস্যা বেশি অনুধাবন করা যায়। |
খোঁড়ার পা খানায়/গর্তে পড়ে | অসহায়ের পদেপদে বাধা; যার যে বিষয়ে বিপদের আশঙ্কা, সে সেই বিপদেই পড়ে। |
খোদা পহাড় নিকলী চুহিয়া- হিন্দি প্রবাদ | কঠিন পরিশ্রমে অল্প প্রাপ্তি; সমতুল্য- 'পর্বতের মুষিক প্রসব'। |
খোদা যারে দেয় ছাদ ফুঁইড়াই দেয় | কারো কারো ক্ষেত্রে ভগবানের অসীম করুণা অঝোরে ঝরে। |
খোদার উপর খোদকারী | যোগ্য লোকের কাজে অযোগ্য লোকের অসঙ্গত হস্তক্ষেপ। |
খোদার নাও দোয়ায় চলে | সবই তাঁর ইচ্ছার অধীন। |
খোদার কর্ম খোদাই জানে | কর্ম কি হবে তা কর্তাই জানে। |
খোলা দরজা সাধুকেও প্রলুব্ধ করে | আলগা পেলে সবাই সুযোগ নিতে চায়। |
খোলা মুখে মাছি ঢোকে | সতর্ক না থাকলে ক্ষতি হতে পারে। |
খোলা শত্রুতার চেয়ে কপট বন্ধুত্ব বেশি খারাপ | কপটতা খুবই নিন্দনীয়; কপট বন্ধুর থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। |
খোশখবরের ঝুটাও ভাল | মিথ্যা সুসংবাদ শুনলে আনন্দ হয়। |
খ্যাপা শেয়াল, ভাঙা দেয়াল আর বড়লোকের খেয়াল- তিনই সমান | তিনটিই সমান বিপজ্জনক- ক কামড়াতে পারে; খ আচমকা ভেঙে পড়তে পারে; গ জীবন ওষ্ঠাগত করে তুলতে পারে। |
গ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
গঙ্গা গঙ্গা না জানি কত রঙ্গা চঙ্গা | যা দেখিনা তা বড়ই সুন্দর মনে হয়; স্বর্গ দেখি না বলেই স্বর্গ বড়ই সুন্দর। |
গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা | গঙ্গাদশমীতে গঙ্গাস্নান করে গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা করা হয়; বিনাব্যয়ে কার্যোদ্ধার; অপরের অর্থে অপরের উপকার; মাছের তেলে মাছ ভাজা। |
গঙ্গাজলে ধুলেও কলঙ্ক যায় না | কলঙ্ক যাবার নয়; মরার আগে কলঙ্ক মোছে না। |
গঙ্গা মড়া আনে না | মড়া ফেললে গঙ্গা না বলে না; নিরবে সে বয়ে নিয়ে যায়; নির্বিরোধী লোককে যে কাজই দাও সে অনিচ্ছা জানায় না। |
গঙ্গায় ময়লা ফেললে গঙ্গার মাহাত্য যায় না | নিন্দাবাদে মহতের মহত্ব নষ্ট হয় না। |
গঙ্গার জল গঙ্গায় রইল, পিতৃপুরুষ উদ্ধার হল | তর্পণের সময় গঙ্গার জল তুলে গঙ্গাতেই ফেলা হয়; এতে গঙ্গার জল গঙ্গায় থাকে, আবার পিতৃপুতুষও উদ্ধার পায়; অর্থাৎ বিনাব্যয়ে কার্যসিদ্ধি। |
গঙ্গার দুকূল ভাঙে না | এক কাজের দুই ফল হয় না; কিছু গেলে কিছু আসে; কিছু হারালে কিছু পাওয়া যায়। |
গচ্ছন্ পিপীলকো যাতি যোজনানাং শতান্যপি। অগচ্ছন্ বৈনতেয়োহপি পাদমেকং ন গচ্ছতি॥ (চাণক্য) | পিঁপড়ে চলতে থাকলে শত যোজন এগুতে পারে; আর বিনতার পুত্র গরুড় যদি স্থির হয়ে বসে থাকে তবে সে এক পা-ও এগুতে পারে না। |
গজকচ্ছপের লড়াই | দুই প্রবল শক্তির মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী লড়াই |
গজমাত্রেই মোতি থাকে না | সব মানুষ মানুষ হয় না। |
গড্ডলিকা প্রবাহ | ভেড়ার পাল; নিজের বুদ্ধিতে পরিচালিত না হয়ে অন্ধভাবে অপর সকলকে অনুসরণ। |
গড়তে চায় ঠাকুর হয়ে যায় কুকুর | ভালো করতে চায় কিন্তু মন্দ হয়ে যায়। |
গড়তে যত সময় লাগে ভাঙ্গতে তত সময় লাগে না। | সৃষ্টির ছন্দ অতি ধীর; ধ্বংস চোক্ষের পলকে শেষ। |
গড়ানো পাথরে শ্যাওলা ধরে না- ইংরাজী প্রবাদ | অস্থিরমতির সঞ্চয় হয় না; গতিশীল মনে ময়লা জমে না; স্থির না হলে উন্নতি হয় না। |
গড়িমসিতে সময় চুরি যায় | আজ নয় কাল করে সময় নষ্ট হয়; গয়ংগচ্ছভাবে অযথা সময় বয়ে যায়। |
গণ্ডুষ জলমাত্রেণ সফরী ফর্ফরায়তে | অল্পজলে সফরী লাফিয়ে বেড়ায়; অল্পশিক্ষিতরা বেশি বিদ্যার জাহির করে। |
গতর নেই চোপায় দড়, মেঙ্গে খায় তার পালি (=পঙ্ক্তি) বড় | অক্ষমের গলার জোর বেশি; কাঙালের লাইন বিরাট লম্বা। |
গতস্য শোচনা নাস্তি | যা গেছে তা গেছে, তারজন্য অনুশোচনা করে লাভ নেই। |
গন্ধবিহীন শিমুলফুল সুন্দর হ’লেও আদরণীয় নয় | গুণহীন বাহারে বস্তুর কোন মূল্য নেই। |
গন্ধমাদন বয়ে আনা | কাউকে একটা জিনিষ আনতে বললে সে দশটা জিনিষ নিয়ে আসে |
গব্য থাকলে আগেপাছে কী করবে তার শাকে মাছে? | আগে ঘি পরে দুধ থাকলে- অন্যকোন খাদ্যে স্বাস্থ্যহানি হয় না কিংবা প্রয়োজন হয় না। |
গভীর জলে কাৎলা নিঃসাড়ে চলে; অল্প জলে সফরী ফরফরায় | জ্ঞানীরা জাহির করে না; অল্পজ্ঞানীরা জাহির করে বেড়ায়। |
গভীর নদী ধীরে/নিঃসারে বয় | জ্ঞানীমানুষেরা চিন্তাভাবনা করে ধীরসুস্থে কাজ করে। |
গয়ার পাপ/ভূত বিদায় করা | যাকে সহজে তাড়ানো যায় না, তাকে তাড়ানো। |
গরজ বড় বালাই | প্রয়োজনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য; প্রয়োজন হলে মানুষ দুস্কর্ম করতেও পিছুপা হয় না। |
গরজে গঙ্গাস্নান | দায়ে পড়ে পূণ্যকর্ম করা; গরজ বড় বালাই। |
গরজে গয়লা ঢেলা বয় | প্রয়োজনের জ্বালা বড় জ্বালা; গয়লার বাঁকে যদি একদিকে হাঁড়ি থাকে তবে ভারসাম্য রাখার জন্য অন্যদিকে ইঁটপাথর রাখে; অর্থাৎ আবশ্যক হলে পরিশ্রমসাধ্য অনাবশ্যক কাজও করতে হয়। |
গরব কর যৌবনভরে, কাঁদিতে হবে অঝোর ঝরে | যৌবন ফুরিয়ে গেলে নানা দুস্কর্মের কথা মনে পড়বে; তখন এবং তারজন্য অনুশোচনা করতে হবে। |
গরম অম্বল, ঠাণ্ডা দুধ যে খায় সে নির্বোধ | দুইই স্বাস্থ্যের পক্ষে সমান হানিকর। |
গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়- ইংরাজী প্রবাদ | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরেমেঘ দেখলে ভয় পায়', 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে', দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়', 'নেড়া বেলতলায় একবার' ইত্যাদি |
গরম দুধ অমেয় মিঠা | গরম দুধ অমৃতসমান; প্রাণবর্ধক। |
গরম দুধে যার মুখ পুড়েছে সে ফুঁ দিয়ে ঘোল খায়- হিন্দি প্রবাদ | বেদনাদায়ক পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে অতিসতর্কতা। |
গরম ভাতে বিড়াল বেজার, উচিৎ কথায় বন্ধু বেজার | কাউকে অপছন্দের জিনিষ দিলে তার মন খারাপ; উচিৎ কথা বললে বন্ধুর মন খারাপ। |
গরানো পাথরে শ্যাওলা জমে/ধরে না | সচল মনে ময়লা জমে না। |
গরীব খোঁজে খাদ্য, ধনী খোঁজে খিদে- হিন্দি প্রবাদ | গরীব খিদের জ্বালায় পাগল হয় আর ধনী খিদে না হওয়ার জ্বালায় পাগল হয়। |
গরীবের কথা বাসি হলে ফলে বা সত্য হয় | সাধারণে নগণ্যের কথার গুরুত্ব দেয় না, কিন্তু ঠেকে বুঝতে পারে তখন তার কথা শুনলে ভাল হত। |
গরীব মানুষ ফড়িং খায় ঘোড়ায় চেপে বাহ্যি যায় | দুর্গতিতেও আড়ম্বর বজায় রাখার চেষ্টা। |
গরীবের ঘোড়ারোগ | যে জিনিষ পাওয়ার অধিকারী নয় তাই পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা; সামর্থ নেই তবু ধার করে খরচ করে লোক দেখানো বড়লোকি করা। |
গরীবের বৌ সবার ভাবি- হিন্দী প্রবাদ | অন্তরঙ্গতা বেশী; গরীবের কাছে সবাই একটু বেশি সুবিধা নেবার চেষ্টা করে। |
গরীবের রাঙতাই সোনা | খুব অল্পদামের জিনিষও গরীবের কাছে মুল্যবান; যার যা আছে তাই তার কাছে অমূল্য। |
গরু গামলার ঘাস খায় না // গরু গোয়ালের পাশের ঘাস খায় না | সহজলভ্য জিনিষের কদর নেই। |
গরু ছাগলের মুখে বিষ | মুড়ালে গাছের বৃদ্ধি হয় না; মুর্খের কথাবার্তা অশালীন। |
গরু/গাই বাছুরে মিল থাকলে মাঠে গিয়ে দুধ দেয় | পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকলে ফাঁকিতে কাজ করা যায়। |
গরু জরু ধান রাখো বিদ্যমান | এই তিন সম্পদ নিজের অধীনে রাখতে হয়; অপর হাতে পড়লে তা নষ্ট হয়। |
গরু মেরে বামুনকে জুতো দান | গরু মেরে তার চামড়ায় জুতা বানিয়ে ব্রাহ্মণকে দান; জঘন্য অন্যায় কাজের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে সামান্য প্রতিদান দেওয়া; পাপকার্যের সাহায্যে পূণ্য অর্জনের চেষ্টা |
গরজনে ওয়ালে বরষতে নহীঁ- হিন্দি প্রবাদ | যে বেশি কথা বলে সে বেশি কিছু করে না; সমতুল্য- যে মেঘ গর্জায় সে বর্ষায় না'। |
গর্জায় কিন্তু বর্ষায় না | ভয় দেখায় তবে ভয়কর নয়। |
গর্তে পড়লে বুদ্ধি গজায়- চীনা প্রবাদ | বিপদ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়। |
গর্তের সাপ খুঁচিয়ে বার করা | অনুপস্থিত বিপদকে কাছে ডেকে আনা। |
গলা টিপলে দুধ বেরোয় | শিশু পাকা পাকা কথা বললে এই প্রবাদ প্রযুক্ত হয়। |
গলা ধরে কাঁদবে তবু মালা ছুঁতে দেবে না | ক্ষেত্রবিশেষে একসাথে থাকলেও স্বার্থত্যাগ করে না। |
গলায় কাঁটা ফুটলে বেড়ালের পায়ে ধরে/পড়ে | বিপদে পড়লে নগণ্যের কাছেও সাহায্য চায়। |
গলায় গলায় পীড়িত | অতিমাত্রায় প্রীতি-ভালোবাসা- তির্যোক্তি। |
গলার নীচে গেলে আর কিছু মনে থাকে না | গলায় কাঁটা ফুটলে যন্ত্রণায় দেবতার কছে মানত করে; কাঁটা নেমে গেলেই মানতের কথা ভুলে যায়; কাজ হয়ে |
গল্প থেকে বাস্তবঘটনা বেশি বিস্ময়কর | বাস্তব অনেকসময় কল্পনাকেও হার মানায়। |
গল্পের গরু গাছে চড়ে | বর্ণনায় রঙ চড়ানো না হলে ঘটনা সুন্দর হয় না; সমতুল্য- 'কল্পনার ডানা পাখা মেলে'। |
গাঁ বড় তার মাঝের পাড়া | ছোট্গাঁয়ে কয়েক ঘরের বাস; সেখানে একাধিক পাড়া থাকে না; অস্তিত্বহীন বস্তুর কল্পনা; সম্পূর্ণ নির্গুণ ব্যক্তির গুণের উল্লেখ। |
গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল | অযোগ্যব্যক্তির অপরের উপর অযাচিতভাবে কর্তৃত্ব করার চেষ্টা। |
গাই নাই তো বলদ দুয়ে দে // গাই নাই তো বলদ দো | যেভাবেই হোক কাজটা শেষ করে দেওয়ার জন্য চাপ। |
গাইতে গাইতে গায়েন, বাজাতে বাজাতে বায়েন | অধ্যবসায়ের ফলে দক্ষতা আসে; অভ্যাস দ্বিতীয় প্রকৃতি; মানুষ ক্রমে ক্রমে বিজ্ঞ হয়; দমতুল্য- ভবতি বিজ্ঞতম: ক্রমশো জন:। |
গাইতে চাইলে বলতে শেখো | সববিষয়েই আগাম প্রস্তুতি লাগে। |
গাঙ পেরুলেই কুমীরকে কলা | ভয় কাটলেই বীরপুরুষ; খাল পেরুলেই পাটনী শালা। |
গাঙে গাঙে দেখা হয়, বোনে বোনে দেখা নেই | বহুদূর বয়ে গিয়ে দুটি নদীর মিলন সম্ভব, কিন্তু কখনো দুইবোনের মিলন সম্ভব নয়। |
গাছ থেকে ফল ভারি নয় | অখণ্ড থেকে খণ্ড বড় হয় না। |
গাছগাছালি ঘন রোবে না; গাছ হবে তার ফল হবে না- খনা | আলো না পেলে গাছ কলবতী হয় না। |
গাছে গাছে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি হবে খনায় বলে | বনে আগুন লাগলে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
গাছ থেকে পড়ে গেল জন পাঁচ সাত, যার যেখানে ব্যাথা তার সেখানে হাত | যার যেখান স্বার্থ তার সেখানে নজর। |
গাছে উঠতে পারে না বড় আমটি আমার | অন্যায় আবদার। |
গাছে উঠে পড়তে, জামিন হয় মরতে | গাছে উঠলে পড়ার ভয় থাকে; জামিন হলেই অর্থদণ্ড দেওয়ার ভয় থাকে। |
গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল | প্রাপ্তির পূর্বেই ভোগের আয়োজন; কালনেমির লঙ্কাভাগ। |
গাছে গাছে লাগলে আগুন বৃষ্টি হবে দ্বিগুণ দ্বিগুণ- খনা | বনাঞ্চলে আগুন লাগলে দ্বিগুণ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, |
গাছে তুলতে সবাই আছে, নামাতে কেউ নেই | বিপজ্জনক কাজে নামিয়ে দিতে সবাই তৎপর, কিন্তু বিপদে পড়লে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসে না; |
গাছে তুলে মই কেড়ে নেই | বিপজ্জনক কাজে নামিয়ে উদ্ধারের উপায় বন্ধ করে কেটে/সরে পড়ে; উৎসাহ দিয়ে কর্মে প্রবৃত্ত করে অসহায় অবস্থায় ফেলে সরে দাঁড়ায়। |
গাছে না উঠতেই এক কাঁদি | কাজ আরম্ভ করার সাথে সাথে ফলের প্রত্যাশা করা। |
গাছের পরিচয় ফলে | আচরণই মানুষকে চেনায়। |
গাছের ভয় বাতাসে, পদ্মের ভয় শিশিরে, সজ্জনের ভয় দুর্জনে | প্রত্যেকেরই একটি করে ভয়ের যায়গা থাকে। |
গাছেরও খায় তলারও কুড়ায় | সম্পদের সবটুকুই ভোগ করে; সব সুবিধাগুলি পেতে চায়; নিতান্ত স্বার্থপরের মত কাজ। |
গাছের দশটা থেকে পাতের একটাই ভাল | সম্ভাব্য কোন বড়প্রাপ্তি থেকে নিশ্চিত এক ছোটপ্রাপ্তি অনেক ভাল; সমতুল্য- 'হাতের জিনিষ ফেলে দূরের জিনিষ নিতে নেই'। |
গাজনের নেই ঠিকানা ডেকে বলে বাজনা বাজানা | কাজের কোন ঠিক নাই, শুধু আসর গরম করে। |
গাজীসাহেবের মোরগ, পেটে গেলেও ডাক দেয় | যে জিনিস আত্মসাৎ করা অসম্ভব সেইক্ষেত্রে এই প্রবাদ প্রযোজ্য। |
গাড়োয়ানের চুমকুড়ি গরুতে চেনে | চেনাজানা লোক একে অপরকে বুঝতে পারে; সমতুল্য- 'সাপের হাঁচি বেদেয় চেনে' |
গাধা জল ঘোলা করে খায় | বোকা সুষ্ঠভাবে কাজ করতে অপারগ। |
গাধা ডাকলে তুমিও তার সাথে ডেকো না | বোকামিকে সমর্থন করা উচিৎ নয়। |
গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করা | স্থূলবুদ্ধিসম্পন্নকে শিখিয়ে পড়িয়ে তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্ন করার কঠিন কাজ করা। |
গাধা পেটালে ঘোড়া হয় না | হেয় জিনিষ হেয়ই থাকে মূল্যবান হয় না। |
গাধা সিংহের ছাল পড়লে সে সিংহ হয় না | নকল কখনো আসল হয় না। |
গাধাকে প্রশ্ন কোরো না সে মোট বইবে কিনা | নিত্য কাজের খবর করা অর্থহীন। |
গাধার পিঠে ভারী বোঝা | অবোধের খাটনি ভারি। |
গাধার পিঠে সোনার বোঝা চাপালেও সে গাধাই থাকে | অবোধ কখনো বোদ্ধা হয় না; কালো কখনো সাদা হয় না। |
গাবতলা দিয়ে যাবনা, আর গাব খাবনা, গাব খাব না তো খাবো কি, গাবের মত আছে কি | গাব খেতে গিয়ে এক কাকের ঠোঁট আঠায় জড়িয়ে যায়; বিপদে পড়ে সে প্রতিজ্ঞা করে আর গাব খাবে না; আঠা ছেড়ে যেতেই সে দ্বিতীয় বচনটি আওড়ায়; কারে পরে প্রতিজ্ঞা; বিপদ কেটে যেতেই স্বমূর্তি; প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গতে কতক্ষণ! |
গায়ে ওড়ে খড়ি, কলপ দেওয়া দাড়ি | ঘরের অবস্থা মন্দ, বাইরে আড়ম্বর প্রদর্শন; ভিতরে ছুঁচোর কীর্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন। |
গায়ে গু মাখলে যমেও ছাড়ে না | দোষ করলে শাস্তি হবেই; পাপ বাপকে ছাড়ে না। |
গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানো | নির্ভাবনায় বাবুয়ানা ও ফুর্তি করে বেড়ানো। |
গায়ের কালি ধুলে যায়, মনের কালি ম’লে যায় | ভুলত্রুটি সংশোধন করা যায়, কিন্তু মনের গ্লানি মরার আগে মুছে না। |
গায়ের গন্ধে ভূত পালায়, মাথায় মাখে খুসবু/ফুলেল তেল | আদিখ্যেতা, বিসদৃশ বিপরীত আচরণ। |
গাল টিপলে দুধ বেরোয় | একেবারে অবোধ। |
গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়া | শখ করে বিপদ ডেকে আনা; নির্বুদ্ধিতার কারণে অপমানিত হওয়া। |
গিন্নির উপর গিন্নিপনা ভাঙা পিঁড়েয় আলপনা | আগ বাড়িয়ে কাজ নষ্ট; অনধিকারে কর্তার উপর কর্তৃত্বপনা। |
গিন্নির দোষে/পাপে গৃহস্থ নষ্ট | গিন্নি অকর্তব্যকাজ করলে সংসার সুখের হয় না; রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট। |
গিন্নির হাতে রাঙা পলা, বউয়ের হাতে সোনার বালা | মর্যাদার উল্লঙ্ঘন। |
গির্জার পাশের লোক গির্জায় যায় না | যখন খুশি যাওয়া যাবে এই ভাবনায় আলসেমি করে যাওয়া হয় না; সহজলভ্যের আকর্ষণ কম; |
গুজব বাতাসে ওড়ে | গুজব খুব দ্রুত ছড়ায়; গুজব মানুষের প্রিয় খাদ্য। |
গুটিপোকা গুটি করে নিজের ফাঁদ নিজে গড়ে | নিজের কাটা গর্তে পড়া। |
গুড় অন্ধকারেও মিষ্টি লাগে | ভাল সকল অবস্থাতেই ভাল। |
গুড় দিয়ে খেলে গুণচটও (থলি) মিষ্টি লাগে | ভালোর সংস্পর্শে এলে মন্দও ভাল হয়। |
গুড় না দিলে মালপো তৈরী হয় না- ইহুদী প্রবাদ | ভালো কিছু পেতে হলে ভালোর সম্মেলন চাই। |
গুণ থাকলে দোষের ভয় | দোষে গুণে মানুষ; কোন অবস্থাতেই মানুষ সমালোচনা এড়াতে পারে না। |
গুণবানের আশ্রয়ে নির্গুণও গুণী হয় | আলোর স্পর্শে এলে অন্ধকার কাটে; চন্দন বলে অচন্দনও চন্দন হয়। |
গুণলুব্ধা স্বয়মেব সম্পদ | সম্পদ গুণানুরাগী; গুণ থাকলে সম্পদ আপনা থেকেই আসে। |
গুণী গুণং বেত্তি, ন বেত্তি নির্গুণঃ | গুণী গুণের কদর বোঝে, নির্গুণে বোঝে না; অর্থাৎ অসারের সার বোঝার ক্ষমতা নেই। |
গুণে নুন দিতে নেই | নূন দিলে ব্যঞ্জন সুস্বাদু হয়, কিন্তু নূন দিলেও নির্গুণ কখনো গুণী হবে না; নির্গুণের প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
গুণেতে হইলে বড়, বড় বলে সবে, বড় যদি হতে চাও, ছোট হও তবে- হরিশ্চন্দ্র মিত্র | মানুষ ভগ্নাংশের মত; সে প্রকৃত যা সেটা হল হর; আর সে নিজেকে যা ভাবে সেটা হল লব; নিজেকে ছোট ভাব তাহলেই বড় হবে। |
গুণের ঘাট (সীমা) নেই | বদগুণের সীমা-পরিসীমা নেই; নির্গুণের প্রতি বক্রোক্তি। |
গুণের বালাই দেখে মরি | সদগুণের অভাব দেখে খেদোক্তি। |
গুণের বালাই নেই | বদগুণের আধিক্য দেখে খেদোক্তি। |
গুবরেপোকার পদ্মমধু খাবার সাধ | অক্ষমের উচ্চাশা; নীচের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। |
গুমরে মাটিতে পা পড়ে না | অহংকারী মেজাজে ধরাকে সরা মনে করা। |
গুয়ের এপিঠ আর ওপিঠ, দু’পিঠই সমান | মন্দের সবই মন্দ; অপকৃষ্টতায় উভয়ে তুল্যমূল্য। |
গুয়ে বলে গোবরদাদা তোর গায়ে গন্ধ | নিজের দোষ জানে না পরের দোষ খোঁজে; চালুনি বলে ছুঁচ তোর পিছন কেন ছ্যাঁদা। |
গুরু ছেড়ে গোবিন্দ ভজে, সে জন নরকে মজে | ইষ্টগুরু সর্বাগ্রে পূজ্য। |
গুরু বোবা শিষ্য কালা, যেমন গুরু তেমন চেলা | উভয়ই মন্দ/মূর্খ; মনিকাঞ্চনযোগ। |
গুরুমারা বিদ্যা | অনিষ্ট করার জন্য গুরুর কাছে প্রাপ্তশিক্ষা তারই উপর প্রয়োগ। |
গুরুরগ্নির্দ্বিজাতীনাং বর্ণানাং ব্রাহ্মণো গুরুঃ। পতিরেকো গুরুঃ স্ত্রীণাং সর্বত্রাভ্যাগতো গুরুঃ।। (চাণক্য) | আগুন দ্বিজাতির (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্যের) গুরু, ব্রাহ্মণ সকল বর্ণের (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রের) গুরু, নারীদের স্বামীই একমাত্র গুরু এবং সকলের পক্ষেই অতিথি গুরু। |
গূঢ়ঞ্চ মৈথুনং ধার্ষ্ণ্যং কালে কালে চ সংগ্রহম্। অপ্রমাদমনালস্যং পঞ্চ শিক্ষেত বায়সাৎ।। | গোপনে মৈথুন ক্রিয়া, প্রগল্ভতা (চটপটে ভাব), যথাকালে খাদ্যাদি সংগ্রহ, কখনো অসচেতন না থাকা এবং আলস্যহীনতা- এই পাঁচটি গুণ কাকের কাছ থেকে শিক্ষণীয়। |
গৃহিণী গৃহমুচ্যতে | গৃহিণী থাকলে গৃহ প্রকৃত গৃহে পরিণত হয়। |
গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না | নিজের দেশে বা স্বজনে গুণীর কদর নেই; সমতুল্য- 'অতি চেনার কদর নেই'। |
গেরস্তেরে ভূতে পায়, চাল কুটে পিঠে খায় | বহু কষ্ট স্বীকার করে সেই ভাতই খায় |
গৈর্ গুড় পুয়া নহী বনতে হৈ- হিন্দি প্রবাদ | গুড় না দিলে মালপো তৈরী হয় না; অর্থ না থাকলে কোন কাজ হয় না। |
গোঁফ দেখলে শিকারী বেড়াল চেনা যায়। | চোখের দিকে তাকিয়ে মনের অবস্থা বোঝা যায়। |
গোঁয়ারের মরণ খোঁয়ারে // গোঁয়ারের মরণ গাছের আগায় | গোঁয়ারের পতন বিশ্রীভাবেই হয়; হটকারী গোঁয়ার্তুমি করে মরে; বেদের মরণ সাপের হাতে। |
গোকুলের ষাঁড় | স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তি, যে পরের অনিষ্ট করে বেড়ায়; দোষ করলেও শাস্তি পায় না |
গোঙ্গা ছেলের নাম তর্কবাগীশ | মনের সান্তনা; যা নয় তা হওয়ার ইচ্ছা; কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন |
গোজন্ম ঘুচে গন্ধর্বজন্ম হল | অপ্রত্যাশিতভাবে দুর্ভাগ্য কেটে গিয়ে সৌভাগ্যলাভ। |
গোড়া কেটে আগায় জল/পানি দেওয়া | দোষ শুধরানোর চেষ্টা; কারো সর্বনাশ করে সামান্য উপকার করতে যাওয়া। |
গোড়ায় গলদ | শুরুতেই ভুল; বিসমিল্লায় গলদ। |
গোদা পায়ে লাথি | খেলে বরঞ্চ আরাম লাগে; অমূলক ভয়। |
গোদের ওপর বিষফোঁড়া | বিপদের ওপর বিপদ। |
গোনা গরু বাঘে নেয় না | সুরক্ষিত বিষয় নষ্ট হয় না; সাবধানের মার নেই। |
গোপন কথা গোপন থাকে না | গোপন কথা পাঁচকান হয়ে গোপন থাকে না; সাবধানে কথা বলার জন্য চেতাবনি। |
গোপন কথা তোমার গোলাম; ফাঁস করলে তুমি তার গোলাম- আরবী প্রবাদ | গোপন কথা ফাঁস করলেই সমূহ বিপদ। |
গোবরে পদ্মফুল | নির্গুণের ঘরে গুণী সন্তান; দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ। |
গোভাগ্য নেই এঁটুলি ভাগ্য আছে | সৌভাগ্য নেই দুর্ভাগা আছে। |
গো-মড়কে মুচির পার্বণ // গো-মড়কে শকুনের ভোজ | একের ক্ষতিতে অন্যের লাভ; কারো সর্বনাশ, কারো পৌষমাস। |
গোর্ভিবিপ্রৈশ্চ বেদৈশ্চ সতীভিঃ সত্যবাদীভিঃ। অলুব্ধৈর্দ্দানশীলশ্চ সপ্তর্ভিধার্যতে মহী।। (চাণক্য) | এই জগৎ সংসারে গরু, ব্রাহ্মণ, বেদ, সতীনারী, সত্যবাদী, অলোভী ও দানশীল- এই সপ্তবিধ মানুষেই বিধৃত; জগতেঁ এই সকল নয়া থাকলে জগৎ থাকত না। |
গোল গর্তে চৌকো পেরেক বা চৌকো গর্তে গোল পেরেক১ | অসম্ভব, যা হবার নয় |
গোল গর্তে চৌকো পেরেক বা চৌকো গর্তে গোল পেরেক২ | বিসদৃশ মেল, স্বাচ্ছন্দের অভাব (মার্গসঙ্গীতের আসরে আমার উপস্থিতি গোল গর্তে চৌকো পেরের মত অবস্থা) |
গোলাপ/পদ্ম তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয় | অনায়াসে কিছু পাওয়া যায় না; অবিমিশ্র সুখ হয় না; কিছু পেতে গেলে কিছু ঝামেলা সইতে হয়; সমতুল্য-'আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয়,'গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয়', 'ন সুখং দুঃখৈর্বিনা লভ্যতে', সাধনা না করলে সিদ্ধি নাই' ইত্যাদি |
গোলাপে আছে কণ্টক, চাঁদে আছে কলঙ্ক | দোষগুণ মিলিয়ে মানুষ; কোন কিছুই অবিমিশ্র হয় না। |
গোলাপের জাহির নেই | গুণের প্রচার লাগে না। |
গোলে হরিবোল দেওয়া | কাজে ফাঁকি দেওয়া; অপরের যোগসাজশে গোলমাল পাকিয়ে কোনপ্রকারে কাজ সারা। |
গৌরবং প্রাপ্যতে দানাৎ, ন তু বিত্তস্য সঞ্চয়াৎ।স্থিতিরূচ্চৈঃ পয়োদানাং পয়োধীনামধঃস্থিতিঃ॥ (চাণক্য) | ধনসঞ্চয়ের মাধ্যমে গৌরবপ্রাপ্তি হয় না; দানের মাধ্যমেই গৌরবপ্রাপ্তি হয়; মেঘের অবস্থান উচ্চে (কারণ সে জলদান করে) এবং সমুদ্রের অবস্থান নীচে, (কারণ সে জল গ্রহণ করে)। |
গ্রহণ হলে সবাই দেখে | পরের বিপদ সবাই উপভোগ করে। |
গ্রাম নেই তার আবার সীমানা | নেই বস্তুর খোঁজের অর্থ হয় না; নাস্তি গ্রাম্যঃ কুত সীমাঃ? |
গ্রামের নাম তেঘরা, তার আবার উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া | নগণ্যের বাড়াবাড়ি, আদিখ্যেতা; অতি ক্ষুদ্রবস্তুর ভাগ হয় না। |
ঘ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঘট গড়তে পারে না, মেটের/জালার বায়না নেয় | ক্ষমতার বাইরে প্রত্যাশা করা। |
ঘটকালি করতে গিয়ে বিয়ে করে আসা | সুকাজ করতে গিয়ে কুকাজ করা; পরের কাজ করতে গিয়ে নিজের কাজ করা। |
ঘটি কেনা গঙ্গাস্নান | একসঙ্গে দুই কাজ সারা; রথ দেখা কলা বেচা। |
ঘটি ডোবে না, নামে তালপুকুর | ক্ষুদ্রব্যক্তির বড় নামগ্রহণ; নামের চোটে গগন ফাটে; এক সময়ের বড়লোকের এখন চরম আর্থিক অনটন। |
ঘটে বুদ্ধি নাই | আহাম্মক, বুদ্ধিহীন। |
ঘন্টা বাজিয়ে দুর্গোৎসব, ইতু পূজায় ঢাক | বিপরীত বুদ্ধির লোক; যেমন কাজ তার অনুরূপ ব্যবস্থা না করে বিপরীত ব্যবস্থাগ্রহণ। |
ঘন দুধের ফোঁটা, বড় মাছের কাঁটা | ভাল জিনিসের অল্পও ভালো। |
ঘরও ঢোকে, পাও কাঁপে | লোভও সম্বরণ করতে পারে না আবার ভয়ও পায়। |
ঘরকন্না করতে গেলে ঘটিবাটিতে ঝগড়া হয়/ঠোকাঠুকি হয় | সংসারে মনোমালিন্য অতি স্বাভাবিক ব্যাপার। |
ঘরকুনোর বিদ্যা হয় না | কিছু জানতে গেলে বাইরে বেরুতে হয়। |
ঘরকা ভেদী লংকা ঢায়ে- হিন্দি প্রবাদ | ঘরের শত্রু অনেক দুর পর্যন্ত ক্ষতি করতে পারে' সমতুল্য- ঘরভেদী বিভীষণ |
ঘরকা/কী মুরগী দাল (ডাল) বরাবর- হিন্দি প্রবাদ | সহজলভ্য বস্তুর কদর নেই; সুলভ মুল্যবান বস্তুর তেমন আদর হয় না। |
ঘরচোরকে পেরে ওঠা দায় | নিজের লোক অনিষ্টকারী হলে সেই অনিষ্ট রোখা কঠিন। |
ঘরচোরের পার নেই | ঘরের শত্রুর বেশি শাস্তি পাওয়া উচিত। |
ঘর জামাইয়ের পোড়া মুখ, মরা-বাঁচা সমান সুখ | ঘর জামাই হয়ে থাকা নিন্দনীয়। |
ঘর জ্বালানো/নে পর ভুলানো/নে | আত্মীয়ের কাছে পীড়াদায়ক পরের কাছে প্রিয় এমন স্ত্রীলোকের প্রতি ইঙ্গিত। |
ঘর থাকতে বাবুই ভেজা | সুযোগ থাকতে সুযোগ না নেওয়া; মুর্খামি। |
ঘর বাঁধবে ছাইবে না, ধার দেবে চাইবে না | দুইই চুড়ান্ত মুর্খামি। |
ঘরদোর নেইকো যার, আগুনে ভয় কি তার | অভাগার কিছুতে ভয় পাওয়ার নেই। |
ঘরনীর কাজ কখনও শেষ হয় না | সংসারের টুকিটাকি কাজ লেগেই থাকে; কাজের অন্ত নেই। |
ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায় // ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায় | অভিজ্ঞতা সতর্ক হ'তে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে', 'নেড়া বেলতলায় একবার যায়' ইত্যাদি |
ঘরভেদে রাবণ নষ্ট | গৃহশত্রুতার কারণে সংসার ভাঙে। |
ঘরমুখো বাঙালি, রণমুখো সেপাই | যার যা স্বভাব; প্রবাসী বাঙালী সবসময় ঘরে ফিরতে চায়; যুদ্ধের সময় সেপাইকে ঘরে আটকে রাখা যায় না। |
ঘরশত্রু বিভীষণ | ঘরের অনিষ্টকারীকে লক্ষ্য করে এই প্রবাদটি ব্যবহৃত হয়। |
ঘরামির ঘর ছেঁদা // ঘরামির মটকা আদুল | পরের কাজ করে বেড়ায়, নিজের কাজে নজর নেই; নিজের কাজে অমনযোগিতা। |
ঘরে আওয়ে অন্ঘেরী বাত কহে বনায়, জানিও পুরৌ বৈরী- হিন্দি প্রবাদ | অচেনালোক ঘরে এসে চাটুকারী করলে জানবে সে পুরোমাত্রায় শত্রু। |
ঘরে ছুঁচোর কেত্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন // ঘরে নাই অষ্টরম্ভা, বাইরে কোঁচা লম্বা // ঘরে নেই ভাত, কোঁচা তিন হাত | ঘরে অন্নের সংস্থান নেই, বাইরে বাবুগিরি। |
ঘরে নেই ঘটিবাটি, কোমরে মেলা চাবিকাঠি। | প্রাণপণে জানাবার চেষ্টা যে আমার সব আছে; দেখনদারি, প্রচারসর্বস্ব। |
ঘরে নেই ভাজাভুজা, নিত্য করেন গোঁসাই পূজা | ঘরে অন্ন নেই, তবু নিত্যপূজার বিরাম নেই; ভগবানে ভীত দুর্বলচিত্ত। |
ঘরে নেই যা, বাছা মাগে তা। | অভাগা মায়ের মনঃকষ্ট। |
ঘরে বসে কেল্লামারা | ঘরে বসে সারা পাড়ার খবর রাখা; পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর |
ঘরে বসে পুছে বাত তার ঘরে হা ভাত | অলসের অন্নের সংস্থান হয় না। |
ঘরে বসে রাজা উজির মারা | লম্বাচওড়া কথা বলে অকর্মার নিজেকে জাহির করা; লম্বাই চওড়াই বাতের কাপুরুষ। |
ঘরে ভাত নেই, দ্বারে বাহারী পর্দা | দৈন্যাবস্থা লুকিয়ে রাখার আপ্রাণচেষ্টা। |
ঘরে ভাত না থাকলে শালগ্রামের সোনা বেচে খায় | বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করতে গিয়ে লেজেগোবরে; অভাবে স্বভাব নষ্ট। |
ঘরের ইঁদুর বাঁশ কাটলে ধরে রাখে কে? | ঘরের শত্রু অনিষ্ট করলে তার হাত থেকে বাঁচা কঠিন। |
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায় | নিজের টাকায় পরের উপকার করে; বিনা পারিশ্রমিকে পরের জন্য পরিশ্রম করে; না-কাম করে। |
ঘরের দরজা খোলা পেলে সাধুও চোর হয় | খোলা দরজা সজ্জনকেও প্রলুব্ধ করে। |
ঘরের ঢেঁকি কুমির হওয়া | লুকিয়ে শত্রুতা করা |
ঘরের মধ্যে ঘর, সবাই মাতব্বর | ঘরের সবাই নিজেকে মাতব্বর মনে করে। |
ঘরের মা ভাত পায় না, পরের জন্য মাথাব্যথা | ঘর ছেড়ে পরকে নিয়ে পড়া। |
ঘরের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা | ইচ্ছা করে নিজের অমঙ্গল ডেকে আনা। |
ঘরের শত্রু বিভীষণ | যে শত্রু আপনজন; প্রচ্ছন্ন শত্রু |
ঘরের ষাঁড়ে পেট ফাঁড়ে, পুরানো চাল ভাতে বাড়ে | নিজের লোক অনিষ্ট করে, আবার নিজের লোকই ইষ্ট করে। |
ঘর্ষণবিনা রত্ন উজ্বল হয় হয় না, কষ্টবিনা মানুষ সম্পূর্ণ হয় না- কনফুসিয়াস | অনায়াসে কিছু লব্ধ হয় না। |
ঘষতে ঘষতে পাথরও ক্ষয় হয়। | পরিশ্রম করলে সিদ্ধি আসে; নিয়ত অভ্যাস করলে স্থূলবুদ্ধিও সূক্ষ্মবুদ্ধি হয়। |
ঘাড়ে ভূত চেপেছে | কূটবুদ্ধি মাথায় খেলছে। |
ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া | বড় কোনো বিপদ থেকে নিস্কৃতিলাভ। |
ঘা শুকালেও চিহ্ন থাকে | মর্মান্তিক বেদনার স্মৃতি চিরদিন জাগরুক ঠাকে |
ঘায়েই মাছি বসে | দুস্কর্ম লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। |
ঘি আদুর ঘোল ঢাকা | মুল্যবান বস্তুর দিকে নজর নেই; সামান্য বস্তুর দিকে কড়া নজর। |
ঘি ঢাললেও কুকুরের লেজ সোজা হয় না | স্বভাব যায় না মলে। |
ঘি দিয়ে ভাজ নিমের পাতা, তবু যায় না জাতের জাতা | জাতবৈশিষ্ট্য কখনো যায় না; মন্দ কখনো ভাল হয় না। |
