বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তা অনুসন্ধান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সেটি@হোম এর স্ক্রিনসেভার। এটি একটি ডিস্ট্রিবিউটেড গণনা প্রকল্প প্রকল্প যেখানে স্বেচ্ছাসেবীরা মহাজাগতিক রেডিও সংকেতে বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ বিশ্লেষণের জন্য নিজেদের কম্পিউটারের অবসর সময়টুকুর শক্তি দান করে।

বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তা অনুসন্ধান বা সেটি (search for extraterrestrial intelligence, SETI) হল বহির্জাগতিক প্রাণ অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে পরিচালিত বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টাসমূহ।[১][২][৩]

বিংশ শতাব্দীর একদম গোড়ার দিকে বেতার প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পর থেকেই এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চলছে, এবং ১৯৮০ দশক থেকে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক প্রয়াস শুরু হয়।[৪] এর ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ২০১৫ সালে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিভেন হকিং এবং রুশ কোটিপতি ইয়ুরি মিলনার এর সমৃদ্ধ অর্থায়নে ব্রেকথ্রু লিসেন নামের একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে।[৫] সেটি প্রকল্পসমূহ মূলত বেতার বর্ণালীতে বহির্জাগতিক কৃত্রিম সংকেতের অনুসন্ধান করে, তাছাড়া কিছু প্রকল্পে বহির্জাগতিক সভ্যতার সাথে সরাসরি যোগাযোগের প্রচেষ্টাও করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পৃথিবী-বহিস্থ কোন বুদ্ধিমত্তার অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

প্রাথমিক প্রয়াস[সম্পাদনা]

পৃথিবী ব্যতীত সৌরজগতের অন্যত্র বুদ্ধিমত্তার অনুসন্ধান অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ১৮৯৬ সালে নিকোলা টেসলা ধারণা করেছিলেন যে তার আবিষ্কৃত তারবিহীন বৈদ্যুতিক যোগাযোগ পদ্ধতির বিবর্ধিত সংস্করণ দিয়ে মঙ্গল গ্রহের প্রাণীদের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।[৬] ১৮৯৯ সালে কলোরাডো স্প্রিংস পরীক্ষাকেন্দ্রে কাজ করার সময় তিনি ভেবেছিলেন যে তিনি মঙ্গল গ্রহ থেকে আগত একটি সংকেত শনাক্ত করেছেন, কারণ তার বেতার রিসিভারে পুনরাবৃত্তিরত একটি স্ট্যাটিক সংকেত বন্ধ হয়ে যেত মঙ্গল গ্রহ রাতের আকাশে অস্ত যাবার কাছাকাছি সময়ে। পরবর্তীকালে টেসলার এই উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যেমন: তিনি হয়ত কিছুই আবিষ্কার করেননি, নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করায় ভুল বুঝছিলেন,[৭] কিংবা তিনি হয়ত ইউরোপ থেকে গুলিয়েলমো মার্কোনির বেতার পরীক্ষার সংকেত শনাক্ত করছিলেন, এমনকি হয়ত বৃহস্পতির মেরুজ্যোতির প্রাকৃতিক বেতার সংকেত পাচ্ছিলেন।[৮] ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে মার্কোনি, লর্ড কেলভিন এবং ডেভিড পেক টড, টেসলার সঙ্গে সম্মতি জানিয়ে মন্তব্য করেন যে মঙ্গলগ্রহবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বেতার মাধ্যম উপযুক্ত হতে পারে। এমনকি মার্কোনি নিজেও দাবি করেছেন যে তার বেতার স্টেশনগুলি সম্ভবত মঙ্গলগ্রহ থেকে আগত সংকেত শনাক্ত করেছিল।[৯][ভাল উৎস প্রয়োজন]

১৯২৪ সালের ২১-২৩ আগস্ট তারিখে ওই শতাব্দীর যেকোন সময়ের তুলনায় মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর নিকটতম প্রতিযোগ অবস্থানে পৌঁছায়।[১০] ওই তিন দিন মোট ৩৬ ঘণ্টার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "জাতীয় বেতার নীরবতা দিবস" পালন করা হয়, এসময় প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ মিনিটের জন্য সমস্ত রেডিও যোগাযোগ বন্ধ রাখা হত। মঙ্গল গ্রহ থেকে আগত সম্ভাব্য রেডিও সংকেত শনাক্ত করার জন্য চার্লস ফ্রান্সিস জেনকিন্সআমহার্স্ট কলেজের তৈরি একটি "রেডিও ক্যামেরা" ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌ পর্যবেক্ষণকেন্দ্র একটি বেতার রিসিভারকে ভূমি থেকে ৩ কিলোমিটার (১.৯ মাইল) ওপরে ওড়ায়। এটি ৮ এবং ৯ কিলোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য টিউন করা ছিল। প্রকল্পটি পরিচালনা করেছিলেন ডেভিড পেক টড, এবং সার্বিক সহায়তায় ছিলেন মার্কিন নৌবাহিনীর প্রধান এডওয়ার্ড ডব্লিউ. এবার্ল। মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রধান ক্রিপ্টোগ্রাফার উইলিয়াম ফ্রিডম্যানের দায়িত্ব ছিল কোন প্রাপ্ত মঙ্গল-আগত বার্তার পাঠোদ্ধার করা।[১১][১২]

১৯৫৯ সালের একটি প্রবন্ধে ফিলিপ মরিসন এবং জিউসেপ কোকোনি অণুতরঙ্গ বর্নালীতে সংকেত অনুসন্ধানের প্রস্তাব করেন এবং সম্ভাবনাময় কিছু কম্পাঙ্ক এবং লক্ষ্যকেও চিহ্নিত করেন।[১৩][১৪]

১৯৬০ সালে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ড্রেক সর্বপ্রথম আধুনিক সেটি পরীক্ষা করেন, যার নাম ছিল "অজমা প্রকল্প" (এল ফ্র্যাঙ্ক বম রচিত কল্পকাহিনীর অজ-এর রানী চরিত্রটির নামে)।[১৫] ড্রেক পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রিন ব্যাংকে অবস্থিত ২৬ মিটার (৮৫ ফু) ব্যাসের একটি রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে টাউ সেটি এবং এপসাইলন এরিড্যানি তারাদুটি পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনি ১.৪২০ গিগাহার্টজ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কাছাকাছি অনুসন্ধান করেছিলেন, যা মহাবিশ্বের সবচেয়ে সুলভ উপাদান হাইড্রোজেন এর বর্ণালীর নিকটবর্তী বলে বহির্জাগতিক যোগাযোগ সংকেতের অন্যতম সম্ভাব্য উৎস বলে ধরে নেয়া হয়েছিল। একটি ১০০ হার্টজ ব্যান্ডউইথের একক-চ্যানেল রিসিভার ব্যবহার করে ওই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আশপাশে ৪০০ কিলোহার্টজ পরিসরে অনুসন্ধান চালানো হয়। তবে অবশেষে আগ্রহজনক কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় নি।

১৯৬০ দশকে সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা সেটি প্রকল্পে প্রবলভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, এবং শক্তিশালী রেডিও তরঙ্গ শনাক্তের আশায় সর্বদিকাভিমুখী এন্টেনা দিয়ে বেশ কয়েকটি অনুসন্ধান চালান। ১৯৬২ সালে সোভিয়েত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইয়োসিফ শক্লভস্কি এ গবেষণাক্ষেত্রে অগ্রণী ইউনিভার্স, লাইফ, ইন্টেলিজেন্স গ্রন্থটি রচনা করেন, এবং ১৯৬৬ সালে এই বইটির ভিত্তিতে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল সেগান রচনা করেন ইন্টেলিজেন্ট লাইফ ইন দ্য ইউনিভার্স[১৬]

ওয়াও! সংকেত
উৎস: ওহাইও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় বেতার পর্যবেক্ষণাগার এবং উত্তর আমেরিকান জ্যোতির্পদার্থবৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণাগার (NAAPO)।

১৯৫৫ সালে সাইন্টিফিক আমেরিকান পত্রিকার মার্চ সংখ্যায় বিজ্ঞানী জন ড্যানিয়েল ক্রাউস একটি অধিবৃত্তাকার প্রতিফলকযুক্ত সমতলীয় বেতার টেলিস্কোপ ব্যবহার করে প্রাকৃতিক মহাবৈশ্বিক বেতার সংকেত অনুসন্ধানের একটি ধারণা বর্ণনা করেছিলেন। এর দুই বছরের মধ্যে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়। মার্কিন ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন থেকে ৭১,০০০ মার্কিন ডলারের অনুদান দিয়ে ডেলাওয়্যারে ৮-হেক্টর (২০ একর) জমিতে এই টেলিস্কোপ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ওহাইও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় বেতার পর্যবেক্ষণাগারটি পরবর্তীতে "বিগ ইয়ার" (The Big Ear) নামে পরিচিতি পায়। এটি ছিল বিশ্বের প্রথম বিরতিহীন সেটি প্রকল্প।

১৯৭১ সালে ফ্র্যাঙ্ক ড্রেক, হিউলেট-প্যাকার্ড কর্পোরেশনের বার্নার্ড এম. অলিভার এবং অন্যান্যদের সমন্বয়ে একটি সেটি গবেষণায় নাসা অর্থায়ন করেছিল। গবেষণার প্রদত্ত প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী ১,৫০০ ডিশসম্পন্ন বেতার টেলিস্কোপ নিবেশ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়া হয়। "সাইক্লপস প্রকল্প" নামে পরিচিত এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের খরচ ধরা হয়েছিল আনুমানিক এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এই প্রকল্পটি তৈরি করা হয়নি, তবে প্রতিবেদনটি পরবর্তী অন্যান্য সেটি গবেষণার ভিত গঠন করে।[১৭]

ওহাইও রাজ্য সেটি প্রকল্পটি ১৯৭৭ সালের ১৫ আগস্ট খ্যাতি অর্জন করে যখন এতে দায়িত্বরত একজন স্বেচ্ছাসেবক জেরি এহম্যান টেলিস্কোপে একটি চমকপ্রদ সংকেত প্রাপ্তি প্রত্যক্ষ করেন। তিনি দ্রুত সংকেতটি প্রিন্ট করে চিহ্নিত করেন এবং তার পাশে বিস্ময়বোধক "Wow!" লিখে রাখেন। ওয়াও! সংকেত, নামে পরিচিত এই পর্যবেক্ষণটিকে অনেকেই বহিরাগত সভ্যতার চিহ্নের জন্য সেরা প্রার্থী হিসাবে গণ্য করেন, যদিও পরবর্তী বেশ কয়েকটি অনুসন্ধান চালিয়েও সংকেতটির পুনরায় শনাক্ত করা যায়নি। [১৮]

সেন্টিনেল, মেটা এবং বেটা[সম্পাদনা]

১৯৮০ সালে কার্ল সেগান, ব্রুস সি. মারে এবং লুই ফ্রাইডম্যান মার্কিন প্ল্যানেটারি সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন, যা সেটি গবেষণার কাজে অংশত নিয়োজিত হয়েছিল।[১৯]

১৯৮০ দশকের প্রথম দিকে হার্ভার্ডের পদার্থবিজ্ঞানী পল হরোভিৎজ সেটি অনুসন্ধানের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে বর্ণালি বিশ্লেষক এর নকশা উত্থাপন করেন। প্রচলিত টেবিলটপ বর্ণালী বিশ্লেষকগুলি এধরনের গবেষণার জন্য উপযুক্ত ছিল না, কারণ তারা এনালগ ফিল্টারের সারি দিয়ে তরঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করত, এবং তাই তাদের গ্রহণযোগ্য চ্যানেলের সংখ্যা সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং (ডিএসপি) প্রযুক্তি দিয়ে অনেক বেশি সংখ্যক চ্যানেল পর্যবেক্ষণের ক্ষমতাসম্পন্ন স্বতঃসামঞ্জস্যকারী বেতার রিসিভার তৈরি করা সম্ভব ছিল। এভাবে ১৯৮১ সালে "সুটকেস সেটি" নামক একটি বহনযোগ্য বর্ণালী বিশ্লেষক তৈরি করা হয় যা সংকীর্ণ ব্যান্ডের ১.৩১ লাখ চ্যানেল পর্যবেক্ষণের ক্ষমতাসম্পন্ন। ১৯৮২ পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ব্যবহারে এর নির্ভরযোগ্যতা প্রমাণিত হয়। এবং ১৯৮৩ সালে ম্যাসাচুসেটস এর ওক রিজ পর্যবেক্ষণাগারে ২৬-মিটার (৮৫ ফু) হার্ভার্ড/স্মিথসোনিয়ান বেতার টেলিস্কোপে স্যুটকেস সেটির প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহার শুরু হয়। এই প্রকল্পের নাম ছিল "সেন্টিনেল" এবং এর কার্যক্রম ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

তবে আকাশের দ্রুত এবং বিশদ অনুসন্ধানের জন্য ১ লাখ ৩১ হাজার চ্যানেলও যথেষ্ট ছিল না, তাই ১৯৮৫ সালে সেন্টিনেলের উত্তরসুরি হিসেবে "মেটা" (Megachannel Extra-Terrestrial Assay, META) পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। মেটা স্পেকট্রাম বিশ্লেষকের ৮৪ লাখ চ্যানেল পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা ছিল এবং এর সূক্ষ্মতা ছিল ০.০৫ হার্টজ। মেটা এর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল ডপলার ক্রিয়া দ্বারা পৃথিবী-উৎপন্ন এবং বহিরাগত সংকেত পৃথকভাবে চিহ্নিত করার দক্ষতা। প্ল্যানেটারি সোসাইটির সহায়তায় হরোভিৎজ প্রকল্পটির পরিচালনা করতেন, এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গ এর অর্থায়নে আংশিক সাহায্য করতেন। ১৯৯০ সালে দক্ষিণ আকাশে পর্যবেক্ষণের জন্য আর্জেন্টিনায় মেটা ২ (META II) কাজ শুরু করে। ১৯৯৬ সালে যান্ত্রিক উন্নয়নের পর মেটা ২ এখনও চলমান রয়েছে।

সেটি অনুসন্ধানের সংবেদনশীলতা বনাম বিস্তারের গ্রাফ। X-অক্ষে সংবেদনশীলতা এবং Y-অক্ষে ডান পাশে আলোকবর্ষ এককে অনুসন্ধানের পরিসর এবং বাম পাশে ওই দূরত্বে সূর্যের মত নক্ষত্রের সংখ্যা দেখানো হয়েছে। কৌণিক সরলরেখাগুলো বিভিন্ন ক্ষমতার একেকটি ট্রান্সমিটার চিহ্নিত করেছে। "SS" এবং "TS"-চিহ্নিত উল্লম্ব রেখাদ্বয় যথাক্রমে সম্পূর্ণ আকাশ অনুসন্ধান (যেমন বেটা প্রকল্প) এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অনুসন্ধান (যেমন ফিনিক্স প্রকল্প) এর সাধারণ সংবেদনশীলতার মাত্রা নির্দেশ করে।[২০]

