বস্তার জেলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বস্তার জেলা
[[ছত্তিশগড় জেলা|ছত্তিশগড় জেলা]]
ছত্তিশগড় বস্তারের অবস্থান
ছত্তিশগড় বস্তারের অবস্থান
দেশভারত
রাজ্য[[ছত্তিশগড়]]
প্রশাসনিক বিভাগবস্তার ডিভিশন
সদরদপ্তর[[জগদলপুর, বস্তার]]
তহশিল১। জগদলপুর ২।বস্তার ৩।বস্তানার ৪। বকাম্বড় ৫। দরভা ৬। তোকাপাল ৭। লোহন্দিগুড়া
আয়তন
 • মোট১০,৭৫৫.৭৯ বর্গকিমি (৪,১৫২.৮৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১৪,১১,৬৪৪
 • জনঘনত্ব১৩০/বর্গকিমি (৩৪০/বর্গমাইল)
জনতাত্ত্বিক
 • সাক্ষরতা৫৪.৯৪%
 • লিঙ্গানুপাত১০২৪
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট

বস্তার জেলা ভারতের মধ্যভাগে অবস্থিত ছত্তিশগড় রাজ্যের একটি জেলা। জেলা সদর শহর জগদলপুর। জেলার আয়তন ১০,৭৫৫.৭৯ বর্গকিলোমিটার । বস্তার জেলা উত্তর-পশ্চিমে নারায়ণপুর জেলা, উত্তরে কোন্দাগাঁও জেলা, পূর্বে নবরংপুর জেলাকোরাপুট জেলা দ্বারা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমে দান্তেওয়াড়া জেলা এবং পশ্চিমে মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলি জেলা দ্বারা আবদ্ধ। এই জেলার সংস্কৃতি মূলত আদিবাসী সংস্কৃতি এবং ওড়িয়া সংস্কৃতির মিশ্রণ। 

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বস্তার ও দান্তেওয়াড়া জেলা পূর্বে বস্তার নাম্নী রাজকীয় রাজ্যের অংশ ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে বস্তার রাজ্য ভারতের একটি স্বাধীন করদ রাজ্য ছিল।এই রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চতুর্দশ শতাব্দীতে অনাম্মদেব দ্বারা, যিনি ওয়ারাঙ্গালের (বর্তমান তেলেঙ্গানা-র অন্তর্গত) কাকতীয় রাজা প্রতাপ রুদ্র দেব এর ভাই ছিলেন।  পরে ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার সময় ভারতের সাথে যুক্ত হয় এবং বস্তার ও কঙ্কার রাজ্য মিলিয়ে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বস্তার জেলা তৈরি হয়। যা ছিল একটি এলাকা ৩৯,১১৪ বর্গকিমি আয়তন বিশিষ্ট এই জেলাটি ছিল ভারতের অন্যতম বৃহত্তম জেলা।.

১৯৯৯ সালে জেলা বিভক্ত হয়ে বর্তমান কালের বস্তার, দান্তেওয়াড়া এবং কঙ্কার জেলা তৈরি হয়েছে এবং ২০১২ সালে পুনরায় বিভক্ত হয়ে কোন্দাগাও জেলা তৈরি হয়। এই সমস্ত জেলাগুলি মিলে বস্তার ডিভিশন গঠিত হয়, যা ২০০০ সালে মধ্যপ্রদেশের আরো ১৫টি জেলার সাথে ছত্তিশগড় রাজ্যের অংশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। 

চিত্রকূট এবং তীরাথগড় জলপ্রপাত দুটি জগদলপুরের কাছাকাছি অবস্থিত।বস্তার তার প্রথাগত Dasara (Dussera) উৎসবের জন্যে বিখ্যাত। 