ঘুঁটেকুড়ুনির ছেলের নাম চন্দনবিলাস | যা নয় তাই ভেবে মনের সান্ত্বনা। |
ঘুঁটে কুড়ুনির ব্যাটা চন্দনবিলাস | কেউ অত্যধিক আত্মপ্রচার করলে অতীতে কথা স্মরণ করিয়ে দিতে এই উক্তি করা হয়। |
ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে; তোমার একদিন আছে শেষে | পরের দুঃখে আনন্দ করে কিন্তু ভুলে যায় সে বিপদ নিজেরও হতে পারে। |
ঘুঘু দেখেছ ফাঁদ দেখনি | চতুরব্যক্তির প্রতি শাস্তিপ্রাপ্তির ইঙ্গিত; ঘুঘুর আনন্দ-বিচরণই দেখছ, তার ফাঁদে পড়ার যন্ত্রণা দেখনি; আরম্ভের সুখটাই দেখেছো, শেষের দুঃখটা দেখনি। |
ঘুমন্ত কুকুরকে জাগিয়ো না | বিপদকে আহ্বান করো না। |
ঘুমন্ত বাঘ শিকার ধরে না // ঘুমন্ত বিড়াল ইঁদুর ধরে না // ঘুমন্ত শিয়ালের হাঁস বা মুরগি জোটে না // ঘুমন্ত সিংহের মুখে হরিণ ঢোকে না | শুয়ে থাকলে ভাগ্যও শুয়ে থাকে; অলসের সৌভাগ্য হয় না। |
ঘৃণায় ঘৃণা বাড়ে | ঘৃণা তিক্ততা বাড়ায়, মনে মালিন্য সৃষ্টি করে। |
ঘৃতকুম্ভ সমা নারী তপ্তাঙ্গারসমঃ পুমান্। তস্মাৎ ঘৃতঞ্চ বহ্নিঞ্চ নৈকত্র স্থাপয়েদ্বুধঃ॥ (চাণক্য) | স্ত্রীলোক ঘৃতপূর্ণঘটের সমান; পুরুষ জ্বলন্ত আগুনের সমান; জ্ঞানীব্যক্তি ঘৃত এবং বহ্নিকে কখনো একত্রে রাখবেন না। |
ঘেউ-ঘেউ করা কুকুর কামড়ায় না বা কদাচিৎ কামড়ায় | যে মারব বলে লাফায় সে কদাচিৎ মারে। |
ঘেয়ো কাঁঠালের মুচি খদ্দের | উভয়ে সমান মন্দ। |
ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া | উপরওয়ালাকে ডিঙিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করা। |
ঘোড়া থাকলে চাবুকের ভাবনা | বেশীটা হয়ে গেলে অল্পের জন্য ভাবনা নেই। |
ঘোড়া দেখে খোঁড়া | আরাম পাওয়ার সুযোগ পেলেই নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকা। |
ঘোড়া ভেড়ার একদর | ভালোমন্দের বিচার নেই; শ্রেষ্ঠত্বের দাম নেই; মুড়ি মিছরির একদর। |
ঘোড়ার আগে গাড়ী জুতা | বিপরীতবুদ্ধির কাজ। |
ঘোড়ার ঘাসকাটা | অকাজ করা; বৃথা কাজে সময় নষ্ট করা। |
ঘোড়ার ডিম | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি; সমতুল ইংরাজী প্রনাদ-A square peg in a round hole |
ঘোড়ার পেট, গাধার পিঠ, খালি থাকে কদাচিৎ | যার যা কাজ সে তাই করে- ঘোড়া সবসময় খায় আর গাধা সবসময় খাটে। |
ঘোল, কুল, কলা কলা- তিনে নাশে গলা | গলার পক্ষে তিনটি খাদ্য অনিষ্টকর। |
ঘোলা জলে মাছ ধরা | বিশৃঙ্খলার সুযোগে কাজ হাসিল করা। |
ঘোলা জলে মাছ ধরাটা মুখ্য যাদের ধর্ম, তারা পারে না করতে, নেইকো এমন কর্ম। | দুস্কৃতি সব কিছুই করতে পারে। |
চ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
চকচক করলেই সোনা হয় না | নকল না খাঁটি, তা চেহারা দেখে বোঝা যায় না; দ্রব্যের বাহ্যিক রূপ তার গুণ প্রকাশ করে না; সমতুল্য- 'পৈতা থাকলেই বামুন হয় না', 'মন্দিরে গেলেই সাধু হয় না' ইত্যাদি। |
চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুঃখানি চ | সুখদুঃখ চক্রকারে পরিবর্তিত হয়, একটার পর একটা আসে; সমতুল্য- 'আজ আমীর/রাজা কাল ফকির'; 'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়';'মেঘ দেখে তুই করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে' ইত্যাদি। |
চক্ষু থাকতে কানা | দেখেও দেখে না; চক্ষু আছে তবে জ্ঞানচক্ষু নেই- অবোধের প্রতি তির্যোক্তি। |
চক্ষুদোষে সব হলদে | বাঁকাচোখ সব মন্দ দেখে। |
চক্ষু মুদলেই প্রলয় বন্ধ হয় না | জগৎ চলে তার নিজের নিয়ম, ব্যক্তি জগতের অংশমাত্র। |
চক্ষু সব কিছু দেখে শুধু নিজেকে দেখতে পায় না | চক্ষু দেখে না মন দেখে। |
চক্ষুলজ্জার মাথা খাওয়া | নির্লজ্জ বেহায়ার মত আচরণ। |
চক্ষে চক্ষে যতক্ষণ প্রাণ পোড়ে ততক্ষণ | না দেখলে নাই; অস্থায়ী মেকি প্রণয়। |
চক্ষে দেখলে শুনতে চায় এমন নির্বোধ আছে কোথায়? | মহাহাম্মকই শুধু প্রত্যক্ষ প্রমাণ ছেড়ে দিয়ে শোনা কথায় আস্থা রাখে। |
চক্ষে ষরষে ফুল দেখা | ভীষণ বিপদে পড়ে হতবুদ্ধি। |
চটকস্য মাংসং ভাগ শতকং | অত্যল্প সম্পত্তির বেশি ভাগ হলে কারো ভাগে কিছু পড়ে না। |
চড় মারলে চড় খেতে হয় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য- 'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
চড় মেরে চড় খাওয়া | ইচ্ছা করে বিপদ ডেকে আনা। |
চড় মেরে গড় করা | ইচ্ছা করে অপমান করে ক্ষমা প্রার্থনা করা। |
চড়াই পাখির প্রাণ অল্পেতেই যান | ক্ষীণজীবী। |
চড়ুকে বাতিক | চড়কে পাক খাওয়ার লোভে সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছা। |
চড়ুকে হাসি | কাষ্ঠহাসি; পিঠফুঁড়ে চড়কগাছে যে পাক খায়, সে যন্ত্রণাবিদ্ধ হয়েও লোক দেখানো হাসি হাসে। |
চণ্ডালোহপি নরঃ পূজ্য যস্যাস্তি বিপুলং ধনম | প্রভুত ধনশালী হলে মন্দও সমাজে সম্মানিত হয়; অর্থেন সর্বে বশাঃ। |
চণ্ডীপাঠ ইস্তক/থেকে জুতো সেলাই | সবরকমের কাজ, সকল কাজের কাজী। |
চঞ্চলা নদীর গভীরতা কম | অল্পজ্ঞানী লোকেরা হালকা চরিত্রের হয়। |
চতুরের সাথে চতুরালি | সমানে সমানে লড়াই; সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি। |
চন্দনগাছ ছেদন করলেও সুগন্ধ ত্যাগ করে না | গুণী অবস্থা বিপর্যয়েও চরিত্রগুণ হারায় না। |
চন্দনগাছের সংসর্গে এসে বাঁশগাছ চন্দন হয় না | নির্গুণ কখনো গুণী হয় না; সমতুল্য- |
চন্দনগাছের সংস্পর্শে এসে শেওড়াগাছও সুগন্ধ পায় | গুণবানকে আশ্রয় দিলে নির্গুণও গুণী হয়। |
চন্দনং ন বনে বনে | ভালোর অল্প হয়। |
চন্দনং শীতলং লোকে, চন্দনাপি চন্দ্রমা। চন্দ্রচন্দনইয়োর্মধ্যে শীতলা সাধুসঙ্গতি॥ (চাণক্য) | চন্দন লোককে শীতল করে; চন্দন থেকে চন্দ্র বেশি শীতল; চন্দ্র-চন্দন থেকেও সাধুসংসর্গ আরও বেশি শীতল। |
চন্দ্র সূর্য অস্ত গেল, জোনাকি ধরে বাতি; মোগল পাঠান হদ্দ হল ফারসি পড়ে তাঁতি। | অক্ষমের আস্ফালন; মহতের অভাব কোন নগণ্য মেটাতে পারে না। |
চমড়ী যায়ে পর দমড়ী না যায়ে- হিন্দি প্রবাদ | মহা কৃপণব্যক্তি |
চরণামৃত চরণামৃত না জানি কি অমৃত, খেয়ে দেখি জল | ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বিরাট করে দেখানো লোকগুলি দোষেগুণে ভরা সাধারণলোকের এক খণ্ডমাত্র। |
চরিত্রের গুণে মানুষ সবার চোখে বাসে | আপনগুণে অচেনা মানুষ পরম আত্মীয় হইয়। |
চরিত্র সৎলোকের অনেক দোষ ঢেকে দেয়, চরিত্র অসৎলোকের গুণ ঢেকে দেয় // চরিত্রের কারণেই সম্মানীয়ব্যক্তি সম্মান হারায়, আবার নগণ্যব্যক্তি সম্মানিত হয়- আরবী প্রবাদ | আচরণেই মানুষকে চেনা যায়। |
চরৈবেতি চরৈবেতি | এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো; এগিয়ে চলাই ধর্ম। |
চর্চায় সিদ্ধিলাভ হয় | অনুশীলনে ফললাভ হয়। |
চলচ্চিত্তং; চলদ্বিত্তং চলজ্জীবনযৌবনম্। চলাচলমিদং সর্বং; কীর্তিযস্য স জীবতি॥ (চাণক্য) | মন, ধন, জীবন যৌবন- সবই এ জগত অস্থায়ী ও চঞ্চল; একমাত্র কীর্তিই চিরস্থায়ী। |
চলছে যদি বঙ্গে, কপাল যাবে সঙ্গে | যেখানেই যাও না কেন অদৃষ্টও তোমার সঙ্গে সঙ্গে যাবে। |
চলত্যেকেন পাদেন তিষ্ঠত্যেকেন বুদ্ধিমান্। নাহসমীক্ষ্য পরং স্থানং পূর্বমায়তনং ত্যজেৎ॥ (চাণক্য) | বুদ্ধিমান ব্যক্তি একপা চলেন, একপা স্থির থাকেন, পরবর্তী পদক্ষেপের স্থান না দেখে পূর্বস্থান ছাড়া অনুচিত। |
চলতে চাইলে দাঁড়াতে শেখো | সবকিছুতেই প্রাক-প্রস্তুতি লাগে। |
চলতে না পারলে উঠোন বাঁকা | কাজ করতে না পারলে অপরের দোষ খোঁজে; অক্ষমের অজুহাত খাড়া। |
চলতে পারে না বন্দুক ঘাড়ে | ছোট কাজ পারে না বড় কাজের বরাত নেয়। |
চলতে শিখলে পড়তে হয় না | সক্ষমব্যক্তি কখনো ব্যর্থ হয় না। |
চললে পোয়া, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ? | অলস না হলে কোন কাজই অসাধ্য নয়; অযথা কালক্ষেপ না করলে সব কাজই সময়ে সম্পন্ন হয়। |
চললেই চল্লিশ বুদ্ধি, না চললে হতবুদ্ধি | শিখতে শিখতেই পরিণত হয়; ভাগ্য ভাল হলে যেকোন কাজ নানা উপায়ে সিদ্ধ হয়; ভাগ্য বিরূপ হলে কোন কাজ সুষ্টভাবে সম্পন্ন হয় না। |
চশমে বদ তু- হিন্দি প্রবাদ | তোর মুখ কালা/পোড়া (কুদৃষ্টি এড়ানোর জন্য তুক)। |
চাঁদেও আছে কলঙ্ক, গোলাপে কণ্টক | কোন কিছুই বিশুদ্ধ নয; কোন কিছুই অবিমিশ্র নয়; জগতে নির্দোষ কিছু হয় না। |
চাঁদের কাছে জোনাকি, ঢাকের কাছে টেমটেমি | দুই অসমানে তুলনা নয়। |
চাচা আপন চাচী পর, চাচীর মেয়ে বিয়ে কর | মুসলমান সমাজে প্রচলিত প্রবাদ; অর্থ স্পষ্ট। |
চাচা আপন প্রাণ বাঁচা | আগে নিজের প্রাণ বাঁচাও, পরে অন্যের জন্য ভাবনা; সমতুল্য-'আগে ঘর পরে পর, ঘর সামলে পরকে ধর', 'আপনি বাঁচলে বাপের নাম', 'আত্ম রেখে ধর্ম তবে পিতৃকর্ম' ইত্যাদি। |
চাটাইয়ে শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা | গরীবের উচ্চাভিলাষ। |
চাটুকারি ততক্ষণ পর্যন্ত ঠিক যতক্ষণ না তুমি তা গিলছো | চাটুকারিতায় তৃপ্তি চরিত্রগুণ নষ্ট করে। |
চাদরে যতটা পা ঢাকে ততটা পা মেলো | সীমার মধ্যে থাকো; ওজন বুঝে চলন। |
চাপে পড়লেই বাপ // চাপের নাম বাপ | কাদায় পরলে বশ্যতা স্বীকার; গরজ বড় বালাই। |
চামচিকে আবার পাখি | আকার বড় হলেই বড় হয় না; গুণ থাকা চাই। |
চামচিকেতে লাথি মারে | নগণ্য ব্যক্তির কটূক্তি। |
চায়ের পেয়ালা ও ঠোঁটের মধ্যে বিস্তর ফাঁক থাকে | সামান্যের মধ্যেও বিস্তর ফাঁক থাকে। |
চায়ের পেয়ালায় তুফান- ইংরাজী প্রবাদ | সামান্য বিষয় নিয়ে তুলকালামকাণ্ড; প্রকৃত কর্মক্ষেত্রে কাজ না করে কেবল ঘরের আড্ডায় জোর আলোচনা |
চার দিনকা চাঁদনী ফির আঁধেরি রাত- হিন্দি প্রবাদ | সুখের দিনগুলি স্বল্পই হয়; চলে গেলেই অন্ধকারের মত কষ্টের দিন শুরু হয়। |
চাল না চুলো, ঢেঁকি না কুলো // চাল নেই চুলো নেই, নিত্যানন্দ গোঁসাই | অন্নের সংস্থান, বাসস্থান, কিছুই নেই, একেবারে নিঃসম্বল। |
চাল নেই ধান নেই গোলাভরা ইঁদুর | অন্তঃসারশূন্য। |
চাল নেই তবে ভাতে ভাত রাঁধো | যে সম্ভব নয় তাই করতে যাওয়া। |
চাল নেই তার ধুচুনি নাড়া | দৈন্যাবস্থা চাপা দেওয়ার চেষ্টা। |
চালাকিদ্বারা মহৎকার্য হয় না | ফন্দিবাজী সৎপথ নয়। |
চালাকের ঠোঁটে তৎক্ষণাৎ উত্তর সাজানো থাকে | চালাকের মস্তিষ্ক খুব পরিস্কার। |
চালুনি করে ঘোল বিলানো | যা সম্ভব নয় তাই করা। |
চালুনি করে ছুঁচের বিচার // চালুনি বলে ছুঁচ তোর মার্গে কেন ছেঁদা // চালুনি বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো | নিজের দোষ নজরে পড়ে না; পরের দোষে তীক্ষ্ণদৃষ্টি; সমতুল্য- 'আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে', 'ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা', 'নিজের পাছায় ন মন গু, আমারে বলে তোর খান ধু' ইত্যাদি। |
চালে খড় নেই ঘরে বাতি | মুখ্যকাজ ছেড়ে দিতে গৌণকাজ করে; এদিক নেই ওদিক আছে। |
চালের কি দর, না মামার ভাতে আছি | ফূর্তি করে বেড়ানো দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তির প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
চাষা কি জানে মদের স্বাদ | সাধারণলোকে গভীর বিষয় বুঝতে পারে না। |
চাষী আর চষা মাটি, এই দুইয়ে দেশ খাঁটি (খনা) | চাষী চষা মাটিতে সোনা ফলায়। |
চাষী করে চাষ, ফড়ে খায় ফসল | যার ধন তার ধন নয়, নেপোয় (বাটপাড়) মারে দই |
চাষীর গরু অমাবস্যা খোঁজে | অমাবস্যায় হাল চালানো নিষিদ্ধ; অলসের কাজে অনীহা। |
চাহিলেন জিরা পাইলেন হীরা | আকাঙ্ক্ষা ছিল সামান্য বস্তুর; পেয়ে গেল মহার্ঘ বস্তু। |
চিকিৎসা অপেক্ষা প্রতিষেধ ভাল | রোগে ওষুধ খাওয়া থেকে নিরোগ থাকার প্রতি ইঙ্গিত। |
চিত্তে বাচি ক্রিয়ায়াং চ সাধুনামেকরূপতা | সাধুরা মনে বাক্যে ও কাজে এক। |
চিনিস বা না চিনিস খুঁজে দেখে গরু কিনিস- খনা | গরু কেনার উপায় জানা থাক বা না থাক খুঁজে পেতে গরু কেনা উচিত (কৃষকের প্রতি চেতাবনি)। |
চিন্তা করো না যে কেউ তোমায় জানে না, শুধু চেষ্টা কর জানার যোগ্য হ'তে- কনফুসিয়াস | মানুষ কর্মে বড় হয় যোগ্য হয় |
চিন্তা জ্বরো মনুষ্যাণাং বস্ত্রাণামাতপো জ্বরঃ। অসৌভাগ্যং জ্বরঃ স্ত্রীণাম্ অশ্বানাং মৈথুনং জ্বরঃ।। (চাণক্য) | মানুষের জ্বর চিন্তা, প্রখর সূর্যতাপ কাপড়ের জ্বর, স্ত্রীর জ্বর স্বামীর সোহাগ না পাওয়া আর মৈথুন অশ্বের জ্বর। |
মানুষমাত্রই চিন্তায় আক্রান্ত হয়; দুশ্চিন্তা মানুষের জ্বরস্বরূপ। | |
চিন্তাবিদেরা নাস্তিক হয়- তুর্কী প্রবাদ | চিন্তাবিদেরা অন্ধ বিশ্বাস করে না। |
চিন্তায় চিন্তা বাড়ে | চিন্তা করলে দুশ্চিন্তা বাড়ে। |
চিন্তায় পোড়ে মন চিতায় পোড়ে দেহ | দুশ্চিন্তা মনের ওপর প্রভাব ফেলে। |
চিন্তার মায়ের চিন্তে হাটের লোক শোয় কোথা? | অকারণে দুশ্চিন্তা; চিন্তার মাথামুণ্ড নেই। |
চিন্তাহীন শিক্ষা পণ্ডশ্রম, শিক্ষাহীন চিন্তা বিপজ্জনক- চীনা প্রবাদ | চিন্তাহীন শিক্ষা ফলপ্রসূ হয় না; অপরপক্ষে অপরিশীলিত চিন্তা ধ্বংসাত্মক হয় |
'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়'- নজরুল | চিরকাল সমান যায় না; ভাগ্য ওঠানামা করে; সুখ-দুঃখে মিশ্রিত জীবন; সমতুল্য- 'আজ আমীর/রাজা কাল ফকির', 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ', 'নদীর কুল ভাঙ্গে কুল গড়ে এইতো নদীর খেলা', 'মেঘ দেখে তুই করিস নে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে' ইত্যাদি। |
চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন ব্যথিতবেদন বুঝিতে কি পারে, কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে'- কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার | সুখী মানুষ জীবনযন্ত্রণা কাকে বলে জানে না; একমাত্র সমব্যথী ব্যক্তিই দুঃখীর ব্যথা অনুধাবন করতে পারে; সমতুল্য- অকণ্টকবিদ্ধ কি জানে কাঁটাফুটা কী? |
চিল চিনে উচু ডাল মাছ চিনে গভীর জল | নিজের পছন্দ অনুসারে যে যার স্থান নির্বাচন করে। |
চিল পড়লে কুটোটাও নিয়ে ওঠে | কর্মঠ লোক বৃথা শ্রম দেয় না; শত্রু/লোভী কিছু ক্ষতি না করে নিবৃত্ত হয় না। |
চিলকে বিল দেখাতে নেই | নিজের ক্ষতি করতে নেই। |
চিলে কান নিয়ে গেল | পরের কথায় বিশ্বাস করা। |
চিল্লানে কুকুর কদাচিৎ কামড়ায় // চিল্লানে কুকুর কামড়ায় না | ধীর স্থির না হলে কাজে সাফল্য আসে না; যে বকে সে কাজ করে না; সমতুল্য জাপানী প্রবাদ- 'আওয়াজওয়ালা বিড়াল ইঁদুর ধরে না'। |
চুরিবিদ্যা বড়/মহাবিদ্যা যদি না পড়ে/পড়ো ধরা | ফাঁকিতে প্রচুর লাভ হয়; পরিণাম স্মরণ করিয়ে দিয়ে চুরি না করার উপদেশবাক্য। |
চুলকে ঘা করা | ইচ্ছা করে নিজের বিপদ ডেকে আনা। |
চুলোমুখো দেবতার ঘুঁটের ছাই নৈবদ্য | ভালোর জন্য ভালো মন্দের জন্য মন্দ বরাদ্দ হয়। |
চুলোর উপর ক্ষীর, মনে নহে স্থির | সামনে লোভের বস্তু থাকলে মন স্থির থাকে না। |
চূড়ার উপর ময়ূরপাখা | সৌন্দর্যের উপর সৌন্দর্য; অতিবাহার। |
চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে | পূর্বের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার আশঙ্কা থেকে ভীতি; ভয় থেকে ভ্রান্তি; অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শিক্ষা দেই; সমতুল্য- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে লেঘ দেখলে ভয় পায়', 'নেড়া বেলতলা একবার' ইত্যাদি |
চেতনে অবচেতন | জেনেও না জানার ভান; আবেগে অন্ধ। |
চেনা বামুনের পৈতে লাগে না | স্বনামখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিতি লাগে না; (উৎস- বাংলায় ব্রাহ্মণ ছাড়াও অন্য জাতিও পৈতা ধারণ করে; সেইকারণে অপরিচিত ব্রাহ্মণকে প্রমাণস্বরূপ পৈতা বার করে দেখাতে হয়। |
চেরাগের নীচেই অন্ধকার | যে উপদেশ দেয় সে নিজেই নিয়ম মানে না। |
চেষ্টাবিনা কেষ্টা নেই | বিনা পরিশ্রমে কিছুই পাওয়া যায় না। |
চেষ্টার অসাধ্য কোন কাজ নেই। | চেষ্টা বৃথা যায় না। |
চেষ্টার শেষ নেই | মাঝপথে চেষ্টার খামতি দিতে নেই। |
চেহারা দেখে মানুষ চেনা যায় না | চেহারা ছলনা করে; বিরুদ্ধ উক্তি- মুখ দেখলে সব জানা যায়। |
চৈতের কুয়ায় (কুয়াশা) আমের ক্ষয়- খনা | চৈত্রমাসে কুয়াশ পড়লে আমের ফলন ভাল হয় না। |
চৈতের গীত বৈশাখে গায় তারে পুছে কোন শালায়/হালায় | সময়ের কাজ সময়ে নয়া করলে কোন লাভ নাই। |
চৈত্রে কাঁপে থর থর, বৈশাখে ঝড় পাথর, জৈষ্ঠ্যেতে তারা ফোটে তবেই জানবে বর্ষা বটে- খনা | যে বছর চৈত্রমাসে শীত থাকে, বৈশাখ মাসে শিলাবৃষ্টি হয় এবং জৈষ্ঠ্যমাসে আকাশ পরিস্কার থাকে সে বছর প্রবল বর্ষণ হওয়। |
চোখ বুজলেই সব অন্ধকার | মরলেই সব শেষ। |
চোখে সরষে ফুল দেখা | বিপদে পড়ে দিশেহারা হওয়া। |
চোখ থাকতে কানা | দেখেও দেখে না। |
চোখ বন্ধ করলে প্রলয় বন্ধ হয় না | ছেড়ে ছুড়ে বসে থাকলে বিপদ এড়ানো যায় না। |
চোখ মনের আয়না | চোখের দিকে তাকিয়ে মনের অবস্থা বোঝা যায়; মনের ভাবনা চোখের মণিতে লেখা থাকে। |
চোখ সব দেখে কেবল নিজেকে দেখে না | চোখ হল মনের জানালা। |
চোখে চোখে যতক্ষণ প্রাণ পোড়ে ততক্ষণ | যা দেখি না তা নেই। |
চোখে দেখে শুনতে চায়, এমন বোকা আছে কোথায়? | শোনার পর দেখে, দেখার পর শোনে না। |
চোখের আড়াল তো মনের আড়াল | দেখাসাক্ষাৎ না হলে মনে থাকে না; মানুষের কুটুম এলে গেলে; মৌখিক ভালবাসা; মেকি প্রেম। |
চোখের জল নারীর বল | নারী চোখের জলে সব জয় করে। |
চোখের জলের মত কিছুই দ্রুত শুকায় না | মানুষ দ্রুত শোক ভুলে যায়। |
চোখের দোষে সব হলদে | মন্দলোক সব মন্দ দেখে, ভালো জিনিষ খুঁজে পায় না। |
চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত | প্রতিশোধ নেবার প্রবল ইচ্ছা। |
চোর খোঁজে অন্ধকার | সকলেই আপনার সুবিধা খোঁজে। |
চোর চায় ভাঙা তালা/বেড়া | নজরদারি না থাকার সুবিধা; অন্যায় কাজের সুযোগ অন্বেষণ। |
চোর চুরি না করতে পারলে সাধু হয় | চোরে সাধুতে তফাৎ নেই; আলগা পেলে সবাই চোর। |
চোর ছেঁচড় চোপায় দড়, আগে দৌড়ায় ঠাকুর ঘর | ভণ্ডরা মন্দকাজের সাফাই দিতে বড়বড় কথা বলে এবং কথায়কথায় ঈশ্বরের শপথ নেয়। |
চোর ধনী হলে সজ্জন হয় | অর্থবল থাকলে সব হয়। |
চোর চলে গেলে চৌকিদার আসে // চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে | ঘটনা ঘটে গেলে বুদ্ধি খোলে; সুযোগ হাতছাড়া হ'লে মাথায় নানা ফন্দি-ফিকির আসে; সমতুল্য- 'রোগী মরলে বৈদ্য আসে'। |
চোর ধরতে চোরকে নিয়োগ | সহজে কার্যসিদ্ধি; কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। |
চোর পর মোর- হিন্দি প্রবাদ | বেইমানের সাথে বেইমানী করা উচিত; সমতুল্য- 'শঠে শাঠ্যাং সমাচরেৎ'। |
চোর ভাল তো বেকুব ভালো না | বুদ্ধিহীন সহ্যের বাইরে; একটু সতর্ক থাকলে চুরি আটকানো যায়, কিন্তু বেকুব কোনদিক থেকে ক্ষতি করবে বোঝা ভার। |
চোর মজে সাতঘর মজায়ে | চোর ধরা পড়লে অনেককে জড়ায়; চোর ধরতে পুলিশ চোরের চেনাজানা একাধিক নির্দোষ লোককে হয়রান করে। |
চোর সাধুতে তফাৎ নেই | জন্মজ কারণে উভয়ে সমান; কেউ চোর বা সাধু হয়ে জন্মায় না। |
চোরকে বলে চুরি কর, গেরস্তকে বলে সজাগ থাকো | দুকূল/দুদিক রক্ষা করা। |
চোরকে ধর্মের কাহিনী শুনানো আর উলুবনে মুক্তা ছড়ানো একই কথা // চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী | অসৎ ব্যক্তিকে উপদেশ দিলেও সে সৎ হয় না; মন্দকে সদুপদেশ দেওয়া বৃথা। |
চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী-কাশীরাম দাস | দুষ্টকে সদুপদেশ দেওয়া বৃথা। |
চোরে কামারে দেখা নেই সিঁধকাঠি গড়া | মন্দকাজ সকলের অগোচরে সম্পন্ন হয়। |
চোরে চোরে কুটুম্বিতা ভাই // চোরে চোরে মাসতুতো ভাই | মন্দের দোসর মন্দ। |
চোরের উপর বাটপাড়ি | চোরের কাছ থেকে চোরাই মাল চুরি; উপরচালাকি; ঠগকে ঠকানো। |
চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়া | বিপরীত বুদ্ধি; যার উপর রাগ তার কিছুই হল না,পরন্তু নিজের ক্ষতি হল। |
চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন // চোরের শতেক রাত গৃহস্থের একরাত | কুকর্মের ফল একদিন ভুগতেই হয়। |
চোরের ধন বাটপাড়ে খায় | অসৎ উপায়ে অর্জিত ধন নিজে ভোগ করতে পারে না। |
চোরের বল মিথ্যায় আশ্রয় | বাঁচতে গিয়ে নানান কথা। |
চোরের মন চৌকিদারে | স্বার্থান্বেষী লোক সবসময় সতর্ক থাকে। |
চোরের মন বোঁচকার দিকে | মানুষ সবসময় স্বার্থভাবনায় মগ্ন থাকে। |
চোরের মায়ের কান্না | অসৎ কাজের জন্য গোপন অশ্রুপাত। |
চোরের মায়ের বড় গলা | অসৎ কাজ চাপা দেওয়ার জন্য আস্ফালন; যে যতবেশি অসৎ সে ততবেশি সাধুতার ভান করে। |
চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা, শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল। | স্বার্থের কারণে অসৎ অসৎকে সমর্থন করে। |
চৌকিদারি কি ঝকমারি | সবসময় স্বার্থহানীর চিন্তায় পাগল; লাভ অল্প, কষ্ট বেশি। |
চৌকো গর্তে গোল পেরেক বা গোল গর্তে চৌকো পেরেক | অসম্ভব, যা হবার নয়; অন্য অর্থে- বেখাপ্পা মেল, অস্বস্তিকর অবস্থা (পুলিশের চাকরী আমার কাছে চৌকো গর্তে গোল পেরের মত মনে হয়) |
চৌরে গতে বা কিমু সাবাধানম? | চোর পালালে আর সাবধানে কি ফল হবে? পণ্ডশ্রম। |
ছ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ছকড়া নকড়া করা | তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা; হেলেফেলে করা। |
ছবি হল নীরব কবিতা, আর কবিতা হল কথা বলা নীরব ছবি | মন ও চোখ থাকলে সব পড়া যায়, সব দেখা যায়। |
ছল করে জল আনা | এক কার্যসিদ্ধির জন্য অন্য কাজের অভিনয় করা। |
ছাঁচের জলে খাবি খায়, সমুদ্রপার হতে চায়/যায়। | অক্ষমের উচ্চাশা। |
ছাইচাপা আগুন | অব্যক্ত ক্রোধ/মর্মবেদনা; সুপ্তপ্রতিভা; ভিতরে তেজ আছে কিন্তু বাইরে প্রকাশ নেই। |
ছাই পায় না মুড়কি জলপান | যোগ্যতার অতিরিক্ত আশা করা; অল্প পাওয়ার আশা নেই বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। |
ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো | অবহেলার পাত্র কিন্তু কাজের সময় ডাক পড়ে; দোষ করুক বা না করুক, নিরীহ ব্যক্তির উপর সব দোষ চাপানো হয়। |
ছাই মাখলেই সন্ন্যাসী হয় না | রঙীন হলেই দামী নয়; সাধু সাজলেই সাধু নয়; ভণ্ডামী ধরা পড়ে। |
ছাইতে জানিনে গোড় চিনি | কাজ করতে পারে না, অথচ দাবী করে কাজ ভাল বোঝে- হাস্যকর দাবী। |
ছাগল বলে আলুনি খেলাম; গেরস্ত বলে প্রাণে ম‘লাম | অসন্তুষ্টকে কখনো তুষ্ট করা যায় না। |
ছাগলকে ভাঙা বেড়া দেখাতে নেই | লোভীকে লোভের সামগ্রী দেখাতে নেই; যাতে লোভ বাড়ে এমন কিছু কয়ড়া নেই; সমতুল্য- 'কাঙালকে শাকের খেত দেখাতে নেই'। |
ছাগলে কিনা খায়, পাগলে কিনা বলে | অবোধ ছাগলে খাদ্য, অখাদ্য- সব খায়; অবোধ পাগলে বাচ্য, অবাচ্য- সব বলে; অবোধদের গুরুত্ব দিতে নেই। |
ছাগলে দিয়ে চাষ করা // ছাগল দিয়ে ধান মাড়ানো | নগণ্যকে দিয়ে কোন বড় কাজ করার চেষ্টা, যা হওয়ার নয়। |
ছাতা দিয়ে মাথা রাখা // ছাতা দিতে মাথা বাঁচানো | উপকার করা; সামান্য় উপকার হলে কৌতুকে এই উক্তি করা হয়; সমতুল্য- 'ভাঙ্গাঘর ছেয়ে দেওয়া'। |
ছাতার বলে গাঁ আমার | নিকৃষ্টের অন্যায্য দাবী; (উৎস- ছাতার, পাখিদের মধ্যে নিকৃষ্ট বলে বিবেচিত)। |
ছাতারে কীর্তন চলছে | অনর্থক গোলমাল হচ্ছে (উৎস- ছাতার পাখির দল এক জায়গায় জড়ো হলে কিচিরমিচির শব্দে উতক্ত করে তোলে। |
ছাতা দিয়ে মাথা রাখা | উপকার করা; সামান্য উপকার হলে কৌতুকে এই উক্তি করা হয়। |
ছাতুর হাঁড়িতে বাড়ি পড়া | অকস্মাৎ বিপদে পড়ে দিশেহারা; লণ্ডভণ্ড হওয়া। |
ছাত্রানাং অধ্যয়নং তপঃ | অধ্যয়নই ছাত্রদের তপস্যা বা ধর্ম। |
ছায়া চাইলে বড়গাছের তলায় নিও- জাপানী প্রবাদ | ক্ষমতাসম্পন্ন লোকের আশ্রয় নিতে হয়; সমতুল্য- 'আশ্রয়, ফল ও ছায়া বড়গাছের তলায় নিতে হয়'। |
ছায়া ভালো ছাতার তল; বল ভালো নিজের বল- খনা | ছাতার তলার ছায়া বড় মিষ্টি; নিজের শক্তিই আসল শক্তি। |
ছায়াতে ভূত দেখা | অমূলক আশঙ্কা করা। |
ছায়ার পিছনে ছুটে ছায়া ধরা যায় না // ছায়ার পিছনে ছোট এবং আসল হারাও | অতি আশা সর্বনাশা। |
ছাল নেই কুত্তা, নাম তার বাঘা | অযোগ্যকে অতিরিক্ত সম্মান জানানো; যে গুণ নেই সেই গুণ আরোপ; আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি। |
ছিঁড়লো দড়া তো ছুটলো ঘোড়া | নিয়ম উটতেই সবাই উদ্দাম; শৃঙ্খলা না থাকলে সবাই বিশৃঙ্খল হয়। |
ছিঁড়েছিঁড়ে কাটুনী, পুড়েপুড়ে রাঁধুনী | অভ্যাসে অভিজ্ঞ হয়; অভ্যাস দ্বিতীয় প্রকৃতি। |
ছিকলি কাটা টিয়ে | একবার যে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে, তাকে ফের অধীন করা সুকঠিন কাজ। |
ছিদ্রেস্বনর্থা বহুলা ভবন্তী | যেমন ছেঁড়া কাপড় সেলাই না করলে ছিদ্র বাড়তে থাকে তেমনই দোষ সংশোধন না করলে এক দোষ থেকে বহু দোষে পরিণত হয়। |
ছিল ঢেঁকি হল শূল | কাটতে কাটতে ছোট হয়ে গেছে। |
ছিলাম রোগী হয়েছি রোজা | লোক ঠকিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। |
ছুঁচ, সোহাগ, সুজন- ভালো করে তিনজন; উই, ইঁদু্র, কুজন- মন্দ করে তিনজন। | তিন ভাল সুসঙ্গী ও তিন কুসঙ্গীর প্রতি ইঙ্গিত। |
ছুঁচ হয়ে ঢোকে ফাল(লাঙ্গলের ফলা) হয়ে বেরোয় | সুযোগ নিয়ে সবাই দাঁও মারার মওকা খোঁজে; উপকার করার নামে ঢোকে, অনিষ্ট করে বেরোয়। |
ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করা | নেই-লাভের কাজ করে অখ্যাতি অর্জন করা; হীন ব্যক্তিকে শাস্তি দিয়ে সুনামের বদলে দুর্নাম কুড়ানো। |
ছুঁচো যদি আতর মাখে, তবু কি তার গন্ধ ঢাকে? | হীন কোনভাবেই জাতে ওঠে না; মন্দ সাধু সাজার চেষ্টা করলেও মন্দস্বভাব বেরিয়ে পড়ে। |
ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা | সামর্থ্য নেই অথচ প্রাচুর্যের প্রত্যাশা; দরিদ্রের উচ্চাভিলাষ। |
ছেঁড়া কাপড় রুখু মাথা দুঃখ বলে যাবো কোথা? | দুঃখ অপরিচ্ছন্নতাকে জড়িয়ে ধরতে ভালবাসে। |
ছেঁড়া চুলে (পরচুলা) খোঁপা বাঁধা | ধার করা জিনিষে ভাল কাজ হয় না; পরের স্বার্থে জড়িয়ে পড়া। |
ছেঁড়াবস্তায় খাসাচাল | কুদর্শন হলেও গুণের ছেলে; অগুণীর ঘরে গুণবান সন্তান। |
ছেঁড়া সম্পর্ক জোড়া লাগে না // ছেঁড়া সম্পর্ক জোড়ে না | আবেগ না সরালে ভাঙাসম্পর্ক জোড়া লাগা কঠিন। |
ছেড়ে দিয়ে তেড়ে ধরা | সুযোগ হারিয়ে আবার ফিরে পাওয়ার প্রয়াস। |
ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি | কোনরকমে সঙ্কট থেকে মুক্তি পাওয়ার কাতর ইচ্ছা। |
ছেলে আমার তোতাপাখী | বড় বেশি কথা বলে। |
ছেলে থেকে ছেলের মাথা ভারী | অতি বুদ্ধিমান ছেলে। |
ছেলের চেয়ে ছেলের গু ভারী // ছেলের থেকে ছেলের ঘুনসি বড় | মূল থেকে আনুসঙ্গিক ব্যাপার অনেক বেশি; সমতুল্য- বারোহাত কাঁকুড়ের তেরোহাত বীচি', 'বারোহাত কাপড়ের তেরোহাত দশী', 'বারোহাত পুকুরে তেরোহাত মাছ', 'মিঞা থেকে মিঞার ডিঙি ভারি' ইত্যাদি। |
ছেলের হাতের মোয়া নয় যে ভোগা দেবে | বয়স্কলোককে বোকা বানাবার চেষ্টা। |
ছেলেদের প্রতিভা এবং মেয়েদের রূপ দুইই জন্মগত ও প্রলয়ঙ্কর। | দুনিয়াকে উলটে দিতে পারে। |
ছোঁড়া ঢিল/তীর ফেরে না | ছেড়ে দেওয়া সুযোগ ফিরে আসে না; সমতুল্য- 'বলা কথা ফেরে না ', 'ভাত সিদ্ধ হয়ে গেছে', মুখের কথা ফেরে না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'মরার আগে পর্যন্ত ফিরে আসার সুযোগ থাকে |
ছোট কাঁটাটি ফোটে পায়, তুলে ফেল, নইলে দায় | ছোট দোষও বড় ক্ষতি করতে পারে। |
ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তর্ক করলে বেশি সময় নষ্ট হয়- আরবী প্রবাদ | ছোটখাটো বিষয়ে সবার বেশি জ্ঞান থাকে। |
ছোট মুখে বড় কথা | ছোটদের মুখে বড়দের মত কথাবার্তা; লোকের মর্যাদা না রেখে কথা বলা; সমতুল্য- 'যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা'। |
ছোটে মুঁহ বড়ী বাত- হিন্দি প্রবাদ | নিজের অবস্থানের উপরে উঠে কথা বলা; ওজন না বুঝে কথা বলা; সমতুল্য- 'যতবড় মুখ নয় ততবড় কথা'। |