মেটা এর পরবর্তী ধাপের প্রকল্প "বেটা" (Billion-channel Extraterrestrial Assay বা "BETA") নামে পরিচিত, যা ১৯৯৫ এর ৩০ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে। বেটা এর কার্যক্ষমতার কেন্দ্রে রয়েছে ৬৩টি ফাস্ট ফুরিয়ে ট্রান্সফর্ম (FFT) ইঞ্জিন যাদের প্রতিটি ২২২-পয়েন্টের জটিল এফএফটি মাত্র দুই সেকেন্ডে গণনা করতে সক্ষম, এবং বিশেষায়িত ডিএসপি সুবিধা সম্পন্ন ২১টি সাধারণ কম্পিউটার। বেটা ০.৫ হার্টজ সূক্ষ্মতায় ২ কোটি ৫০ লাখ বেতার চ্যানেলের যুগপৎ পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম ছিল। এটি প্রতি ধাপে দুই সেকেন্ড সময় নিয়ে আট ধাপে ১.৪০০ থেকে ১.৭২০ গিগাহার্টজের অণুতরঙ্গ বর্ণালীর পর্যবেক্ষণ চালাত। বেটা প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামর্থ্য ছিল কোন সংকেতের দ্রুত এবং স্বয়ংক্রিয় পুনঃপর্যবেক্ষণ, যা সম্ভব হয়েছিল এর দ্বৈত পর্যবেক্ষণ দণ্ডের সাহায্যে। একটি পর্যবেক্ষক দণ্ড সামান্য পূর্বে এবং অন্যটি সামান্য পশ্চিমে থেকে মিলিতভাবে আকাশ পর্যবেক্ষণ করত। কোন আগত সম্ভাব্য সংকেত প্রথমে পূর্ব দণ্ড এবং তার পরে পশ্চিম দণ্ড অতিক্রম করতো, এবং অতিক্রমের গতি ছিল পৃথিবীর পার্শ্বীয় ঘূর্ণনের হারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এভাবে দুটি দণ্ডের পর্যবেক্ষণ একত্রিত করে একই সংকেতের জন্য দুটি পর্যবেক্ষণ সংগ্রহ করা সম্ভব হত।

সেন্টিনেল, মেটা এবং বেটা যে ২৬-মিটার বেতার টেলিস্কোপের ওপর নির্ভর করে কাজ করত, তা ১৯৯৯ সালের ২৩ মার্চ শক্তিশালী ঝড়ো বাতাসে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে বেটা প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।[২১]

এমওপি এবং প্রজেক্ট ফিনিক্স[সম্পাদনা]

১৯৭৮ সালে নাসার সেটি প্রোগ্রামটি সিনেটর উইলিয়াম প্রক্সমিয়ারের ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়। এবং ১৯৮১ সালে কংগ্রেস কর্তৃক নাসার বাজেট থেকে সেটি গবেষণার অর্থায়ন বাতিল করা হয়;[২২] তবে কার্ল সেগান প্রক্সমিয়ারের সাথে আলাপ করে তাকে প্রকল্পটির গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হন এবং ফলস্বরূপ ১৯৮২ সালে অর্থায়ন পুনরায় চালু হয়।[২২] ১৯৯২ সালে মার্কিন সরকারের প্রত্যক্ষ অর্থায়নে নাসা অণুতরঙ্গ পর্যবেক্ষণ প্রকল্প (এমওপি) রূপে একটি সেটি কার্যক্রম চালু হয়। আকাশের জরিপ পরিচালনা এবং নিকটবর্তী ৮০০টি চিহ্নিত নক্ষত্রের অনুসন্ধানের একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা হিসেবে এমওপি পরিকল্পিত হয়েছিল। নাসা ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক-এর অন্তর্ভূক্ত বেতার টেলিস্কোপসমূহ, পশ্চিম ভার্জিনিয়ার জাতীয় বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণাগারের ১৪০-ফুট (৪৩ মি) বেতার টেলিস্কোপ এবং পুয়ের্তো রিকোর আরেসিবো পর্যবেক্ষণাগারের ১,০০০-ফুট (৩০০ মি) রেডিও টেলিস্কোপকে এমওপির কাজে ব্যবহার করার সংকল্প করা হয়েছিল। প্রাপ্ত সংকেতসমূহ বিশ্লেষণের জন্য দেড় কোটি চ্যানেল ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একাধিক বর্ণালী বিশ্লেষকও এই প্রকল্পের অংশ ছিল। বর্ণালী বিশ্লেষকগুলো একত্রিত করে তাদের ক্ষমতা বর্ধিত করা যেত। নির্দিষ্ট লক্ষের অনুসন্ধানে ব্যবহৃত বিশ্লেষকের ব্যান্ডউইথ প্রতি চ্যানেলে ১ হার্টজ, এবং আকাশ জরিপে নিয়োজিত বিশ্লেষকগুলোর ব্যান্ডউইথ ছিল চ্যানেলপ্রতি ৩০ হার্টজ।

পুয়ের্তো রিকোতে অবস্থিত আরেসিবো পর্যবেক্ষণাগার। এর ৩০০ মি (৯৮০ ফু) ব্যাসের ডিশটি বৃহত্তম ভরাট-অ্যাপারচার বেতার টেলিস্কোপগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি বেশ কিছু সেটি পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে।

এমওপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উপহাস আকর্ষণ করে[২৩] এবং চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যেই প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যায়।[২২] তবে সেটি সমর্থকরা সরকারী তহবিল ছাড়াই প্রকল্পটি অব্যাহত রাখায় সচেষ্ট ছিলেন, এবং ১৯৯৫ সালে মাউন্টেইন ভিউ এর অলাভজনক সেটি ইনস্টিটিউট ব্যক্তিবর্গীয় অর্থায়নে এমওপি প্রকল্পটিকে "ফিনিক্স" নামে পুনরুজ্জীবিত করে। জিল টার্টারের পরিচালনায় ফিনিক্স প্রকল্প এমওপির গবেষণা অব্যহত রেখেছে, এবং প্রায় ১,০০০ নিকটবর্তী সূর্য-তুল্য তারার পর্যবেক্ষণ করছে। ১৯৯৫ থেকে ২০০৪ এর মার্চ ফিনিক্সের পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ৬৪-মিটার (২১০ ফু) পার্কস বেতার টেলিস্কোপ, পশ্চিম ভার্জিনিয়ার জাতীয় বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণাগারের ১৪০-ফুট (৪৩ মি) বেতার টেলিস্কোপ, এবং পুয়ের্তো রিকোর আরেসিবো মানমন্দিরের ১,০০০-ফুট (৩০০ মি) বেতার টেলিস্কোপ। প্রকল্পটি ১২০০ থেকে ৩০০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মধ্যে প্রাপ্য চ্যানেলগুলিতে প্রায় ৮০০ তারা পর্যবেক্ষণ করেছে। অনুসন্ধানকাজ এতই সংবেদনশীল ছিল যে প্রায় ২০০ আলোকবর্ষ দূরের ১ গিগাওয়াট কার্যকর বিকিরণ ক্ষমতার উৎস শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। অধ্যাপক টার্টারের মতে, ২০১২ সালের হিসাবমতে "সেটি ইনস্টিটিউটের গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বছরে ২০ লাখ মার্কিন ডলার এবং বিশ্বজুড়ে সমস্ত ধরনের সেটি কার্যকলাপ চালাতে তার প্রায় ১০ গুণ অর্থ" ব্যয় হয়।[২৪]

চলমান বেতার অনুসন্ধান[সম্পাদনা]

অনেক বেতার তরঙ্গ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বেশ ভালভাবেই অতিক্রম করতে পারে, এর ফলে বৃহৎ বেতার এন্টেনার সাহায্যে ভূ-কেন্দ্রিক বেতার টেলিস্কোপের সাহায্যে মহাবিশ্বের পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। উপরন্তু, মানবসভ্যতার চিহ্ন হিসেবে টেলিভিশন, রেডিও, এবং অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রচুর তড়িৎচৌম্বক বিকিরণ উৎপন্ন হচ্ছে। পুনরাবৃত্তিমূলক এবং সংকীর্ণ ব্যান্ডউইথে প্রবাহিত হয়– এই বৈশিষ্ট্যের কারণে এরকম বিকিরণকে কৃত্রিম বলে শনাক্ত করা যায়। যদি এটি সভ্যতার আদর্শ হয়ে থাকে, তবে বহির্জাগতিক সভ্যতা আবিষ্কারের একটি উত্তম উপায় হতে পারে সৌরজগতের বাইরে উৎপন্ন অনুরূপ কৃত্রিম বেতার সংকেতের অনুসন্ধান করা।

সেটি প্রকল্পের অধীনে বেতার অনুসন্ধানের জন্য বেশ কিছু আন্তর্জাতিক বেতার টেলিস্কোপ ব্যবহৃত হচ্ছে, যেমন, ইউরোপের লো-ফ্রিকোয়েন্সি অ্যারে (LOFAR), অস্ট্রেলিয়ার মার্চিসন ওয়াইডফিল্ড অ্যারে (MWA), এবং যুক্তরাজ্যের লাভেল টেলিস্কোপ[২৫]

ভূ-কেন্দ্রিক পর্যবেক্ষণে দৃশ্যমান অণুতরঙ্গের পরিসর। নাসা প্রতিবেদন এসপি-৪১৯ থেকে।

অ্যালেন টেলিস্কোপ অ্যারে[সম্পাদনা]

সেটি ইনস্টিটিউট এবং বার্কলি সেটি গবেষণা কেন্দ্রের বেতার জ্যোতির্বিদ্যা ল্যাবরেটরি ১৯৯৭-১৯৯৯ সালের কিছু কর্মশালার মাধ্যমে সেটি গবেষণার জন্য বিশেষায়িত একটি বেতার টেলিস্কোপ গুচ্ছ তৈরির পরিকল্পনা করে। প্রথম দিকে পরিকল্পনার নাম ছিল ওয়ান হেক্টর টেলিস্কোপ (1HT), তবে পরে প্রকল্পটির পৃষ্ঠপোষক পল অ্যালেনের নামানুসারে "অ্যালেন টেলিস্কোপ অ্যারে" (ATA) নামকরণ করা হয়। নির্মাণ সম্পন্ন হলে এর সমষ্টিগত সংবেদনশীলতা ১০০ মিটারের অধিক ব্যাসের একটি একক বড় ডিশের সমতুল্য হবার কথা। বর্তমানে গ্রামীণ উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার হাট ক্রিক বেতার পর্যবেক্ষণাগারের ৪২ টি ডিশ অ্যালেন টেলিস্কোপ অ্যারের অন্তর্ভুক্ত, তবে প্রকল্পটি এখনও নির্মানাধীন রয়েছে।[২৬][২৭]

পরিকল্পনা অনুসারে সম্পূর্ণ অ্যারেতে (এটিএ-৩৫০) ৩৫০ বা আরও বেশি ৬.১ মিটার (২০ ফুট) অফসেট-গ্রেগরিয়ান বেতার ডিশ থাকবে। ২০০৭ এর মধ্যে ২.৫ লাখ মার্কিন ডলার খরচে প্রকল্পটির নির্মাণ সমাপ্তির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। নির্মাণের অর্থ সরবরাহের দায়িত্বে ছিল সেটি ইনস্টিটিউট, এবং টেলিস্কোপের নকশা করেছিল এবং ব্যবস্থাপনা তহবিলের দায়িত্বে ছিল ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ৪২টি ডিশের সমন্বয়ে অ্যারের প্রাথমিক অংশ (এটিএ-৪২) ২০০৭ এর অক্টোবরে চালু হয়েছিল। এটিএ-৩৫০ এর পরিকল্পিত ডিএসপি সিস্টেমটি অতি উচ্চাভিলাষী। এটিএ-৪২ এর প্রযুক্তিগত ফলাফল এবং অর্থায়নের ওপর সম্পূর্ণ এটিএ-৩৫০ অ্যারের ভবিষ্যত নির্ভর করছে।

একাধিক পর্যবেক্ষক একই সাথে ইন্টারফেরোমিটারের তথ্য পর্যালোচনা করতে পারবেন, এমন সুবিধা রেখে এটিএ-৪২ নির্মিত। সাধারণত, এটিএ স্ন্যাপশট চিত্রধারক (জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক জরিপ এবং সেটি পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত) এবং পর্যবেক্ষক রশ্মি সংগঠক (কেবল সেটি পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত) সমান্তরালভাবে পরিচালিত হয়।[২৮] এছাড়া এটিএ একাধিক সংশ্লেষিত পেন্সিল রশ্মির পর্যবেক্ষণ ("মাল্টিবীমিং") সমর্থন করে। যেহেতু সংকেতের খুব দূরবর্তী উৎসটি আকাশের একটি বিন্দুতে অবস্থিত হওয়া আবশ্যক, তাই মাল্টিবিমিং এর মাধ্যমে ইতিবাচক মনে করে ভুলভাবে শনাক্তকৃত সংকেত সহজে চিহ্নিত করা যায়।[২৯][৩০][৩১]

সেটি গবেষণা কেন্দ্র (সিএসআর) প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা করে এটিএ দ্বারা বহির্জাগতিক সংকেত অনুসন্ধান করে। ২০০৭-২০১৫ পর্যন্ত, এটিএ কয়েক কোটি সম্ভাব্য প্রযুক্তিগত সংকেত শনাক্ত করেছে। তবে এসব সংকেতের কোনটিই নির্ভরযোগ্য হিসেবে গ্রহণ করা যায় নি, কারণ এগুলো হয়, ক) পৃথিবীর কৃত্রিম উপগ্রহ বা ভূকেন্দ্রিক উৎস দ্বারা উৎপন্ন বলে প্রতীয়মান, অথবা, খ) নূন্যতম ১ ঘণ্টা সময়সীমার আগেই অদৃশ্য হয়ে গেছে।[৩২][৩৩] বর্তমানে সিএসআর এর গবেষকরা শনাক্তকরণের নূন্যতম সময়সীমা কমানোর এবং অন্তর্নিহিত বার্তা থাকতে পারে এমন সংকেত শনাক্ত করার ক্ষমতা অর্জনের উপায় বের করার চেষ্টা করছেন।[৩৪]

বার্কলির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সেটি গবেষণা ছাড়াও অন্যান্য বেশ কিছু বিজ্ঞান বিষয়ক অনুসন্ধানে এটিএ ব্যবহার করছিলেন।[৩৫][৩৬][৩৭] তবে ২০১১ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেটি ইনস্টিটিউটের মধ্যে সহযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়।

২০১১ সালের এপ্রিলে অর্থ সংকটের কারণে এটিএ কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। পরে ব্যক্তি পর্যায়ের সহায়তায় এবং মার্কিন বিমানবাহিনীর অর্থায়নে ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে এটিএ-এর নিয়মিত কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়।[৩৮][৩৯]

২০১২ সালে কোয়ালকমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান বিজ্ঞানী ফ্র্যাঙ্কলিন অ্যান্টোনিও ৩৬ লাখ মার্কিন ডলারের অনুদান দিয়ে অ্যালেন টেলিস্কোপ অ্যারের কার্যক্রমে নতুন উদ্যম আনেন।[৪০] এর ফলে এটিএ-এর সমস্ত রিসিভারগুলির ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব হয়, এবং সংবেদনশীলতা ও সূক্ষ্ম কম্পাঙ্কে অনুসন্ধানের ব্যাপ্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পায় (যদিও প্রাথমিকভাবে বেতার যন্ত্রাংশসমূহ কেবল ১২ গিগাহার্টজ পর্যন্ত সীমিত ছিল)। ২০১৩ এর জুলাইয়ের মধ্যে এই উন্নত রিসিভারগুলির প্রথমটির স্থাপন এবং কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। ২০১৪ সালের জুন এর ভিতর ৪২ টি এন্টেনার প্রতিটিরই অনুরূপ উন্নয়ন আশা করা হচ্ছে।[হালনাগাদ প্রয়োজন]

