বরদানন্দ চট্টোপাধ্যায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বরদানন্দ চট্টোপাধ্যায়
জন্ম(১৯১২-০২-০২)২ ফেব্রুয়ারি ১৯১২
মৃত্যু৯ ডিসেম্বর ১৯৬৭(1967-12-09) (বয়স ৫৫)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনসিটি কলেজ, কলকাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণমৃত্তিকা রসায়ন
দাম্পত্য সঙ্গীঅসীমা চট্টোপাধ্যায়
পুরস্কারনাগার্জুন স্বর্ণপদক (১৯৩৭)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্ররসায়ন বিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শিবপুর
উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টাজ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়

ড. বরদানন্দ চট্টোপাধ্যায় (২ ফেব্রুয়ারি ১৯১২ – ৯ ডিসেম্বর ১৯৬৭) ছিলেন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি মৃত্তিকাতত্ত্ব বিজ্ঞানী। [১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

বরদানন্দের জন্ম ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি [২]ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা'য়। নয় বৎসর বয়সে তার পিতা ও মাতা দু-জনেই মারা যান। তার অগ্রজ তাকে পিতৃস্নেহেই প্রতিপালন করেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার সিটি কলেজ থেকে রসায়নে অনার্সসহ বি.এসসি পাশ করেন এবং ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে ভৌত রসায়নে প্রথম শ্রেণীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এসসি ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের খয়রা অধ্যাপক জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের অধীনে গবেষণা শুরু করেন এবং ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ডিএসসি ডিগ্রী লাভ করেন এবং নাগার্জুন স্বর্ণপদক লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল - “ইলেকট্রোকেমিক্যাল প্রপার্টিজ অফ কোলয়ডাল সিলিসিক অ্যাসিড”। তার সিলিসিক অ্যাসিডের উপর অপর দু-টি গবেষণাপত্রের জন্য ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি তাকে জে এম দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল প্রদান করে।[১]১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন, মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের গবেষণাগারে বিশিস্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী অধ্যাপক সি ই মার্শাল, ই থ্রোগ, আর প্রাডফিল্ডের সঙ্গে কাজ করেন। [৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা চলাকালে বরদানন্দ ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চে অ্যাসিস্টান্স রিসার্চের কাজ এবং ১৯৪২-৪৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদযালয়ের রসায়ন বিভাগে সাম্মানিক অধ্যাপক পদে কাজ করেন। [৩] যুক্তরাষ্ট্রে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চের পর দেশে ফিরে নতুন দিল্লির ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটে কিছুদিন কাজ করেন।

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার শিবপুরে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যোগ দিয়ে রসায়ন, মেটালার্জি ও জিওলজি বিভাগের প্রথমে অধ্যাপক পরে ১৯৫৬ খ্রিস্টব্দে বিভাগীয় প্রধান হন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে কলেজের উপাধ্যক্ষ হন।

১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক চট্টোপাধ্যায় ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর ফেলো নির্বাচিত হন। [৩]

পারিবারিক জীবন ও জীবনাবসান[সম্পাদনা]

অধ্যাপক বরদানন্দ চট্টোপাধ্যায় অত্যন্ত কর্মব্যস্ত মানুষ ছিলেন এবং নিজে যেমন গবেষণা লিপ্ত থাকতেন, সেই রকম বেশ কিছু পিএইচডি ছাত্রের গবেষণায় উপদেষ্টার কাজ করতেন। কর্মব্যস্ততার মধ্যেই ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর দুপুর দেড়-টার সময় তিনি সেরিব্রাল থম্বোসিসে আক্রান্ত হন এবং ওইদিন রাত্রিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[৩] তার পত্নী ছিলেন খ্যাতনামা রসায়ন বিজ্ঞানী ড. অসীমা চট্টোপাধ্যায়। তাদের একমাত্র কন্যা অধ্যাপিকা ড. জুলি ব্যানার্জী ও জামাতা রসায়ন বিজ্ঞানী ড. অভিজিৎ ব্যানার্জীও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত। [৩]


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ৪৫৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "Barananda Chatterjee - Chemist"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-৩১ 
  3. "Biographical Memoirs of INSA Fellows: Baradananad Chatterjee"। ২০২২-১০-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-৩১