ছোট্ট শরীরে একটি বিরাট আত্মা বাস করে। | আত্মা শাশ্বত, অক্ষয় এবং সময়ের ঊর্ধ্বে বলে বিবেচনা করা হয়। |
ছ্যাঁকা (গরম জলে) খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়- ইংরাজী প্রবাদ | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে', দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়', 'নেড়া বেলতলায় একবার' ইত্যাদি। |
জ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
জগৎ জুড়ে জাল ফেলেছে পালিয়ে বাঁচবি কোথা? | সংসারের জাল থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন; যমের হাত থেকে নিস্কৃতি নাই। |
জগৎ মায়াময়, শুধু ছায়ার খেলা | তুমি কার, কে তোমার, কেউ কারো নয়। |
জগতে ত্রুটিহীন কাজ দুর্লভ | কাজ করলে ভুলত্রুটি হবেই। |
জগতে ভালো কে, যার মনে লাগে যে | যার যাকে পছন্দ সেই তার কাছে ভাল; ভিন্নরুচির্হি লোকঃ। |
জগন্নাথ পেতে গেলে হাড়ীর ঝাঁটা খেতে হয় | কষ্ট না করলে ইষ্ট পাওয়া যায় না; (উৎস- জগন্নাথ দর্শনে গিয়ে ঝাঁটার বাড়ি না খেয়ে জগন্নাথ দর্শন করা যায় না)। |
জগাখিচুড়ি | বহু আবশ্যক ও অনাবশ্যক শাকসব্জির পাকে প্রস্তুত খাদ্য যা সুস্বাদু হয় না; বিভিন্ন অবাঞ্ছিত বস্তুর সংমিশ্রণ। |
জগাখিচুড়ি পাকানো | নানাভাবে কোন বিষয়কে জটিল করে তোলা; গোলমাল বাঁধানো। |
জঙ্গল মে মঙ্গল হোনা- হিন্দি প্রবাদ | শান্ত নির্জনস্থানে নিরুপদ্রবে মনের আনন্দে বাস করা। |
জঙ্গলা কখনো পোষ না মানে, মন সদা তার কেওড়া/সোঁদর বনে | বন্যপশুর মন থেকে বন মোছে না; যার যা অভিলাষ সেইদিকে তার টান; বিরুদ্ধ উক্তি- 'বনের পাখী পোষ মানে'। |
জন জামাই ভাগনা, এ তিন নয় আপনা | মজুর, জামাই আর ভাগনে- এই তিনজনের যতই উপকার কর না কেন এরা কোনদিন আপনার হয় না। |
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী | জননী ও জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও মহীয়সী, সর্বাপেক্ষা পূজনীয়। |
জন্তু দাঁত বার করলে ভেবো না সে হাসছে, সে কামড়াতে চায়- আরবী প্রবাদ | পশুপ্রকৃতির লোকেদের আচরণ হিংস্র হয়। |
জন্ম মৃত্যু বিয়ে, তিন বিধাতা দিয়ে // জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ, তিন না জানেন বরাহ | নিয়তি সব নিয়ন্ত্রণ করে; মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন প্রশ্ন নেই। |
জন্মদিনের উৎসাহে মনে রেখো মৃত্যুর দিকে একধাপ এগুলে | আনন্দের দিনে দুঃখকেও মনে রেখো। |
জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে? | মানুষমাত্রই মরণশীল। |
জন্মে দেখেনি লোহার মুখ, কোদালকে বলে গুণছুঁচ | অবোধের আগ বাড়িয়ে বাজে বকা; অবোধে না জানা বিষয়ে মন্তব্য করে হাসির খোরাক হয়। |
জন্মের মধ্যে কর্ম নিমুর চৈত্র মাসে রাস | সামান্য একটি কাজ করে অকর্মার অহঙ্কার। |
জপ নেই তপ নেই ভস্মমাখা গায় | ভেকধারী সন্ন্যাসী; ধর্মের ভান; বাহ্যিক আড়ম্বর; আচারসর্বস্বতা। |
জপতপ কর কি? মরতে জানলে ডর কি? | মরার ভয়ে মানুষ ঈশ্বরকে ডাকে; জপতপে যমকে এড়ানো যায় না। |
জব বরসতা তব গরজতা নহী, জব গরজতা তব বরসতা নহী- হিন্দি প্রবাদ | সারবান ব্যক্তির আড়ম্বর নেই; সারশূন্য হলেই আড়ম্বর দেখায়। |
জমি না দেখে জমি ছেড়ো না | পা রাখার যায়গা পেলে পা তোল। |
জল এগোয় না তৃষ্ণা এগোয় | অভিলাষকারী এগুবে, অভিলাষিত বস্তু এগুবে না। |
জল খেয়ে জলের বিচার // জল খেয়ে জাতের বিচার | বিপরীতবুদ্ধি, আগের কাজ পরে করা; কাজে নামার আগে দোষগুণ বিচার করা উচিৎ। |
জল জল বৃষ্টির জল। বল বল বাহুর বল | বৃষ্টির জলের তুলনা হয় না, ছেঁচাজলে বেশিক্ষণ চলে না; নিজের বলই শ্রেষ্ঠ, পরের বলে নির্ভর কর যায় না। |
জল, জোলাপ, জুয়াচুরি, এই তিন নিয়ে ডাক্তারি | বলা হয় যে ডাক্তারেরা এই তিনটি বিষয় বেশি পছন্দ করেন। |
জল থেকে রক্ত গাঢ় | পারিবারিক সম্পর্ক এবং আনুগত্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ; সমতুল্য- রক্তের টান বড় টান'; বিরুদ্ধ উক্তি- রক্তের টানে রক্তারক্তি; রক্তের টানের থেকে মনের টান বড়। |
জল দিয়ে জল বার করা | শত্রুকে দিয়ে শত্রুর গোপন মন্ত্রণা জানতে চেষ্টা করে; কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। |
জল নদীতে সুস্বাদু, সমুদ্রে বিস্বাদ | আধারগুণে চরিত্র বদলায়। |
জল নেড়ে জোঁকের বোল বোঝা | কথার আভাসে অন্যের মনোভাব বোঝা; বেড়া নেড়ে গৃহস্থের মন বুঝা। |
জলবিন্দুপাতেন ক্রমশঃ পূর্যতে ঘটঃ | ফোঁটাফোঁটা জল পড়ে ঘট ভর্তি হয়; সৃষ্টি তিলেতিলে গড়ে ওঠে। |
জল মে রহ কর মগর সে বৈরী- হিন্দি প্রবাদ | অধীনতায় থেকে শত্রুতা করা যায় না; সমতুল্য- 'জলে থেকে কুমীরের সাথে বিবাদ'। |
জলে কুমির ডাঙায় বাঘ | উভয়সঙ্কট, দুদিকেই বিপদে পড়া; সমতুল্য- এগুলে রাম পিছুলে রাবণ; শাঁখের করাত, যেতেও কাটে আসতেও কাটে; সাপের ছুঁচো গেলা ইত্যাদি |
জলে জল বাঁধে | জমিতে একটু জল থাকলে, সামান্য বৃষ্টিতেও জল দাঁড়ায়; শুকনো জমি জল শুষে নেয়; পয়সাতে পয়সা আসে। |
জলে জল খাপ/মিশ খায় | সমপ্রকৃতির বস্তুর মিলন হয়। |
জলে তেল সহজে বিতায় | সমমর্মী হলে সৌভ্রাতৃত্ব সহজে গড়ে ওঠে। |
জলে তেলে খাপ/মিশ খায় না | বিষমপ্রকৃতির বস্তুর মিলন হয় না; মতের মিল না হলে মনের মিল হয় না। |
জলে না নামিলে শেখে না সাঁতার, হাঁটিতে শেখে না, না খেলে আছাড় | অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হ'লে কার্যক্ষেত্রে নামতে হয়; কিছু পেতে গেলে কিছু করতে হয়; সমতুল্য জাপানী প্রবাদ- বাঘের খাঁচায় না ঢুকলে বাঘের বাচ্চা পাওয়া যায় না'। |
জলে পাথর গলে/পচে না | আকাট মূর্খ জ্ঞানী হয় না; দুর্বল শক্তিশালীকে কাবু করতে পারে না; শক্তিশালী সহজে বিনষ্ট হয় না। |
জলে বাস করে কুমীরের সাথে বিবাদ | প্রভাবপ্রতিপত্তিসশালীর এলাকায় বাস করে তারই সাথে বিবাদ |
জলে ভাসে শিলা | অসম্ভব ঘটনা। |
জলের কুমির ডাঙ্গায় এলো | বিপদ সামনে উপস্থিত। |
জলের গতি নীচের দিকে | স্নেহ নিম্নগামী। |
জলের চেয়ে পাঁক ঠান্ডা; সূর্যের চেয়ে বালি গরম- খনা | নগণ্য ব্যক্তিরা নম্র হয়; নকল ব্যক্তিরা উদ্ধত হয়। |
জলের ছিঁটে দিয়ে লগির গুঁতো খাওয়া | সামান্য অনিষ্ট করতে গিয়ে বিষম শাস্তি পাওয়া। |
জলের ফোঁটা পাথর ক্ষয় করে, সূতার করাত গাছ কাটে- চীনা প্রবাদ | নিষ্ঠা ও একাগ্রতা থাকলে কঠিন কাজও সহজে করা পাওয়া যায়; সমতুল্য- 'পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই'। |
জলের রেখা খলের পীরিত | অতি ক্ষণস্থায়ী পীরিত। |
জলের শত্রু পানা, মানুষের শত্রু কানা | প্রকৃত গুণগ্রাহীরাই গুনীর গুণের কদর করতে পারে। |
জহুরী জহর চেনে | অভিজ্ঞ চোখকে ফাঁকি দেওয়া অসম্ভব। |
জাড্যং ধিয়ো হরতি সিঞ্চতি বাচি সত্যং মানোন্নতিং দিশতি পাপমকরোতি। চেতঃ প্রসাদয়তি দিক্ষু তন্যেতি কীর্তিং সৎসঙ্গতিঃ কথয় কিং ন করোতি পুংসাম্॥ (চাণক্য) | সৎসংসর্গ মানুষের বাহ্যিক জড়তা দূর করে; বাক্যে সত্যতা স্থাপন করে; সম্মান বৃদ্ধি করে; পাপ দূর করে; চিত্ত প্রসন্ন করে;দিকে দিকে যশ বিস্তার করে- কী না করে থাকে? |
জাগন্ত ঘরে চুরি নাই | সতর্ক চক্ষুকে ফাঁকি দেওয়া অসম্ভব; সাবধানের মার নাই। |
জাতস্য হি ধ্রুবোর্মৃত্যুঃ | জন্মিলে মরিতে হবে, এটা ধ্রুব সত্য; জন্মিলে মরিতে হ'বে, অমর কে কোথা কবে? |
জাত খুইয়ে বৈষ্ণব | বৈষ্ণবের কোন জাত নেই; যে কেউ বৈষ্ণব হতে পারে। |
জাত গেল পেটও ভরল না | একূল, ওকূল- দুকূল গেলো; ক্ষতি স্বীকার করেও ইষ্ট মিলল না। |
জাত গোয়ালার কাঁজি ভক্ষণ | ব্যবসায়ী তার নিজের জিনিষ ভোগ করতে পারে না। |
জাত তো বাক্সের ভিতর | অর্থে সবাই বশীভূত; অর্থেন পুরুষঃ দাসঃ। |
জাতে মাতাল তালে ঠিক | বেহিসাবি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে নিজের কাজে হিসাবি। |
জাতের নারী কালাও ভালা/ভালো, নদীর পানি ঘোলাও ভালা/ভালো১ | নারী নির্বাচনে গুণবতী কালো হলেও ভালো; গুণহীনা রূপবতী হলেও ভাল নয়; সমতুল্য- 'কালা কাজলের মাটি, তা'র লাগি ছ'মাস হাঁটি; সুন্দর ধুতুরার ফুল, তা'র নাই কড়ার মূল','রূপে মারি লাথি, গুণে ধরি ছাতি'। |
জাতের নারী কালাও ভালা/ভালো, নদীর পানি ঘোলাও ভালা/ভালয় | বিয়ের ক্ষেত্রে নারী নির্বাচনে আগে গুণ বিচার না করে তার জাত বিচার করা হত, যাকে পালটি ঘর বলা হয়; বর্তমানে জাতবিচার হওয় না, গুণ বিচার হয়। |
জান যায় তো জবান/বাত না যায় | প্রাণ যায়, কথা থাকে। |
জান যায়, মান না যায় | প্রাণ যায় যাক ইজ্জৎ যেন থাকে। |
জানার কোন বয়স/শেষ নেই | আমৃত্যু শেখা যায়। |
জানিনি, পারিনি, নেইকো ঘরে, এই তিনকে দেবতা ডরে | কারো কাছে এই তিন উত্তর শোনার পর আর কোন কথা চলে না। |
জানীয়াৎ প্রেষণে ভৃত্যান্ বান্ধবান্ ব্যসনাগমে। মিত্রঞ্চাপদি কালে চ ভার্যাঞ্চ বিভবক্ষয়ে।।- চাণক্য | ভৃত্যের যথার্থ স্বরূপ তাঁর কাজের মাধ্যমে জানবে, বন্ধুর যথার্থ স্বরূপ বাসনার সময়ে জানবে। মিত্রের যথার্থ স্বরূপ উপদ্রব উপস্থিত হলে জানবে এবং ধনসম্পত্তি নাশের কালে স্ত্রীর যথার্থ স্বরূপ জানবে। |
জামা-জোব্বা বেশুমার আক্কল বিনা ছারখার | পোশাকের আড়ম্বরে বুদ্ধির দৈন্যতা দূর হয় না। |
জামাইয়ের জন্য মারে হাঁস, গুষ্টি সুদ্ধ খায় মাস | একজনের দোহাই দিয়ে সকলের সুবিধা ভোগ। |
জামিন হয় দিতে, গাছে ওঠে মরতে | উভয়কাজেই অনিষ্ট হওয়ার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা। |
জালে পড়লে মাছ বেশি লাফায় | আবদ্ধ অবস্থায় প্রাণ ছটফট করে; স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায়রে, কে বাঁচিতে চায়। |
জিঘাংসন্তং জিঘাংসিয়াৎ | হননকারিকে হনন করা দোষনীয় নয়। |
জিতক্রোধেন সর্বং হি জগদতেদ বিজীয়তে | যে ক্রোধকে জয় করেছে সে জগতকে জয় করেছে। |
জিত্নি চদ্দর দেখো, উৎনি পৈর ফৈলাও- হিন্দি প্রবাদ | যতদূর চাদর দিয়ে পা ঢাকতে পারো ততদূর পা ছড়াও; আয় বুঝে ব্য়য় কর। |
জিত্নি মুঁহ উতনি বাতো- হিন্দি প্রবাদ | নানালোকের নানাবক্তব্য; সমতুল্য- 'নানা মুনির নানামত'। |
জিদের ভাত কুকুরে খায় | জেদ ধরলে নিজের ক্ষতি হয়। |
জিভ দিয়েছেন যিনি আহার যোগান তিনি | ঈশ্বরই সকলের অন্নদাতা; অদ্ষ্টবাদে বিশ্বাসী অভাগা। |
জিভ টলে আছাড় খাওয়া থেকে পা-টলে আছাড় খাওয়া ভাল | বেঁফাস কথা না বলা ভাল। |
জিস্কী লাঠি উস্কী ভৈঁস- হিন্দি প্রবাদ // জিস্দা তেগ উস্দা দেগ- পাঞ্জাবী প্রবাদ | যার লাঠি তার মোষ; সমতুল্য- 'জোর যার মুল্লুক তার', লাঠি যার মাটি তার'। |
জিসকো না দে খোদাতাল্লা উস্কো না দে শকে কই উদ্দৌলা | আল্লা যার প্রতি বিরূপ তার ভাগ্য কোন বাদশাহ ফেরাতে পারবে না। |
জীব দিয়াছেন যিনি আহার যোগাবেন তিনি | ঈশ্বরই সকলের অন্নদাতা; অদ্ষ্টবাদে বিশ্বাসী অভাগা। |
জীবন এক পেয়ালা চায়ের মত, যতই তৃপ্তির সাথে পান করি ততই তলার দিকে যেতে থাকি | একদিন বাঁচার অর্থ মৃত্যুর দিকে এক পা এগিয়ে যাওয়া। |
জীবন চলমান ছায়া ছাড়া আর কিছুই নয় | জীবন মায়াময় আলোছায়ার খেলা। |
জীবন সত্যই সরল, কিন্তু আমরা তাকে জটিল করার উপর জোর দিই- কনফুসিয়াস | মানুষের দুর্ভাগ্য যে সে সহজ সরল হ'তে পারে না। |
জীবনে মরণে সৎলোকের কোন ক্ষতি হয় না (উপনিষদ) | সততা জীবনের শ্রেষ্ঠমন্ত্র। |
জীবনের প্রতিটি সিঁড়িতে পা রেখেই ওপরে ওঠা উচিৎ, ডিঙ্গিয়ে নয় | সতর্ক পদক্ষেপে চলা উচিৎ। |
জীবনের লম্বা পথ বড় আঁকাবাঁকা | উত্থান-পতনে মোড়া মানুষের জীবন। |
জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর | জীবে দয়াই শ্রেষ্ট ধর্ম। |
জীর্ণমন্নং প্রশংসীয়াৎ ভার্য্যাঞ্চ গতযৌবনাম্। রণাৎ প্রত্যাগতং শূরং শস্যঞ্চ গৃহমাগতম্।। (চাণক্য | যে আহারের পরিপাক হয়েছে তাকে প্রশংসা করবে, নির্দোষভাবে যৌবন অতিক্রম করেছে এমন স্ত্রীর প্রশংসা করবে, যুদ্ধ থেকে (সসম্মানে) ফিরে আসা বীরের প্রশংসা করবে এবং যে ফসল ঘরে উঠেছে তার প্রশংসা করবে। |
জুতো মেরে গরু দান | অপমান করে পরে ক্ষমা প্রার্থনা। |
জুতো মেরেছে, অপমান তো করে নি | নির্লজ্জের উক্ত; মান-অপমানবোধ নেই। |
জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ | ছোট-বড় যাবতীয় কাজ। |
জুয়াচোরের বাড়ি ফলার, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। | অনিশ্চয়তা সম্পর্কে সন্ধিহান। |
জৈসা দেওগে ঐসা পাওগে- হিন্দি প্রবাদ | যেমন কর্ম করবে তেমন ফল পাবে; যেমন কর্ম তেমন ফল। |
জৈসা কা তৈসা- হিন্দি প্রবাদ | যেমন তেমন; যার যেমন তার তেমন। |
জৈসা দেওগে বৈসা পাওগে- হিন্দি প্রবাদ | যেমন দেবে তেমন পাবে; আয়নায় যেমন মুখ দেখাবে তেমন মুখ দেখবে; যেমন কর্ম তেমন ফল। |
জৈসা দেশ ঐসা বেশ- হিন্দি প্রবাদ | সময়ানুসার ব্যবহার; অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হয়; সমতুল্য- 'যখন তুমি রোমে তখন তুমি রোমান', যস্মিন দেশে যদাচার' ইত্যাদি। |
জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা; শস্যের ভার সহে না ধরা // জৈষ্ঠ্য মারে আষাঢ়ে ভরে, কাটিয়া মাড়িয়া ঘর করে- খনা | জৈষ্ঠ্যেমাসে রৌদ্র থাকলে এবং আষাঢ়্মাসে বৃষ্টি হলে ফলন খুব ভাল হয় এবং শস্যের ভাণ্ডার পরিপূর্ণ হয়। |
জোঁকের মুখে চুন/নুন | তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়লে দুর্দান্ত চরিত্রের লোকও নেতিয়ে যায়; সমতুল্য- সাপের মুখে ঈষার মূল। |
জোঁকের গায়ে জোঁক বসে না | সমধর্মীরা পরস্পরের ক্ষতি করে না; মানুষ তার ব্যতিক্রম। |
জো করে টোট্কা উন্হীকো ঘুমকে পরে ফট্কা- হিন্দি প্রবাদ | পরের অনিষ্ট করতে গেলে নিজের অনিষ্ট হয়। |
জো গরজ্তা বহ বরস্তা নহি- হিন্দি প্রবাদ | যে মেঘ গর্জায় সে বর্ষায় না; বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া। |
জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো | হাতের কাছে যা পাওয়া গেছে তাই দিয়ে কোনমতে কাজ চালানো। |
জোয়ার-ভাঁটা ও সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না | জীবন সময়ের সাথে কাধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলে। |
জোয়ার থাকলে ভাঁটা আছে | সুখ-দুঃখ মিলিয়ে জীবন; অবিমিশ্র কিছু হয় না। |
জোয়ারের জল আর কতক্ষণ? | সুখের দিনগুলি দীর্ঘ হয় না। |
জোর যার মুল্লুক তার | শক্তি থাকলে সবকিছু জয় করা যায়; শক্তিশালীরা নানাদিকে রাজা হয়; সমতুল্য-জিস্কী লাঠি উস্কী ভৈঁস', 'জিস্দা তেগ উস্দা দেগ', 'লাঠি যার মাটি তার', শক্তি যার দখল তার' ইত্যাদি। |
জ্ঞাতিভির্বণ্ট্যতে নৈব চৌরেণাপি ন নীয়তে। দানেন বর্ধতে নিত্যং বিদ্যারত্নং মহাধনম্॥ (চাণক্য) | জ্ঞাতিরা বিদ্যা ভাগ করে নিতে পারে না; চোরেরা বিদ্যা চুরি করতে পারে না; দানে বিদ্যা সদাবর্ধিত হয়; বিদ্যারূপরত্ন মহাধনস্বরূপ। |
জ্ঞানস্যাভরণং ক্ষমা | ক্ষমা জ্ঞানের আভরণস্বরূপ। |
জ্ঞানহীন চিন্তা লাগাম ছেঁড়া ঘোড়ার মতো | আবোলতাবোল চিন্তা মনে বিকার উৎপন্ন করে; |
জ্ঞানহীনতা চরমতম দারিদ্রের লক্ষণ- আরবী প্রবাদ | অজ্ঞানের সারাটা জীবন বৃথাই যায়। |
জ্ঞানার্জন লবণাক্ত জলের মত, যতই পান করবে ততই জ্ঞানতৃষ্ণা বাড়বে- আরবী প্রবাদ | যতই জ্ঞান অর্জন হয়, জ্ঞানপিপাসা ততই বাড়তে থাকে। |
জ্ঞানী আগে চিন্তা করে পরে কথা বলে, মূর্খ আগে কথা বলে পরে চিন্তা করে- আরবী প্রবাদ | জ্ঞানীরা ভেবে কাজ করে; মূর্খেরা কাজ করার পর ভাবে। |
জ্ঞানী মূর্খকে চিনতে পারে, মূর্খ জ্ঞানীকে চিনতে পারে না- আরবী প্রবাদ | জ্ঞানীর গুণ চিনতে পারা; মূর্খের গুণ চিনতে না পারা। |
জ্ঞানীর কান বড় আর জিভ ছোট হয়- চীনা প্রবাদ // জ্ঞানীরা স্বল্পভাষী হয় | জ্ঞানীরা শোনেন বেশি, বলেন কম |
জ্ঞানীর মন সদাপরিবর্তনশীল, বোকারা রক্ষণশীল | জ্ঞানী বহমান নদীর মত; বোকা যেন বদ্ধ জলাশয়। |
জ্ঞানীর সম্পদ তার জ্ঞান, মূর্খের সম্পদ তার অর্থ | জ্ঞানী জ্ঞানের কাঙাল; মূর্খ অর্থের কাঙাল। |
জ্ঞানেনহীনাঃ পশুভিসমানাঃ | জ্ঞনহীন লোক পশুর সমান। |
জ্যান্ত পোড়ে চিন্তায় মড়া পোড়ে চিতায় | দুশ্চিন্তা মানুষকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়। |
জ্যান্ত মাছে পোকা পড়ানো | মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সুচরিত্রকে কালিমালিপ্ত করা। |
জ্যান্ত মাছে পোকা পড়ে না | সতেজ মন পাপ এড়িয়ে চলে। |
ঝ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঝকমারির মাসুল | নির্বুদ্ধিতার দণ্ড; আক্কেল সেলামি। |
ঝড় উঠলে আশ্রয় খোঁজো | সবসময় নিরাপদ আবস্থায় থাকার পক্ষে ওকালতি। |
ঝড় থেমে গেলে সব কিছু শান্ত হয় | যেকোন উথালপাথালের পর প্রকৃতি শান্ত হয়; সমতুল্য- 'মেঘের আড়ালে সূর্য হাসে', 'মেঘের পর রৌদ্র আসে' ইত্যাদি। |
ঝড়ে কাক/বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে | অন্যের কৃতিত্ব নিজের বলে জাহির করা; কাকতলীয়ভাবে কেউ কোন কাজের কৃতিত্ব পেলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
ঝড়ের পর শান্তি আসে | ঝড় শেষ কথা নয়। |
ঝাঁকের কই ঝাঁকে ফেরে/মেশে | সমধর্মীরা একসাথে থাকতে ভালবাসে। |
ঝাঁকি/ঝাঁঝরি বলে চালনি তুই বড় ছেঁদা // ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বড় ফোঁড়ওয়ালা | নিজের দোষ দেখে না পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়; পরছিদ্রান্বেষী। |
ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা | নিজের দোষ নজরে পড়ে না; পরের দোষে তীক্ষ্ণদৃষ্টি; সমতুল্য- 'আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে', চালুনি বলে ছুঁচ তোর মার্গে কেন ছেঁদা', 'চালুনি বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো', 'হাঁড়ি বলে কড়াই তোর পিছনটা বড়া কালা' ইত্যাদি। |
ঝাঁপাবার আগে দেখে নিও, ঝাঁপালে ফিরে দেখো না | দেখেশুনে কাজ করার পক্ষে চেতাবনি। |
ঝাড়ের বাঁশ পড়ে না | সংঘবদ্ধ থাকলে বিপদের পড়তে হয় না। |
ঝামেলায় না পড়লে ঝামেলার (দুশ্চিন্তা) পিছু নিও না | অনাবশ্যক ঝামেলায় না জড়ানোর পক্ষে চেতাবনি। |
ঝি জব্দ কিলে, বৌ জব্দ শিলে, পাড়াপড়শী জব্দ চোখে আঙুল দিলে | প্রহারে কন্যাম বাটনা বাটিতে দিলে বৌ এবং প্রত্যক্ষভাবে দেখিয়ে দিলে প্রতিবেশী ঠাণ্ডা হয়। |
ঝিকে মেরে বৌকে শেখানো | কন্যাকে শাসন করে পুত্রবধুকে শিক্ষা দান; পরোক্ষে তিরস্কার; ইঙ্গিতে কার্যসাধন। |
ঝির ঝি করবে কি? | কন্যাই বড় উপকার করল এখন তার কন্যা এসে উপকার করবে, কোন উপকার পাওয়া যাবে না অর্থে- ব্যাঙ্গোক্তি। |
ঝিনুক দিয়ে সাগর ছেঁচা | ক্ষুদ্র উপায়ে বিরাট কাজ করার চেষ্টা; নরুণ দিয়ে তালগাছ কাটা। |
ঝিনুকমাত্রেই শুক্তি থাকে না | হাত পা থাকলেই মানুষ হয় না; সব মানুষ মানুষ নয়; চকচক করলেই সোনা হয় না। |
ঝুঁকি না নিলে লাভ হয় না | জীবনে ঝুঁকি আছে; ঝুঁকি না নিলে আখেরে লাভ হয় না। |
ঝোপ বুঝে কোপ মারা | অবস্থাবুঝে ব্যবস্থা; অবসরে সুযোগগ্রহণ/কার্যসাধন। |
ঝুটে কা মুঁহ কালা সচ্চে কা বোলবালা- হিন্দি প্রবাদ | শেষপর্যন্ত সত্যের জয় হয়; সমতুল্য- 'সত্যমেব জয়তে'। |
ঝোলে, ঝালে, অম্বলে- সবটেকে বেগুন চলে | সব সাজে মোহিনীমোহন; সর্বঘটের কাঁঠালী কলা। |
ট[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
টকের জ্বালায় দেশ ছেড়ে তেঁতুল তলায় বাস | নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি নেই; যন্ত্রণা থেকে নিস্তার চাইলেই পাওয়া যায় না। |
টাক, প্রকৃতি, গোদ মরণে হয় শোধ | মাথাভরা টাক, স্বভাব ও পায়ের গোদ মরার আগে ছাড়ে না। |
টাকা উড়ে চলে যায়, টাকা রাখা বিষম দায় // টাকার ডানা আছে, উড়ে যেতে কতক্ষণ? | লক্ষ্মী চঞ্চলা; যত্ন না নিলে লক্ষ্মী ঘর ছাড়ে। |
টাকা গাছের ফল নয় যে, ছিঁড়ে/পেড়ে নিলে হল | অর্থ পরিশ্রমের ফল। |
টাকা টাকা বল ভাই, টাকার মত জিনিষ নাই, টাকা বিনে সংসারেতে সব যন্ত্রণা | অর্থ না থাকলে সুখ ভোগ সম্ভব নয়। |
টাকা চিটেগুড়- মক্ষি টানে | অর্থ থাকলে পাশে অনেক উমেদার জুটে যায়। |
টাকা তুমি যাচ্ছ কোথা? পিরিত যথা; আসবে কবে? বিচ্ছেদ যবে | প্রণয় থাকলে টাকা ধার দেওয়া হয়; টাকা ফেরত চাইলেই বন্ধু বিচ্ছেদ। |
টাকা তোমারও নয়, টাকা আমারও নয়, টাকা প্রয়োজনের | প্রয়োজনে কাজে না লাগলে সে অর্থ থাকা বা না থাকা, দুই সমান। |
টাকা থাকলে অভাবের অভাব হয় | অর্থশালী কিভবে অর্থ ব্যয় করবে ভেবে পায় না; অভাব না থাকায় অর্থশালী অসদুপায়ে অর্থ খরচ করে। |
টাকা থাকলেই অপব্যয় | অর্থশালী প্রয়োজনের তুলনায় আড়ম্বরে বেশি খরচ করে। |
টাকা থাকলে ভদ্রলোক, না থাকলেই ছোটলোক | সমাজে উচ্চবিত্তরা ভদ্রলোক এবং নিম্নবিত্তেরা ছোটলোক আখ্যায়িত হয়। |
টাকা থাকলে ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ হয় | অর্থ থাকলে নয়ছয় করা যায়। |
টাকা দিলে কাঠের পুতুলও হাঁ করে | অর্থ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। |
টাকা ধার চাইলে বন্ধু বিচ্ছেদ | একবার ঋণ নিলে সে ঋণ আর শোধ হয় না। |
টাকা না থাকলে ভাল কাজ করা যায় না | অর্থের রূপালীরেখা হল- বহু ভালো কাজে অর্থ ব্যয়িত হয়। |
টাকা বাড়লে দেমাক বাড়ে | খুব কম অর্থশালীই বিনয়ী হয়। |
টাকা মাটি, মাটি টাকা | টাকা টাকা করে টাকার প্রতি বেশি নজর না দিতে ঠাকুরের হিতোপদেশ। |
টাকা যার মামলা/শক্তি তার | অর্থের কাছে বিচার নতজানু হয়; অর্থের জোরে বিচার কেনা যায়। |
টাকায় টাকা আনে/টানে | ব্যবসায়ে যত বেশি অর্থ বিনিয়োগ করা যায়, ততই বেশি লাভ হয়; সমতুল্য- 'বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী'। |
টাকায় বাঘের দুধ মেলে | অর্থে জোরে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায় |
টাকায় সব দোষ ঢাকা পড়ে/যায় | অর্থে সব সমালোচনায় মুখ বন্ধ করা যায়। |
টাকার নৌকা পাহাড় দিয়ে যায় | অর্থ থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। |
টেনে বুনতে কুলোয় না | অর্থের টানাটানি; অভাবের সংসার; এদিক আনতে ওদিক কুলায় না। |
টোপ ফেললে খায় না সেই বা কেমন বঁড়শি, ইসারায় বোঝে না সেই বা কেমন পড়শি | উভয়ই কোন কাজে আসে না। |
ট্যাক খালি তো মুখ কালি | অর্থের টানাটানিতে মন চিন্তায় পোড়ে |
ট্যাক ভারি তো মন হালকা | অর্থ থাকলে সব আকাঙ্খা মেটে, মেজাজ ফুরফুরে থাকে |
ট্যানা নাই ফ্যানা আছে | শূন্থাযগর্কভ লোকের অহিঙ্কার বেশি হয় |
ঠ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঠগ বাছতে গাঁঁ উজাড় | যেখানে মন্দের ভাগ বেশি, প্রায় সবাই একদলের সেখানে বাছাবাছি করা কঠিন। |
ঠগের বাড়ী নেমন্তন্ন, না আচাঁলে বিশ্বাস নেই | অনিশ্চয়তা সম্পর্কে সন্ধিহান। |
ঠাকুর ঘরে কে, আমি কলা খাই নি | অপরাধী দুর্বলচিত্তের হয়, চালাকি করতে গিয়ে ধরা পড়া; অতি সতর্কতায় দোষ-স্বীকার; এক কথার অন্য উত্তর দিয়ে বদ মনোভাব প্রকাশ করে ফেলা |
ঠাকুরকে দেখিয়ে কলা নৈবিদ্যি নিয়ে পালা | প্রবঞ্চনা করা। |
ঠাঁট ঠমকে বিকোয় ঘোড়া | গুণে নয় জমকে বাজারে জিনিষ বিক্রি হয়; বাহ্যিক ভড়ং দেখে লোকে ভোলে; সমতুল্য- 'আগে দর্শননধারী, পিছে গুণবিচারী','যো দেখতা হ্যায় উয়ো বিক্তা হায়' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশই', শুধু দেখনাই ভাল হলেই চলে না গুণ থাকা চাই' ইত্যাদি । |
ঠাণ্ডা মাথায় বুদ্ধি খোলে | মাথা গরম হলে বুদ্ধি গুলিয়ে যায়। |
ঠেকে শেখে আর দেখে শেখে | অজ্ঞানীরা নিজের কষ্ট থেকে শিক্ষা পায়; জ্ঞানীরা অপরের অজ্ঞতার ফল দেখে শিক্ষা নেয়। |
ঠেলাঠেলির ঘর খোদায় রক্ষা কর | দুই সতীনের ঝগড়ায় স্বামীবেচারা প্রাণ ওষ্ঠাগত, কাকে ছেড়ে কাকে রাখে। |
ঠেলায় পড়লে ঠাকুরদাদি, নইলে তার নাকে পাঁদি (বাতকর্ম) | বিপদে পড়ে কারো শরণ নেওয়া; বিপদ সরে গেলেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা। |
ঠেলায় পড়ে ঢেলায় সেলাম | গল্পে আছে- পা পিছলে পড়ে যেতে একজন বলল- পড়ে গেলে? উত্তরে সে বলল-পড়ব কেন,শিবকে প্রণাম করলাম; আলং- এক অর্থে- প্রকৃত বিষয় গোপন করে সম্ভ্রম রক্ষা করার চেষ্টা; অন্য অর্থে বিপদে পড়ে ঈশ্বরকে স্মরণ; সমতুল্য- 'কারে পড়ে আল্লার নাম', 'বিপদে পড়লে শ্রীমধুসূদন' ইত্যাদি। |
ঠেলায় পড়লে বেড়াল মান্দার গাছেও (একপ্রকার কাঁটাযুক্ত গাছ) উঠে। | বিপদে পড়লে কোন বাধাই বাধা নয়। |
ঠেলায় পড়লে শালগ্রাম নইলে পাথরের ঢেলা | ভয় থেকে ভগবানে ভক্তি। |
ঠেলায় পড়লে বামুন শালগ্রামের পৈতা/সোনা বেঁচে খায়। | বিপদে পড়লে ভগবানে ভক্তি শিকেয় ওঠে। |
ঠোঁক কাটা কাক | সববিষয়ে ঠোক্কর মারা লোক; যে সবসময় খুঁত ধরে। |
ঠেলার নাম বাবাজী | চাপে পড়ে কাবু হওয়া; বিপদে পড়ে অবজ্ঞাতকে সমাদর। |
ঠ্যাং থাকতে লাঠি কেন? | দুর্বলের প্রতি বক্রোক্তি |
ড[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ডাইনে আনতে বাঁয়ে কুলোয় না (নেই) // ডাইনে আনতে বামে ফুরায় | অর্থের টানাটানি; আয় থেকে ব্যয় বেশি; আয় অল্প কিছুতেই সংকুলান হয় না; সমতুল্য- 'খরচের আঁকে আনতে জমার আঁকে কুলায় না', 'নুন আনতে পান্তা ফুরায়' ইত্যাদি। |
ডাইলের মধ্যে মুসুরি, সাগাইয়ের (আত্মীয়) মধ্যে শাশুড়ি। | গুণে, উপকারিতায় শ্রেষ্ঠ। |
ডাকয়ে পক্ষী না ছাড়ে বাসা; উড়িয়ে বৈসে খাবে করি আশা; ফিরে যায় বাসে না পায় দিশা খনা ডেকে বলে সেইতো ঊষা; উড়ে পড়ে খায় না তখন কেন যায় না- (খনা) | রাতের পাখীরা জখন বাসার মধ্কাযে থাকে; বাসা ছেড়ে উড়ার ইচ্ছা তবু উড়তে পারে না; বার বার দেশে হারা হয়ে বাসায় ফিরে আসে; রাত্রি শেষের সেই সময়টাই ঊষাকাল; সেই সময় যাত্রা করা সবচেয়ে ভাল। (যাত্রার শুভক্ষণ) |
ডাকলে ডাক, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ | অলসতার প্রতি বক্রোক্তি; চলার পথে কারো ডাক শুনে বসে পড়লে সময় নষ্ট; একবার বসে পড়লে এক ক্রোশ যাওয়া নষ্ট হয়। |
ডাঙায় বাঘের ভয়, জলেতে কুমীর | উভয়সঙ্কট; সমার্থক বাগধারা- এগুলে রাম পিছুলে রাবণ, শাঁখের করাত, যেতেও কাটে আসতেও কাটে; সাপের ছুঁচো গেলা ইত্যাদি |
ডান হাতখান দিলে বাম হাতখান পাওয়া যায় | হাত বাড়ালেই বন্ধু পাওয়া যায়। |
ডান হাতের ব্যাপার | আহার, খাওয়া। |
ডানপিটের মরণ গাছের আগায় | গাছ থেকে পড়ে হাত পা ভাঙে; অপঘাতে মৃত্যু হয়। |
ডান হাতের কাজ বাম হাত যেন না জানে | কোন গোপন কাজ কেউ যেন না জানে। |
ডানা কাটা পরী | কুদর্শনা নারীর প্রতি বক্রোক্তি। |
ডিম ফোটার আগেই মুরগীর ছানা গোনা | আগাম সুখকল্পনা। |
ডিমের খোলে চেপে সাগরপার করা কঠিন ব্যাপার- ইংরাজী প্রবাদ | অবাস্তব কল্পনা, যা হবার নয়- সমতুল্য-।\কলার ভেলায় সাগরপার, 'শামুকের খোলে জল সেচা' ইত্যাদি। |
ডুবতে কো তিনকে (খড়, ঘাস) কা সহারা- হিন্দি প্রবাদ // ডুবন্ত মানুষ খড়কুটো ধরে বাঁচতে চায় | সঙ্কটকালে পাওয়া সামান্য সাহায্য বিরাট সাহায্য মনে হয়; মরণাপন্ন মানুষের শেষচেষ্টা। |
ডুবে ডুবে খাই পানি, আল্লা জানে আর আমি জানি // ডুবে ডুবে জল খায়, শিবের বাবাও টের না পায় | গোপনে করা কাজ ধরা দুঃসাধ্য ব্যাপার; (উৎস- রোজার দিনে জল খাওয়া নিষিদ্ধ; গাজনের সন্ন্যাসীর জল খাওয়া নিষিদ্ধ)। |
ডুবে ডুবে জল/পানি খাওয়া | গোপনে কাজ করা; লোকচক্ষুর অগোচরে কার্যসিদ্ধি করা। |
ডুবেছি না, ডুবতে আছি, দেখি পাতাল কত দূর? | বিপর্যয় লুকানোর প্রচেষ্ঠা। |
ডুমুরের ফুল, সাপের পা, কল্পনা শুধু কল্পনা | অশ্বডিম্ব, অমাবস্যার চাঁদ, কোকিলের বাসা, ডুমুরের ফুল সাপের পা ইত্যাদি হয় অদৃশ্য নয় অবাস্তব। |
ডেকে ডেকে খনা গান, দোগে ধান ছায় পান- খনা | রৌদ্রপূর্ণ জমিতে ধান এবং ছারাপূর্ণ জমিতে পান চাস করতে হওয়; তাতেই বেশি ফসল পাওয়া যায়। |
ডেকে শাল নেওয়া | শখের বিপদ; ইচ্ছা করে বিপদে পড়া। |
ডোবা দেখলেই ব্যাঙ লাফায় | প্রিয় বস্তু দেখলে সবারই আনন্দ হয়। |
ডোলভরা আশা, কুলোভরা ছাই। | আশার শেষ নেই, নিরাশারও শেষ নেই। |