জেলা বর্তমানে রেড করিডোরের অংশ। জলপ্রপাত, বনাঞ্চল  ও প্রাচীন মন্দির ও স্থাপত্য  এই অঞ্চলকে পর্যটকদের জন্যে আকর্ষণীয় এবং সুন্দর করে তুলেছে। এই অঞ্চল রেড করিডোরের অংশ হওয়া সত্বেও, আদিবাসী সমাজের প্রতিটি অধ্যায় দ্বারা পর্যটকদের স্বাগত জানানো হয় । গোনডি, হাল্বি, ছত্তিসগড়ী ইত্যাদি কথ্য ভাষা এখানে প্রচলিত হিন্দির সাথে সাথে।এখানকার বৈচিত্র্যপূর্ণ উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুলের সুবাদে বিগত কয়েক দশক ধরে এটি ছত্তিশগড় অঞ্চলের অন্যতম প্রধান পর্যটক আকর্ষণের স্থান।

বিভাগ[সম্পাদনা]

প্রশাসনিকভাবে, জেলাটি সাতটি তহসিল - জগদলপুর, বস্তার, বাস্তানার, বকাম্বড়, দরভা, তোকাপাল ও লোহন্দিগুড়া তে বিভক্ত। জেলার একটি মাত্র পৌরসভা, জগদলপুর, যা এই জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এই সুন্দর শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১৫০,০০০।

লোকসভা ও বিধানসভা[সম্পাদনা]

বস্তারে একটি লোকসভা কেন্দ্র ও তিনটি বিধান্সভা কেন্দ্র রয়েছে যথাঃ বস্তার, জগদলপুর এবং চিত্রকূট। পরিবহন রেলওয়ে স্টেশন - ১১; আরটিসি ডিপো - ০৩; বিমানবন্দর- জগদলপুর

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১ সালের জনগণ্না অনুযায়ী বস্তার জেলার জনসংখ্যা ১,৪১১,৬৪৪ জন, যা কিনা প্রায় সোয়াজিল্যান্ড-এর জনসংখ্যার সমান অথবা আমেরিকার হাওয়াই রাজ্যের জনসংখ্যার সমান। জনসংখ্যার অনুযায়ী ভারতের ৬৪০ টি জেলার মধ্যে বস্তারের অবস্থান ৩৪৮ তম স্থানে। জেলার জনঘনত্ব ১৪০ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৩৬০ জন/বর্গমাইল)। ২০০১-১১ এর দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১৭.৮৩%<। বস্তারের লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষের জন্য ১০২৪ জন নারী এবং স্বাক্ষরতার হার ৫৪.৯৪%। ১৯৮১ সালে বস্তারের জনসংখ্যা ছিল ১,৮৪২,৮৫৪ জন, যার মধ্যে ১,২৪৯,১৯৭ জন তপশিলি উপজাতিভুক্ত সদস্য ছিল। অর্থাৎ জনসংখ্যার প্রায় ৭০% আদিবাসী মানুষ। তবে এই পরিসংখ্যান ১৯৯৯-পূর্বের বস্তার জেলার যা আধুনিক বস্তার ডিভিশনের মতোই ছিল।

ভাষা[সম্পাদনা]

বস্তারে প্রচলিত উপজাতীয় ভাষাগুলি তিনটি মৌলিক গ্রুপে বিভক্ত: ইন্দো-আরিয়ান, দ্রাবিড় এবং মুন্ডা। গাড়বা, একমাত্র মুন্ডা ভাষা যা জেলায় প্রচলিত আছে, নিজেই একটি গ্রুপ গঠন করে। দ্বিতীয় এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ গোষ্ঠীটি গোন্দি এবং পারজি (দ্রাবিড় ভাষা)-এর বিভিন্ন উপভাষা অন্তর্ভুক্ত করে। তৃতীয় গ্রুপটি ইন্দো-আর্য ভাষার অন্তর্ভুক্ত, যথা, হালবা ও ভাতরি। দুর্ভাগ্যবশত,গাদবা বিলুপ্তির পথে কারণ গাড়বা যে জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা, তাদের তরুণ সম্প্রদায় ধীরে ধীরে নিজেদের মধ্যে প্রতিদিনের যোগাযোগ এবং জেলার অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর জনগণের সাথে যোগাযোগের জন্য হিন্দি বা হাল্বি ভাষা ব্যবহার করে।[১]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