অ্যালেন টেলিস্কোপ অ্যারে বহিরাগত বুদ্ধিমত্তার অনুসন্ধানের জন্য বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন, এছাড়া জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বেতার উৎসসমূহ (যেমন অব্যাখ্যাত, অপুনরাবৃত্তিক, সম্ভাব্য ভিন্ন নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে আগত FRB বা ফাস্ট রেডিও বার্স্ট নামে পরিচিত বেতার বিচ্ছুরণ) আবিষ্কারের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত।

সেরেনডিপ (SERENDIP)[সম্পাদনা]

বার্কলি সেটি গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক ১৯৭৯ সালে সেরেনডিপ (SERENDIP) প্রকল্পটি চালু হয়[৪১]SERENDIP এর পূর্ণাঙ্গ নাম হল Search for Extraterrestrial Radio Emissions from Nearby Developed Intelligent Populations, বা "নিকটস্থ বহির্জাগতিক উন্নত বুদ্ধিমান জনগোষ্ঠীর বেতার নির্গমনের অনুসন্ধান"। সেরেডনিপ প্রকল্প চলমান "মূলধারার" বৃহৎ রেডিও টেলিস্কোপগুলির "পিঠে চড়া" বা "সহভোক্তা" হিসাবে সুবিধা গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নেই; অন্যান্য জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণার জন্য বেতার টেলিস্কোপগুলো গভীর মহাকাশের যে তথ্য আহরণ করে, তার ওপরই সেরেনডিপ বিশ্লেষণ চালায়। সেরেনডিপের ব্যবহৃত টেলিস্কোপের মধ্যে রয়েছে আরেসিবো টেলিস্কোপ এবং গ্রিন ব্যাংকের এনআরএও ৯০ মি. টেলিস্কোপ।

২০০৯ সালের জুন মাসে সেরেনডিপের সবচেয়ে সাম্প্রতিক বর্ণালীবিক্ষণ যন্ত্র, সেরেনডিপ ভি.ভি., আরেসিবো মানমন্দিরে যুক্ত করা হয়েছে এবং বর্তমানে চালু রয়েছে। এর ভিত্তিমূল হচ্ছে এফপিজিএ-ভিত্তিক ১২.৮ কোটি চ্যানেল এবং ২০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডউইথের একটি ডিজিটাল বর্ণালীবিক্ষক। এটি আরেসিবোর সপ্তরশ্মি এল-ব্যান্ড ফিড অ্যারে (ALFA) থেকে তথ্য সংগ্রহ করে[৪২]

এই প্রকল্প হতে প্রায় ৪০০ টি সম্ভাব্য বহির্জাগতিক সংকেত পাওয়া গেছে, কিন্তু সেগুলো সত্যিই বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার চিহ্ন কীনা তা নিশ্চিত করার মত যথেষ্ট তথ্য সংগৃহীত হয়নি।[৪৩]

ব্রেকথ্রু লিসেন[সম্পাদনা]

ব্রেকথ্রু লিসেন হল মহাবিশ্বে বহির্জাগতিক যোগাযোগ সংকেত অনুসন্ধানের জন্য একটি দশ বছর মেয়াদী উদ্যোগ যা ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ১০ কোটি মার্কিন ডলার তহবিলের সমর্থনে শুরু হয়, এবং পূর্বে ব্যবহৃত হয়নি এমন উপকরণ ও কৌশল ব্যবহার করে বিস্তৃতভাবে অনুসন্ধান চালাচ্ছে।[১৯][৪৪][৪৫][৪৬] এটে এযাবতকালের মধ্যে বহির্জাগতিক প্রাণের সবচেয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।[৪৫] ব্রেকথ্রু লিসেন-এর বিজ্ঞান প্রকল্পটি বার্কলি সেটি গবেষণা কেন্দ্র ভিত্তিক,[৪৭][৪৮] ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগে অবস্থিত।[৪৯]

পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রিন ব্যাংকের এবং অস্ট্রেলিয়ার পার্কস পর্যবেক্ষণাগারের দুটি প্রধান বেতার রেলিস্কোপ মিলিয়ে ব্রেকথ্রু লিসেন প্রকল্পটি প্রতি বছর সহস্রাধিক ঘণ্টার অনুসন্ধান চালায়।[৫০] অন্যদিকে এর আগে প্রতি বছর মাত্র ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা সর্বমোট বহির্জাগতিক প্রাণের সন্ধানে ব্যয়িত হত।[৪৫] এছাড়া লিক পর্যবেক্ষণাগারের স্বয়ংক্রিয় গ্রহ অন্বেষক যন্ত্রটি লেজার বিকিরণ থেকে আগত দৃশ্যমান সংকেতের অনুসন্ধান করছে। বেতার টেলিস্কোপে সংগৃহীত উচ্চ হারের বিশাল পরিমাণ তথ্য (গ্রিন ব্যাংকে প্রায় ২৪ গিগাবাইট/সেকেন্ড) বিশ্লেষণের জন্য বিশেষায়িত হার্ডওয়্যার নির্মাণের প্রয়োজন পড়েছে।[৫১] এর মধ্যে কিছু তথ্য সেটি@হোম নেটওয়ার্কের স্বেচ্ছাসেবকদের কম্পিউটারেও বিশ্লেষিত হয়।[৫০] আধুনিক সেটির প্রতিষ্ঠাতা ফ্র্যাঙ্ক ড্রেক ব্রেকথ্রু লিসেনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যপদে রয়েছেন।[৪৪][৪৫][৫২]

ফাস্ট (FAST)[সম্পাদনা]

চীনের ৫০০ মিটার অ্যাপারচারের গোলাকার টেলিস্কোপ বা ফাস্ট (FAST, Five hundred meter Aperture Spherical Telescope) এর বিজ্ঞান সংকল্পের অংশ হিসাবে বহির্জাগতিক সংকেত অনুসন্ধান লিপিবদ্ধ করেছে। এটি চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন (এনডিআরসি) এর অর্থায়নে চীনের বিজ্ঞান একাডেমি (সিএএস) এর অন্তর্গত জাতীয় জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা (এনএওসি) দ্বারা পরিচালিত হয়। ফাস্টই হল বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তা অনুসন্ধানকে মৌলিক বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য ধরে নির্মিত প্রথম বেতার পর্যবেক্ষণাগার।[৫৩] চীনের কুইচৌ প্রদেশে কার্স্ট প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট প্রাকৃতিক গোলাকার নিম্নভূমির ওপর নির্মিত ৫০০ মি (১,৬০০ ফু) ব্যাসের ডিশ দ্বারা ফাস্ট গঠিত। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ভরাট-অ্যাপারচার রেডিও টেলিস্কোপ।[৫৪] নিজস্ব ওয়েবসাইট অনুযায়ী ফাস্ট ২৮ আলোকবর্ষ দূরত্ব পর্যন্ত ১৪০০ টি তারার অনুসন্ধান করতে পারে। যদি ফাস্টের ট্রান্সমিটারের বিকিরণ শক্তি দশ লাখ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়, তাহলে টেলিস্কোপটি দশ লাখ তারা অনুসন্ধানে সক্ষম হবে। এর তুলনায়, আরেসিবো ৩০৫ মিটার টেলিস্কোপের সংবেদনশীলতার বিস্তার ১৮ আলোকবর্ষ।[৫৫]

কমিউনিটি সেটি প্রকল্প[সম্পাদনা]

সেটি@হোম[সম্পাদনা]

সেটি@হোম হল ডেভিড গেদে এবং ক্রেইগ ক্যাসনফের উদ্ভাবিত একটি জনপ্রিয় স্বেচ্ছাসেবা-ভিত্তিক ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং প্রকল্প যা ১৯৯৯ সালের মে মাসে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলি সেটি গবেষণা কেন্দ্রে শুরু হয়েছিল। প্রথমদিকে প্ল্যানেটারি সোসাইটি এবং প্যারামাউন্ট পিকচার্স এর অর্থায়ন করত, এবং পরে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য এ দায়িত্ব নেয়। প্রকল্পটির পরিচালক ডেভিড পি অ্যান্ডারসন এবং প্রধান বিজ্ঞানী ড্যান ওয়ার্থিমার। যেকোন ব্যক্তি বার্কলি ওপেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর নেটওয়ার্ক কম্পিউটিং (BOINC) সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে সেটি@হোম প্রকল্পের সাথে যুক্ত হতে পারেন। ব্যবহারকারীর কম্পিউটার যখন নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে, সেসময় সফটওয়্যারটি সেটি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণে কম্পিউটারটিকে কাজে লাগায়। প্রোগ্রামটি সেরেনডিপ IV থেকে ২.৫ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে সংগৃহীত তথ্যের একটি "কর্ম ইউনিট" এর সংকেত বিশ্লেষণ করে, এবং প্রাপ্ত ফলাফল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্কলিতে অবস্থিত সেটি@হোম এর সার্ভারগুলিতে ফেরত পাঠায়। ২০০৯ এর ২৪ জুন মোতাবেক প্রকল্পটিতে এক লাখ আশি হাজারেরও বেশি সক্রিয় অংশগ্রহণকারীর মোট ২,৯০,০০০ এরও বেশি সংখ্যক কম্পিউটার যুক্ত ছিল। এই কম্পিউটারগুলি সমষ্টিগতভাবে সেটি@হোম প্রকল্পে গড়ে ৬১৭ টেরাফ্লপস কম্পিউটেশনাল শক্তি সরবরাহ করে।[৫৬]

২০০৪ সালে বেতার উৎস SHGb02+14A থেকে একটি কৃত্রিম সংকেত শনাক্ত করা হয়েছে বলে প্রচারমাধ্যমে জল্পনা ছড়ায়, কিন্তু গবেষকরা জানান যে কম্পাঙ্কটি দ্রুত সরে গেছে এবং যে তিনটি সেটি@হোম কম্পিউটার এটি শনাক্ত করেছিল তা র‌্যানডম সম্ভাবনার অন্তর্গত বলে যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য নয়।[৫৭][৫৮] ২০১০ সাল নাগাদ ১০ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহের পর সেটি@হোম প্রকল্পটি আরেসিবো পর্যবেক্ষণাগারে সমগ্র আকাশের প্রায় ২০ শতাংশ অঞ্চলের প্রতিটি বিন্দুতে অন্তত তিনবার স্ক্যান করে ওই নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের অনুসন্ধান চালিয়েছে।[৫৯]

সেটি নেট[সম্পাদনা]

সেটি নেটওয়ার্ক বা সেটি নেট বর্তমানে চলমান একমাত্র ব্যক্তিগত সেটি অনুসন্ধান প্রক্রিয়া। খরচ কমানো এবং সহজে নির্মাণযোগ্য করার জন্য সেটি নেট স্টেশন সাধারণ ভোক্তাপর্যায়ের ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি হয়। স্টেশনটির গঠনে রয়েছে, দিগংশ এবং উচ্চতা পরিবর্তনযোগ্য ৩ মিটার ব্যাসের উপবৃত্তাকার এন্টেনা, ১৪২০ মেগাহার্টজ কম্পাঙ্কের লো নয়েজ অ্যাম্পলিফায়ার, প্রশস্ত ব্যান্ডের শব্দ পুনর্গঠনারী রিসিভার, এবং সমস্ত ব্যবস্থাটি নিয়ন্ত্রণ ও প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের জন্য একটি সাধারণ ব্যক্তিগত কম্পিউটার

অ্যান্টেনাটিকে আকাশের নির্দিষ্ট বিন্দুতে লক্ষ্যবদ্ধ করে রাখা যায়, ফলে দীর্ঘক্ষণ ধরে একই স্থানের তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। বর্তমানে সেটি নেট দ্বারা ওয়াও! সংকেতের উৎস অঞ্চলের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের সংগৃহীত সমস্ত তথ্য ইন্টারনেট আর্কাইভে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

SETI নেট প্রকল্পটি ১৯৮০ দশকে যাত্রা শুরু করেছিল বহির্জাগতিক অনুসন্ধানের পেছনের বিজ্ঞান সম্পর্কে অধ্যয়নের জন্য। অপেশাদার সেটি সম্প্রদায়ের জন্য প্রকল্পটি থেকে এপর্যন্ত কয়েকটি সফ্টওয়্যার প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে, যেমন একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘড়ি, সেটি গবেষণার তথ্যের ফাইল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ফাইল ম্যানেজার, অপেশাদার ক্ষেত্রের জন্য তৈরি একটি স্পেকট্রাম বিশ্লেষক, ইন্টারনেটের মাধ্যমে নেট স্টেশনের দূর-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ইত্যাদি।

সেটি নেটের ওয়েবসাইট রয়েছে https://www.seti.net ঠিকানায়।

সেটি লীগ এবং প্রজেক্ট আর্গাস[সম্পাদনা]

১৯৯৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস কর্তৃক নাসার সেটি প্রোগ্রামটি বাতিল করার প্রত্যুত্তরস্বরূপ সেটি লীগ ইনকর্পোরেটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ৬২ দেশের ১,৫০০ সদস্যের সমন্বয়ে একটি সদস্য-সমর্থিত অলাভজনক সংস্থা। পেশাদার-অপেশাদার বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এই তৃণমূল পর্যায়ের জোটের নেতৃত্বে রয়েছেন নির্বাহী পরিচালক ইমেরিটাস এইচ. পল শুচ, যিনি বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক হোম স্যাটেলাইট টেলিভিশন রিসিভার উদ্ভাবনের জন্য প্রসিদ্ধ। সেটি লীগের অনেক সদস্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত অপেশাদার বেতার ব্যবস্থাপক এবং অণুতরঙ্গ পরীক্ষক, এবং অন্যান্যরা ডিজিটাল সংকেত বিশ্লেষণ বিশেষজ্ঞ এবং কম্পিউটারে উৎসাহী।

স্যাটেলাইট টিভির ৩ থেকে ৫ মি (১০–১৬ ফু) ডিশকে গবেষণার যোগ্য মাঝারি সংবেদনশীলতার বেতার টেলিস্কোপ হিসেবে ব্যবহার প্রচলন করে সেটি লীগ।[৬০] প্রতিষ্ঠানটি অপেশাদার ছোট বেতার টেলিস্কোপগুলির একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সমন্বয় করেছে আর্গাস প্রকল্প-এর অধীনে, যার লক্ষ্য হচ্ছে সমগ্র আকাশের তাংক্ষনিক সমীক্ষার ক্ষমতা অর্জন করা।[৬১] আর্গাস প্রকল্পটির প্রথম পরিকল্পনা হয়েছিল নাসার অধুনা-বাতিলকৃত সেটি গবেষণার অংশ হিসেবে। বর্তমানে ২৭টি দেশের ১৪৩টি বেতার টেলিস্কোপ আর্গাস প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। আর্গাস প্রকল্পের যন্ত্রগুলি সাধারণত ১০−২৩ ওয়াট/বর্গমিটার এর মত সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করে, যা ১৯৭৭ সালে প্রসিদ্ধ "ওয়াও!" সংকেত শনাক্তকালে ওহাইও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের "বিগ ইয়ার" বেতার টেলিস্কোপের অর্জিত সংবেনশীলতার কাছাকাছি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