ডোলী ন কহার, বিবি হৈ তৈয়ার | বধু যাবার জন্য সেজে বসে আচে, অথচ পালকী ও বাহকের দেখা নেই; কাজের যোগাড় নাই, কাজের লোক প্রস্তুত; রাম না হতেই রামায়ণ। |
ঢ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি // ঢাকীর দামে মনসা বিকানো | আসল খরচ থেকে আড়ম্বরের খরচ বেশি; অসার বাহ্যাড়ম্বর করতে গিয়ে আসল জিনিস হারানো। |
ঢাকের বাদ্য থামলে মিষ্টি // ঢাকের বাদ্যি আর ঢেঁকির কচকচি চুপ করলেই ভাল | কর্ণজ্বালা থেকে মুক্তি; বিরক্তিকর একঘেয়েমি থেকে মুক্তি; যা অসহ্য তার ইতি হওয়াই ভালো। |
ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার | শূন্যহাতে বাহাদুরি; অক্ষমের আস্ফালন; নিজের অযোগ্যতাকে কথার মারপ্যাঁচে ঢাকা |
ঢিল মারলে পাটকেল খেতে হয় // ঢিলের বদলে পাটকেল | আঘাতের উত্তরে আরও বড় প্রত্যাঘাত আসে; পরের ক্ষতি করতে চাইলে নিজেরও ক্ষতি হয়। |
ঢেঁকি কেন গাঁ বেড়াক না গড়ে পড়লে হল | অন্য কাজ যা খুশি করুক, আমার কিছু যায় আসে না, আ্রমার কাজটা হলেই হল |
ঢেঁকি ভজে স্বর্গে যাওয়া যায় না | নিস্ফল প্রচেষ্টায় মোক্ষ নেই। |
ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে | অভ্যাস কখনও বদলায় না; অদৃষ্ট সঙ্গেসঙ্গে ফেরে। |
ঢেঁকির কচকচি থামলেই মিষ্টি // ঢেঁকির কচকচি আর ঢাকের বাদ্যি চুপ করলেই ভাল | বিরক্তিকর একঘেয়েমি থেকে মুক্তি। |
ঢেঁকির শব্দ বড় | যার ভিতরে যার কিছুই নেই তার বাজে বেশি; সমতুল্য- 'ফাঁকা কলসি বাজে বেশি'। |
ঢেঁকিশাল দিয়ে কটক যাওয়া | ঘুর/বাঁকাপথে কাজ করা; সহজ কাজ জটিল উপায়ে করা; সমতুল্য '-্অমরকণ্টক হয়ে অমরনাথ যাওয়া', 'কানপুর হয়ে নাগপুর যাওয়া', 'কামাখ্যা হয়ে কাশীধাম যাওয়া' ইত্যাদি |
ঢেঁকিশালে যদি মানিক পাই, তবে কেন পর্বতে যাই | কাছে অভীষ্ট সিদ্ধ হলে দূরে যাওয়া নেই; পরিশ্রমে অনিচ্ছা। |
ঢেউ দেখে নাও ডুবিও না | ইচ্ছা করে ক্ষতি করো না। |
ঢোল কা ভিতর পোল (ফাঁপা) ' | আজকাল বেশিরভাগ লোকের বাইরের আড়ম্বর বেশি; সমতুল্য- বাইরে বাহুয়ানা ভেতরে খেড়', 'ভিতরে ছুঁচোর কেত্তন','বাইরে কোঁচার পত্তন' ইত্যাদি। |
ত[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
তক্রান্তং খলু ভোজনম | ভোজের শেষপাতে ঘোল খাওয়া ভাল। |
তত্র মৌনং হি শোভনম | অজ্ঞানে ভিড়ে মৌন থাকাই শোভন। |
তথাপি কাকো ন চ রাজহংসঃ | স্বর্ণভূষিত হলেও কাক কাকই থাকে রাজহাঁস হয় না। |
তন্নতন্ন | মূল অর্থ- তা নয় তা নয়; আলং- কোন কিছু বাদ নয়া দিয়ে, পুঙ্খানুপুঙ্খ (তন্নতন্ন করে খুঁজেছি কোথাও পাইনি) |
তপ্তজলে ঘর পোড়ে না | জল গরম হলেও স্বাভাবিক গুণ হারায় না; ঠাণ্ডালোক রেগে গেলেও বেশি ক্ষতি করে না; কিংবা সামান্য ভুলে বেশি ক্ষতি হয় না। |
তপ্ত ভাতে ঘি ঢালা | অপকার করার ভান করে উপকার করা। |
তপ্ত ভাতে নুন জোটে না, পান্তা ভাতে ঘি | সামান্য বিষয় জোটে না অসামান্যের দাবী। |
তমসোমা জ্যোতির্গময়, অসদোমা সদগময়, মৃত্যোর্মা অমৃতগময়- উপনিষদ | আমাকে- অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে চল; অসৎপথ থেকে সৎপথে নিয়ে চল; মৃত্যু থেকে অমৃতের দিকে নিয়ে চল। |
তমোগুণে অধোগতি | মোহ থাকলে পতন অনিবার্য। |
তর্কই জ্ঞানের উৎস | বাদ থাকলে প্রতিবাদ হয়; প্রতিবাদ থেকে সম্বাদ হয়। |
তর্কে জেতা নয়, তর্কে না জড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ- আরবী প্রবাদ | বুদ্ধিমানেরা তর্কে জড়ায় না। |
তর্কে তর্ক বাড়ে | তর্কের কোন মীমাংসা নেই |
তলোয়ার যার, দেশ তার- পাঞ্জাবী প্রবাদ | জিস্কি লাঠ উস্কি ভৈঁস; জিস্দা তেগ উস্দা দেগ; জোর যার মুল্লুক তার; লাঠি যাঢ় মাটি তার। |
তস্করস্য কুতো ধর্মো দুর্জনস্য কুতঃ ক্ষমা। বেশ্যানাঞ্চ কুতঃ স্নেহঃ কুতঃ সত্যঞ্চ কামিনাম্॥ (চাণক্য) | চোরের আবার ধর্ম কী? দুষ্টের আবার ক্ষমা কী? গণিকার আবার স্নেহ কী? কামুকের আবার সততা কী? |
তস্মিন্ তুষ্টে জগৎ তুষ্টঃ | ঈশ্বর তুষ্ট থাকলে জগৎ তুষ্ট থাকে। |
তস্য তদেব মধুরং যস্য মনো যত্র সংলগ্নম | যার মন যাতে অনুরক্ত তার কাছে সেটাই মনোহর; যার সাথে যার মজে মন, কিবা হাঁড়ি কিবা ডোম। |
তাঁতী রাগে কাপড় ছেঁড়ে, আপনার ক্ষতি আপনি করে | রাগে অন্ধ হলে বুদ্ধি গলতে শুরু করে; নির্বোধলোক রাগে নিজেরই ক্ষতি করে। |
তাঁতীকুলও গেল, বৈষ্ণবকুলও গেল | দুকূল হারিযে নিরাশ্রয় হল; দু’দিক সামালাতে গিয়ে দুদিকই হারালো; এইকাজ ওইকাজ করতে গিয়ে দুইকাজই নষ্ট হল। |
তাজমহল একদিনে তৈরী হয় নি | অনেক পরিশ্রমে মহান সৃষ্টি তিলেতিলে গড়ে ওঠে। |
তাত সয় তো বাত সয় না | কথা শুনতে নারাজ; বাতাসের গরম সহ্য হয়, কিন্তু কথার গরম সহ্য হয় না; কিংবা গরম সহ্য করা যায় কিন্তু শীত সহ্য করা যায় না। |
তাড়াহুড়োয় সময় নষ্ট | তাড়াআড়ি করলে ভুলভ্রান্তি হয় এবং শেষপর্যন্ত কাজে দেরী হয়। |
তাল, তেঁতুল, মাদার (একপ্রকার টকফল), তিনে দেখায় আঁধার | এই তিন গাছ ভিটায় থাকলে অন্ধকারে ছেয়ে থাকে। |
তাল, তামাক, পাশা তিন কর্মনাশা | এই তিন বিষয় সময় ও কাজ নষ্ট করে। |
তাল বাড়ে ঝোপে খেজুর বাড়ে কোপে (খনা) | তালগাছ না ছাঁটলে গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং ফলন বেশি হয় ; খেজুরগাছ ছাঁটলে গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং ফলন বেশি হয়। |
তালগাছের আড়াই হাত | শেষ ও কঠিন অংশ; বিশেষ কাজের শেষ কঠিন অংশ; কিংবা তালগাছকে একহাত পরিমাণ ধরলে বিশাল উঁচু কিছু। |
তালপাতার ছায়া | শীতলতা দানে অক্ষম; ক্ষণস্থায়ী বিষয়। |
তালপাতার সেপাই | শীর্ণ, কৃশ, শক্তিহীন লোক। |
তালপুকুর নাম, কিন্তু ঘটি ডোবে না | নামডাক আছে, কিন্তু কাজে কিছু না; কপর্দকশূন্য নামডাকওয়ালা লোক। |
তালপুকুরে খাবি খায়, সমুদ্র পার হতে চায় | অক্ষমের আস্ফালনের প্রতি বিদ্রুপোক্তি। |
তালপ্রমাণ বাড়ে, তিলপ্রমাণ কমে | দোষ বা রোগের বৃদ্ধি ও হ্রাসের গতিপ্রকৃতি নির্দেশ করে। |
তালৈয়ের (ভাই/বোনের শ্বশুর) চেয়ে পুতরা ভারি; সমতুল্য- 'বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়', 'সূর্যের চেয়ে বালির তাপ বেশই' ইত্যাদি। | আসলের চেয়ে অনুচরের আস্ফালন বেশি। |
তাস, তামাক, পাশা, এ তিন সর্বনাশা/তাস, দাবা, পাশা, তিন কর্মনাশা | এই তিন জিনিষ অত্যন্ত ক্ষতিকর। |
তিন ইঞ্চির জিভ একজন সাতফুট মানুষকেও কাৎ করতে পারে- চীনা প্রবাদ | অপরিমিত আহার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। |
তিন/ছয় কানে (তিনজনের কানে) গেলে গুপ্তকথা প্রকাশ হয়ে যায় | কথা চালাচালিতে গুপ্তকথা ফাঁস হয়ে যায়। |
তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেছে | বাল্অয, যৌবন ও প্রৌঢ়কাল গিয়ে বৃদ্ধকালে এসে ঠেকেছে; অতিবৃদ্ধ, মৃত্যুকাল আসন্ন। |
তিনজন জানে তো ত্রিশজন জানে | গোপন কথা একটু ব্যক্ত হলেই সকলে জেনে যায়। |
তিনটি জিনিষ বেশিদিন লুকিয়ে থাকে না- চন্দ্র, সূর্য ও সত্য- জাপানী প্রবাদ | এই তিনটি বিষয় বেশিদিন চাপা যায় ্না। |
তিনটি বই একবার পড়ার চেয়ে একটি বই তিনবার পড়া শ্রেয়- আরবী প্রবাদ | বিষয়বস্তু হৃদয়ঙ্গম করতে হলে একটা বই একাধিকবার পড়া উচিৎ। |
তিনদিনের যোগী ভাতকে বলে অন্ন | আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি; জাহির করার ইচ্ছা। |
তিন নকলে আসল খাস্তা | নকলের আধিক্যে আসলকেই নকল বলে ভুল হয়; একটি জিনিষ নকল করতে করতে আসলের আর কিছু থাকে না। |
তিন মাথা যার(অতিবৃদ্ধ লোক) বুদ্ধি নেবে তার | জীবনের অভিজ্ঞতা যার সর্বাধিক তার কাছেই পরামর্শ নেওয়া উচিৎ; বৃদ্ধস্য বচনং গ্রাহ্যং। |
তিষ্ঠত্যেকাং নিশাং চন্দ্রঃ শ্রীমান সম্পূর্ণমণ্ডল | ষোলকলায় পূর্ণ চন্দ্র মাত্র একরাত্রি থাকে; সুখ দীর্ঘকাল স্থায়ী হয় না। |
তীরে এসে তরী ডোবা | শেষ পর্যায়ে কাজ পন্ড হওয়া; সাফল্যের মুখে পতন। |
তুকতাক ছয়মাস, কপালে যা বারোমাস | চেষ্টাচরিত্র করে কিছুদিন সুখভোগ করা যায়; ভাগ্য না থাকলে দুঃখভোগ এড়ানো যায় না। |
তুফানে ছেড়ো না হাল, নৌকা হবে বানচাল | বিপদের সময় ভয় পেতে নেই; শক্ত হাতে হাল ধরতে হয়, নতুবা বিপদের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। |
তুমি অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন- বঙ্কিমচন্দ্র | অসৎ চিরদিন নিন্দিত; বিরুদ্ধ উক্তি- শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ। |
তুমি কার, কে তোমার? | জগৎ মায়াময়, শুধু ছায়ার আসা যাওয়া। |
তুমি কি শান্ত থাকতে পারো তবে তুমি জ্ঞানী, তুমি কি রেগে যাও তবে তোমার মত মূর্খ নেই- আরবী \ | জ্ঞানী লোকেরা ধীরস্থির হয়,মুর্খদের কথায় কথায় মাথা গরম হয়। |
তুমি খাও ঘাটে জল; আমি খাই ভাঁড়ে | এককাঠি বাড়া; টেক্কা মারা; বক্তা বেশি স্বচ্ছল। |
তুমি চল/ফেরো ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায় // তুমি চল/ফেরো পাতায় পাতায় আমি চলি শিরায় শিরায় | এককাঠি বাড়া; টেক্কা মারা; বক্তা বেশি চালাক। |
তুমি চল ভাগ্য তোমার সাথে চলবে | মানুষ নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে। |
তুমি প্রশ্ন কর উত্তর পাবে; তুমি খোঁজ সন্ধান পাবে, তুমি দরজায় কড়া নাড়ো দরজা খুলে যাবে- আরবী প্রবাদ | ক্রিয়ার ফল আছেই; কিছু কর আর কর্মফল ভোগ কর। |
তুমি যতটা মূল্যবান ঠিক ততটা সমালোচনার পাত্র- আরবী প্রবাদ | সমালোচনার ঊর্ধ্বে কেঊ নয়। |
তুমি হৃদয় দিয়ে যেপ্রকার ভাব তোমার প্রকৃতিও সেইপ্রকার হয়- ইহুদী প্রবাদ | প্রকৃতি মানুষকে চেনায়। |
তুলো শুনতে নরম, বুনতে নয় | সরল কাজ সবসময় সহজ হয় না। |
তুষহীন তণ্ডুলের অঙ্কুরোদ্গম হয় না | সহায় ছাড়া কাজ হয় না। |
তৃণবন্মন্যতে জগৎ | অর্থশালীরা জগতকে তৃণের মত জ্ঞান করে। |
তৃণৈগুণত্ব মাপন্নৈর্বদ্ধন্তে মত্তদন্তিনো | যে তৃণ সহজে ছিন্ন হয় সেই তৃণের রজ্জুতেই মত্তহস্তী বাঁধা যায়; একতাই বল। |
তৃষ্ণাবধি কো গতঃ | তৃষ্ণার শেষসীমায় কে পৌঁছাতে পারে? |
তৃষ্ণা এগোয় না জল এগোয়? | অভিলাষের গরজ বেশি, অভলাষিতের নয়; সুতরাং তৃষ্ণাই এগুবে জল নয়; অন্বেষণ না করলে কাম্য বস্তু মুখের কাছে এগিয়ে আসবে না। |
তৃষ্ণাবধিং কো গতঃ | তৃষ্ণার শেষ প্রান্তে কে যেতে পেরেছে? আশার কোন শেষ নাই। |
তৃষ্ণার অন্ত নেই | আশার কোন শেষ নাই; একটা মেটে তো অন্য একটা এসে উপস্থিত হয়। |
তৃষ্ণৈকা তরুণায়তে | সর্বাঙ্গই জীর্ণ হয়ে আসে, কেবল বাসনাই চিরনতুন থাকে। |
তে হি নো দিবসা গতা | আমাদের সুখের দিনগুলি সব চলে গেছে। |
তেজসাং হি ন বয়ঃ সমীক্ষতে | তেজস্বী পুরুষের বয়স বিবেচিত হয় না। |
তেন তক্তেন ভুঞ্জীথা। মা গৃধঃ কস্যস্বিদ্ ধনম্॥ (উপনিষদ) | ত্যাগের মধ্য দিয়ে ভোগ করবে; কারও ধনে লোভ করো না। |
তেল কম ভাজা মচ মচ | আয়োজন কম প্রত্যাশা বেশী। |
তেল, তামাক, ময়দা, যত ডলো/রগরাও ফয়দা | এই তিনটি দ্রব্য ডলাই মলাই করলে ফল ভাল হয়, বেশী উপাকারী হয়। |
তেল দাও, সিঁদুর দাও, ভবি ভোলবার নয় | নাছোড়বান্দা; যতই তাকে খোসামোদ, তোষামোদ করা হোক-না-কেন, যতই তাকে প্রলোভন দেখানো-হোক-না-কেন সে প্রলুব্ধ হওয়ার নয়। |
তেলাপোকা আবার পাখি, ভেরাণ্ডা আবার গাছ | তুচ্ছের প্রতি তাচ্ছিল্য; উভয়ই নগণ্য, পাতে পড়ার মত নয়। |
তেলা মাথায় তেল দেওয়া | যার আছে তাকে আরো দেওয়া; বঞ্চিতকে বাদ দিয়ে সুবিধাপ্রাপ্তকে পুনরায় আনুকুল্য দেখানো। |
তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুখু/শুখনো মাথায় ভাঙ্গো বেল | যার আছে তাকে আরো দেওয়া এবং যার নেই তার অভাব পূরণ দূরে থাক আরো কষ্ট দেওয়া; সবলের উমেদারী করা এবং দুর্বলের ওপর অত্যাচার করা মানুষের সহজাত রোগ; সমতুল্য- যে খেয়েছে সাত বার, তার জন্য ভাত বাড়, যে খায় নি একবার, তার জন্য চাল ঝাড় |
তেলে জলে খাপ/মিশ খায় না | বিষম মিলন স্বাভাবিক নয়। |
তেলেজলেই মানুষের শরীর। | মানুষমাত্রই অনুভূতিপ্রবণ। |
তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা | অতিরিক্ত উত্তেজিত হওয়া। |
তেহি নো দিবসা গতাঃ | আনন্দ ও সুখের দিনগুলি চলে গেছে। |
তোমার পিঠে তখন একটি লোক উঠবে যখন তুমি পিঠ নীচু করবে- আরবী প্রবাদ | দুর্বলতা দেখিও না লোকে পেয়ে বসবে। |
তোমার পীর সিন্নি খেয়েছে | তোমার মনস্কামনা পূর্ণ হয়েছে। |
তোমার ভাবনা অনুসারে তোমার জীবন গড়ে ওঠে- কনফুসিয়াস | ্তুমি যেমন হবে তোমার জীবনও তেমনি হবে। |
তোমার রাগে অন্য পুড়বে না, তুমি নিজে পুড়বে- জাপানী প্রবাদ | রাগে শরীর নষ্ট হয়। |
তোমার সামনে খাড়া ছাগলকে ভয় করো, পিছনে খাড়া ঘোড়াকে ভয় করো, আর চারিদিকে খাড়া বোকাগুলিকে ভয় করো- ইহুদী প্রবাদ | একবার বোকার পাল্লায় পড়লে প্রাণান্তকর অবস্থা হবে। |
তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে | সকলের অগোচরে বৃদ্ধি। |
তোর তেল আঁচলে ধর আমার তেল বোতলে ভর | স্বার্থপরব্যক্তি নিজের স্বার্থ আগে দেখে। |
তোর পায়ে গড়, না তোর কাজের পায়ে গড় | কাজের জন্যই ব্যাক্তিকে খোসামোদ করা হচ্ছে। |
তোর লেগে মরি না, তোর গুণের লেগে মরি | ব্যক্তি নয় ব্যক্তির গুণকে প্রশংসা করা হচ্ছে। |
তোর শিল, তোর নোড়া, তোরই ভাঙি দাঁতের গোড়া | শত্রুর অস্ত্রে শত্রু নিধন; তোমার যুক্তিতে তোমাকেই কাৎ করবো; তোমার পথে চলে তোমাকেই নাশ করবো ইত্যাদি। |
তৈরী খাবার ছেড়ো না // তৈয়ারী খানা ছোড় মৎ | খাবার থালা ছেড়ে উঠা উচিৎ নয়। |
ত্যজ দুর্জন সংসর্গং ভজ সাধুসমাগমম্। কুরু পূণ্যমহোরাত্রং স্মর নিত্যমনিত্যতাম॥ (চাণক্য) | দুর্জন ব্যক্তির সঙ্গ ছাড়ো; সজ্জন ব্যক্তির সঙ্গ ধর; পূণ্যের কাজ কর; সকল নিত্য ও অনিত্য স্মরণ কর। |
ত্যজেদেকং কুলস্যার্থে গ্রামস্যার্থে কুলং ত্যজেৎ। গ্রামং জন পদস্যার্থে আত্মার্থে পৃথিবীন্ত্যজেৎ।। (চাণক্য) | কুল রক্ষার জন্য একজনকে ত্যাগ করা চলে, গ্রাম রক্ষার ন্য কুল ত্যাগ করা চলে, দেশ রক্ষার জন্য একটি গ্রাম ত্যাগ করা চলে আর নিজেকে রক্ষার জন্য (সমগ্র) পৃথিবী ত্যাগ করা চলে। |
ত্রাহি মধুসূদন | বিপদ থেকে বাঁচতে ঈশ্বরের শরণাপন্ন হওয়া |
থ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
থলি ভর্তি হওয়ার আগে মুখ বাঁধো | সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রতি ইঙ্গিত। |
থলির বিড়াল বাইরে এলো | সত্য প্রকাশিত। |
থলির মধ্যে হাতি পোড়া | অসাধ্যসাধনের প্রয়াস। |
থাক মান, যাক প্রাণ | মাথা উঁচু রাখার প্রতিজ্ঞা; ইজ্জৎ সবার আগে। |
থাকে যদি চুড়ো বাঁশি, মিলবে রাধা হেন কত দাসী | কিছু পেতে হলে কিছু থাকতে হয়; গুণ থাকলে সব কার্যসিদ্ধি হয়। |
থাকরে কুকুর আমার পাশে, ভাত দেবো তোরে ভাদ্রমাসে | অনির্দিষ্ট কালের জন্য কাউকে আশা দিয়ে রাখা। |
থাকলে তালৈয়ের বাপের শ্রাদ্ধ হয়, না থাকলে নিজের বাপের শ্রাদ্ধ হয় না | টাকা থাকলে ইচ্ছামত নানাভাবে খরচ করা যায়; টাকা না থাকলে কিছুই করা যায় না। |
থাকলে সোনার মান হয় না, হারালেই সোনার মান | সহজলভ্যের কদর নেই। |
থিয়ে তল যাবে তবু নুয়ে ভব দেবে না | অবসন্ন হবে তবু হীনতা স্বীকার করবে না; ভাঙবে তবু মচকাবে না। |
থুতু দিয়ে ছাতু গোলা/মলা | অসম্ভব কাজ করার চেষ্টা। |
থোঁতা মুখ ভোঁতা হওয়া | উপযুক্ত শাস্তি পাওয়া; দর্পচূর্ণ হওয়া; বড় মুখ ছোট হওয়া। |
থোড়-বড়ি-খাড়া, খাড়া-বড়ি-থোড় | বৈচিত্রহীন একঘেয়ে ভাব। |
দ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
দই খাবে মেধো, কড়ি/দাম দেবে সেধো | চরম বিশৃঙ্খলা; একজনের পরিশ্রমের ফল অন্যে ভোগ করে। |
দই, দুধ করব ভোগ, ওষুধ খেয়ে সারব রোগ | সুখ, দুখ একসাথে নিয়েই চলার পক্ষে ওকালতি। |
দক্ষিণদুয়ারি ঘরের রাজা পূর্বদুয়ারি তার প্রজা;পশ্চিম দুয়ারির খাজনা নাই উত্তরদুয়ারির মুখে ছাই (খনা) | দক্ষিণদুয়ারি ঘর সর্বোত্তম; পূর্বদুয়ারি ঘর বেশ ভাল; পশ্চিমদুয়ারি ঘর মন্দের ভাল; উত্তরদুয়ারি ঘর ছ্যাঃ ছ্যাঃ। |
দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়- ইংরাজী প্রবাদ | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়', 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়', 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে', 'নেড়া বেলতলায় একবার' ইত্যাদি |
দণ্ডেন গোগর্দভৌ | দণ্ডের আঘাতে গরু এবং গাধাকে শাসন করা যায়। |
দধির অগ্র ঘোলের শেষ | খেতে অতি সুস্বাদু হয়। |
দয়া করে দেয় নূন, ভাত মারে দশগুণ | একটু সুখ পেলে আরও সুখ পেতে চায়; খেতে পেলে শুতে চায়। |
দয়ার পর ধর্ম নাই, হিংসার পর পাপ নাই | অর্থ স্পষ্ট; দয়া পরমো ধর্ম। |
দরকার পড়লে খোঁড়াও লাফায় | প্রয়োজন হলে অকর্মাও কাজে ঝাঁপায়; গরজ বড় বালাই। |
দরজা খোলা পেলে সাধুও চোর হয় | প্রলোভন এড়ানো দুস্কর; সাধুরাও রিপুর অধীন। |
দরিদ্র খোঁজে অন্ন, ধনী খোঁজে ক্ষুধা- হিন্দি প্রবাদ | অভাববোধের কি বৈচিত্র! সম্পদ বণ্টনের বৈষম্যের প্রতি তীব্র বক্রোক্তি। |
দরিদ্রদোষে গুণরাশি নাশে | দারিদ্রের কারণে দরিদ্রের গুণরাশি স্ফুরিত হয় না; অভাবের তাড়নায় তার সব গুণ একে একে নষ্ট হয়। |
দরিদ্রদোষেণ করোতি পাপম | দারিদ্রের কারণে লোকে পাপ কাজ করে থাকে। |
দর্দ্দূরা যত্র বক্তারস্তত্র মৌনং হি শোভনম | ভেকেরা যেখানে মকমক করে অর্থাৎ মূর্খেরা যেখানে কথা বলে সেখান চুপ করে থাকাই শোভন। |
দর্পণে মুখ দেখা | অবিকল প্রতিবিম্ব; লোকের সাথে যেমন ব্যবহার করবে তেমন ব্যবহার ফেরৎ পাবে; ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়। |
দল(জলজ তৃণস্তূপ) ভাঙলে যে, কৈ খাবে সে | ন্যায্যের অধিকার; যে পরিশ্রম করেছে সে ফলভোগ করবে। |
দশচক্রে ভগবান ভুত | অনেক চেষ্টায় সত্যকে মিথ্যা বানানো; নানা চক্রান্তে সত্য মিথ্যায় পরিণত হয়; কারো বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে তাকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়; ভগবান ভূতানাং গতঃ। |
দশজনের ঘর খোদায় রক্ষা কর | সংখ্যাধিক্যে বিশৃঙ্খলা উৎপন্ন হয়। |
দশদিন চোরের একদিন গৃহীর/সাধুর | কুকর্মের ফল একদিন ভুগতেই হয়। |
দশপুত্রসম কন্যা যদি সুপাত্রে পড়ে | সুপাত্রে পড়া কন্যা একাই দশ পুত্রের সমান কাজ করে। |
দশমুখে ধর্ম | দশজন যা উচিতকর্ম বলে মানে সেটাই ধর্ম। |
দশ যেখানে ধর্ম সেখানে | দশজন মিলে কাজ করলে সেটা অন্যায় হয় না। |
দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ | সকলে মিলেমিশে কাজ করে ব্যর্থ হলেও তাতে লজ্জা নেই; দশজনে পরামর্শমত কাজ করা উচিৎ; একতাই বল। |
দশে লাগে ভূত ভাগে | দশজনে মিলে কাজ করলে অতি দুঃসাধ্য কাজও সুসাধ্য মনে হয়। |
দশে যারে বলে ছি, তার প্রাণে কাজ কি? | সকলে যার নিন্দা করে তার জীবনধারণের মূল্য নেই। |
দশের মুখে জয়, দশের মুখে ক্ষয় | দশজন প্রশংসা করলে নিন্দিতও যশস্বী হয়; আবার দশজন নিন্দা করলে গুণীও নিন্দিত হয়; ভালো না হলেও দশজনের কথা মেনে চলা উচিৎ। |
দশের লড়ি/ লাঠি একের বোঝা | কোনো কাজ একার পক্ষে করা কঠিন, কিন্তু দশজনের পক্ষে খুব সহজ; দশজনে মিলে কোন শ্রমসাধ্য কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়; সমতুল্য- 'ভাগাভাগি করলে সমস্যা অর্ধেক হয়'। |
দস্তানা পড়া বিড়াল ইঁদুর ধরতে পারে না | ফিটফাট কাপুড়েবাবু কাজের লোক হয় না। |
দাঁড়ালে পোয়া, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ? | পথ চলতে চলতে দাঁড়িয়ে গেলে কিছুটা এবং বসে পড়লে বেশ কিছুটা পথের ফেরে পড়ে সময় নষ্ট হয়; কাজ একাগ্র মনেই করা উচিৎ। |
দাঁড়িকে মাঝি করা, মরা গাঙে ডুবে মরা | অনভ্যস্ত লোককে কাজের দায়িত্ব দিলে সে কাজ পণ্ড হয়। |
দাঁত গেল তো আঁত গেল | ফোকলা দাঁতে উদরপূর্তির সুখ নাই। |
দাঁত জিহবা সম্পর্ক | মন্দ-ভালোর সম্পর্ক; দাঁত অসুস্থ হলে জিহবা পাশে দাঁড়ায়; দাঁত কিন্তু সুযোগ পেলে জিহবায় কামড় মারে। |
দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বোঝে না | সময়ে সুযোগের সদব্যবহার করে না। |
দাঁত নড়লে পড়াই ভালো | কারো সাথে মতদ্বৈধতা হলে তার থেকে দূরে সরে থাকা ভালো। |
দাঁতে কুটো করা/কাটা | অতি বিনীত হওয়া; হীনভাবে বশ্যতা স্বীকার করা। |
দাঁতে দড়ি দিয়ে পড়ে থাকা | অনাহারে পড়ে থাকা; অনাহারে পড়ে থাকলে দাঁত নাড়াতে হয় না। |
দা-কুমড়া সম্পর্ক | ছেদ্য-ছেদক সম্পর্ক, ভীষণ শত্রুতা। |
দাওয়া মারা যতদিন, বাপ খুড়ো ততদিন | এমন অনেক লোক আছে, যারা সুবিধা পেলেই খাতির করে; সুদিনের বন্ধু। |
দাতাকর্ণ | সু-অর্থে- অতি দানশীল ব্যক্তি; কু-অর্থে- মাত্রাতিরিক্ত দানশীল ব্যক্তি- ব্যঙ্গোক্তি। |
দাতা দান করে কৃপণের মন পোড়ে // দাতা দান দেয় ভাণ্ডারীকা পেট পিরায়-হিন্দি প্রবাদ | বদান্যদাতা দান করে, অর্থের অপচয় দেখে সঙ্কীর্ণমনা তাতে কষ্ট পায় এবং বাধা দিতে চেষ্টা করে। |
দাদা কানা, ভাই চোখে দেখে না | দু'জনেই সমান অপদার্থ। |
দাদা বলেছে চষতে, তাই চষতেই আছি | কারো নির্দেশে ভালমন্দ বিচার না করে খালি কাজ করে যাওয়া। |
দাদা হজম | গাঁজাখুরি/খোশগল্প; (উৎস- পাতিলেবুর রস খেলে বদহজম দূর হয়; এক গাঁজাখোরের কথা অনুসারে তার দাদা পাতিলেবুর রস খেয়ে রাত্রে শুতে যায়; সকাল বেলা দেখা যায় বিছানায় জামাকাপড় পড়ে আছে, দাদা নেই; সে বলে- দাদা হজম হয়ে গেছে। |
দাদারও দাদা আছে | কেউই অজেয় নয়; তিমি থাকলে তিমিঙ্গিল আছে; তিমিঙ্গিল থাকলে তিমিঙ্গিলগিল আছে। |
দানে বিদ্যা বর্ধিত হয়, দানে ধন ক্ষয় হয় | অর্থ স্পষ্ট; জ্ঞানের তুলনা হয় না। |
দাম্ভিক আর মিথ্যাবাদী পরস্পর তুতোভাই- চীনা প্রবাদ | বদগুণের আত্মীয়তা। |
দায় মোদ্দায় রাজি, কি করবেন কাজী | বাদী বিবাদী এক হয়ে গেলে বিচারকের আর কছু করার থাকে না। |
দা’য়ে কাটা কুমড়া যেন | বলিপ্রদত্ত কুমড়া; এই কুমড়ায় রন্ধন হয় না; অকর্মণ্য ব্যক্তি। |
দা’য়ে বালি, কুড়ুলে শিল, ভালমানুষকে ভালকথা, বজ্জাতকে কিল | শান দিতে দা'এর চাই বালি, কুড়ালের চাই শিল; ভালমানুষ মিষ্টি কথায় তৃপ্ত হয়, আর বজ্জাতকে উত্তমমধ্যম দিলে সে শান্ত হয়;যার যেটা প্রয়োজন তাকে সেটাই দিতে হবে। |
দায়ে পড়লে বাপ বলে | বিপদে পড়লে পায়ে পড়ে; বিপদ কেটে গেলেই আর মনে রাখে না; ঠেকায় পড়লে ঠাকুরদাদি। |
দায়ে পড়ে দা‘ঠাকুর // দায়ে পড়লে ল্যাংড়াও লাফায় // দায়ে পড়লে বামুন শালগ্রামের পৈতা/সোনা বেচেও খায় | দায়ে পড়লে ন্যায়-অন্যায় বোধ থাকে না; গরজ বড় বালাই। |
দারা পুত্র পরিবার কেউ নয় আপনার | সংসার মায়াময়; এই অনিত্য সংসারে কেউ কারো সঙ্গে আসেনি কারো সঙ্গে যাবে না। |
দারিদ্র্যদোষো গুণরাশিনাশী | দারিদ্রদোষে গুণীর সব গুণ নষ্ট হয়। |
দারুভূত জগন্নাথ/নারায়ণ/মুরারি | জগন্মনাথ নানাকারণে মনোকষ্টে কাষ্ঠরূপ হয়েছেন; সংসারের নানাচিন্তায় মানুষ কাষ্ঠবৎ হয়। |
দাল মে কুছ কালা হৈ- হিন্দি প্রবাদ | ভিতরে নিশ্চই কিছু গোলমান আছে; অজ্ঞাতসারে কাজে কিছু ভুল থেকে গেছে; সন্দেহজনক ঘটনা ইত্যাদি। |
দিও কিঞ্চিৎ না কোরো বঞ্চিৎ | যাচককে কিছু দিও, একেবারে বঞ্চিৎ করো না। |
দিন কাটে তো রাত কাটে না | অসহ্য মানসিক যন্ত্রণার অনুভূতি; রাতের একাকীত্বে অনুভূতিটা আরো তীব্র হয়;মুহূর্তগুলি যেন কাটতে চায় না। |
দিনদুপুরে ডাকাতি/দিনে ডাকাতি | জ্ঞাতসারে, লোকচক্ষুর সামনে, প্রকাশ্যদিবালোকে অপরের সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। |
দিন যাবে, রবে না। | সুখেই হোক আর দুঃখেই হোক, সম্পদেই হোক আর বিপদেই হোক দিনে বয়ে যায়, কারো জন্য রয় না। |
দিন যায়, কথা থাকে। | মহার্ঘ-বচনের আবেদন চিরকালীন; কাউকে মর্মভেদী কথা বললে সেও চিরকাল সেই কথা মনে রাখে। |
দিন যায় তো ক্ষণ যায় না | অপার মানসিক যন্ত্রণার অভিব্যক্তি; ভাবী কোন বিষয়ের জন্য উৎকণ্ঠা থাকলে দিনগুলি কোনমতে কেটে যায়, কিন্তু নির্দিষ্ট উৎকণ্ঠার মুহূর্ত যত এদিয়ে আসে সেই মুহূর্তগুলি যেন কাটতে চায় না। |
দিনকে রাত করা, রাতকে দিন করা | অত্যন্ত বাড়িয়ে বলা; মাত্রাহীনভাবে মিথ্যাকথা বলা। |
দিনে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ বস; রাতে খাওয়ার পর অনেক্ষণ হাঁটো | স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বৈদ্যের বিধান। |
দিনে বাতি যার ঘরে, তার ভিটায় ঘুঘু চরে | অবিবেচকের মত কাজ করলে দুর্দশায় পড়তে হয়। |
দিনে রোদ রাতে জল দিন দিন বাড়ে ঘানের বোল- খনা | দিনে রোদ এবং রাতে বৃষ্টি হলে ধানগাছ খুব সবল হওয়। |
দিনের পরিকল্পনা সকালেই হয়- চীনা প্রবাদ | প্রতিটি সুষ্টকাজের প্রাক-পরিকল্পনা থাকে। |
দিল্লিকা লাড্ডু যো খায়া সো পস্তায়া, যো ন-খায়া সো ভি পস্তায়া- হিন্দি প্রবাদ | এমন আজব মিঠাই যে, যে খেয়েছে সেই মজেছে; যে খায় নি সেও মজেছে; আসলে মুঘল আমলে দিল্লীর জানানা বাজারে বিক্রীত সুন্দরী রমণীদের দিল্লিকা লাড্ডু বলা হ'ত; তার থেকে প্রবাদটির উতপত্তি হয়েছে। |
দীয়তাং ভুজ্যতাম | দিতে থাকো; খেতে থাকো; বিরাট আয়োজনের বাড়ীতে ভূরিভোজনসম্পর্কিত উক্তি। |
দীওয়ারো কে ভি কান হোতেঁ হৈ-হিন্দি প্রবাদ | গোপন কথা গোপন থাকে না; সমতূল্য- দেওয়ালেরও কান আছে'। |
দীর্ঘরাত্রিও অবসান আছে | কোন দুঃখই চিরস্থায়ী নয়; মেঘ দেখে তুই করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। |
দীর্ঘসূত্রতা সময়ের তস্কর | দীর্ঘসূত্রতার কারণে অযথা সময় নষ্ট হয়। |
দুই অসতের মধ্যে একজনকে পছন্দ করা সঠিক নির্বাচন নয় (বিরুদ্ধ উক্তি আছে) | অসৎসঙ্গ সর্বোতভাবে পরিত্যজ্য। |
দুই অসতের মধ্যে কম ক্ষতিকরকে পছন্দ কর (বিরুদ্ধ উক্তি) | নির্বাচন যদি করতেই হয় তবে কম ক্ষতিকরই গ্রহণযোগ্য। |
দুই হাঁড়ি একত্র থাকলেই ঠোকাঠুকি হবে | দ্বন্দ্ব এড়ানো যায় না; ভাইভাই ঠাঁইঠাঁই। |
দুই নৌকায় পা দেওয়া | দুকুল রাখার চেষ্টা, যা কখনো সম্ভব হয় না, পরন্তু বিপদে পড়তে হয়। |
‘দুইয়ে দুইয়ে চার’-এর মতই সহজ | অতি সহজ ও সরল। |
দুঃখবিনা সুখ হয় না | সুখ-দুলখ অবমিশ্র হয় না; সুখের আড়ালে দুঃখ থাকে। |
দুঃখযন্ত্রণা থেকে জীবনের প্রকৃত শিক্ষা পাওয়া যায় | জীবানযন্ত্রণা আমাদের শেখায়- কিভাবে বাঁচতে হবে। |
দুঃখী যায় সুখীর কাছে, দুঃখ যায় পাছে পাছে | দুঃখ দুঃখীকে ছাড়ে না; দুঃখীর অদৃষ্টে কোথাও সুখ লেখা নেই। |
দুঃখে অনুদ্বিগমনা সুখেচ বিগতস্পৃহ (গীতা) | দুঃখে অনুদ্বিগ্ন এবং সুখে স্পৃহাহীন থাকা। |
দুঃখের অংশীদার থাকলে মন হালকা হয় | দুঃখভার কমাতে পরস্পরের দুঃখের অংশভাগী হওয়া উচিৎ। |
দুঃখের দিনগুলি খুব লম্বা হয় | দুঃখের দিনগুলি যেন কাটতে চায় না; দুঃখ উপভোগের নয়। |
দুঃখের পর সুখ আসে | দুঃখ-কষ্ট, বিপদাপদ, পাওয়া না-পাওয়া, সফলতা-ব্যর্থতা নিয়েই জীবন; সমতুল্য- 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ'; 'মেঘ দেখে তুই করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে' ইত্যাদি। |
দুঃসংবাদ বাতাসের আগে ছোটে // দুঃসংবাদের ডানা আছে | দুঃসংবাদ দ্রুত ছড়্যয়। |
দুটিগাছ একসাথে থাকে, দুটি পাহাড় একসাথে থাকে না // দুটি বটগাছ পাশাপাশি থাকে না লাখো ঘাস পাশাপাশি থাকে | আমিত্ব/আত্মম্ভরিতা, অন্তরঙ্গতা/সমপ্রীতির পক্ষে বাধাস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। |
দু’টাকা ধার দেওয়া থেকে একটাকা দান করা ভাল | ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় বসে থাকতে হয় না; ফিরে না পেলে মন খারাপ; ঋণ দেওয়া ও নেওয়া, দুইই পাপ। |
দুধ কলা দাও যত, সাপের বিষ বাড়ে তত // দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষা | সযত্নে দুশমনকে প্রতিপালন করা; হিংসককে যতই আদর কর-না-কেন সে তোমার অনিষ্ট করবেই। |
দুধ রাখলেই পঞ্চামৃত | দুধ থেকে ক্ষীর, ঘি, দই, ননী, মাখন ইত্যাদি পাওয়া যায়; লোককে ভালবাসলে তার কাছ থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়। |