কৃষি[সম্পাদনা]

খরিফ মৌসুমে প্রধানত ধানচাষ হয় প্রধানত বৃষ্টিপাতের সুযোগ নিয়ে, প্রায় ২.৩৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান উৎপন্ন হয় কিন্তু ছত্তিশগড় এর বস্তার অঞ্চলে এই ফসলের উৎপাদন খুব কম ৮.৫৩ কুইন্টাল/হেক্টর। এই জেলায় সেচযুক্ত এলাকা মাত্র ১.৬৭% এবং সার ব্যবহার ৪.৬কেজি/হেক্টর, যা অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় খুবই কম এবং পর্যাপ্ত ফসল উতপাদনের জন্যে যা যথার্থ নয়[২]। বস্তারের জীবনধারা এখনো প্রাচীনপন্থী। এবং বর্তমানেও, কৃষিকাজের জন্যে প্রাচীন পদ্ধতি অনুশীলনের প্রচলিত প্রথা রয়েছে। এই অঞ্চলে লোহার লাঙ্গলের তুলনায় কাঠের লাঙ্গলের সংখ্যা অনেক বেশি একই ভাবে ট্রাক্টরের থেকে বলদদ্বারা ভূমি কর্ষণ অনেক বেশি জনপ্রিয়। ঐতিহ্যবাহী কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার কৃষি উৎপাদন হ্রাস করেছে এই অঞ্চলে। এখানে উতপাদিত খরিফ ফসলঅগুলি হল ধান, বিউলিডাল, অড়হর ডাল, জোয়ার এবং ভুট্টা। রবি ফসলগুলি হল তিল, মুগডাল, সরিষা এবং ছোলা। বন উৎপাদনের সংগ্রহ ও বিক্রয় এবং অন্যান্য বন সম্পর্কিত কাজ ক্ষুদ্র কৃষি আয়ের সম্পূরক। এখানকার বেশিরভাগ লোকই সারা বছর কর্মসংস্থানের সু্যোগ পায় না। বন্যা এবং খরা এর বাতসরিক চক্রটি জীবনধারাকে অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তোলে। মানুষ প্রায়ই সংকটের সময়ে স্থানীয় মহাজনদের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়, যা সাধারণত সারাজীবন ঋণজালে জড়িয়ে থাকার শুরু মাত্র। বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় এলাকায় দারিদ্র্য অত্যন্ত বেশি। বস্তার মাল্ভূমি অঞ্চলে সেচের সুবিধা রয়েছে শুধুমাত্র ১.২% ভূমিতে[৩]। আপাতদৃষ্টিতে এই অঞ্চলে জলসম্পদের প্রাচুরয্য রয়েছে; এই অঞ্চলে ভাল বৃষ্টিপাত হয় কিন্তু নিম্নমানের ভূখণ্ডের কারণে মাটির জল্ধারণ ক্ষমতা খুব কম। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ের ভালো সুযোগ রয়েছে এখানে [৪]

বনজ উৎপাদন[সম্পাদনা]

এই অঞ্চলের বনাঞ্চল জনগণের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্ষুদ্র বনজ উৎপাদন সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা ও জীবিকা প্রদান, এবং বন বিভাগে কর্মসংস্থান (হিসাবে নৈমিত্তিক শ্রম) ইত্যাদি ভাবে বনভূমি অধিবাসীদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। বন জনগণের প্রয়োজনের চাহিদার জন্য প্রদান করে - জ্বালানী, ওষুধ, খাদ্য ও পানীয় এবং বাড়ি তৈরির সামগ্রী।

মহুয়া ফল 
সুলফি থেকে প্রস্তুত বস্তার জেলার বিখ্যাত হাঁড়িয়া 
ক্লোরোসাইলন- বস্তারের বিখ্যাত ওষধি বৃক্ষ 
বস্তারের বিখ্যাত ওষধি বৃক্ষ - ভেন্টিলাগো 
বস্তারের বিখ্যাত ওষধি বৃক্ষ - শোরিয়া 
তেন্ডু পাতা সংগ্রহ 