"আর্গাস" নামটি এসেছে একটি পৌরাণিক গ্রীক রক্ষী পশুর নাম থেকে, যার চোখ ছিল ১০০টি এবং একই সময়ে সবদিকে দেখতে পারত। সেটি গবেষণার প্রেক্ষাপটে এই নামটির ব্যবহার হয়েছিল কথাসাহিত্যে বেতার টেলিস্কোপের প্রসঙ্গে (আর্থার সি ক্লার্কের "ইম্পেরিয়াল আর্থ", কার্ল সেগানের "কনট্যাক্ট")। এছাড়া নাসার "সাইক্লপস" নামের গবেষণা প্রকল্পটিও প্রাথমিকভাবে আর্গাস নামে পরিচিত ছিল, এবং একই নামে ওহাইও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সর্বদিকাভিমুখী বেতার টেলিস্কোপের নকশা করা হয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আলোক নির্ভর অনুসন্ধান[সম্পাদনা]

বেশিরভাগ সেটি অনুসন্ধান হয় রেডিও বর্ণালীতে, তবে কিছুসংখ্যক গবেষক মনে করেন বহির্জাগতিক সভ্যতা শক্তিশালী লেজার রশ্মি দ্বারা দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যেও যোগাযোগ করতে পারে। ১৯৬১ সালে নেচার পত্রিকায় "অপটিকাল মেজার দ্বারা আন্তগ্রহ এবং আন্ত:নাক্ষত্রিক যোগাযোগ" শিরোনামের প্রবন্ধে আর. এন. শোয়ার্জ এবং চার্লস হার্ড টাউনস সর্বপ্রথম এই ধারণাটি প্রকাশ করেন। তবে ১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত সাইক্লপ্স গবেষণায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, দূরবর্তী নক্ষত্রের চেয়ে উজ্জ্বল লেজার উৎপাদন করা প্রায় অসম্ভব বলে দৃশ্যমান আলোয় সেটি অনুসন্ধান নিষ্প্রয়োজন। ১৯৮৩ সালে প্রসিডিংস অফ দ্যা ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস সাময়িকীতে টাউনস আলোক সেটি পর্যবেক্ষণের ওপর বিস্তারিত গবেষণা প্রকাশ করেন[৬২], যা সেটি সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমর্থন লাভ করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আলোক পর্যবেক্ষণের পথে প্রধানত দুটি বাধা রয়েছে[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]। প্রথমত, লেজার রশ্মি "মনোক্রোম্যাটিক" বা একরঙা, অর্থাৎ, কেবল একটি কম্পাঙ্কে প্রচারিত হয়; তাই কোন কম্পাঙ্কে অনুসন্ধান চালাতে হবে তা নির্ধারণ করা কঠিনসাধ্য (অবশ্য সংকীর্ণ কম্পাঙ্কে লেজার সংকেত প্রেরণ করা হলে তরঙ্গের বিস্তার বৃদ্ধি পায়, যা বিকিরণ শনাক্ত করতে সহায়ক)। দ্বিতীয়ত, সর্বদিকে বিস্তৃত বেতার তরঙ্গের বিপরীতে, লেজার রশ্মি একটি নির্দিষ্ট অভিমুখে গমন করে, তাই সরাসরি পৃথিবীর অভিমুখে প্রেণ না করা হলে লেজার রশ্মি শনাক্ত করা অনেকটাই অসম্ভাব্য হয়ে পড়ে।[৬৩]

আলোক-ভিত্তিক সেটি অনুসন্ধানের সমর্থকরা উচ্চ শক্তির লেজার এবং একটি ১০ মি ব্যাস আয়নাকে আন্ত:নাক্ষত্রিক নির্দেশক হিসেবে ব্যবহারের কার্যকারিতার ওপর তাত্ত্বিক গবেষণা চালিয়েছেন।[৬৪] গবেষণার বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, এ ব্যবস্থায় লেজার থেকে একটি অণুতরঙ্গ বিচ্ছুরণ আয়নায় ফোকাস করা হলে দূরবর্তী সভ্যতা থেকে তা সূর্যের তুলনায় হাজার হাজার উজ্জ্বল হয়ে দৃশ্যমান হবে। এর ফলে সাইক্লপ্স গবেষণার সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয়েছে। একটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবস্থা গঠন করা যেতে পারে যা সম্ভাব্য বহির্জাগতিক সভ্যতার অবস্থানের একটি তালিকা থেকে এক একেকটি লক্ষ্যস্থলে নির্দিষ্ট মাত্রায় লেজার তরঙ্গ প্রেরণ করতে থাকবে। এভাবে ১০০ আলোকবর্ষ দূরত্বের মধ্যে সমস্ত সূর্য-সমতুল্য নক্ষত্রে লেজার সংকেত পাঠানো সম্ভব। কার্বন যৌগের তৈরি দুই মিটার ব্যাসের আয়না এবং আলো শনাক্তকারী বিন্যাসের সাহায্যে কম খরচে এধরনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার নকশাও এই গবেষণায় বর্ণিত হয়েছে। এটি দূরবর্তী সভ্যতার লেজার বিচ্ছুরণ চিহ্নিত করার জন্য আকাশ পর্যবেক্ষণ চালাতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়ার লিক পর্যবেক্ষণাগার। সাদা গোলাকার কাঠামোটি হল স্বয়ংক্রিয় গ্রহ অন্বেষক টেলিস্কোপ। ২.৪ মি ব্যাসের এই অপটিক্যাল টেলিস্কোপটি প্রধানত সৌরজগতের বহির্ভূত গ্রহের অনুসন্ধানের জন্য তৈরি, তবে ব্রেকথ্রু লিসেন প্রকল্পের অধীনে বহির্জাগতিক লেজার সংকেত পর্যবেক্ষণেও ব্যবহৃত হয়।

বেশ কিছু অপটিক্যাল সেটি পরীক্ষা বর্তমানে চলমান রয়েছে। হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ানের একটি দল (পল হরোভিৎজও এতে যুক্ত) একটি লোজার চিহ্নিতকারী যন্ত্র তৈরি করে হার্ভার্ডের ১৫৫ সেন্টিমিটার (৬১ ইঞ্চি) অপটিক্যাল টেলিস্কোপে বসিয়েছে। এই টেলিস্কোপটির সাধারণ নক্ষত্র জরিপ কাজের সাথে অপটিক্যাল সেটি জরিপও পাশাপাশি চলছে। ১৯৯৮ এর অক্টোবর থেকে ১৯৯৯ এর নভেম্বরের মধ্যে জরিপে প্রায় ২,৫০০ তারা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। কোন কৃত্রিম লেজার সংকেত ধরা না পড়লেও প্রচেষ্টাটি চলমান রয়েছে। দলটি অনুসন্ধানের পরবর্তী ধাপ হিসেবে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯১ সেন্টিমিটার (৩৬ ইঞ্চি) টেলিস্কোপে অনুরুপ ব্যবস্থা স্থাপন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করছে। এই কাজ সম্পন্ন হলে অনুসন্ধানে ত্রুটি হ্রাস করার জন্য টেলিস্কোপদুটি একই লক্ষ্যস্থলে যুগপৎ পর্যবেক্ষণ করবে। উপরন্তু, অনুরূপ লেজার সংকেত শনাক্তকারী সুবিধাসম্বলিত একটি বিশেষায়িত ১.৮ মিটার (৭১ ইঞ্চি) টেলিস্কোপেরও নকশা করা হয়েছে যা সমগ্র আকাশে আলোক পর্যবেক্ষণ চালাবে। এই টেলিস্কোপটি ম্যাসাচুসেটসের ওক রিজ পর্যবেক্ষণাগারে স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এছাড়া বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিরোসেটি (NIROSETI) সমন্বিতভাবে আলো-ভিত্তিক সেটি গবেষণা পরিচালনা করছে। বহির্গ্রহ অনুসন্ধানকারী জিওফ্রি মার্সির তত্ত্বাবধানে এবং ব্রেকথ্রু লিসেন-এর অধীনে একটি আলোক অনুসন্ধান চলমান, যেখানে বহির্গ্রহ অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত বর্ণালী তথ্যের বিশ্লেষণ করা হয়। তবে এক্ষেত্রে লেজার স্পন্দন নয়, বরং বিরতিহীন লেজার সংকেতের খোঁজ করা হয়। এ প্রকল্পটির অনুসন্ধানে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার হ্যামিল্টন পর্বতচূড়ায় অবস্থিত লিক পর্যবেক্ষণাগারের ২.৪ মিটার (৯৪ ইঞ্চি) স্বয়ংক্রিয় গ্রহ অন্বেষক (Automated Planet Finder) টেলিস্কোপ।[৬৫] হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেটি গবেষকদল বার্কলির অপর একটি অপটিক্যাল সেটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা করছে, এবং এটি পরিচালনা করছেন ড্যান ওয়ার্থিমার, যিনি হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান দলের লেজার শনাক্তকরণ ব্যবস্থাটি তৈরি করেছিলেন। এই অনুসন্ধান প্রকল্পটিতে লিউশনার পর্যবেক্ষণাগারের এ ৭৬ সেন্টিমিটার (৩০ ইঞ্চি) স্বয়ংক্রিয় টেলিস্কোপ এবং ওয়ার্থিমারের নির্মিত একটি পুরানো লেজার শনাক্তকারী ব্যবহৃত হচ্ছে।

২০১৭ সালের মে মাসে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি প্রতিবেদনে এমন কয়েকটি গবেষণার কথা উল্লেখ করেন যেখানে বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তিক স্বাক্ষর চিহ্নিত করার জন্য লেজার বিকিরণ পর্যবেক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এদের মধ্যে কেআইসি ৮৪৬২৮৫২ নক্ষত্রের কথা উঠে এসেছে। তারাটির উজ্জ্বলতায় এক ধরনের অস্বাভাবিক ওঠানামা লক্ষ্য করা যায়, যার পেছনে একটি কারণ হতে পারে তারাটিকে ঘিরে রাখা কোন বৃহদাকার কৃত্রিম কাঠামো (যেমন ডাইসন সোয়ার্ম)। তথাপি গবেষণাটিতে কেআইআইসি ৮৪৬২৮৫২ থেকে প্রযুক্তি-সম্পর্কিত কোন চিহ্নের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।[৬৬][৬৭][৬৮]

গামা-রশ্মি বিস্ফোরণ[সম্পাদনা]

গামা-রশ্মি বিচ্ছুরণ বহির্জাগতিক যোগাযোগের একটি সম্ভাব্য লক্ষণ হতে পারে। এরকম উচ্চ শক্তির বিস্ফোরণ গড়ে প্রায় প্রতি দিনই অন্তত একবার করে পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্ব জুড়ে পরিলক্ষিত হয়। তবে বর্তমানে সেটি পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণে গামা রশ্মির কম্পাঙ্ক অন্তর্ভুক্ত নয়, কারণ এগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দ্বারা শোষিত হয়ে যায় বলে ভূকেন্দ্রিক রিসিভারে শনাক্ত করা কঠিন। উপরন্তু, এরকম বিস্ফোরণের ব্যান্ডউইথের বিস্তার অত্যধিক, যা বর্তমান ডিজিটাল সংকেত প্রক্রিয়াকরণ সিস্টেমের পক্ষে বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত জটিল। তবুও, গামা-রশ্মি বিস্ফোরণের রহস্যময়তা ভীনগ্রহবাসী সম্পর্কিত ধারণায় উৎসাহ দিয়ে চলেছে। এমআইটি-এর হেস্ট্যাক পর্যবেক্ষণাগারের জন এ. বল অনুমান করেন যে, প্রযুক্তিগত সিঙ্গুলারিটি অর্জনকারী কোন উন্নত সভ্যতা মাত্র দুই মিলিসেকেন্ডব্যাপী গামা রশ্মি বিচ্ছুরণে ১×১০১৮ বিট তথ্য প্রেরণ করতে সক্ষম হবে, যা "পৃথিবীর সমগ্র জীবমণ্ডল, জিন এবং তথ্য, মিম, সমস্ত গ্রন্থাগার এবং কম্পিউটার মাধ্যমের তথ্য উপাদানের সমষ্টির সমতুল্য"।[৬৯]

বহির্জাগতিক নিদর্শনের অনুসন্ধান[সম্পাদনা]

বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার অনুসন্ধানের জন্য আন্ত:নাক্ষত্রিক বার্তাবাহী প্রোবের সম্ভাবনাটি ১৯৬০ সালে সর্বপ্রথম উত্থাপন করেছিলেন রোনাল্ড নিউবোল্ড ব্রেসওয়েল (ব্রেসওয়েল প্রোব দেখুন)। ১৯৭৮ সালে ব্রিটিশ ইন্টারপ্ল্যানেটারি সোসাইটির দায়দালাস প্রকল্পে এই পদ্ধতির প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা প্রদর্শিত হয়। ১৯৭৯ সালে রবার্ট ফ্রিটাস প্রস্তাব করেন যে বেতার সংকেত প্রেণের চাইতে মহাকাশযানে করে বার্তাবহন বহির্জাগতিক সভ্যতার সাথে যোগাযোগের শ্রেয়তর পদ্ধতি (ভয়েজার গোল্ডেন রেকর্ড দেখুন)।[৭০][৭১][৭২]

পৃথিবীর নিকটস্থ কোনো পর্যাপ্ত উন্নত সভ্যতা সহজেই পৃথিবীর ইন্টারনেটগত সংকেত নিরীক্ষণ করতে পারবে, এই সম্ভাবনা স্বীকার করে ১৯৯৬ সালে অধ্যাপক অ্যালেন টাফ বহির্জাগতিক সভ্যতার প্রতি যোগাযোগের আমন্ত্রণবার্তাবাহী একটি ওয়েব ভিত্তিক সেটি পরীক্ষা চালু করেন। প্রকল্পটির ১০০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে রয়েছেন বহু বিশিষ্ট পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, বিনোদনমাধ্যমের ব্যক্তিত্ব, দার্শনিক এবং ভবিষ্যতবিদ। সেটি লীগ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমেরিটাস অধ্যাপক এইচ. পল শুচ এই প্রকল্পটির প্রধান নীরিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন।

কোন বস্তুতে একটি বার্তা লিখে আন্তঃনাক্ষত্রিক গন্তব্যে প্রেরণ করা, তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গ দ্বারা যোগাযোগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিসাশ্রয়ী হতে পারে, যদি আলোক গতির চেয়ে দীর্ঘ বিলম্ব স্বীকার করে নেয়া যায়।[৭৩] অবশ্য, "হ্যালো" এর মত অত্যন্ত সরল বার্তার জন্য বেতার মাধ্যমই উপযুক্ত।[৭৪] যদি শক্তির অপ্রতুলতাকে প্রযুক্তিগত বাধা বলে গণ্য করা হয়, তাহলে সৌরকেন্দ্রিক বহির্জাগতিক নিদর্শন অনুসন্ধান (SETA) প্রচলিত বেতার ও আলোক অনুসন্ধানের পরিপূরক হতে পারে।[৭৫][৭৬][৭৭]

সেটি বেতার বীকন তত্ত্বের "সম্ভাব্য কম্পাঙ্ক" ধারণার মতই, স্বয়ংক্রিয় বহির্জাগতিক পর্যবেক্ষক যানের সম্ভাব্য বিশ্রামস্থল হতে পারে পৃথিবী-চাঁদ বা সূর্য-পৃথিবী স্থিতিশীল কক্ষপথসমূহ।[৭৮] তাই এধরনের এলাকায় বহির্জাগতিক নিদর্শন অনুসন্ধানের দীর্ঘমেয়াদী সেটি পরিকল্পনা গঠন করা যায়।