দুধকা জ্বলা মাঠা ফুঁক্ ফুঁক্ পিতা হৈ- হিন্দি প্রবাদ | গরম দুধে যার মুখ পুড়েছে সে ফুঁ দিয়ে ঘোল খায়; অতীত অভিজ্ঞতা থেকে সতর্কতা। |
দুধকে দুধ জলকে জল // দুধকা দুধ পানিকা পানি- হিন্দি প্রবাদ১ | সব ঠিকঠিক নির্ণয় করা |
দুধকে দুধ জলকে জল // দুধকা দুধ পানিকা পানি- হিন্দি প্রবাদ২ | জল মেশানো দুধ দুধেরও কাজ করে, আবার জলেরও কাজ করে; কপট লোক যে যেমন তার সাথে তেমন ব্যবহার করে। |
দুধে ভিজিয়ে রাখলেও নিম কখনও মিষ্টি হয় না | কালো কখনো সাদা হয় না; মন্দ কখনো ভালো হয় না |
দুধের মাছি | সুসময়ের বন্ধু; সুদিনে এসে আত্মীয়তা করে এবং দুঃখের দিনে দূরে সরে যায়। |
দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো | উৎকৃষ্টের পরিবর্তে নিকৃষ্ট দ্রব্যে সন্তুষ্ট থাকা। |
দুধের স্বাদ কি ঘোলে মেটে? | দুধ থেকে ঘোল হলেও ঘোলে দুধের গুণ থাকে না; নকল কখনো আসল হয় না। |
দুনিয়াদারি মুসাফিরি, সিরিফ আনাগোনা/যানা | জীবনমৃত্যুর আসা-যাওয়া খেলা। |
দুরারোহপরিভ্রংশবিনিপাতো হি দারুণ | যাহাতে আরোহণ করা দুস্কর তাহা হইতে ভ্রষ্ট হইয়া পতন নিদারুণ হয়। |
দুর্গা বলে ঝুলে পড় | ভগবানে বিশ্বাস রেখে সাহস করে কাজে নেমে পড়। |
দুর্জনঃ পরিহর্তব্যো বিদ্যয়ালংকৃতোহপি সন্। মণিনা ভূষিতঃ সর্পঃ কিমসৌ ন ভয়ঙ্করঃ॥ (চাণক্য) | দুর্জন ব্যক্তি বিদ্যায় বিভূষিত হলেও তাকে ত্যাগ করা উচিত। কোনো সাপ মণিতে ভূষিত হলেও তা ভয়ঙ্করই থাকে- বিদ্বান দুর্জনের স্বরূপ। |
দুর্জনঃ প্রিয়বাদী চ বৈতদ্বিশ্বাসকারণম্। মধু তিষ্ঠতি জিহ্বাগ্রে হৃদয়ে তু হলাহলম্॥ (চাণক্য) | দুর্জন ব্যক্তি মিষ্টভাষী হলেও তা বিশ্বাসের ব্যাপার নয়। কেননা, তার জিভের ডগায় থাকে মধু- আর অন্তরে থাকে তীব্র বিষ-দুর্জনের স্বরূপ। |
দুর্জনেরে পরহরি, দূরে থেকে নমঃ করি | দুর্জন ব্যক্তিকে সবসময় ত্যাগ করা উচিৎ; দুর্জনঃ পরিহর্তব্যঃ। |
দুর্বলস্য বলং রাজা বালানাং রোদনং বলম্। বলং মূর্খস্য মৌনিত্বং চৌরাণামনৃতং বলম্॥ (চাণক্য) | দুর্বলের রাজাই বল, শিশুর রোদনই বল, মূর্খের নীরব থাকাই বল আর চোরের মিথ্যাশ্রয়ই বল। (কিসে কাহার বল) |
দুর্ভাগ্য অনেক স্থলে সৌভাগ্যের কারণ হয় // দুর্ভাগ্য অনেক স্থলে সৌভাগ্যের মূল | অহিতে বিপরীত বা শাপে বর হয়। |
দুর্লভং প্রাকৃতং বাক্যং দুর্লভঃ ক্ষেমকৃৎ সুতঃ। দুর্লভা সদৃশী ভার্যা দুর্লভঃ স্বজনঃ প্রিয়ঃ॥ (চাণক্য) | যথার্থ বাক্য দুর্লভ, সুখকর পুত্র দুর্লভ, সমানগুণসম্পন্না স্ত্রী দুর্লভ, মঙ্গলকারী আত্মীয়স্বজন দুর্লভ। |
দুশমনকে উঁচী পিড়িয়া- হিন্দি প্রবাদ | আত্ম রক্ষার্থে শত্রুকে সর্বদা উচ্চস্থান দেওয়া প্রয়োজন। |
দুশ্চিন্তা ঝামেলায় না ফেললে দুশ্চিন্তার পিছু নিও না | অনাবশ্যক দুশ্চিন্তা করা নেই; চিতায় পোড়ে মড়া; চিন্তায় পোড়ে জ্যান্ত। |
দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল | দুষ্ট সন্তান থাকার থেকে না থাকা ভাল। |
দুষ্টা ভার্যা, শঠং মিত্রং ভৃত্যশ্চোত্তরদায়কঃ। সসর্পে চ গৃহে বাসো মৃত্যুরেব ন সংশয়ঃ॥ (চাণক) | যাঁর স্ত্রী দুশ্চরিত্রা, বন্ধু প্রতারক, ভৃত্য মুখে মুখে উত্তর করে এবং যিনি সর্পযুক্ত গৃহে বাস করেন, তাঁর মৃত্যু অবধারিত, এ ব্যাপারে সংশয় নেই- বিভিন্ন দুষ্ট প্রকৃতির লোকের সাথে সম্পর্ক নয়া রাখার প্রতি উপদেশ। |
দুষ্টের আঠারোগাছি পথ | দুষ্ট লোকেরা নানা ছলছুতো জানে। |
দূর কা ঢোল সুহাবনে- হিন্দি প্রবাদ | দূরের জিনিষ সব সুন্দর মনে হয়। |
দূর সভা নিকট জল; নিকট সভা দূর জল- খনা | চন্দ্রসভা দূরে থাকলে আশু বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। |
দূরতঃ শোভতে মূর্খো লম্বশাটপটাবৃতঃ। তাবৎ শোভতে মূর্খো যাবৎ কিঞ্চিন্ন ভাষতে॥ (চাণক্য) | দীর্ঘ পোশাকপরিচ্ছদভূষিত মূর্খ দূরে শোভা পাচ্ছে; ততক্ষণ সে শোভা পায়, যতক্ষণ না সে কথা বলে- মুর্খের স্বরূপ। |
দূরত্বের মাপকাঠিতে ঘোড়ার শক্তিমত্তা যাচাই হয়; সময়ের মাপকাঠিতে ব্যক্তির নৈতিক চরিত্র যাচাই হয়- চীনা প্রবাদ | বিষয়ভেদে বিচারের মাপকাঠি বদলায়। |
দুরধীতা বিষষং বিদ্যা অজীর্ণে ভোজনং বিষম্। বিষষং গোষ্ঠী দরিদ্রস্য বৃদ্ধস্য তরুণী বিষম্।। (চাণক্য) | যে বিদ্যার যথার্থ তাৎপর্য গৃহীত হয়নি- সে বিদ্যা বিষতুল্য, হজমের গণ্ডগোলে আহার বিষতুল্য, দরিদ্রের বহু সন্তান এবং আত্মীয়স্বজন থাকা বিষতুল্য, বৃদ্ধ লোকের তরুণী স্ত্রী বিষতুল্য। |
দুর সভা নিকট জল, নিকট সভা রসাতল- খনা | চাঁদের সভা দূরে বসলে শীঘ্রই বৃষ্টি হবে জানবে; অপরপক্ষে চাঁদের সভা কাছে বসলে বৃষ্টি হবে না জানবে। |
দূরের জিনিস দেখতে ভাল/দূরের কেশ ঘন দেখায় | দূর থেকে দেখলে পাতলা চুলকেও ঘন মনে হয়; যাকে আমি দূর থেকে চিনি বা জানি সে মন্দ হলেও ভদ্রলোক মনে হয়। |
দূর্বাবনে খটাশই বাঘ | মুর্খের দলে অল্পজ্ঞানী গুরুত্ব পায়; সমতুল্য- আদাড়বনে শিয়াল রাজা', 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা', 'বৃক্ষহীন দেশে এড়েণ্ডাই বৃক্ষ', 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল' ইত্যাদি। |
দেওয়ালের লিখন না যায় খণ্ডন | ভবিষ্যৎ পতনের আভাস; ভাগ্যে যে লেখা আছে তা ঘটবেই। |
দেওয়ালেরও কান আছে | গোপন রাখার শতচেষ্টা হলেও কোন কিছু গোপন থাকে না। |
দেখ্ তোর, না দেখ্ মোর | ধান্ধাবাজি; নজরে না থাকলেই পরের দ্রব্য সবাই আত্মসাৎ করে। |
দেখছি কত দেখব আর, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার | অযোগ্যের হাতে উৎকৃষ্ট দ্রব্য দেখে খেদোক্তি। |
দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা- বাউলগীতি | প্রকৃতপক্ষে সুন্দর" মানুষদের একটা আলাদা জগত |
দেখবো কত কালে কালে গোঁফ রেখেছে তোবড়া গালে | অসঙ্গত আচরণ বা বিসদৃশ রুপচর্চার প্রতি বিদ্রুপোক্তি। |
দেখেশুনে আক্কেল গুড়ুম | অসম্ভব ঘটনা দেখে হতভম্ব। |
দেখে শেখে আর এক ঠেকে শেখে | বুদ্ধিমান ঘটনা দেখে তার থেকে শিক্ষা নেয়; নির্বুদ্ধি ঘটনার ফেরে পড়ে তার থেকে শিক্ষা নেয়। |
দেদোর(=দাদ রোগাক্রান্ত) মর্ম দেদোয় জানে | একমাত্র ভুক্তভোগীরাই ব্যথার মর্ম বোঝে; কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে? |
দেনার চেয়ে পাপ নেই | অর্থ স্পষ্ট। |
দেবতার বেলা লীলাখেলা, পাপ লিখেছে মানুষের বেলা। | দেবতাদের কেচ্ছা বলে শেষ করা যায় না; সেগুলি লীলা বলে বর্ণিত হয়; দেবতাদের মত ক্ষমতাশালীরাও অনেক পাপ করে শেষপর্যন্ত পার পেয়ে যায়। |
দেবা ন জানন্তি কুতঃ মনুষ্যাঃ | দেবতারাই যখন জানেন না তখন মানুষ কোথায় লাগে? |
দেবালয়ের পিছনেই শয়তানের আস্তানা | আলো ও অন্ধকার, ভালো ও মন্দ পাশাপাশি থাকে। |
দেবালয়ের যত কাছে দেবতা থেকে তত দূরে। | আচার সর্বস্বতার প্রতি ইঙ্গিত; আচার সর্বস্বতায় নিষ্টাভক্তির ছোঁয়া থাকে না। |
দেরি হলেও সংশোধনের সময় থাকে। | সংশোধনের কোন সময়সীমা নেই। |
দেশগুণে বেশ /দেশ বুঝে বেশ, জমি বুঝে চাষ | দেশের প্রথা অনুযায়ী পোশাক পরতে হয়, জমির অবস্থা বুঝে চাষবাস করতে হয়; যদি দেশে প্রচলিত হয় তবে অনেক নিন্দিত কাজও প্রশংসিত হয়; সমতুল্য- যস্মিন দেশে যদাচারঃ। |
দেশ দেশে কলত্রাণি দেশে দেশে চ বান্ধবাঃ। তন্তু দেশং ন পশ্যামি যত্র ভ্রাতা সহোদরঃ।। (রামায়ণ) | দেশেদেশে পত্নী ও বন্ধু মেলে, কিন্তু এমন দেশ নেই যেখানে সহোদর ভ্রাতা পাওয়া যায়। |
দেহি দেহি পুনঃপুনঃ | আছে কি নেই জানে না কেবল বলে- দাও দাও। |
দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ জন্মায় | কুবংশে সুসন্তান জন্মে। |
দৈব ও আকস্মিক ঘটনা অজ্ঞানের উক্তি | কোন ঘটনাই আকস্মিক নয়; প্রতিটি কার্যের পিছনে কারণ থাকে। |
দৈবজ্ঞ যদি ঠিক তবে মাগে কেন ভিখ? | দৈবজ্ঞ যদি ঠিক গণনা করতেই পারে তবে সে ভিক্ষা কেন চায়? আসলে দৈবটৈব বলে কিছু নেই। |
দৈবি বিচিত্রা গতি | দৈবের গতি অতি বিচিত্র। |
দৈবেন দেয়মিতি কাপুরুষা বদন্তি | ভাগ্যে থাকলে পাব- এ কথা শুধু কাপরুষেরাই বলে। |
দোদেল বান্দা কল্মা চোর, না পায় ভেস্তেহ্ না পায় গোর | দু নৌকায় পা দিয়ে চলা সংশয়ীরা স্বর্গও পায় না, গোরও পায় না; এদের দুকুল যায়। |
দোয়া গাইয়ের চাঁট সই | যে গরু দুধ দেয় তার লাথি সহ্য করতেই হয়; গরজ বড় বালাই। |
দোষা বাচ্যা গুরুরোপি | গুরুরও যদি কোন দোষ থাকে তবে তা ব্যক্ত করবে। |
দোষ স্বীকার করলে অর্ধেক দোষস্খলন হয় | দোষ স্বীকার করলে আত্মশুদ্ধি হয়; আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দোষ আংশিক স্খলন হয়। |
দৌড় ছাড়া হাঁটা নাই, বাড়ী যাইয়া দেখে কাম নাই | কোন কাজ না থাকলেও অযথা কাজের জন্য দৌড়ঝাঁপ; লোক দেখানো ব্যস্ততা। |
দ্বাদশ অঙ্গুলি কাঠি, সূর্যমন্ডলে দিয়ে দিঠি; রবি কুড়ি সোমে ষোল, পঞ্চদশ মঙ্গলে ভাল; বুধে এগার, বৃহস্পতি বারো, শুক্র চৌদ্দ, শনি তেরো- খনা | ফাঁকা জায়গায় যেখানে সূর্যকিরণ পড়ে সেখানে বারো আঙ্গুল মাপের একটা কাঠি পুতে দেখতে হবে রোদে কতটা ছায়া পড়েছে। কুড়ি আঙ্গুল হলে রবিবারে, পনেরো আঙ্গুল হলে মঙ্গলবারে, এগার আঙ্গুল হলে বুধবারে, বারো আঙ্গুল হলে বৃহস্পতিবারে, চৌদ্দ আঙ্গুল হলে শুক্রবারে, তের আঙ্গুল হলে শনিবারে যাত্রা করলে ভাল হয়। (যাত্রার শুভক্ষণ) |
দ্বিধায় দ্বিধা বাড়ে | দ্বিধায় পড়লে পরপর ভুল পদক্ষেপ হয়; |
দ্রব্যং মূল্যেণ শুদ্ধতি | মূল্যপ্রদান করলে দ্রব্য শুদ্ধ হয়। |
ধ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ধন, জন, পরিবার, কেউ নয় আপনার | আত্মা ছাড়া আত্মর আপন কেউ নয়; কেউ সঙ্গে আসে নি, কেউ সঙ্গে যাবেও না। |
ধন, জন, যৌবন- জোয়ারের জল কতক্ষণ | অর্থ, আত্মীয় ও যৌবন জোয়ারের জলের মতই ক্ষণস্থায়ী। |
ধন থাকলেই সিঁধের ভয় | অর্থ থাকলেই অর্থ হারাবার ভয় থাকে; ল্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয়। |
ধন দিয়ে মন বুঝে, যৌবন দিয়ে আক্কেল বুঝে | টাকাকড়ি দিয়ে মন বুঝে নেয় এবং যৌবন দান করে আক্কেল বুঝে নেয়। |
ধন নেই কড়ি নেই নিধিরাম পোদ্দার | টাকাকড়ি না থাকলেও পরের ধনে পোদ্দারি করতে নিধিরাম পোদ্দারদের আটকায় না। |
ধন পরিবাদও ভাল | ধনী বলে নিন্দিত হলেও ভাল, কারণ তাতেও ধনশালীর স্বীকৃতি ও ইজ্জৎ মেলে। |
ধন বড় না ধনী বড়? | ধন নয়, ধর্মের মাহাত্য অনেক বেশি; ধনী থেকে ধার্মিক অনেক বেশি সম্মানীয়। |
ধনং ক্ষীণং ভবেদ্দানবিদ্যা দানাদ্বিবর্ধতে। অতো মন্যে ধ্রুবং বিদ্যা ধনাদপি গরীয়সী॥ (চাণক্য) | দানে ধন ক্ষয় হয়; দানে বিদ্যা বর্ধিত হয়; অতএব মনে করি বিদ্যা ধন থেকে বড়। |
ধনধান্যপ্রয়োগেষু তথা বিদ্যাগমেষু চ। আহারে ব্যবহারে চ ত্যক্তলজ্জসদা ভবেৎ।। (চাণক্য) | সম্পত্তি এবং শস্য প্রভৃতির ক্রয়-বিক্রয় অথবা এই সব জিনিস ধার দিয়ে সুদের আদান-প্রদানের সময়, বিদ্যার্জনের সময়, খাওয়ার সময় এবং মামলা-মোকদ্দমার সময় সর্বদা লজ্জাশূন্য হওয়া উচিত; এইসব ব্যাপারে লজ্জা করা উচিত নয় |
ধনসোহাগী মরে ক্ষুদের জাউ (ফেনভাত) খাইয়া/খেয়ে | হাড় কৃপণ; ধনের প্রতি মমতাপরায়ণ ব্যক্তি খরচের ভয়ে ভালো খাবার খেতে পারে না। |
ধনানি জীবিতঞ্চৈব পরার্থে প্রাজ্ঞ উৎসৃজেৎ। সন্নিমিত্তে বরং ত্যাগো বিনাশে নিয়তে সতি॥ (চাণক্য) | জ্ঞানীব্যক্তি, ধন ও জীবন পরের জন্য উৎসর্গ করেন; বিনাশ অবশ্যম্ভাবী সুতরাং সৎকাজে সব ত্যাগ করা বিধেয়। |
ধনিনঃ শ্রোত্রিয়ো রাজা নদী বৈদ্যস্তু পঞ্চ মঃ। পঞ্চ যত্র ন বিদ্যন্তে তত্র বাসং ন কারয়েৎ।। (চাণক্য) | ধনবান ব্যক্তি, বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ, রাজা, নদী এবং পঞ্চমতঃ (চিকিৎসক) বৈদ্য- এই পাঁচজন যে দেশে বাস করেন না সেই দেশে বসবাস করা উচিত নয়। |
ধনীর চিন্তা ধন ধন, নিরানব্বুইয়ের ধাক্কা, যোগীর চিন্তা জগন্নাথ, ফকিরের চিন্তা মক্কা | ভোগীর ভোগবাদী চিন্তা, ত্যাগীর আধ্যাত্মিক চিন্তা, যে যেভাবে জীবনাটা দেখে; যার যাতে অনুরাগ সে সেটাই চিন্ত করে। |
ধনীর মাথায় ধর ছাতি, নির্ধনেরে মার লাথি | সকলেই সবলের সহায়, দুর্বলের কেউ নয়; তলা মাথায় তেল দিতে কে না চায়। |
ধনে অহঙ্কার নয়, মনে অহঙ্কার | ধনের অহঙ্কার আসল অহঙ্কার নয়, মনের অহঙ্কারই হল আসল অহঙ্কার। |
ধনে সুখ নয়, মনে সুখ | ধনের সুখ ক্ষণস্থায়ী, মনের সুখ চিরস্থায়ী। |
ধর তক্তা মার পেরেক | দায়সারাভাবে দ্রূত কাজ শেষ করার চেষ্টা। |
ধরাকে সরা জ্ঞান করা | অহঙ্কারে মত্ত লোক কাউকে গ্রাহ্য করে না। |
ধরি মাছ না ছুঁই পানি | কিছুমাত্র বেগ না পেতে হয় এমন কৌশলে কার্যসিদ্ধি করা; সমতুল্য- 'যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না'। |
ধরিলে চিঁ চিঁ করে ছাড়িলে লম্ফ মারে | ধরা পড়লে কাকুতিমিনতি করে; ছাড়া পেলে দৌরাত্ম্য শুরু করে। |
ধরে আনতে বললে বেঁধে আনে | বাড়াবাড়ি করে ফেলা; জাহির দেখাতে গিয়ে আদেশের অতিরিক্ত কাজ করে ফেলা। |
ধরে বেঁধে পিরীত, ঘষে মেজে রূপ | কোনটারই পরিণতি সফল হয় না। |
ধরেছ তো ছেড়ো না | একবার কাজে হাত দিলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছাড়া নেই। |
ধর্মদাসের ধর্মকর্মে ধর্মের কোন নাম নেই | আচারসর্বস্বতার প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
ধর্মস্য কুটিলা/সূক্ষ্মা গতিঃ | কর্মের সাথে ধর্মের বিরোধের প্রতি ইঙ্গিত; অসতী হয়েও কুন্তী স্বর্গে গেলেন; অথচ সতী হয়েও সীতা গেলেন পাতালে; অসতী হয়েও কুন্তী সতী আখ্যা পান; অথচ সতী হয়েও সীতা সতী আখ্যা পান না; ধর্মের গতি বোঝা ভার। |
ধর্মেণ হীনাঃ পশুভিঃ সমানাঃ | অধার্মিক পশুর সমান। |
ধর্মেও আছি, জিরাফেও আছি | একইসাথে অধর্ম করা ও ধর্ম রক্ষা করার ধান্ধাবাজী |
ধর্মের ঢাক আপনি বাজে // ধর্মের কল বাতাসে চলে/নড়ে | ধর্ম এমনই এক কৌশল যে যতই লুকাতে চাও-না-কেন পাপ কাজ অপ্রকাশিত থাকে না; সত্য শেষ অবধি উদঘাটিত হয়। |
ধর্মের ঘরে কুটের (কুষ্ঠরোগী) অভাব নাই | মন্দির মসজিদে ভণ্ড ধার্মিক নেই এমন চিন্তা ভ্রান্ত; ধার্মিক সমাজেও কপটতা আছে। |
ধর্মের ঘরে পাপ সয় না | যে বংশে চিরকাল ধর্ম রক্ষিত হয়েছে সেই বংশে একটুও পাপ ঢুকলে পাপের ফল সঙ্গে সঙ্গে ফলে যায়। |
ধর্মের ঘড়া ভেসে উঠে, পাপের ঘড়া তলিয়ে যায় | ধর্মের জয়, অধর্মের ক্ষয়। |
ধর্মের জয়, অধর্মের ক্ষয় | সৎ কাজ করলে তার জয় অবশ্যম্ভাবী, অসৎ কাজ করলে তার পতনও অবশ্যম্ভাবী |
ধর্মো রক্ষতি ধার্মিকম্ | ধর্মই ধার্মিককে রক্ষা করেন; ন্যায়বোধের বিচারক ঈশ্বর ধার্মিকের রক্ষাকর্তা। |
ধাইয়ের কাছে কোঁক (পেট) ছাপা | যে ঘরের কথা সব জানে, তার কাছে লুকাবার কিছু নেই বা লুকাবার চেষ্টা বৃথা। |
ধান একগুণ, ঘাস শতগুণ | আগাছার বাড় বেশি; গুণ ও গুণী অল্প হয়; দোষ ও দোষী প্রচুর হয়। |
ধান কাঠের মই বেয়ে চাঁদ পেড়ে আনা | আজগুবি কল্পনা; নির্বোধের ভ্রান্তিবিলাস। |
ধান খায় কাকে, ব্যাঙের পায়ে দড়ি | চরম বিশৃঙ্খলা; একের দোষে অন্যের শাস্তি; উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে। |
ধান দিয়ে লেখাপড়া শেখা | সামান্য ব্যয়ে অল্পসল্প বিদ্যালাভ। |
ধান নাই চাল নাই, আন্দিরাম মহাজন | বিফল ব্যবসায়ী, মহাজন না হয়েও মহাজনের মত আচার-আচরণ; মুর্খের সুখকল্পনা; নির্বোধের ভ্রান্তিবিলাস। |
ধান ভানতে শিবের গীত | কোন বিশেষ আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা; কাজের কাজ ফেলে প্রসঙ্গান্তরে চলে যাওয়ার জন্য অযথা সময় নষ্ট এবং প্রকৃত কাজের ক্ষতি করা |
ধান্য তার বসুন্ধরা যার | জমি যার ফসল তার; ন্যায়বোধের অধিকার। |
ধান্য বৃক্ষ চেনেন না | যে জেনেশুনে অজ্ঞতা প্রকাশ করে, তার প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
ধার করা জামা কখনও গায়ের মাপের হয় না | যা পায় তাই মেনে নিতে হয়; ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া। |
ধার করে কানে সোনা // ধার করে গাড়ী কেনা | কর্জ করে বাবুগিরি। |
ধার করে খায়, হেঁট মাথায় যায় | খাতকের কোন ইজ্জৎ নেই। |
ধারণাদ্ ধর্মম্ ইত্যাহুর্ধর্মেণ বিধৃতাঃ প্রজাঃ। যঃ স্যাদ্ ধারণসংযুক্তঃ স ধর্ম ইতি নিশ্চয়।। মহাভারত | ধারণক্রিয়া থেকে ধর্ম শব্দের উৎপত্তি। ধর্ম সৃষ্টিকে বিশেষভাবে ধারণ করে আছে। সংক্ষেপে যা ধারণ করে তাই ধর্ম। |
ধারে কাটে আর ভারে কাটে // ধারে না কাটলে ভারে কাটে | অস্ত্রে ধার থাকলে সহজে কাটে; অল্প ধার থাকলে ভারী অস্ত্রেও কয়েতে যায়; অর্থবল থাকলে সহজে কার্যসিদ্ধি হয়; অর্থবল তেমন না থাকলে কমতাবলের সাহায্য কার্যসিদ্ধি হয়। |
ধিয়া পশ্যতি পণ্ডিতঃ, ভূতে পশ্যতি বর্বরা | অভিজ্ঞাতায় জ্ঞানী শেখে; পরিণাম দেখে মূর্খ শেখে। |
ধীরগতি নদীর গভীরতা বেশি | জ্ঞানীপুরুষের প্রশান্তি বেশি। |
ধীরগতিতে বৃদ্ধির জন্য কোন চিন্তা করো না, শুধু চিন্তা করো স্থির দাঁড়িয়ে পড়লে কিনা- চীনা প্রবাদ | জীবনের লক্ষণ সচলতা, অচলতা মৃত্যুর সামিল। |
ধীর জল/পানি পাথর কাটে | বিন্দুবিন্দু জল পড়েও পাথর ক্ষয় কয়; ধীরেসুস্থে কাজ করলে অতি কঠিন কাজও সম্পন্ন হয়। |
ধুকড়ির (থলি) মধ্যে খাসা চাল | অসুন্দর ব্যক্তি, যার অন্তর সুন্দর ও মাধুর্যভরা। |
ধুলো-মুঠো ধরলে সোনা-মুঠো হয় | সৌভাগ্যের লক্ষণ; সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যে কাজেই হাত দেয় তাতেই লাভবান হয়। |
ধূর্তে ধূর্তে ধূর্তামি | সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি। |
ধেনো হাটে ওল নামানো | না বুঝে অকাজ করা। |
ধৈর্য ধর যা তুমি চাও তাই পাবে- আরবী প্রবাদ | আপেক্ষা করার মূল্য আছে; কথায় বলে- সবুরে মেওয়া ফলে। |
ধৈর্যশীলতা হল উদ্বেগ-নিরসনের চাবিকাঠি- আ্যসিরীয় প্রবাদ | ধৈর্যশীলতা ঘায়ের ওপর মলম হিসাবে কাজ করে। |
ধোঁয়া চাপা থাকে না | সত্য গোপন থাকে না। |
ধোঁয়া যেথায় আগুন সেথায় | অকারণে কিছু হয় না; কার্যের পিছনে কারণ থাকে। |
ধোঁয়ার হাত এড়াতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মলাম | সামান্য বিপদ থেকে বাঁচতে গিয়ে বেশী বিপদে পড়া। |
ধোবি কা কুত্তা না ঘরকা না ঘাটকা | কোন কাজের নয়, বিল্কুল বেকার। |
ধ্বনির অনুরূপ প্রতিধ্বনি আছে/থাকে | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য- 'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়' ইত্যাদি। |
ন[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ন অহংকারাৎ পরোরিপুঃ | অহঙ্কারের চেয়ে বড় শত্রু নেই। |
ন কশ্চিৎ কস্যচিন্মিত্রং ন কশ্চিৎ কস্যচিদ্রিপুঃ। কারণেন হি জানাতি মিত্রানি চ রিপূংস্তথা॥ (চাণক্য) | কারণ বিনা কেউ কারো মিত্র বা শত্রু হয় না; ব্যবহারের কারণেই কেউ মিত্র বা শত্রু হয়। |
ন কূপখননং কার্যং প্রদীপ্তবহ্নিনা গৃহে | ঘরে আগুল লাগিয়ে কূঁয়া কাটা যুক্তিযুক্ত নয়। |
ন চ বিদ্যাসমো বন্ধুর্ন চ ব্যাধিসমো রিপুঃ। ন চাপত্যসমঃ স্নেহো ন চ দৈবাৎ পরং বলম্॥ (চাণক্য) | বিদ্যার সমান বন্ধু নেই, ব্যাধির সমান শত্রু নেই, পুত্রস্নেহের সমান স্নেহ নেই এবং দৈবের সমান বল নেই। |
ন চলতি খলু বাক্যং সাধুনাং কদাচিৎ | সাধুদের বাক্যের কখনো অন্যথা হয় না। |
ন জাতু কামঃ কামানামুপভোগেন শাম্যতি। হবিষা কৃষ্ণবর্ত্মেব ভুয় একাভিবর্দ্ধতে।।(চাণক্য) | ঘি পড়লে যেমন আগুন বেশি জ্বলে উঠে, তেমনই কামীর কামনা উপভোগে বাড়ে বৈ কমে না। |
ন দুঃখং পঞ্চভিসহ | পাঁচজনের সাথে মিলেমিশে থাকলে দুঃখ অনুভব হয় না। |
ন দেবঃ সৃষ্টিনাশক | দেবতা কখনো সৃষ্টি নাশ করেন না। |
ন দেবায়, ন ধর্মায় | দেবতারও নয়, ধর্মেরও নয়; কোন কাজে লাগল না; কোন কর্মের নয়, অপদার্থ। |
ন ধর্মবৃদ্ধেষু বয়ঃ সমীক্ষ্যতে | ধার্মিকব্যক্তির বয়সের বিচার হয় না। |
ন নিম্বো মধুরায়তে | নিম কখনো মিষ্ট হয় না। |
ন বিশ্বসেদবিশ্বস্তে মিত্রে চাপি ন বিশ্বসেৎ। কদাচিৎ কুপিতং মিত্রং সর্বং দোষং প্রকাশয়েৎ॥ (চাণক্য) | অবিশ্বাসীকে কখনো বিশ্বাস করবে না; বন্ধুকেও বেশী বিশ্বাস করবে না; কারণ সে ক্ষুব্ধ হলে তোমার সকল দোষ সকলকে বলে দিতে পারে। |
ন ভূতং, ন ভবিষ্যতি | আগেও ছিল না পরেও হবে না; অগ্রপশ্চাৎ চিন্তা করা বৃথা। |
ন মাংসভক্ষণং দোষো, ন মদ্যং ন চ মৈথুনম্। প্রবৃত্তিরেব ভূতানাং নিবৃত্তিস্তু মহাফলা।। (চাণক্য) | মাংসভক্ষণে, মদ্যপানে ও মৈথুনক্রিয়ায় কোন দোষ হয় না; এই সকল কর্মে জীবের প্রবৃত্তি হল দোষাবহ, কিন্তু এই সকল বিষয়ে নিবৃত্তিই হল মহাফলপ্রদ। |
ন যযৌ, ন তস্থৌ | এগিয়ে যাওয়াও যায় না, আবার স্থির থাকাও যায় না; কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। |
ন সন্তোষাৎ পরম সুখম্ | সন্তোষের মত পরম সুখ নেই। |
ন সম্মানো ন বৃত্তির্ন চ বান্ধবাঃ যস্মিন্ দেশে। ন চ বিদ্যাগমঃ কশ্চিৎ তং দেশং পরিবর্জয়েৎ।। (চাণক্য) | যে দেশে সম্মান নেই, জীবিকার ব্যবস্থা নেই, কোন বন্ধু নেই এবং বিদ্যার্জনের কোন ব্যবস্থা নেই- সেই দেশ পরিত্যাগ করা উচিত। |
ন সাহসমনারুহ্য নরো ভদ্রাণি পশ্যতি | বিনা সাহসে কোন মানুষ বড় কিছু করতে পারে না। |
ন স্বাতন্ত্র্যাৎ পরম সুখম | স্বাধীনতা অপেক্ষা বড় সুখ নেই।। |
ন হি দুস্করমন্তীহ কিঞ্চিৎ অধ্যবসায়িনাম | অধ্যবসায়ী ব্যক্তির কাছে কোন কাজই দুস্কর নয়। |
ন হি সুখং দুঃখখৈর্বিনা লভ্যতে | দুখঃবিনা সুখ হয় না; কষ্ট সহ্য না করলে কেষ্ট পাওয়া যায় না; কষ্টবিনা কেষ্ট নাই। |
ন হি সুপ্তস্য সিংহস্য মুখে প্রবিশন্তি মৃগাঃ | ঘুমন্তসিংহের মুখে হরিণ প্রবেশ করে না; পরিশ্রমবিনা প্রাপ্তি নেই। |
নকল গয়নার জেল্লা বেশি | নকল আপনাকে আসল অপেক্ষা বেশি সুন্দর প্রতিপন্ন করতে চেষ্টা করে। |
নক্ষত্রভূষণং চন্দ্রো নারীণাং ভূষণং পতিঃ।পৃথিবীভূষণং রাজা বিদ্যা সর্বস্য ভূষণম্।। (চাণক্য) | চাঁদ তারকাদের অলঙ্কার, স্বামী নারীর অলঙ্কার, রাজা পৃথিবীর অলঙ্কার আর বিদ্যা সকলজনের অলঙ্কার। |
নখদর্পণে আছে | সবকিছুই নজরে আছে; প্রতিটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা আছে। |
নখিনাঞ্চ নদীনাঞ্চ শৃঙ্গিণাং শস্ত্রপাণিনাম্। বিশ্বাসো নৈব কর্ত্তব্যঃ স্ত্রীষু রাজকুলেষু চ।। (চাণক্য) | নখযুক্ত প্রাণী, নদী, শিং আছে এমন প্রাণী, শস্ত্রধারী পুরুষ, নারী এবং রাজপুরুষকে কখনও বিশ্বাস করা উচিত নয়। |
নখের ছিদ্রে কুড়াল লাগানো | সামান্য কাজে বিরাট আয়োজন; কোদাল দিয়ে দাড়ি চাঁচা; মশা মারতে কামান দাগা ইত্যাদি। |
নগর পুড়িলে কি দেবালয় এড়ায়? | বিপদে সবার ক্ষতি; আগুন বাছবিচার করে না। |
নজরে থাকা কড়ার দুধ উথলায় না | নজর রাখলে কিছুই নয় ছয় হয় না। |
নটে খেটে আড়ায়ে, সজনে বারোমেসে | কিছু সুখভোগ অল্পদিন স্থায়ী হয়; কিছু সুখভোগ প্রতিদিন করা যায়। |
নড়া দাঁত পড়া ভাল | কারো সাথে মনোমালিন্য হ'লে তার সাথে সংশ্রব না রাখাই উচিৎ। |
নড়তে চড়তে বারো মাস | অত্যন্ত অলস, দীর্ঘসূত্রী। |
নড়তে পারে না কামান দাগে | ক্ষমতার অতিরিক্ত কাজ করতে যায়; নিতান্ত বাড়াবাড়ি। |
নড়ির হাতে শালগ্রামের বিনাশ | হীনের হাতে মহতের অপমান। |
নতুন নতুন ন'কড়া, পুরানো হ'লে ছ'কড়া | নতুন অবস্থায় আদর, পুরাতন অবস্থায় অনাদর; নতুন জিনিষের আদর/কদর বেশি হয়। |
নতুন যোগী ভিখ পায় না | শুরুতে কাজে দক্ষতা আসে না; অনভ্যাসের জড়তা থাকে; স্বভাবতই অকৌশলী স্বীকৃতি পায় না। |
নদীকূলে চ যে বৃক্ষা, পরহহস্তগতং ধনম। কার্যং স্ত্রীগোচরং যৎ স্যাৎ সর্বং তদ্বিফলং ভবেৎ॥ (চাণক্য) | নদীপাড়ের বৃক্ষ, পরহস্তগত ধন এবং স্ত্রীলোক জানে, এমন ভবিষ্যৎ কাজ সর্বদা বিফল হয়। |
নদীকূলে বাস ভাবনা বারোমাস | আশঙ্কার মধ্যে থাকলে চিন্তা সবসময় তাড়া করে। |
নদী না শুকালে জলের মূল্য জানা যায় না | না হারালে থাকার মূল্য কি- জানা যায় না। |
নদী, নারী, শৃঙ্গধারি, এই তিনে বিশ্বাস না করি | এই তিনের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই; আচমকা- নদী ভাসায়, নারী ফাঁসায় এবাং শৃঙ্গধারী পেট ফাঁড়ে। |
নদী পার হলে কুমিরকে কলা | উপকার পেয়েই উপকৃত উপকারীকে ভুলে যায়; খাল পার হতে পাটনী শালা। |
নদী শুকোলেও রেখা থাকে | কৃতকর্মের দাগ থেকে যায়; কলঙ্ক মোছে না। |
নদীকে অনুসুরণ কর, সমুদ্রে পৌঁছে যাবে | পথ ঠিক থাকলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হ'তে হয় না। |
'নদীর এক কূল ভাঙ্গে আর এক কূল গড়ে এই তো নদীর খেলা'- নজরুল | নদীর মতই সংসারের বিচিত্রগতি; একদিকে আনন্দ তো অন্যদিকে বেদনা; কারো পৌষ মাস,কারো সর্বনাশ- প্রবাদ। |
'নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস; নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে; কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে'-রবীন্দ্রনাথ | অন্যে পেল, আমি পেলাম না- এই ভাবানুভূতি; অন্যের অবস্থার প্রতি ঈর্ষাকাতর দৃষ্টিপাত। |
নদীর জল ঘোলাও ভালো, জাতের মেয়ে কালোও ভালো (খনা) | উৎস ভাল হলে নির্গত উপাদানও ভালই হবে। |
নদীর স্রোতের প্রায় সময় বহিয়া যায় | নদীর স্রোত ও সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। |
ননদেরও ননদ আছে // ননদো কী ভী ননদ হোতী হৈ | কেউ পার পায় না; বাপেরও বাপ আছে; তিমি থাকলে তাকে গেলার জন্য তিমিঙ্গিল আছে। |
নবকুমারকে বাঘে খায় | অকৃতজ্ঞ উপকৃত, যে উপকারীর ঋণ স্বীকার করে না; সমতুল্য- শংকরাকে বাঘে খেল, অন্যেরা সব কোথায় গেল?','স্বার্থছাড়া কেউ এক পা নড়ে না', বিরুদ্ধ উক্তি- 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়ে বলি এজীবন মন সকলি দাও...' 'শুধু স্বার্থ নয়, স্বার্থত্যাগও আছে এ সংসারে', 'স্বার্থমগ্ন যেজন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনাে শেখেনি বাঁচিতে' ইত্যাদি। |
নয় গাঁ মাগিলে যা, সাত গাঁ মাগিলেও তা | দাবী যাই-হোক-না-কেন বরাদ্ধ স্থির; অল্প পরিশ্রম এবং বেশি পরিশ্রমের ফললাভ এক ও অভিন্ন। |
নয় মণ তেলও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না | যে অসম্ভব কাজ ঘটার নয় সেই সম্পর্কে স্পষ্টোক্তি; দাবীমত যে কার্যসিদ্ধি হবে না- তার চেতাবনী। |
নরকের দ্বার খোলা | উচ্ছন্নে যাওয়ার প্রবল আকর্ষণ |
নরম কাঠে ছুতোরের কারিগরি/বল // নরম মাটিতে বেড়াল আঁচড়ায় | দুর্বলের ওপর বলপ্রয়োগ সহজ; দুর্বলপ্রকৃতির লোক অত্যাচারিত হয়। |
নরমের বাঘ গরমের শিয়াল/ নরমের যম, শক্তের ভক্ত | দুর্বল লোকের উপর হম্বিতম্বি করে এবং শক্ত লোকের পাল্লায় পড়লে লেজ গুটায়। |
নরানাং মাতুলক্রমঃ | মানুষ মাতুলের প্রকৃতিপ্রাপ্ত হয়; মানুষ মামার অনুসরণকারী। |
নরের মন নারায়ণ জানেন | সবই ঈশ্বর জানেন। |
নরুণ দিয়ে তালগাছ কাটা | ক্ষুদ্র উপায়ে বিরাট কাজ করার চেষ্টা; অসাধ্যসাধন করার চেষ্টা; কলার ভেলায় সাগর পার; ঝিনুক দিয়ে জল সেঁচা ইত্যাদি। |
নলিনীদলগতজলদবৎতরলম | পদ্মপাতার জলের মত ক্ষণস্থায়ী। |
না আঁচালে বিশ্বাস নেই | কার্যসিদ্ধি সম্পর্কে সন্দিহান। |
না কথার বালাই নাই | 'না' কথাটির মধ্যে কোন বিপদ নাই; 'জানি না' বললে সব সমস্যা মিটে গেল; বোবার কোন শত্রু নাই'। |
না খেলে যাবে দিন, ধার করলে হবে ঋণ | কখনো ঋণ করা উচিৎ নয়। । |
না ঘষলে রত্ন চকচকে হয় না, কষ্টস্বীকার না করলে মানুষ সম্পূর্ণ হয় না- কনফুসিয়াস | অনায়াসে কিছু লব্ধ হয় না। |
না জানার মধ্যে কোন লজ্জা নাই না জানতে চাওয়াটাই লজ্জার- আসিরীয় প্রবাদ | অননিসন্ধিৎসু মন মৃতের সমান |
না থাকলেই সোনার মূল্য, থাকলে সোনার মূল্য নেই | সহজলভ্যের কোন কদর নেই। |
না-দেওয়া কাঁঠালের শাওনে (শ্রাবণমাসে) পাক // না-দেওয়া চাল আজ-না-কাল // না-দেওয়া জাল ষরষে ভরা | না দেবার ছল-ছূতো, বাহানা। |
না দেখে চলে যায়, পায়ে পায়ে হোঁচট খায় | অসর্তকতার দণ্ড। |
না দেখে/বুঝে ছিলেম ভাল, দেখতে/বুঝতে গিয়ে বিপদ হল | আধা-পণ্ডিতের অনেক জ্বালা; যেকোন বিষয়ে আধা-জ্ঞান না থেকে পুরো-জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়; অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী। |