প্রধান শিল্প[সম্পাদনা]

নাগারনার স্টিল প্ল্যান্ট [সম্পাদনা]

ন্যাশনাল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এনএমডিিসি) জগদলপুর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে নগরনারে 3 মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্রীনফিলি ইন্টিগ্রেটেড স্টিল প্লান্ট স্থাপনের কাজ করছে যার পরিমাণ ২১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্ল্যান্টের কমিসনিং শুরু হয়[৫]

টাটা স্টিল প্ল্যান্ট [সম্পাদনা]

জগদলপুর থেকে প্রায় 20 কিলোমিটার দূরে লোহান্দিগুড়ায় একটি সবুজ ক্ষেত্র সমন্বিত ইস্পাত কারখানা স্থাপন করার জন্য জুন ২০০৫ সালে ছত্তিশগড় সরকারের সাথে টাটা স্টিলের চুক্তি সই হয়।

লম্বোদর সিমেন্ট উৎপাদন[সম্পাদনা]

জগদলপুর থেকে ২০ কিমি দূরে এই সিমেন্ট কারখানাটি রয়েছে।

জীবিকা নির্বাহ[সম্পাদনা]

চল্লিশ শতাংশ জীবিকার নির্বাহ হয় অরণ্যের উপর ভিত্তি করে, ৩০ শতাংশ জীবিকা নির্বাহিত হয় কৃষি ভিত্তি করে এবং ১৫ শতাংশ জীবিকা নির্বাহিত হয় পশুপালনের উপর নির্ভর করে। আরো ১৫ শতাংশ জীবিকা নির্বাহিত হয় দৈনিক শ্রমিকের কাজ করে.

কৃষক[সম্পাদনা]

কিছু মানুষ, যারা চাষের উপরে প্রায় সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে, তাদের নিজেদের মালিকানাধীন জমি রয়েছে বা অন্যদের জমিতে ভাগচাষ করে তারা।এছাড়া সাথে সাথে গবাদি পশু পালনের উপরেও নির্ভর করে তারা। বর্তমান সময়ে অনেকেই সঙ্গে সঙ্গে কিছু ছোট ব্যবসা বাঁ উৎপাদন শিল্পে যুক্ত হচ্ছে। 

শ্রমিক[সম্পাদনা]

নিজের জমি হীন বা খুব সামান্য জমি্র মালিক বহু মানুষ খামার এবং নৈমিত্তিক শ্রম হিসাবে কাজ করে বেঁচে আছে। তারা ননফার্ম সেক্টর, খনি, ছোট দোকান, নির্মাণস্থলগুলিতে এবং শহুরে কাজ বাহিনীর অংশ হিসাবে কাজ করে।

কৃষক এবং বনজ উৎপাদন সংগ্রাহক[সম্পাদনা]

যাদের কিছু জমি আছে, এবং বন এর আশপাশে বসবাস করে, তাদের জীবকা নির্বাহে অরণ্য অনেক সহায়তা করে। বনের সংলগ্ন এলাকাগুলিতে, বেশিরভাগ মানুষ (যারা কিছু জমির মালিক তারাও) ছোট বনজ উৎপাদন সংগ্রহ করে।পরিবারের খরচ এবং আয়ের একটি প্রধান অংশ বন সংগ্রহের উপর ভিত্তি করে, সম্পূরক আয় প্রদানের কৃষি কর্মকাণ্ড সহ।

সংগঠিত ক্ষেত্র[সম্পাদনা]

পাবলিক / প্রাইভেট সংগঠিত ক্ষেত্রগুলিতে চাকরিরর জন্যে মানুষের সাধারণত আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রয়োজন হয় এবং এই সেগমেন্টে সরকারি খাতের পরিষেবা, এবং অফিস, শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সংক্রান্ত সেবাগুলিতে কর্মসংস্থান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

বস্তারের জনজাতিরা[সম্পাদনা]