১৯৭৯ সালে ফ্রিটাস এবং ভালদেজ পৃথিবী-চাঁদ ব্যবস্থার লাগ্রাঞ্জীয় বিন্দু L4 এবং L5 এর কাছাকাছি এলাকায় এবং সংশ্লিষ্ট কক্ষীয় বলয়ের সৌর-সমাপতিত স্থানগুলিতে সম্ভাব্য বহির্জাগতিক প্রোবের আলোক অনুসন্ধান পরিচালনা করেছিলেন, তবে প্রায় ১৪তম ধাপের সূক্ষ্মতায়ও উল্লেখযোগ্য কিছু পাওয়া যায় নি।[৭৮] ১৯৮২ সালে তারা আরও একটি বিস্তৃত অনুরূপ অনুসন্ধান করেন, যার লক্ষ্যস্থল ছিল পৃথিবী-চাঁদ সিস্টেমের পাঁচটি লাগ্রাঞ্জীয় অবস্থান, স্থিতিশীল L4 / L5 কক্ষপথের সৌর-সমাপতিত অবস্থান, L1 / L2 এর নিকটবর্তী সম্ভাব্য স্থিতিশীল অসমতল কক্ষপথ, পৃথিবী-চাঁদ L3, এবং সূর্য-পৃথিবী L2 অবস্থান[৭৯]। তবে এবারও অতি সূক্ষ্ম সংবেনদশীলতা দিয়েও কোন বহির্জাগতিক চিহ্ন আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি।

১৯৮৩ সালের জুন মাসে ভালদেজ এবং ফ্রিটাস[৮০] হ্যাট ক্রিক পর্যবেক্ষণাগারের ২৬ মি বেতার টেলিস্কোপ দিয়ে ১৫১৬ মেগাহার্টজে অতিসূক্ষ্ম ট্রিটিয়াম রেখার অনুসন্ধান করেন। এসময় তারা ২০ আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত সকল নক্ষত্রসহ ১০৮টি মহাকাশীয় বস্তুর পর্যবেক্ষণ করেন। ট্রিটিয়াম কম্পাঙ্কটি উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হয়েছিল কারণ (১) আইসোটোপটি মহাবিশ্বে প্রাকৃতিকভাবে বিরল, (২) কম্পাঙ্কটি ভূ-কেন্দ্রিক পর্যবেক্ষণের অণুতরঙ্গ পরিসরের প্রায় মাঝামাঝি অবস্থিত, এবং (৩) বহির্জাগতিক উন্নত সভ্যতায় নিউক্লীয় সংযোজন দ্বারা শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার উপজাত হিসাবে ট্রিটিয়াম অতিসূক্ষ্ম বিকিরণ ঘটতে পারে। এ পর্যবেক্ষণে প্রশস্ত ও সংকীর্ণ ব্যান্ডে যথাক্রমে ৫-১০x10−২১ এবং ০.৭-২x১০−২৪ ওয়াট/মি/চ্যানেল পর্যায়ের সংবেদনশীলতা অর্জিত হয়েছিল, তথাপি তবে কোনও বহির্জাগতিক লক্ষণ শনাক্ত করা যায়নি।

প্রযুক্তিক স্বাক্ষর[সম্পাদনা]

প্রযুক্তির লক্ষণ তথা প্রযুক্তিক স্বাক্ষর বা টেকনোসিগনেচার বহির্জাগতিক সভ্যতার অনুসন্ধানে একটি সাম্প্রতিক গৃহীত উপায়।[১৯] টেকনোসিগনেচার বিভিন্ন উৎস থেকে উদ্ভূত হতে পারে, যেমন ডাইসন গোলক, মহাকাশ আয়না বা সৌর আচ্ছাদন[৮১] অথবা শিল্প সভ্যতার নির্গত বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ,[৮২] বা ভিনগ্রহের শহরের আলো, যা বৃহদাকার হাইপারটেলিস্কোপ তৈরি করা হলে তা দিয়ে সঙ্গে শনাক্ত করা যেতে পারে।[৮৩]

প্রযুক্তিক স্বাক্ষরকে সামগ্রিকভাবে তিন স্তরে বিভক্ত করা যেতে পারে: জ্যোতির্প্রকৌশল প্রকল্প, গ্রহ-উৎসগত সংকেত, এবং সৌরজগতের ভিতরে ও বাইরে আবিষ্কৃত মহাকাশযান।

সূর্য গোত্রীয় কোন নক্ষত্রের অবলোহিত বিকিরণ পর্যবেক্ষণে[৮৪] কিংবা দৃশ্যমান বর্ণালীতে নক্ষত্রটির আপাত অন্তর্ধান লক্ষ্য করে[৮৫] ডাইসন গোলকের মত সৌর-আবরক জ্যোতির্প্রকৌশলগত নির্মাণ (যা নক্ষত্রের সম্পূর্ণ বিকিরণকে শক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য তৈরি) শনাক্ত করা যেতে পারে। তবে এক দল গবেষক পৃথিবীর নিকটস্থ প্রায় এক লাখ বৃহৎ নক্ষত্রপুঞ্জের পর্যবেক্ষণ করেও অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তিগত সভ্যতার কোন সুস্পষ্ট লক্ষণ আবিষ্কার করতে পারেননি।[৮৬][৮৭]

জ্যোতির্প্রকৌশলের আরেকটি সম্ভাব্য রূপ, শ্কাদভ থ্রাস্টার বা নক্ষত্র ইঞ্জিন, নক্ষত্রের অবস্থানকে প্রভাবিত করতে সক্ষম, এবং নক্ষত্রের সম্মুখে থ্রাস্টারটি অতিক্রম করার সময় একে শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে।[৮৮] এছাড়া সৌরজগতের মধ্যে গ্রহাণু ভাণ্ডারের আহরণও জ্যোতির্প্রকৌশলগত স্বাক্ষরের একটি উদাহরণ। [৮৯]

আবিষ্কৃত বহির্গ্রহসমূহের প্রতিটিকে আলাদাভাবে প্রযুক্তিক লক্ষণের জন্য বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞান কেন্দ্রে কর্মরত অভি লোব প্রস্তাব করেছেন যে, কোন গ্রহের রাত্রিভাগে পরিলক্ষিত আলোক সংকেত উন্নত সভ্যতার স্থাপিত শহরাঞ্চলের একটি ইঙ্গিত হতে পারে।[৯০][৯১] উপরন্তু, শিল্পায়ন বা টেরাফর্মিং[৯২] প্রচেষ্টায় নি:সৃত রাসায়নিক পদার্থ[৯৩][৯৪] এবং অতিরিক্ত অবলোহিত বিকিরণ[৮৩][৯৫] উন্নত বুদ্ধিমত্তাকে চিহ্নিত করতে পারে।

তবে কোন গ্রহে শনাক্তকৃত আলোক এবং তাপীয় লক্ষণ থেকে স্পষ্টভাবে সভ্যতার অস্তিত্ব প্রমাণ করার জন্য তাকে প্রাকৃতিক উৎসগত আলোক বা তাপীয় সংকেত হতে পৃথক করতে হবে। কলোসাস কর্মীদলের যুক্তিমতে,[৯৬] সভ্যতার তাপীয় স্বাক্ষরটি একটি "আরামদায়ক" সীমার মধ্যে থাকবে, যা গ্রহটির নিজস্ব তাপমাত্রার তুলনায় মাত্র কয়েক ডিগ্রি উষ্ণতর। অন্যদিকে দাবানল, আগ্নেয়গিরি প্রভৃতি প্রাকৃতিক উৎসে সৃষ্ট তাপ উল্লেখযোগ্যবাবে তীব্রতর হয়, তাই বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে কৃত্রিম এবং প্রাকৃতিক উৎস পৃথক করা যাবে।

বহির্জাগতিক মহাকাশযান প্রযুক্তিক স্বাক্ষর অনুসন্ধানের একটি অন্যতম লক্ষ্যবস্তু। চৌম্বক পালসম্পন্ন আন্ত:নাক্ষত্রিক মহাকাশযানের উৎপন্ন সিনক্রোট্রন বিকিরণ হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূর থেকেও শনাক্তযোগ্য হতে পারে, এবং অন্যান্য প্রযুক্তিতে তৈরি মহাকাশযানসমূহ তুলনামূলক নিকট দূরত্ব তথাপি বহুদূর শনাক্ত করা যাবে।[৯৭] এছাড়া সৌরজগতের অভ্যন্তরে উপস্থিত কোন সম্ভাব্য বহির্জাগতিক রোবোটিক মহাকাশ প্রোব শনাক্ত করার জন্য আলোক এবং বেতার অনুসন্ধান চলছে।[৯৮][৯৯]

প্লাংক স্কেল অ্যাক্সেলারেটরের উচ্চশক্তির নিউট্রিনোগুলি পর্যাপ্ত উন্নত সভ্যতার জন্য বহু মেগাপারসেক দূরত্ব থেকে শনাক্তযোগ্য হওয়া সম্ভব।[১০০]

ফার্মির প্যারাডক্স[সম্পাদনা]

ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফারমি ১৯৫০-এর দশকে প্রস্তাব করেছিলেন যে যদি মহাবিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত সভ্যতার উপস্থিতি সুলভ হয় তবে কোন না কোনবাবে তারা শনাক্তযোগ্য হওয়া উচিত। উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের মতে,[১০১] ফার্মি জিজ্ঞেস করেছিলেন, "তারা কোথায়?" বা, "আর সবাই কোথায়?"

ফার্মি প্যারাডক্স প্রশ্ন করে কেন বহির্জাগতিক কোন সভ্যতা পৃথিবীতে আগমন করে নি,[১০২], এবং একই যুক্তিতে প্রশ্ন করা যায়, কেন বহির্জাগতিক সভ্যতার কোন সংকেত পর্যন্ত এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এ প্রশ্নটি সেটি গবেষণারক্ষেত্রে "বিশাল নীরবতা" (The Great Silence) নামেও পরিচিত।

ফার্মি প্যারাডক্স এভাবে বর্ণনা করা যায়:

মহাবিশ্বের আকার ও বয়স আমাদের ভাবতে বাধ্য করে যে মহাবিশ্বব্যাপী বহু উন্নত বহির্জাগতিক সভ্যতা রয়েছে। কিন্তু, পর্যাপ্ত প্রমাণের ঘাটতি এই ধারণার যৌক্তিক সমর্থন দেয় না। অতএব, সম্ভাব্য উপসংহার হল, হয় (১) আমাদের প্রাথমিক ধারণাটি ভুল এবং বহির্জাগতিক সভ্যতার উপস্থিতি অত্যন্ত দূর্লভ, অথবা (২) আমাদের বর্তমান পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তির ক্ষমতা তাদের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পর্যাপ্ত নয়, কিংবা (৩) আমাদের পর্যবেক্ষণ কৌশল ত্রুটিপূর্ণ এবং আমরা সঠিক লক্ষণের অনুসন্ধান করছি না।

ফার্মি প্যারাডক্সের জন্য একাধিক ব্যাখ্যা প্রস্তাব করা হয়েছে,[১০৩] যেমন, বুদ্ধিমান প্রাণ বিরল ("বিরল পৃথিবী তত্ত্ব") এই ধারণা, অথবা, বহির্জাগতিক সভ্যতার অস্তিত্ব থাকলেও তারা যোগাযোগ স্থাপন বা দীর্ঘ মহাকাশীয় দূরত্ব ভ্রমণ করতে কোন কারণে অনিচ্ছুক।

বিজ্ঞান লেখক টিমোথি ফেরিস প্রস্তাব করেছেন যে মহাজাগতিক সভ্যতাগুলো সম্ভবত মহাজাগতিক সময়ের তুলনায় ক্ষণস্থায়ী; তাই একটি সহজ সমাধান হতে পারে আন্ত:নাক্ষত্রিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, বা স্বয়ংক্রিয় কোন তথ্য সংরক্ষণাগার। এখানে বিলুপ্ত সভ্যতাসমূহের সঞ্চিত জ্ঞান সংগ্রহ করে এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মহাকাশব্যাপী অন্যান্য সভ্যতার কাছে সেই জ্ঞান ছড়িয়ে দেয়। ফেরিস এই ব্যবস্থাকে "ইন্টারস্টেলার ইন্টারনেট" নাম দিয়েছেন, যেখানে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাগুলো "সার্ভার" হিসেবে কাজ করে। যদি সত্যিই ইন্টারস্টেলার ইন্টারনেট থেকে থাকে, তবে এর সার্ভারগুলির মধ্যে যোগাযোগের পথ হবে সম্ভবত সংকীর্ণ ব্যান্ডে নির্দিষ্ট দিক অভিমুখী বেতার বা লেজার সংযোগ। এরকম সংকেত শনাক্ত করা খুব কঠিন। তবে নতুন সভ্যতার সাথে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে নেটওয়ার্কটি কিছু সম্প্রচার নোডও থাকতে পারে, যা মানব সভ্যতার পক্ষে শনাক্ত করা সহজতর হবে। "তথ্য সংস্কৃতি" সাপেক্ষে কিছুটা পুরাতন হলেও, এবং বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা- ও প্রযুক্তিগত জটিলতা (কোটি কোটি বছর নির্বিঘ্নে কাজ করবে এমন যান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি, বা একটি নির্দিষ্ট মাধ্যমে যোগাযোগে বহু বৈচিত্রময় সভ্যতার একমত হওয়া) সত্ত্বেও, এমন একটি পদ্ধতির উপস্থিতি স্পষ্টভাবেই পরীক্ষাযোগ্য।

এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মহাবিশ্বের বিশালতা। চার্লস স্টুয়ার্ট বোইয়ার বলেছেন, মানবসভ্যতার সমতুল্য কোন সভ্যতা যারা ১০০ বছরের কম সময় ধরে বেতার সংকেত নির্গমন করছে, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে সংবেদনশীল রেডিও টেলিস্কোপেও তাদের শনাক্ত করার মত পর্যাপ্ত ক্ষমতা নেই।[১০৪] সেরেনডিপ এবং অন্যান্য অধিকাংশ সেটি প্রকল্পে বহিরাগত সভ্যতার প্রেরিত সংকেত শনাক্ত করতে হলে, বস্তুত সংকেতটি সরাসরি পৃথিবীর দিকে উচ্চশক্তিতে প্রেরিত হতে হবে। এ যুক্তির আরও একটি অনুসিদ্ধান্ত হল, পৃথিবীর সভ্যতাও বর্তমানে কেবল ১০০ আলোকবর্ষ দূরত্বের বাইরের কোন সভ্যতার পক্ষে শনাক্তযোগ্য নয়।[১০৫]

শনাক্ত পরবর্তী কার্যবিধি[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী একাডেমী (আইএএ) দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী সেটি স্টাডি গ্রুপ (এসপিএসজি) পরিচালনা করে আসছে, যা সেটি সম্পর্কিত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, এবং আন্তর্জাতিক নীতির বিষয়ে পর্যালোচনা করে। এসপিএসজি প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী কংগ্রেসে (আইএসি) দুটি করে সেটি আলোচনাসভা সংগঠন করে। ২০০৫ সালে আইএএ দ্বারা অধ্যাপক পল ডেভিসকে সভাপতিত্বে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয় সেটি: শনাক্ত পরবর্তী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি টাস্ক গ্রুপ, যার দায়িত্ব হল "সম্ভাব্য বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার চিহ্ন আবিষ্কারজনিত প্রশ্নে সহায়তা ও পরামর্শ দেয়ার জন্য সদাপ্রস্তুত স্থায়ী কমিটি হিসেবে কাজ করা"।