না পড়েই পণ্ডিত | শিক্ষাদিক্ষা নেই, উপাধি পণ্ডিত বলে পণ্ডিত; কোন বিষয় না জেনেই তাতে পণ্ডিতিগিরি; পুঁটিমাছের ফরফরনি। |
না বিয়ায়ে কানাইয়ের মা | পরের ছেলেকে নিজের ছেলে বলে দাবী করা নারীর প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
না মরতেই ভূত | কারণবিনা কার্যের সম্ভাবনা দেখে অতি বিস্মিত। |
না যাইলে রাজা বধে, যাইলে ভুজঙ্গ; রাবণের হাতে যথা মারীচ কুরঙ্গ (মৃগ) | উভয়সঙ্কট, এগুলে রামে মারবে আবার পিছুলে রাবণে মারবে; মারীচ রামের হাতেই মরতে চেয়েছিল। |
না রাম না গঙ্গা | কোন কথার উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকা; কোন কিছুতেই নাই। |
না হওয়া থেকে দেরীতে হওয়া ভাল | তবুতো কিছু হবে। |
নাই কাজ তো খইখাই | অকাজে অলস সময় কাটানো। |
নাই ঘরে খাই বড় // নাই-য়ের ঘরে খাই খাই | অভাবপীড়িত; অভাবের সংসারে পরিজনদের পেটুকপনা বেশি হয়; ঘরে খাবার না থাকলে ক্ষুধার উদ্রেক বেশি হয়। |
নাই বললে সাপেরও বিষ থাকে না | গ্রাম্যবাংলায় 'নাই' শব্দটি অমঙ্গলসূচক বিবেচিত হয়; সাধারণতঃ লোকে সংস্কারবশতঃ 'নেই' না বলে 'বাড়ন্ত' বলে; ঘরে চাল বাড়ন্ত। |
নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো | একেবারে না পাওয়ার চেয়ে সামান্য কিছু পাওয়াও ভালো; কিঞ্চিত পাওয়া মন্দের ভালো। |
নাও পর গাড়ী, গাড়ী পর নাও // না'র উপর গাড়ি, গাড়ির উপ না (নৌকা) | নদী পার হতে গাড়ি নৌকা চড়ে; আবার স্থলপথে চলতে নৌকা গাড়ী চড়ে; যেক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরস্পরের সাহায্য লাগে সেক্ষেত্রে এই প্রবাদ প্রযোজ্য হয়। |
নাক নেই তার নথ নাড়া/নাক নেই তার গোঁফের বাহার | আদিখ্যেতা; এদিক নেই ওদিক আছে। |
নাকালে ম্রিয়তে কশ্চিৎ বিদ্ধশরশতৈরপি। কুশাগ্রেণৈব সংপৃষ্ট প্রাপ্তকালো নও জীবতি।। | সময় না হলে শতশত বাণে বিদ্ধ হলেও কেউ মরে না; সময় হলে কুশাগ্রের স্পর্শেও সে মারা যায়। |
নাকে ষরষের তেল দিয়ে ঘুমানো | আরামে দিন কাটানো; উদ্বেগের কারণ থাকতেও পরম নিশ্চিন্তে দিন কাটানো। |
নাচ না আওয়ে/জানে অঙ্গন টেড়া // নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা // নাচতে না জানলে উঠানের দোষ | নিজের দোষ ঢাকতে অপরকে দোষারোপ করা; সমতুল্য- 'অকেজো মিস্ত্রি যন্ত্রের দোষ দেয়'। |
নাচতে নেমে ঘোমটা টানা | কাজ করতে এসে ইতঃস্তত করা। |
নাচেন ভাল পাক দেয় উল্টো | ঘুরিয়ে নিন্দা করা; সরল কথা বলতে বলতে হঠাৎ কুটিল কথা বলা; মিষ্টি কথার মাঝে একটা মর্মভেদী কথা বলা। |
নাচুন্তির লাজ নাই দেখুন্তির লাজ | যে কুৎসিত কাজ করছে, তার লজ্জা নেই, যে দেখছে তারই মাথা লজ্জায় কাটা যায়; নির্লজ্জ বেহায়ার প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি; হাগুন্তির লাজ নাই দেখুন্তির লাজ। |
নাড়া বনে কীর্তন | অনাবশ্যক স্থানে কার্য। |
নাড়ীনক্ষত্র টেনে বার করা | কৌশলে সব গুহ্যতথ্য জেনে নেওয়া। |
নাতির নাতি স্বর্গের বাতি | অতি দীর্ঘজীবী না হলে কারো পক্ষে নাতির নাতিকে দেখা সম্ভব নয়; সেই অর্থে এই ব্যক্তি পূণ্যবান এবং স্বর্গসুখ ভোগের অধিকারী। |
নাতোয়ানের দুনো ব্যয় | অভাবী প্রয়োজনকালে ব্যয়ে অপারগ, পরে একই কাজে দ্বিগুণ ব্যয় করে। |
নাতোয়ানের দুনো মালগুজারি | অক্ষম প্রজা অর্থাভাববশতঃ যথাসময়ে জমিদারকে খাজনা দিতে না পারায় পরে সুদে-আসলে বেশি দেয়। |
নাথবতী অনাথবৎ | স্বামী থেকেও নেই; স্বামীসোহাগ থেকে বঞ্চিত। |
নানা মুনির নানা মত | মানুষ যন্ত্র নয়; প্রতিটি মানুষের আলাদা ব্যক্তিসত্তা হয়। |
নান্য পন্থা বিদ্যতে অয়নায় | এছাড়া অন্য কোন উপায়/পথ আর খোলা নেই। |
নাপিত দেখলে নখ বাড়ে | কাজের লোক দেখলেই কাজের কথা মনে পড়ে; দেখনবাই; পথে পেলাম কামার, দা গড়ে দে আমার। |
নাপিতের ষোলচোঙা বুদ্ধি | মানুষের মধ্যে নাপিত ধূর্ত বলে প্রসিদ্ধ; নরানাং নাপিতো ধূর্তঃ। |
নাম বড়া দর্শন থোড়া-হিন্দি প্রবাদ | যত নামডাক আছে তত কাজের নয়। |
নাম নিয়ছো তো শয়তান হাজির- ইংরাজী প্রবাদ | অনেকসময় এমন হয় যে, যার কথা ভাবছি বা আলোচনা করছি সে এসে উপস্থিত। |
নামে গোয়ালা, আমানি/কাঁজি (পান্তাভাতের জল) ভক্ষণ | নামমাত্র সার; কাজের কোন খোঁজ নেই; তাই আমানি খেয়ে দিন কাটে; আসলে কাজে অষ্টরম্ভা। |
নামে ডাকে গুরুমশাই, লেজা মুড়োর জ্ঞান নাই | নামমাত্র সার; পেটে বিদ্যাবুদ্ধি কিছু নেই। |
নামে তালপুকুর, ঘটি ডোবে না | নামমাত্র সার; বড়লোকের বংশ বটে, কিন্তু বর্তমানে ফুঁটোকড়ির সংস্থান নেই। |
নামে ধর্মদাস, ধর্মের নাম/বালাই নেই | নামমাত্র সার; আচারের ধার ধারে না; নাস্তিকের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি |
নামের চোটে গগন ফাটে হাড়ি পাতিল কুত্তায় চাটে | চরম অপদার্থ; যতটা নাম ততটা কাজের নয়; সমতুল্য মুখের চোটে গগন ফাটে। |
নালা কেটে নোনা জল আনা | ইচ্ছা করে নিজের বিপদ ডেকে না; খাল কেটে কুমির আনা। |
নারুজস্য কিমৌষধেঃ? | যার রোগ নেই তার ঔষধের কি প্ররয়োজন? |
নাস্তি গ্রাম্যঃ কুত সীমাঃ? | যে গ্রামই নেই তার আবার সীমানা কি? |
নাস্তি সত্যাং পরোধর্ম, নানৃতাৎ পাতকো। স্থিতির্হি সত্যং ধর্মস্য তস্মাৎ ন লোপয়েৎ।। (চাণক্য) | সত্যের চেয়ে বড় ধর্ম আর নেই; মিধ্যার চেয়ে বড় পাপ আর নেই; ধর্মের স্থিতি সত্যে; সুতরাং সত্যের লোপ করো না। |
নাস্তিকের মুখে ধর্মকথা | অবিশ্বাস্য ঘটনা, সন্দেহজনক বিষয়; কোন ধান্ধাবাজী থাকতে পারে। |
নাহংকারাৎ পরোরিপুঃ | অহংকারের মত রিপু নেই। |
নানা মুনির নানা মত | বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন মতামত থাকে; ভিন্ন রুচিহি লোকাঃ। |
নান্য পন্থা বিদ্যতে অয়নায় | (নিস্তারের) আর কোন উপায় নেই। |
নিকর্মা দরজী ছেলের মুখ সেলাই করে // নিকর্মা লোক খুড়োর গঙ্গাযাত্রা করে | কাজের লোক কাজ না পেলে ভাল বা মন্দ একটা না একটা কাজে জড়িয়ে পড়ে। |
নিক্ষিপ্ত তীর/শর ফেরে না | যা গেছে তা গেছে; বলা কথা ফেরানো যায় না। |
নিজ বাড়ী নিজ ভুবন- ইংরাজী প্রবাদ | ব্যক্তি নিজবাড়ীতে ইচ্ছামত যা খুশি করতে পারে। |
নিজে খুব ভালো, তাই পরকে বলে কালো | পরনিন্দুকের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
নিজে বাঁচলে বাপের নাম | পরের কথা পরে ভাবা যাবে, আগে নিজের কথা ভাবো; আত্মকেন্দ্রিক ব্যক্তি, যে নিজের স্বার্থ আগে দেখে। |
নিজে শুতে ঠাঁই পায় না শংকরাকে ডাকে | নিজের ঘর না সামলে পরের ঘর সামলাতে চায়। |
নিজের অজ্ঞতার পরিমাণ জানাটাই আসল জ্ঞান-কনফুসিয়াস | জ্ঞানী জানেন যে তিনি অনেক কিছু জানেন না। |
নিজের কথা পাঁচ/সাত কাহন | অপরকে উপেক্ষা করে আত্মপ্রচার করে যাওয়া। |
নিজের কোলে ঝোল টানা | নিজের স্বার্থ আগে দেখা। |
নিজের ঘোল/দই কেউ মন্দ বলে না | নিজের দোষ কেউ দেখে না; নিজের জিনিষ মন্দ হলেও কেউ মন্দ বলে না। |
নিজের চরকায় তেল দাও | নিজের কাজে মন দাও; পরের কথায় থেকো না। |
নিজের চেয়ে পর ভাল; পরের চেয়ে জঙ্গল ভাল | তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নেতিবাচক উপলব্ধি। |
নিজের ঢাক/ঢোল নিজে পেটায় | আত্মপ্রশংসা করা। |
নিজের ধন পরকে দিয়ে দেবকী মরে মাথাকুটে। | ভুল কাজ করে পরে আফশোষ করা। |
নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা | নিজের ক্ষতি হবে জেনেও কোন কাজ করে অপরের ক্ষতিসাধন করা। |
নিজের পরমায়ু/বুদ্ধি ও পরের ধন/বয়স কেউ কম দেখে না | যে ধারণ মনে পোষণ করে তৃপ্তি পায় সেটাই এই প্রবাদ ব্যক্তি করে। |
নিজের পাঁঠা লেজে কাটা যায় | নিজের ইচ্ছাই সব; নিজের ইচ্ছায় যা খুশি করা যায়। |
নিজের পাছায় ন মন গু, আমারে বলে তোর খান ধু | নিজের ত্রুটির দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে, একই ত্রুটি থাকার জন্য অন্যকে তিরষ্কার করে; সমতুল্য- 'চালুনি করে ছুঁচের বিচার', 'চালুনি বলে ছুঁচ তোর পিছে কেন ছ্যাঁদা' |
নিজের পায়ে কুড়াল মারা | অবিবেচকের মত নিজের ক্ষতি নিজেই করা। |
নিজের বুদ্ধিতে ছিল ভাল, পরের বুদ্ধিতে পাগল হল // নিজের বুদ্ধিতে তর, পরের বুদ্ধিতে মর // নিজের বুদ্ধিতে ফকির হই, পরের বুদ্ধিতে বাদশা নই | নিজের ওপর আস্থা রাখার পক্ষে ওকালতি। |
নিজের বেলায় আঁটিসাটি পরের বেলায় দাঁতকপাটি (খনা) | নিজেরবেলায় সবকিছু, পরেরবেলায় কিছু না। |
নিজের ভাই/বোন ভাত পায় না শালা/শালীর তরে মণ্ডা | অবিবেচকের মত কাজ, বুদ্ধিহীনতা। |
নিজের ভাল দিকগুলো জেনে লাভ নেই | আত্মম্ভরিতা বেড়ে যায়; পরন্তু নিজের ত্রুটিগুলি নজর এড়ায়। |
নিজের ভালো পাগলেও বোঝে | নিজের ভালো সবাই বোঝে। |
নিজের মান নিজে রাখো, কাটা কান চুলদে ঢাকো | আত্মসম্মান বজায় রেখে চলার প্রতি ইঙ্গিত। |
নিজের লোক নিজের নয় | আত্মীয়রাই বেশি অনিষ্ট করে; সমতুল্য- 'আপন চেয়ে পর ভালো, পর চেয়ে জঙ্গল ভালো', 'বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন কখনো পর হয় না', 'বসূধৈব কুটুম্বম' ইত্যাদি। |
নিতে জানে দিতে জানে না/নিতে পারি, দিতে পারি নে | সঙ্কীর্ণমনা; প্রতিদান দিতে পরাম্মুখ। |
নিদ নেই যোগীর আর নিদ নেই রোগীর | সাধনার জন্য যোগী ঘুমাবার সময় পায় না; অপরপক্ষে যন্ত্রণায় কাতর রোগী ঘুমাতে পারে না। |
নিদানকালে হরিনাম | সময়ের কাজ সময়ে না করে অসময়ে করার কোন ফললাভ হয় না; পণ্ডশ্রম। |
নিদানের বিধান নাই | পরমায়ু শেষ হলে কোন ওষুধ আর কজে আসে না। |
নিন্দা সৎলোকের কোন অনিষ্ট করতে পারে না। | সত্য কালিমালিপ্ত হয় না। |
নিবানো আগুন আর জ্বেলো না | পুরানো দুঃখের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দুখীর দুঃখ আর বাড়িয়ো না। |
নিবৃত্তরাগস্য গৃহং তপোবনম | বাসনাহীন ব্যক্তির কাছে গৃহই তপোবন। |
নিম কখনো মিষ্টি হয় না | নির্গুণ চরিত্র বদলায় না, নির্গুণই থাকে। |
নিমতলা দিয়ে যাও নি, নিমফল কখনো খাও নি? | তির্যক/কু-অর্থে- কোন কু-কর্মের কি ফল তুমি জানো না? জানা উচিৎ ছিল। |
নিম তিতা নিসিন্দে তিতা তিতা মাকালফল; তার চেতে তিতা কন্যে বোন সতীনের ঘর | আপনার লোকেরাই বেশি অনিষ্ট করে; যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি। |
নিম নিসিন্দে যেথা, মানুষ মরে না সেথা | নিম নিসিন্দে গাছের দ্রব্যগুণ আছে; বাতাসও স্বাস্থ্যকর এবং রোগনাশক; নিম নিসিন্দে গাছের উপস্থিতি অকালমৃত্যু রোধ করে। |
নিয়তিঃ কেন বাধ্যতে | নিয়তিকে বাধা দেবার কেউ নেই; যা হবার তাই হবে; অদৃষ্টের ফল কে খণ্ডাবে বল। |
নিয়ম থাকলে নিয়মের ফাঁক আছে | কোন নিয়মই নিশ্ছিদ্র নয়। |
নিয়ম বড় বালাই | নিয়মের নিগড় বড় যন্ত্রণাদ্যয়কল গলায় বকলস কেউ পড়তে চায় না। |
নিয়মের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য নিয়ম | নিয়ম থেকে মানুষ বড়। |
নিরবতা হল প্রকৃত বন্ধু যে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করে না- কনফুসিয়াস | নিরব থাকলে কখনো আহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। |
নিরস্তপাদপদেশে এরণ্ডোহপি দ্রুমায়তে | যেদেশে গাছ নেই সেই দেশে ভেরেণ্ডাও গাছের স্বীকৃতি পায়; অজ্ঞানের মাঝে অল্পজ্ঞানীরাও সমাদর পায়; সমতুল্য- 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা', 'বাঁশবনে শিয়াল রাজা', 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল' ইত্যাদি। |
নিরাখালের খোদা রাখাল | অসহায়কে ঈশ্বর রক্ষা করেন। |
নিরানব্বয়ের ধাক্কা | সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি; অসঞ্চয়ীকে একবার সঞ্চয়ের নেশা ধরলে আর ছাড়ে না; কেনারাম আর ভোগীরাম হতে পারে না। |
নির্গুণ পুরুষের তিনগুণ ঝাল | পচা আদার মত নির্গুণ পুরুষের ঝাঁঝ বেশি হয়; তার কথাবার্তা বড় কর্কশ হয়। |
নির্ধনস্য কুতঃ সুখম? | নির্ধনের সুখ কোথায়? অভাগা সুখী হয় না। |
নির্ধনের ধন, অথর্বের যৌবন // নির্ধনের ধন হলে দিনে দেখে তারা | হঠাৎ বড়লোক এবং হঠাৎ সক্ষমব্যক্তি প্রচণ্ড অহঙ্কারী হয়ে সকলকে তুচ্ছজ্ঞান এবং ধরাকে সরাজ্ঞান করে। |
নির্বাণদীপে কিমু তৈলদানম। চৌরে গতে কিমু সাবধানম।। | নির্বাপিত দীপে তেল দিয়ে কি হবে? চোর পালিয়ে গেলে সাবধান হওয়ার কি বা প্রয়োজন? |
নির্বিষ সাপের কুলোপানা চক্র | গুণহীন পুরুষের মুখে বড়াই। |
নির্বুদ্ধি যদি উচ্চভাষে সুবুদ্ধি উড়ায় হেসে | জ্ঞানী অজ্ঞানের কথায় গুরুত্ব দেয় না। |
নিশাশেষোন্মেষোন্মুখকমলকোরকপমোত্তেজিতহৃদয়সূর্য-বঙ্কিমচন্দ্র | রাত্রিশেষে ফোটার জন্য উন্মুখ উত্তেজিত পদ্মকুঁড়ির মত পুরুষ হৃদয় |
নিষিদ্ধ ফল খেতে মিষ্টি | নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি মানুষের চিরন্তন আকর্ষণ থাকে। |
নিঃসারস্য পদার্থেস্য প্রায়েণাড়ম্বরো মহান | সারহীন বস্তুর আড়ম্বর প্রায়ই বেশি হয়। |
নিঃস্পৃহস্য তৃণং জগৎ | বাসনাকামনাহীন লোকের কাছ জগৎ তৃণবৎ তুচ্ছ। |
নীচো বদতি ন কুরুতে, বদতি ন সাধু করোত্যেব | নীচব্যক্তি বলে অনেক, কিন্তু করে না; সাধুব্যক্তি মুখে বলে না, কিন্তু কাজে প্রদর্শন করে। |
নীতিহীন মানুষেরা কাঁটাহীন ঘড়ির মত- আরবী প্রবাদ। | লক্ষ্যহীন মানুষের কাছ থেকে কিছু শেখা যায় না। |
নীরবতা হিরণময় | কিছু কিছু পরিস্থিতিতে চুপ থাকাই স্বর্ণতুল্য অর্থাৎ সবথেকে ভালো; সমতুল্য- 'বোবার শত্রু না'; বিরুদ্ধ উক্তি- প্রতিবাদ হীরকসমান |
নীরুজস্য কিমৌষধৈঃ? | নীরোগ ব্যক্তির ঔষধের প্রয়োজন কি? |
নুড়িপাথর হাজার বছর ঝরণায় ডুবে থাকলেও রসসিক্ত হয় না | নির্গুণ কোনদিন গুণী হয় না। |
নুন আনতে পান্তা ফুরায় | কাজের জোগাড় করতে করতেই কাজের প্রয়োজন ফুরায়; দুখীর জীবনে অভাব মেটানোর চেষ্টাতেই সময় চলে যায় অভাব এর মেটে না। |
নুন খাই যার গুণ গাই তার | উপকারীর উপকার করা/ঋণ স্বীকার করা; উপকারীর প্রতি উপকৃতের কৃতজ্ঞতা স্বীকার। |
নুন খেয়ে নিমকহারামি | উপকার নিয়ে উপকারীর ঋণ অস্বীকার করা; নিমকহারামি মহাপাপ। |
নুন খেলে গুণ মানি | উপকার পেলে উপকারীর ঋণ স্বীকার করা উচিৎ; অকৃতজ্ঞের নরকবাস। |
নূন ছাড়া ঘি/ভাত মাটি | সবারই পূর্ণতায় সহায় লাগে; প্রয়োজনে পরস্পরের সহযোগিতা লাগে। |
নেই কাজ তো খই ভাজ | অবসরে অকাজ করা। |
নেই নাক তার গোঁফের বাহার | বিসদৃশ সাজ; আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি। |
নেই মাথা তার মাথাব্যথা | অকারণে পরের বিষয়ে নাক গলানো; অনধিকার চর্চা। |
নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভাল // নেই রুটির চেয়ে অর্ধেক রুটি ভাল | শূন্য হাত ভালো নয়; একেবারেই কিছু না থাকার চেয়ে অল্প পরিমাণে থাকা ভালো; বিপরীত প্রবাদ- দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। |
নেংটি ইঁদুর পাহাড় কাটে | অতি ক্ষুদ্র শক্তিও বিরাট ক্ষতি করতে পারে। |
নেচে কুঁদে নাওরে জাদু মনের সুখে কবে যেতে হবে শিঙে ফুঁকে | যত পার সুখভোগ কর এই সংসারে দুবার আসবে না; সমতুল্য- যাবৎ জীবেৎ সুখং জীবেৎ ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ', 'হেসে খেলে দুদিন বইতো নয় কে জানে কখন কার সন্ধ্যে হয়'। |
নেপোয় (বাটপাড়) মারে দই | ধূর্তলোকের ধান্ধাবাজী; একজনের পরিশ্রমের ফল অসৎ উপায়ে অন্য ভোগ করে। |
নেবু কচলালে তেতো হয় | ভালো জিনিষেরও পুনরাবৃত্তি বিরক্তি উদ্রেক করে; বারবার মিষ্টি কথা শুনতেও ভালো লাগে না। |
নেবার কুটুম অনেক আছে দেবার তরে কেউ নেই // নেবার কুটুম দেবার নয় | নেবার বেলায় এক পা আগে, দেবার বেলায় আগে ভাগে। |
নেয়ের এক নৌকা, না-নেয়ের/নিনেয়ের শতেক নৌকা | যার গাড়ী আছে সে নিজের গাড়ী চড়ে; যার গাড়ী নেই সে যেকোন গাড়ী ভাড়া করতে পারে। |
নেশাতে বুক ফাটে, কুকুরে মুখ চাটে | নেশা না করতে পারলে নেশার জন্য বুক ফাটে; আবার নেশায় বুঁদ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকলে ক্কুরে এসে মুখ চাটে; নেশুড়ে গল্প। |
নেহ ঘটত নিত পর ঘর যায়ে- হিন্দি প্রবাদ | পরগৃহে নিত্য যাতায়াত থাকলে আদর কমে |
ন্যাংটার গলায় মোতির মালা | অযোগ্যের হাতে মহার্ঘবস্তু; যার যা সাজে না তাতেই তার সজ্জা। |
ন্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয় | যার কিছু নেই, তার হারাবার কিছু নেই; যে নির্লজ্জ, তার লোকনিন্দার ভয় নেই। |
ন্যাকা আদুরে/ঢঙী চালশে কানা, জল বলে খায় চিনির পানা | না-বোঝার ন্যাকামী; জেনেবুঝে লোককে বোকা বানাবার চেষ্টা। |
ন্যাকা, বোকা, ঢলঢলে কাছা, এই তিনে প্রত্যয় করো না বাছা | যে জেনেবুঝে অজ্ঞতা প্রকাশ করে তাকে প্রত্যয় করা নেই; যে কিছু বোঝে না তাকে প্রত্যয় করা নেই; এবং যে সববিষয়ে আলগা তাকে প্রত্যয় করা নেই। |
ন্যাকড়ায় আগুন | যে আগুন ধিকিধিকি করে ভিতরে জ্বলেল যে আগুন সহজে নেবে না। |
ন্যাড়া বেলতলায় একবার যায় // ন্যাড়া বেলতলা দু’বার যায় না | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়', 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়', 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে' 'দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়' ইত্যাদি। |
ন্যাড়া মাথায় খোঁচার ভয় | যার ত্রুটি আছে সে তার ত্রুটিসম্পর্কে সচেতন থাকে। |
ন্যাড়া মাথার জন্য় বক্স-উড চিরুনী (দামী জাপানী চিরুনী)- তুর্কী প্রবাদ | সাধ্যের অতীত অর্থব্যয়। |
ন্যাবা চোখ সব হলুদ দেখে | পক্ষপাতদুষ্ট লোকের কাছে সবই মন্দ। |
প[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
পকেট খালি তো মুখ কালি | অর্থের টানাটানিতে মন চিন্তায় পোড়ে। |
পকেট ভারি তো মন হালকা | অর্থ থাকলে সব আকাঙ্খা মেটে, মেজাজ ফুরফুরে থাকে। |
পঙ্কো হি নভসি ক্ষিপ্তঃ ক্ষিপ্তু পততি মুর্ধানি | আকাশে পাঁক ছুঁড়লে সেটা যে ছোঁড়ে তার মাথায় এসে পড়ে। |
পচা আদা, ঝালের গাদা | পচা আদায় ঝাল বেশি; মন্দলোক মরার মুহূর্তেও আরও মন্দ হয়ে মারা যায়। |
পচা শামুকে পা কাটা | অতিসতর্ক থেকেও সামান্য ভুল করা; বিশ্বাস করে বিপদে পড়া; মন্দলোকদ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ইত্যাদি। |
পঞ্চ ক্ষিপ্রং বিনশ্যন্তি স্তব্ধো লুব্ধশ্চ যো নরঃ। অভিমানী চ কামী চ গুরুদ্বেষী তথৈব চ।। (চাণক্য) | নির্বোধ, লোভী, অভিমানী, কামুক ও গুরুজনবিদ্বেষী- এই পাঁচপ্রকার পুরুষ দ্রুত বিনাশ পায়। |
পঞ্চভির্মিলিতোই কিং যজ্জগতী হ ন সাধ্যতে | পাঁচজন মিলে করলে জগতে কোন কার্য না সিদ্ধ হয়? |
পটল তোলা | মৃত্যমুখে পতিত হওয়া (উৎস-গাছ থেকে সব পটল একবারে তুলে নিলে গাছটির মৃত্যু হয়; সেইজন্য কিছুকিছু করে তুলতে হয়)। |
পট্টবস্ত্রে গুঞ্জফল মূল্য নাহি হয়, ছিন্নবস্ত্রে মোতির মূল্য নাহি হয় ক্ষয় | দামীকাপড়ে কুঁচফল থাকলেও সেটা দামী হয় না; ছেঁড়াকাপড়ে মোতি থাকলেও সেটার মূল্য কমে না। |
পড়ল কথা সভার/হাটের মাঝে, যার কথা তার গায়ে/বুকে বাজে | নাম না করে সমালোচনা করলেও যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, সে ঠিক বুঝে যায়; দোষ নিয়ে আলোচনাকালে কেউ যদি প্রতিবাদ করে তবে ধরে নেওয়া হয় যে সেই আসলে। |
পড়লে কথা বুঝতে নারে সেই বা কেমন পড়শী, ছিপ ফেললে মাছ খায় না সেই বা কেমন বঁড়শী | পড়শী পরস্পর ঘনিষ্ট হলে একে অন্যের মনোভাব জানতেঁ পারে; বঁড়শী ভালো হলে মাছ সহজে গাঁথে। |
পড়লে কথা বুঝতে নারে সেই বা কেমন মেয়ে, হাল নাই কাছি নাই সেই বা কেমন নেয়ে | সাধারণতঃ স্ত্রীলোকেরা একটু চতুর হয়; ইঙ্গিত-ইসারা সহজে বুঝতে পারে; যদি না পারে তবে সে অতি নির্বোধ; ভাল নেয়েরও হাল, কাছি ইত্যাদি থাকা উচিৎ। |
পড়লো ফাগুন তো উঠল আগুন | ফাগুনমাস এলেই গরম পড়তে শুরু করে। |
পড়শী না বঁড়শি? | সাধারণতঃ প্রতিবেশীরা পরস্পরের ঘনিষ্ট হয় না, বরঞ্চ শত্রুভাবাপন্ন হয়। |
পড়শীর মুখ না আরশির মুখ? | বিরুদ্ধমতে- কাছের মানুষ মনের মানুষ হয়; পরস্পর সমমনোভাবাপন্ন হয়; পড়শীর সাথে যেমন ব্যবহার করবে সেও তেমন ব্যবহার করবে। |
পড়িলে ভেড়ার শৃঙ্গে হীরার ধারও ভাঙে | শক্তপাল্লায় পড়লে সেয়ানাও জব্দ হয়; ভেড়ার কাছে যেমন হীরার কোন দাম নেই তেমনি নির্গুণের কছে গুণের কোন আদর নেই। |
পড়ুক বা না পড়ুক পো, সভায় নে গে থো | ছেলে লেখাপড়া শিখুক বা না শিখুক তাকে জ্ঞানীদের মাঝে রেখে দেবে; তাতে সে অনেক জ্ঞান লাভ করবে। |
পড়ে পাওয়া চোদ্দ-আনা | অযাচিত অর্থপ্রাপ্তি; অনায়াসলব্ধ অর্থ; বিনাপরিশ্রমে প্রাপ্ত অর্থ। |
পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার ষোল আনাই লাভ // পড়ে পাওয়া টাকার ষোল আনাই লাভ | অনায়াসলব্ধ অর্থের সম্পূর্ণটাই লাভ। |
পড়ে পাশা তো যেতে চাষা | কপাল ফিরলে হতভাগ্যও সৌভাগ্যবান হতে পারে বা নির্ধনও ধনী হতে পারে। |
পড়েছি মোগলের/যবনের হাতে খানা খেতে হবে সাথে | চাপে/বিপদে পড়ে পরের মর্জিতে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করা; দুষ্টচক্রের পাল্লায় তাদের নির্দেশে দুস্কর্ম করা। |
পণেক পেলে ক্ষণেক গায়, কাহনেক পেলে দিনভর গায় | অল্প উপকার পেলে অল্পদিন মনে রাখে; বেশি উপকার পেলে দীর্ঘদিন মনে রাখে; এমন বিচিত্রলোকও আছে। |
পণ্ডিত শেখে দেখে, মূর্খ শেখে ঠেকে | পণ্ডিত অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়; নির্বোধ আক্কেলসেলামী থেকে শিক্ষা নেয়। |
পণ্ডিতে চ গুণাঃ সর্বে মূর্খে দোষা হি কেবলম্। তস্মান্মূর্খসহস্রেভ্যঃ প্রাজ্ঞ একো বিশিষ্যতে॥ (চাণক্য) | পণ্ডিত সব গুণ এবং মূর্খ সব দোষের আধার; সেইকারণে সহস্র মূর্খ থেকে একজন পণ্ডিত বেশি বিশিষ্ট হন। পণ্ডিত ও মূর্খের প্রভেদ |
পতি পূণ্যে সতীর পূণ্য | খরচ কমাবার জন্য তীর্থক্ষেত্রে পত্নী নিয়ে না নিয়ে যাওয়ার বাহানা, তির্যোক্তি। |
পথ চলবে জেনে, কড়ি নেবে গুণে | জেনেশুনে কাজ কর; লাফাবার আগে লক্ষ্য কর; চলত্যেকেন পাদেন তিষ্ঠত্যেকেন বুদ্ধিমান। |
পথ ভাবে আমি দেব, রথ ভাবে আমি; মূর্তি ভাবে আমি দেব, হাসে অন্তর্যামী | আত্মম্ভরিতায় কেউ 'আমি'র খোলস ছাড়তে পারে না। |
পথি নারী বিবর্জিতা১ | বাইরে অপরিচিতা নারীর সংস্পর্শ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ। |
পথি নারী বিবর্জিতা২ | সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী থেকে চলার পথে আপন নারীকেও বাদ দিয়ে চলার পরামর্শ। |
পথে পেলাম কামার, দা গড়ে দে আমার | দেখনবাই; কাজের লোক নজরে পড়লেই কাজের কথা মনে পড়ে। |
পথে হাগে আবার চোখ রাঙায় | দোষ করে আবার বললে রাগ করে। |
পথের গু রথে যায় | পথ দিয়ে যাওয়ার সময় পথের বিষ্ঠা রথের চাকার সাথে জড়িয়ে যায়। |
পথের বাঁকে পথ শেষ হয় না, যদি না তুমি ফিরতে অক্ষম হও- ইংরাজী প্রবাদ | জীবনে পদেপদে সমস্যা আসে; একটা সমস্যাতে জীবন শেষ হয় না; চলার কোন শেষ নেই; এগিয়ে চলার প্রতি ইঙ্গিত। |
পয়ঃ সিঞ্চতে নিত্যং ন নিম্বু মধুরায়তে | নিত্য দুধ ঢাললেও বা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও নিম কখনো মিষ্টি হয় না। |
পয়ঃনালি দিয়ে গঙ্গাজল বয় না | মন্দলোক ভাল কাজ করে না।; মন্দলোকের মুখ দিতে কোন ভাল কথা বার হয় না। |
পয়ঃপানং ভুজঙ্গানাং কেবলং বিষবর্ধনং | সাপকে দুধ খাওয়ালে শুধু বিষ বৃদ্দধি পায়। |
পয়সা জমে টাকা হয় | সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি থাকা উচিৎ; তিল কুড়িয়ে তাল হয়; রাই কুড়িয়ে বেল হয়। |
পয়সা থাকলে বেয়াই-এর বাপের শ্রাদ্ধ হয়; না থাকলে নিজের বাপের শ্রাদ্ধ হয় না | অর্থ থাকলে বাজে খরচ করা যায়, অর্থাভাবে দরকারী খরচ হয় না। |
পয়সা দিয়ে খাই দই, কি করবে মোর গয়লা সই | ধারে খেলে ভয়, সঙ্কোচ থাকে; নগদ খায় বলে কারো ধার ধারে না। |
পয়সা দিলে বাঘের দুধ মেলে | পয়সা থাকলে যেকোন দুস্প্রাপ্য জিনিষ কেনা যায়। |
পয়সা পেলে কাঠের ঘোড়া (ধর্মরাজ) নড়েচড়ে/হাঁ করে | ভগবানও ঘুষ খায়; ঘুষের দাপট; ঘুষ ছিল, ঘুষ আছে, ঘুষ থাকবে। |
পর আর পরমেশ্বর | যার আত্মীয়স্বজন নেই তার সহায় হল পর আর পরমেশ্বর। |
পর কখনও আপন হয় না | পরকে যতই যত্ন করা হোক-না-কেন সে সবসময় পরই থাকে, আপন হয় না; আত্মা ছাড়া কেউ আপন নয়। |
পর কি বোঝে পরের ব্যথা | যার যন্ত্রণা সেই বোঝে যন্ত্রণার জ্বালা কি; অন্যের পক্ষে সেটা অনুভব করা সম্ভব নয়। |
পর রেখে ঘর নষ্ট | পরকে ঘরে পুষলে ঘরের শান্তি নষ্ট হয়। |
পরতরফে খায় ঘি, তার আবার খরচ কি? | ঘরজামাইয়ের খরচ নেই। |
পরদার পাপ বলে বাঁদী রাখে নাই; দুঃখভোগ হেতু হিন্দু করেছে গোঁসাই | পরনারী ভোগে সবজাতই বজ্জাত, এক গোয়ালের গরু। |
পরদারাং পরদ্রব্যং পরীবাদং পরস্য চ। পরিহাসং গুরোঃ স্থানে চাপল্যঞ্চ বিবর্জয়েৎ॥ (চাণক্য) | পরস্ত্রী, পরদ্রব্য, পরনিন্দা, পরকে উপহাস এবং গুরুজনের সামনে চপলতা পরিত্যাজ্য (বর্জনীয় কি কি) |
পরনিন্দা অধোগতি // পরহিংসা নরকে বাস | পরনিন্দা করা মহাপাপ; পরনিন্দা, পরহিংসা করলে নরকে স্থান হয়। |
পরোপকারঃ পূণ্যায়, পাপায় পরপীড়নম্ | পরোপকার পূণ্যের, পরপীড়ন পাপ। |
পরপ্রত্যাশী দুপোর (=দুই প্রহর) উপোসী // পরপ্রত্যাশীর অন্ন জোটে না | পরমুখাপেক্ষীর ভাগ্য ভাল হয় না। |
পরপ্রত্যাশী নর গাছে উঠে মর | যে সব বিষয়েই পরের সাহায্যের অপেক্ষায় বসে থাকে তার মরাই ভালো। |
পরভাতি তবু সয় পরঘরী/ভাতারি কিছুতে নয় // পরভাতি হলেও পরভাতারি হতে নাই // | গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য পড়ের উপর নির্ভর কয়ড়া যায়, কিন্তু পরপুরুষের উপর নির্ভর কয়ড়া অনুচিত। |
পরশ্রীকাতর ব্যক্তি সব থেকে বেশি অসুখী হয়-আরবী প্রবাদ | হিংসুটে মানুষ বড় দুর্ভাগা হয়। |
পরহস্তং গতা গতাঃ | পরের হাতে কিছু ছাড়তে নেই; তাতে সব যাবে। |
পরিতে হবে শাঁখা, তবে কেন মুখ বাঁকা | ভালো জিনিষ যখন পেতে চাও, তখন পরিশ্রমে বিমুখ কেন? |
পরিশ্রম সাফল্য চাবিকাঠি | পরিশ্রম সৌভাগ্যের মূল; পরিশ্রমের বিকল্প নেই। |
পরিশ্রমী কখনো দুঃখী হয় না | পরিশ্রমীকে ভাগ্যলক্ষ্মী সাহায্য করেন। |
পরিস্কার বিবেক বজ্রপাতেও শান্তিতে ঘুমায় | পরিস্কার বিবেকের মনের শান্তি কোনভাবে বিঘ্নিত হয় না। |
পরুষ্কারেণ বিনা দৈব ন সিদ্ধতি | শুধু দৈব ভাগ্য ফেরাতে পারে না সঙ্গে দৈবনিরপেক্ষ প্রযত্ন বা উদ্যম থাকা চাই; সমতুল্য- অজ্ঞানে আকস্মিক ও দৈব ঘটনার যুক্তি খাড়া করে; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাগ্যং ফলতি সর্বত্র, ন চ বিদ্যা ন পৌরুষম্। |
পরে তসর খায় ঘি, তার আবার খরচ কি | অর্থ স্পষ্ট; অতীতে এই দুই বস্তু আগে বিনাব্যয়ে পাওয়া যেত; সেইকারণে এই প্রবাদের সৃষ্টি; বর্তমানে অচল। |
পরের অনিষ্ট করতে গেলে নিজের অনিষ্ট হয় | পরের অনিষ্ট চিন্তা করা পাপ। |
পরের কথা লাথি চাপড়, নিজের কথা ভাত কাপড় | পরচর্চা না করে নিজের কাজে মন দেওয়া উচিৎ; পরচর্চা, পরনিন্দায় নিরত থাকলে নিয়ত ঝগড়াঝাটি হয়; নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলে অন্নের সংস্থান হয়। |
পরের কাজটা পরে করি | ধান্ধাবাজী। |
পরের কাপড়ে ধোপার নাট | ধোপা পরের কাপড় পরে বাবুগিরি করে; এই ভাবার্থে যে পরের জিনিষে বাবুগিরি করে। |
'পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও, তার মতাে সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও' | শুধু ব্যক্তিগত সুখ অন্বেষণ করে কেউ সুখী হতে পারে না; আমিত্ব নিয়ে বাঁচা যায় না; বাঁচতে গেলে সহায় চাই; সমতুল্য- 'স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে' |
পরের গাছের আমটি মিষ্টি | মানুষ ঈর্ষাকাতরতায় ভোগে। |
পরের গোয়ালে গোদান | পরের ধন দান করে পূণ্য সঞ্চয় করা। |
পরের ঘরে খায় দায়, আঠারো মাসে বছর যায় | চিন্তাভাবনাহীন অপদার্থ; গোকুলের ষাঁড়। |
পরের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার | নিজের বিপদে অপরকে এগিয়ে দিয়ে কৌশলে কার্যসিদ্ধি। |