বস্তার আদতে মুলনিবাসী জনজাতি অধ্যুষিত এবং মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০% উপজাতীয় মানুষজন রয়েছেন, যা ছত্তিশগড়ের মোট আদিবাসী জনসংখ্যার ২৬.৭৬%। বস্তার অঞ্চলের প্রধান গোষ্ঠীগুলি হলো গোন্দ, আভুজ মারিয়া, ভাতরা ভাতরা ইত্যাদি এবং বিভিন্ন সাবকাশ্ত গুলি হল স্যান ভতরা, পিত ভাতরা, আম্নিত ভাতরা, হাল্বা, ধুরভা, মুরিয়া, এবং বিসন হর্ন মারিয়া ইত্যাদি। বস্তারের গোন্দ উপজাতি ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত উপজাতিগুলির একটি, তাদের অনন্য ঘোতুল ব্যবস্থার জন্য পরিচিত। জনসংখ্যার দিক দিয়ে গোন্দরা কেন্দ্রীয় ভারতের বৃহত্তম উপজাতীয় গ্রুপ।

বস্তার অঞ্চলের উপজাতিরা বিশ্বব্যাপী তাদের অনন্য এবং স্বতন্ত্র উপজাতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের জন্য পরিচিত। বস্তারের প্রতিটি উপজাতীয় গ্রুপের নিজস্ব স্বতন্ত্র সংস্কৃতি রয়েছে এবং তাদের নিজস্ব অনন্য প্রথাগত জীবনশৈলী উপভোগ করে। প্রতিটি উপজাতি নিজস্ব উপভাষায় বিকশিত হয়েছে এবং তাদের পোশাক, খাদ্যাভ্যাস, কাস্টমস, ঐতিহ্য এবং এমনকি ঈশ্বর ও দেবী বিভিন্ন ফর্ম পূজা মধ্যে একে অপরের থেকে পৃথক।

বিপুল সংখ্যক বস্তার উপজাতি এখনও গভীর বনে বসবাস করে এবং তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির সুরক্ষার জন্য বহিরাগতদের সাথে মেলামেশা করে না। বস্তার উপজাতিরা তাদের রঙিন উৎসব এবং কলা ও কারুশিল্পের জন্য পরিচিত। বস্তারের দশেরা এই অঞ্চলের সবচেয়ে বিখ্যাত উৎসব। বস্তারের উপজাতিরা ধাতু দ্বারা আদিবাসী দেবদেবীর মূর্তি নির্মাণ, বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাণী, তেলের আলো, কার্ট এবং পশুপাখি নির্মাণে দক্ষতা অর্জন করেছে।

চারু ও কারুশিল্প[সম্পাদনা]

হস্তশিল্পটি সর্বাধিক প্রচলিত বস্তারের কোন্দাগাও অঞ্চলে।এই হস্তশিল্পের মাধ্যমে অনেক পণ্য তৈরি করা হয় যেমন জাহাজ, গহনা এবং স্থানীয় দেবতাদের মূর্তি । পণ্য প্রস্তুত করার পদ্ধতিটি বেশ সহজ এবং এটিকে 'লস্ট ওয়াক্স টেকনিক' বলা হয়ে থাকে। 

বস্তার জেলা ডোকরা হস্তশিল্প এবং বস্তার কাঠের ক্রাফট থেকে আইটেম প্রস্তুত করার জন্য সুপরিচিত।এই প্রক্রিয়া স্পষ্টতা এবং অনন্য দক্ষতার দাবি রাখে। এই ডোকরা শিল্পের কৌশল থেকে তৈরি শিল্পকর্মগুলি প্রস্তুতির জন্য গোবর, খড় এবং লাল মাটি ব্যবহার করা হয়,যদিও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মোম। কনট্যুরিং ছাড়াও মোমের ব্যবহার করা হয় আর্টিফ্যাক্ট গুলির একটি অন্তিমস্পর্শ প্রদান করার জন্যে। ছত্তিসগড়ের বেল মেটাল হস্তশিল্প থেকে, শিল্পীদের প্রকৃত প্রতিভাবান এবং সৃজনশীল অনুষঙ্গ এসেছে এবং এইভাবে শিল্পের বেশ কিছু চমৎকার নিদর্শন তৈরি হয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]