বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প কর্পোরেশন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)
সংক্ষেপেবিসিআইসি
গঠিত১৯৭৬
স্থানাঙ্ক২৩°৪৩′৩৬″ উত্তর ৯০°২৫′১১″ পূর্ব / ২৩.৭২৬৭৫৬° উত্তর ৯০.৪১৯৭৯৪° পূর্ব / 23.726756; 90.419794
যে অঞ্চলে কাজ করে
বাংলাদেশ
ওয়েবসাইটbcic.gov.bd
বিসিআইসি ভবন

ইতিহাসঃ[সম্পাদনা]

১৯৭২ সনের রাষ্ট্রপতি ২৭ নম্বর অধ্যাদেশের ১৯৭৬ সনের ২৫ নম্বর  সংশোধনী বলে ৩টি কর্পেোরেশন যথা- বাংলাদেশ সার, রসায়ন ও ভেষজ শিল্প কর্পোরেশন, বাংলাদেশ কাগজ ও বোর্ড কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ট্যানারীজ  কর্পোরেশন একীভূত করে ১লা জুলাই, ১৯৭৬ইং তারিখে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থার চেয়ারম্যান এবং বোর্ড  অব ডিরেক্টর্স এর পরিচালকবৃন্দ সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত। প্রধান নির্বাহী হিসাবে চেয়ারম্যানকে সংস্থাটি পরিচালনার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সুষ্ঠ কার্য সম্পাদন কল্পে সংস্থার পরিচালনা বোর্ড কর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান সংস্থার পরিচালক মন্ডলী, সচিব, বিভাগীয় প্রধান ও কারখানা প্রধানদেরকে ক্ষমতা প্রদান করে থাকেন। যার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তাবৃন্দ সংস্থা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকি করে থাকেন। কর্পোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগকৃত একজন চেয়ারম্যান ও ৫ জন পরিচালক এর সমন্বয়ে গঠিত একটি বোর্ড অব ডিরেক্টরর্স এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রতিটি কারখানার জন্য রয়েছে আলাদা এন্টারপ্রাইজ বোর্ড/কোম্পানী বোর্ড। প্রতিটি এন্টারপ্রাইজ বোর্ড শিল্প মন্ত্রনালয়ের একজন প্রতিনিধি বোর্ডের পরিচালক হিসাবে নিয়োজিত আছেন। সংশ্লিষ্ঠ কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকগন নিজ নিজ এন্টারপ্রাইজ বোর্ডের দিক নির্দেশনা ও তদারকির মাধ্যমে দৈনন্দিন কার্যাবলী পরিচালনা করে থাকেন।

উত্তরাধীকার সূত্রে প্রাপ্ত ৮৮টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে সংস্থার যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ৬টি নতুন কারখানা সংস্থা কর্তৃক স্থাপিত হয় এবং ৩টি কারখানা অন্য সংস্থা হতে বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রনাধীনে ন্যাস্ত হয়। সরকার বিরাষ্ট্রীয়করন নীতিমালা বাস্তবায়নের ফলে মোট ৯৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৫টি প্রতিষ্ঠান হতে পূজি প্রত্যাহার করা হয়। ৭টি কারখানা প্রাক্তন মালিকের নিকট এবং ৭টি প্রতিষ্ঠান মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্টের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ৫টি প্রতিষ্ঠান সরকারি সিদ্ধান্তক্রমে বন্ধ করে জনবল পে-অফ করা হয়েছে। বর্তমানে ১৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রনাধীনে পরিচালিত হচ্ছে এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আরো ৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে।

সার, সিমেন্ট, কাগজ, গ্লাসশীট, হার্ডবোর্ড, স্যানিটারীওয়্যার ও ইন্স্যুলেটর প্রভৃতি পন্য সামগ্রী বিসিআইসি উৎপাদন করে যাচ্ছে। বিসিআইসি’র উৎপাদিত  পন্যের মধ্যে ৮০% রাসায়নিক সার। এর মধ্যে ৭০% ইউরিয়া সার ও ১০% অন্যান্য সার। উল্লেখ্য যে, ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে সারা দেশে কৃষকদের মাঝে সার বিতরনের মত স্পর্শকাতর বিষয়টি বিসিআইসি’র উপর ন্যাস্ত হয়। বিসিআইসি অত্যন্ত আস্তা এবং সফলতার সাথে এই গুরু দয়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