তবে সেখানে উল্লেখিত প্রোটোকলগুলি সক্রিয় সেটি নয়, বরং কেবল বেতার সেটি অনুসন্ধানে প্রযোজ্য।[১০৬] "বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে যোগাযোগবার্তা প্রেরণ বিষয়ক নীতিমালার প্রজ্ঞাপন" শিরোনামের চার্টারে সক্রিয় সেটির ব্যাপারে নির্দেশনা রয়েছে।

২০০০ সালের অক্টোবরে জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইভান আলমার এবং জিল টার্টার ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে সেটি স্থায়ী স্টাডি গ্রুপের একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন, যাতে বহির্জাগতিক সভ্যতার প্রমাণ প্রকাশ করার সম্ভাব্য সামগ্রিক প্রভাব পরিমাপের জন্য "রিও স্কেল" নামে ০ থেকে ১০ মাত্রার একটি সাংখ্যিক স্কেলের প্রস্তাব করা হয়েছে[১০৭] (টরিনো স্কেলের মত)। রিও স্কেলের অনুকরণে ২০০৫ সালে সান মেরিনো স্কেল (পৃথিবী থেকে তথ্য প্রেরণের ঝুঁকি বিষয়ক) এবং ২০১০ সালে লন্ডন স্কেল (বহির্জাগতিক প্রাণ শনাক্ত বিষয়ক) [১০৮] উত্থাপিত হয়। রিও স্কেলটি ২০১৮ সালে সংশোধিত করা হয়েছে।[১০৯]

সেটি ইনস্টিটিউট আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াও! সংকেতকে বহির্জাগতিক কৃত্রিম উৎস হতে আগত বলে স্বীকৃতি দেয় না (কারণ সংকেতটির উৎস যাচাই করা সম্ভব হয় নি)। এছাড়া রেডিও উৎস SHGb02+14A হতে আগত সংকেতও কৃত্রিম সংকেত হিসেবে সেটি ইনস্টিটিউটের স্বীকৃতি পায়নি।[১১০][১১১] (যদিও সংকেতটির সম্পূর্ণ বিবরণ কখনও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি[তথ্যসূত্র প্রয়োজন])। জুনিভার্স এর মত কিছু স্বেচ্ছাশ্রমমুলক প্রকল্প ব্যবহারকারীদের বহির্জাগতিক সংকেত শনাক্তের স্বীকৃতি দেয়, তবে সেটি@হোমে সংকেত শনাক্তের পর ব্যবহারকারীদের কোনরূপ স্বীকৃতি কিংবা বিজ্ঞপ্তি দেয় না।

স্টিভেন এম. গ্রিয়ারসহ কিছু ব্যক্তিবর্গ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে উল্লেখযোগ্য গোপনীয় স্বার্থের কারণে সাধারণ জনগণকে বহির্জাগতিক প্রাণ আবিষ্কার বিষয়ে অবহিত না-ও করা হতে পারে।[১১২] ব্রুস জ্যাকস্কি সহ আরও অনেকে ধারণা করেন যে বহির্জাগতিক জীবনচিহ্নের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে—বিশেষত ধর্মীয় পটভূমিতে— সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখবে[১১৩]

সক্রিয় সেটি[সম্পাদনা]

সক্রিয় সেটি, বা বহিরাগত বুদ্ধিমত্তার নিকট বার্তা প্রেরণ (messaging to extraterrestrial intelligence, METI) এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মহাকাশে কৃত্রিম সংকেত প্রেরণ করা যেন কোন বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তা তা শনাক্ত করে মানবসভ্যতার উপস্থিতি জানতে পারে।

বাস্তবায়িত আন্ত:নাক্ষত্রিক বেতার বার্তাপ্রেরণ প্রকল্প[সম্পাদনা]

১৯৭৪ সালের নভেম্বরে আরেসিবো পর্যবেক্ষণাগারে ভীনগ্রহের সভ্যতাকে বার্তা পাঠানোর একটি প্রতীকী প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল। এখান থেকে আরেসিবো বার্তা হিসাবে পরিচিত একটি বেতার সংকেত পৃথিবী থেকে ২৫,০০০ আলোকবর্ষ দূরের মেসিয়ার ১৩ নক্ষত্রপুঞ্জ অভিমুখে পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া পরবর্তীতে ইউপাটোরিয়া গ্রহমণ্ডলীয় রাডার থেকে ১৯৯৯, ২০০১, ২০০৩ এবং ২০০৮ সালে যথাক্রমে "আইআরএমএস কসমিক কল", "টীন এজ মেসেজ", "কসমিক কল ২", এবং "এ মেসেজ ফ্রম আর্থ" নামক মহাজাগতিক বার্তা প্রেরণ করা হয়েছে।

ব্রেকথ্রু মেসেজ[সম্পাদনা]

ব্রেকথ্রু মেসেজ উদ্যোগটি হল ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ঘোষিত একটি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা, যাতে পৃথিবী থেকে বহির্জাগতিক সভ্যতার কাছে প্রেরণযোগ্য একটি ডিজিটাল বার্তা সংগঠনে জন্য ১০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার নির্ধারিত রয়েছে। বার্তাটি "মানবসভ্যতা এবং পৃথিবীর প্রতিনিধি" স্বরূপ হবে। উদ্যোগটি অঙ্গীকার করেছে যে, "উন্নত সভ্যতার সাথে যোগাযোগের ঝুঁকি এবং সুফল বিষয়ে বৈজ্ঞানিক ও রাজনৈতিক উচ্চ স্তরীয় বিস্তারিত বিতর্ক নিষ্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কোনও বার্তা প্রেরণ করা হবে না"।[১৯][১১৪]

বিরোধিতা[সম্পাদনা]

পদার্থবিজ্ঞানী স্টিভেন হকিং তার এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম গ্রন্থে বলেছেন, মানব সভ্যতার ইতিহাসে উন্নত গোষ্ঠী অনুন্নত গোষ্ঠীদের ওপর যে আচরণ করেছে, তার ভিত্তিতে বহির্জাগতিক সভ্যতাকে আমাদের অস্তিত্ব জানানো বোকামির কাজ হতে পারে। মানুষের ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি মত দিয়েছেন যে আমাদের জন্য "লুকিয়ে" থাকাই শ্রেয় হবে। সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে একটি প্রতিক্রিয়ামূলক মন্তব্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানী সেথ শস্টাক হকিংয়ের উদ্বেগ প্রশমন করেছেন। [১১৫] জ্যোতির্বিজ্ঞানী জিল টার্টারও হকিংয়ের সাথেও একমত নন। তার মতে, এমন একটি উন্নত সভ্যতা যারা আন্ত:নাক্ষত্রিক যোগাযোগ ও ভ্রমণের কার্যকারিতা অর্জনের মত দীর্ঘজীবী, তাদের মধ্যে দৃঢ় সমবায় সহযোগিতা ও অসহিংস মনোভাব বিকাশ লাভ করেছে। অবশ্য তিনি মনে করেন মানুষের পক্ষে সক্রিয়ভাবে বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করার জন্য উপযুক্ত সময় এখনও আসেনি, তার জন্য মানুষের প্রযুক্তিগতভাবে আরও উন্নতি লাভ করতে হবে, তবে ইতিমধ্যে সেটি অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়া যায়।[১১৬]

২০০৬ সালের অক্টোবরে বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার এর সম্পাদকীয়তে METI সম্পর্কে উদ্বেগ উত্থাপিত হয়েছিল, এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী একাডেমী সেটি স্টাডি গ্রুপের একটি সাম্প্রতিক সভার প্রেক্ষিতে মন্তব্য ছিল। সম্পাদক বলেন, "এটা স্পষ্ট নয় যে সমস্ত বহির্জাগতিক সভ্যতা অমায়িক হবে, এমনকি কোন অমায়িক সভ্যতার সাথে যোগাযোগের কোন গুরুতর প্রতিক্রিয়া হবে না।"[১১৭] জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং বৈজ্ঞানিক কল্পসাহিত্য লেখক ডেভিড ব্রিন একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। [১১৮]

ফার্মি জাতীয় এক্সেলারেটর ল্যাবরেটরির একজন কণা পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ক্যারিগান পরামর্শ দিয়েছেন যে পরোক্ষ সেটি অনুসন্ধানও বিপজ্জনক হতে পারে এবং ইন্টারনেটে প্রকাশিত কোন সংকেত কম্পিউটার ভাইরাস এর মত কাজ করতে পারে।[১১৯] তবে কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ব্রুস শ্নাইয়ার "অদ্ভুত সিনেমার গল্পের হুমকি" হিসাবে এরকম সম্ভাবনা বাতিল করেছেন। [১২০]

পৃথিবী থেকে ইচ্ছাকৃত বার্তা প্রেরণ করার ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা পরিমাণাত্মক ভিত্তি প্রদানের জন্য ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক মহাাকশচারী একাডেমির স্থায়ী সেটি স্টাডি গ্রুপ একটি নতুন বিশ্লেষণাত্মক কৌশল, সান মেরিনো স্কেল গ্রহণ করে।[১২১] অধ্যাপক ইভান আলমার ও অধ্যাপক এইচ. পল শুচের উদ্ভাবিত এই স্কেলে পৃথিবী থেকে সংকেতের তীব্রতা এবং তথ্যগত বিষয়বস্তুর ফাংশন হিসাবে তার তাৎপর্য মূল্যায়ন করা হয়। এই পরিমাপনীতি গৃহীত হবার ফলে ধরে নেয়া যায় যে এ ধরনের সব সংকেত সমান নয়, এবং সক্রিয় সেটির জন্য কোন সামগ্রিক আন্তর্জাতিক নীতি প্রতিষ্ঠার আগে এরকম প্রতিটি উদ্যোগের পরিকল্পিত সংকেত আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

তবে কিছু বিজ্ঞানী সক্রিয় সেটি সম্পর্কে এসব ভীতিকে অতিরিক্ত আতঙ্ক এবং অযৌক্তিক কুসংস্কার বলে মনে করেন (উদাহরণস্বরূপ দ্রষ্টব্য আলেকজান্ডার এল. জায়েতসেভ এর রচনাদি)।[১২২][১২৩] ২০১৫ সালে জীববিজ্ঞানী হুয়াও পেদ্রো দে মাগালহেস প্রস্তাব করেন যে চিড়িয়াখানা তত্ত্বের প্রেক্ষিতে, ইতিমধ্যেই মানব সভ্যতার পর্যবেক্ষণ করছে এমন কোন সম্ভাব্য বহির্জাগতিক সভ্যতাকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য একটি আমন্ত্রণ বার্তা প্রেরণ করা যায়। তিনি যুক্তি দেন যে, যদি চিড়িয়াখানা তত্ত্ব সঠিক হয়, তবে এই বার্তা প্রেরণের ফলে মানুষের অতিরিক্ত কোন বিপদ সৃষ্টি হবে না।[১২৪]

২০১৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে আমেরিকান বিজ্ঞান অগ্রগতি সংঘের সম্মেলনে জিওফ্রি মার্সি, সেথ শস্টাক, ফ্রাঙ্ক ড্রেক, ইলন মাস্ক এবং ডেভিড ব্রিন প্রমুখ, বুদ্ধিমান বহির্জাগতিক সভ্যতার উদ্দেশ্যে বার্তা প্রেরণ ঠিক হবে কীনা তা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন।[১২৫][১২৬] এই আলোচনার একটি ফল অনেকের স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি, "যেকোন বার্তা পাঠানোর আগে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক, রাজনৈতিক ও মানবিক পর্যালোচনা করতে হবে"।[১২৭] ২০১৫ সালের ২৮ মার্চে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় এই বিষয়ে সেথ শস্টাকের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।[১২৮]

সমালোচনা[সম্পাদনা]

বিভিন্ন সেটি প্রকল্পের অগ্রগতি সঙ্গে সঙ্গে এসব গবেষণা থেকে ঘোষিত অগ্রিম দাবিসমূহ অনেক সময় অতিরিক্ত অযৌক্তিক আশাবাদ হিসেবে সমালোচিত হয়েছে। যেমন, সেটি প্রকল্পের সমর্থক হলেও পিটার শেনকেল ২০০৬ সালে সেটি প্রচেষ্টার সমালোচনা করে বলেছেন:

"সাম্প্রতিক ফলাফল এবং অন্তর্দৃষ্টির আলোকে, অত্যধিক উল্লসিত না হয়ে বরং আরও বাস্তবসম্মত দৃষ্টিকোণ গ্রহণ করা উচিত। আমাদের নীরবে স্বীকার করে নিতে হবে যে প্রারম্ভিক ধারণাগুলো—দশ লাখ, না হয় এক লাখ, বা কমপক্ষে দশ হাজারটিও উন্নত বহির্জাগতিক সভ্যতা আমাদের নক্ষত্রপুঞ্জে থাকতে পারে—এই ধারণা হয়ত এখন আর বিশ্বাসযোগ্য নয়।"[১২৯]

এছাড়া সেটি মাঝে মাঝে এমন গোষ্ঠীর সমালোচনার স্বীকার হয়েছে যারা মনে করেন এই সমস্ত বিষয়টিই এক ধরনের ছদ্মবিজ্ঞান[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বিশেষ করে, তারা অভিযোগ করেছেন যে বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার অস্তিত্বের সমর্থনে কোন লক্ষণই দেখা যায়নি[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এবং তদুপরি, পৃথিবী-বহির্ভূত সভ্যতার উপস্থিতির মিথ্যা প্রতিপাদন করার মত যথেষ্ট পপারীয় মানদণ্ড নেই, যেমনটা ২০০৯ সালে নেচার পত্রিকার সম্পাদকীয়তে ব্যাখ্যা করা হয়েছে:

"সেটি ... সর্বদা মূলধারার জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রান্তিক সীমায় অবস্থিত থাকবে। এর আংশিক কারণ হচ্ছে, যতই বৈজ্ঞানিক কঠোরতা প্রদর্শিত হোক না কেন, তবুও ইউএফও-বিশ্বাস এবং অন্যান্য উদ্ভট ধারণার সাথে সেটি সংশ্লিষ্টতা এড়াতে পারছে না। তাছাড়া, সেটি যৌক্তিকভাবে মিথ্যা-প্রমাণযোগ্য পরীক্ষা নয়। যত সূক্ষ্মভাবেই সম্পূর্ণ নক্ষত্রপুঞ্জে অনুসন্ধান করা হোক না কেন, যদি তা বেতার নীরবতায় নিষ্পন্ন হয় তবুও তা বহির্জাগতিক সভ্যতার অস্তিত্বের সম্ভাবনা বাতিল করে দেয় না। এই ফলাফল কেবল সর্বোপরি প্রমাণ করতে পারে যে ওই সভ্যতাগুলি যোগাযোগের জন্য বেতার মাধ্যম ব্যবহার করে না। " [৪]

