বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত আইন। আইনটি ১০ জুলাই, ২০১২ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে।[১] আইনটি বাংলা ভাষায় রচিত।

বিবরণ[সম্পাদনা]

বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ দশটি অধ্যায় এবং ৫৪টি ধারায় বিভক্ত। আইনের সাথে চারটি তফসিল যুক্ত করা হয়েছে এবং সেসব তফসিলে রক্ষিত বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতিসমূহের বাংলা নাম, ইংরেজি নাম ও বৈজ্ঞানিক নাম দেয়া হয়েছে।[২]

ধারাসমূহ[সম্পাদনা]

আইনের ৬ ধারা মোতাবেক এই আইনের তফসিলে উল্লেখিত বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী শিকার বা বন্যপ্রাণী, মাংস, ট্রফি, অসম্পূর্ণ ট্রফি, বন্যপ্রাণীর অংশবিশেষ অথবা এসব হতে উৎপন্ন দ্রব্য দান, বিক্রয় বা কোনো প্রকারে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা অন্য কারো নিকট হস্তান্তর করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আইনের ৪১ ধারা মোতাবেক আরও উল্লেখ রয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করলে বা উক্ত অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা প্রদান করে থাকলে এবং উক্ত সহায়তা বা প্ররোচনার ফলে অপরাধটি সংঘটিত হলে, উক্ত সহায়তাকারী বা প্ররোচনাকারী তাহার সহায়তা বা প্ররোচনা দ্বারা সংঘটিত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দন্ডে দণ্ডিত হইবেন।[১]

তফসিল ১[সম্পাদনা]

তফসিল ১ এ ১৪টি ব্যাঙ, ৯৬টি কচ্ছপ এবং সরীসৃপ, ৫৭৮টি পাখি, ১১০টি স্তন্যপায়ী, ২৫টি মাছের প্রজাতিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।

তফসিল ২[সম্পাদনা]

তফসিল ২ এ ৭২টি ব্যাঙ, কচ্ছপ, সরীসৃপ এবং উভচর প্রাণী, ৪৪টি পাখি, ৩টি স্তন্যপায়ী, ২৭টি মাছ, ৩২টি প্রবাল, ১৩৭টি শামুক ঝিনুক, ২২টি কাঁকড়াগলদা, ৫৯টি প্রজাপতিমথ এবং ২৪টি কীটপতঙ্গের প্রজাতিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।

তফসিল ৩[সম্পাদনা]

আইনের তফসিল ৩-এ মোট ৬টি ভারমিন প্রজাতির নাম উল্লেখ আছে। সেগুলো হচ্ছে গেছো ছুঁচো, কালো ইঁদুর, নেংটি ইঁদুর, ধাড়ি ইঁদুর, বড় ইঁদুর এবং মেঠো ইঁদুর[২]

তফসিল ৪[সম্পাদনা]

আইনের তফসিল ৪-এ মোট ৫৪টি উদ্ভিদকে সংরক্ষিত উদ্ভিদ (Protected plants) ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ আইনের ৬ ধারা মোতাবেক এই ৫৪ প্রজাতির উদ্ভিদ ইচ্ছাকৃতভাবে উঠানো, উপড়ানো, ধ্বংস বা সংগ্রহ করা যাবে না।[২]

শাস্তি[সম্পাদনা]

আইনের ৩৬ ও ৩৭ ধারায় বাঘ, হাতি, চিতাবাঘ ইত্যাদি অপরাধ করলে আইনের ৩৬ ধারায় দণ্ড- সর্বনিম্ন ২ বছর, সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ন ১ লাখ, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ ১২ বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।[৩]

সংরক্ষিত উদ্ভিদ সংক্রান্ত ৬ নং ধারা লঙ্ঘন করলে ৩৯ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি এক বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং পুনরায় একই অপরাধ করলে শাস্তি দ্বিগুণ হবে।[২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২"বাংলাদেশ আইন মন্ত্রণালয় (Bengali ভাষায়)। ঢাকা: bdlaws.minlaw.gov.bd। ১০ জুলাই ২০১২। পৃষ্ঠা ১১৮৪১৫-১১৮৪৩৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-১৭ 
  2. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪১৫-১১৫৪১
  3. বাঘ ও মানুষের দ্বন্দ্ব-সংঘাত

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]