বিসিআইসি’র ভিশন, মিশন, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

ভিশনঃ[সম্পাদনা]

“দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সার উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং আমদানি বিকল্প সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন।”

মিশনঃ[সম্পাদনা]

আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা করার লক্ষ্যে সার উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং আমদানি বিকল্প সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদনের নিমিত্ত বিসিআইসি-এর কারখানাসমূহে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার এবং আর্থিক ও প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ[সম্পাদনা]

  • সরকারের শিল্পনীতি বাস্তবায়ন করা।
  • আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন করা ।
  • সংস্থার কারখানাসমূহ যথাযথ দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতার সাথে পরিচালনা নিশ্চিত করা।
  • কৃষি মন্ত্রণালয়ের চাহিদা মোতাবেক সার উৎপাদন ও আমদানি করে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকের দোরগোড়ায় সার পৌঁছানো।
  • ভারী শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের জনবলের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
  • যৌথ উদ্যোগে নতুন নতুন শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তিতে দেশকে উন্নয়নের দিকে ধাবিত করা।
  • সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক রাসায়নিক বৃহৎ শিল্পের প্রসার ঘটানো।

বিসিআইসি’র কার্যাবলিঃ[সম্পাদনা]

০১। ইএমপি, আইইই, ইআইএ ও ইএমএস টুল ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব ও নিরাপদ শিল্পোন্নয়ন;

০২। খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে সার উৎপাদন, চাহিদা অনুযায়ী ঘাটতি পূরনের লক্ষ্যে সার আমদানি এবং সকল কৃষক পর্যায়ে সার সরবরাহ নিশ্চিতকরণ;

০৩। বাজার স্থিতিশীলতা রক্ষায় রাসায়নিক পণ্য, সিমেন্ট, কাগজ, স্যানিটারিওয়্যার, ইনসুলেটর ও ফায়ার ব্রিক্স উৎপাদন এবং বিপণন;

০৪। যুগোপযোগী প্রশিক্ষনের মাধ্যমে কারিগরি জ্ঞান ভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি তৈরি;

০৫। নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন এবং সংস্থার বিদ্যমান পুরাতন কারখানাসমূহে আধুনিক প্রযুক্তি রুপান্তরের জন্য অর্থ-কারিগরি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা। সমীক্ষা প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন আধুনিক প্রযুক্তির প্রকল্প গ্রহণ করে তা সরকারি অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা করা;

০৬। বাজেট প্রণয়ন ও বাজেট নিয়ন্ত্রণ, সম্পদের সুরক্ষা, হিসাব সংরক্ষণ এবং আমদানি কার্যক্রম পরিচালনায় যথাযথ আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ;

০৭। শিল্পনীতির উদ্দেশ্যে পূরনের লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তির নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি;

এবং

০৮। বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন কারখানাগুলোতে স্বয়ংসম্পূর্ন পরীক্ষাগারে প্রতি শিফটে উৎপাদিত পণ্যের গুণাগুণ পরীক্ষা এবং যথোপযুক্ত ব্যাগিং ও প্যাকিং এর মাধ্যমে পন্যের মান সুরক্ষা ও সরবরাহের ব্যবস্থা করা।

অধীনস্হ প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

নিয়ন্ত্রাধীন কারখানাসমূহ[সম্পাদনা]

  1. ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড
  2. কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড
  3. উসমানিয়া গ্লাস শিট কারখানা লিমিটেড
  4. খুলনা হার্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড
  5. টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড
  6. ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরী লিমিটেড
  7. আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড
  8. বাংলাদেশ ইনসুলেটর এন্ড স্যানিটারীওয়্যার ফ্যাক্টরী লিমিটেড
  9. ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি
  10. চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা লিমিটেড
  11. যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানী লিমিটেড
  12. ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড
  13. শাহজালাল সার কারখানা

যৌথ উদ্যোগে চালু প্রতিষ্ঠানসমূহ[সম্পাদনা]

  1. কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড
  2. সিনোভিয়া ফার্মা পিএলসি
  3. বায়ার ক্রপসায়েন্স লিমিটেড
  4. নোভারটিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড
  5. সিনজেনটা (বাংলাদেশ) লিমিটেড
  6. ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড
  7. বাল্ক ম্যানেজমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড
  8. মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড

অন্যান্য[সম্পাদনা]

  1. ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ
  2. বিসিআইসি কলেজ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]