পরের ঘোল খাবার লোভে নিজের গোঁফ কামায়। | লোভীচরিত্র; ভালো জিনিষ দেখলে সকলেরই লোভ হয়; কিছু পাওয়ার আশায় উৎফুল্ল। |
পরের চাল পরের ডাল, নদে করেন বিয়ে | আড়ম্বরের সাথে পরের ধনে নিজের কার্যসিদ্ধি করা। |
পরের ছেলে/বিড়াল খায় বনে পানে চায় | পরের ছেলে বা বিড়ালকে যতই আদরযত্ন কর-না-কেন সুযোগ পেলেই সে পালাবে। |
পরের ছেলেটা খায় এতটা, বেড়ায় যেন বাঁদরটা; নিজের ছেলেটি খায় এতটি, বেড়ায় যেন লাটিম্টি | পরের ছেলের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য; পরের কিছুই ভালো নয়, নিজের সব কিছুই ভালো। |
পরের ছেলে মোটাই/হাঁদাই // পরের ছেলের বুদ্ধি কম | পরের ছেলের সবকিছু মন্দ। |
পরের ছেলেয়/পুতে বরের বাপ | চালবাজি; পরের ছেলের বিয়েতে বরকর্তা সেজে কর্তৃত্ব করা। |
পরের জন্য গর্ত খোঁড়ে, নিজেই তাতে মরে পড়ে // পরের জন্য ফাঁদ পাতে, আপনি পড়ে মরে তাতে | পরের ক্ষতি/মন্দ করতে গেলে নিজের ক্ষতি/মন্দ আগে হয়। |
পরের ঘি পেলে প্রদীপে দেয় ঢেলে // পরের ঘি সহজে পেলে, প্রদীপ দেয় দুয়ারে মেলে | পরের জিনিষের অপচয়; হেলেফেলায় পরের দ্রব্য ব্যবহার করা অনুচিৎ। |
পরের জিনিষ পায়, হেগো পোঁদে খায় | পরের জিনিষ পাওয়া গেলে সেটি হস্তগত করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। |
পরের তেলে কাপড় নষ্ট | পরের দ্রব্য ব্যবহারের অধিকার পেলেও তার অপচয় করতে নেই। |
পরের দুঃখ কেউ বোঝে না | আত্মসর্বস্বতা; মানুষ নিজেকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। |
পরের দুধে দিয়ে ফুঁ, পুড়িয়ে এলেন নিজের মু | পরের কাজে ব্যস্ত থেকে নিজের কাজ নষ্ট করা; পরের ইষ্ট করতে গিয়ে নিজের অনিষ্ট করা; পরোপকার নিন্দনীয় নয়। |
পরের দেখে তোলে হাই, যা আছে তাও নাই | পরের উন্নতি দেখে ঈর্ষান্বিত হলে নিজের অবনতি বই উন্নতি হবে না;পরের সৌভাগ্য দেখে বসে থাকলে নিজের ভাগ্যও বসে থাকবে। |
পরের ধন আপন ছালা, যত ইচ্ছা ভরে ফেলা | মাগনায় জিনিষ পেলে ঘরে এনে ভর্তি করা; যেন মাগনায় পেলে দাদের মলমও খাওয়া যায়- এমন মানসিকতা। |
পরের ধন নিজের বুদ্ধি কেউ কম দেখে না // পরের বয়স, নিজের পরমায়ু কেউ কম দেখে না | একদর্শিতা; বিচারে এড়া; যে ধারণয় মন তৃপ্ত হয় সেটাই যেন ঠিক; নিজের বেলায় আঁটিসুটি পরের বেলায় দাঁতকপাটি। |
পরের ধনে পোদ্দারি/পোদ্দারগিরি, লোকে বলে লক্ষ্মীশ্বরী | উঁচু মেজাজে পরের ধন খরচ করা; পরের সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে নিজেই সেই সম্পদ ভোগ করে লাটসাহেবি করা। |
পরের ধনে বরের বাপ | মেয়ের বাপের কাছ থেকে বরপণ নিয়ে সেই টাকা খরচ করে বরের বাপের বড়লোকি চাল। |
পরের পিঠে বড় মিঠে // পরের বাড়ির/হাতের পিঠা খাইতে বড়ই মিঠা (খনা) | বিনাব্যয়ে পাওয়া জিনিষ বড়ই আদরের হয়। |
পরের ভাতে কুকুর পোষা | পরের পয়সায় শখ মেটানো। |
পরের ভাতে বেগুন পোড়া | মাগনায় জিনিষ পেয়ে কিছু খরচ করে নিজের মনোমত করে নেওয়া। |
পরের মন আঁধার কোণ | পরেরটা ভালো নয়; পরের মনে ঠিক কি খেলছে বোঝা দায়। |
পরের মাথা কেটে নাপিত // পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙে নিজে খায় কোষ // পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙে নিজের গোঁফে তেল | অন্যকে কষ্ট দিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করা। |
পরের মাথায় দিয়ে হাত কিরা/দিব্বি করে নির্ঘাত | কিরায় ক্ষতি হ'লে অন্যের সেটা হোক, নিজের ক্ষতি না হ'লেই হল। |
পরের মাথায় হাত বুলানো | পরের জিনিষ আত্মসাৎ করা। |
পরের মুখে ঝাল খাওয়া | নিজে না বুঝে অন্যের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করা। |
পরের লেজে পড়লে পা তুলোপানা ঠেকে, নিজের লেজে পড়লে পা আগুনপানা ঠেকে | পরের স্বার্থে সহজে নাক গলায়; নিজের স্বার্থে লাগলে ক্ষিপ্ত হয়; পরের উপর দৌরাত্ম করতে ভালোবাসে, নিজের উপর দৌরাত্ম হলে ক্রুদ্ধ হয়। |
পরের সুখ কাড়তে যেও না নিজের সুখ হারিয়ে যাবে | পরের ক্ষতি করতে নিজের ক্ষতি হয়। |
পরের সোনা দিও না কানে, কেড়ে নেবে হ্যাঁচকা টানে // পরের সোনা দিও না কানে, কান যাবে তোমার হ্যাঁচকা টানে | পরের টাকা পয়সায় বাবুগিরি করা অনুচিৎ; শখ্যতা বিগড়ালে দু'কথা শুনিয়ে দিতে পারে। |
পরের হাতে ধন, পেতে অনেকক্ষণ // পরের হাতে ধন, যেতে কতক্ষণ | পরের দায়িত্বে টাকাপয়সা থাকলে সেটা গেছেই ধরে নিতে হবে; পরহস্তং গতা গতাঃ। |
পরোপকার করে যাও কিন্তু কৃতজ্ঞতা প্রত্যাশা করো না- কনফুসিয়াস | নিঃস্বার্থ সেবাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। |
পরোক্ষে কার্যহন্তারং প্রত্যক্ষে প্রিয়বাদিনম। বর্জয়েৎ তাদৃশ্যং বন্ধুং বিষকুম্ভং পয়োমুখম্॥ (চাণক্য) | যে বন্ধু সামনে মিষ্টিকথা বলে আর পিছনে ক্ষতি করে তার মনে বিষ ও মুখমিষ্ট; এমন বন্ধু পরিত্যাজ্য। |
পর্বত মহম্মদের কাছে না গেলে মহম্মদ পর্বতের কাছে যাবে | উপকৃত নয় আসলে উপকারীই উপকৃতের কাছে যাবে এই অর্থে প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়। |
পর্বতের আড়ালে আছি | ভাল অভিভাবকের রক্ষণে থাকা, যাতে গায়ে কোন আঁচ না লাগে। |
পর্বতের মূষিক প্রসব | বিরাট কর্মকাণ্ডের অতি তুচ্ছ পরিণাম; সমতুল্য- অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার। |
পর্বতো বহ্নিমান্ ধুমাৎ | ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে; সমতুল্য- 'অকারণে কিছু হয় না','কার্য থাকলে কারণ আছে' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অকারণে হৈচৈ', 'মাথা নেই তার মাথাব্যথা' ইত্যাদি। |
পলতা গাছে পটল ফলেছে // পাঁকের মাঝে পদ্ম ফুটেছে | কুবংশে সুসন্তান জন্মেছে (পলতা তেতো,পটল মিষ্টি); নির্গুণের ঘরে গুণী সন্তান জন্মেছে; দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ। |
পশ্চিমে ধনু নিত্য খরা, পূর্বে ধনু বর্ষে ধারা- খনা | পশ্চিম আকাশে রামধনু উঠলে খরা হয়; পূব আকাশে রামধনু উঠলে অতিবৃষ্টি হয়। |
পশ্চিমে সূর্যোদয় | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি; সমতুল ইংরাজী প্রনাদ-A square peg in a round hole |
পহেলে দর্শনধারী, পিছে গুণবিচারী- হিন্দি প্রবাদ | আগে রূপ আকর্ষণ করে; গুণের বিচার তারপর হয়; সমতুল্য- 'ঠাঁট-ঠমকে বিকোয় ঘোড়া', যো দেখতা হ্যায় উও বিকতা হ্যায়'; বিরুদ্ধ উক্তি- রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশি'। |
পাঁকালমাছের গায়ে পাঁক লাগে না | সংসার নিস্পৃহ ব্যক্তি সংসারে থাকলেও সংসারের সমস্যায় নিজেকে জড়ায় না; নির্লিপ্তভাবে সংসারের কাজ করা। |
পাঁচ আঙুল সমান হয় না | সব লোক সমপ্রকৃতির হয় না; ভিন্ন রুচির্হি লোকঃ। |
পাঁচজনে মিলেমিশে থাকলে দুঃখ অনুভূত হয় না | একাকীত্ব দুঃখের প্রথম উৎস। |
পাঁচদিন চোরের একদিন গৃহস্থের/সাধুর | অন্যায় করে কেউ পার পায় না; অন্যায়ের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। |
পাঁচ নকলে আসল খাস্তা, সাত নকলে আসল ভেস্তা | কয়েকটি নকল ঠিক আছে; বহু নকল করতে গেলে মূল হারিয়ে যায়, খুঁজে আর পাওয়া যায় না। |
পাঁচ পাগলের ঘর, খোদা রক্ষা কর // পাঁচ সতীনের ঘর খোদা রক্ষা কর | কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার পথে সংখ্যাধিক্য বাধাস্বরূপ; সংসারে সতীন থাকলে ঝঞ্জাট লেগেই থাকে। |
পাঁচ রবি যে মাসে পায় ঝরা কিংবা খরায় যায়- খনা | যে বৎসর একটি মাসে পাঁচটি রবিবার পরে সেই মাসে অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি হবে। (রবিবার দোষে অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি) |
পাঁচ হাত বুকের পাটা | অতি সাহসী ব্যক্তি। |
পাঁচো আঙ্গুলি ঘি মে-হিন্দি প্রবাদ | সবদিক থেকে ল্সাভ। |
পাঁচশ জুতা গুণে খায়, ফুলের ঘায়ে মুর্ছা যায় | কখনো অসংখ্য গালাগালি সহ্য করে, কখনো বা একটা কটুকথায় জ্বলে উঠে। |
পাঁড়ে জী পছ্তায়ে বহী চালা গুড় নহি খায়ে | সাধাসধি করা সত্বেও না খেয়ে পরে নিজে থেকে সেই খাবার খাওয়া; সাধলে জামাই খান না শেষে জামাই পান না। |
পাঁশ (ছাই) পেড়ে কাটি, ভুঁয়ে না রক্ত পড়ে | ক্রোধের অভিব্যক্তি; খুব রাগের গালি। |
পা ঢাকে তো (চাদরে) মাথা ঢাকে না | অপ্রতুলতা, কৃচ্ছতার জন্য খেদোক্তি। |
পা পিছলে পড়ে যাওয়া লজ্জার নয়, সময়মত উঠতে না পারাটা লজ্জার- আরবী প্রবাদ | পড়াটা অক্ষমতা নয়; উঠে খাড়া হতে না পারাটায় অক্ষমতা, দৈন্যতা প্রকাশ পায়। |
পা রাখার জায়গা না দেখে/পেলে পা তুলো না | ভেবেচিন্তে কাজ করার উপদেশ; চলৎ একেন পাদেন তিষ্ঠতি একেন বুদ্ধিমানঃ। |
পা না ভিজল যার, বড় কৈমাছটা তার | পরের পরিশ্রমের ফলে ভাগদারীর অন্যায় দাবি; একটুও না খেটে বেশিভাগ পাওয়ার অন্যায় দাবী। |
পা বড় না পেট বড়? | পা চলে বলে অন্ন জোটে, নাকি অন্ন জোটে বলে পা চলে? চিরকালের অমিমাংসিত দ্বন্দ্ব। |
পাইলাম থালে, দিলাম গালে; পাপ নাই তার কোন কালে | মালিকানাহীন পড়ে থাকা জিনিস যে পাবে তার। |
পাকলে ডুমুর পড়ে মর | পাকা ডুমুর কোন কাজে লাগে না, এই অর্থে- বৃদ্ধলোকের কোন দাম নেই; বৃদ্ধলোক বিদায় হোক। |
পাকা আম দাঁড়কাকে খায় | অযোগ্যের উত্তমসামগ্রী ভোগ করা দেখে খেদোক্তি; সুন্দরী নারীর কুৎসিত পুরুষ-সঙ্গী হওয়া দেখে খেদোক্তি। |
পাকা আম দাঁড়কাকে ঠোকরায় | লোভীচরিত্র; ভালো জিনিষ দেখলে সকলেরই লোভ হয়; পাক বা না পাক একবার পেতে চেষ্টা করে। |
পাকা ধানে মই দেওয়া | প্রায় শেষ হয়ে আসার মুখের কাজ পণ্ড করা; সাফল্যের মুখে অন্যের অনিষ্ট করা। |
পাকা লোক ফাঁকা কথায় ভোলে না | চালাককে বোকা বানানো যায় না। |
পাখি উড়ে যায় তার পালকের গুণে | দক্ষব্যক্তি তার দক্ষতার গুণে কাজ সুসম্পন্ন করে; দক্ষতা থাকলে কাজে অসুবিধা হয় না। |
পাখি পড়া মত পড়ানো | কাউকে এক বিষয়ে বারবার উপদেশ দেওয়া। |
পাখির প্রাণ অল্পেই যান | ক্ষীণজীবী সহজে কাবু হয়। |
পাগল কি গাছে ফলে, আক্কেলেতে পাগল বলে | আক্কেল গেলেই লোকে পাগলামি করে; পাগলামি করলে লোকে পাগলই বলবে। |
পাগল না ছাগল // পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায় | উভয়ই সমান; উভয়েরই কোন জ্ঞানগর্মী নেই, খাদ্যাখাদ্যের বাছবিচার নেই। |
পাগলা ভাত খাবি, না হাত ধোব কোথায়? | কাউকে কোন কাজের প্রস্তাব দিলে সে সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুত। |
পাগলা সাঁকো নাড়িস নে, ভাল মনে করে দিয়েছিস | পাগলকে সাঁকো নাড়ারে বারণ করলে সে ঘনঘন নাড়ে আর জোরে জোরে সাঁকো নাড়ায়; অনেক বেয়াড়া লোক আছে যাকে কোন কাজ করতে নিষেধ করলে সেটা বেশি করে। |
পাগলা নাও ঝুলাইস/দোলাস না; কী–আমি তো বাতায় খাড়া। | সেয়ানা পাগল; বাতা খোলা চালের ঢালু মুখ; সুততাং সে আরও বিপজ্জনক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। |
পাগলের গোবধে আনন্দ | এড়ালোক অন্যায় কাজ করেও আনন্দ পায়; নির্বোধের পাপপূণ্য বোধ নেই; সমতুল্য-অবোধের গোবধে আনন্দ |
পাগলের সাত খুন মাপ | পাগলের কোন শাস্তি হয় না। |
পাঠান মুঘল হদ্দ হল, ফারসি পড়ে তাঁতি | কঠিন কাজে অর্বাচীনের আগবাড়ানো দেখে বক্রোক্তি; চন্দ্র সূর্য অস্ত গেল, জোনাকি ধরে বাতি। |
পাণৌ পয়সা দগ্ধে তক্রং ফুৎকৃত্য পামরাঃ পিবন্তি | গরমদুধে মুখ পুড়লে নির্বোধেরা ঘোলে ফুঁ দিয়ে খায়; নির্বোধের কোনদিন বুদ্ধি হয় না। |
পাত্রপাত্রীর দেখা নাই, শুক্রবারে বিয়ে | অতি আগাম পরিকল্পনা; সমতুল্য- 'কালনেমির লঙ্কাভাগ', 'রাম না হতে রামায়ণ; |
পাথর জলে হাজার বছর ডুবে থাকলেও রসসিক্ত হয় না | নির্গুণ কখনো গুণী হয় না। |
পাথর পচে না // পাথরে ঘুণ ধরে না // পাথরে মরচে পড়ে না | গুণহীনের গুণ নষ্ট হয় না; নির্বোধের বুদ্ধি হয় না বুদ্ধিনাশও হয় না ইত্যাদি। |
পাথরে লেখা মোছে না | পরিশ্রমের ফল বৃথা যায় না। |
পাথরের সেতু পার হওয়ার আগে পাথরটা পরীক্ষা করে নিও- জাপানী প্রবাদ | পরিণতির কথা চিন্তা করে কাজ করা উচিত; সমতুল্য- 'ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও নয়া'। |
পাদপানাং ভয়ং বাতাৎ পদ্মানাং শিশিরাদ্ভয়ম্। পর্বতানাং ভয়ং বজ্রাৎ সাধূনাং দুর্জনাদ্ভয়ম্॥ (চাণক্য) | বৃক্ষের ভয় ঝড়কে, পদ্মের ভয় শীতকালকে, পর্বতের ভয় বজ্রকে আর সজ্জনের ভয় দুর্জনকে। |
পাদ্নমেকং নঃ গচ্ছামি | কোথাও যাওয়ার তীব্র অনিচ্ছা প্রকাশ। |
পান পুতলে শ্রাবণে খেয়ে না ফুরায় রাবণে- খনা | শ্রাবণ মাসে পান চাষ করলে এত পান জন্মে যে রাক্ষসের মত খেলেও শেষ হয় না। |
পান হতে চূন খসে না | কাজে সামান্যতম ভুলত্রুটি হয় না বা সহ্য করে না। |
পানাপুকুরে ডুবে মরা | অতিসতর্ক থেকেও সামান্য ভুল করা; পচা শামুকে পা কাটা। |
পানিতে/জলে কুমির ডাঙায় বাঘ | দুদিকেই বিপদ, রক্ষার কোনো পথ নেই; উভয়সঙ্কট। |
পান্তা ভাত ফুঁ দিয়ে খায় | অতীত বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা থেকে অতি সতর্কতা। |
পান্তাভাতে ঘি নষ্ট, বাপের বাড়ী ঝি নষ্ট | বিবাহিতা মেয়ের বাপের বাড়ী থাকা উচিত নয়। |
পান্তাভাতে নুন জোটে না, গরমভাতে/বেগুনপোড়ায় ঘি | অবস্থার অতিরিক্ত আশা করা; অযৌক্তিক আবদার। |
পাপ কত ছোট দেখো না, দেখো যাঁর অবাধ্যতা করছ তিনি কত বড়- আরবী প্রবাদ। | বড়র বেশি শাস্তি পাওয়া উচিৎ। |
পাপ করলেই ভুগতে হয়, কথাটা যেন মনে রয় | মনে রেখো পাপের শাস্তি অনিবার্য। |
পাপ করলেই যমের ভয় // পাপমনে বড় ভয় | পাপী মরতে ভয় পায়; পাপী সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকে; পূণ্যাত্মার এসব কিছু ভয় নাই। |
পাপ ছাড়া সব কাজই ছোট আকারে শুরু হয় | অতি ক্ষুদ্রমাত্রার পাপও অতি ঘৃণ্য। |
পাপ বাপকেও ছাড়ে না | পাপ করলে শাস্তি পেতেই হবে। |
পাপও লুকায় না, সাগরও শুকায় না | যেমন সাগর শুকানো অসম্ভব তেমনই পাপ লুকানো অসম্ভব। |
পাপকে ঘৃণা কর, পাপীকে নয় | পাপ ঘৃণ্য, পাপী নয়; পাপ সংশোধন হয় না, পাপীর সংশোধন হয়। |
পাপীদের দেখে জীবন কি জানা যায় | গাঢ় অন্ধকারে থেকে বোঝা যায় আলোর মূল্য কি। |
পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায় | অসৎ পথে উপার্জিত ধন ভোগে আসে না, কুপথে বিনষ্ট হয়। |
পাপের বোঝা বড় ভার | পাপ করলে মনের উপর অসহ্য চাপ পড়ে। |
পাপের লেশ সুখের শেষ | বিন্দুমাত্র পাপ সঞ্চিত হলেই সুখ অন্তর্হিত হয়। |
পায়ের জুতা মাথায় উঠেছে // পায়ের জুতা মাথায় চড়ে | নীচব্যক্তির আকস্মিক সম্মানপ্রাপ্তি; কোন নীচব্যক্তিকর্তৃক উচ্চব্যক্তির অসম্মান। |
পায়ের যোগ্য মানুষ নয় গায়ে হাত দিয়ে কথা কয়। | নিম্নস্তরের লোকের উচ্চস্তরের কথা বলা। |
পার (খাল) হ’লে পাটনি শালা | কৃতঘ্নচরিত্র; জেনেবুঝে উপকারীর ঋণ অস্বীকার করা; কাজের বেলায় কাজি, কাজ ফুরালেই পাজি। |
পারা (=পারদ) আর পাপে কার সাধ্য চাপে | পারা খেলে একসময় গা ফুঁড়ে বেরুবেই; তেমনি পাপ কখনো লুকানো যায় না; পাপও লুকায় না, সাগরও শুকায় না। |
পারের কর্তা হরি, দিবেন চরণতরি। | সংসাররূপ সাগরের পারাপারের কর্তা শ্রীহরি; তাঁর চরণে আশ্রয় নিলে তিনি বৈতরণী নদী পার করে দেবেন। |
পালাতে না পেরে পোষ মানা | পালাবার সুযোগ না থাকলে অনুগত হয়ে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। |
পালাতে না পেরে মোড়লের বেহাই | কৌশলে কার্যোদ্ধার; কোন একটা দোহাই দিয়ে জাল কেটে বেরুনো চেষ্টা |
পাশের বাড়ী বিয়ালো গাই, সেই সুত্রে পাড়াতো ভাই | দূর আত্মীয়সম্পর্কে তাচ্ছিল্য প্রকাশ |
পাহাড়ের আড়ালে থাকা | ভাল অভিভাবকের রক্ষণে থাকা ভালো যাতে কোন আঁচ না লাগে। |
পাহাড়ের চূড়ায় চড়ো না তাহলে চূড়া থেকে তুমি নীচের সকলকে ছোট দেখবে আর নীচের সকলে তোমাকেও ছোট দেখবে- আরবী প্রবাদ | খুব বড় হ'তে হ'বে না আবার খুব ছোট হ'তে হ'বে না; উভয়ক্ষেত্রেই সকলের থেকে বিরাট দূরত্ব সৃষ্টি হবে। |
পাহাড়ের চূড়ায় যে প্রথম চড়ে সে যেখানে খুশি বসতে পারে | শ্রেষ্ঠর নানাবিষয়ে নির্বাচন করার অনেক সুবিধা। |
পাহাড়ের চূড়ায় মাত্র কয়েকজনই চড়ে | শ্রেষ্ট হওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার; খুব অল্পজনই তা পারে; শ্রেষ্ট একমেবাদ্বিতীয়ম। |
পাহাড়ের মতই পুরাতন | অতিপ্রাচীন। |
পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর | ঘরে বসে সারা পাড়ার খবর রাখা; ঘরে বসে কেল্লামারা। |
পিঁপড়ে যত ক্ষুদ্রই হোক তার সব জীবনদায়ক অঙ্গ আছে- চীনা প্রবাদ | ক্ষুদ্রকে অবজ্ঞা করতে নেই। |
পিঠা খায় পিঠের ফোঁড় গণে না | দায়দায়িতহীন লক, সংসারের কোন খোঁজ রাখে না; কত ধানে কত চাল জানে না। |
পিঠা খায় মিঠার জোরে/লোভে | যা মিষ্টি তাই উপাদেয়; কোন কাজে যদি ভাল প্রাপ্তিযোগ থাকে, তবে সেই কাজে আগে ছোটে। |
পিঠে বলো মিঠা বলো ভাতের বাড়া নাই; পিসী বলো মাসী বলো, মার বাড়া নাই | যেমন ভাতের সাথে অন্য কোন খাদ্যের তূলনা চলে না তেমনি স্তান কেউ নিতে পারে না। |
পিঠে বেঁধেছি কুলো, কানে দিয়েছি তুলো | নির্বিকার, কোনকিছুতে ভ্রুক্ষেপ নেই। |
পিন্ডি পায় না, কেত্তন চায়/গায় | অবস্থার অতিরিক্ত বাসনা; মুল কাজ হয় কিনা সন্দেহ, তার আবার আড়ম্বরের বায়না। |
পিতলের কাটারির কাজে নেই ধার, ঝকমকই সার // পিতলকা কটারী কামে নাহি আবল, উপরহি ঝকমক সার- হিন্দি প্রবাদ | জমকালো চেহারা, কিন্তু কাজে একেবারে অচল; মাকালফল, রাঙামূলা। |
পিতলের সরা জাঁকে ভরা | উৎকৃষ্টের গুমর; কাজ হোক-বা-না-হোক শব্দ আছে; কাজে কম, কথায় ঝাঁজ বেশি। |
পিতা রক্ষতি কৌমারে, ভর্তা রক্ষতি যৌবনে। পুত্রশ্চ স্থবিরে ভাবে, ন স্ত্রী স্বাতন্ত্র্যমর্হতি॥ (চাণক্য} | বাল্যে পিতার, যৌবনে ভর্তার এবং বার্ধক্যে পুত্রের অধীনে নারী থাকিবেন স্ত্রীগণের পক্ষে যথেচ্ছচারী হওয়া অনুচিত। |
পিতার বয়সে কলমা নেই; গালভর্তি দাড়ি | বাপ-দাদারা কলমা (=কোরাণের মন্ত্র) পড়ে নি, ছেলের মোল্লা সাজার ইচ্ছা; বাপ-দাদা থেকে বেশি গুণসম্পন্ন জাহির করার চেষ্টা। |
পিতাঃ স্বর্গ, পিতাঃ ধর্মঃ পিতা হিঃ পরমন্তপঃ। পিতরি প্রিতিমাপন্ন্যে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা॥ (চাণক্য) | পিতা স্বর্গসমান, পিতা ধর্মসমান, পিতাই একমাত্র পরমপূজ্য; পিতা খুশী হলে সকল দেবতারা খুশী হন। |
পিপাসার অন্ত নেই | আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। |
পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে | ধ্বংসের আগে অনেকের বাড় বাড়ে; বাড়াবাড়ি হলে সর্বনাশ হয়। |
পিসী বল মাসী বল মার বাড়া নেই; পিঠে বল মিঠে বল ভাতের বাড়া নেই | মায়ের স্নেহের তুলনা হয় না; ভাত খাওয়ার তৃপ্তির হয় না; |
পীত্বা রসং তু কটুকং মধুরং সমাননম্, মাধুর্য্যমেব জনয়ন্মধুমক্ষিকাসৌ।সন্তস্তথৈব সমসজ্জনদুর্জনানাং শ্রুত্বা বচো মঘুরসূক্তরসং সৃজন্তি॥ (চাণক্য) | মৌমাছি যেমন কটু বা মধুর রস পান করে মধুর রসই প্রদান করে তেমনই সদব্যাক্তিরা সজ্জন ও দুর্জন,উভয়ের কথা শ্রবণ করে মাধুর্যযুক্ত বাক্য সৃজন করে থাকেন। |
পীর বরাবর নেড়ে, সোনার খুরে এঁড়ে | নীচ-মুসলমান পীরের নামেও দিব্বি কাটলেও তাকে বিশ্বাস করা নেই; ষাঁড়ের খুর সোনায় মুড়ে দেওয়া হলেও তাকে বিশ্বাস করা নেই। |
পীরিত বিনে সুহৃদ নেই | প্রীতি না জন্মালে বন্ধু হয় না। |
পীরিত যেখানে বিচ্ছেদ সেখানে | অবিমিশ্র সুখ হয় না। প্রণয় থাকলে বিচ্ছেদের ভয় থাকে; গোলাপের কাঁটা আছে; পদ্মের কাঁটা আছে; চাঁদের কলঙ্ক আছে ইত্যাদি। |
পীরিতের নৌকা পাহাড়ে চলে | প্রণয় গাঢ় হলে দূররিক্রম্য বাধাকে অনায়াসে অতিক্রম করা যায়। |
পীরিতি কাঁঠালের আঠা ধরলে পরে ছাড়ে না | জগত প্রেমময়; একবার প্রেমে পড়লে সবাই জোয়ারে ভাসে। |
পীরিতি গাছের ফল নয়, যেখান সেখানে মেলে না | খাঁটি প্রেম সহজলভ্য নয়। |
পুঁজি নেই তার পাঁজি আছে | কিছু করে খাওয়ার ক্ষমতা নেই ভাবে পূজা আর্চা করলে । |
পুঁড়োর (=এক কৃষিজীবী জাতি) মেয়ে বেগুন চেনে না | জাতে উঠলে নিজের পূর্ব পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করে। |
পুড়ে পুড়ে রাঁধুনি | কিছু শিখতে গেলে অনেক পরিশ্রম করতে হয়, অনেক ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়। |
পুকুর কাত | নির্লজ্জ মোসাহেবি; (উৎস-পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে এক জমিদারের মনে হল দক্ষিণদিকের তুলনায় উত্তরদিকটা বেশি উঁচু; মোসাহেবের তাৎক্ষণিক উত্তর-দক্ষিণদিকে পুকুরটা কাত। |
পুকুর কেটে নাওয়া | ঘাটে নাইতে গিয়ে অনেক্ষণ দেরী করা, যেন পুকুর কাটার জন্য দেরী হয়েছে। |
পুকুর চুরি | বিরাট আকারের চুরি; বেমালুম আত্মস্মাৎ। |
পুত্রপৌত্রগুণোপেতঃ শাস্ত্রজ্ঞো মিষ্টপাচকঃ। শূরশ্চ কঠিনশ্চৈব সূপকারঃ স উচ্যতে।। (চাণক্য) | পুত্র-পৌত্র আছে এমন, পাকশাস্ত্রে নিষ্ণাত বা অভিজ্ঞ, যার তৈরি আহার মধুর আস্বাদযুক্ত, বলবান এবং দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তি উপযুক্ত পাচক বলে পরিগণিত হন। |
পুত্রপ্রয়োজনা দারাঃ পুত্রঃ পিণ্ড প্রয়োজনঃ। হিতপ্রয়োজনং মিত্রং ধনং সর্বপ্রয়োজনম্॥ (চাণক্য) | পুত্রের জন্য স্ত্রী চাই; পিণ্ডদানের জন্য পুত্র চাই; হিতের জন্য বন্ধু চাই; সবকিছুর জন্যই চাই ধন। |
পুনর্মূষিকো ভব | যা ছিলে আবার তাই হও; বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি আগের অবস্থা হয়। |
পুনকে (=১/১৬ভাগ) শত্রু বড় আপদ | শত্রু যত ক্ষুদ্রই হোক, তাকে তাচ্ছিল্য করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়) |
পুরানো চাল ভাতে বাড়ে | পুরানো জিনিষ থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়; সেইজন্য পুরানো জিনিষের কদর বেশি। |
পুরানো পাপী | দাগী আসামী; আগে দুষ্ট ছিল; বর্তমানে সাধু হয়েছে, কিন্তু পুরানো অভ্যাস ছাড়তে পারছে না। |
পুরানো বন্ধু ও পুরানো মদ সর্বোৎকৃষ্ট | পুরানো জিনিস সোনার সমান। |
পুরানো বন্ধুর চেয়ে ভাল আয়না হয় না | পুরানো বন্ধুর কাছে সব ভালো জিনিষ শেখা যায়। |
পুরুষের দশ দশা, কখনো হাতী কখনো মশা | পুরুষের ভাগ্য প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়; কখনো সুখ, কখনো বা দুঃখ। |
পুস্তকস্থা তু যা বিদ্যা পরহস্তগতং ধনম্। কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যা ন তদ্ধনম॥ (চাণক্য) | বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম; প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয় বা ধনই নয় |
পূজায় মন নেই, নৈবিদ্যে চোখ/মন | কাজে মন নেই; খালি প্রাপ্তির দিকে নজর; বামুনের কপট আচারের প্রতি বক্রোক্তি। |
পূজার সঙ্গে খোঁজ/যোগ নেই, কপালজোড়া ফোঁটা | ভড়ংসর্বস্ব যজমানে বামুন; কাজের সঙ্গে যোগ নেই, অথচ জাহির করায় খামতি নেই। |
পূণ্যস্য ফলমিচ্ছন্তি পূণ্যং নেচ্ছন্তি মানবাঃ। ন পাপফলমিচ্ছন্তি পাপং কুর্বন্তি সর্ব্বতঃ।। (চাণক্য) | মানুষ পূণ্যকর্মের ফল চায়, কিন্তু পুণ্যকর্ম করতে চায় না; সর্বত্র পাপকর্ম করে বেড়ায়। |
পূণ্যকর্ম পুরস্কারের অপেক্ষায় থাকে না | কর্মই তার পুরস্কার। |
পূতিশাকং, মৃতং মাংসং করেণ মথিতং দধি। তর্জ্জন্যা দন্তসংস্পৃষ্টং তুল্য গোমাংসভক্ষণম্।। (চাণক্য) | পচা দুর্গন্ধযুক্ত শাক, মৃতজীবের মাংস হস্তদ্বারা মথিত দধিভক্ষণ এবং তর্জনীদ্বারা দন্তস্পর্শ করা গোমাংস ভক্ষণের সমতুল। |
পুত্রভাগ্যে যশ ভরে; কন্যা ভাগ্যে লক্ষ্মী ঘরে- (খনা) | সুপুত্রে পরিবারের সুনাম বাড়ে; কন্যারত্ন লক্ষ্মীর সমান। |
পুস্তকস্থা তু যা বিদ্যা পরহস্তগতং ধনম্। কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যা ন তদ্ধনম্।। (চাণক্য) | যে অধীত বিদ্যা পুঁথিতেই থেকে যায় (অর্থাৎ কাজে প্রয়োগের সময় মনে পড়ে না), যে ধন পরের হাতে চলে গেছে (অর্থাৎ নিজের অধিকারে নেই)- প্রয়োজনের সময় তা পাওয়া যায় না বলে সেই বিদ্যাকে বিদ্যা বলা চলে না, সেই ধনকে ধন বলা চলে না। |
পূবে হাঁস, পশ্চিমে বাঁশ; উত্তরে কলা, দক্ষিণে খোলা/মেলা (খনা) | বাড়ীর পূর্বদিকে পুকুর থাকবে, পশ্চিমদিকে বাঁশঝাড় থাকবে; উত্তরদিকে কলাবন থাকবে; এবং দক্ষিণদিক খোলা থাকবে। |
পূর্ণ আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়, সেই বছরে বন্যা হওয়- খনা | সারা আষাঢ় মাস ধরে দক্ষিনা বাতাস বইলে সেই বছর বন্যা হবেই হবে। |
পূর্ণকুম্ভো ন করোতি শব্দম্ | ভরা কলসির আওয়াজ নেই; জ্ঞানীব্যক্তি বিদ্যার বড়াই করে না। |
পূর্ণাঙ্গ মানুষ দুইপ্রকারের হয়- এক, যারা মৃত এবং দু্ই, যারা জন্মায় নি- চীনা প্রবাদ | ্মানুষ অপূর্ণাঙ্গ, তাই ট্যারা ভুল করে। |
পৃথিবী যেন একটি মই যেখানে কেউ ওপরে চড়ে আবার কেউ নীচে নামে- জিপসি প্রবাদ | সারা পৃথিবী জুড়ে উত্থান ও পতনের খেলা চলছে। |
পেঁয়াজও গেল পয়জারও হল | পরিশ্রমের কোন ফল পাওয়া গেল না; উপরন্তু অপমানিত হ'তে হল। |
পেট একখান আর মুখ একখান // পেটে এক মুখে এক | বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, ভাবে এক আর বলে এক। |
পেট কাটলে মশাও মরে, হাতিও মরে | বিপদ ছোট-বড় সবার পক্ষেই সমান বিপদজনক; বিপদ কাউকে রেয়াত করে না। |
পেট খুঁজলে ক অক্ষর পাওয়া যায় না | মহামূর্খ; অক্ষরজ্ঞানশূন্য; পেটে বিদ্যা নেই। |
পেট জ্বলে ভাতে সোনার আংটি হাতে // পেট জ্বলে ভাতের তরে, সোনার আংটি হাতে পরে | অভাব লুকোতে বাবুগিরি; ঘরে যার উনুন জ্বলে না বাইরে তার আড়ম্বরের ঘটা। |
পেট ভরলে পাথরে গন্ধ // পেট ভরলে ভাজা মাছ গাছ গাছ // পেট ভরলে মণ্ডা তেতো | পেট ভরা থাকলে সব খাবারই বিস্বাদ মনে হয়। |
পেট ভরে তো নজর/মন ভরে না | দৃষ্টিক্ষুধা; আকাঙ্ক্ষার শেষ নাই। |
পেটে আসে তো মুখে আসে না | বুঝলেও বলতে না পারা। |
পেটে কালির আঁচড় নেই | অক্ষরজ্ঞানশূন্য; পেট খুঁজলে ক অক্ষর পাওয়া যায় না। |
পেটে খিদে মুখে লাজ | পাওয়ার ইচ্ছা আছে, কিন্তু প্রকাশে লজ্জা। |
পেটে খেলে পিঠে সয় | কিছু লাভের আশায় দুঃখকষ্ট সহ্য করা যায়। |
পেটে দড়ি বেঁধে পড়ে আছে | দীর্ঘদিন অন্নের কোন সংস্থান নেই। |
পেটে নাই বিদ্যার অংশ ক অক্ষর গোমাংস // পেটে বোমা মারলেও কিছু বের হবে না | মহামূর্খ; পেটে বিদ্যা নেই। |
পেটে ভাত নেই কোঁচা লম্বা // পেটে ভাত নেই ঠোঁটে আলতা // পেটে ভাত নেই দাঁতে মিশি // পেটে ভাত নেই ফোঁটায় দড় | ভিতর অন্তঃসারশূন্য, বাইরে আড়ম্বর। |
পেটের আগুনে বেগুন পোড়ে | প্রচণ্ড খিদে। |
পেটের বাছা বাড়ির গাছা (গাছগাছালি) | উভয়ই কল্যাণপ্রদ; উভয়ের কাছ থেকেই উপকার পাওয়া যায়। |
পেটের ভাত চাল হল | আসন্ন বিপদের আশঙ্কয় খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। |
পেটের ভাত হজম না হওয়া | নানাকারণে ছটফট করা |
পেটের ভিতর হাত পা সেঁধোয় | প্রচণ্ড ভয়ে সংকুচিত। |
পেয়াদার আবার শ্বশুরবাড়ী | যার বিশ্রামের ফুরসৎ নেই তার আবার আমোদপ্রমোদ। |
পেরেকের মাথায় আঘাত করা | সঠিকস্থানে ঘা দেওয়া। |
পেশীশক্তি থেকে বুদ্ধিশক্তি বেশি বলবান | পেশী ও বুদ্ধির লড়াইয়ে বুদ্ধির জয় নিশ্চিত। |
পৈতা থাকলেই বামুন হয় না | চেহারা সবসময় সত্যকথা বলে না; সমতুল্য- 'চকচক করলেই সোনা হয় না', 'মন্দিরে গেলেই সাধু হয় না' ইত্যাদি। |
পৈতা পুড়িয়ে ব্রহ্মচারী/সন্ন্যাসী | ভেকসন্নাসী; বুদ্ধির দোষে সবদিক নষ্ট করা ব্যক্তি। |
পোড়া কপাল জোড়া লাগে না | অভাগার কখনো ভাগ্যায ফেরে না; সমতুল্য- 'অভাগা যায় বঙ্গে, কপাল যায় সঙ্গে'। |
পোলা হওয়ার খবর নাই হাজমের লগে দোস্তি | ছেলে এখন হয় নি আগে থেকেই সুন্নত করার তোড়জোড়; গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল। |
পৌষের শীত মোষের গায় মাঘের শীত বাঘের গায় | পৌষমাসের শীতে মোষ কাতর হয়, কিন্তু মাঘমাসের প্রচণ্ড শীতে বাঘ পর্যন্ত জড়োসড় হয়; |
প্রকৃত বন্ধুরা তারার মত, তাদের সবসময় দেখা যায় না, কিন্তু তারা সবসময় আকাশে থাকে- আরবী প্রবাদ | প্রকৃত বন্ধুরা নিঃশব্দে আড়ালেই থাকে। |