এ পত্রিকায় আরও বলা হয়েছে যে সেটি গবেষণাগুলো "প্রায় বিশ্বাসের সমতুল্য একরকম আশা দ্বারা চিহ্নিত" যে ভীনগ্রহবাসীরা পৃথিবী লক্ষ্য করে যোগাযোগ সংকেত প্রেরণ করছে, কিন্তু "একই বিশ্বাস নিয়ে" কোন ভীনগ্রহের সভ্যতা যদি পৃথিবীর পর্যবেক্ষণ করে তবে তারা "তীব্রভাবে আশাহত" হবে; এবং সেটি গবেষণাসমূহ এমনকি সহানুভূতিশীল বিজ্ঞানী মহল ও সরকারী তহবিলের সমর্থন অর্জনেও দূর্বল কারণ এটি "এমন প্রচেষ্টা যার ব্যর্থতার সম্ভাবনা অত্যধিক"।[৪]

অবশ্য নেচার আরও যোগ করেছে যে, "তবুও ছোটখাটো সেটি প্রচেষ্টা সমর্থনযোগ্য, বিশেষত এর সাফল্যের ব্যাপক তাৎপর্যের প্রেক্ষিতে" এবং, "আনন্দের কতা হচ্ছে কিছু ধনী প্রযুক্তিবিদ এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত দাতারা এক্ষেত্রে সহায়তা প্রদানের জন্য সচেষ্ট হয়ে এগিয়ে এসেছেন"। [৪]

বিরল পৃথিবী তত্ত্বের সমর্থকদের মতে, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত সভ্যতা মহাবিশ্বে খুবই বিরল হতে পারে, এবং তা হলে সেটি প্রচেষ্টাসমূহ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।[১৩০][১৩১][১৩২] তবে বিরল পৃথিবী তত্ত্বটির বিপক্ষেই অনেক সমালোচনার কারণ রয়েছে।[১৩২]

১৯৯৩ সালে রয় ম্যাশ দাবি করেছিলেন যে "বহির্জাগতিক বুদ্ধিমত্তার অস্তিত্বের পক্ষে যুক্তিগুলি সর্বদা সুবৃহৎ সংখ্যার উপর অত্যধিক গুরুত্ব দেয়, এবং প্রায়শই কোন একক দৃষ্টান্ত থেকে সার্বজনীনতায় পৌঁছানোর একটি পরোক্ষ নির্ভরতা ধারণ করে", এবং তিনি উপসংহার টেনে বলেন যে, "বিশ্বাসী এবং সন্দেহভাজনদের মধ্যে মতবিরোধ মূলত আনুমানিক ধারণার সংঘাতে পর্যবসিত হয়, যা আমাদের বর্তমান জ্ঞানের ভিত্তিতে সমাধান করা, এমনকি আলোচনা করাও প্রায় অসাধ্য"।[১৩৩] এর বিপরীতে ২০১২ সালে মিলান এম. চিরকোভিচ (তংকালীন বেলগ্রেড জ্যোতির্বিজ্ঞান মানমন্দিরের গবেষণা অধ্যাপক এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিকতার ভবিষ্যৎ বিভাগের সহকারী গবেষক[১৩৪]) দাবি করেছেন যে ম্যাশ আধুনিক সেটি গবেষকদের উপলব্ধ অভিজ্ঞতামূলক তথ্য উপেক্ষা করে অত্যধিক বিমূর্ত ধারণাসমূহের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল ছিলেন।[১৩৫]

ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ইমেরিটাস অধ্যাপক জর্জ বাসাল্লা[১৩৬] সেটি প্রচেষ্টার একজন সমালোচক। তিনি ২০০৬ সালে যুক্তি দিয়েছিলেন যে, "বিজ্ঞানীদের কথিত আলোচনা করা বহির্জাগতিক প্রাণী এবং ধর্মীয় বা পৌরাণিক আত্মা এবং দেবতাদের মতই একই রকম কল্পনাপ্রসূত"[১৩৭][১৩৭][১৩৮][১৩৮] তবে এর বিপরীতে চিরকোভিচ বলেছেন[১৩৪] বাসাল্লা "সেটি বিশ্বাসী" এবং "সেটিতে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী", যারা প্রায়ই সেটি ফলাফল নিয়ে সন্দিহান, এই দুই গোষ্ঠীর প্রভেদ আবিষ্কারে ব্যর্থ হয়েছেন, এবং প্রাচীন গ্রিক চিন্তাবিদ ও আধুনিক বিজ্ঞানীদের নিবেদিত যুক্তির পেছনে জ্ঞানের ভিত্তির পার্থক্য উপেক্ষা করেছেন।[১৩৮]

নিউ ইয়র্কের সিইউএনওয়াই-সিটি কলেজের দর্শনের অধ্যাপক মাসিমো পিলুচ্চি[১৩৯] ২০১০ সালে প্রশ্ন তোলেন যে সেটি "অস্বস্তিজনকভাবে ছদ্মবিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ কীনা", কেননা এমন কোন সুস্পষ্ট অবস্থান নেই যখন নেতিবাচক ফলাফল দ্বারা বহির্জাগতিক প্রাণের অনুসন্ধান পরিত্যক্ত হতে পারে।[১৪০] তার উপসংহার মতে সেটি একধরনের "আধা-বিজ্ঞান"। চিরকোভিচ বলেন[১৩৪] যে পিলুচ্চির উপসংহার সেটি গবেষণাকে "স্ট্রিং তত্ত্ব, কোয়ান্টাম মেকানিক্স, বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান এবং জারেড ডায়মন্ড এর 'সিন্থেটিক' ইতিহাস" প্রমুখ প্রসিদ্ধ ধারণার কাতারে স্থাপন করেছে। তিনি আরও বলেন যে সেটি সম্পর্কে পিলুচ্চির সমালোচনা "দূর্বল, সেকেলে, এবং ম্যাশ[১৩৩] ও বাসাল্লার[১৩৭] মত মনস্তাত্ত্বিক পক্ষপাতের" দোষে দুষ্ট।[১৪১]

ইউএফওলজিস্ট স্ট্যান্টন ফ্রিডম্যান প্রায়ই সেটি গবেষকদের সমালোচনা করেন, কারণ তার মতে তারা ইউএফওলজি বিষয়ে অবৈজ্ঞানিকভাবে নিন্দা করেন।[১৪২][১৪৩] কিন্তু ইউএফওলজি সেটির মত আনুষ্ঠানিকভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্র হিসাবে স্বীকৃত হয় নি,[১৪৪][১৪৫] এবং এটি সাধারণত আংশিক[১৪৬] বা পুরোপুরি[১৪৭][১৪৮] ছদ্মবিজ্ঞান হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। ২০১৬ সালের একটি সাক্ষাৎকারে জিল টার্টার উল্লেখ করেন যে সেটি এবং ইউএফও বিষয়দুটির মধ্যকার সংশ্লিষ্টতা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।[১৪৯] তিনি বলেন, "বহুদূরের অন্য এক গোষ্ঠীর প্রযুক্তির প্রমাণ চিহ্নিত করার জন্য সেটি গবেষণায় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের প্রতিষ্ঠিত সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়। আমরা যদি কখনও কোন সংকেত শনাক্ত করার দাবি করি, তবে তার পক্ষে প্রমাণ এবং তথ্য সরবরাহ করব যা স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা যাবে। ইউএফও— এক্ষেত্রে এর কোনটাই প্রযোজ্য না"।[১৪৯]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Schenkel, Peter (মে ২০০৬)। "SETI Requires a Skeptical Reappraisal"। Skeptical Inquirer। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  2. Moldwin, Mark (নভেম্বর ২০০৪)। "Why SETI is science and UFOlogy is not"। Skeptical Inquirer। ১৩ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৯ 
  3. Johnson, Steven (২৮ জুন ২০১৭)। "Greetings, E.T. (Please Don't Murder Us.)"New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৭ 
  4. "SETI at 50"। ২০০৯: 316। ডিওআই:10.1038/461316aপিএমআইডি 19759575 
  5. Katz, Gregory (জুলাই ২০, ২০১৫)। "Searching for ET: Hawking to look for extraterrestrial intelligence"AP News। জুলাই ২২, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২০, ২০১৫ 
  6. Seifer, Marc J. (১৯৯৬)। "Martian Fever (1895–1896)"। Wizard : the life and times of Nikola Tesla: biography of a genius। Carol Pub.। পৃষ্ঠা 157আইএসবিএন 978-1-55972-329-9ওসিএলসি 33865102 
  7. Spencer, John (১৯৯১)। The UFO EncyclopediaAvon Booksআইএসবিএন 978-0-380-76887-5ওসিএলসি 26211869 
  8. W. Bernard Carlson, Tesla: Inventor of the Electrical Age, Princeton University Press - 2013, pages 276-278.
  9. Corum, Kenneth L.; James F. Corum (১৯৯৬)। Nikola Tesla and the electrical signals of planetary origin (PDF)। পৃষ্ঠা 1, 6, 14। ওসিএলসি 68193760 
  10. Jacques Lasker। "A Primer on Mars Oppositions" 
  11. Dick, Steven (১৯৯৯)। The Biological Universe: The Twentieth Century Extraterrestrial Life Debateআইএসবিএন 978-0-521-34326-8 
  12. Prepare for Contact ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে. Letters of Note (2009-11-06). Retrieved on 2011-10-14.
  13. Cocconi, Giuseppe & Philip Morrison (১৯৫৯)। "Searching for interstellar communications": 844–846। ডিওআই:10.1038/184844a0 
  14. "Cosmic Search Vol. 1, No. 1"। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  15. "Science: Project Ozma," Time, April 18, 1960 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত জুলাই ২১, ২০১৩ তারিখে (web version accessed 17 September 2010)
  16. Sagan, Carl; Iosif Shklovskii (১৯৬৬)। Intelligent Life in the Universeআইএসবিএন 978-0-330-25125-9 
  17. "Project Cyclops: A Design Study of a System for Detecting Extraterrestrial Intelligent Life" (পিডিএফ)। NASA। ১৯৭১। সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১২, ২০১৪ 
  18. Robert H. Gray (২০১২)। The Elusive WOW: Searching for Extraterrestrial Intelligence। Palmer Square Press। আইএসবিএন 978-0-9839584-4-4 
  19. Johnson, Steven (২৮ জুন ২০১৭)। "Greetings, E.T. (Please Don't Murder Us.)"New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৭ 
  20. Wolfe, JH; ও অন্যান্য (১৯৭৯)। "CP-2156, Chapter 5.5. SETI – The Search for Extraterrestrial Intelligence: Plans and Rationale"। NASA। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১, ২০০৯ 
  21. Alan M. MacRobert (২৯ মার্চ ২০০৯)। "SETI Searches Today"। Sky and Telescope। ২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৯ 
  22. Garber, S. J. (১৯৯৯)। "Searching for Good Science - the Cancellation of NASA's SETI Program": 3। 
  23. "Ear to the Universe Is Plugged by Budget Cutters"The New York Times। অক্টোবর ৭, ১৯৯৩। সংগ্রহের তারিখ মে ২৩, ২০১০ 
  24. "Searching for Intelligent Aliens: Q&A with SETI Astronomer Jill Tarter"Space.com। মে ২২, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৫, ২০১২ 
  25. Siemion, Andrew (সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫)। "Prepared Statement by Andrew Siemion - Hearing on Astrobiology Status Report - House Committee on Science, Space, and Technology"SpaceRef.com। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৯, ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  26. "Allen Telescope Array General Overview"SETI Institute। ২০০৬-০৪-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৬-১২ 
  27. Welch, Jack (আগস্ট ২০০৯)। "The Allen Telescope Array: The First Widefield, Panchromatic, Snapshot Radio Camera for Radio Astronomy and SETI": 1438–1447। arXiv:0904.0762অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1109/JPROC.2009.2017103 
  28. Gutierrez-Kraybill, Colby (২০১০)। "Commensal observing with the Allen Telescope array: Software command and control"। Proceedings of the SPIE। Software and Cyberinfrastructure for Astronomy। পৃষ্ঠা 77400Z। arXiv:1010.1567অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1117/12.857860 
  29. Harp, G. R. "Customized beam forming at the Allen Telescope Array." ATA Memo Series 51 (2002), available at http://www.seti.org/sites/default/files/ATA-memo-series/memo51.pdf.
  30. Barott, William C. (২০১১)। "Real-time beamforming using high-speed FPGAs at the Allen Telescope Array": n/a। ডিওআই:10.1029/2010RS004442 
  31. Harp, G. R. (২০০৫)। "Using Multiple Beams to Distinguish Radio Frequency Interference from SETI Signals": n/a। arXiv:1309.3826অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1029/2004RS003133 
  32. Tarter, Jill (২০১১)। "The first SETI observations with the Allen telescope array": 340–346। ডিওআই:10.1016/j.actaastro.2009.08.014 
  33. Backus, Peter R.; Allen Telescope Array Team (২০১০)। "The ATA Galactic Center Survey: SETI Observations in 2009": 403.02। 
  34. Harp, Gerald R., et al. A new class of SETI beacons that contain information. Communication with Extraterrestrial Intelligence. State University of New York Press, 2011.
  35. Croft, Steve (২০১০)। "The Allen Telescope Array Twenty-Centimeter Survey—A 690 Deg2, 12 Epoch Radio Data Set. I. Catalog and Long-Duration Transient Statistics": 45–58। arXiv:1006.2003অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1088/0004-637X/719/1/45 
  36. Siemion, Andrew P.V. (২০১২)। "The Allen Telescope Array Fly's Eye Survey for Fast Radio Transients": 109। arXiv:1109.2659অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1088/0004-637X/744/2/109 
  37. Siemion, Andrew (২০১১)। "Results from the Fly's Eye Fast Radio Transient Search at the Allen Telescope Array": 240.06। 
  38. "SETI scope suspends search"। ২৫ এপ্রিল ২০১১। ২ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১১ 
  39. "SETI Search Resumes at Allen Telescope Array"SETI Institute। ২০১১-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-২৪ 
  40. Damon Arthur। "New Hat Creek receivers will let SETI delve deeper into space"। ২০১৪-০৩-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  41. "SERENDIP"UC Berkeley। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২০ 
  42. "ALFA"। ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৯ 
  43. "Л. М. Гиндилис SETI: Поиск Внеземного Разума 1.9" 
  44. Feltman, Rachel (২০ জুলাই ২০১৫)। "Stephen Hawking announces $100 million hunt for alien life"Washington Post। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১৫ 
  45. Merali, Zeeya (২০১৫)। "Search for extraterrestrial intelligence gets a $100-million boost": 392–3। ডিওআই:10.1038/nature.2015.18016পিএমআইডি 26201576 
  46. Rundle, Michael (২০ জুলাই ২০১৫)। "$100m Breakthrough Listen is 'largest ever' search for alien civilisations"। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১৫ 
  47. "Berkeley SETI"seti.berkeley.edu (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৯-২১ 
  48. "Breakthrough Initiatives"breakthroughinitiatives.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৯-২১ 
  49. "Breakthrough Listen Initiative - News from Department of Astronomy"astro.berkeley.edu (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৯-২১ 
  50. Sample, Ian (২০ জুলাই ২০১৫)। "Anybody out there? $100m radio wave project to scan far regions for alien life"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১৫ 
  51. MacMahon, David H. E.; Price, Danny C. (২০১৭-০৭-১৯)। "The Breakthrough Listen Search for Intelligent Life: A Wideband Data Recorder System for the Robert C. Byrd Green Bank Telescope": 044502। arXiv:1707.06024অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1088/1538-3873/aa80d2 
  52. "Breakthrough Initiatives"breakthroughinitiatives.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৯-২২ 
  53. What Happens If China Makes First Contact?- Atlantic
  54. Brinks, Elias (১১ জুলাই ২০১৬)। "China Opens the Aperture to the Cosmos"The ConversationUS News and World Report। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৬ 
  55. "Science SETI, FAST website"। ১৭ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৯ 
  56. de Zutter, Willy। "SETI@home — Credit Overview"। BOINCstats। ডিসেম্বর ১৫, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  57. Whitehouse, David (২০০৪-০৯-০২)। "Astronomers deny ET signal report"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৩ 
  58. Alexander, Amir (২০০৪-০৯-০২)। "SETI@home Leaders Deny Reports of Likely Extraterrestrial Signal"The Planetary Society। ২০১১-০৭-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৬-১২ 
  59. Alan M. MacRobert. "SETI Searches Today" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে. Sky and Telescope (2010?).
  60. Chown, Marcus (এপ্রিল ১৯৯৭)। "The Alien Spotters": 28। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-১৩ 
  61. H. Paul Shuch। "The SETI League, Inc.: Project Argus" 
  62. Townes, C. H. (১৯৮৩)। "At what wavelengths should we search for signals from extraterrestrial intelligence?": 1147–1151। ডিওআই:10.1073/pnas.80.4.1147পিএমআইডি 16593279পিএমসি 393547অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  63. Search for extraterrestrial intelligence extends to new realms. University of California. Published by PhysOrg. 20 March 2016.
  64. SETI 2020: A Roadmap for the Search for Extraterrestrial Intelligence। SETI Press। ২০০৩। আইএসবিএন 978-0-9666335-3-5 
  65. Steven S. Vogt et al., APF - The Lick Observatory Automated Planet Finder, 26 February 2014.
  66. Koren, Marina (১৭ এপ্রিল ২০১৭)। "Searching the Skies for Alien Laser Beams - A new study scanned 5,600 stars for tiny emissions of light, which may be the best way for an extraterrestrial civilization to signal its existence."The Atlantic। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৭ 
  67. Tellis, Nathaniel K.; Marcy, Geoffrey W. (এপ্রিল ২০১৭)। "A Search for Laser Emission with Megawatt Thresholds from 5600 FGKM Stars": 251। arXiv:1704.02535অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.3847/1538-3881/aa6d12 
  68. Tellis, Nathaniel K.; Marcy, Geoffrey W. (১২ মে ২০১৭)। "A Search for Laser Emission with Megawatt Thresholds from 5600 FGKM Stars": 251। arXiv:1704.02535অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.3847/1538-3881/aa6d12 
  69. Ball, J.A. (১৯৯৫)। "Gamma-Ray Bursts: The ETI Hypothesis" (PostScript) 
  70. Freitas Jr., Robert A. (১৯৮০)। "Interstellar probes — A new approach to SETI"। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  71. Freitas Jr., Robert A (১৯৮৩)। "Debunking the Myths of Interstellar Probes"। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  72. Freitas Jr., Robert A. (১৯৮৩)। "The Case for Interstellar Probes"। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  73. C. Rose & G. Wright (২ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Inscribed matter as an energy efficient means of communication with an extraterrestrial civilization" (পিডিএফ): 47–9। ডিওআই:10.1038/nature02884পিএমআইডি 15343327 
  74. Woodruff T. Sullivan (২ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Message in a bottle": 27–28। ডিওআই:10.1038/431027aপিএমআইডি 15343314 
  75. Freitas Jr., Robert A (নভেম্বর ১৯৮৩)। "The Search for Extraterrestrial Artifacts (SETA)"। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  76. Editors (৮ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "NY Times Editorial"New York Times 
  77. Rose, Christopher (সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Cosmic Communications"। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১, ২০১০ 
  78. Freitas Jr., Robert A; Valdes, Francisco (১৯৮০)। "A Search for Natural or Artificial Objects Located at the Earth-Moon Libration Points"। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  79. Valdes, Francisco; Freitas Jr., Robert A (১৯৮৩)। "A Search for Objects near the Earth-Moon Lagrangian Points" 
  80. Valdes, Francisco; Freitas Jr., Robert A (১৯৮৬)। "A Search for the Tritium Hyperfine Line from Nearby Stars" 
  81. Korpela, Eric (২০১৫)। "Modeling Indications of Technology in Planetary Transit Light Curves -- Dark-side illumination": 139। arXiv:1505.07399অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1088/0004-637X/809/2/139 
  82. Almár, Iván (২০১১)। "SETI and astrobiology: The Rio Scale and the London Scale": 899–904। ডিওআই:10.1016/j.actaastro.2011.05.036 
  83. "Heat-Seeking, Alien-Hunting Telescope Could Be Ready In 5 Years"। Space.com। ২০১৩-০৬-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-১০ 
  84. Freemann J. Dyson (১৯৬০)। "Search for Artificial Stellar Sources of Infra-Red Radiation": 1667–1668। ডিওআই:10.1126/science.131.3414.1667পিএমআইডি 17780673। ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৯ 
  85. Impossible vanishing stars could be signs of advanced alien life. Shannon Hall, New Scientist. 1 July 2016.
  86. Lee Billings। "Alien Supercivilizations Absent from 100,000 Nearby Galaxies"Scientific American 
  87. Griffith, Roger L.; Wright, Jason T. (১৫ এপ্রিল ২০১৫)। "The Ĝ Infrared Search for Extraterrestrial Civilizations with Large Energy Supplies. III. The Reddest Extended Sources in WISE": 25। arXiv:1504.03418অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1088/0067-0049/217/2/25 
  88. Villard, Ray (২০১৩)। "Alien 'Star Engine' Detectable in Exoplanet Data?"। ২০১৩-০৭-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-০৮ 
  89. Duncan Forgan; Martin Elvis (২০১১)। "Extrasolar Asteroid Mining as Forensic Evidence for Extraterrestrial Intelligence": 307। arXiv:1103.5369অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1017/S1473550411000127 
  90. "SETI search urged to look for city lights"। UPI.com। ২০১১-১১-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-১০ 
  91. Extrasolar Planets: Formation, Detection and Dynamics Rudolf Dvorak, page 14 John Wiley & Sons, 2007
  92. "Alien Hairspray May Help Us Find E.T."। Space.com। ২০১২-১১-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-১০ 
  93. "Satellite sniffs out chemical traces of atmospheric pollution / Observing the Earth / Our Activities / ESA"। Esa.int। ২০০০-১২-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-১০ 
  94. "Haze on Saturn's Moon Titan Is Similar to Earth's Pollution"। Space.com। ২০১৩-০৬-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-১০ 
  95. Povich, Matthew (১১ আগস্ট ২০১৪)। "Infrared Search for Extraterrestrial Civilizations with Large Energy Supplies"astro-ph.GA। Astrobiology Web। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-১৯ 
  96. "How to Find ET with Infrared Light"। Astronomy.com। জুন ২০১৩। ২০১৩-১১-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  97. Zubrin, Robert (১৯৯৫)। Detection of Extraterrestrial Civilizations via the Spectral Signature of Advanced Interstellar Spacecraft। Astronomical Society of the Pacific। পৃষ্ঠা 487–496। 
  98. Freitas, Robert (নভেম্বর ১৯৮৩)। "The Case for Interstellar Probes": 490–495। 
  99. Tough, Allen (১৯৯৮)। "Small Smart Interstellar Probes" (পিডিএফ): 167–174। 
  100. A bot will complete this citation soon. Click here to jump the queue arXiv:[১].
  101. Jones, Eric (মার্চ ১৯৮৫)। ""Where is everybody?", An account of Fermi's question" (পিডিএফ)। Los Alamas National Laboratory। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  102. Ben Zuckerman and Michael H. Hart (editors), Extraterrestrials: Where Are They? Elsevier Science & Technology Books (1982), আইএসবিএন ৯৭৮০০৮০২৬৩৪২৭
  103. Stephen Webb, Where is Everybody? Fifty Solutions to Fermi's Paradox, Copernicus, 2002 edition, 978-0387955018
  104. "Eavesdropping on the Earth" (পিডিএফ)। astrosociety.org। ১৯৭৯। 
  105. "SETI Insentitive To Earth-like Signals"। spacedaily.com। ১৯৯৮। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৩ 
  106. Pope, Nick What to do if we find extraterrestrial life? Who gets notified? Do we reply? Experts are already arguing msnbc.com 10/18/2010
  107. "The Rio Scale"। International Academy of Astronautics। ২০১৬-০৯-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৯ 
  108. Iván Almár (নভেম্বর–ডিসেম্বর ২০১১)। "SETI and Astrobiology: The Rio Scale and the London Scale": 899–904। ডিওআই:10.1016/j.actaastro.2011.05.036। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৯ 
  109. Scientists revise the Rio Scale for reported alien encounters. July 2018
  110. Alexander, Amir (২০০৪-০৯-০২)। "SETI@home Leaders Deny Reports of Likely Extraterrestrial Signal"The Planetary Society। ২০১১-০৭-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৬-১২ 
  111. Whitehouse, David (২০০৪-০৯-০২)। "Astronomers deny ET signal report"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৬-১২ 
  112. Vance, Ashlee SETI urged to fess up over alien signals The Register 31 July 2006
  113. Siegel, Lee [The Meaning of Life http://nai.nasa.gov/news_stories/news_print.cfm?ID=138 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে] NASA July 6, 2001
  114. "Breakthrough Initiatives"www.breakthroughinitiatives.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-২৪ 
  115. Shostak, Seth (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Why Stephen Hawking is light years from the truth about 'dangerous aliens'"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  116. Orwig, Jessica। "A world leading scientist on the search for extraterrestrials pointed out a flaw in Stephen Hawking's fear of finding intelligent aliens"Business Insider। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  117. "Editorial"। Nature443: 606। অক্টোবর ২০০৬। 
  118. Brin, David (জুন ২০০৬)। "Shouting at the Cosmos"। Lifeboat Foundation। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  119. Carrigan Jr., Robert A. (জুন ২০০৬)। "Do potential SETI signals need to be decontaminated?" (পিডিএফ)। Fermi National Accelerator Laboratory। 
  120. "A Science-Fiction Movie-Plot Threat"। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৩, ২০১১ 
  121. Iván Almára and H.Paul Shuch (জানুয়ারি ২০০৭)। "The San Marino Scale: A new analytical tool for assessing transmission risk": 57–59। ডিওআই:10.1016/j.actaastro.2006.04.012 
  122. Zaitsev, Alexander L. (সেপ্টেম্বর ২০০৭)। "Sending and searching for interstellar messages" (পিডিএফ)। 58th International Astronautical Congress। ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৯ 
  123. Zaitsev, Alexander L. (এপ্রিল ২০০৮)। "Detection probability of terrestrial radio signals by a hostile super-civilization"arXiv:0804.2754অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  124. de Magalhaes, J. P. (২০১৫)। "A direct communication proposal to test the Zoo Hypothesis": 22–26। arXiv:1509.03652অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1016/j.spacepol.2016.06.001 
  125. Borenstein, Seth (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Should We Call the Cosmos Seeking ET? Or Is That Risky?"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  126. Ghosh, Pallab (১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Scientist: 'Try to contact aliens'"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  127. Various (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Statement - Regarding Messaging To Extraterrestrial Intelligence (METI) / Active Searches For Extraterrestrial Intelligence (Active SETI)"University of California, Berkeley। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  128. Shostak, Seth (২৮ মার্চ ২০১৫)। "Should We Keep a Low Profile in Space?"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৫ 
  129. Schenkel, Peter (মে ২০০৬)। "SETI Requires a Skeptical Reappraisal"। Skeptical Inquirer। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০০৯ 
  130. Ward, Peter D.; Brownlee, Donald (২০০৭)। Rare Earth: Why Complex Life is Uncommon in the Universe। Springer। পৃষ্ঠা 250। আইএসবিএন 9780387218489  Revised edition (first published in 2000)
  131. Denton, Peter H.; Restivo, Sal (২০০৮)। Battleground: Science and Technology [2 volumes]। Battleground। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 403। আইএসবিএন 9781567207439 
  132. Losch, Andreas (২০১৭)। What is Life? On Earth and Beyond। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 167। আইএসবিএন 9781107175891 
  133. Mash, Roy. (1993).Big numbers and induction in the case for extraterrestrial intelligence. University of Chicago Press - Journals. Philosophy of Science, 60(2), 204–22. Also available at JSTOR (here) with bigger free extracts.
  134. Cirkovic, Milan M.; Ćirković, Milan M. (২০১২-০৬-২১)। About the author (2012)আইএসবিএন 9780521197755। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৩ 
  135. Ćirković (2012), p166
  136. Basalla, George (২০০৬-০১-১৯)। About the author (2006)আইএসবিএন 9780198038351। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৩ 
  137. George Basalla (২০০৬)। Civilized Life in the Universe: Scientists on Intelligent Extraterrestrials। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 14। আইএসবিএন 9780198038351। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৩ 
  138. Ćirković (2012), p172, "It is Basalla, the critic of SETI and not its practitioners, who violates the spirit of Hull's dictum, for instance, when he writes that 'extraterrestrials discussed by scientists are as imaginary as the spirits and gods of religion or myth'.[54] Second, the approach to this sociology of science criticism is obviously marred by Basalla's insistence on personal quirks and idiosyncrasies as the main motivation of scientific activity, an attitude that is not only demeaning to the many scientists mentioned, ..."
  139. "Cuny - City College — Philosophy Department"। ২০১৫-০৭-০৫। 
  140. Massimo Pigliucci (২০১০)। Nonsense on Stilts: How to Tell Science from Bunk। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 34। আইএসবিএন 9780226667874। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৩ 
  141. Ćirković (2012), p175, "However, in the second chapter, tellingly entitled 'Almost Science', the author (a distinguished philosopher, mainly involved in the philosophy of biology) devotes several subsections to the fields which are, in his opinion, neither pseudosciences, nor fully legitimate members of the scientific family. Here he puts SETI studies in the illustrious company of string theory, interpretations of quantum mechanics, evolutionary psychology and history (of the 'synthetic' kind done recently by Jared Diamond). While the club is fun to be in - and only a staunch conservative does not expect great breakthroughs to come out of one or more of these domains in the next few decades - the justification offered by Pigliucci in the case of SETI is weak, outdated, and reflecting particular philosophical prejudices similar to the ones described above in Mash and Basalla.[60]"
  142. Friedman, Stanton T. (২০০২-০৫-১৩)। "UFOs: Challenge to SETI Specialists"। ২০১৭-১২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৭ 
  143. Friedman, Stanton T. (২০০৯-০৫-৩০)। "Pseudo-Science of Anti-Ufology"। The UFO Chronicles। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৭ 
  144. Denzler, Brenda (২০০৩)। The lure of the edge: scientific passions, religious beliefs, and the pursuit of UFOsUniversity of California Press। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 978-0-520-23905-0 
  145. Why SETI Is Science and UFOlogy Is Not – A Space Science Perspective on Boundaries, Mark Moldwin, 2004
  146. Tuomela, Raimo (১৯৮৫)। Science, action, and reality। Springer। পৃষ্ঠা 234আইএসবিএন 978-90-277-2098-6 
  147. Feist, Gregory J. (২০০৬)। The psychology of science and the origins of the scientific mind। Yale University Press। পৃষ্ঠা 219আইএসবিএন 978-0-300-11074-6 
  148. Restivo, Sal P. (২০০৫)। Science, technology, and society: an encyclopedia। Oxford University Press US। পৃষ্ঠা 176আইএসবিএন 978-0-19-514193-1 
  149. Tramiel, Leonard। "Life as We Know It: An Interview with Jill Tarter"CSICenter for Inquiry। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৮ 

গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]