প্রচ্ছদ রেখে বইয়ের বিচার করো না | বাহ্যিক আচার-ব্যবহার দেখে মানুষ চেনা যায় না। |
প্রজাপ্রতির নির্বন্ধ | বিধাতার অলঙ্ঘনীয় বিধান। |
প্রতারণা মিথ্যার চেয়েও ভয়ঙ্কর | প্রতারণায় উপরচালাকি, দুরভিসন্ধি থাকে। |
প্রতি-আক্রমণই আত্মরক্ষার প্রকৃষ্ট উপায় | আগ্রাসন মনে শক্তি যোগায়। |
প্রতিকারের উপায় না থাকলে সহ্য করতে হয় | টিকে থাকতে এ ছাড়া উপায় নেই। |
প্রতিটি অর্জনের সাথে আমাদের একটু একটু করে ক্ষয় হয় | অর্জন থাকলে বিসর্জনও আছে; বয়স বাড়লে আয়ু কমে। |
প্রতিটি পদক্ষেপে যে অতিরিক্ত ভাবে সে চায় ইচ্ছা তার এক পায়ে থাকুক- চীনা প্রবাদ | বেশি চিন্তা করলে এক পাও এগুনো যায় না। |
প্রতিডুবেই কি শালুক উঠে? | প্রতি উদ্যোমেই ফল পাওয়া যায় না। |
প্রতিবাদ হীরকসমান | অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত, নির্বিচারে মেনে নেওয়া যায় না; বিরুদ্ধ প্রবাদ- নীরবতা হিরণময়। |
প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করো না, যে বিশ্বস্ততার সাথে তোমার পাশে বাস করে- ইহুদী প্রবাদ | প্রতিবেশীকে ভালবাসাই হল সহনশীলতা শিক্ষার প্রথমধাপ; যিশু বলেছেন- তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসো। |
প্রতিভাবানেরা চুপ থাকতে ভালবাসে; অন্যেরা তাদের অজ্ঞতা ব্যাখ্যা করে। | জ্ঞানীর প্রচার লাগে না; জাহির করতে গিয়ে অজ্ঞানী নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করে। |
প্রতিভাবানেরা সঙ্গত খোঁজে | একমাত্র প্রতিভাবানেরাই প্রতিভাবানদের চিনতে ও বুঝতে পারে। |
প্রতিভাবানেরা সমস্যা প্রতিরোধ করে; বুদ্ধিমানেরা সমস্যার সমাধান করে; অজ্ঞানেরা সমস্যা সৃষ্টি করে। | যে যার কাজ নিজের পছন্দমত বেছে নেয়। |
প্রতিভোরে আমরা নতুনভাবে জন্ম নিই; আজকে যা করি সেটাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ- জাপানী প্রবাদ | অতীত নয়, ভবিষ্যতও নয়, কেবল আজই সত্য। |
প্রতিশোধ নেওয়ার কাজে প্রবৃত্ত হওয়ার আগে দুটি কবর খুঁড়ে রেখো- কনফুসিয়াস | দ্বন্দ্বে উভয়েরই ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব খেলনা ঘোড়া থাকে- চীনা প্রবাদ | প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দের বিষয় থাকে। |
প্রত্যেক মেঘের একটা রূপালী আস্তরণ থাকে | প্রত্যেক মন্দেরই একটি ভালো দিক আছে। |
প্রত্যেকেই অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায়, নিজের দোষে অন্ধ- আরবী প্রবাদ | মানুষের স্বভাব হল আত্মপ্রশংসা করা এবং পরের নিন্দা করা। |
প্রত্যেকের প্রতি এমন আচরণ কর যেন তারা তোমার অতিথি- চীনা প্রবাদ | যে তোম্যার কাছে আসে সে নারায়ণ সমান। |
প্রথমদর্শনে মানুষকে বিচার করা যায় না | মানুষ চিনতে সময় লাগে। |
প্রথমে আসার অর্থ প্রথম সফল- চীনা প্রবাদ | অগ্রবর্তীরাই সফল হয়; সমতুল্য- 'ভোরের পাখি পোকা ধরে'। |
প্রথমে নার্জিতা বিদ্যা দ্বিতীয়ে নার্জিতং ধনম্। তৃতীয়ে নার্জিতং পুণ্যং চতুর্থে কিং করিষ্যতি॥ | যিনি জীবনের প্রথমভাগে (বাল্যে) বিদ্যার্জন করেননি, দ্বিতীয়ভাগে (যৌবনে) ধন অর্জন করেননি,তৃতীয়ভাগে (প্রৌঢ়ত্বে) পুণ্যার্জন করেন নি, তিনি চতুর্থভাগে (বার্ধক্যে) আর কী করবেন? |
প্রদীপের কোলে অন্ধকার // প্রদীপের নীচেই অন্ধকার১ | ভালো ও মন্দের সহাবস্থান; পৃথিবীর আধা আলো, আধা কালো; সমতুল্য- দেবালয়ে শয়তানের বাস'। |
প্রদীপের কোলে অন্ধকার // প্রদীপের নীচেই অন্ধকার২ | অনেক জ্ঞানী আছেন, যাঁরা অপরের দোষ দেখেন এবং সংশোধন করেন, কিন্তু নিজের দোষ দেখতে পান না; সমতুল্য- চিরাগকা নীচ্ আন্ধেরা'। |
প্রদোষে নিহতঃ পন্থাঃ পতিতা নিহতাঃ স্ত্রিয়ঃ। অল্পবীজং হতং ক্ষেত্রং ভৃত্যদোষাদ্ধতঃ প্রভুঃ।। (চাণক্য) | সন্ধ্যাকালে পথ দেখা যায় না, চরিত্রহীন নারীর জীবন মৃত্যুর সমান, যে ক্ষেতে অতি সামান্য ফসল হয় তা কোন উপকারে আসে না, ভৃত্যের দোষে প্রভুর অপকারই হয়। |
প্রফুল্ল হৃদয়ের সুন্দর মুখায়ব হয় | মানসিক প্রশান্তির একটা আলগা সৌন্দর্য থাকে। |
প্রবোধই প্রবোধয়ে | সান্ত্বনাই শান্তি দেয়। |
প্রভূতমল্পকার্যং বা যো নরঃ কর্ত্তুমিচ্ছতি। সম্যগ্ যত্নেন তৎ কুর্যাৎ সিংহাদেকং প্রকীর্তিতম্ ।। (চাণক্য) | যে ব্যক্তি ক্ষুদ্র বা মহৎ যে কোন কাজ করতে চান তিনি সেই কাজ খুব ভালোভাবে যত্নের সঙ্গে করবেন- সিংহের কাছ থেকে এই একটি শিক্ষণীয়ের কথা বিদ্বানেরা বলে থাকেন। |
প্রয়োজন দৈত্যের সৌন্দর্যবোধ নেই | প্রয়োজনে বিলাসিতার দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয় না। |
প্রয়োজন সব আবিষ্কারের জননী | সব আবিস্কারের পিছনে প্রয়োজন তাগিদ কাজ করে। |
প্রয়োজনে নিয়ম নাস্তি // প্রয়োজনীয়তা কোন নিয়ম মানে না | প্রয়োজন শৃঙ্খলা মেনে চলে না; সমতুল্য- 'অকালে/আকালে কি না খায়'। |
প্রহারেণ ধনঞ্জয় | দুর্বিনীত শায়েস্তা করতে প্রচণ্ড প্রহার। |
প্রাজ্ঞে নিযোজ্যমানে তু সন্তি রাজ্ঞস্ত্রয়ো গুণাঃ। যশঃ স্বর্গনিবাসশ্চ বিপুলশ্চ ধনাগমঃ।। (চাণক্য) | রাজা যদি প্রাজ্ঞ ব্যক্তির উপর কার্যভার ন্যস্ত করেন তবে তাঁর তিনটি জিনিস লাভ হয়- যশ, স্বর্গলাভ এবং প্রভূত অর্থলাভ। |
প্রাণমেব পরিত্যজ্য মানমেভাবি রক্ষতু | প্রাণ দিয়েও মান রক্ষা করবে। |
প্রাপ্তকালো ন জীবতিঃ | কাল পূর্ণ হলে জীব বাঁচে না। |
প্রায় শেষ করা আর একেবারেই শুরু না করা একই কথা- ইংরাজী প্রবাদ | অসম্পূর্ণ কাজের কোন মূল্য নেই। |
প্রাসাদের দূঃখ থেকে কুঁড়েঘরের আনন্দ অনেক ভালো-চীনা প্রবাদ | ঐশ্বর্যের পরতে পরতে কান্না লুকিয়ে থাকে। |
প্রেমেতে মজিলে মন, কিবা হাড়ি কিবা ডোম | প্রীতিপ্রেমের পূন্যবাঁধন মানুষে মানুষে হয়, জাতপাতে হয় না |
প্রেষিতস্য কুতো মানং কোপনস্য কুতঃ সুখম্। স্ত্রীণাং কুতঃ সতীত্বঞ্চ কুতো মৈত্রী খলস্য চ।। (চাণক্য) | ভৃত্যের আবার সম্মান কোথায়, ক্রোধপরায়ণ ব্যক্তির আবার সুখ কোথায়। স্ত্রীলোকের আবার সতীত্ব কোথায়, দুষ্টের সঙ্গে আবার বন্ধুত্ব কোথায়? |
ফ[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ফকিরে ফকিরে ভাই ভাই, ফকিরের রাজত্ব সব ঠাঁই | ফকির সর্বত্র সমাদ্রিত; জাগতিক স্পৃহা না থাকায় পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয় না এবং সবস্থানে অবস্থান করে তৃপ্তিবোধ করে। |
ফর্সা কাপড়ে মান বাড়ে | পোষাক-পরিচ্ছদ পরিচ্ছন্ন হলে সবার মাঝে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। |
ফল ও ছায়াযুক্ত গাছকে আশ্রয় করতে হয় | ফল পাওয়া না গেলেও ছায়া পাওয়া যাবেই। |
ফল খেয়ে জল খায়; যম ডাকে আয় আয়- খনা | স্বাস্থ্যের পক্ষে বিষবৎ। |
ফল দিয়ে ভাত খায় | খোশগল্প। |
ফলেই পরিচয় // ফলেন পরিচীয়তে | গাছের পরিচয় তার ফলে; ফল দেখেই কাজের বিচার হয়। |
ফল্গুনদী অন্তঃসলিলা | চাপা স্বভাবের লোক যে বাইরে বেশ শান্তশিষ্ট, কিন্তু মনের গভীরে কি আছে জানা নেই। |
ফাঁক পেলে সবাই চোর // ফাঁক পেলে সাধুও চুরি করে | প্রলোভন এড়ানো খুবই কষ্টকর; চুরি করতে পারে না বলে সবাই সাধু; সাধু চোর নয় বোঁচকায় ঘটায়। |
ফাঁকা আওয়াজে/বুলিতে কাজ আদায় | মিষ্টিকথায় ভুলিয়ে ভালিয়ে কাজ আদায়। |
ফাঁকা কথায়/বুলিতে পাকা লোক ভোলে না | মিষ্টিকথায় কাজ আদায় হয় না। |
ফাঁকা কলসি বাজে বেশি // ফাঁকা কলসির চোপর বেশি // ফাঁকা ঢেঁকির শব্দ বড়/বেশি | গুণহীন ব্যক্তির গর্জন বেশি; সারশূন্য ব্যক্তির বাগাড়ম্বর বেশি। |
ফাঁকা ময়দানে গোল করা/ ফাঁকা গোলে বল ঠেলা | বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া; পাওয়া সুযোগ নেওয়া (নির্বাচনে অনেকেই ফাঁকা গোলে বল ঠেলে জয়ী হন)। |
ফাঁকি দিলে ফাঁকে পড়তে হয় // ফাঁদ পেতে ফাঁদে পড়া | কাউকে ফাঁকি দেবার চেষ্টা করলে অন্য কেউ তাকেও ফাঁকে ফেলার চেষ্টা করবে; ধান্ধাবাজী সমর্থনযোগ্য নয়। |
ফাঁন্দে পড়িয়া বগা কান্দে | বিপদে পড়ে নাজেহাল। |
ফাগুনে না রুলে ওল শেষে হবে গণ্ডগোল- খনা | ভাল ফসলের জন্য ফাল্গুন মাসে ওলের চাষ করতে হয়। |
ফাঁপা ঢেঁকির আওয়াজ বড় | অজ্ঞানের জাহির বেশি; সমতুল্য- ফুটো কলসির আওয়াজ বেশি। |
ফাটা কাঁসর বেসুরে বাজে | মন্দলোকের বেয়াড়া কথাবার্তা। |
ফুটনির মামা, ভিতরে কপনি উপরে জামা | শুধু সাজসজ্জাই আছে ভিতর কিন্তু ফাঁপা। |
ফুটো কলসির আওয়াজ বেশি | অজ্ঞানের জাহির বেশি; সমতুল্য- ফাঁপা ঢেঁকির আওয়াজ বড়। |
ফুল তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয় | কষ্টবিনা কেষ্ট নাই। |
ফুলবাবুর ধরাচূড়াই সার | শুধু সাজেই আড়ম্বর কাজের বেলায় ঢুঁ ঢুঁ। |
ফুলে নাই গন্ধ, চক্ষু থাকতে অন্ধ | যে ফুলে গন্ধ নেই সেই ফুল বৃথা, আর যে চোখ থাকতেও দেখতে পায় না সেই চোখও বৃথা। |
ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায় | সামান্য কষ্টও সহ্য করতে পারে না। |
ফুলের মধ্যে মালা, বাসনের মধ্যে থালা। কুটুম্বের মধ্যে শালা | ফুলের মালার বেশি আদর; বাসনের মধ্যে থালাৎ বেশি প্রয়োজন এবং কুটুমের মধ্যে শালর বেশি কদর। |
ফেন দিয়ে ভাত খায় গল্পে মারে দই | দৈন্যতা লুকোবার জন্য আসলকথা গোপন রেখে মিথ্যাকথা বলা। |
ফেলো কড়ি মাখ তেল, তুমি কি আমার পর? | অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছাপূরণ; ব্যবসায়ে আত্মীয়তার সুযোগ নেই; ব্যবসায়ে কোন খাতির চলে না। |
ফোঁপরা ঢেঁকির চোপর বেশি | কমজানা লোক বকে বেশি। |
ফোতোবাবুর গালগল্প সার | শুধু মুখেই ফুটুফুটানি কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা। |
ব[সম্পাদনা]
প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
বই খুব ভালো সঙ্গী, উপদেশ দেয় কিন্তু মানতে বাধ্য করে না | প্রকৃতবন্ধুর মত বই পাঠককে নিঃশব্দে সঙ্গ দেয়। |
বই হল পকেটে নিয়ে ঘোরা আস্ত একটা ফুলবাগান- চীনাপ্রবাদ | উভয়ই রূপ রস ও গন্ধে পরিপূর্ণ। |
বইয়ে থাকা বিদ্যা আর পরের হাতে থাকা ধন সমান কথা | প্রয়োজনকালে পাওয়া যায় না বলে কাজের নয়। |
বইয়ের মত বিশ্বস্ত কোন বন্ধু হয় না- তুর্কী প্রবাদ | বইই একমাত্র নিখাদ বন্ধু। |
বউ গিন্নি হলে তার বড় ফরফড়ানি, মেঘভাঙা রদ্দুর হলে বড় চড়চড়ানি | বউ সংসারের গিন্নি হলে বেশি গিন্নিপনা দেখায়; মেঘ সরে গিয়ে রদ্দুর উঠলে তার তেজ তীব্র হয়। |
বউ জব্দ কিলে, ঝি জব্দ শিলে, পাড়াপড়শী জব্দ হয় চোখে আঙুল দিকে | প্রহার করলে বউ সংযত থাকে; বাটনা বাটতে দিলে মেয়ে সংযত থাকে; এবং স্পষ্টকথা বললে পাড়াপড়শী সংযত থাকে। |
বউ না বোবা, বউ না বাবা | নতুন বউ কথা বলে না; পরে গৃহিণী হয়ে ঝঙ্কার দিতে সুরু করে। |
বউ ভাঙ্লো সরা গেল পাড়া পাড়া, গিন্নি ভাঙলো নাদা, ও কিছু নয় দাদা | বউ সরা ভাঙলে গিন্নি পাড়াময় রাষ্ট্র করে বেড়ায়; গিন্নি কলসী ভাঙলে সেটা ধর্তব্যের নয়; বাড়ীর কর্তা দোষ করলে সেটা দোষের নয় কিন্তু চাকর একটু দোষ করলে সেটা বিরাট মাপের দোষ হয়। |
বউয়ের রাগ বিড়ালের উপর, বিড়ালের রাগ বেড়ার উপর | বিড়াল মাছ খাওয়াতে বউ তিরস্কৃত হয়, তাই তার বিড়ালের উপর রাগ; বিড়াল মাছ খেয়ে পালাতে পারে না, তাই তার রাগ বেড়ায় উপর; ক্রোধ নিম্নগামী। |
বকঃ পরমদারুণঃ | লক্ষণ বলেন, বক ধর্মদ্বেষী, কারণ শকুন নির্জীবকে ভক্ষণ করে, বক সজীবকে গলাধঃকরণ করে। |
বকঃ পরমধার্মিকঃ | রাম বলেন- বক পরমধার্মিক, কারণ সে মুনিঋষির মত একাগ্রচিত্ত এবং জীবহত্যার আশঙ্কায় সে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ করে। |
বক-বিড়ালে ব্রহ্মজ্ঞানী | উভয়ই ভণ্ড ধার্মিক; উভয়ই মৎস্যাশী, কিন্তু মনের ভাব গোপন রাখে। |
বক, হাঁসের দলে শোভা পায় না | বিজ্ঞদের মাঝে অজ্ঞ শোভা পায় না। |
বক্রা জান্সে গয়া, খানেওয়ালা স্বাদ নহি পায়া- হিন্দিপ্রবাদ | অসন্তুষ্ট ব্যক্তি কখনো তুষ্ট হয় না। |
বকো আর ঝকো কানে দিয়েছি তুলো, মারো আর ধরো পিঠে বেঁধেছি কুলো | নির্বিকার, পাত্তা না দেওয়া। |
বক্তৃতা রূপালী, নীরবতা সোনালী- ইংলিশ প্রবাদ | কথায় কথা বাড়ে, তর্কবিতর্ক হয়, কিন্তু চুপ থাকলে কোন সমস্যার উদ্ভব হয় না। |
বগলে কাস্তে/ছাতা/পুঁথি দেশময় খোঁজে | আপনখেয়ালী, ন্যালাভোলালোক, কিছুই মনে রাখতে পারে না। |
বগলে ছুরি মুখে রামনাম | মুখে মিষ্টি বুলি অথচ অন্তর বিষের থলি। |
বচন রজতসম, নীরবতা হিরণ্ময় | কথা রূপার সমান এবং নীরবতা সোনার সমান। |
বচনে জগৎ তুষ্ট, বচনে জগৎ রুষ্ট | কথাতেই মানুষ সন্তুষ্ট হয়; আবার কথাতেই মানুষ ক্রুদ্ধ হয়; মিষ্টি কথাতে মানুষ তুষ্ট হয়; কটু কথাতে মানুষ রুষ্ট হয়। |
বচন থেকে কাজ অনেক বেশি কথা বলে | কথা থেকে কাজের ওজন অনেক বেশি। |
বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো | ছোটখাট ব্যাপারে নিয়মের বাড়াবাড়ি কিন্তু বড় বিষয়ে উদাসীন; একদিকে আঁটোসাঁটো, অন্যদিকে শিথিলতা; কড়াক্কড় চৌকী আইন খারাপ; সদর বন্ধ, খিড়কি ফাঁক। |
বজ্রাদপি কঠোরাণি মৃদুনি কুসুমাদপি | বজ্রের মত কঠোর, তৃণের মত কোমল। |
বঞ্চনঞ্চাপমানঞ্চ মতিমান ন প্রকাশয়েৎ | চতুর লোক নিজের ঠকার কথা অতি গোপন রাখে; শেয়ানে ঠকলে বাপকেও বলে না। |
বটবৃক্ষ নিরস পাথর থেকেও রস আহরণ করে | বটবৃক্ষ হল রসিকচূড়ামণি। |
বড় গাঁ তার মাঝের পাড়া // বড় ঘর তার ঢেঁকিশাল // বড় বিয়ে তার দুপায়ে আলতা | বড়র যা সাজে ছোট তা সাজে না; ছোটর প্রতি বক্রোক্তি; গাঁয়ের নাম একঘরা, তার আবার উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া। |
বড় গাছে কাছি বাঁধা // বড় ঘাটে নৌকা বাঁধা | শক্তিশালীর আশ্রয়ে নিরাপদে থাকা যায়; বেশি লাভের সম্ভাবনা থাকে। |
বড় গাছেই ঝড় লাগে | সংসারের ঝড়ঝাপটা বড়কেই সামলাতে হয়। |
বড় গাছের তলায় বাস, ডাল ভাঙলেই সর্বনাশ | আশ্রয়দাতা সঙ্কটে পড়লে আশ্রিতের বিপদের আশঙ্কা থাকে। |
বড় ঘরের বড় কথা, গরীবের ছেঁড়া কথা | বড় ঘরে সামান্য ব্যাপার ঘটে না; সামান্য ব্যাপার ঘটলেও অসামান্য হয়ে দাঁড়ায়; গরীবের ঘরের সব ঘটনাই তুচ্ছ। |
বড় জাহাজের গভীর জল চাই | বিরাট কাজের জন্য বিরাট ক্ষেত্র চাই। |
বড় বড় বানরের বড় বড় পেট, লঙ্কা ডিঙ্গোতে সব মাথা করে হেঁট | দেখতে শুনতেই সব বিরাট ওজনদার ব্যক্তি, কাজের বেলায় কোন কাজের নয়; সবার আগে পিছিয়ে যায়। |
বড় বড় বানরের বড় বড় লেজ | নামের চোটে গগন ফাটে; যতটা নাম ততটা কাজের নয়। |
বড় বাড় ভালো নয় | বাড়লেই ঝড় লাগবে এবং পড়তে হবে; অত্যুচ্ছায়ঃ পতনায়। |
বড় মাছের কাঁটা, ঘন দুধের ফোঁটা | ভালো জিনিষের একটুও ভাল; মন্দ জিনিষের বেশীও ভালো নয়। |
বড় মাছের কাঁটাও ভালো | বড়লোকের তুচ্ছ কথারও দাম আছে। |
বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে // বড় হবে তবে ছোট হও | বিনীত হও; বিনীত লোক বেশি সমাদর পায়। |
বড়লোকে কথা কয়, সবে বলে জয় জয় | ভালমন্দ বিচার না করেই সবাই বাহবা দেয়; ক্ষমতাশালীর স্থাবকতা; নির্লজ্জ চাটুকারিতা। |
বড়লোকের খেয়াল, ভাঙা দেয়াল ও খ্যাপা শেয়াল- এই তিনের সম্মুখীন হতে নেই | তিনটিই সমান বিপজ্জনক- ক কামড়াতে পারে; খ আচমকা ভেঙে পড়তে পারে; গ জীবন ওষ্ঠাগত করে তুলতে পারে; তুলনীয়- অসতী নারী, ফুটো হাঁড়ি ও ভগ্নপ্রায় বাড়ি পরিত্যাজ্য। |
বড়লোকের ভুরিভোজ থেকে গরীবের শাকান্ন ভাল | ঐশ্বর্যের দেমাক থেকে অন্তরের টান অনেক বেশি আদরণীয়; সমতুল্য- 'আদরের ভোজন কি করে ব্যঞ্জন', 'আদরের ডাল-ভাতও ভাল, বিনা আদরের ঘি-ভাতও ভাল না', 'রাজার ভুরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্ন ভাল' ইত্যাদি। |
বড়র পীরিতি বালির বাঁধ, খনে হাতে দড়ি, খনেকে চাঁদ | বড়লোকের প্রেমপ্রীতি খামখেয়ালীভরা হয়। |
বড়লোকের খাদ্য আছে, ক্ষিদে নেই; গরীবের ক্ষিদে আছে, খাদ্য নেই- হিন্দি প্রবাদ | অভাবের তুলনায় বড়লোকের অনেক বেশি সম্পদ আছে; গরীবলোক অভাবের জ্বালায় মরে; সম্পদের অসম বণ্টনের বিরুদ্ধে বক্রোক্তি। |
বৎসরের প্রথম ঈশান বয় হবেই বর্ষা খনা কয় | বছরের প্রথমেই ঈশানকোণ থেকে বাতাস বইতে শুরু করলে সে বছর প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা থাকে। (বর্ষাগণনা) |
বত্রিশদিনে মাস ফুরায় | অতিশয় দীর্ঘসূত্রিতা; সমতুল্য- 'আঠারো মাসে বছর ফুরায়'। |
বদরোগ সারানো যায়, বদনাম তাড়ানো যায় না | কলঙ্ক একবার গায়ে লাগলে হাজার চেষ্টাতেও তা দূর হয় না; অঙ্গার শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি। |
বদসঙ্গ থেকে নিঃসঙ্গতা ভালো | বদনাম কুড়াবার ভয় থাকে না; সমতুল্য- 'দুষ্ট গরু থেকে শূন্য গোয়াল ভাল'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভাল'। |
বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা // বাঁশবনে শিয়াল রাজা | অজ্ঞানীর দলে অল্পজ্ঞানীরা যথেষ্ট সম্মান পায়; সমতুল্য- আদাড়গাঁয়ে/বনে শিয়াল রাজা 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল', 'নিরস্তপাদপদেশে এণ্ডোহপি দ্রূমায়তে' ইত্যাদি। |
বন পোড়ে সবাই দেখে, মন পোড়ে কেউ না দেখে | অন্তর্জ্বালা অন্তরেই চাপা থাকে; 'কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে দংশেনি যারে'। |
বনরক্ষক বাঘ, বাঘরক্ষক বন // বনরক্ষক শিব, শিবরক্ষক বন | টিকে থাকতে গেলে অপরের সাহায্য চাই; পরস্পরের সাহায্য ব্যতিরেকে বাঁচা যায় না। |
বনের পশু ধরে আনা যায়, তার মন থেকে বন তাড়ানো যায় না | বন্যপশু পোষ মানে না। |
বনের পশু পোষ মানে | প্রেমের বন্ধনে সবাইকেই বাঁধা যায়। |
বনের রক্ষক বাঘ, বাঘের রক্ষক বন | পরস্পর পরস্পরের সহযোগিতায় আমরা বাঁচি; আমার হাতদুটি ধর, তাহ'লে তোমার হাতদুটি আমার ধরা হবে। |
বন্দর ক্যা জানে অদরক (আদা) স্বাদ- হিন্দি প্রবাদ | মূর্খ গুণীব্যক্তিকে চেনে না বা গুণের কদর বোঝে না। |
বন্ধমুখে মাছি ঢোকে না | সতর্ক থাকলে ক্ষতি হয় না। |
বন্ধু চেও না, শত্রু চাও যে তোমার ভুলগুলি ধরিয়ে দেবে | দোষ ধরে দেওয়ার জন্য সমালোচক চাই; সেক্ষেত্রে বন্ধু নয় বিরুদ্ধলোক চাই। |
বন্ধুপ্রাপ্তি থেকে বন্ধু হারানো সহজ | প্রকৃত বন্ধু পাওয়া দুর্লভ। |
বন্ধু হারানো থেকে ঠাট্টায় হেরে যাওয়া ভাল | বন্ধু হারানো খুবই দুঃখজনক ঘটনা; সুকৃতির জোর থাকলে সুহৃদ পাওয়া যায়। |
বন্ধুকেও বিশ্বাস করবে না, বন্ধু যদি কখনও ক্রুদ্ধ হয়, সমস্ত গুপ্তকথা প্রকাশ করে দিতে পারে- চাণক্য | উক্তিটি সর্বাংশে সত্য নয়; প্রকৃত বন্ধু কখনো শত্রু হয় না। |
বন্ধুত্ব একবার ছিঁড়লে পৃথিবীর সব সুতো দিয়েও সেলাই হয় না | একবার বিশ্বাস ভাঙ্লে কখনো তা জোড়া লাগে না। |
বন্ধুত্ব ছাতার মত, বৃষ্টি যত প্রবল হয় ছাতার তত বেশি প্রয়োজন হয়- আরবী প্রবাদ। | প্রয়োজনে উপস্থিতি দেখেই প্রকৃত বন্ধুত্বের বিচার হয়। |
বন্ধুত্ব ছিন্ন করে অর্থ উপার্জন করতে যেও না বন্ধুত্বস্থাপন অর্থোপার্জনের প্রকৃষ্ট মাধ্যম- আরবী প্রবাদ। | হাত ধরলেই উপকার আসে, হাত ছাড়লে নয়। |
বন্ধ্যা নারীর অন্ধ পুত্র চাঁদ দেখতে পায় // বন্ধ্যা নারীর পুত্রশোক // বন্ধ্যা নারীর প্রসববেদনা | অবান্তর কথা; পাগলের প্রলাপ; নিতান্তই অসম্ভব ঘটনা; |
বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে- সঞ্জীবচন্দ্র | জীবমাত্রই স্বাভাবিক অবস্থায় স্ব-স্ব স্থানে সুন্দর ও মানানসই; স্বস্থান থেকে সরিয়ে তাদের স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে ব্যাহত করা উচিত নয়। |
বয়সে চুল পাকে, বুদ্ধি পাকে না | বয়সের সাথে বয়সের কার্য-কারণ সম্পর্ক নেই; যার ছয়ে হয় না তার ছিয়াত্তরেও হয় না। |
বয়সে বিজ্ঞ হয় না, বিজ্ঞ হয় জ্ঞানে | জ্ঞানদ্বারা বিজ্ঞতা যাচাই হয়, বার্ধক্যদ্বারা নয়। |
বয়সের গাছপাথর নেই | এত প্রাচীন যে সমকালীন গাছ বা পাথরও খুঁজে পাওয়া যায় না; বয়োবৃদ্ধ |
বরং ভিক্ষাশিত্বং ন চ পরধনাস্বাদনসুখম | ভিক্ষা করে খাওয়াও ভাল, তবুও পরের ধনে সুখভোগ করা নেই। |
বরং হি মানিনো মৃত্যুর্ন দৈন্যং স্বজনাগ্রত | মানী লোকের মৃত্যুও ভাল তবুও অন্যের কাছে দৈন্যতা প্রকাশ করা ভালো নয়। |
বরমেকো গুণীপুত্রো ন চ মূর্খ শতান্যপি। একশ্চন্দ্রস্তমো হন্তি ন চ তারাগণা অপি।। (চাণক্য) | শত মূর্খপুত্রের চেয়ে এক গুণীপুত্র বরং ভাল; এক চন্দ্র যে অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না। গুণবান ও মূর্খ পুত্রের বৈশিষ্ট্য। |
বরের ঘরের পিসী, কনের ঘরের মাসী | উভয়দিকের স্বার্থ দেখে এমন ব্যক্তি। |
বর্ণচোরা আম | ব্যক্তির বয়স বোঝা দায়; কপটাচারী; ('বর্ণচোরা ঠাকুর এলো রসের নদীয়ায়')। |
বর্ণানাং ব্রাহ্নণো গুরু // বর্ণশ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ | সকল বর্ণের মধ্যে ব্রাহ্মণ গুরু বা শ্রেষ্ঠ। |
বর্ষণ নেই গর্জন আছে | কাজ নেই আড়ম্বর আছে। |
বল, বুদ্ধি, বৃদ্ধি- তিন তিরিশে ফরসা | বয়স ত্রিশ বৎসর অতিক্রান্ত হ'লে এই তিনটি বিষয় ক্রমশঃ কমতে থাকে। |
বলং বলং বাহু বলং // বল বল আপনার বল | নিজের বাহুবলই একমাত্র বিবেচ্য; অন্যের উপর নির্ভর করলে কাজ প্রায়ই বিফল হয়। |
বলদ থাকতে করে না চাষ, তার দুঃখ বারো মাস- খনা | ঘরে বলদ থাকতেও যে মায়া করে খাটায় না তার বলদ শুধু ঘরে বসে বসে খায়; তার জমিতে চাষ হয় না; ফলে ঘরে অন্নাভাব দেখা দেয়। |
বলতে গেলে জাত থাকে না | পাপীর পাপকাজ গুপ্ত থকে না, প্রকাশ হয়ে পড়ে; পাপকারক দাগি হয়। |
বলতে জানলে ঠকি না, বসতে জানলে উঠি না | কথা গুছিয়ে বলতে পারলে কেউ সহজে বোকা বানাতে পারবে না; সঠিক স্থান নির্বাচন করে বসলে কেউ উঠাতে পারবে না। |
বলতে/কইতে পারি, সইতে পারি না | এড়া লোক, যে কথা শোনাতে পটু কিন্তু শুনতে রাজী নয়। |
বলবানপ্যশক্তোহসৌ ধনবানপি নির্ধনঃ। শ্রুতবানপি মূর্খোহসৌ যো ধর্মবিমুখ জনঃ।। (চাণক্য) | ধর্মবিমুখ লোক- বলবান হয়েও দুর্বল; বিত্তবান হয়েও নির্ধন; বিদ্বান হয়েও মূর্খ। |
বলা ও করা, সম্পূর্ণ দুটি ভিন্ন বিষয় | বলা সহজ, করা কঠিন। |
বলা কথা ফেরে না | পরিবর্তনের আর কোন সু্যোগ নেই; সমতুল্য- 'ছোঁড়া তীর/ঢিল ফেরে না', 'ভাত সিদ্ধ হয়ে দেছে'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'মরার আগে পর্যন্ত ফিরে আসার সুযোগ থাকে'। |
বলা সহজ, করা কঠিন | বলতে কোন পরিশ্রম লাগে না; করতে গেলে পরিকল্পনা করতে হয়, পরিশ্রম লাগে। |
বললাম কথা সবার মাঝে, যার কথা তার গায়ে বাজে | ইঙ্গিতে কাউকে দোষী বলে চিহ্নিত করা। |
বলীর ঘাম, নির্বলীর ঘুম | পরিশ্রম করে কর্মঠব্যক্তি ঘামে; অলস কেবল ঘুমিয়ে কাটায়। |
বলে নয় ছলে // বলে না হয় ছলে | যে কাজ শক্তিতে সিদ্ধ হয় না সেই কাজ কৌশলে সিদ্ধ করতে হয়। |
বসতে জানলে উঠতে হয় না | সঠিকস্থান নির্বাচন করে বসা; যেখানে সেখানে বসলে যেকোন সময় উঠে যেতে হতে পারে। |
বসতে জায়গা পেলে, শোবার জায়গা মেলে | একটু উপায়/সুযোগ পেলে আরও উপায়/সুযোগ করায়ত্ব হয়। |
বসতে দিলে/পেলে শুতে চায় // বসতে দিলে খেতে চায়, খেতে দিলে শুতে চায় | আশ্বাস পেলে আবদার করে; আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। |
বসবি তো ছেলে ধর, উঠবি তো কাঠ কাট্ | একটা না একটা ফরমাশ লেগেই আছে; কাজে ফুরসত নেই। |
বসুধৈব কুটুম্বম্ | জগতজোড়া আত্মীয় |
বসে খেলে কলসির জল ফুরায় // বসে খেলে কুবেরের ভাণ্ডারও ফুরায় | আয় না থাকলে অল্পদিনেই সঞ্চয় শেষ হয়। |
বসে খেলে কুলোয় না, করে খেলে ফুরোয় না | আয় না থাকলে যতই ধন থাকুক তাতে কুলাবে না; আয় থাকলে সেই ভাবনা নেই। |
বসে না থাকি বেগার খাটি/যাই | আয় না হলেও স্বাস্থ্য ভালো থাকে। |
বসে বসে লেজ নাড়া | কাজ না করে শুধু কাজের সমালোচন করা। |
বস্ত্রহীনস্ত্বলঙ্কারো ঘৃতহীনঞ্চ ভোজনম্। স্তনহীনা চ যা নারী বিদ্যাহীনঞ্চ জীবনম্।। (চাণক্য) | (উপযুক্ত) পরিচ্ছদ ছাড়া অলঙ্কার শোভা পায় না, ঘৃত বিহীন আহার সুখকর হয় না, যে নারীর (সুন্দর) স্তন নাই- সে নারী শোভা পায় না, বিদ্যাহীন জীবনও নিরর্থক। |
বহু সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট | নানামতের চাপে আসল কাজ পণ্ড; অনেক লোকের কাজে নানা গণ্ডগোল শুরু হয়। |
বহুভির্মূর্খসংঘাতৈরন্যোন্যপশুবৃত্তিভিঃ। প্রচ্ছাদ্যন্তে গুণাঃ সর্বে মেঘৈরিব দিবাকরঃ।। (চাণক্য) | সূর্য যেমন মেঘের দ্বারা আবৃত হয় তেমনি পশুর মতো স্বভাবের বহু মূর্খের দ্বারা সকল গুণ আচ্ছাদিত হয়। |
বহ্বাশী স্বল্পসন্তুষ্টঃ সুনিদ্রঃ শীঘ্রচেতনঃ। প্রভুভক্তশ্চ শূরশ্চ জ্ঞাতব্যাঃ ষট্ শুনো গুণাঃ।। (চাণক্য) | প্রভুর মঙ্গলের জন্য সর্বদা চিন্তা, অল্পে সন্তুষ্টি, সহজে ঘুম আসা, তাড়াতাড়ি জেগে ওঠা, প্রভুভক্তি, সাহস- এই ছয়টি গুণ কুকুরের কাছ থেকে শিক্ষণীয়। |
বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া | ঘটা করে শুরু, অল্পেতে শেষ। |
বাঁকারে বাঁকায় চেনে | মন্দের সাথে মন্দের মিতালি হয়। |
বাঁচলে কত দেখবো আর, ছুঁচোর/বাঁদরের গলায় চন্দ্রহার | যে ভালো জিনিসের কদর/দাম বোঝে না তাকে ভালো/দামি জিনিস দেওয়া; অযোগ্যের হাতে মহার্ঘবস্তু দান। |
বাঁচার জন্য খাও, খাওয়ার জন্য বেঁচো না | খাওয়াটাই সব নয়; গোগ্রাসে খাওয়া নেই, তাতে স্বাস্থ্যের হানি হয়। |
বাঁশ কেন ঝাড়ে, আয় আমার ঘাড়ে | অকারণে বাইরের বিপদ ঘরে ডেকে আনা।; সমতুল্য- সুখে থাকতে ভূতে কিলায় |
বাঁশ মরে ফুলে, মানুষ মরে ভুলে | বাঁশগাছে ফুল এলে বাঁশগাছের মৃত্যু হয়; সেইবছর দেশে মড়ক লাগে; মানুষ ভুলবশতঃ ছোটাছুটি করে মরে। |
বাঁশ যদি পরে জলে, কি করতে পারে তালে | বাঁশ জলে পচালে তালগাছ থেকে শক্ত হয়। |
বাঁশতলায় বিয়ল গাই, সেই সুবাদে মামাতো ভাই | কারো বাঁশতলায় বাছুর প্রসব হয়েছিল; সেই সম্পর্কে তুতো ভাই; সম্পর্কহীন ব্যক্তিসম্পর্কে প্রযোজ্য। |
বাঁশবনে ডোম কানা | উৎকৃষ্টের মেলা থেকে একটি উৎকৃষ্ট বাছা কঠিন কাজ; সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে দিশেহারা। |
বাঁশবনে শিয়াল রাজা // বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা | অজ্ঞানীর দলে অল্পজ্ঞানীরা যথেষ্ট সম্মান পায়; সমতুল্য- 'আদাড়বনে শিয়াল রাজা' 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল', 'নিরস্তপাদপদেশে এণ্ডোহপি দ্রূমায়তে' ইত্যাদি। |
বাঁশি হারিয়ে শিঙায় ফুঁ | সব হারিয়ে শেষ; প্রধান উপায় নষ্ট করে সামান্য উপায়ে নির্ভর করা; শিঙে হারিয়ে কাঁকুড়ে ফুঁ। |
বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় | বাঁশ থেকে কঞ্চি শক্ত হয়; আসল লোকের চেয়ে তার অনুচরের আস্ফালন বেশি; মালিকের চেয়ে অনুচরের দাপাদাপি বেশি; সমতুল্য- 'গুরু থেকে শিষ্য তীক্ষ্ণ', 'তালৈয়ের চেয়ে পুতরা ভারি', 'বাপের চেয়ে ছেলে কড়া', 'সূর্যের চেয়ে বালির তাপ বেশি' ইত্যাদি। |
বাইরে কোঁচার পত্তন ভিতরে ছুঁচার কেত্তন | সংগতিহীন হয়েও বড়মানুষি ভাব; সমতুল্য- আসরঘরে মশাল নেই, হেঁশেলঘরে চাঁদোয়া বা আসলে মুষল নেই ঢেঁকি ঘরে চাঁদোয়া; ভিতরে ছুঁচোঁর কেত্তন, বাইতে কোঁচার পত্তন। |
বাইরে দেখতে সাদা সাজ ভিতরে আছে ঢাকাই কাজ | যার বাইরে কোন আড়ম্বর নেই, কিন্তু ভিতরে অনেক সৌন্দর্য আছে; বিদুষীরমণী। |
বাইরের জামাই কৃষ্ণকান্ত ঘরের জামাই কেষ্টো // বাইরের জামাই মধুসূদন ঘরের জামাই মেধো | ঘরজামাইকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা; ঘরজামাইয়ের সম্মান নেই; |
বাইরে হাশিখুশি ভিতরে গরলরাশি | মুখে মধু/মিষ্টি, অন্তরে বিষ; বিষকুম্ভ পয়োমুখঃ। |
বাউলের ঘরের গরু | বাউলের গৃহিণী। |
বাকপটু আর নির্বোধের সাথে তর্কে যেও না- আরবী প্রবাদ। | বাকপটুর কাছে তর্কে হারবে আর নির্বোধের সাথে তর্ক করে কষ্ট দেবে। |
বাক্যে পর্বত, কার্যে তূলাকার | বেশি কথা বলে, কাজ করে কম। |
বাগানে গাছার সাথে আগাছাও থাকে | কোনকিছুই অবিমিশ্র শুদ্ধ নয়। |
বাঘ নেই বাঘিনীর উৎপাত | পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর লাফালাফি। |
বাঘ পালাল বিড় |